Ajker Patrika

ইচ্ছেমতো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছি: শিক্ষামন্ত্রী 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ইচ্ছেমতো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছি: শিক্ষামন্ত্রী 

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, একটা সময় দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছামতো শিক্ষক নিয়োগ দিত। সেটি নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া যেত, সেখান থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। 

আজ সোমবার দুপুরে সরকারি স্কুলে নিয়োগ পাওয়া ২ হাজারের বেশি প্রার্থীর নিয়োগ পত্র ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পাওয়া ৩৪ হাজার প্রার্থীর সুপারিশপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মানসম্মত শিক্ষার বড় একটি ধাপ হচ্ছে স্বচ্ছভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া। আমরা এবার সরকারি বেসরকারি স্কুলে সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিতে সক্ষম হয়েছি।’ 

দীপু মনি জানান, দুই বছর আগে সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসি থেকে ২ হাজার ১৫৫ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হলেও ২ হাজার ৬৫ জনের পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট পাওয়ায় তাদের নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য নিয়োগপত্র পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৭৩ জন। এ নিয়োগের মাধ্যমে সারা দেশের শিক্ষকের শূন্য পদগুলোর অধিকাংশ পূরণ হবে। এরপরেও কোথাও শূন্যপদ থাকলে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের পুলিশ ভেরিফিকেশন কাজ শেষ না হওয়ায় তাঁদেরকে শর্তসাপেক্ষে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি রিপোর্টে তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর কোনো অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁকে বাদ দেওয়া হবে। পাশাপাশি নানা জটিলতার কারণে যারা নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছে তাদের অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও আশ্বস্তও করেন শিক্ষামন্ত্রী। 

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সকল কার্যক্রম বিপর্যয়ের মধ্যে থাকলেও শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত ছিল। সেই সুবাদে আজকে সারা দেশে একসঙ্গে সরকারি-বেসরকারি ৩৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।’ 

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান। 

এনটিআরসিএ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩০ মার্চ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে নিয়োগ সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে নিবন্ধিত প্রার্থীদের নিকট থেকে আবেদন গ্রহণের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শূন্য পদ ছিল ৫৪ হাজার ৩০৪টি। তার মধ্যে এমপিও ৪৮ হাজার ১৯৯টি এবং নন-এমপিও ছিল ৬ হাজার ১০৫ টি। একই বছরের ১৫ জুলাই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আওতায় প্রাথমিকভাবে প্রার্থী নির্বাচন করা হয় এবং প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করা হয়। নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে প্রাথমিকভাবে ৩৮ হাজার ২৮৩ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হয়। পরে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রার্থীদের নিকট থেকে ভিআর ফরম সংগ্রহ করা হয়। ৩৮ হাজার ২৮৩ জনের মধ্যে ৩৪ হাজার ৭৩ জনের ভিআর ফরম পাওয়া যায়। 

গত ১৭ জানুয়ারি পুলিশ ভেরিফিকেশন চলমান অবস্থায় নিয়োগ সুপারিশ প্রকাশের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ হতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। তার আলোকে ২০ জানুয়ারি ৩৪ হাজার ৭৩ জন প্রার্থীকে নিয়োগ সুপারিশ প্রদান করা হয়। যাদের ভিআর ফরম পাওয়া যায়নি এমন ৪ হাজার ১৯৮ জন এবং যে সকল প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে সরকারিকরণ হয়েছে এইরূপ প্রার্থীসহ মোট ৪ হাজার ২১০ জনকে নিয়োগ সুপারিশ করা হয়নি। 

তবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি মধ্যে তাঁদের ভিআর ফরম পাওয়া গেলে তাঁদেরকে নিয়োগ সুপারিশ প্রদান করা হবে। ৩য় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ৫৪ হাজার ৩০৪টি পদের মধ্যে ১৫ হাজার ২২৫টি পদে কোনো  আবেদন না পাওয়ায় এই পদগুলোতে নিয়োগ সুপারিশ প্রদানের জন্য পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হবে। যে সকল পদে কেউ যোগদান করবে না যে সকল পদে পছন্দ অনুসারে মেধাক্রমের পরবর্তী ব্যক্তিকে নির্বাচন করে নিয়োগ সুপারিশ প্রদান করা হবে। তবে পুলিশ ভেরিফিকেশনে কারও বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য হলে তাঁদের নিয়োগও বাতিল করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত