Ajker Patrika

হাসিনার পতনের পর বেড়েছে মামলা ও অভিযোগপত্র

  • আগের বছরের দ্বিগুণ অভিযোগের অনুসন্ধান
  • ৭০ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক
  • অনুসন্ধান হওয়া অভিযোগের ২৪ শতাংশের ক্ষেত্রে মামলা দায়ের
  • ১৯০ কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ
সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা 
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮: ২৬
হাসিনার পতনের পর বেড়েছে মামলা ও অভিযোগপত্র

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে মামলা দায়ের ও অভিযোগপত্র দাখিলের ক্ষেত্রে গত দুই দশকের রেকর্ড ভেঙেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুর্নীতিবিরোধী সাংবিধানিক সংস্থাটির ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে প্রতিবেদনটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছর অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া মামলা দায়ের ও অভিযোগপত্র দাখিলের সংখ্যার ক্ষেত্রে প্রতিবছরই তার আগের বছরের চেয়ে অগ্রগতি হয়েছে।

বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪-এর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দুদকে আসা মোট ১৫ হাজার ৮৪২টি অভিযোগের মধ্যে ১ হাজার ৮৯৪টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি মোট অভিযোগের ১১.৯৫ শতাংশ, যা ২০২৩ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। আর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া অভিযোগের প্রায় ২৪ শতাংশ ক্ষেত্রে মামলা করেছে দুদক।

গত বছর মামলা ও অভিযোগপত্র প্রদানের হারও বেড়েছে। ২০২৪ সালে বিভিন্ন অভিযোগে দুদক ৪৫১টি মামলা করেছে। তদন্তের পর ৪০৩টি মামলাতেই অভিযোগপত্র দিয়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বছরওয়ারি মামলা দায়েরের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৩৬৩, ৩৪৮, ৩৪৭, ৪০৬ ও ৪০৪টি। আর এই পাঁচ বছরে অভিযোগপত্র অনুমোদন করা হয়েছে যথাক্রমে ২৬৭, ২২৮, ২৬০, ২২৪ ও ৩৬৩টি। হিসাবে দেখা যায়, আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে ৪৭টি মামলা ও ৪০টি অভিযোগপত্র বেশি হয়েছে।

২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে দুদকে জমা পড়া অভিযোগ ও অনুসন্ধানের পরিসংখ্যান বলছে, এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে কম অভিযোগ জমা পড়েছিল করোনা অভিঘাতের সময় ২০২১ সালে। সে বছর ১৪ হাজার ৭৮৯টি অভিযোগ জমা পড়ে। আর সবচেয়ে বেশি অভিযোগ পাওয়া যায় ২০১৯ সালে; ২১ হাজার ৩৭১টি।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দুদকে জমা পড়া অভিযোগের মধ্যে অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা অভিযোগের হার সবচেয়ে বেশি ছিল ২০১৯ সালে (৮ শতাংশ)। অন্যদিকে অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা অভিযোগের হার সবচেয়ে কম ছিল ২০২১ সালে (৩ দশমিক ৬০ শতাংশ)।

তবে অনুসন্ধান ও মামলার সংখ্যা বাড়লেও ২০২৪ সালে সাজার হার কম ছিল। সে বছর সাজার হার ছিল ৪৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। এর আগে ২০২৩, ২০২২, ২০২১, ২০২০ সালে সাজা হওয়ার হার ছিল যথাক্রমে ৬৭ দশমিক ১৩ শতাংশ, ৬৪ দশমিক ১৭ শতাংশ, ৬০ শতাংশ ও ৭২ শতাংশ।

দুদক-সংশ্লিষ্টরা দুদকের অভিযোগ অনুসন্ধান, মামলা ও অভিযোগপত্রের সংখ্যা বৃদ্ধির বড় কারণ হিসেবে দীর্ঘ সময় ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁদের মতে, গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের লোকজন বা তাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে না পারায় মামলা ও অভিযোগপত্রের সংখ্যা আগে কম ছিল। দলটি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এসব বাধা কেটে গেছে বলে মনে করেন তাঁরা। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেনের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বার্ষিক প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের আগে এ সম্পর্কে কথা বলতে রাজি হননি।

দুদকের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার হার বেড়ে যাওয়ার প্রশংসা করেছেন কমিশনের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গত এক যুগের চর্চায় এ মানসিকতা তৈরি হয়েছিল। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর কমিশনের মানসিকতার বড় পরিবর্তন হয়েছে। স্বাধীন কমিশনের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। এর ধারাবাহিকতা দুদককে ধরে রাখতে হবে।’

২০২৪ সালে ক্রোক ও অবরুদ্ধ সম্পদ

২০২৪ সালে দুদক ৬৯টি নথিতে ১৭০ কোটি ৫৫ লাখ ৩২ হাজার ৩৩ টাকার সম্পদ ক্রোক করেছে। যার মধ্যে রয়েছে ২৮১ একর জমি, ৮৪টি বাড়ি, ৮০টি ফ্ল্যাট, ১৬টি প্লট, একটি রিসোর্ট, একটি কৃষি খামার, একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও একটি বাণিজ্যিক স্পেস। এ ছাড়া, ৩৮টি নথিতে ১৯০ কোটি ৯০ লাখ ১১ হাজার ১৪০ টাকা অবরোধ করা হয়েছে।

বিচারাধীন মামলা

দুদকের মহানগর বিশেষ জজ আদালতে ২০২৪ সালে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩ হাজার ৪১০টি। এর মধ্যে বিচার চলমান রয়েছে ২ হাজার ৯৮৮টির। স্থগিত মামলার সংখ্যা ৪০০টি। ২৯৫টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। অভিযুক্তের সাজা হয়েছে ১৩৮টি মামলায়। ১১৬টি মামলার আসামি খালাস পেয়েছেন। অন্যান্যভাবে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার সংখ্যা ৪১টি।

স্থগিত মামলার পরিসংখ্যান

২০২৪ সালে বিচারিক আদালতে বা নিম্ন আদালতে স্থগিত মামলার সংখ্যা ৪০০টি। এ ছাড়া হাইকোর্ট বিভাগে ৪১৫টি ও আপিল বিভাগে ১৫০টি মামলা স্থগিত রয়েছে।

দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা রাষ্ট্রপতির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। প্রথামতো রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়ার পরই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে থাকে সংস্থাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তামাক চাষ দারিদ্র্য কমায় না, উল্টো খাদ্য নিরাপত্তায় বড় হুমকি— কর্মশালায় বক্তারা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশে দ্রুত বাড়ছে তামাক চাষ। কৃষিজমি দখল করে তামাকের এই সম্প্রসারণ শুধু কৃষিকে নয়, দেশের খাদ্যনিরাপত্তাকেও ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলছে। তামাক কোম্পানিগুলোর প্রচারণায় বলা হয়, তামাক চাষে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বাস্তবে যেসব জেলায় তামাক চাষ হয়, সেসব এলাকায় দারিদ্র্যের হার তুলনামূলকভাবে বেশি; যা কোম্পানির প্রচারণার সম্পূর্ণ বিপরীত। তামাকপাতা রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহার ও কোম্পানির আগ্রাসী প্রভাব কৃষকদের বিভ্রান্ত করছে, স্থানীয় অর্থনীতিতে বাড়ছে ক্ষতি।

গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো (বিইআর) মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা। কর্মশালার আয়োজন করে বিইআর, বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) এবং বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি)। কর্মশালার বিষয় ছিল, ‘কোম্পানির আগ্রাসনে বাড়ছে তামাক চাষ, জনস্বাস্থ্য ও খাদ্যনিরাপত্তায় হুমকি’। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৩৫ সাংবাদিক অংশ নেন।

কর্মশালার সেশন পরিচালনা করেন তামাক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক গবেষক ও বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সুশান্ত সিনহা। তিনি বলেন, তামাকপাতা রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার তামাক চাষ বৃদ্ধির প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। শুল্ক প্রত্যাহারের পর তামাক রপ্তানির পাশাপাশি চাষও বেড়েছে, যা পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনছে। কোম্পানিগুলো ‘তামাক চাষ লাভজনক’—এমন একটি মিথ্যা তথ্য মানুষকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয়েছে। বাস্তবতা হলো, যেসব জেলায় তামাক চাষ হয়, দারিদ্র্য সূচকে সেসব জেলার অবস্থান সবার ওপরে।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ড. রুমানা হক বলেন, তামাক চাষ থেকে বের হয়ে আসার উপায় খুঁজতে হবে। এর প্রথম পদক্ষেপ হলো, দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা। কৃষকেরা যেন বিকল্প ফসলের ন্যায্যমূল্য পান, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে তামাকপাতা ও তামাকজাত পণ্যের রপ্তানিতে পুনরায় ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে হবে। কারণ, তামাক থেকে যে রাজস্ব আয় হয়, তার দ্বিগুণের বেশি ব্যয় হয় তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায়।

বিএজেএফ সভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন বলেন, তামাক কোম্পানি ১০টি খাতে ব্যাপক ক্ষতি করছে। তাদের কর ফাঁকির প্রকৃত হিসাব নেই। তামাক চাষের কারণে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতি বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকিও বাড়ছে। তামাক চাষের কারণে দেশে প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।

সাহানোয়ার সাইদ শাহীন অভিযোগ করেন, তামাকপাতার দাম নির্ধারণে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কমিটিতে কোম্পানির প্রতিনিধিরাই প্রভাবশালী। যাঁরা তামাক কিনবেন, তাঁরাই আবার দাম ঠিক করবেন—এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

জনস্বাস্থ্যবিষয়ক নীতি বিশ্লেষক ও বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম তাহিন বলেন, হাইকোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশনের আদেশে বলা হয়েছিল, দেশে তামাক চাষ কমাতে হবে এবং নতুন কোনো তামাক কোম্পানিকে অনুমতি দেওয়া যাবে না। কিন্তু সেই আদেশ অমান্য করে নতুন করে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এমপিওভুক্তির দাবিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিক্ষোভ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ বুধবার প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ছবি: ফোকাস বাংলা
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ বুধবার প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ছবি: ফোকাস বাংলা

দেশের সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়কে এমপিওভুক্ত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ সময় দাবি মানা না হলে আগামী রোববার থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে আজ বুধবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচিতে পরিষদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন এর সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি, এমপিওভুক্তি ও প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে; বিশেষ শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষা ভাতা তিন হাজার টাকা নিশ্চিত করা; শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিলসহ শিক্ষা উপকরণ ও খেলাধুলার সরঞ্জাম প্রদান; থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন করা; ছাত্রছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ব্যক্তিদের কোটা অনুযায়ী চাকরি সুনিশ্চিত করতে হবে।

কর্মসূচিতে ইলিয়াস রাজ বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক দাবি সরকারকে মেনে নিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ফিরব না।’

পরিষদের নেতারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৯ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখে দেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিশুদের মা-বাবার পরেই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাদের মানসিক উন্নয়নে কাজ করেন।

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিমা খাতুন জানান, ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু করে। এতে ২ হাজার ৭৪১টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে, যার মধ্যে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ১ হাজার ৭৭২টি আবেদন গৃহীত হয়। পরে অফলাইনে আরও প্রায় ২০০টি আবেদন নেওয়া হয়। এরপর বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা, ২০১৯ অনুযায়ী জাতীয় স্বীকৃতি ও এমপিও কমিটি গঠন করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক, খ, গ–এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করে কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু তা অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে। এর ফলে প্রায় ৬৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন এবং শিক্ষা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাপানে ১ কোটি শ্রমবাজারের সুযোগ কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
জাপানের কৃষি, বন ও মৎস্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিকবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার ওয়াতানাবে ইয়োইচির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। ছবি: সংগৃহীত
জাপানের কৃষি, বন ও মৎস্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিকবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার ওয়াতানাবে ইয়োইচির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তিকে জাপানের শ্রমবাজারে আরও বেশি অন্তর্ভুক্ত করতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) টোকিওতে জাপানের কৃষি, বন ও মৎস্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিকবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার ওয়াতানাবে ইয়োইচির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ সময় জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে সিনিয়র সচিব বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং বিশেষ করে, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে জাপান সরকারের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ শ্রমিকের প্রয়োজন হবে—বাংলাদেশ এই বিশাল সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে চায়।

সিনিয়র সচিব জানান, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে দুটি সহযোগিতা স্মারক ও দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। একই সঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ ‘জাপান সেল’ গঠন করা হয়েছে, যা জাপানি ভাষা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্প্রসারণে কাজ করছে।

সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা স্পেসিফায়েড স্কিল্ড ওয়ার্কার (এসএসডব্লিউ) কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশে পাঁচটি ক্ষেত্রে দক্ষতা পরীক্ষা চালু করায় জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি খাদ্য ও পানীয় উৎপাদন, খাদ্য পরিবেশন শিল্প, বনশিল্পসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার পরিধি বাড়ানোর অনুরোধ জানান।

ভাইস মিনিস্টার ওয়াতানাবে ইয়োইচি এ প্রস্তাবে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে জাপান দূতাবাস নতুন খাত অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।

সাক্ষাৎ শেষে সিনিয়র সচিব ভাইস মিনিস্টারকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে দক্ষতা উন্নয়ন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানে দুই দেশের সহযোগিতা আরও জোরদার হয়।

পরে ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া জাপানের শীর্ষ জনশক্তি গ্রহণকারী সংস্থা আইএম জাপান অফিস পরিদর্শন করেন এবং সংস্থার প্রধান নির্বাহী কানামোরি হিতোশির সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে জানানো হয়, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ থেকে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেইনি ও এসএসডব্লিউ কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে অন্তত ৩০০ জনে উন্নীত করা হবে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিনিয়র সচিব টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের অডিটরিয়ামে আয়োজিত বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ২৮
খুরশীদ আলম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
খুরশীদ আলম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬)-এর বিধান অনুযায়ী তাঁকে অপসারণ করেছেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের তদন্তে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার তাঁর পদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে অযোগ্য হয়ে পড়েছেন বিধায় রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬)-এর বিধান অনুযায়ী তাঁকে অপসারণ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত