Ajker Patrika

পদ্মা সেতু, স্যাটেলাইট ও পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সমালোচনার জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ জুন ২০২২, ১৭: ৩৫
পদ্মা সেতু, স্যাটেলাইট ও পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সমালোচনার জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী

দেশের বড় প্রকল্পগুলো নিয়ে অনেক সমালোচকেরা অর্বাচীনের মতো মিথ্যা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে সংযতভাবে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘তাঁরা অর্বাচীনের মতো একেকটা কথা বলবে আর মিথ্যে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে। এটা কিন্তু গ্রহণ করা যায় না।’

আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভার সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন তিনি। 

জরুরি অবস্থাকালীন সরকারের পদলেহনকারীরা বেশি সমালোচনা করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারাই বেশি কথা বলে, তারাই সমালোচনা বেশি করে, যারা ইমার্জেন্সি সরকারের পদলেহন করেছে, চাটুকারিতা করেছে, তারাই সমালোচনা বেশি করে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। যাই হোক কে কী বলল সেটা নিয়ে আমি কখনো ঘাবড়াইও না, চিন্তাও করি না। দেশকে ভালোবেসে দেশের মানুষের জন্য যেটা করা ন্যায় সংগত সেটাই করি।’ 

পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ নিয়ে সমালোচনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক কথা। তারপর আসলো পদ্মা সেতুর রেললাইন। ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে পদ্মা সেতুর রেললাইন করার কী দরকার ছিল। কারা চলবে এই রেল লাইনে? আমি অপেক্ষা করছি রেললাইন যখন চালু হবে তখন কেউ চলে কি না। তখন এই মানুষগুলোকে আমার মনে হয় ধরে নিয়ে দেখানো দরকার যে এই রেল সেতুতে মানুষ চড়ে কি না।’ 

পদ্মা খরস্রোতা নদী উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেইখানে...রেললাইন নিয়েও তাদের সমালোচনা, এত টাকা কেন খরচ করা হলো। কিন্তু এই একটা সেতু নির্মাণ হওয়ার পর দক্ষিণ অঞ্চলের জেলাগুলোর অর্থনীতিতে যে গতিশীলতা আসবে, এই মানুষগুলোর চলাচল, পণ্য পরিবহন থেকে সর্বক্ষেত্রে সেটা তারা একবার ভেবে দেখছেন না। মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়। আর এখন রেলে করে তারা চলে আসবে।’ 

তিনি বলেন, ‘এই রেলসেতু তো সেই মোংলা পোর্ট পর্যন্ত সংযুক্ত হচ্ছে। কাজেই ভবিষ্যতে এটা আমরা পায়রা পোর্ট যখন আমরা করব পায়রা পোর্ট পর্যন্ত যাতে সংযুক্ত হয় সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। কিন্তু সেটা এই মুহূর্তে বেশি প্রয়োজন নেই বলে আমরা একটু ধীর গতিতে যাচ্ছি।’ 

পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ নিজের টাকায় করা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের সমালোচনা ৪০ হাজার কোটি টাকা নাকি আমরা ধার করেছি। এখানে যারা এই কথাগুলো বলছে তাদের স্পষ্ট বলতে চাই যে পদ্মা সেতুর একটি টাকাও আমরা কারও কাছ থেকে ঋণ নেয়নি, ধার নেয়নি। এটা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে করা হচ্ছে। এটা তাদের জানা উচিত। একেবারে সরকারি কোষাগার থেকে টাকা দিয়ে আমরা তৈরি করছি।’ 

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমনকি যখন আমরা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করলাম তখনো তারা বলল এটার কী দরকার ছিল। মানে যাই করবেন তাতেই বলবে এটার কী দরকার ছিল। তাদের জন্য দরকার না থাকতে পারে আমাদের দেশের মানুষের জন্য দরকার আছে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের মতো দুই চারজন যারা দেশের অর্থ সম্পদ ভোগ করে তাদের কথা ভাবি না। ভাবি দেশের তৃণমূলের মানুষ যারা অসহায়, যারা শোষিত, যারা বঞ্চিত, আমি তাদের কথা ভাবি। তাদের কল্যাণ যাতে হয় আমরা সেটা দেখি। শুধু বড়লোকদের দুই চারটা ছেলে মেয়ে কম্পিউটার ব্যবহার করবে আর আমার গ্রামের ছেলে মেয়েরা ব্যবহার করবে না সেটা তো হয় না।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাজেই একেবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত যাতে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে, সমস্ত তথ্য আদান প্রদান করতে পারে, বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ করতে পারে, বিশ্বটাকে তাদের নিজের হাতের মুঠোয় আনতে পারে আমরা সেভাবেই পদক্ষেপ নেই।’ 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কেউ দেখলাম ইদানীং একটা কথা খুব বেশি প্রচার করার চেষ্টা করছে। একটা হলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তারা টাকার অঙ্ক দিয়ে দেখাতে চাচ্ছেন যে এত টাকা খরচ করার দরকারটা কী ছিল?’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি শুধু এটুকুই বলব, আমরা যখন সরকার গঠন করে আমরা রেন্টে পাওয়ার প্ল্যান্ট এনে কাজ শুরু করলাম তখনো এরা বলছেন এটার দরকারটা কি ছিল। এতে নাকি ভীষণ দুর্নীতি হচ্ছে। আর আজকে আমরা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট যেটা সব থেকে বেশি পরিবেশবান্ধব, কোনো পলিউশন নেই, আনাতে খরচ বেশি কিন্তু বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী আর তা ছাড়া আমরা তো এটা একটি দেশের সঙ্গে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ নিয়েই এটা করেছি। সেখানে আমাদের টাকার অঙ্ক কম। আমরা টাকা পেয়েছি এবং সেটা আমাদের শোধ দিতে হবে ৫০ বছরে।’ 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেটাই করতে গিয়েছি সেখানেই তাদের সমালোচনা। কাজেই কিছু লোক আছে তাদের সব সময় সমালোচনা করাটা অভ্যাসই থাকে। যত ভালো কাজ করেন না কেন নিজেদেরটা তারা দেখে, নিজেদেরটা তারা বোঝে। কিন্তু জনগণের ভালো মন্দ বোঝে না।’ 

তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি বলে আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট সচল। কাজেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে পেরেছি যেটা সেই একষট্টি সালে করার কথা। আইয়ুব খানের আমলে তখন ১৯৬২ সালে দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে। একটা তখনকার পূর্ব বাংলায়, আরেকটা পশ্চিম পাকিস্তানে। আমাদের সেই মুলোটা ঝুলিয়ে দিয়ে পরবর্তীতে আমাদের এখানে করা হলো না, দ্বিতীয়টাও পশ্চিম পাকিস্তানে করা হয়।’ 

তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের একটা লক্ষ্যই ছিল। আজকে আমরা সেই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। এর বিদ্যুৎটা যখন আসবে সেটা তো আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখবে। অর্থনীতি আরও সচল হবে, আরও চাঙা হবে এবং এটাতো সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কাজেই এটা নিয়ে এতে সমালোচনা কেন। এটা নিয়ে কারা কথা বলছেন? গরিব মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ গেছে সেটা তাদের পছন্দ না। তারাই খাবেন, ভালো থাকবেন আর আমার গরিব মানুষগুলো ধুকে ধুকে মরবে। এটাই তারা চায়।’ 

স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গুরুত্ব তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, ‘কাজেই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ যাবে তাতে যে আমাদের অর্থনীতির ভিত্তিটা কতটা তৈরি হবে, মজবুত হবে সেটা তারা চিন্তা করেন না। এর থেকে যে আর্থ সামাজিক উন্নয়নের একটা সুযোগ সৃষ্টি হবে এটাও তারা ভাবেন না। কারণ তারা তো এখন বিদ্যুৎ পেয়ে গেছেন। যখন ১০ ঘণ্টা, ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেতেন না তখন হয়তো বিদ্যুতের চাহিদাটা তারা বুঝতেন।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। আর সেই বিদ্যুতে ঘরে ঘরে টেলিভিশন চলছে আর এই বেসরকারি খাতে টেলিভিশন আমিই উন্মুক্ত করে দিয়েছি আর সেখানে বসেই তারা সমালোচনা করে যাচ্ছেন।’

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সেনাপ্রধানের সঙ্গে পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেনাপ্রধানের সঙ্গে পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজ
সেনাপ্রধানের সঙ্গে পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজ

পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আজ রোববার (৯ নভেম্বর) সেনাসদরে তাঁদের মধ্যে সাক্ষাৎকারটি অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সেনাবাহিনী বলেছে, সাক্ষাৎকালে পারস্পরিক কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা আরও জোরদার ও পারস্পরিক সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এ ছাড়া যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও পরিদর্শনের মাধ্যমে সামরিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের সম্ভাবনা নিয়েও তাঁরা মতবিনিময় করেন। অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ চলতি বছরের গত ফেব্রুয়ারি মাসে করাচি ও উত্তর আরব সাগরে অনুষ্ঠিত যৌথ অনুশীলন AMAN-এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের পেশাদারত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনের সুপারিশ সিইসিকে দিলেন সাংবাদিকেরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা সিইসির সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা সিইসির সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের জন্য গণমাধ্যম নীতিমালায় বেশ কিছু অসংগতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) ও রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)। এসব বিষয়ে সংশোধনের দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে লিখিত সুপারিশপত্র দিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা।

আজ রোববার (৯ নভেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এক বৈঠকে এই দাবি জানানো হয়। পরে সিইসির পক্ষ থেকে গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

বৈঠকের পর বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক রাজা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যে আচরণবিধি (নীতিমালা) তৈরি করেছে, তাতে আমাদের সাংবাদিকদের কিছু বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। আমরা ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার ও রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) যৌথভাবে একাধিক সেমিনার করেছি, যেখানে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, অংশীজন ও সংবাদকর্মীদের মতামত নিয়ে আমরা একটি সুপারিশমালা তৈরি করেছি। ওই সুপারিশমালা নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দিয়েছি।’

রেজোয়ানুল হক রাজা জানান, বৈঠকে ইসির সিনিয়র সচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁরা সাংবাদিকদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

বিজেসির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমরা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছি যে, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অবহিত করার যে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে, সেটি সাংবাদিকদের জন্য অপ্রয়োজনীয় প্রতিবন্ধকতা। আমাদের যদি আইডি কার্ড ইস্যু করা থাকে, তাহলে আলাদা করে অনুমতি চাওয়ার প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট থাকার সীমা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছি।’

রেজোয়ানুল হক রাজা বলেন, ‘কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি কোনো কঠোর সময়সীমা নয়, বরং কেন্দ্রের জায়গার সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় একটি সাধারণ নির্দেশনামাত্র। আমরা বুঝেছি, সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা সীমিত করার উদ্দেশ্যে এই ধারা নয়।’

বিজেসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা আশ্বস্ত যে কমিশন আন্তরিকভাবে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করতে চায়। এমনকি কমিশন নিজেও মনে করে, সিসি ক্যামেরা না থাকলেও সাংবাদিকদের ক্যামেরা থাকলে সেটি ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।’

সরাসরি সম্প্রচার নিয়েও আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে রেজোয়ানুল হক বলেন, ‘আমরা বলেছি, সাংবাদিকদের উচিত দায়িত্বশীল থাকা, যেন সম্প্রচারে ভোট গ্রহণপ্রক্রিয়ায় কোনো বিঘ্ন না ঘটে। তবে যদি কোনো অনিয়ম বা কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটে, সে ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এসব পরিস্থিতিতে কঠোর নীতিমালা কার্যকর রাখা সম্ভব নয়।’

রেজোয়ানুল বলেন, ‘আমরা আশা করছি, নির্বাচন কমিশন দ্রুত আমাদের সুপারিশগুলো বিবেচনা করে আচরণবিধিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনবে। এতে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখা সহজ হবে এবং জনগণের জানার অধিকার আরও সুরক্ষিত হবে।’

আরএফইডি সভাপতি কাজী জেবেল বলেন, ‘আমরা বলেছি, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটলে যারা এ ধরনের ঘটনায় জড়িত থাকবে, তাদের বিচার নিশ্চিত করার বিষয়টি নীতিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ক্যামেরাপারসনের ওপর আক্রমণ বা সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা এই নীতিমালায় স্পষ্টভাবে যুক্ত করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন বেতনকাঠামোর সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচিত সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৩
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি

নতুন পে কমিশন গঠন ও সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতার বিষয়ে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি নিশ্চিত করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।

আজ রোববার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি, অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ইতিবাচক জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সার্বিক দিকের অগ্রগতি ভালো। মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, তবে এর বিপরীতে বাসাভাড়া ও পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করছি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় মাত্রায় আনতে।’ তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, সামগ্রিকভাবে বাজারে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে এবং চালের দামও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের প্রসঙ্গে সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, কিস্তি নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে তিনি জানান, ঋণের ষষ্ঠ কিস্তির অর্থ অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আসবে না। প্রতিষ্ঠানটি রাজনৈতিক সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে থাকা সমস্ত তথ্য পরবর্তী সরকারের কাছে প্যাকেজ আকারে হস্তান্তর করা হবে।

অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, সরকার অপরিশোধিত তেল আমদানির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সার ও কৃষিতে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি অব্যাহত রাখা হচ্ছে।

আজকের ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন দেশ থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টন সার ও ৫০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আজকের সভায় আমন মৌসুমের জন্য ধান ও চাল সংগ্রহের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ বছর আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকার ৭ লাখ টন ধান ও চাল সংগ্রহ করবে। এর মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে—ধান ৫০ হাজার ৫০০ টন, সেদ্ধ চাল ৬ লাখ টন,ও আতপ চাল ৫০ হাজার টন।

সংগ্রহমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি—আমন ধান ৩৪ টাকা, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা ও আতপ চাল ৪৯ টাকা।

উল্লেখ্য, ধান ও চালের এই নির্ধারিত দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি চার টাকা বেশি। এই ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হবে এবং ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমজনতার তারেককে অনশন ভেঙে আপিল করার পরামর্শ ইসি সচিবের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ২১
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আমজনতার পার্টির নিবন্ধনের দাবিতে অনশনরত তারেক রহমানকে আপিল করার পরামর্শ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘তারেক সাহেব আমজনতার পার্টির রেজিস্ট্রেশনের জন্য অনশনে আছেন। আইনগতভাবে আমাদের দিক থেকে যেটুকু বলার সেটা চিঠির মাধ্যমে বলেছি। এখন ওনারা আপিল করতে পারেন এবং ঘাটতি যেগুলো আছে সেগুলো পূরণ করে দিতে পারেন।’

ইসি সচিব বলেন, ‘আপিল বা সংশোধনী বা পরিমার্জন, পরিবর্ধন, সময় বর্ধন এগুলো তো একটা প্রচলিত প্রথা। তো সেটা নিশ্চয়ই ওনারা বিবেচনায় নেবেন। আমি আন্তরিকভাবে আবেদন করব যেন এই অনশন ভঙ্গ করে আমাদের আইনগতভাবে জিনিসটা সুরাহার দিকে নিয়ে যাবেন।’

আজ রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন সচিব।

আপিল কোথায় করবে? জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘আপিল করবে কমিশন সচিবালয়ে। কেননা চিঠিপত্র তো সচিবালয় থেকে যায়। সিনিয়র সচিব বা কমিশনের সচিবের বরাবর আপিলটা করবেন, যদি ওনারা করতে চান।’

কয়দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো সময় আমি বলছি না। আপনি এখনো করতে পারেন। আগামীকালও করতে পারেন। আপনি করবেন কিনা এটা তো আপনার সিদ্ধান্ত।’

এটা কি আইনের বাইরে গিয়ে বিবেচনা করছেন আপনারা? এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘আইনের বাইরে না, আইনের বাইরের ব্যাপারটা তো পরবর্তীতে কমিশন দেখবে। আপিল করতে তো কোনো অসুবিধা নেই। এটা আইনের সঙ্গে আমরা সম্পর্কিত কেন করছি? আইনের সঙ্গে সম্পর্কিত করার কোনো কিছু নেই। একটা না মঞ্জুর করা হয়েছে কিছু শর্তের আওতায় এবং কিছু কিছু জায়গায় ওনারা বলছেন যে আমরা এটার সঙ্গে একমত নই। সেটা পুনর্বিবেচনা, সংশোধন, পরিবর্জন ইত্যাদির জন্য আবেদন করতেই পারেন। আবেদন করলে কমিশন সেটা বিবেচনায় নেবেন কি, নেবেন না সেটা হলো পরের ব্যাপার। আমি যেটা বলতে চাচ্ছি যে সীমিত বা সীমাবদ্ধতার ভেতরে যেন আমরা না আসি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত