ডয়চে ভেলে
২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হয় ৩০ বছর; আয়করের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আইনে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই বয়স শিথিলযোগ্য। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়করের বাধ্যবাধকতাও নেই।
গত রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন পাওয়ার পর তিনি বলেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র আছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কোন বিবেচনায় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছন, তিনি তা জানেন না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।
ম্যাগাজিন থেকে শুরু
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত রোববার (২৯ জুন) সকালে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার ব্যাগ থেকে গুলির ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে দিনভর আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। একটি সংবাদমাধ্যম এ বিষয়ে তখন খবর প্রকাশ করেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তা সরিয়ে ফেলে।
রোববার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ব্যাগে ম্যাগাজিন পাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি সেখানে বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে। গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপরে কয়েক দফায় যেভাবে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে, তাতে অস্ত্র রাখাটাই স্বাভাবিক। যখন সরকারি প্রোটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সড অস্ত্র রাখা।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘মরক্কোর মারাকেশে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আজ (রোববার) ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইট ছিল। ভোরে প্যাকিং করার সময় অস্ত্রসহ একটা ম্যাগাজিন রেখে এলেও ভুলবশত আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যাগেই থেকে যায়, যেটা স্ক্যানে আসার পর আমার প্রোটোকল অফিসারের কাছে হস্তান্তর করে আসি। বিষয়টি সম্পূর্ণ আনইন্টেনশনাল। শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কী করবো ভাই? ইন্টেনশন থাকলে অবশ্যই অস্ত্র রেখে আসতাম না। এখানে অবৈধ কিছু না থাকলেও অনেকের জন্যই এটা আলোচনার খোরাক বটে।’’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওঠা চাপ দিয়ে নিউজ সরানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ঘটনার পর আমি টিমসহ টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমেও দীর্ঘক্ষণ পর অনলাইনে এসে দেখতে পাচ্ছি, এত কিছু ঘটেছে। নাগরিক হিসেবে আপনারও যদি নিরাপত্তা-ঝুঁকি থাকে, যথাযথ নিয়ম মেনে আপনিও অস্ত্রের লাইসেন্স করতে পারেন।’
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার নিয়ম
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬-এর ধারা ৩-এ ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির যোগ্যতা সম্পর্কে যা যা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে—
১. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
২. শারীরিক ও মানসিকভাবে সমর্থ ৩০-৭০ বছর বয়সসীমার মধ্যে হতে হবে
৩. ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা হতে হবে।
৪. পিস্তল, রিভলবার, রাইফেলের ক্ষেত্রে আবেদনের পূর্ববর্তী তিন বছর ধরে বছরে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা করে কর দিতে হবে। শটগানের ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক লাখ টাকা।
এ ছাড়া প্রবাসী ও দ্বৈত নাগরিকের ক্ষেত্রে আরও কিছু শর্ত রয়েছে।
তবে নীতিমালার ৩২ ধরায় বিশেষ প্রাধিকার পাবেন এ রকম ১০ ধরনের ব্যক্তির কথা বলা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সমপদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা রয়েছেন। আরও রয়েছেন সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভার চেয়ারম্যান, জেলা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন, বিচারপতি। এ ছাড়া নির্ধারিত গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা, জাতীয় দলের শুটারসহ আরও কিছু বিশেষ ব্যক্তিও রয়েছেন সেই তালিকায়। এই ১০ ধরনের ব্যক্তির মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩০ বছর বয়সের বাধ্যবাধকতা নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়কর পরিশোধের বাধ্যবাধকতাও নেই।
এর বাইরে লংব্যারেল (শটগান) আগ্নেয়াস্ত্রের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ২৫ বছর করা হয়েছে বলে জানান একজন জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, বিশেষ ক্ষেত্রে ২৫ বছরেও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিধান রয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সরকারি ওয়েবসাইটে ওই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রোফাইলে তাঁর জন্মতারিখ ১৯৯৯ সালের ১৪ জুলাই। সেই হিসাবে আজ (৩০ জুন) তাঁর বয়স হয় ২৫ বছর ১০ মাস ১৬ দিন।
আসিফ মাহমুদের বিষয়ে প্রশ্ন
ব্যতিক্রমের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এখন কয়েকটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। প্রশ্ন হলো—
১. তিনি কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন?
২. কোন সময়ে নিয়েছেন?
৩. বিমানবন্দরে যে ম্যাগাজিন ধরা পড়েছে, তা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই কেন তাঁর প্রটোকল অফিসারকে দেওয়া হলো?
উড়োজাহাজে বৈধ অস্ত্র হ্যান্ডব্যাগে বহনের নিয়ম নেই। তবে ঘোষণা দিয়ে বদ্ধ লাগেজ হিসেবে বহন করা যায়। পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘সাধারণ নিয়মে এ ধরনের ঘটনায় ম্যাগাজিনটি জব্দ করে বৈধতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মালিককে ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু আসিফ মাহমুদ একজন উপদেষ্টা। আর আমার মনে হয়, তিনি নিশ্চয়ই বৈধ কাগজপত্র দেখিয়েছেন। সেই কারণে তাঁর প্রটোকল অফিসারের কাছে ম্যাগাজিনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তবে ওই ম্যাগাজিন কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের—সে বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত নয়। তারা কাগজপত্র পরীক্ষা করেও দেখেনি। এসব প্রশ্নের জবাব পেতে চায় তারা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ওই সময়ে ইমিগ্রেশনে কারা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা কী প্রক্রিয়ায় ফেরত দিয়েছেন—সবকিছু জানার চেষ্টা করছি।’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স আসিফ মাহমুদের আগ্নেয়াস্ত্রসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘তাঁর এপিএসের দুর্নীতিসহ তিনি এরই মধ্যে অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। আমরা জানতে চাই, তিনি কীভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলেন? কোন যোগ্যতায় পেলেন? আর বিমানবন্দরে পুলিশের আইনিপ্রক্রিয়া ছাড়া তাঁর প্রটোকল অফিসারকে কেন ম্যাগাজিন ফেরত দেওয়া হলো, এরও ব্যাখ্যা দরকার।’
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন কি না, নিয়ে থাকলে কখন ও কীভাবে নিয়েছেন, তা আমার জানা নেই।’
বাংলাদেশে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিসি)। তবে এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন। তারাই এসবি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যোগ্যতা যাচাই করেন।
আর ব্যক্তি ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শর্ত মেনে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিতে পারে। ব্যক্তিপর্যায়ে বন্দুক, রাইফেল, শটগান, পিস্তল ও রিভলবারের লাইসেন্স দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যা বললেন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন—বৈধ লাইসেন্স পেতে বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হয়, কিন্তু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বয়স ৩০ হয়নি, তাহলে তিনি কীভাবে লাইসেন্স পেলেন? উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যেহেতু ওই আইনটা দেখিনি, সেহেতু এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’
তবে তিনি জানান, অনেকে বলছেন তিনি (উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ) একে-৪৭-এর লাইসেন্স পেয়েছেন। এটা একে-৪৭ নয়, এটা তাঁরই একটি হাতিয়ার, তাঁর একটি পিস্তলের খালি একটি ম্যাগাজিন ছিল। সেটি ভুলে রয়ে গিয়েছিল। এটা আসলে ভুলেই হয়েছে। অনেক সময় এমন হয় যে, আপনি একটা চশমা নিয়ে যাবেন, কিন্তু চশমা না নিয়ে মোবাইল নিয়ে রওনা হয়ে গেছেন। এটা জাস্ট একটা ভুল। উনি যদি আগে জানতে পারতেন, তাহলে কোনো অবস্থাতেই এটা নিতেন না।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এখন দেশের বাইরে থাকায় তাঁর ফেসবুক পোস্টের বাইরে নতুন কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের সব লাইসেন্স স্থগিত করে অস্ত্রগুলো গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশনায় বলা হয়, যাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা দেবেন না , তাঁদের লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪৯ হাজার ৬৭১টি লাইসেন্স করা বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪৬ হাজার লাইসেন্স ব্যক্তির নামে। বাকিগুলো প্রতিষ্ঠানের নামে। বিভাগভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১৪ হাজার ৬৮৩টি। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহে, ২ হাজার ১১৮টি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশের পরও ৭ হাজারের বেশি লাইসেন্স করা অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ বছরে দেওয়া ৫ হাজার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। আরও আগ্নেয়াস্ত্রের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে বৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির ডিলার হিসেবে কাজ করছে ৮৪টি প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্যে একটি ঢাকার ‘শিকার ও শিকারীর’ স্বত্বাধিকারী নাসির আহমেদ বলেন, ‘এখন অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া বলতে গেলে বন্ধ আছে। বিশেষ বিবেচনায় হয়তো দুই-একজন পাচ্ছেন। আর ব্যক্তিগত অস্ত্র জমা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা জমা দেননি, তাঁদের অস্ত্র অবৈধ হয়ে গেছে। তবে প্রতিষ্ঠান যাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন, তাদের অস্ত্র ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, শেখ হাসিনার ১৫ বছরে যেসব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সেই অস্ত্রগুলো সরকার নিয়ে নিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেটা বন্ধ করা হয়নি। আর যেসব অস্ত্র জমা পড়েছে, সেগুলো আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। যারা জমা দেয়নি, তাদের ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হয় ৩০ বছর; আয়করের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আইনে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই বয়স শিথিলযোগ্য। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়করের বাধ্যবাধকতাও নেই।
গত রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন পাওয়ার পর তিনি বলেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র আছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কোন বিবেচনায় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছন, তিনি তা জানেন না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।
ম্যাগাজিন থেকে শুরু
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত রোববার (২৯ জুন) সকালে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার ব্যাগ থেকে গুলির ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে দিনভর আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। একটি সংবাদমাধ্যম এ বিষয়ে তখন খবর প্রকাশ করেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তা সরিয়ে ফেলে।
রোববার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ব্যাগে ম্যাগাজিন পাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি সেখানে বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে। গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপরে কয়েক দফায় যেভাবে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে, তাতে অস্ত্র রাখাটাই স্বাভাবিক। যখন সরকারি প্রোটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সড অস্ত্র রাখা।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘মরক্কোর মারাকেশে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আজ (রোববার) ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইট ছিল। ভোরে প্যাকিং করার সময় অস্ত্রসহ একটা ম্যাগাজিন রেখে এলেও ভুলবশত আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যাগেই থেকে যায়, যেটা স্ক্যানে আসার পর আমার প্রোটোকল অফিসারের কাছে হস্তান্তর করে আসি। বিষয়টি সম্পূর্ণ আনইন্টেনশনাল। শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কী করবো ভাই? ইন্টেনশন থাকলে অবশ্যই অস্ত্র রেখে আসতাম না। এখানে অবৈধ কিছু না থাকলেও অনেকের জন্যই এটা আলোচনার খোরাক বটে।’’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওঠা চাপ দিয়ে নিউজ সরানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ঘটনার পর আমি টিমসহ টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমেও দীর্ঘক্ষণ পর অনলাইনে এসে দেখতে পাচ্ছি, এত কিছু ঘটেছে। নাগরিক হিসেবে আপনারও যদি নিরাপত্তা-ঝুঁকি থাকে, যথাযথ নিয়ম মেনে আপনিও অস্ত্রের লাইসেন্স করতে পারেন।’
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার নিয়ম
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬-এর ধারা ৩-এ ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির যোগ্যতা সম্পর্কে যা যা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে—
১. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
২. শারীরিক ও মানসিকভাবে সমর্থ ৩০-৭০ বছর বয়সসীমার মধ্যে হতে হবে
৩. ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা হতে হবে।
৪. পিস্তল, রিভলবার, রাইফেলের ক্ষেত্রে আবেদনের পূর্ববর্তী তিন বছর ধরে বছরে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা করে কর দিতে হবে। শটগানের ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক লাখ টাকা।
এ ছাড়া প্রবাসী ও দ্বৈত নাগরিকের ক্ষেত্রে আরও কিছু শর্ত রয়েছে।
তবে নীতিমালার ৩২ ধরায় বিশেষ প্রাধিকার পাবেন এ রকম ১০ ধরনের ব্যক্তির কথা বলা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সমপদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা রয়েছেন। আরও রয়েছেন সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভার চেয়ারম্যান, জেলা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন, বিচারপতি। এ ছাড়া নির্ধারিত গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা, জাতীয় দলের শুটারসহ আরও কিছু বিশেষ ব্যক্তিও রয়েছেন সেই তালিকায়। এই ১০ ধরনের ব্যক্তির মধ্যে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমপদমর্যাদারসহ ৯ ধরনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩০ বছর বয়সের বাধ্যবাধকতা নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে আয়কর পরিশোধের বাধ্যবাধকতাও নেই।
এর বাইরে লংব্যারেল (শটগান) আগ্নেয়াস্ত্রের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ২৫ বছর করা হয়েছে বলে জানান একজন জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, বিশেষ ক্ষেত্রে ২৫ বছরেও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিধান রয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সরকারি ওয়েবসাইটে ওই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রোফাইলে তাঁর জন্মতারিখ ১৯৯৯ সালের ১৪ জুলাই। সেই হিসাবে আজ (৩০ জুন) তাঁর বয়স হয় ২৫ বছর ১০ মাস ১৬ দিন।
আসিফ মাহমুদের বিষয়ে প্রশ্ন
ব্যতিক্রমের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এখন কয়েকটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, তাঁর লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। প্রশ্ন হলো—
১. তিনি কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন?
২. কোন সময়ে নিয়েছেন?
৩. বিমানবন্দরে যে ম্যাগাজিন ধরা পড়েছে, তা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই কেন তাঁর প্রটোকল অফিসারকে দেওয়া হলো?
উড়োজাহাজে বৈধ অস্ত্র হ্যান্ডব্যাগে বহনের নিয়ম নেই। তবে ঘোষণা দিয়ে বদ্ধ লাগেজ হিসেবে বহন করা যায়। পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘সাধারণ নিয়মে এ ধরনের ঘটনায় ম্যাগাজিনটি জব্দ করে বৈধতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মালিককে ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু আসিফ মাহমুদ একজন উপদেষ্টা। আর আমার মনে হয়, তিনি নিশ্চয়ই বৈধ কাগজপত্র দেখিয়েছেন। সেই কারণে তাঁর প্রটোকল অফিসারের কাছে ম্যাগাজিনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তবে ওই ম্যাগাজিন কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের—সে বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত নয়। তারা কাগজপত্র পরীক্ষা করেও দেখেনি। এসব প্রশ্নের জবাব পেতে চায় তারা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ওই সময়ে ইমিগ্রেশনে কারা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা কী প্রক্রিয়ায় ফেরত দিয়েছেন—সবকিছু জানার চেষ্টা করছি।’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স আসিফ মাহমুদের আগ্নেয়াস্ত্রসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘তাঁর এপিএসের দুর্নীতিসহ তিনি এরই মধ্যে অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। আমরা জানতে চাই, তিনি কীভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলেন? কোন যোগ্যতায় পেলেন? আর বিমানবন্দরে পুলিশের আইনিপ্রক্রিয়া ছাড়া তাঁর প্রটোকল অফিসারকে কেন ম্যাগাজিন ফেরত দেওয়া হলো, এরও ব্যাখ্যা দরকার।’
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন কি না, নিয়ে থাকলে কখন ও কীভাবে নিয়েছেন, তা আমার জানা নেই।’
বাংলাদেশে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিসি)। তবে এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন। তারাই এসবি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যোগ্যতা যাচাই করেন।
আর ব্যক্তি ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শর্ত মেনে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিতে পারে। ব্যক্তিপর্যায়ে বন্দুক, রাইফেল, শটগান, পিস্তল ও রিভলবারের লাইসেন্স দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যা বললেন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন—বৈধ লাইসেন্স পেতে বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হয়, কিন্তু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বয়স ৩০ হয়নি, তাহলে তিনি কীভাবে লাইসেন্স পেলেন? উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যেহেতু ওই আইনটা দেখিনি, সেহেতু এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’
তবে তিনি জানান, অনেকে বলছেন তিনি (উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ) একে-৪৭-এর লাইসেন্স পেয়েছেন। এটা একে-৪৭ নয়, এটা তাঁরই একটি হাতিয়ার, তাঁর একটি পিস্তলের খালি একটি ম্যাগাজিন ছিল। সেটি ভুলে রয়ে গিয়েছিল। এটা আসলে ভুলেই হয়েছে। অনেক সময় এমন হয় যে, আপনি একটা চশমা নিয়ে যাবেন, কিন্তু চশমা না নিয়ে মোবাইল নিয়ে রওনা হয়ে গেছেন। এটা জাস্ট একটা ভুল। উনি যদি আগে জানতে পারতেন, তাহলে কোনো অবস্থাতেই এটা নিতেন না।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এখন দেশের বাইরে থাকায় তাঁর ফেসবুক পোস্টের বাইরে নতুন কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের সব লাইসেন্স স্থগিত করে অস্ত্রগুলো গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশনায় বলা হয়, যাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা দেবেন না , তাঁদের লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪৯ হাজার ৬৭১টি লাইসেন্স করা বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪৬ হাজার লাইসেন্স ব্যক্তির নামে। বাকিগুলো প্রতিষ্ঠানের নামে। বিভাগভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১৪ হাজার ৬৮৩টি। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহে, ২ হাজার ১১৮টি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশের পরও ৭ হাজারের বেশি লাইসেন্স করা অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ বছরে দেওয়া ৫ হাজার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। আরও আগ্নেয়াস্ত্রের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে বৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির ডিলার হিসেবে কাজ করছে ৮৪টি প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্যে একটি ঢাকার ‘শিকার ও শিকারীর’ স্বত্বাধিকারী নাসির আহমেদ বলেন, ‘এখন অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া বলতে গেলে বন্ধ আছে। বিশেষ বিবেচনায় হয়তো দুই-একজন পাচ্ছেন। আর ব্যক্তিগত অস্ত্র জমা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা জমা দেননি, তাঁদের অস্ত্র অবৈধ হয়ে গেছে। তবে প্রতিষ্ঠান যাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন, তাদের অস্ত্র ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, শেখ হাসিনার ১৫ বছরে যেসব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সেই অস্ত্রগুলো সরকার নিয়ে নিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেটা বন্ধ করা হয়নি। আর যেসব অস্ত্র জমা পড়েছে, সেগুলো আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। যারা জমা দেয়নি, তাদের ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের ৯০ শতাংশ ইঞ্জিনেরই (লোকোমোটিভ) মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ৩০ থেকে ৬০ বছরের পুরোনো এসব ইঞ্জিন যাত্রাপথে বিকল হয়ে দুর্ভোগে ফেলছে যাত্রীদের। শুধু পণ্যবাহী, লোকাল বা মেইল নয়; কোনো কোনো আন্তনগর ট্রেনও চলছে কার্যকাল পেরিয়ে যাওয়া ইঞ্জিনে।
৮ ঘণ্টা আগেবিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ হলে আসামিকে কারাগারের কনডেম সেলে (নির্জন প্রকোষ্ঠ) পাঠানো হয়। মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেম সেলে রাখা ‘দুবার সাজা দেওয়ার শামিল’ উল্লেখ করে এই বিধান বাতিল করেছিলেন হাইকোর্ট। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিন পরই এই রায় স্থগিত করেন আপিল
৮ ঘণ্টা আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সারা দেশে চালানো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গতকাল রোববার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ অ্যাটর্নি জেনারেল ও
৮ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স-সেবা নিয়ে আবারও অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে প্রায় ৭ লাখ গ্রাহকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ঝুলে আছে। ২০২০ সালের ২৯ জুলাই থেকে পাঁচ বছর মেয়াদে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স
৯ ঘণ্টা আগে