নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘জাতিসংঘ করিডর’ স্থাপনের কথা ‘গুজব ও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘করিডর নিয়ে আমাদের সঙ্গে কারও কোনো কথা হয়নি, কারও সঙ্গে কথা হবেও না।’
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ‘করিডর’ ধারণার ব্যাখ্যা করে বলেন, এটি সাধারণত জরুরি পরিস্থিতিতে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার একটি ব্যবস্থা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে রাখাইন থেকে কাউকে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। যেহেতু আরাকানে অন্যান্য সরবরাহ রুট দিয়ে মানবিক সাহায্য পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, তাই জাতিসংঘ কেবল বাংলাদেশের কাছে অনুরোধ করেছে, সীমান্ত কাছাকাছি হওয়ায় ত্রাণগুলো ওপারে নিয়ে যেতে বাংলাদেশ যেন সহায়তা করে।
ড. খলিলুর রহমান জোর দিয়ে বলেন, ‘জাতিসংঘ রাখাইনে তার নিজস্ব সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে ত্রাণ পৌঁছাবে। আপনারা জাতিসংঘকে জিজ্ঞেস করেন, প্রমাণ পাবেন। আমরা করিডর নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলিনি এবং বলব না। আরাকানের যে অবস্থা, তাতে করিডরের কোনো প্রয়োজন নেই।’
নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানান, যে প্রয়োজনীয়তা আছে, সেটা হচ্ছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার। মিয়ানমারে ভূমিকম্পের সময় বাংলাদেশ আবেদনের অপেক্ষা না করেই ত্রাণ পাঠিয়েছিল, এটিকে তিনি মানবিক অবস্থান হিসেবে উল্লেখ করেন। তাঁর ধারণা, এই কাজ করতে পারলে সেখানকার পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হবে এবং তখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা শুরু করা সম্ভব হবে।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘যত দিন আরাকান অস্থিতিশীল থাকবে, আমরা প্রত্যাবাসনের কথা বলতেই পারব না। আর তাহলে তো প্রত্যাবাসন কৌশল নিয়েও কথা বলতে পারব না।’ যাঁরা করিডর নিয়ে আলোচনার কথা বলছেন, তাঁদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘অস্তিত্ববিহীন জিনিস নিয়ে কী করে আলাপ করব, যার অস্তিত্ব নাই, সেই বিষয়ে আলাপ কী করে হয়।’
ড. খলিলুর রহমান জানান, বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই ইস্যুকে আন্তর্জাতিক অ্যাজেন্ডায় পুনরায় তুলে ধরার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। এর আগে প্রায় সাত বছর ধরে ইস্যুটি প্রায় উপেক্ষিত ছিল। সাম্প্রতিক গাজা ও ইউক্রেন ইস্যুতে রোহিঙ্গা ইস্যু আরও পেছনে পড়ে গিয়েছিল।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত সেপ্টেম্বরে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যু উত্থাপন করেছিলেন এবং জাতিসংঘকে এই ইস্যুতে একটি সম্মেলন আয়োজন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এতে সাড়া দিয়েছে।’
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সচিবালয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। একটি জাতিগোষ্ঠী নিয়ে জাতিসংঘের এমন আয়োজন বিরল।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পুনর্ব্যক্ত করেন, রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান হলো রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করেছে এবং একটি আন্তর্জাতিক ঐকমত্যে পৌঁছেছে। গত মার্চে জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশে এসে স্পষ্টভাবে বলেছেন, এই সমস্যার সমাধান মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন।
তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজটি ছিল, প্রত্যাবাসনের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মিয়ানমার সরকারের কাছ থেকে কারা ফেরত যাবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে আসা। ২০১৭ সাল থেকে কয়েক দফায় প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গার তথ্য মিয়ানমার সরকারের কাছে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হলেও আট বছর ধরে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
ড. খলিলুর রহমান জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার জান্তা সরকারের বিশেষ দূতের সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে মিয়ানমার প্রথমবারের মতো ইঙ্গিত দেয় যে এই আট লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে আড়াই লাখের যাচাইকরণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজারকে তারা প্রত্যাবাসনযোগ্য বলে চিহ্নিত করেছে। বাকি ৭০ হাজার রোহিঙ্গার ছবি ও কিছু তথ্য নিয়ে সমস্যা ছিল, যা তারা বাংলাদেশের সঙ্গে বসে নিরসন করবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রত্যাবাসনযোগ্য রোহিঙ্গাদের প্রথম তালিকা লাভ করে, যা বিগত সময়ে হয়নি।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া দেখতে গিয়ে যে বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছি, সেটা হলো মিয়ানমার সরকারের দখলে ৯০ ভাগ রাখাইন নেই। এর দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি। আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব। এই আলোচনা একই সমান্তরালে চালু করা হয়েছে।’
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের আরাকান আর্মি সুস্পষ্টভাবে বলেছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া তাদের একটি প্রিন্সিপাল পজিশন; একই কথা মিয়ানমার সরকারও উল্লেখ করেছে। তবে আরাকান আর্মি বলেছে, পরিস্থিতি অনুকূলে হলে তারা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেবে। রাখাইনে যুদ্ধাবস্থা এখনো নিরসন হয়নি।’
ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘রাখাইন অঞ্চলে ব্যাপক খাবার এবং ওষুধের অভাব রয়েছে। ইউএনডিপির রিপোর্ট অনুযায়ী, সেখানে একধরনের ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে, খাবার এবং ওষুধ না পেয়ে তারা আমাদের দেশে চলে আসতে পারে।’
নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, বিশেষ করে, রোহিঙ্গারা সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে আছে এবং তাদেরই বাংলাদেশে চলে আসার প্রবণতা বেশি হতে পারে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে প্রায় আট বছর ধরে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার ভার বহন করছে এবং ভার ধারণের সীমার বাইরে চলে এসেছে। অতিরিক্ত শরণার্থী নেওয়া বাংলাদেশের জন্য সম্ভব নয়।
খলিলুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ বাংলাদেশের সীমান্তে এসে খাদ্য এবং ওষুধের সহায়তা চেয়েছেন। তাঁরা যদি আসা শুরু করেন, তাহলে বাংলাদেশকে নতুন ধরনের সংকটের মুখোমুখি হতে হবে, যা এড়াতে চাইছে সরকার।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আরাকান আর্মিকে জানানো হয়েছে, এই সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। কাউকে এর থেকে বঞ্চিত করা যাবে না এবং এটি কোনো যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে শঙ্কা হচ্ছে, আরাকানে যে নতুন প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, আমরা তাতে রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণের কোনো চিহ্ন দেখছি না।’
তিনি আরাকান আর্মিকে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘কোনো প্রকার জাতিগত নিধন আমরা সহ্য করব না। তারা যদি শুধু রাখাইন দিয়ে পরিচালনা করতে চায়, সেটাও আমরা মেনে নিতে পারব না।’ তিনি আশা করেন, তারা এর সদুত্তর দেবে এবং বাংলাদেশ এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।
পরিশেষে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সব বিকল্প বাংলাদেশের হাতে থাকবে এবং সরকার তার সব কূটনৈতিক সক্ষমতা দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করবে।
আরও খবর পড়ুন:
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘জাতিসংঘ করিডর’ স্থাপনের কথা ‘গুজব ও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘করিডর নিয়ে আমাদের সঙ্গে কারও কোনো কথা হয়নি, কারও সঙ্গে কথা হবেও না।’
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ‘করিডর’ ধারণার ব্যাখ্যা করে বলেন, এটি সাধারণত জরুরি পরিস্থিতিতে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার একটি ব্যবস্থা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে রাখাইন থেকে কাউকে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। যেহেতু আরাকানে অন্যান্য সরবরাহ রুট দিয়ে মানবিক সাহায্য পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, তাই জাতিসংঘ কেবল বাংলাদেশের কাছে অনুরোধ করেছে, সীমান্ত কাছাকাছি হওয়ায় ত্রাণগুলো ওপারে নিয়ে যেতে বাংলাদেশ যেন সহায়তা করে।
ড. খলিলুর রহমান জোর দিয়ে বলেন, ‘জাতিসংঘ রাখাইনে তার নিজস্ব সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে ত্রাণ পৌঁছাবে। আপনারা জাতিসংঘকে জিজ্ঞেস করেন, প্রমাণ পাবেন। আমরা করিডর নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলিনি এবং বলব না। আরাকানের যে অবস্থা, তাতে করিডরের কোনো প্রয়োজন নেই।’
নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানান, যে প্রয়োজনীয়তা আছে, সেটা হচ্ছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার। মিয়ানমারে ভূমিকম্পের সময় বাংলাদেশ আবেদনের অপেক্ষা না করেই ত্রাণ পাঠিয়েছিল, এটিকে তিনি মানবিক অবস্থান হিসেবে উল্লেখ করেন। তাঁর ধারণা, এই কাজ করতে পারলে সেখানকার পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হবে এবং তখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা শুরু করা সম্ভব হবে।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘যত দিন আরাকান অস্থিতিশীল থাকবে, আমরা প্রত্যাবাসনের কথা বলতেই পারব না। আর তাহলে তো প্রত্যাবাসন কৌশল নিয়েও কথা বলতে পারব না।’ যাঁরা করিডর নিয়ে আলোচনার কথা বলছেন, তাঁদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘অস্তিত্ববিহীন জিনিস নিয়ে কী করে আলাপ করব, যার অস্তিত্ব নাই, সেই বিষয়ে আলাপ কী করে হয়।’
ড. খলিলুর রহমান জানান, বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই ইস্যুকে আন্তর্জাতিক অ্যাজেন্ডায় পুনরায় তুলে ধরার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। এর আগে প্রায় সাত বছর ধরে ইস্যুটি প্রায় উপেক্ষিত ছিল। সাম্প্রতিক গাজা ও ইউক্রেন ইস্যুতে রোহিঙ্গা ইস্যু আরও পেছনে পড়ে গিয়েছিল।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত সেপ্টেম্বরে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যু উত্থাপন করেছিলেন এবং জাতিসংঘকে এই ইস্যুতে একটি সম্মেলন আয়োজন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এতে সাড়া দিয়েছে।’
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সচিবালয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। একটি জাতিগোষ্ঠী নিয়ে জাতিসংঘের এমন আয়োজন বিরল।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পুনর্ব্যক্ত করেন, রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান হলো রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করেছে এবং একটি আন্তর্জাতিক ঐকমত্যে পৌঁছেছে। গত মার্চে জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশে এসে স্পষ্টভাবে বলেছেন, এই সমস্যার সমাধান মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন।
তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজটি ছিল, প্রত্যাবাসনের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মিয়ানমার সরকারের কাছ থেকে কারা ফেরত যাবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে আসা। ২০১৭ সাল থেকে কয়েক দফায় প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গার তথ্য মিয়ানমার সরকারের কাছে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হলেও আট বছর ধরে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
ড. খলিলুর রহমান জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার জান্তা সরকারের বিশেষ দূতের সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে মিয়ানমার প্রথমবারের মতো ইঙ্গিত দেয় যে এই আট লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে আড়াই লাখের যাচাইকরণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজারকে তারা প্রত্যাবাসনযোগ্য বলে চিহ্নিত করেছে। বাকি ৭০ হাজার রোহিঙ্গার ছবি ও কিছু তথ্য নিয়ে সমস্যা ছিল, যা তারা বাংলাদেশের সঙ্গে বসে নিরসন করবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রত্যাবাসনযোগ্য রোহিঙ্গাদের প্রথম তালিকা লাভ করে, যা বিগত সময়ে হয়নি।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া দেখতে গিয়ে যে বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছি, সেটা হলো মিয়ানমার সরকারের দখলে ৯০ ভাগ রাখাইন নেই। এর দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি। আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব। এই আলোচনা একই সমান্তরালে চালু করা হয়েছে।’
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের আরাকান আর্মি সুস্পষ্টভাবে বলেছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া তাদের একটি প্রিন্সিপাল পজিশন; একই কথা মিয়ানমার সরকারও উল্লেখ করেছে। তবে আরাকান আর্মি বলেছে, পরিস্থিতি অনুকূলে হলে তারা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেবে। রাখাইনে যুদ্ধাবস্থা এখনো নিরসন হয়নি।’
ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘রাখাইন অঞ্চলে ব্যাপক খাবার এবং ওষুধের অভাব রয়েছে। ইউএনডিপির রিপোর্ট অনুযায়ী, সেখানে একধরনের ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে, খাবার এবং ওষুধ না পেয়ে তারা আমাদের দেশে চলে আসতে পারে।’
নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, বিশেষ করে, রোহিঙ্গারা সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে আছে এবং তাদেরই বাংলাদেশে চলে আসার প্রবণতা বেশি হতে পারে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে প্রায় আট বছর ধরে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার ভার বহন করছে এবং ভার ধারণের সীমার বাইরে চলে এসেছে। অতিরিক্ত শরণার্থী নেওয়া বাংলাদেশের জন্য সম্ভব নয়।
খলিলুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ বাংলাদেশের সীমান্তে এসে খাদ্য এবং ওষুধের সহায়তা চেয়েছেন। তাঁরা যদি আসা শুরু করেন, তাহলে বাংলাদেশকে নতুন ধরনের সংকটের মুখোমুখি হতে হবে, যা এড়াতে চাইছে সরকার।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আরাকান আর্মিকে জানানো হয়েছে, এই সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। কাউকে এর থেকে বঞ্চিত করা যাবে না এবং এটি কোনো যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে শঙ্কা হচ্ছে, আরাকানে যে নতুন প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, আমরা তাতে রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণের কোনো চিহ্ন দেখছি না।’
তিনি আরাকান আর্মিকে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘কোনো প্রকার জাতিগত নিধন আমরা সহ্য করব না। তারা যদি শুধু রাখাইন দিয়ে পরিচালনা করতে চায়, সেটাও আমরা মেনে নিতে পারব না।’ তিনি আশা করেন, তারা এর সদুত্তর দেবে এবং বাংলাদেশ এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।
পরিশেষে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সব বিকল্প বাংলাদেশের হাতে থাকবে এবং সরকার তার সব কূটনৈতিক সক্ষমতা দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করবে।
আরও খবর পড়ুন:
সম্প্রতি, একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর লোগো ব্যবহার করে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরির অপচেষ্টা চলছে।-সেনাবাহিনী।
২ ঘণ্টা আগেসারজিস আলমের ফেসবুক পোস্টে কমেন্ট করে বরখাস্ত হয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মো. নাজমুল হুদা। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কমেন্ট করার ‘অপরাধে’ ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
২ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করবেন না। তাঁর ক্ষমতা প্রয়োজন নেই। কিন্তু একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ড. ইউনূসকে দরকার আছে। আজ শুক্রবার ফেসবুক স্ট্যাটাসে
৩ ঘণ্টা আগেঈদুল আজহার সময় ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে পশু কোরবানি বন্ধের নির্দেশনা দিয়ে বিতর্কে জড়ানোর পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা শাবাব বিন আহমেদের সেখানকার উপ-হাই কমিশনার নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। তাকে নেদারল্যান্ডস থেকে সরাসরি দেশে ফিরতে বলা হয়েছে। আগামী মাসে সেখানে তাঁর যোগদানের কথা ছিল।
৭ ঘণ্টা আগে