Ajker Patrika

মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা সভা

বিদেশি এয়ারলাইনসের জিএসএ নিয়োগ ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব

  • কার্যকর নজরদারি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার তাগিদ।
  • এয়ারলাইনসগুলো ‘প্রয়োজন বুঝে’ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
  • ৭০টির বেশি সংস্থা স্থানীয় জিএসএ দিয়ে কাজ চালায়।
মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা
বিদেশি এয়ারলাইনসের জিএসএ নিয়োগ ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব

বাংলাদেশে বিদেশি বিমান সংস্থাগুলোর জন্য জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) নিয়োগের বিষয়টি ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে অংশীজনদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রস্তাব করা হয়। এর আগে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর জিএসএ নিয়োগ বাধ্যতামূলক করার বিধান একেবারেই বাতিল করা হতে পারে, এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছিল।

মন্ত্রণালয়ের সভায় উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জোর দিয়ে বলেছেন, সরকার জাতীয় স্বার্থরক্ষা এবং বিমান চলাচল খাতে ন্যায়বিচার ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি কৃত্রিম টিকিট সংকট সৃষ্টি, অযৌক্তিক ভাড়া বৃদ্ধি, মানব পাচারে সহায়তা করে এমন কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জিএসএ নিয়োগের বিষয়ে আলোচনায় অংশীজনেরা একে ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব করেন, যাতে এয়ারলাইনসগুলো তাদের পরিচালনগত প্রয়োজনীয়তা এবং ব্যবসায়িক কৌশলের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

কোনো এয়ারলাইনসের পক্ষ থেকে যেসব প্রতিষ্ঠানকে কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা অঞ্চলে তাদের সেবা বিক্রি ও বিপণনের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাদেরই জিএসএ বলে। জিএসএরা বিমানের টিকিট বিক্রি ছাড়াও গ্রাহকসেবা, প্রচার, বিপণন ও ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম পরিচালনা করে।

সভার আলোচনায় তিনটি বিষয় অগ্রাধিকার পায়। প্রথমত, সব অংশীদারের ঐচ্ছিক সম্মতি কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, অধিকতর কার্যকর পর্যবেক্ষণ, জবাবদিহি ও পরিচালনগত দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য নজরদারি কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে। তৃতীয়ত, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং ন্যায্যতা ও যাত্রীকল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রণমূলক পরিবর্তনের বিষয় বিবেচনা করতে হবে। এই বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশ বিমান প্রতিনিধিদের (বিএআর) অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সভায় বিএআর প্রতিনিধিরা সরকারের উদ্যোগে পূর্ণ সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে উপদেষ্টা জনগণের স্বার্থ সমুন্নত রাখার জন্য সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

বিদেশি বিমান সংস্থাগুলো কোনো দেশে সরাসরি নিজস্ব অফিস চালু না করে স্থানীয়ভাবে জিএসএ নিয়োগ করে থাকে। এতে তাদের খরচ যেমন কমে যায়, তেমনি পূর্ণাঙ্গ কার্যালয় পরিচালনার ঝামেলাও এড়ানো সম্ভব হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ৭০টির বেশি বিদেশি বিমান সংস্থা স্থানীয় জিএসএর মাধ্যমে ব্যবসা চালাচ্ছে। জিএসএ কার্যক্রমে সরাসরি পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ কাজ করছেন। পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল আরও প্রায় ১৫ হাজার।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ উইং কমান্ডার (অব.) এ টি এম নজরুল ইসলাম সভার আগে এ বিষয়ে বলেন, জিএসএ খাত একটি শক্তিশালী নিয়োগদাতা হিসেবে কাজ করেছে। এই ব্যবস্থা উঠে গেলে শুধু চাকরির সংখ্যা কমবে না, এই খাতের দক্ষ জনবল বিদেশে চলে যাবে।

সভার আগে এভিয়েশন খাতের সংশ্লিষ্ট অনেকে তাই বলেছিলেন, জিএসএ নিয়োগ বাধ্যতামূলক করার বিধান বাতিল করে দিলে সরকারের রাজস্ব আয়ের ক্ষতির পাশাপাশি কর্মসংস্থানেও বড় ধাক্কা লাগতে পারে। টিকিটের দামও বাড়ার আশঙ্কা করেছিলেন কেউ কেউ। বিশেষজ্ঞদের অনেকের ধারণা, জিএসএ বাতিল হলে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো স্থানীয় তদারকি কমিয়ে দেবে, বাজারে জবাবদিহি থাকবে না। ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি হবে।

জিএসএ নিয়োগ করা বাধ্যতামূলক করার আগে একবার বেশ কয়েকটি বিদেশি এয়ারলাইনস হঠাৎ বাংলাদেশে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তারা সরকারের ট্যাক্স-ভ্যাটসহ বিপুল অঙ্কের রাজস্ব বকেয়া রেখেছিল। সেই অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার জিএসএ নিয়োগ বাধ্যতামূলক করে ২০১৭ সালে সিভিল এভিয়েশন অ্যাক্ট প্রণয়ন করে। সে আইন পর্যালোচনা করে বিধানটি সংশোধনের লক্ষ্যে এবারের বৈঠকের আয়োজন করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত