Ajker Patrika

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের দাবির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিল পুলিশ সদর দপ্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৩: ২৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চার ব্যানারে সম্প্রতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও সহিংসতার যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। গত ১০ জুলাই অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে গত ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ২৭ জন নিহত এবং গত ১১ মাসে ২ হাজার ৪৪২টি সাম্প্রদায়িক হামলা ও সহিংসতার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়।

পুলিশ সদর দপ্তর সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখিত ২৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করেছে। পর্যালোচনার পর জানানো হয়েছে, এর মধ্যে ২২টি ঘটনায় নিয়মিত হত্যা মামলা এবং পাঁচটি ক্ষেত্রে অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে জমি-জায়গাসংক্রান্ত বিরোধ (দুটি), আর্থিক লেনদেন (দুটি, যার মধ্যে মাদক ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত (একটি), ডাকাতি/দস্যুতা (সাতটি), প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের গুলিতে একজন (সন্ত্রাসী সন্দেহে), তরমুজ ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে মারামারি (একটি), আত্মহত্যা (তিনটি) এবং মৃতদেহ উদ্ধার (১১টি) সংক্রান্ত ঘটনাগুলো উঠে এসেছে।

মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনাগুলোর মধ্যে ভবঘুরে/মানসিকভাবে অসুস্থ নারীর সন্দেহজনক মৃত্যু, জুম চাষে গিয়ে খেয়াং নারীর মৃত্যু, তামাকখেত থেকে পাতা কুড়াতে যাওয়া নারীর মৃতদেহ উদ্ধার, বাড়ির পাশ থেকে জখমহীন মৃতদেহ/অন্যান্য স্থান থেকে মৃতদেহ উদ্ধার ইত্যাদি ঘটনার তদন্ত চলমান বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোতে মোট ৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ১৫ জন আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন এবং ১৮ জন আসামি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্তে দেখা গেছে, কোনো হত্যাকাণ্ডই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বা সাম্প্রদায়িকতার কারণে সংঘটিত হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে যৌন হয়রানি/ধর্ষণ/গণধর্ষণ সংক্রান্তে মোট ২০টি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ১৬টি ঘটনার অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে এবং ২৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনটি ঘটনা সংক্রান্তে কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। রাজশাহীর তানোরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, অভিযুক্তের সঙ্গে বাদীর পূর্ব থেকে পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল। মাগুরার শ্রীপুর হরিনন্দীগ্রামে কিশোর কুমার রায়ের বাড়িতে ডাকাতির পর সহধর্মিণীকে গণধর্ষণের ঘটনাটিতে কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি এবং পুলিশি তদন্তে প্রাথমিকভাবে এর সত্যতা মেলেনি।

সংগঠনটি জানায়, সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটে গত বছরের ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত, ২ হাজার ১০টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৭৬৯টি সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ও হামলার ঘটনা। বাংলাদেশ পুলিশ এই ১ হাজার ৭৬৯টি ঘটনা যাচাই-বাছাই করে ৫৬টি জেলায় মোট ১ হাজার ৪৫৭টি ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। এই ১ হাজার ৪৫৭টি ঘটনার মধ্যে মোট ৬২টি ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে এবং ৯৫১টি ঘটনায় জিডি করা হয়েছে। ৬২টি মামলায় মোট ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তদন্তে দেখা যায়, ১ হাজার ৭৬৯টি ঘটনার মধ্যে ১ হাজার ৪৫২টি ঘটনা (৮২.৮ শতাংশ) গত বছরের ৫ আগস্ট সংঘটিত হয় এবং ১ হাজার ২৩৪টি ঘটনা রাজনৈতিক বিরোধ সংক্রান্ত। ১৬১টি ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত পূজা মণ্ডপ/উপাসনালয় সংক্রান্ত মোট ১২৭টি সহিংসতার ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৬টি ঘটনায় মামলা এবং ৬১টি ঘটনায় জিডি লিপিবদ্ধ করা হয়। রুজুকৃত মামলায় মোট ৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মন্দির/পারিবারিক মন্দিরে চুরি, প্রতিমা/মন্দির/পারিবারিক মন্দিরে ভাঙচুর, অগ্নি-সংযোগ, জমি দখল, উচ্ছেদ, উচ্ছেদের চেষ্টা ইত্যাদি সংক্রান্তে মোট ৬০টি ঘটনার অভিযোগ করা হয়। পুলিশি পর্যালোচনায় দেখা যায়:

চুরি: মন্দির/পারিবারিক মন্দিরের মূর্তি/অলংকার/আসবাবপত্র/দান বাক্সের টাকা সংক্রান্তে ২০টি চুরির ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৪টি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয় এবং ৫টি ঘটনা জিডিতে লিপিবদ্ধ করা হয়। একটি চুরির ঘটনার তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায়নি।

ভাঙচুর: প্রতিমা/মন্দির/পারিবারিক মন্দিরে ভাঙচুরের মোট ২৪টি ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়। এ সংক্রান্তে ১৮টি মামলা ও ৪টি ঘটনা জিডিতে লিপিবদ্ধ করা হয়। এসব মামলায় মোট ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ১০ জন আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। দুইটি ভাঙচুরের ঘটনার তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অগ্নি-সংযোগ: ৪টি অগ্নি-সংযোগের ঘটনার মধ্যে ২টি ঘটনায় প্রাথমিকভাবে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য পাওয়া যায়নি।

জমি সংক্রান্ত: ৪টি ঘটনায় জমি ও সীমানা সংক্রান্ত সমস্যা ছিল, যার মধ্যে ২টি ঘটনা স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সমাধান হয়েছে। ৬টি জায়গা দখলের অভিযোগের সংবাদে তদন্তে প্রকৃতপক্ষে জায়গা দখলের তথ্য পাওয়া যায়নি।

উচ্ছেদ: খিলক্ষেত থানাধীন বাংলাদেশ রেলওয়ের জায়গায় অস্থায়ী পূজা মণ্ডপটি মূলত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

বগুড়ার শ্মশানঘাট: বগুড়ায় শ্মশানঘাটের পিলার ঠিকাদার কর্তৃক ভেঙে ফেলার ঘটনায় প্রশাসনের উদ্যোগে পুনরায় শ্মশান ঘাট নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংঘটিত অন্যান্য ঘটনাগুলো পরবর্তীতে সুনির্দিষ্টভাবে সরবরাহ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, সংঘটিত প্রতিটি ঘটনায় পুলিশ সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে এবং সব স্থাপনা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর এখন দেশের মাটিতে। আজ বৃহস্পতিবার ১১টায় ৫৪ মিনিটে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জড়িয়ে ধরেন। পরে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কুশল-বিনিয়ম করেন। নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তার জন্য এ সময় তিনি সরকারপ্রধানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কথোপকথনে তারেককে বলতে শোনা যায়, ‘জি জি...আমার জন্য আমার...জি জি...আপনার শরীর কেমন আছে?’

...

‘হ্যাঁ, দোয়া করবেন, দোয়া করবেন।’ ...

‘আমি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি আপনার পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম আয়োজন করেছেন, বিশেষ করে আমার নিরাপত্তার জন্য। অ্যান্ড উই আর থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ...থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। সব রকম আয়োজনের জন্য।’

...

‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই। জি নিশ্চয়ই...ইনশাল্লাহ...ইনশাল্লাহ।’

ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

এরপরই তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ফুলের মালা পরিয়ে জামাতাকে বরণ করেন নেন। নাতনি জাইমাকেও আদর করতে দেখা যায়। তারেক রহমান এ সময় তাঁর পাশে কিছু সময় বসে থাকেন। এরপর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে তারেক রহমানে স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে সাদা রঙের একটি জিপ গাড়িতে উঠে বসেন।

দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমান বেলা ১২টা মিনিটে ৩২ মিনিটে লাল সবুজ রঙে একটি বুলেটপ্রুফ বাসে উঠেন। ২ মিনিট পরে বাসটি বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিটের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে যেতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তুর ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনজন। একইদিনে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে জব্দ করা কার্তুজ ও বুলেট পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনজনের জবানবন্দি

গতকাল বুধবার সামিয়া, মারিয়া ও সিপুকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি। মামলার তদন্তকর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তিনজনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আসামি মারিয়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে এবং সামিয়া ও সিপু ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে তিনজন কী বলেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিশ্বস্ত এক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে ও পরে ফয়সাল কি করেছে এবং কি বলেছে সে সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন তিনজন।

এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর এই তিনজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর তিনজনকে আবার দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১৪ ডিসেম্বর সামিয়া ও সিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, এ মামলায় গ্রেফতার ফয়সালের মা ও বাবাও স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কার্তুজ-বুলেট ব্যালিস্টিক পরীক্ষা

বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ঘটনাস্থলে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও বুলেট সদৃশ বস্তু পরীক্ষার নির্দেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদি ওরফে ওসমান গণি (৩৩) গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটের দিকে পল্টন থানাধীন বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড সংলগ্ন ডিআর টাওয়ারের সামনে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদেহ বাংলাদেশ বিমান যোগে দেশে এনে ২০ ডিসেম্বর সকালে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

মামলায় ঘটনাস্থল হতে ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তু আলামত জব্দ করা হয়। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আলামতসমূহ ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদান করার জন্য সিআইডির ব্যালিস্টিক শাখার বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত