Ajker Patrika

দুদকের আতশ কাচের নিচে ছয় সাবেক মুখ্য সচিব

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা 
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৫, ১১: ২৪
শেখ মো. ওয়াহিদ উজ জামান, আবুল কালাম আজাদ, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, নজিবুর রহমান, ড. আহমদ কায়কাউস ও তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।ছবি: সংগৃহীত
শেখ মো. ওয়াহিদ উজ জামান, আবুল কালাম আজাদ, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, নজিবুর রহমান, ড. আহমদ কায়কাউস ও তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিবের দায়িত্বে ছিলেন আট কর্মকর্তা। তাঁদের ছয়জনের নামেই দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগ অনুসন্ধান করছে। কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযুক্ত কর্মকর্তারা হলেন শেখ মো. ওয়াহিদ উজ জামান, আবুল কালাম আজাদ, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (কবি কামাল চৌধুরী), নজিবুর রহমান, ড. আহমদ কায়কাউস ও তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ওরফে রিপন মিয়া।

দায়িত্বে থাকা ৮ মুখ্য সচিবের মধ্যে আবদুল করিম ও শেখ সোবহান শিকদারের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির কোনো ধরনের অভিযোগ নেই দুদকে। আবদুল করিম ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল এবং শেখ সোবহান শিকদার ২০১৪ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত মুখ্য সচিবের দায়িত্বে ছিলেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময়কার হত্যা মামলার আসামি হিসেবে কারাগারে রয়েছেন কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ।

দুদক সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে, শেখ হাসিনার মুখ্য সচিবদের মধ্যে প্রথম দুর্নীতির অভিযোগে জড়ান জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াহিদ উজ জামান। তিনি ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মুখ্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। অভিযোগ, জনতা ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির মূল হোতাদের একজন তিনি। অ্যানন টেক্স, ক্রিসেন্ট গ্রুপসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ঋণ বিতরণ এবং খেলাপির ক্ষেত্রে অন্যায্য সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওয়াহিদ উজ জামানের বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালে তাঁর দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুদক। তবে অনুসন্ধানটি টানা প্রায় ছয় বছর ফাইলবন্দী রাখা হয়। ২০২১ সালে দুদকের তৎকালীন চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে প্রায় পৌনে ছয় শ অভিযোগের পরিসমাপ্তি টানেন। এর মধ্যে ছিল ইকবাল মাহমুদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ওয়াহিদ উজ জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগও। পরে জনতা ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় আবার তাঁর নাম এলে দুদক তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তাঁরা হলেন, তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, আহমদ কায়কাউস, নজিবুর রহমান ও কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

দুদক সূত্রটি জানায়, শেখ হাসিনার সর্বশেষ মুখ্য সচিবের দায়িত্বে থাকা মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ওরফে রিপন মিয়ার বিরুদ্ধে প্রকল্পে অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিপুল অবৈধ অর্থ-সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। দুদকের একটি দল এর অনুসন্ধান করছে।

আহমদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে অসম চুক্তির মাধ্যমে শুল্ক ও কর অব্যাহতি প্রদান করে রাষ্ট্রের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি করেছেন। তিনি বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসচিব থাকা অবস্থায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে পাশ কাটিয়ে এসব চুক্তি করেছেন।

অন্য দিকে সারা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যুরাল নির্মাণ এবং মুজিব শতবর্ষ পালনের নামে রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা অপচয় ও আত্মসাতের একটি অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এতে সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে আরেক মুখ্য সচিব এবং জামালপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধেও।

দুদকের মহাসচিব ও সংস্থাটির মুখপাত্র মো. আক্তার হোসেন আজকের পত্রিকাকে সাবেক এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির তদন্ত বিষয়ে বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগগুলো এখন অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। অনুসন্ধান শেষ হলে কর্মকর্তারা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।’

দুদক সূত্র জানিয়েছে, এসব অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের ছয়টি পৃথক দল কাজ করছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পে অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে দুদক। চাওয়া হয়েছে অভিযুক্তদের আয়-ব্যয় ও সম্পদের হিসাব।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে নজরদারি করা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের সম্পদ আত্মসাৎ ও লুটপাটের সুযোগ, সুরক্ষা ও বিচারহীনতা যেভাবে দেশে কর্তৃত্ববাদের অন‍্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে, এটা তারই উদাহরণ। মুখ‍্য সচিবের মতো উচ্চপর্যায়ের আমলাতান্ত্রিক অবস্থানে থেকে অনেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক ও ব‍্যবসায়িক ক্ষমতার ত্রিপক্ষীয় সিন্ডিকেটের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন। সুষ্ঠুভাবে তদন্ত সম্পন্ন করে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা সম্ভব হলে এই সাবেক মুখ্য সচিবদের পাশাপাশি যাঁরা চোরতন্ত্রের অন্যান্য অংশীদার, সুবিধাভোগী ও সুরক্ষাকারী ছিলেন তাঁদেরও জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপকর্ম প্রতিরোধের জন‍্যও বার্তা প্রদান সম্ভব হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১০১ জন। সব মিলিয়ে এ বছর ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৯২৩ জনে। তাদের মধ্যে ২৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে মশাবাহিত এ রোগে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ করা তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, সর্বশেষ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে তিনজন।

এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় একজন মারা গেছে। নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে সর্বোচ্চ ২৪১ জন ভর্তি হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৭৫ জন, রাজধানীর বাইরে ঢাকা বিভাগে ২০৮, বরিশালে ১৫১, খুলনায় ৫৯, চট্টগ্রামে ১২৫, রাজশাহীতে ৪৫, ময়মনসিংহে ৭৫, রংপুরে ১৯ ও সিলেটে তিনজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

গত অক্টোবর মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২২ হাজার ৫২০ জন, যা এই বছরের এক মাসে সর্বোচ্চ। একই সময়ে ৮০ জন মারা গেছে, যা এ বছরে একক মাসের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ১৫ হাজার ৮৬৬ জন ভর্তি হয়েছিল এবং ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ ছাড়া জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১ ও আগস্টে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মার্চ মাসে কোনো মৃত্যু হয়নি।

চলতি মাসের চার দিনে ৪ হাজার ৬১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে আর মারা গেছে ১৪ জন চিকিৎসাধীন রোগী।

দেশে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। আর মারা গেছে ১ হাজার ৭০৫ জন।

২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১১ জন, ২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২, ২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯, ২০২০ সালে ১ হাজার ৪০৫ এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেতে চাচা-চাচিকে বানান বাবা-মা, ডিএনএ টেস্ট হচ্ছে নাচোলের ইউএনওর পরিবারের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেতে নিজের চাচা-চাচিকে বাবা-মা সাজানোর অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।

তিনি বলেছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের ইউএনও কামাল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রতারণার মাধ্যমে চাকরি নিয়েছেন—এমন অভিযোগ রয়েছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে তাঁর বিভিন্ন সুবিধা নেওয়ার ঘটনায় একাধিক তদন্ত চলছে। এর মধ্যেই কামাল হোসেন ও তাঁর বাবা-মা ও চাচা-চাচির ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

দুদক সূত্র বলছে, ইউএনও কামাল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সুবিধা নিতে নিজের বাবা মো. আবুল কাশেম ও মা মোছা. হাবীয়া খাতুনের নাম বাদ দিয়ে চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আহসান হাবীব ও চাচি মোছা. সানোয়ারা খাতুনকে পিতা-মাতা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা সনদে দেখান।

এই সনদ দেখিয়ে তিনি ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেন এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি কর্মকর্তা হন।

অভিযোগ রয়েছে, এই জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও ভোগ করেছেন কামাল হোসেন।

তাঁর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর মামলা করে দুদক। তদন্ত চলাকালে কমিশন কামাল হোসেনসহ তাঁর বাবা-মা ও চাচা-চাচির ডিএনএ পরীক্ষা করার অনুমোদন দেয়। আদালতের অনুমতি নিয়ে শিগগিরই এই পরীক্ষা হবে।

কামাল হোসেন বর্তমানে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। এর আগে তিনি মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার এবং নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিক্সন, নূর-ই-আলম, তৌফিকাসহ ৫ জনের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন চৌধুরী), নূর-ই-আলম চৌধুরী ও তোফিকা আফতাব। ফাইল ছবি
মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন চৌধুরী), নূর-ই-আলম চৌধুরী ও তোফিকা আফতাব। ফাইল ছবি

ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন চৌধুরী), তাঁর ভাই মাদারীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক পিএস অ্যাডভোকেট তোফিকা আফতাব ওরফে তৌফিকা করিমসহ পাঁচজনের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ এই নির্দেশ দেন।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত এই নির্দেশ দেন। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি আজিজুল হক দিদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ দেওয়া অন্য দুজন হলেন নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রী তারিন হোসেন এবং মাদারীপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও নিক্সন চৌধুরীর পিএস মো. শাহাদাৎ হোসেন।

সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের এসআই মো. মনিরুজ্জামান আয়কর নথি বিবরণী ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্র জব্দের অনুমতি চেয়ে আদালতে পাঁচটি পৃথক আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, অভিযুক্তরা ও তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্জিত অর্থ দিয়ে ফ্ল্যাট, গাড়ি ও জমি ক্রয়সহ মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত থেকে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এ-সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

অনুসন্ধানের সুষ্ঠুতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের স্বার্থে আদালত, ২০১০ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের আয়কর নথি বিবরণী ও এর সঙ্গে থাকা সব আনুষঙ্গিক কাগজপত্র জব্দ করে যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক পিএস তৌফিকা করিম মন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে আদালতে আসামিদের জামিন, নিয়োগ-বাণিজ্য ও বদলির তদবিরসহ নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল অর্থ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চার প্রভাবশালী কূটনীতিক নিয়ে এয়ারবাসের ‘ঢাকা মিশন’

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ২৯
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে, জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লটজ, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। ছবি: আজকের পত্রিকা
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে, জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লটজ, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল অ্যাভিয়েশন খাতে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে এবার সরাসরি কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে ইউরোপের শীর্ষ বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস।

আজ মঙ্গলবার ঢাকায় ফ্রান্স–জার্মান দূতাবাসে ‘বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন গ্রোথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন চার প্রভাবশালী ইউরোপীয় কূটনীতিক।

তাঁরা হলেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে, জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লটজ, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।

অনুষ্ঠানের আয়োজনটি ছিল এয়ারবাসের। তবে কূটনৈতিক উপস্থিতির মধ্য দিয়ে এটি রূপ নেয় একপ্রকার ‘ডিপ্লোমেটিক লবিং’-এ; যা বাংলাদেশের বিমানবহর সম্প্রসারণে এখনো সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় থাকা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রতি এয়ারবাসের আগ্রহের ইঙ্গিত বহন করে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাতা বোয়িং ও ইউরোপের এয়ারবাস—দুই জায়ান্ট কোম্পানি প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

বোয়িং এর মধ্যে ২৫টি উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে আর এয়ারবাস দিয়েছে ১৪টি—যার মধ্যে রয়েছে ১০টি এ৩৫০ ও চারটি এ৩২০ নিও। উভয় প্রতিষ্ঠানই আকর্ষণীয় প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এবার এয়ারবাস কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করতে চাইছে।

আজ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ওই চার ইউরোপীয় কূটনীতিক।

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে বলেন, ফ্রান্স ও ইউরোপের বিমানশিল্পের কেন্দ্রে অবস্থান করছে এয়ারবাস। প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উদ্ভাবনের অনন্য সমন্বয়ই একে বিশ্বজুড়ে বিমান সংস্থাগুলোর এক বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশের এই বিকাশপর্বে এয়ারবাস হতে পারে এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।

ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল সংযোগ ও ভৌগোলিক অবস্থান একে আঞ্চলিক অ্যাভিয়েশন হাব হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। বিমানের বহরে এয়ারবাস যুক্ত হলে এর নমনীয়তা, স্থিতিশীলতা ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আরও বাড়বে।

জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বাড়ছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণি সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিমানের এখন প্রয়োজন আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব উড়োজাহাজ, যেখানে এয়ারবাস শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আঞ্চলিক বিমান পরিবহন হাব হওয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সব সময় পাশে থাকবে।

অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্যিক অংশীদারত্ব আরও গভীর করতে হবে। অ্যাভিয়েশন খাত এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এয়ারবাসের কমার্শিয়াল সেলস ডিরেক্টর (চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ, বাংলাদেশ) রাফায়েল গোমেজ নয়া।

রাফায়েল গোমেজ বলেন, বিশ্বে এখন পর্যন্ত এয়ারবাস ২৫ হাজার ১২৯টি উড়োজাহাজ বিক্রি করেছে, যার মধ্যে ১৬ হাজার ৪৭০টি ইতিমধ্যে ডেলিভারি দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পরিচালিত ফ্লাইটের ৭২ শতাংশেই এয়ারবাস ব্যবহৃত হচ্ছে।

রাফায়েল গোমেজ আরও যোগ করেন, ‘অন্য উড়োজাহাজগুলোর তুলনায় এয়ারবাস পরিচালন ব্যয়ে প্রায় ২০ শতাংশ সাশ্রয়ী। বাংলাদেশেও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস সফলতার সঙ্গে তিনটি এয়ারবাস ব্যবহার করছে। আশা করছি, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত