Ajker Patrika

জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহে সংকট

  • অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ বৃদ্ধির আশঙ্কা
  • বাড়বে কিশোরী গর্ভধারণ ও গর্ভপাত
  • খাওয়ার বড়ি নেই ১৫১ উপজেলায়
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯: ৪৮
জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহে সংকট

পরিবার পরিকল্পনার অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর চরম সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারের গত এক বছরের পরিসংখ্যানে এই চিত্র উঠে এসেছে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ এবং কম বয়সে বিবাহিত মেয়েদের গর্ভধারণের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞেরা এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, দেশের মানুষের ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের কিছু বেশি অর্থাৎ ৩৭ শতাংশ আসে সরকারি খাত থেকে। এ ছাড়া বেসরকারি খাত থেকে ৫৭ শতাংশ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো (এনজিও) থেকে ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসে ৪ শতাংশ উপকরণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি খাত প্রধান উৎস না হলেও মোট জনসংখ্যার বিশাল আকারের বিবেচনায় ৩৭ শতাংশকে বড় হারই বলতে হবে।

মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচ ধরনের পদ্ধতি সক্ষম দম্পতিদের মধ্যে সরকারিভাবে বিতরণ করা হয়। এগুলো হচ্ছে—খাওয়ার বড়ি, ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে খাওয়ার বড়ি ৪৯ শতাংশ, ইনজেক্টেবল ১৯ শতাংশ, কনডম ১০ শতাংশ, ইমপ্ল্যান্ট ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, আইইউডি ৩ শতাংশ এবং পুরুষের এনএসভি অস্ত্রোপচার এবং নারীর টিউবেকটমি অস্ত্রোপচার (স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ) ১২ শতাংশ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। স্বাভাবিক সময়ে অন্যান্য সামগ্রী বিতরণের সংখ্যা হচ্ছে ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার। তবে সরকারিভাবে সামগ্রীগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত না করতে পারায় গত এক বছর এসবের বিতরণ কমে এসেছে।

পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে পদ্ধতিগুলোর ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। তখন খাবার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ। আর সর্বশেষ গত মাসে তা মাত্র ২ লাখে নেমে এসেছে। একইভাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৯ লাখ ইনজেক্টেবলের ব্যবহার হলেও গত মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজারে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ২৩ লাখ কনডম ব্যবহার হয়েছে। এটি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৬০ শতাংশ কম। গত মাসে কনডমের ব্যবহার ঠেকেছে ৬ লাখ ৮০ হাজারে। গত মাসে ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার হয়েছে পৌনে ২ হাজার। আর আইইউডির ব্যবহার হয়েছে ১ হাজারেরও কম।

অধিদপ্তর সূত্র বলছে, ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে খাওয়ার বড়ি নেই ১৫১টি উপজেলায়। ১৩১টিতে শিগগির মজুত শূন্য হবে। ৭৬টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। একইভাবে ১০৬টি উপজেলায় কনডম এবং ১৩৩টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণগুলোর মজুতের ক্ষেত্রেও একই ধরনের চিত্র দেখা গিয়েছে।

অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পদস্থ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, গত বছরের শুরুতে উপকরণ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তবে তৎকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ সচিব মো. আজিজুর রহমান ক্রয়ের অনুমোদন দেননি। তিনি যেসব উপকরণ আছে, তা দিয়ে কাজ ‘চালিয়ে নিতে’ বলেছিলেন। উচ্চপদস্থ এ কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, তৎকালীন ওই সচিবের ‘দূরদৃষ্টির অভাবে’ এখন সারা দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গত জুনে স্বাস্থ্য খাতের কৌশলগত পরিকল্পনা (ওপি) শেষ হয়েছে। ৫ বছর মেয়াদি নতুন ওপি না হওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন ব্যয়ের ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।

এক জেলার চিত্র

মাদারীপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মতিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে খাবার বড়ি মাঠে নেই। কনডম আছে। ইনজেক্টেবল, আইইউডি আছে। ইমপ্ল্যান্ট সামনের মাসে শেষ হবে। আমরা দম্পতিদের বিকল্প পদ্ধতির পরামর্শ দিচ্ছি। যেমন—নারীদের প্রয়োজনে নিজ উদ্যোগে বড়ি কিনে খেতে বলছি। অথবা আমাদের কাছে বিকল্প যে পদ্ধতি রয়েছে তা গ্রহণ করার কথা বলি। ফলে সংকট যে গুরুতর আকার ধারণ করেছে, তা বলা ঠিক হবে না।’

জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা

দেশে বর্তমানে মোট প্রজনন হার ২ দশমিক ১ বলে জানিয়েছে বিবিএস। একজন নারী তার প্রজনন বয়সে (১৫ থেকে ৪৯ বছর) গড়ে যতটি সন্তানের জন্ম দেন, তা-ই মোট প্রজনন হার। অর্থাৎ দেশে বর্তমানে একজন নারী গড়ে দুটির বেশি সন্তান জন্ম দিচ্ছেন। জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের সংকটের কারণে দেশে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, কিশোরী গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের হার বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা।

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সরকার যেসব উপকরণ বিতরণ করে তার বেশির ভাগই পান অসচ্ছল প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষেরা। ঘাটতির কারণে তাঁরা উপকরণ হাতে পাচ্ছেন না। ফলে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ বাড়বে।

জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে গুরুত্ব কমিয়েছে। তাদের অনেকেই মনে করেন, সাম্প্রতিক দশকে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যাকে কার্যত উপেক্ষা করা হয়েছে।

বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এখন বাংলাদেশ। এহেন দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সাফল্যের আপাত স্থবিরতার চিত্র উঠে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনের পর্যবেক্ষণে। আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের স্বর্ণযুগ ছিল গত শতকের আশি ও নব্বইয়ের দশক। ১৯৯৩ সালে আমাদের মোট প্রজনন হার ছিল ৩ দশমিক ৩। তখন থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত হার একই রকম ছিল। ২০০৪ এবং ২০০৭ সালে এসে তা কিছুটা কমে। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হার একই অবস্থায় রয়ে গেছে।...আর গত কয়েক বছর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নীতিগত ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। বিষয়টিকে ইদানীং সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।’

ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, দেশের ৭৪ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করছে বা উপকরণ পাচ্ছে ৬৪ শতাংশ দম্পতি। যে দশ শতাংশের সন্তান জন্মদানের পরিকল্পনা নেই, তাদের হাতে কোনো উপকরণও নেই। ওইসব নারীর অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন। এর মধ্যে উপকরণ সরবরাহে সংকট হলে স্বাভাবিকভাবেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

উপকরণ সরবরাহের চলমান সংকট নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদ বলেন, ‘ওপি হঠাৎ করে বন্ধ হওয়ায় ক্রয়প্রক্রিয়া থেমে গিয়েছিল। আমরা রাজস্ব বাজেট থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণগুলো কেনার চেষ্টা করছি। ক্রয়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর এখন দেশের মাটিতে। আজ বৃহস্পতিবার ১১টায় ৫৪ মিনিটে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জড়িয়ে ধরেন। পরে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কুশল-বিনিয়ম করেন। নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তার জন্য এ সময় তিনি সরকারপ্রধানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কথোপকথনে তারেককে বলতে শোনা যায়, ‘জি জি...আমার জন্য আমার...জি জি...আপনার শরীর কেমন আছে?’

...

‘হ্যাঁ, দোয়া করবেন, দোয়া করবেন।’ ...

‘আমি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি আপনার পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম আয়োজন করেছেন, বিশেষ করে আমার নিরাপত্তার জন্য। অ্যান্ড উই আর থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ...থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। সব রকম আয়োজনের জন্য।’

...

‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই। জি নিশ্চয়ই...ইনশাল্লাহ...ইনশাল্লাহ।’

ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

এরপরই তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ফুলের মালা পরিয়ে জামাতাকে বরণ করেন নেন। নাতনি জাইমাকেও আদর করতে দেখা যায়। তারেক রহমান এ সময় তাঁর পাশে কিছু সময় বসে থাকেন। এরপর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে তারেক রহমানে স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে সাদা রঙের একটি জিপ গাড়িতে উঠে বসেন।

দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমান বেলা ১২টা মিনিটে ৩২ মিনিটে লাল সবুজ রঙে একটি বুলেটপ্রুফ বাসে উঠেন। ২ মিনিট পরে বাসটি বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিটের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে যেতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তুর ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনজন। একইদিনে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে জব্দ করা কার্তুজ ও বুলেট পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনজনের জবানবন্দি

গতকাল বুধবার সামিয়া, মারিয়া ও সিপুকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি। মামলার তদন্তকর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তিনজনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আসামি মারিয়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে এবং সামিয়া ও সিপু ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে তিনজন কী বলেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিশ্বস্ত এক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে ও পরে ফয়সাল কি করেছে এবং কি বলেছে সে সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন তিনজন।

এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর এই তিনজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর তিনজনকে আবার দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১৪ ডিসেম্বর সামিয়া ও সিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, এ মামলায় গ্রেফতার ফয়সালের মা ও বাবাও স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কার্তুজ-বুলেট ব্যালিস্টিক পরীক্ষা

বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ঘটনাস্থলে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও বুলেট সদৃশ বস্তু পরীক্ষার নির্দেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদি ওরফে ওসমান গণি (৩৩) গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটের দিকে পল্টন থানাধীন বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড সংলগ্ন ডিআর টাওয়ারের সামনে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদেহ বাংলাদেশ বিমান যোগে দেশে এনে ২০ ডিসেম্বর সকালে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

মামলায় ঘটনাস্থল হতে ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তু আলামত জব্দ করা হয়। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আলামতসমূহ ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদান করার জন্য সিআইডির ব্যালিস্টিক শাখার বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত