আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বছরের শুরুতে ৭ জানুয়ারি একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা করেছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে নির্বাচন নিয়ে মাঠে সেই অর্থে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু সেই নির্বাচন ঘিরে বছরের শুরু থেকেই দেখা যায় রাজনৈতিক কোন্দল। এরপর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, ঘিরে তোলপাড় ছিল সারা দেশ। একপর্যায়ে নজিরবিহীনভাবে ভেঙে পড়ে পুলিশি ব্যবস্থা। চোর ডাকাত খুন ছিনতাইকারীদের দাপট ছেড়ে যায় ঢাকাসহ সারা দেশে।
তবে বছরের সবচেয়ে আলোচনা তৈরি করে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বিচার গুলি চালানো। তাদের হাতে খুন হয় প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। এরপর যখন শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয় তখন জনরোষের ভয়ে শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ সদস্যদের বড় অংশ আত্মগোপনে চলে যায়। বিদেশে পালিয়ে যায় কেউ কেউ। চাকরিচ্যুত, বদলি আর থানায় থানায় হামলার ঘটনা ঘটতে থাকে। ভঙ্গুর অবস্থা দেখা যায় পুলিশ বাহিনীতে। বছর শেষ হতে নিলেও সেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি আর নিয়ন্ত্রণে আসে না।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যখন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়। তখন আসলে কিছু থাকে না। পরিস্থিতি তখন অবনতি হয়। অপরাধীরা সহ সুবিধাবাদীরা সুযোগ নেয়।
সংঘাত-সহিংসতায় বছর শুরু
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগের সাজানো এই নির্বাচন ঘিরেও বেশ কিছু সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রিক ৩৪৫টি সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন সাতজন। আহত হন পুলিশের সদস্যসহ সাড়ে চার শতাধিক ব্যক্তি।
ওই নির্বাচনের দুই দিন আগে ৫ জানুয়ারি যশোরের বেনাপোল থেকে ঢাকায় আসা ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়। এতে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়। ওই আগুন কারা দিয়েছিল, তা এখনো শনাক্ত হয়নি।
কলকাতায় সংসদ সদস্য হত্যা
এই বছরের অন্যতম আলোচিত ঘটনা ছিল কলকাতায় বাংলাদেশের তৎকালীন সংসদ সদস্য (ঝিনাইদহ-৪) আনোয়ারুল আজীমকে নৃশংসভাবে হত্যা। ১২ মে ভারতে গিয়ে পরদিন রাতে কলকাতার একটি বহুতল আবাসিক ভবনে তাঁকে হত্যার পর মরদেহ টুকরা টুকরা করা হয়। পরে কলকাতার দুটি স্থান থেকে কিছু হাড় ও মাংস উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার সাত মাস পর ২০ ডিসেম্বর কলকাতার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আনোয়ারুলের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌসের (ডরিন) ডিএনএ নমুনার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া ওই দেহাবশেষের ডিএনএর মিল পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছিল, দেশে খুনের পরিকল্পনা করে সেটা বাস্তবায়ন করা হয় কলকাতায়। এই ঘটনায় কলকাতায় এবং সেখান থেকে দেশে ফিরে আসা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এমনকি ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককেও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এই ঘটনায় ঢাকায় ও কলকাতার আদালতে একাধিক আসামি জবানবন্দি দিলেও তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।

বেইলি রোডে অবহেলার আগুনে ৪৬ মৃত্যু
২০২৪ সালে বড় ধরনের ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্যে ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনে (সাততলা) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড অন্যতম। এতে নারী, শিশুসহ ৪৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ওই ভবন দীর্ঘদিন ধরেই অগ্নিঝুঁকিতে ছিল। এটাকে নেহাত দুর্ঘটনা নয়, প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার নির্মম উদাহরণ হিসেবে দেখছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। যদিও ইমারত বিধিমালা ও অগ্নিনিরাপত্তা–সংক্রান্ত নির্দেশনা না মানার জন্য তদারক সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গণ-অভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি
এ বছরের ৫ জুন যখন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করে দেয়, তখন কারও ধারণাই ছিল না যে পরের দুই মাসের মধ্যে সেটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটবে। শেষ পর্যন্ত এটি শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের টানা শাসন অবসানের দিকে নিয়ে গেছে। সেদিন হাইকোর্টের সেই আদেশটি অনেক পত্রিকায় তেমন গুরুত্বও পায়নি। কিন্তু পরবর্তী পাঁচ সপ্তাহের মাথায় সেই বিক্ষোভের জেরে এক সময় ১৬ বছর ধরে কঠোরভাবে বিরোধী দলকে দমন করে একটানা ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাকে গোপনে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়।

আন্দোলনটি শুরুতে ছাত্রদের কোটা সংস্কার কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার, নানা বয়সের লাখো মানুষ অংশ নিতে শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের নজিরবিহীন সংঘাত যেন থামে না। একপর্যায়ে কারফিউও জারি করা হয়। প্রথম দিকে আন্দোলন দমাতে ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের গুলিতে মারা যান প্রায় দুই হাজার জন সাধারণ মানুষ।
সারা দেশে কোথাও পুলিশ ছিল না
গণ আন্দোলন ও সহিংসতার মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নজিরবিহীনভাবে পুলিশ ছাড়া একদিন ছিল বাংলাদেশ। যেখানে অনেকগুলো থানা ফাঁকা পড়েছিল, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কোথাও কাজ করেনি পুলিশ।
ছাত্র-জনতার রাজপথ দখলে নেওয়ার তুমুল আন্দোলনের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর থেকেই দেশজুড়ে থানাসহ পুলিশের স্থাপনাগুলোতে একের পর এক হামলা হতে থাকে। নির্বিচারে আক্রমণ হতে থাকে থানায়, ভাঙচুর ও লুটপাটও করা হয় অনেক থানায়।
এসব হামলায় বহুসংখ্যক পুলিশ হতাহত হলে অন্যরা নিরাপদে সরে যেতে থাকেন। এতে করে এমন নজিরবিহীন অবস্থা তৈরি হয় বলে জানায় পুলিশ কর্মকর্তারা। জীবন বাঁচাতে আত্মগোপন করেন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ বেশির ভাগ সদস্য। যে কারণে থানাগুলো ছিল পুলিশ শূন্য ও অরক্ষিত।
মব জাস্টিস চলে কয়েক মাস
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় দেশজুড়ে বেশ কিছু হতাহত ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সরকার শক্ত অবস্থান না নিতে পারায় এসব ঘটনা বাড়তে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনিতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় যা উদ্বেগ ও নিন্দার ঝড় উঠে।
ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে দুই দফায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। প্রায় একইভাবে জাবির একদল শিক্ষার্থীর দফায় দফায় মারধরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা প্রাণ হারান। বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় গ্রামবাসী পিটিয়ে মেরেছে এক সন্দেহভাজন গরুচোরকে। এ ঘটনাগুলোকে আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।

বিশেষ করে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। প্রতিবাদমুখর হয় সংস্কার ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে সদ্য গঠিত সংগঠনগুলো। কোটাবিরোধী ও হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারীরা এ ধরনের ঘটনার নিন্দা করে নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন।
পুলিশের তথ্য বলছে, সারা দেশে ২৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে মব জাস্টিসের নামে। নির্যাতন, মারধর, লাঞ্ছনা, হামলার ঘটনা অসংখ্য। একের পর এক ঘটনায় দেশে নতুন আতঙ্ক ও উদ্বেগ তৈরি করেছে মব জাস্টিস। অন্তর্বর্তী সরকারের হুঁশিয়ারিও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া রোধ করতে পারে না।
৫০ হাজারের বেশি পুলিশ বদলি
হাসিনা সরকারের পতনের পর নানা সংকট, সীমাবদ্ধতা আর বিপর্যয় কাটিয়ে নতুন রূপে ফেরার চেষ্টায় করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দ্রুত বাহিনীর গতি ফেরানো, অন্যদিকে জনআস্থা অর্জন। এ দুই চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে চলছে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
৫ আগস্টের পর প্রতিদিন পুলিশের বিভিন্ন পদে আসছে নতুন মুখ। গত কয়েক মাসে বদলি ও পদায়ন পেয়েছে ঝড়ের গতি। এ সময়ে সারা দেশে পোশাকধারী দুই লাখ দুই হাজার পুলিশের বিপরীতে রদবদল করা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য। সে হিসাবে প্রায় ৩০ শতাংশ পুলিশের চেয়ার বদলে গেছে। অল্প সময়ে এত সংখ্যক পুলিশ সদস্যের কর্মস্থল বদলের ঘটনা নজিরবিহীন।
৬৪ জেলার পুলিশ, সব রেঞ্জ ডিআইজি, মহানগর কমিশনার এবং সব থানার ওসি পদে আসে নতুন মুখ। পুলিশে এককভাবে সবচেয়ে বড় ইউনিট হলো ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অন্তত ৩২ হাজার সদস্য এখানে কাজ করেন। এ পর্যন্ত এখানকার ১৮ হাজার সদস্যকে বদলি করা হয়েছে। যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে ডিএমপির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে ঢুকছেন, তাদের দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ ও উদ্দীপনা। রাজধানীর মতো জায়গায় নতুন পরিবেশে কাজের ধরন নিয়ে সম্যক ধারণা দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, কাজে গতি আনতে এই বদলি। গেল দেড় দশকে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ায় পুলিশ। গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও দেখা গেছে। পুলিশ এ পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার চেষ্টায় আছে।
আনসার বিদ্রোহ
রাজধানীর সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই এটা একটা বড় ঘটনা। সচিবালয়ে আনসারদের তোপের মুখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অন্তত ৪০ জন আহত হন। পরে এ ঘটনায় সচিবালয় ও আশপাশের এলাকা থেকে দুই নারী সদস্যসহ প্রায় চার শতাধিক আনসার সদস্যকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মানুষ নিজেদের মত প্রকাশ করেন। জাতির ক্রান্তি লগ্নে এ বাহিনীর আচরণে ক্ষুব্ধ হন সবাই। অনেকেই আনসার বাহিনীকে বিলুপ্তির দাবিও জানান।
র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ গুম কমিশনের
পুলিশের ‘বিতর্কিত’ এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশ করে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গুম সংক্রান্ত কমিশন তাদের প্রথম প্রতিবেদন জমা দেন। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে র্যাবের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উল্লেখপূর্বক ওই সুপারিশ করে কমিশন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন কাণ্ডে র্যাব সদস্যদের যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে। ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব এবং এর ছয় কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এতসব অভিযোগের মুখেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের ‘বিতর্কিত’ কর্মকাণ্ড থামেনি। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্রমেই র্যাব বিলুপ্তির দাবি জোরালো হয়। সম্প্রতি পুলিশ সংস্কার নিয়ে দেওয়া প্রস্তাবের অংশ হিসেবে র্যাব বিলুপ্তির দাবি জানায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
চট্টগ্রামে আইনজীবী খুন
চট্টগ্রামে আইনজীবী ও সহকারী সরকারি কৌঁসুলি সাইফুল ইসলাম (৩৫) হত্যার ঘটনা ছিল বছরের আরেক আলোচিত ঘটনা। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষের সময় সাইফুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশের ১০ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩৭ জন। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন মহল থেকে ইসকনকে উগ্রবাদী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে নিষিদ্ধের দাবি ওঠে।
জাহাজে সাত খুন
বছরের শেষে এসে ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের হাইমচরে সারবাহী জাহাজে সাত খুনের ঘটনা ঘটে। জাহাজের কর্মীদের ঘুমানোর কক্ষে কক্ষে পড়ে ছিল দেহগুলো। পরে জাহাজের কর্মী আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর র্যাব জানায়, নিয়মিত বেতন-ভাতা ও ছুটি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আকাশ মণ্ডল এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
সচিবালয়ে সন্দেহজনক আগুন
প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে গভীর রাতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় পাঁচটি মন্ত্রণালয়। গত বুধবার দিবাগত রাত প্রায় ২টার দিকে নয়তলা একটি ভবনে লাগা এই আগুন ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের টানা ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ভবনটির চারটি তলায় অবস্থিত স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র, কম্পিউটার ও আসবাব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন নেভানোর কাজ করতে গিয়ে ট্রাকচাপায় মো. সোহানুর জামান নামে ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।

সচিবালয় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর (কেপিআই) একটি। এখানে নজিরবিহীন এই ভয়াবহ আগুনের উৎস এখনো জানা যায়নি। রাজনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ এই আগুনের পেছনে ষড়যন্ত্র আছে বলে মনে করলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

বছরের শুরুতে ৭ জানুয়ারি একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা করেছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে নির্বাচন নিয়ে মাঠে সেই অর্থে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু সেই নির্বাচন ঘিরে বছরের শুরু থেকেই দেখা যায় রাজনৈতিক কোন্দল। এরপর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, ঘিরে তোলপাড় ছিল সারা দেশ। একপর্যায়ে নজিরবিহীনভাবে ভেঙে পড়ে পুলিশি ব্যবস্থা। চোর ডাকাত খুন ছিনতাইকারীদের দাপট ছেড়ে যায় ঢাকাসহ সারা দেশে।
তবে বছরের সবচেয়ে আলোচনা তৈরি করে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বিচার গুলি চালানো। তাদের হাতে খুন হয় প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। এরপর যখন শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয় তখন জনরোষের ভয়ে শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ সদস্যদের বড় অংশ আত্মগোপনে চলে যায়। বিদেশে পালিয়ে যায় কেউ কেউ। চাকরিচ্যুত, বদলি আর থানায় থানায় হামলার ঘটনা ঘটতে থাকে। ভঙ্গুর অবস্থা দেখা যায় পুলিশ বাহিনীতে। বছর শেষ হতে নিলেও সেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি আর নিয়ন্ত্রণে আসে না।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যখন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়। তখন আসলে কিছু থাকে না। পরিস্থিতি তখন অবনতি হয়। অপরাধীরা সহ সুবিধাবাদীরা সুযোগ নেয়।
সংঘাত-সহিংসতায় বছর শুরু
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগের সাজানো এই নির্বাচন ঘিরেও বেশ কিছু সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রিক ৩৪৫টি সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন সাতজন। আহত হন পুলিশের সদস্যসহ সাড়ে চার শতাধিক ব্যক্তি।
ওই নির্বাচনের দুই দিন আগে ৫ জানুয়ারি যশোরের বেনাপোল থেকে ঢাকায় আসা ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়। এতে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়। ওই আগুন কারা দিয়েছিল, তা এখনো শনাক্ত হয়নি।
কলকাতায় সংসদ সদস্য হত্যা
এই বছরের অন্যতম আলোচিত ঘটনা ছিল কলকাতায় বাংলাদেশের তৎকালীন সংসদ সদস্য (ঝিনাইদহ-৪) আনোয়ারুল আজীমকে নৃশংসভাবে হত্যা। ১২ মে ভারতে গিয়ে পরদিন রাতে কলকাতার একটি বহুতল আবাসিক ভবনে তাঁকে হত্যার পর মরদেহ টুকরা টুকরা করা হয়। পরে কলকাতার দুটি স্থান থেকে কিছু হাড় ও মাংস উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার সাত মাস পর ২০ ডিসেম্বর কলকাতার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আনোয়ারুলের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌসের (ডরিন) ডিএনএ নমুনার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া ওই দেহাবশেষের ডিএনএর মিল পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছিল, দেশে খুনের পরিকল্পনা করে সেটা বাস্তবায়ন করা হয় কলকাতায়। এই ঘটনায় কলকাতায় এবং সেখান থেকে দেশে ফিরে আসা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এমনকি ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককেও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এই ঘটনায় ঢাকায় ও কলকাতার আদালতে একাধিক আসামি জবানবন্দি দিলেও তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।

বেইলি রোডে অবহেলার আগুনে ৪৬ মৃত্যু
২০২৪ সালে বড় ধরনের ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্যে ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনে (সাততলা) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড অন্যতম। এতে নারী, শিশুসহ ৪৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ওই ভবন দীর্ঘদিন ধরেই অগ্নিঝুঁকিতে ছিল। এটাকে নেহাত দুর্ঘটনা নয়, প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার নির্মম উদাহরণ হিসেবে দেখছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। যদিও ইমারত বিধিমালা ও অগ্নিনিরাপত্তা–সংক্রান্ত নির্দেশনা না মানার জন্য তদারক সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গণ-অভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি
এ বছরের ৫ জুন যখন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করে দেয়, তখন কারও ধারণাই ছিল না যে পরের দুই মাসের মধ্যে সেটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটবে। শেষ পর্যন্ত এটি শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের টানা শাসন অবসানের দিকে নিয়ে গেছে। সেদিন হাইকোর্টের সেই আদেশটি অনেক পত্রিকায় তেমন গুরুত্বও পায়নি। কিন্তু পরবর্তী পাঁচ সপ্তাহের মাথায় সেই বিক্ষোভের জেরে এক সময় ১৬ বছর ধরে কঠোরভাবে বিরোধী দলকে দমন করে একটানা ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাকে গোপনে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়।

আন্দোলনটি শুরুতে ছাত্রদের কোটা সংস্কার কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার, নানা বয়সের লাখো মানুষ অংশ নিতে শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের নজিরবিহীন সংঘাত যেন থামে না। একপর্যায়ে কারফিউও জারি করা হয়। প্রথম দিকে আন্দোলন দমাতে ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের গুলিতে মারা যান প্রায় দুই হাজার জন সাধারণ মানুষ।
সারা দেশে কোথাও পুলিশ ছিল না
গণ আন্দোলন ও সহিংসতার মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নজিরবিহীনভাবে পুলিশ ছাড়া একদিন ছিল বাংলাদেশ। যেখানে অনেকগুলো থানা ফাঁকা পড়েছিল, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কোথাও কাজ করেনি পুলিশ।
ছাত্র-জনতার রাজপথ দখলে নেওয়ার তুমুল আন্দোলনের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর থেকেই দেশজুড়ে থানাসহ পুলিশের স্থাপনাগুলোতে একের পর এক হামলা হতে থাকে। নির্বিচারে আক্রমণ হতে থাকে থানায়, ভাঙচুর ও লুটপাটও করা হয় অনেক থানায়।
এসব হামলায় বহুসংখ্যক পুলিশ হতাহত হলে অন্যরা নিরাপদে সরে যেতে থাকেন। এতে করে এমন নজিরবিহীন অবস্থা তৈরি হয় বলে জানায় পুলিশ কর্মকর্তারা। জীবন বাঁচাতে আত্মগোপন করেন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ বেশির ভাগ সদস্য। যে কারণে থানাগুলো ছিল পুলিশ শূন্য ও অরক্ষিত।
মব জাস্টিস চলে কয়েক মাস
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় দেশজুড়ে বেশ কিছু হতাহত ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সরকার শক্ত অবস্থান না নিতে পারায় এসব ঘটনা বাড়তে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনিতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় যা উদ্বেগ ও নিন্দার ঝড় উঠে।
ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে দুই দফায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। প্রায় একইভাবে জাবির একদল শিক্ষার্থীর দফায় দফায় মারধরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা প্রাণ হারান। বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় গ্রামবাসী পিটিয়ে মেরেছে এক সন্দেহভাজন গরুচোরকে। এ ঘটনাগুলোকে আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।

বিশেষ করে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। প্রতিবাদমুখর হয় সংস্কার ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে সদ্য গঠিত সংগঠনগুলো। কোটাবিরোধী ও হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারীরা এ ধরনের ঘটনার নিন্দা করে নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন।
পুলিশের তথ্য বলছে, সারা দেশে ২৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে মব জাস্টিসের নামে। নির্যাতন, মারধর, লাঞ্ছনা, হামলার ঘটনা অসংখ্য। একের পর এক ঘটনায় দেশে নতুন আতঙ্ক ও উদ্বেগ তৈরি করেছে মব জাস্টিস। অন্তর্বর্তী সরকারের হুঁশিয়ারিও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া রোধ করতে পারে না।
৫০ হাজারের বেশি পুলিশ বদলি
হাসিনা সরকারের পতনের পর নানা সংকট, সীমাবদ্ধতা আর বিপর্যয় কাটিয়ে নতুন রূপে ফেরার চেষ্টায় করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দ্রুত বাহিনীর গতি ফেরানো, অন্যদিকে জনআস্থা অর্জন। এ দুই চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে চলছে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
৫ আগস্টের পর প্রতিদিন পুলিশের বিভিন্ন পদে আসছে নতুন মুখ। গত কয়েক মাসে বদলি ও পদায়ন পেয়েছে ঝড়ের গতি। এ সময়ে সারা দেশে পোশাকধারী দুই লাখ দুই হাজার পুলিশের বিপরীতে রদবদল করা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য। সে হিসাবে প্রায় ৩০ শতাংশ পুলিশের চেয়ার বদলে গেছে। অল্প সময়ে এত সংখ্যক পুলিশ সদস্যের কর্মস্থল বদলের ঘটনা নজিরবিহীন।
৬৪ জেলার পুলিশ, সব রেঞ্জ ডিআইজি, মহানগর কমিশনার এবং সব থানার ওসি পদে আসে নতুন মুখ। পুলিশে এককভাবে সবচেয়ে বড় ইউনিট হলো ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অন্তত ৩২ হাজার সদস্য এখানে কাজ করেন। এ পর্যন্ত এখানকার ১৮ হাজার সদস্যকে বদলি করা হয়েছে। যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে ডিএমপির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে ঢুকছেন, তাদের দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ ও উদ্দীপনা। রাজধানীর মতো জায়গায় নতুন পরিবেশে কাজের ধরন নিয়ে সম্যক ধারণা দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, কাজে গতি আনতে এই বদলি। গেল দেড় দশকে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ায় পুলিশ। গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও দেখা গেছে। পুলিশ এ পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার চেষ্টায় আছে।
আনসার বিদ্রোহ
রাজধানীর সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই এটা একটা বড় ঘটনা। সচিবালয়ে আনসারদের তোপের মুখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অন্তত ৪০ জন আহত হন। পরে এ ঘটনায় সচিবালয় ও আশপাশের এলাকা থেকে দুই নারী সদস্যসহ প্রায় চার শতাধিক আনসার সদস্যকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মানুষ নিজেদের মত প্রকাশ করেন। জাতির ক্রান্তি লগ্নে এ বাহিনীর আচরণে ক্ষুব্ধ হন সবাই। অনেকেই আনসার বাহিনীকে বিলুপ্তির দাবিও জানান।
র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ গুম কমিশনের
পুলিশের ‘বিতর্কিত’ এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশ করে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গুম সংক্রান্ত কমিশন তাদের প্রথম প্রতিবেদন জমা দেন। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে র্যাবের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উল্লেখপূর্বক ওই সুপারিশ করে কমিশন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন কাণ্ডে র্যাব সদস্যদের যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে। ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব এবং এর ছয় কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এতসব অভিযোগের মুখেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের ‘বিতর্কিত’ কর্মকাণ্ড থামেনি। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্রমেই র্যাব বিলুপ্তির দাবি জোরালো হয়। সম্প্রতি পুলিশ সংস্কার নিয়ে দেওয়া প্রস্তাবের অংশ হিসেবে র্যাব বিলুপ্তির দাবি জানায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
চট্টগ্রামে আইনজীবী খুন
চট্টগ্রামে আইনজীবী ও সহকারী সরকারি কৌঁসুলি সাইফুল ইসলাম (৩৫) হত্যার ঘটনা ছিল বছরের আরেক আলোচিত ঘটনা। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষের সময় সাইফুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশের ১০ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩৭ জন। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন মহল থেকে ইসকনকে উগ্রবাদী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে নিষিদ্ধের দাবি ওঠে।
জাহাজে সাত খুন
বছরের শেষে এসে ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের হাইমচরে সারবাহী জাহাজে সাত খুনের ঘটনা ঘটে। জাহাজের কর্মীদের ঘুমানোর কক্ষে কক্ষে পড়ে ছিল দেহগুলো। পরে জাহাজের কর্মী আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর র্যাব জানায়, নিয়মিত বেতন-ভাতা ও ছুটি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আকাশ মণ্ডল এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
সচিবালয়ে সন্দেহজনক আগুন
প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে গভীর রাতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় পাঁচটি মন্ত্রণালয়। গত বুধবার দিবাগত রাত প্রায় ২টার দিকে নয়তলা একটি ভবনে লাগা এই আগুন ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের টানা ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ভবনটির চারটি তলায় অবস্থিত স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র, কম্পিউটার ও আসবাব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন নেভানোর কাজ করতে গিয়ে ট্রাকচাপায় মো. সোহানুর জামান নামে ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।

সচিবালয় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর (কেপিআই) একটি। এখানে নজিরবিহীন এই ভয়াবহ আগুনের উৎস এখনো জানা যায়নি। রাজনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ এই আগুনের পেছনে ষড়যন্ত্র আছে বলে মনে করলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বছরের শুরুতে ৭ জানুয়ারি একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা করেছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে নির্বাচন নিয়ে মাঠে সেই অর্থে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু সেই নির্বাচন ঘিরে বছরের শুরু থেকেই দেখা যায় রাজনৈতিক কোন্দল। এরপর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, ঘিরে তোলপাড় ছিল সারা দেশ। একপর্যায়ে নজিরবিহীনভাবে ভেঙে পড়ে পুলিশি ব্যবস্থা। চোর ডাকাত খুন ছিনতাইকারীদের দাপট ছেড়ে যায় ঢাকাসহ সারা দেশে।
তবে বছরের সবচেয়ে আলোচনা তৈরি করে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বিচার গুলি চালানো। তাদের হাতে খুন হয় প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। এরপর যখন শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয় তখন জনরোষের ভয়ে শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ সদস্যদের বড় অংশ আত্মগোপনে চলে যায়। বিদেশে পালিয়ে যায় কেউ কেউ। চাকরিচ্যুত, বদলি আর থানায় থানায় হামলার ঘটনা ঘটতে থাকে। ভঙ্গুর অবস্থা দেখা যায় পুলিশ বাহিনীতে। বছর শেষ হতে নিলেও সেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি আর নিয়ন্ত্রণে আসে না।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যখন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়। তখন আসলে কিছু থাকে না। পরিস্থিতি তখন অবনতি হয়। অপরাধীরা সহ সুবিধাবাদীরা সুযোগ নেয়।
সংঘাত-সহিংসতায় বছর শুরু
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগের সাজানো এই নির্বাচন ঘিরেও বেশ কিছু সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রিক ৩৪৫টি সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন সাতজন। আহত হন পুলিশের সদস্যসহ সাড়ে চার শতাধিক ব্যক্তি।
ওই নির্বাচনের দুই দিন আগে ৫ জানুয়ারি যশোরের বেনাপোল থেকে ঢাকায় আসা ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়। এতে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়। ওই আগুন কারা দিয়েছিল, তা এখনো শনাক্ত হয়নি।
কলকাতায় সংসদ সদস্য হত্যা
এই বছরের অন্যতম আলোচিত ঘটনা ছিল কলকাতায় বাংলাদেশের তৎকালীন সংসদ সদস্য (ঝিনাইদহ-৪) আনোয়ারুল আজীমকে নৃশংসভাবে হত্যা। ১২ মে ভারতে গিয়ে পরদিন রাতে কলকাতার একটি বহুতল আবাসিক ভবনে তাঁকে হত্যার পর মরদেহ টুকরা টুকরা করা হয়। পরে কলকাতার দুটি স্থান থেকে কিছু হাড় ও মাংস উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার সাত মাস পর ২০ ডিসেম্বর কলকাতার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আনোয়ারুলের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌসের (ডরিন) ডিএনএ নমুনার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া ওই দেহাবশেষের ডিএনএর মিল পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছিল, দেশে খুনের পরিকল্পনা করে সেটা বাস্তবায়ন করা হয় কলকাতায়। এই ঘটনায় কলকাতায় এবং সেখান থেকে দেশে ফিরে আসা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এমনকি ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককেও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এই ঘটনায় ঢাকায় ও কলকাতার আদালতে একাধিক আসামি জবানবন্দি দিলেও তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।

বেইলি রোডে অবহেলার আগুনে ৪৬ মৃত্যু
২০২৪ সালে বড় ধরনের ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্যে ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনে (সাততলা) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড অন্যতম। এতে নারী, শিশুসহ ৪৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ওই ভবন দীর্ঘদিন ধরেই অগ্নিঝুঁকিতে ছিল। এটাকে নেহাত দুর্ঘটনা নয়, প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার নির্মম উদাহরণ হিসেবে দেখছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। যদিও ইমারত বিধিমালা ও অগ্নিনিরাপত্তা–সংক্রান্ত নির্দেশনা না মানার জন্য তদারক সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গণ-অভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি
এ বছরের ৫ জুন যখন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করে দেয়, তখন কারও ধারণাই ছিল না যে পরের দুই মাসের মধ্যে সেটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটবে। শেষ পর্যন্ত এটি শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের টানা শাসন অবসানের দিকে নিয়ে গেছে। সেদিন হাইকোর্টের সেই আদেশটি অনেক পত্রিকায় তেমন গুরুত্বও পায়নি। কিন্তু পরবর্তী পাঁচ সপ্তাহের মাথায় সেই বিক্ষোভের জেরে এক সময় ১৬ বছর ধরে কঠোরভাবে বিরোধী দলকে দমন করে একটানা ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাকে গোপনে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়।

আন্দোলনটি শুরুতে ছাত্রদের কোটা সংস্কার কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার, নানা বয়সের লাখো মানুষ অংশ নিতে শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের নজিরবিহীন সংঘাত যেন থামে না। একপর্যায়ে কারফিউও জারি করা হয়। প্রথম দিকে আন্দোলন দমাতে ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের গুলিতে মারা যান প্রায় দুই হাজার জন সাধারণ মানুষ।
সারা দেশে কোথাও পুলিশ ছিল না
গণ আন্দোলন ও সহিংসতার মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নজিরবিহীনভাবে পুলিশ ছাড়া একদিন ছিল বাংলাদেশ। যেখানে অনেকগুলো থানা ফাঁকা পড়েছিল, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কোথাও কাজ করেনি পুলিশ।
ছাত্র-জনতার রাজপথ দখলে নেওয়ার তুমুল আন্দোলনের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর থেকেই দেশজুড়ে থানাসহ পুলিশের স্থাপনাগুলোতে একের পর এক হামলা হতে থাকে। নির্বিচারে আক্রমণ হতে থাকে থানায়, ভাঙচুর ও লুটপাটও করা হয় অনেক থানায়।
এসব হামলায় বহুসংখ্যক পুলিশ হতাহত হলে অন্যরা নিরাপদে সরে যেতে থাকেন। এতে করে এমন নজিরবিহীন অবস্থা তৈরি হয় বলে জানায় পুলিশ কর্মকর্তারা। জীবন বাঁচাতে আত্মগোপন করেন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ বেশির ভাগ সদস্য। যে কারণে থানাগুলো ছিল পুলিশ শূন্য ও অরক্ষিত।
মব জাস্টিস চলে কয়েক মাস
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় দেশজুড়ে বেশ কিছু হতাহত ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সরকার শক্ত অবস্থান না নিতে পারায় এসব ঘটনা বাড়তে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনিতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় যা উদ্বেগ ও নিন্দার ঝড় উঠে।
ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে দুই দফায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। প্রায় একইভাবে জাবির একদল শিক্ষার্থীর দফায় দফায় মারধরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা প্রাণ হারান। বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় গ্রামবাসী পিটিয়ে মেরেছে এক সন্দেহভাজন গরুচোরকে। এ ঘটনাগুলোকে আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।

বিশেষ করে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। প্রতিবাদমুখর হয় সংস্কার ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে সদ্য গঠিত সংগঠনগুলো। কোটাবিরোধী ও হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারীরা এ ধরনের ঘটনার নিন্দা করে নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন।
পুলিশের তথ্য বলছে, সারা দেশে ২৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে মব জাস্টিসের নামে। নির্যাতন, মারধর, লাঞ্ছনা, হামলার ঘটনা অসংখ্য। একের পর এক ঘটনায় দেশে নতুন আতঙ্ক ও উদ্বেগ তৈরি করেছে মব জাস্টিস। অন্তর্বর্তী সরকারের হুঁশিয়ারিও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া রোধ করতে পারে না।
৫০ হাজারের বেশি পুলিশ বদলি
হাসিনা সরকারের পতনের পর নানা সংকট, সীমাবদ্ধতা আর বিপর্যয় কাটিয়ে নতুন রূপে ফেরার চেষ্টায় করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দ্রুত বাহিনীর গতি ফেরানো, অন্যদিকে জনআস্থা অর্জন। এ দুই চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে চলছে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
৫ আগস্টের পর প্রতিদিন পুলিশের বিভিন্ন পদে আসছে নতুন মুখ। গত কয়েক মাসে বদলি ও পদায়ন পেয়েছে ঝড়ের গতি। এ সময়ে সারা দেশে পোশাকধারী দুই লাখ দুই হাজার পুলিশের বিপরীতে রদবদল করা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য। সে হিসাবে প্রায় ৩০ শতাংশ পুলিশের চেয়ার বদলে গেছে। অল্প সময়ে এত সংখ্যক পুলিশ সদস্যের কর্মস্থল বদলের ঘটনা নজিরবিহীন।
৬৪ জেলার পুলিশ, সব রেঞ্জ ডিআইজি, মহানগর কমিশনার এবং সব থানার ওসি পদে আসে নতুন মুখ। পুলিশে এককভাবে সবচেয়ে বড় ইউনিট হলো ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অন্তত ৩২ হাজার সদস্য এখানে কাজ করেন। এ পর্যন্ত এখানকার ১৮ হাজার সদস্যকে বদলি করা হয়েছে। যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে ডিএমপির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে ঢুকছেন, তাদের দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ ও উদ্দীপনা। রাজধানীর মতো জায়গায় নতুন পরিবেশে কাজের ধরন নিয়ে সম্যক ধারণা দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, কাজে গতি আনতে এই বদলি। গেল দেড় দশকে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ায় পুলিশ। গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও দেখা গেছে। পুলিশ এ পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার চেষ্টায় আছে।
আনসার বিদ্রোহ
রাজধানীর সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই এটা একটা বড় ঘটনা। সচিবালয়ে আনসারদের তোপের মুখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অন্তত ৪০ জন আহত হন। পরে এ ঘটনায় সচিবালয় ও আশপাশের এলাকা থেকে দুই নারী সদস্যসহ প্রায় চার শতাধিক আনসার সদস্যকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মানুষ নিজেদের মত প্রকাশ করেন। জাতির ক্রান্তি লগ্নে এ বাহিনীর আচরণে ক্ষুব্ধ হন সবাই। অনেকেই আনসার বাহিনীকে বিলুপ্তির দাবিও জানান।
র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ গুম কমিশনের
পুলিশের ‘বিতর্কিত’ এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশ করে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গুম সংক্রান্ত কমিশন তাদের প্রথম প্রতিবেদন জমা দেন। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে র্যাবের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উল্লেখপূর্বক ওই সুপারিশ করে কমিশন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন কাণ্ডে র্যাব সদস্যদের যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে। ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব এবং এর ছয় কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এতসব অভিযোগের মুখেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের ‘বিতর্কিত’ কর্মকাণ্ড থামেনি। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্রমেই র্যাব বিলুপ্তির দাবি জোরালো হয়। সম্প্রতি পুলিশ সংস্কার নিয়ে দেওয়া প্রস্তাবের অংশ হিসেবে র্যাব বিলুপ্তির দাবি জানায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
চট্টগ্রামে আইনজীবী খুন
চট্টগ্রামে আইনজীবী ও সহকারী সরকারি কৌঁসুলি সাইফুল ইসলাম (৩৫) হত্যার ঘটনা ছিল বছরের আরেক আলোচিত ঘটনা। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষের সময় সাইফুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশের ১০ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩৭ জন। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন মহল থেকে ইসকনকে উগ্রবাদী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে নিষিদ্ধের দাবি ওঠে।
জাহাজে সাত খুন
বছরের শেষে এসে ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের হাইমচরে সারবাহী জাহাজে সাত খুনের ঘটনা ঘটে। জাহাজের কর্মীদের ঘুমানোর কক্ষে কক্ষে পড়ে ছিল দেহগুলো। পরে জাহাজের কর্মী আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর র্যাব জানায়, নিয়মিত বেতন-ভাতা ও ছুটি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আকাশ মণ্ডল এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
সচিবালয়ে সন্দেহজনক আগুন
প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে গভীর রাতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় পাঁচটি মন্ত্রণালয়। গত বুধবার দিবাগত রাত প্রায় ২টার দিকে নয়তলা একটি ভবনে লাগা এই আগুন ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের টানা ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ভবনটির চারটি তলায় অবস্থিত স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র, কম্পিউটার ও আসবাব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন নেভানোর কাজ করতে গিয়ে ট্রাকচাপায় মো. সোহানুর জামান নামে ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।

সচিবালয় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর (কেপিআই) একটি। এখানে নজিরবিহীন এই ভয়াবহ আগুনের উৎস এখনো জানা যায়নি। রাজনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ এই আগুনের পেছনে ষড়যন্ত্র আছে বলে মনে করলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

বছরের শুরুতে ৭ জানুয়ারি একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা করেছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে নির্বাচন নিয়ে মাঠে সেই অর্থে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু সেই নির্বাচন ঘিরে বছরের শুরু থেকেই দেখা যায় রাজনৈতিক কোন্দল। এরপর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, ঘিরে তোলপাড় ছিল সারা দেশ। একপর্যায়ে নজিরবিহীনভাবে ভেঙে পড়ে পুলিশি ব্যবস্থা। চোর ডাকাত খুন ছিনতাইকারীদের দাপট ছেড়ে যায় ঢাকাসহ সারা দেশে।
তবে বছরের সবচেয়ে আলোচনা তৈরি করে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বিচার গুলি চালানো। তাদের হাতে খুন হয় প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। এরপর যখন শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয় তখন জনরোষের ভয়ে শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ সদস্যদের বড় অংশ আত্মগোপনে চলে যায়। বিদেশে পালিয়ে যায় কেউ কেউ। চাকরিচ্যুত, বদলি আর থানায় থানায় হামলার ঘটনা ঘটতে থাকে। ভঙ্গুর অবস্থা দেখা যায় পুলিশ বাহিনীতে। বছর শেষ হতে নিলেও সেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি আর নিয়ন্ত্রণে আসে না।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যখন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়। তখন আসলে কিছু থাকে না। পরিস্থিতি তখন অবনতি হয়। অপরাধীরা সহ সুবিধাবাদীরা সুযোগ নেয়।
সংঘাত-সহিংসতায় বছর শুরু
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগের সাজানো এই নির্বাচন ঘিরেও বেশ কিছু সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রিক ৩৪৫টি সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন সাতজন। আহত হন পুলিশের সদস্যসহ সাড়ে চার শতাধিক ব্যক্তি।
ওই নির্বাচনের দুই দিন আগে ৫ জানুয়ারি যশোরের বেনাপোল থেকে ঢাকায় আসা ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়। এতে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়। ওই আগুন কারা দিয়েছিল, তা এখনো শনাক্ত হয়নি।
কলকাতায় সংসদ সদস্য হত্যা
এই বছরের অন্যতম আলোচিত ঘটনা ছিল কলকাতায় বাংলাদেশের তৎকালীন সংসদ সদস্য (ঝিনাইদহ-৪) আনোয়ারুল আজীমকে নৃশংসভাবে হত্যা। ১২ মে ভারতে গিয়ে পরদিন রাতে কলকাতার একটি বহুতল আবাসিক ভবনে তাঁকে হত্যার পর মরদেহ টুকরা টুকরা করা হয়। পরে কলকাতার দুটি স্থান থেকে কিছু হাড় ও মাংস উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার সাত মাস পর ২০ ডিসেম্বর কলকাতার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আনোয়ারুলের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌসের (ডরিন) ডিএনএ নমুনার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া ওই দেহাবশেষের ডিএনএর মিল পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছিল, দেশে খুনের পরিকল্পনা করে সেটা বাস্তবায়ন করা হয় কলকাতায়। এই ঘটনায় কলকাতায় এবং সেখান থেকে দেশে ফিরে আসা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এমনকি ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককেও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এই ঘটনায় ঢাকায় ও কলকাতার আদালতে একাধিক আসামি জবানবন্দি দিলেও তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।

বেইলি রোডে অবহেলার আগুনে ৪৬ মৃত্যু
২০২৪ সালে বড় ধরনের ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্যে ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনে (সাততলা) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড অন্যতম। এতে নারী, শিশুসহ ৪৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ওই ভবন দীর্ঘদিন ধরেই অগ্নিঝুঁকিতে ছিল। এটাকে নেহাত দুর্ঘটনা নয়, প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার নির্মম উদাহরণ হিসেবে দেখছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। যদিও ইমারত বিধিমালা ও অগ্নিনিরাপত্তা–সংক্রান্ত নির্দেশনা না মানার জন্য তদারক সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গণ-অভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি
এ বছরের ৫ জুন যখন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করে দেয়, তখন কারও ধারণাই ছিল না যে পরের দুই মাসের মধ্যে সেটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটবে। শেষ পর্যন্ত এটি শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের টানা শাসন অবসানের দিকে নিয়ে গেছে। সেদিন হাইকোর্টের সেই আদেশটি অনেক পত্রিকায় তেমন গুরুত্বও পায়নি। কিন্তু পরবর্তী পাঁচ সপ্তাহের মাথায় সেই বিক্ষোভের জেরে এক সময় ১৬ বছর ধরে কঠোরভাবে বিরোধী দলকে দমন করে একটানা ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাকে গোপনে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়।

আন্দোলনটি শুরুতে ছাত্রদের কোটা সংস্কার কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার, নানা বয়সের লাখো মানুষ অংশ নিতে শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের নজিরবিহীন সংঘাত যেন থামে না। একপর্যায়ে কারফিউও জারি করা হয়। প্রথম দিকে আন্দোলন দমাতে ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের গুলিতে মারা যান প্রায় দুই হাজার জন সাধারণ মানুষ।
সারা দেশে কোথাও পুলিশ ছিল না
গণ আন্দোলন ও সহিংসতার মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নজিরবিহীনভাবে পুলিশ ছাড়া একদিন ছিল বাংলাদেশ। যেখানে অনেকগুলো থানা ফাঁকা পড়েছিল, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কোথাও কাজ করেনি পুলিশ।
ছাত্র-জনতার রাজপথ দখলে নেওয়ার তুমুল আন্দোলনের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর থেকেই দেশজুড়ে থানাসহ পুলিশের স্থাপনাগুলোতে একের পর এক হামলা হতে থাকে। নির্বিচারে আক্রমণ হতে থাকে থানায়, ভাঙচুর ও লুটপাটও করা হয় অনেক থানায়।
এসব হামলায় বহুসংখ্যক পুলিশ হতাহত হলে অন্যরা নিরাপদে সরে যেতে থাকেন। এতে করে এমন নজিরবিহীন অবস্থা তৈরি হয় বলে জানায় পুলিশ কর্মকর্তারা। জীবন বাঁচাতে আত্মগোপন করেন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ বেশির ভাগ সদস্য। যে কারণে থানাগুলো ছিল পুলিশ শূন্য ও অরক্ষিত।
মব জাস্টিস চলে কয়েক মাস
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় দেশজুড়ে বেশ কিছু হতাহত ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সরকার শক্ত অবস্থান না নিতে পারায় এসব ঘটনা বাড়তে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনিতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় যা উদ্বেগ ও নিন্দার ঝড় উঠে।
ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে দুই দফায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। প্রায় একইভাবে জাবির একদল শিক্ষার্থীর দফায় দফায় মারধরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা প্রাণ হারান। বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় গ্রামবাসী পিটিয়ে মেরেছে এক সন্দেহভাজন গরুচোরকে। এ ঘটনাগুলোকে আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।

বিশেষ করে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। প্রতিবাদমুখর হয় সংস্কার ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে সদ্য গঠিত সংগঠনগুলো। কোটাবিরোধী ও হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারীরা এ ধরনের ঘটনার নিন্দা করে নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন।
পুলিশের তথ্য বলছে, সারা দেশে ২৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে মব জাস্টিসের নামে। নির্যাতন, মারধর, লাঞ্ছনা, হামলার ঘটনা অসংখ্য। একের পর এক ঘটনায় দেশে নতুন আতঙ্ক ও উদ্বেগ তৈরি করেছে মব জাস্টিস। অন্তর্বর্তী সরকারের হুঁশিয়ারিও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া রোধ করতে পারে না।
৫০ হাজারের বেশি পুলিশ বদলি
হাসিনা সরকারের পতনের পর নানা সংকট, সীমাবদ্ধতা আর বিপর্যয় কাটিয়ে নতুন রূপে ফেরার চেষ্টায় করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দ্রুত বাহিনীর গতি ফেরানো, অন্যদিকে জনআস্থা অর্জন। এ দুই চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে চলছে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
৫ আগস্টের পর প্রতিদিন পুলিশের বিভিন্ন পদে আসছে নতুন মুখ। গত কয়েক মাসে বদলি ও পদায়ন পেয়েছে ঝড়ের গতি। এ সময়ে সারা দেশে পোশাকধারী দুই লাখ দুই হাজার পুলিশের বিপরীতে রদবদল করা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য। সে হিসাবে প্রায় ৩০ শতাংশ পুলিশের চেয়ার বদলে গেছে। অল্প সময়ে এত সংখ্যক পুলিশ সদস্যের কর্মস্থল বদলের ঘটনা নজিরবিহীন।
৬৪ জেলার পুলিশ, সব রেঞ্জ ডিআইজি, মহানগর কমিশনার এবং সব থানার ওসি পদে আসে নতুন মুখ। পুলিশে এককভাবে সবচেয়ে বড় ইউনিট হলো ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অন্তত ৩২ হাজার সদস্য এখানে কাজ করেন। এ পর্যন্ত এখানকার ১৮ হাজার সদস্যকে বদলি করা হয়েছে। যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে ডিএমপির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে ঢুকছেন, তাদের দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ ও উদ্দীপনা। রাজধানীর মতো জায়গায় নতুন পরিবেশে কাজের ধরন নিয়ে সম্যক ধারণা দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, কাজে গতি আনতে এই বদলি। গেল দেড় দশকে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ায় পুলিশ। গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও দেখা গেছে। পুলিশ এ পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার চেষ্টায় আছে।
আনসার বিদ্রোহ
রাজধানীর সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই এটা একটা বড় ঘটনা। সচিবালয়ে আনসারদের তোপের মুখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অন্তত ৪০ জন আহত হন। পরে এ ঘটনায় সচিবালয় ও আশপাশের এলাকা থেকে দুই নারী সদস্যসহ প্রায় চার শতাধিক আনসার সদস্যকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মানুষ নিজেদের মত প্রকাশ করেন। জাতির ক্রান্তি লগ্নে এ বাহিনীর আচরণে ক্ষুব্ধ হন সবাই। অনেকেই আনসার বাহিনীকে বিলুপ্তির দাবিও জানান।
র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ গুম কমিশনের
পুলিশের ‘বিতর্কিত’ এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশ করে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গুম সংক্রান্ত কমিশন তাদের প্রথম প্রতিবেদন জমা দেন। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে র্যাবের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উল্লেখপূর্বক ওই সুপারিশ করে কমিশন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন কাণ্ডে র্যাব সদস্যদের যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে। ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব এবং এর ছয় কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এতসব অভিযোগের মুখেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের ‘বিতর্কিত’ কর্মকাণ্ড থামেনি। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্রমেই র্যাব বিলুপ্তির দাবি জোরালো হয়। সম্প্রতি পুলিশ সংস্কার নিয়ে দেওয়া প্রস্তাবের অংশ হিসেবে র্যাব বিলুপ্তির দাবি জানায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
চট্টগ্রামে আইনজীবী খুন
চট্টগ্রামে আইনজীবী ও সহকারী সরকারি কৌঁসুলি সাইফুল ইসলাম (৩৫) হত্যার ঘটনা ছিল বছরের আরেক আলোচিত ঘটনা। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষের সময় সাইফুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশের ১০ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩৭ জন। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন মহল থেকে ইসকনকে উগ্রবাদী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে নিষিদ্ধের দাবি ওঠে।
জাহাজে সাত খুন
বছরের শেষে এসে ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের হাইমচরে সারবাহী জাহাজে সাত খুনের ঘটনা ঘটে। জাহাজের কর্মীদের ঘুমানোর কক্ষে কক্ষে পড়ে ছিল দেহগুলো। পরে জাহাজের কর্মী আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর র্যাব জানায়, নিয়মিত বেতন-ভাতা ও ছুটি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আকাশ মণ্ডল এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
সচিবালয়ে সন্দেহজনক আগুন
প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে গভীর রাতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় পাঁচটি মন্ত্রণালয়। গত বুধবার দিবাগত রাত প্রায় ২টার দিকে নয়তলা একটি ভবনে লাগা এই আগুন ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের টানা ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ভবনটির চারটি তলায় অবস্থিত স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র, কম্পিউটার ও আসবাব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন নেভানোর কাজ করতে গিয়ে ট্রাকচাপায় মো. সোহানুর জামান নামে ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।

সচিবালয় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর (কেপিআই) একটি। এখানে নজিরবিহীন এই ভয়াবহ আগুনের উৎস এখনো জানা যায়নি। রাজনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ এই আগুনের পেছনে ষড়যন্ত্র আছে বলে মনে করলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
২ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম।
১৩ ঘণ্টা আগে
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
১৪ ঘণ্টা আগেআবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।
বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।
বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।
নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।
পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।
তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।
বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।
বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।
নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।
পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।
তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

বছরের শুরুতে ৭ জানুয়ারি একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা করেছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে নির্বাচন নিয়ে মাঠে সই অর্থে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু সেই নির্বাচন ঘিরে বছরের শুরু থেকেই দেখা যায় রাজনৈতিক কোন্দল। এরপর ছাত্র জনতার গণ-
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম।
১৩ ঘণ্টা আগে
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
১৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।
সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।
আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।
সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।
আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

বছরের শুরুতে ৭ জানুয়ারি একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা করেছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে নির্বাচন নিয়ে মাঠে সই অর্থে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু সেই নির্বাচন ঘিরে বছরের শুরু থেকেই দেখা যায় রাজনৈতিক কোন্দল। এরপর ছাত্র জনতার গণ-
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
২ ঘণ্টা আগে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম।
১৩ ঘণ্টা আগে
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
১৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’
তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’
তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

বছরের শুরুতে ৭ জানুয়ারি একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা করেছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে নির্বাচন নিয়ে মাঠে সই অর্থে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু সেই নির্বাচন ঘিরে বছরের শুরু থেকেই দেখা যায় রাজনৈতিক কোন্দল। এরপর ছাত্র জনতার গণ-
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
২ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
১৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

বছরের শুরুতে ৭ জানুয়ারি একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা করেছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে নির্বাচন নিয়ে মাঠে সই অর্থে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু সেই নির্বাচন ঘিরে বছরের শুরু থেকেই দেখা যায় রাজনৈতিক কোন্দল। এরপর ছাত্র জনতার গণ-
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
২ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম।
১৩ ঘণ্টা আগে