আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জন্ম ও শিক্ষা
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
অক্সফোর্ডে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী
বদরুদ্দীন উমর তাঁর পেশাজীবন শুরু করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ছিল ব্যাপক। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু সেটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সাহিত্যিক স্থপতি
বদরুদ্দীন উমরের সর্বজনস্বীকৃত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতি হচ্ছে তিনটি বিশাল খণ্ডে রচিত ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থটি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে একটি সুসংহত সাহিত্যিক রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে বাঙালির মননজগতে বদরুদ্দীন উমরের স্থান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং স্বীকৃত। সাহিত্যিক শংকর তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের কাশীরাম দাশ’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর এ অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর সম্ভবত সেই সৃষ্টিশীল ধারার পথিকৃৎ, যা বিগত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছিল।
এই গ্রন্থ রচনার পটভূমি ছিল ব্যাপক ও গবেষণামূলক। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করলেও পরে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে তাঁকে প্রায় কুড়ি বছর (১৯৬৩-৮২) ব্যয় করতে হয়েছে এবং তিন সহস্রাধিক তথ্য-উৎস ব্যবহার করতে হয়েছে। প্রায় ২০০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনাটিও ছিল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, যা ছিল তাঁর বাবা আবুল হাশিমের অনুরোধে লেখা ‘আমাদের ভাষার লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা।
গবেষণার নেপথ্যে: চ্যালেঞ্জ ও অধ্যবসায়
বদরুদ্দীন উমরের গবেষণামূলক কাজ ছিল অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। ভাষা আন্দোলনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে ইতিহাস লিখতে গিয়ে তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত তথ্যসূত্রের অভাব এবং স্মৃতিচারণের বিভ্রান্তি। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরাও দুর্বল স্মৃতি বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি যাচাই করতে গিয়ে তিনি দেখেন, আতাউর রহমান খান নিজেকে ওই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত বলে দাবি করলেও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়। এসব সমস্যা সত্ত্বেও তিনি অকৃত্রিম নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তিনি সংবাদপত্র, বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কিত পুস্তক-পুস্তিকা, পার্টি দলিলপত্র, ইশতেহার এবং তৎকালীন রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সরকারি কোনো তথ্য উৎস থেকে খুব বেশি সাহায্য তিনি পাননি। তাঁর এই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বাংলা ভাষা আন্দোলন একটি সুসংবদ্ধ ঐতিহাসিক রূপ লাভ করে। তার গ্রন্থত্রয় সম্মিলিতভাবে একটি বিরাট জন-অঞ্চলের সামাজিক জীবনের গভীরতম দলিল, যা পূর্ব বাংলার উজ্জ্বল জীবন-নাট্যকে তুলে ধরে।
রাজনৈতিক দর্শন
বদরুদ্দীন উমর কেবল একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন না, তাঁর রচনায় সমাজ, রাজনীতি এবং পার্টির অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখালেখির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সার্বিক শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন গড়ে তোলা। বিশ্লেষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তীক্ষ্ণ। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থ বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য একটি মূল্যবান দলিল।
একুশে ফেব্রুয়ারিকে তিনি কেবল ভাষার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিকাশের সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, যা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ। ভাষা আন্দোলনের ফলে বুর্জোয়া রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতা ধর্মনিরপেক্ষতা লাভ করে এবং তা সামনে উঠে আসে।
তবে তিনি ভাষা আন্দোলনের কিছু দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, ভাষা আন্দোলনকে সমগ্র পাকিস্তানের সমস্যা হিসেবে দেখতে না পারা এবং এর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চরিত্রের অভাব। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে এখানকার কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, কোনো শক্তিশালী সাহিত্যের জন্ম হয় না এবং এর ফসলকে শাসক-শোষকরাই ভোগ করে।
বদরুদ্দীন উমর তাঁর সহজ, অনাড়ম্বর এবং ধারালো গদ্যশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শক্তিশালী গদ্যশিল্পী। তাঁর লেখালেখি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম তাঁকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।
জীবনে কখনো পুরস্কার নেননি
বদরুদ্দীন উমরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করলেও সেটিও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম ঘোষণা করলে এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
[১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন অবলম্বনে]

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জন্ম ও শিক্ষা
বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। পিতা আবুল হাশিম একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।
অক্সফোর্ডে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী
বদরুদ্দীন উমর তাঁর পেশাজীবন শুরু করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ছিল ব্যাপক। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে আমৃত্যু সেটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সাহিত্যিক স্থপতি
বদরুদ্দীন উমরের সর্বজনস্বীকৃত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃতি হচ্ছে তিনটি বিশাল খণ্ডে রচিত ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক গ্রন্থটি। এই গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে একটি সুসংহত সাহিত্যিক রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে বাঙালির মননজগতে বদরুদ্দীন উমরের স্থান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এবং স্বীকৃত। সাহিত্যিক শংকর তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের কাশীরাম দাশ’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর এ অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর সম্ভবত সেই সৃষ্টিশীল ধারার পথিকৃৎ, যা বিগত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধছিল।
এই গ্রন্থ রচনার পটভূমি ছিল ব্যাপক ও গবেষণামূলক। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ইতিহাস রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহ শুরু করলেও পরে তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার সিদ্ধান্ত নেন। এই কাজ সম্পন্ন করতে তাঁকে প্রায় কুড়ি বছর (১৯৬৩-৮২) ব্যয় করতে হয়েছে এবং তিন সহস্রাধিক তথ্য-উৎস ব্যবহার করতে হয়েছে। প্রায় ২০০ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনাটিও ছিল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে, যা ছিল তাঁর বাবা আবুল হাশিমের অনুরোধে লেখা ‘আমাদের ভাষার লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা।
গবেষণার নেপথ্যে: চ্যালেঞ্জ ও অধ্যবসায়
বদরুদ্দীন উমরের গবেষণামূলক কাজ ছিল অত্যন্ত শ্রমসাধ্য। ভাষা আন্দোলনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে ইতিহাস লিখতে গিয়ে তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লিখিত তথ্যসূত্রের অভাব এবং স্মৃতিচারণের বিভ্রান্তি। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রত্যক্ষদর্শীরাও দুর্বল স্মৃতি বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ভুল তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সাক্ষাৎকারের ঘটনাটি যাচাই করতে গিয়ে তিনি দেখেন, আতাউর রহমান খান নিজেকে ওই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত বলে দাবি করলেও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তা ভুল প্রমাণিত হয়। এসব সমস্যা সত্ত্বেও তিনি অকৃত্রিম নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করে গেছেন।
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তিনি সংবাদপত্র, বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কিত পুস্তক-পুস্তিকা, পার্টি দলিলপত্র, ইশতেহার এবং তৎকালীন রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সরকারি কোনো তথ্য উৎস থেকে খুব বেশি সাহায্য তিনি পাননি। তাঁর এই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবেই বাংলা ভাষা আন্দোলন একটি সুসংবদ্ধ ঐতিহাসিক রূপ লাভ করে। তার গ্রন্থত্রয় সম্মিলিতভাবে একটি বিরাট জন-অঞ্চলের সামাজিক জীবনের গভীরতম দলিল, যা পূর্ব বাংলার উজ্জ্বল জীবন-নাট্যকে তুলে ধরে।
রাজনৈতিক দর্শন
বদরুদ্দীন উমর কেবল একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন না, তাঁর রচনায় সমাজ, রাজনীতি এবং পার্টির অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখালেখির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সার্বিক শোষণমুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন গড়ে তোলা। বিশ্লেষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তীক্ষ্ণ। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থ বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিকাশের জন্য একটি মূল্যবান দলিল।
একুশে ফেব্রুয়ারিকে তিনি কেবল ভাষার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিকাশের সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, যা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলে। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ব্যাপক জাতীয় প্রতিরোধ। ভাষা আন্দোলনের ফলে বুর্জোয়া রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতা ধর্মনিরপেক্ষতা লাভ করে এবং তা সামনে উঠে আসে।
তবে তিনি ভাষা আন্দোলনের কিছু দুর্বলতার দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, ভাষা আন্দোলনকে সমগ্র পাকিস্তানের সমস্যা হিসেবে দেখতে না পারা এবং এর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চরিত্রের অভাব। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে এখানকার কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, কোনো শক্তিশালী সাহিত্যের জন্ম হয় না এবং এর ফসলকে শাসক-শোষকরাই ভোগ করে।
বদরুদ্দীন উমর তাঁর সহজ, অনাড়ম্বর এবং ধারালো গদ্যশৈলীর জন্য পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শক্তিশালী গদ্যশিল্পী। তাঁর লেখালেখি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম তাঁকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।
জীবনে কখনো পুরস্কার নেননি
বদরুদ্দীন উমরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করলেও সেটিও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকায় নাম ঘোষণা করলে এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
[১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন অবলম্বনে]

আলোচিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন মাসের আটকাদেশ দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে আজ বুধবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৪৩ মিনিট আগে
এতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-সংক্রান্ত জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
১ ঘণ্টা আগে
জ্বালানি খাত থেকে কার্বন নিঃসরণও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালে যেখানে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ছিল ৪১ মিলিয়ন টন, ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ মিলিয়ন টনে। অর্থাৎ ১১৮ শতাংশ বৃদ্ধি। ২০৩০ সালে এই নিঃসরণ ১৭০ মিলিয়ন টনে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা ২০০৮ সালের...
১ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরা এলাকায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। সেইসঙ্গে এই মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের...
১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আলোচিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন মাসের আটকাদেশ দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে আজ বুধবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লা আল মামুন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এ রাখা হয়েছে।
আতাউর রহমান বিক্রমপুরী, আসাদুল্লাহ বা আতাউর নামেও পরিচিত। তাঁর বাবার নাম হুমায়ুন সর্দার, মা রোকেয়া বেগম।
আতাউর রহমান বিক্রমপুরীর বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী উপজেলার আমতলী গ্রামে। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ইস্তা গ্রামে অবস্থিত মারকাজুল হুনাফা আল মুসলিমিন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল (অধ্যক্ষ)। এ ছাড়া হুনাফা ইসলামীক স্কুলেরও প্রিন্সিপাল।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২৪ মার্চ ঝিকরগাছা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা এফআইআর (নং- ১৮ / ৭৭)-এর এজাহারভুক্ত আসামি তিনি।
মাওলানা আতাউর রহমান বিক্রমপুরী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ সক্রিয়। রাজধানীতেও বিভিন্ন আন্দোলন বিক্ষোভের সময় তাঁকে সামনের সারিতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, আতাউর রহমান, আযাদী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির, বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারি এবং জাতীয় খতীব ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের শানে সাহাবা পদে রয়েছেন।
গত অক্টোবরে গাজীপুর কালিয়াকৈর উপজেলায় হিন্দু যুবক কর্তৃক মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। একই মাসে গাজীপুরের একটি মসজিদের ইমাম মুফতি মুহিবুল্লাহ মিয়াজীর কথিত ‘অপহরণ’ ঘটনা সারা দেশে বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। দুটি ঘটনা নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় তৎপর ছিলেন আতাউর রহমান। এ দুটি বিষয় নিয়ে সশরীরে থানা-পুলিশ করেন তিনি। যদিও মুহিবুল্লাহ মিয়াজীর ঘটনাটি পরে ‘অপহরণ’ নয় বলে জানায় পুলিশ।
সর্ব সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর পর প্রতিবাদে ঢাকার শাহবাগে আয়োজিত বিক্ষোভের একটি অংশে আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। যদিও অন্য বিক্ষোভকারীরা তাঁদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখায় তিনি মাঝপথে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করে চলে যান।

আলোচিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন মাসের আটকাদেশ দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে আজ বুধবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লা আল মামুন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এ রাখা হয়েছে।
আতাউর রহমান বিক্রমপুরী, আসাদুল্লাহ বা আতাউর নামেও পরিচিত। তাঁর বাবার নাম হুমায়ুন সর্দার, মা রোকেয়া বেগম।
আতাউর রহমান বিক্রমপুরীর বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী উপজেলার আমতলী গ্রামে। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ইস্তা গ্রামে অবস্থিত মারকাজুল হুনাফা আল মুসলিমিন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল (অধ্যক্ষ)। এ ছাড়া হুনাফা ইসলামীক স্কুলেরও প্রিন্সিপাল।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২৪ মার্চ ঝিকরগাছা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা এফআইআর (নং- ১৮ / ৭৭)-এর এজাহারভুক্ত আসামি তিনি।
মাওলানা আতাউর রহমান বিক্রমপুরী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ সক্রিয়। রাজধানীতেও বিভিন্ন আন্দোলন বিক্ষোভের সময় তাঁকে সামনের সারিতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, আতাউর রহমান, আযাদী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির, বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারি এবং জাতীয় খতীব ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের শানে সাহাবা পদে রয়েছেন।
গত অক্টোবরে গাজীপুর কালিয়াকৈর উপজেলায় হিন্দু যুবক কর্তৃক মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। একই মাসে গাজীপুরের একটি মসজিদের ইমাম মুফতি মুহিবুল্লাহ মিয়াজীর কথিত ‘অপহরণ’ ঘটনা সারা দেশে বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। দুটি ঘটনা নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় তৎপর ছিলেন আতাউর রহমান। এ দুটি বিষয় নিয়ে সশরীরে থানা-পুলিশ করেন তিনি। যদিও মুহিবুল্লাহ মিয়াজীর ঘটনাটি পরে ‘অপহরণ’ নয় বলে জানায় পুলিশ।
সর্ব সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর পর প্রতিবাদে ঢাকার শাহবাগে আয়োজিত বিক্ষোভের একটি অংশে আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। যদিও অন্য বিক্ষোভকারীরা তাঁদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখায় তিনি মাঝপথে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করে চলে যান।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
এতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-সংক্রান্ত জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
১ ঘণ্টা আগে
জ্বালানি খাত থেকে কার্বন নিঃসরণও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালে যেখানে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ছিল ৪১ মিলিয়ন টন, ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ মিলিয়ন টনে। অর্থাৎ ১১৮ শতাংশ বৃদ্ধি। ২০৩০ সালে এই নিঃসরণ ১৭০ মিলিয়ন টনে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা ২০০৮ সালের...
১ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরা এলাকায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। সেইসঙ্গে এই মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের...
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-সংক্রান্ত জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ছিলেন আলী রীয়াজ। পরে তাঁকে উপদেষ্টা পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-সংক্রান্ত জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ছিলেন আলী রীয়াজ। পরে তাঁকে উপদেষ্টা পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আলোচিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন মাসের আটকাদেশ দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে আজ বুধবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৪৩ মিনিট আগে
জ্বালানি খাত থেকে কার্বন নিঃসরণও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালে যেখানে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ছিল ৪১ মিলিয়ন টন, ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ মিলিয়ন টনে। অর্থাৎ ১১৮ শতাংশ বৃদ্ধি। ২০৩০ সালে এই নিঃসরণ ১৭০ মিলিয়ন টনে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা ২০০৮ সালের...
১ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরা এলাকায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। সেইসঙ্গে এই মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের...
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বিদ্যুৎ খাতে বিপুল বিনিয়োগ হলেও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর কার্যত থমকে আছে। ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ হলেও এর ৯৬ দশমিক ৭ শতাংশ ব্যয় হয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে। বিপরীতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সুশাসনের ঘাটতি, নীতিগত দুর্বলতা ও প্রাতিষ্ঠানিক অনিয়ম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ধানমন্ডি কার্যালয়ে আজ বুধবার সকালে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। এটি উপস্থাপন করেন নেওয়াজুল মওলা ও আশনা ইসলাম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের ও আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২৮ হাজার ৬১৬ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। এর মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ মাত্র ১ হাজার ৩১৪ দশমিক ৭ মেগাওয়াট; যা মোট সক্ষমতার ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮-এ ২০৩০ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে তিন গুণ বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং দ্বিগুণ জ্বালানি দক্ষতা অর্জনের বিষয়ে দেশগুলো একমত হয়। এই অঙ্গীকার কপ-২৯ ও কপ-৩০ সম্মেলনেও বহাল রয়েছে।
টিআইবি বলছে, দেশে বর্তমানে মাত্র ১৭টি গ্রিড-সংযুক্ত নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প রয়েছে, যার মোট সক্ষমতা ১ হাজার ২২১ দশমিক ৪ মেগাওয়াট। ভূমি স্বল্পতাকে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রসারে ‘প্রধান বাধা’ হিসেবে দেখানো হলেও সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো একে ‘মিথ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত সৌরশক্তি উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিবর্তে ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি) থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয়ের প্রবণতা বাড়ছে। অধিকাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পই আনসলিসিটেড, অর্থাৎ প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ছাড়াই আইপিপির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে; যা সুশাসন নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
জ্বালানি খাত থেকে কার্বন নিঃসরণও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালে যেখানে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ছিল ৪১ মিলিয়ন টন, ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ মিলিয়ন টনে। অর্থাৎ ১১৮ শতাংশ বৃদ্ধি। ২০৩০ সালে এই নিঃসরণ ১৭০ মিলিয়ন টনে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা ২০০৮ সালের তুলনায় ৪১৫ শতাংশ বেশি।
টিআইবির মতে, জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্প্রসারণ প্যারিস চুক্তি, জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) ও জাতিসংঘের টেকসই অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের পরিপন্থী। একই সঙ্গে আমদানিনির্ভর জ্বালানি ব্যবস্থার কারণে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ক্রমেই ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, জ্বালানি মিশ্রণে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বর্তমান ক্ষুদ্র অবদান এবং চলমান প্রকল্পগুলোর ধীর অগ্রগতি ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক নয়।
গবেষণায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা হয়। এ লক্ষ্যে ২০০৮ থেকে ২০২৫ সাল সময়কালে আইন, নীতি ও পরিকল্পনা বিশ্লেষণ করা হয়।
পাশাপাশি ২০১২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে গৃহীত নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পগুলোর পরিকল্পনা, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির ধরন পর্যালোচনা করা হয়।
টিআইবি মনে করে, ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ন্যায়সংগত জ্বালানি রূপান্তরের জন্য বিদ্যমান নীতি পুনর্মূল্যায়ন, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।

দেশে বিদ্যুৎ খাতে বিপুল বিনিয়োগ হলেও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর কার্যত থমকে আছে। ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ হলেও এর ৯৬ দশমিক ৭ শতাংশ ব্যয় হয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে। বিপরীতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সুশাসনের ঘাটতি, নীতিগত দুর্বলতা ও প্রাতিষ্ঠানিক অনিয়ম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ধানমন্ডি কার্যালয়ে আজ বুধবার সকালে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। এটি উপস্থাপন করেন নেওয়াজুল মওলা ও আশনা ইসলাম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের ও আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২৮ হাজার ৬১৬ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। এর মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ মাত্র ১ হাজার ৩১৪ দশমিক ৭ মেগাওয়াট; যা মোট সক্ষমতার ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮-এ ২০৩০ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে তিন গুণ বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং দ্বিগুণ জ্বালানি দক্ষতা অর্জনের বিষয়ে দেশগুলো একমত হয়। এই অঙ্গীকার কপ-২৯ ও কপ-৩০ সম্মেলনেও বহাল রয়েছে।
টিআইবি বলছে, দেশে বর্তমানে মাত্র ১৭টি গ্রিড-সংযুক্ত নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প রয়েছে, যার মোট সক্ষমতা ১ হাজার ২২১ দশমিক ৪ মেগাওয়াট। ভূমি স্বল্পতাকে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রসারে ‘প্রধান বাধা’ হিসেবে দেখানো হলেও সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো একে ‘মিথ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত সৌরশক্তি উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিবর্তে ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি) থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয়ের প্রবণতা বাড়ছে। অধিকাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পই আনসলিসিটেড, অর্থাৎ প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ছাড়াই আইপিপির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে; যা সুশাসন নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
জ্বালানি খাত থেকে কার্বন নিঃসরণও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালে যেখানে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ছিল ৪১ মিলিয়ন টন, ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ মিলিয়ন টনে। অর্থাৎ ১১৮ শতাংশ বৃদ্ধি। ২০৩০ সালে এই নিঃসরণ ১৭০ মিলিয়ন টনে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা ২০০৮ সালের তুলনায় ৪১৫ শতাংশ বেশি।
টিআইবির মতে, জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্প্রসারণ প্যারিস চুক্তি, জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) ও জাতিসংঘের টেকসই অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের পরিপন্থী। একই সঙ্গে আমদানিনির্ভর জ্বালানি ব্যবস্থার কারণে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ক্রমেই ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, জ্বালানি মিশ্রণে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বর্তমান ক্ষুদ্র অবদান এবং চলমান প্রকল্পগুলোর ধীর অগ্রগতি ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক নয়।
গবেষণায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা হয়। এ লক্ষ্যে ২০০৮ থেকে ২০২৫ সাল সময়কালে আইন, নীতি ও পরিকল্পনা বিশ্লেষণ করা হয়।
পাশাপাশি ২০১২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে গৃহীত নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পগুলোর পরিকল্পনা, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির ধরন পর্যালোচনা করা হয়।
টিআইবি মনে করে, ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ন্যায়সংগত জ্বালানি রূপান্তরের জন্য বিদ্যমান নীতি পুনর্মূল্যায়ন, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আলোচিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন মাসের আটকাদেশ দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে আজ বুধবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৪৩ মিনিট আগে
এতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-সংক্রান্ত জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
১ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরা এলাকায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। সেইসঙ্গে এই মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের...
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরা এলাকায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। সেইসঙ্গে এই মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২০ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন।
অপর তিন আসামি হলেন—বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম মুন এবং পলাতক আসামি পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম ও সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান।
অভিযোগ পড়ে শোনানোর পর ট্রাইব্যুনাল উপস্থিত বিজিবির সাবেক দুই কর্মকর্তার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চান। জবাবে তাঁরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ট্রাইব্যুনালের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান। পলাতক দুই আসামির পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। আর উপস্থিত দুই আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ।
এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়েছিল।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরা এলাকায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। সেইসঙ্গে এই মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২০ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন।
অপর তিন আসামি হলেন—বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম মুন এবং পলাতক আসামি পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম ও সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান।
অভিযোগ পড়ে শোনানোর পর ট্রাইব্যুনাল উপস্থিত বিজিবির সাবেক দুই কর্মকর্তার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চান। জবাবে তাঁরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ট্রাইব্যুনালের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান। পলাতক দুই আসামির পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। আর উপস্থিত দুই আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ।
এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়েছিল।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, লেখক, গবেষক এবং বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে...
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আলোচিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন মাসের আটকাদেশ দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে আজ বুধবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৪৩ মিনিট আগে
এতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-সংক্রান্ত জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
১ ঘণ্টা আগে
জ্বালানি খাত থেকে কার্বন নিঃসরণও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালে যেখানে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ছিল ৪১ মিলিয়ন টন, ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ মিলিয়ন টনে। অর্থাৎ ১১৮ শতাংশ বৃদ্ধি। ২০৩০ সালে এই নিঃসরণ ১৭০ মিলিয়ন টনে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা ২০০৮ সালের...
১ ঘণ্টা আগে