দলগুলোর মতপার্থক্য
রেজা করিম ও তানিম আহমেদ, ঢাকা
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী সংগঠনের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ; যার মধ্যে প্রতিফলিত হবে আন্দোলনের মূল চেতনা ও অঙ্গীকার। মতানৈক্যসহ নানা কারণে তা বিলম্বিত হলেও শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল ও সমমনা সংগঠনগুলোর প্রত্যাশা ও দাবি ছিল আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে আগস্টের প্রথম দিকে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। কিন্তু জাতীয় সনদের সমন্বিত চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতবিরোধ রয়ে যাওয়ায় আগস্ট মাসের মধ্যে এর ফয়সালা হবে কি না, তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এ অবস্থায় বিষয়টির সুরাহার জন্য তাদের দিকে তাকিয়ে আছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দল সনদের খসড়ার কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে নিজ নিজ আপত্তির কথা জানিয়েছে। ঐকমত্য কমিশন এখন তাদের সুনির্দিষ্ট অভিমত জানার অপেক্ষায় রয়েছে।
দলগুলোর মতবিরোধের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গতকাল বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘বাইরে রাজনৈতিক দলগুলোর মন্তব্য বিবেচনায় নিলে তো বিষয়টা দুরূহ হয়ে পড়বে। উনারা (দলগুলো) লিখিত মতামত দিলে আমরা বিবেচনা করব।’ তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। মতামত এলে কমিশন এবং কমিশনের বিশেষজ্ঞ প্যানেল সেগুলো সমন্বয় করার পর সার্বিক বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
তবে অগ্রগতি দৃশ্যত ধীর হলেও জুলাই সনদ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখছেন না আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত কোনো অনিশ্চয়তা দেখছি না। প্রক্রিয়া তো চলছে, প্রক্রিয়া তো বন্ধ হয়নি।’
আগামী সপ্তাহে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমরা আশা করছি এই সপ্তাহে না হলেও আগামী সপ্তাহে দলগুলোর সঙ্গে বসব। তারা যত দ্রুত মতামত দেবে, তত তাড়াতাড়ি পর্যালোচনা করে তার ভিত্তিতে আলোচনা সম্ভব হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতামতের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত খসড়া চূড়ান্ত করে ১৬ আগস্ট মতামতের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার মধ্যে মতামত জমা দিতে বলেছিল কমিশন। তবে এ সময়ের মধ্যে শুধু বিএনপি, এবি পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, এনডিএম, জাতীয় গণফ্রন্ট ও আমজনতার দল মতামত জমা দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মতামত দেয়নি। পাঁচটি দল আনুষ্ঠানিকভাবে মতামত জমা দিতে সময় চেয়েছে। সেগুলো হচ্ছে সিপিবি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ, বাসদ-মার্কসবাদী। গতকাল বিকেলে কমিশনের পক্ষ থেকে বাকি সব দলকে ২২ আগস্ট শুক্রবারের মধ্যে তাদের মত জমা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি সময় চায়নি। তবে এরাসহ সবার সঙ্গেই কমিশনের অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রয়েছে।
বিশেষ করে সনদের অঙ্গীকারনামার কিছু ধারা নিয়ে দলগুলোর বিভিন্ন আপত্তি রয়েছে। বিএনপি ও সমমনারা জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে স্থান দিতে চায় না। বামদলগুলোও এ বিষয়ে আপত্তি জানাবে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে এনসিপি জুলাই সনদের বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট সময়সীমা চায়। সনদকে সংবিধানের ওপরে স্থান দেওয়ার বিষয়ে জামায়াতের আপত্তি নেই। দলটি বলছে, সংবিধানের সাত অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে জনগণের অভিপ্রায় সংবিধানের ওপরে।
সনদের সমন্বিত খসড়ার কয়েকটি বিষয় নিয়ে আপত্তি বিএনপির। দলটি মনে করে, কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল সংবিধানের ওপরে স্থান পেতে পারে না। জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য দেওয়া হলে খারাপ নজির তৈরি হবে। এ নিয়ে গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনার পর খসড়া পর্যালোচনা করে গতকাল মতামত জমা দিয়েছে বিএনপি। দলটির সূত্র বলছে, কিছু বিষয়ে আপত্তি থাকলেও ছাড় দেওয়ারও চিন্তা আছে বিএনপির। নির্বাচনের স্বার্থে বিএনপির এই চিন্তা বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
সনদ নিয়ে বিএনপির ‘ইতিবাচক’ অবস্থানের কথা জানিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, জুলাই সনদের অঙ্গীকার রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল বিধায় তা সংবিধানের ওপরে স্থান পেতে পারে না। তবে আলোচনার মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে আইনি, বৈধ এবং সাংবিধানিক উপায় খুঁজে বের করা সম্ভব বলে বিএনপি বিশ্বাস করে। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতেই জুলাই সনদ স্বাক্ষর ও বাস্তবায়নেও আশাবাদী বিএনপি।
এর আগে গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সনদের চূড়ান্ত খসড়ার সূচনা ও ২, ৩ এবং ৪ নম্বর দফা নিয়ে বিএনপির আপত্তির কথা জানান সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি তখন বলেন, ‘কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা না হলেও তা সেখানে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কিছু বিষয় সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি।’ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘জুলাই সনদে উত্থাপিত ৮৪ দফার মধ্যে যেসব দফায় সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে; যেসব বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট এসেছে, সেগুলোর সুরাহা কীভাবে হবে এবং সংবিধান সংস্কারবিষয়ক যেসব কথা এসেছে, তার বাস্তবায়ন কীভাবে হবে—এসবের নিষ্পত্তি জরুরি।’
জুলাই সনদের খসড়ায় বলা হয়েছে, বিদ্যমান সংবিধান বা অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর কিছু থাকলে সে ক্ষেত্রে এই সনদের বিধান/প্রস্তাব/সুপারিশই প্রাধান্য পাবে। এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘কোনো সমঝোতা দলিল কি ‘সুপ্রা কনস্টিটিউশনাল ইনস্ট্রুমেন্ট’ (সংবিধানেরও ওপরের দলিল) হতে পারে?...যদি বলা হয়, এ দলিলের সবকিছুই সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য পাবে, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য একটি খারাপ নজির সৃষ্টি হবে। পুরো জাতির জন্য একটি খারাপ নজির সৃষ্টি করা ঠিক হবে না।’
বিএনপির আরেকটি সূত্র বলছে, সনদের বিষয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না- এ বিষয়টিতেও দলটির আপত্তি আছে। সনদের ঐকমত্য হওয়া যেসব বিষয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে করতে হবে, তা নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে করার পক্ষে দলটি। অন্যগুলো আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে তারা।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী বলেছে, সনদের খসড়ার কিছু বিষয়ে আপত্তি থাকলেও তারা এ নিয়ে আন্তরিক। সনদের আইনি ভিত্তি চায় জামায়াত। দুই-এক দিনের মধ্যেই খসড়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মতামত জমা দেবে দলটি।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘(জুলাই সনদ) ঝুলে গেলে তো দেশের অকল্যাণ হবে। কাজেই এটা বাস্তবায়ন করতেই হবে। ...সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতা থাকলে আমরা মনে করি তারা একে আইনী ভিত্তি দেবে। না হলে জনগণই তাদের অধিকার আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, ‘বলা হয়েছে এই সরকার নির্বাচনের আগে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করবে। এখানে বাস্তবায়নযোগ্য বলতে কী বোঝানো হয়েছে তা স্পষ্ট না। আমাদের দাবি হচ্ছে পুরো সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। মৌলিক সংস্কারের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা না হলে আমরা স্বাক্ষর করব না।’
মতামত জমা দেওয়ার পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এবি পাটি জানিয়েছে কমিশনে পাঠানো চূড়ান্ত মতামতে তারা জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে এবি পার্টি বলেছে, পূর্ণাঙ্গ সমন্বিত খসড়া (সংশোধিত) প্রস্তাবের প্রারম্ভিক বক্তব্য এবং অনুচ্ছেদ ১-৪ এ তাদের মতামতের অনেকাংশ প্রতিফলিত হয়েছে। এবি পার্টি প্রাথমিক অবস্থান পরিবর্তন করে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে মত দিয়েছে। তবে তারা প্রস্তাব করেছে, উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) নির্বাচনের পদ্ধতি প্রয়োগ না হলে নিম্নকক্ষে প্রাথমিকভাবে ১০০ আসনে তা চালু করা যেতে পারে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী সংগঠনের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ; যার মধ্যে প্রতিফলিত হবে আন্দোলনের মূল চেতনা ও অঙ্গীকার। মতানৈক্যসহ নানা কারণে তা বিলম্বিত হলেও শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল ও সমমনা সংগঠনগুলোর প্রত্যাশা ও দাবি ছিল আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে আগস্টের প্রথম দিকে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। কিন্তু জাতীয় সনদের সমন্বিত চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতবিরোধ রয়ে যাওয়ায় আগস্ট মাসের মধ্যে এর ফয়সালা হবে কি না, তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এ অবস্থায় বিষয়টির সুরাহার জন্য তাদের দিকে তাকিয়ে আছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দল সনদের খসড়ার কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে নিজ নিজ আপত্তির কথা জানিয়েছে। ঐকমত্য কমিশন এখন তাদের সুনির্দিষ্ট অভিমত জানার অপেক্ষায় রয়েছে।
দলগুলোর মতবিরোধের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গতকাল বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘বাইরে রাজনৈতিক দলগুলোর মন্তব্য বিবেচনায় নিলে তো বিষয়টা দুরূহ হয়ে পড়বে। উনারা (দলগুলো) লিখিত মতামত দিলে আমরা বিবেচনা করব।’ তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। মতামত এলে কমিশন এবং কমিশনের বিশেষজ্ঞ প্যানেল সেগুলো সমন্বয় করার পর সার্বিক বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
তবে অগ্রগতি দৃশ্যত ধীর হলেও জুলাই সনদ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখছেন না আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত কোনো অনিশ্চয়তা দেখছি না। প্রক্রিয়া তো চলছে, প্রক্রিয়া তো বন্ধ হয়নি।’
আগামী সপ্তাহে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমরা আশা করছি এই সপ্তাহে না হলেও আগামী সপ্তাহে দলগুলোর সঙ্গে বসব। তারা যত দ্রুত মতামত দেবে, তত তাড়াতাড়ি পর্যালোচনা করে তার ভিত্তিতে আলোচনা সম্ভব হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতামতের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত খসড়া চূড়ান্ত করে ১৬ আগস্ট মতামতের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার মধ্যে মতামত জমা দিতে বলেছিল কমিশন। তবে এ সময়ের মধ্যে শুধু বিএনপি, এবি পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, এনডিএম, জাতীয় গণফ্রন্ট ও আমজনতার দল মতামত জমা দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মতামত দেয়নি। পাঁচটি দল আনুষ্ঠানিকভাবে মতামত জমা দিতে সময় চেয়েছে। সেগুলো হচ্ছে সিপিবি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ, বাসদ-মার্কসবাদী। গতকাল বিকেলে কমিশনের পক্ষ থেকে বাকি সব দলকে ২২ আগস্ট শুক্রবারের মধ্যে তাদের মত জমা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি সময় চায়নি। তবে এরাসহ সবার সঙ্গেই কমিশনের অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রয়েছে।
বিশেষ করে সনদের অঙ্গীকারনামার কিছু ধারা নিয়ে দলগুলোর বিভিন্ন আপত্তি রয়েছে। বিএনপি ও সমমনারা জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে স্থান দিতে চায় না। বামদলগুলোও এ বিষয়ে আপত্তি জানাবে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে এনসিপি জুলাই সনদের বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট সময়সীমা চায়। সনদকে সংবিধানের ওপরে স্থান দেওয়ার বিষয়ে জামায়াতের আপত্তি নেই। দলটি বলছে, সংবিধানের সাত অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে জনগণের অভিপ্রায় সংবিধানের ওপরে।
সনদের সমন্বিত খসড়ার কয়েকটি বিষয় নিয়ে আপত্তি বিএনপির। দলটি মনে করে, কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল সংবিধানের ওপরে স্থান পেতে পারে না। জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য দেওয়া হলে খারাপ নজির তৈরি হবে। এ নিয়ে গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনার পর খসড়া পর্যালোচনা করে গতকাল মতামত জমা দিয়েছে বিএনপি। দলটির সূত্র বলছে, কিছু বিষয়ে আপত্তি থাকলেও ছাড় দেওয়ারও চিন্তা আছে বিএনপির। নির্বাচনের স্বার্থে বিএনপির এই চিন্তা বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
সনদ নিয়ে বিএনপির ‘ইতিবাচক’ অবস্থানের কথা জানিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, জুলাই সনদের অঙ্গীকার রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল বিধায় তা সংবিধানের ওপরে স্থান পেতে পারে না। তবে আলোচনার মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে আইনি, বৈধ এবং সাংবিধানিক উপায় খুঁজে বের করা সম্ভব বলে বিএনপি বিশ্বাস করে। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতেই জুলাই সনদ স্বাক্ষর ও বাস্তবায়নেও আশাবাদী বিএনপি।
এর আগে গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সনদের চূড়ান্ত খসড়ার সূচনা ও ২, ৩ এবং ৪ নম্বর দফা নিয়ে বিএনপির আপত্তির কথা জানান সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি তখন বলেন, ‘কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা না হলেও তা সেখানে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কিছু বিষয় সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি।’ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘জুলাই সনদে উত্থাপিত ৮৪ দফার মধ্যে যেসব দফায় সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে; যেসব বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট এসেছে, সেগুলোর সুরাহা কীভাবে হবে এবং সংবিধান সংস্কারবিষয়ক যেসব কথা এসেছে, তার বাস্তবায়ন কীভাবে হবে—এসবের নিষ্পত্তি জরুরি।’
জুলাই সনদের খসড়ায় বলা হয়েছে, বিদ্যমান সংবিধান বা অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর কিছু থাকলে সে ক্ষেত্রে এই সনদের বিধান/প্রস্তাব/সুপারিশই প্রাধান্য পাবে। এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘কোনো সমঝোতা দলিল কি ‘সুপ্রা কনস্টিটিউশনাল ইনস্ট্রুমেন্ট’ (সংবিধানেরও ওপরের দলিল) হতে পারে?...যদি বলা হয়, এ দলিলের সবকিছুই সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য পাবে, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য একটি খারাপ নজির সৃষ্টি হবে। পুরো জাতির জন্য একটি খারাপ নজির সৃষ্টি করা ঠিক হবে না।’
বিএনপির আরেকটি সূত্র বলছে, সনদের বিষয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না- এ বিষয়টিতেও দলটির আপত্তি আছে। সনদের ঐকমত্য হওয়া যেসব বিষয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে করতে হবে, তা নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে করার পক্ষে দলটি। অন্যগুলো আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে তারা।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী বলেছে, সনদের খসড়ার কিছু বিষয়ে আপত্তি থাকলেও তারা এ নিয়ে আন্তরিক। সনদের আইনি ভিত্তি চায় জামায়াত। দুই-এক দিনের মধ্যেই খসড়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মতামত জমা দেবে দলটি।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘(জুলাই সনদ) ঝুলে গেলে তো দেশের অকল্যাণ হবে। কাজেই এটা বাস্তবায়ন করতেই হবে। ...সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতা থাকলে আমরা মনে করি তারা একে আইনী ভিত্তি দেবে। না হলে জনগণই তাদের অধিকার আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, ‘বলা হয়েছে এই সরকার নির্বাচনের আগে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করবে। এখানে বাস্তবায়নযোগ্য বলতে কী বোঝানো হয়েছে তা স্পষ্ট না। আমাদের দাবি হচ্ছে পুরো সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। মৌলিক সংস্কারের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা না হলে আমরা স্বাক্ষর করব না।’
মতামত জমা দেওয়ার পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এবি পাটি জানিয়েছে কমিশনে পাঠানো চূড়ান্ত মতামতে তারা জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে এবি পার্টি বলেছে, পূর্ণাঙ্গ সমন্বিত খসড়া (সংশোধিত) প্রস্তাবের প্রারম্ভিক বক্তব্য এবং অনুচ্ছেদ ১-৪ এ তাদের মতামতের অনেকাংশ প্রতিফলিত হয়েছে। এবি পার্টি প্রাথমিক অবস্থান পরিবর্তন করে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে মত দিয়েছে। তবে তারা প্রস্তাব করেছে, উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) নির্বাচনের পদ্ধতি প্রয়োগ না হলে নিম্নকক্ষে প্রাথমিকভাবে ১০০ আসনে তা চালু করা যেতে পারে।
সরকারি (অফিশিয়াল) ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতির তালিকায় ৩০তম দেশ হিসেবে যুক্ত হচ্ছে পাকিস্তান। বিশ্বের ২৯টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা অব্যাহতি চুক্তি রয়েছে। কিন্তু আশপাশের দেশ হিসেবে বাকি রয়ে গেছে পাকিস্তান।
২ ঘণ্টা আগেরাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহত ১৬৭ জনের মধ্যে বেশির ভাগের মাথার খুলি ছিল না বলে জানিয়েছেন সেখানকার সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাহফুজুর রহমান। গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জবানবন্দিতে তিনি এই তথ্য দেন।
৩ ঘণ্টা আগে২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ২১ বছর আজ বৃহস্পতিবার। বিচারিক আদালতে সাজার পর হাইকোর্টে খালাস পান সব আসামি। এরপর আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এখন চলছে সেই আপিল শুনানি। আপিল নিষ্পত্তির রিভিউ আবেদনের সুযোগ পাবেন সংক্ষুব্ধরা। আপিল বিভাগে প্রশ্ন উঠেছে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে।
৪ ঘণ্টা আগে‘ফ্ল্যামিংগো এন্টারপ্রাইজ’ নামের অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ৬১৫ কোটি টাকা মূল্যের ঋণ বিতরণ করে আত্মসাতের অভিযোগে এক্সিম ব্যাংক পিএলসির সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানসহ ৩০ জনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
৫ ঘণ্টা আগে