Ajker Patrika

তিন ভোটের কর্মকর্তাদের বিষয়ে অনুসন্ধানে দুদক

  • ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু।
  • দুই শতাধিক কর্মকর্তার তালিকায় আছেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাররাও।
  • সাবেক তিন নির্বাচন কমিশন, কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতারাও আছেন।
সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের আর্থিক দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শুরুতে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে’ করার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

দুদকের এই অনুসন্ধানের আওতায় রয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি), প্রশাসন, পুলিশ, র‍্যাবের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। দুদকের সূত্র বলেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পাশাপাশি ২০১৪ ও ২০২৪ সালের কারচুপির নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের একটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দুই শতাধিক কর্মকর্তার এই তালিকায় রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আলোচিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) নাম রয়েছে। বিতর্কিত ওই তিন নির্বাচনে কারচুপিতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলটির জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদেরও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে দুদকে আসা অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। ওই নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনার, জনপ্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি বা রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার, র‍্যাবসহ সংশ্লিষ্টদের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দুদক। এ জন্য পাঁচ সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে কতজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, তা জানাননি তিনি।

দুদকের সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়ম, যেমন দিনের ভোট রাতে করা, ব্যালট জালিয়াতি, কিছু কিছু কেন্দ্রে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট দেখানো, আর্থিক লেনদেন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রার্থীকে বিজয়ী করার বিষয়ে দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক এই অনুসন্ধান শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়। এই নির্বাচনের দুর্নীতি অনুসন্ধানে গঠিত পাঁচ সদস্যের টিমের শুরুতে প্রধান করা হয় সংস্থার উপপরিচালক আহসানুল কবীর পলাশকে। তিনি প্রশিক্ষণে থাকায় পরে প্রধান করা হয় উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিনকে।

সূত্র জানায়, ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে দুর্নীতি অনুসন্ধানে কোনো টিম এখনো গঠন করা হয়নি। তবে কমিশন থেকে এসব টিম গঠনের বিষয়ে শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভোটারবিহীন নির্বাচনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পুলিশের সাবেক তিন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক, বেনজীর আহমেদ ও জাভেদ পাটোয়ারী, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক দুই কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও হাবিবুর রহমান, ডিএমপির ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নাম রয়েছে এই তালিকায়।

২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনটি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে–এমন প্রশ্নে দুদকের মহাপরিচালক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভিযোগ আসা সাপেক্ষে দুদক ব্যবস্থা নিচ্ছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের বিষয়টি আলোচিত। অন্য অভিযোগগুলো আসা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে কমিশন।’

২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন হয়েছে তৎকালীন কাজী রকিবউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে। ২০১৮ সালের নির্বাচন হয়েছে সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এই তিন কমিশনসহ জেলা-উপজেলায় নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কমিশনের কর্মকর্তাদের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখবে দুদক।

দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট শাখার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে বিতর্কিত ও কারচুপির নির্বাচনের শুরু। সেই নির্বাচন ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুদকে আসা কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুদকের একজন কর্মকর্তা বলেন, তিনটি কারচুপির জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই তালিকায় বিশেষ করে জেলা প্রশাসক বা রিটার্নিং অফিসার ও পুলিশ সুপারদের নাম তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। দুই শতাধিক কর্মকর্তার এই তালিকায় আলোচিত ডিসি ও এসপিদের নাম রয়েছে। তবে তিনি নির্দিষ্ট করে কোনো কর্মকর্তার নাম বলতে অপারগতা জানান।

দুদকের সূত্র জানায়, ওই তিন সংসদ নির্বাচনে ‘পাতানো ভোট’ এবং আওয়ামী লীগকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছেন, কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে সম্পৃক্ত এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনায়ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

  • যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা
  • বিপিসির নথি বলছে, আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি আছে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।

বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।

নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।

তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত