Ajker Patrika

অর্থনীতিকে সুস্থ করতে জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকতে হবে: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ জুন ২০২৪, ২০: ৫৬
অর্থনীতিকে সুস্থ করতে জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকতে হবে: জিএম কাদের

অর্থনীতিতে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের প্রসার ঘটিয়ে অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান চিন্তা করা অবাস্তব বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেছেন, অর্থনীতিকে সুস্থ করতে হলে; সমাজের সর্বস্তরে জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাহলেই দেশে সু-শাসন আসবে। 

আজ শনিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

জিএম কাদের বলেন, এক কথায় বলা যায় অর্থনীতিতে সুশাসনের অভাব এবং সেই কারণে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নে যে ব্যাপকতা তা থেকে উত্তরণ ব্যতীত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। বাজেটে মূল সমস্যার কোনো স্বীকৃতি ও সে সমস্যা মোকাবিলার দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়নি। বরং সমস্যার কারণসমূহকে উৎসাহিত করার প্রয়াস লক্ষ করা যায়। কাজেই বিদ্যমান অর্থনৈতিক সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধান খুব শিগগিরই হচ্ছে এমনটা আশা করা যাচ্ছে না। 

ব্যাংক খাতে অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, ব্যাংক খাত নড়বড়ে। কারণ হলো খেলাপি ঋণ। গত মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা। একটি পত্রিকা বলেছে, শীর্ষ ৫ জনের নামে ২ লাখ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। বেনামি ঋণ আমলে নিলে দাঁড়াবে ৪ লাখ কোটি টাকার ওপরে। তথ্য গোপন করে ব্যাংক খাতকে নাজুক পরিস্থিতিতে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। 

কালোটাকা সাদা করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, অনেকেই বলেছেন এটা সংবিধানসম্মত নয়, নীতিসম্মত নয়, আয়ও বেশি আসবে না। যদি এই সুযোগ দিতেই হয় তাহলে ১৫ শতাংশ নয়, ৫০-৬০ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেন তিনি। তিনি বলেন, কর যাঁরা ফাঁকি দেন তাঁরা ভুল করেন না। হিসাব-নিকাশ করেই তাঁরা দেন। 

অফশোর ব্যাংকিং আইনের সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, অফশোর ব্যাংকিং আইনের মাধ্যমে বড় ধরনের দায়মুক্তি বা ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। এ কথাটা খুব ব্যাপকভাবে প্রচলিত যে দেশের কিছু ব্যবসায়ী বিভিন্নভাবে টাকা উপার্জন করে ও ঋণখেলাপি হয়ে ধনী ও অতি ধনী হয়েছেন, তাঁরা সে অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। তাঁদের সেসব অর্থকে বৈধতা দেওয়া ও ব্যবহার করে মুনাফা করার সুযোগ দেওয়ার জন্যই এ আইন করা হয়েছে। সে হিসেবে এ আইনটিতে দায়মুক্তি দেওয়া অর্থনৈতিক ও দুর্বৃত্তায়ন সহায়ক বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে নতুন করে বৈধ/অবৈধভাবে অর্জিত টাকা বিদেশে পাচার উৎসাহিত হতে পারে। 

জিএম কাদের বলেন, রিজার্ভের পরিমাণ কোনটা ঠিক। গ্রহণযোগ্যভাবে তুলে ধরতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংককে। সংবাদমাধ্যমে যেটা আসে মানুষ সেটাই বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ ব্যাংককে বিশ্বাস করে না। প্রস্তাবিত বাজেটকে গতানুগতিক বাজেট উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, এবার উন্নয়ন বাজেট কমানো উচিত ছিল। 

জিএম কাদের আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দায়মুক্তি দিয়ে আইন প্রণয়ন করে দেশে অবাধ দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি; অফশোর ব্যাংকিং চালু করে বিদেশে পাচারকৃত অবৈধ অর্থ বৈধকরণ; নামমাত্র কর প্রদান করে কালোটাকা সাদা করার মাধ্যমে দুর্নীতি থেকে দায়মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি ও গোষ্ঠী, ব্যাংকঋণ খেলাপি, বিদেশে টাকা পাচারকারীদের মাধ্যমে একটি বড় আকারের ধনী ও অতি ধনী শ্রেণি সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদেরকে অর্থনীতির মূল স্রোতে আনার জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। 

সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। বিভিন্ন দেশ পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের ক্রমাবনতি ঠেকানো যাচ্ছে না। সে কারণে অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা, কোভিড মহামারি বা ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশে মূল সমস্যাসমূহ সৃষ্টি করেনি। সমস্যা শুরু হয়েছিল আগেই অন্যান্য কারণে। কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধ এগুলোকে উসকে দিয়েছিল মাত্র। তাঁদের মতে, কোভিড ও ইউক্রেন শুধু মূল সমস্যাসমূহকে পাশ কাটানোর অজুহাত হিসেবে বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে। আসল সমস্যা এক কথায়, জবাবদিহির ঘাটতি, ফলে সু-শাসনের অভাব। ফলে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন সমাজের প্রতিটি স্তরে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সে সংক্রান্ত নীতিমালা ব্যক্তিস্বার্থ ও গোষ্ঠীস্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। ফলে অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন বা বাস্তবায়নে দেশ ও জনগণের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে।’ 

বিদ্যুৎ খাতের সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দেশের অর্থনীতিতে একটি মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করেছে। উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এর অর্ধেকটাই ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, সেই অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ১৫০০০ মেগাওয়াট অব্যবহৃত উৎপাদন সৃষ্টির জন্য বেসরকারি মালিকদের বিদেশি মুদ্রায় বিশাল অংশের ভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। 

জিএম কাদের বলেন, হিসাবে দেখা যায়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ শোধ করতে হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। ভর্তুকি নয়, দাম বাড়িয়ে এই অর্থ ব্যয় করার পরামর্শ আইএমএফের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে। 

বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আইনকে দায়মুক্তির আইন উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, দায়মুক্তির আইন জনস্বার্থের পক্ষে কোনো ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়নি। বরং দুর্নীতির বিস্তার ঘটিয়ে অর্থনীতিকে বেসামাল করে তোলা হয়েছে। 

জিএম কাদের বলেন, বসিয়ে বসিয়ে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের সুপারিশ দেয়নি আইএমএফ। যাতে করে এটা বিশ্বাস করার কারণ আছে, আইএমএফ তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ, তাদের দেওয়া ঋণ সুদসহ ফিরিয়ে নিতে বেশি আগ্রহী। দেশের জনগণের স্বার্থে সুপারিশ করছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সালমানসহ ৩৪ জনের নামে দুদকের পাঁচ মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সালমান এফ রহমান। ফাইল ছবি
সালমান এফ রহমান। ফাইল ছবি

প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি, আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানসহ ৩৪ জনের নামে পৃথক পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মামলার বিষয়টি জানান কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধান শেষে গত বৃহস্পতিবার মামলা করার আবেদন করলে কমিশন তা অনুমোদন করে।

দুদকের মহাপরিচালক বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে জালিয়াতি, প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট, অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎসহ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে মামলাগুলো করা হয়।

এই পাঁচ মামলার বাদী হলেন দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন রহমান ও সাজ্জাদ হোসেন, উপসহকারী পরিচালক রোমান উদ্দিন ও এলমান আহম্মদ অনি।

মামলাগুলোতে সালমান এফ রহমান ছাড়াও তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, সালমানের ভাই এ এস এফ রহমান, তাঁর ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানসহ তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১৮ জন ও রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের ১২ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন বেক্সিমকো লিমিটেডের পরিচালক ইকবাল আহমেদ, এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক, রীম এইচ শামসুদ্দোহা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান কাওসার চৌধুরী, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি আনোয়ারুল বাশার, পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজ লিমিটেডের এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন, পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার, মোসা. নুসরাত হায়দার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন খান মজলিস, পরিচালক আব্দুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপারেলসের এমডি মাহফুজুর রহমান খান, পরিচালক সৈয়দ তানভীর এলাহী, পিয়ারলেস গার্মেন্টসের এমডি ওয়াসীউর রহমান, পরিচালক রিজিয়া আক্তার।

জনতা ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে তাঁরা হলেন ব্যাংকটির সাবেক এমডি ও সিইও আবদুস ছালাম আজাদ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক (অব.) মো. আব্দুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. শহিদুল ইসলাম, ডিজিএম (অব.) মো. মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক মো. সালেহ আহমেদ, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (অব.) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম মোহাম্মদ শাজাহান, ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির ঢালী ও ব্যবস্থাপক শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশা।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পিয়ারলেস গার্মেন্টস ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার, প্লাটিনাম গার্মেন্টস ১ কোটি ৮৯ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৯ ডলার, কাঁচপুর অ্যাপারেলস ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭ দশমিক ৪৪ ডলার, স্কাইনেট অ্যাপারেলস ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ ডলার এবং নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ দশমিক ৪৬ ডলারসহ মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ ডলার বা (প্রতি ডলার ৯০ টাকা হারে) ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার ৯৪ টাকা জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে ঋণের নামে আত্মসাৎ করে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।

সালমানের বিরুদ্ধে আরও ২০ মামলা হচ্ছে

জনতা ব্যাংক থেকে ঋণের নামে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সালমান এফ রহমানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আরও ২০টি মামলা করা হবে বলে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন।

দুদকের ওই কর্মকর্তা জানান, এসব মামলায় জনতা ব্যাংক থেকে এলসি সুবিধা নেওয়ার নামে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হবে।

মামলাগুলোতে সায়ান ফজলুর রহমান, সোহেল ফশিউর রহমানের (এ এস এফ রহমান), আহমেদ শাহরিয়ার রহমান ও জনতা ব্যাংকের সাবেক এমডি আবদুস ছালামসহ প্রায় ৬০০ জনকে আসামি করা হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাক-প্রস্তুতি সভার নির্দেশ ‎ইসির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাক-প্রস্তুতি সভা আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ ‎সোমবার ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের সই করা এ-সংক্রান্ত চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ইসির সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের এর মধ্যে এ নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ইসি সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে গত ১৬ অক্টোবর মাসিক সমন্বয় সভায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারের ৩১টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে প্রাক-প্রস্তুতি সভা করেছে ইসি।

এর ধারাবাহিকতায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভোটের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা জানাতে তাঁদের সঙ্গেও নির্বাচনী প্রস্তুতিমূলক সভায় বসবে ইসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ২৩
ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে তিন বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

এ-সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব।

আব্দুল ওয়াহাব বলেন, রিটের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

গত ১৪ আগস্ট ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে তিন বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। পরে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন লিয়াকত আলী নামের এক ব্যক্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো কিছু যাচাই না করে শেয়ার করবেন না: সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। ফাইল ছবি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। ফাইল ছবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু দেখলেই তা বিশ্বাস করবেন না, শেয়ার করবেন না। আগে সেই তথ্যের সঠিকতা যাচাই করবেন। তথ্য সঠিক হলে তারপর তা শেয়ার করবেন।’

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারার আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) জাতীয় নির্বাচনে আনসার-ভিডিপির ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা মহড়া ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সিইসি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ বর্তমানে এক ‘সংকটময় অবস্থায়’ দাঁড়িয়ে আছে এবং আগামী সংসদ নির্বাচন দেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ ও গণতন্ত্রের পথচলা নির্ধারণ করবে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, তিনি তাঁর দায়িত্বকে গতানুগতিক ‘রুটিন কাজ’ বা ‘চাকরি’ হিসেবে না দেখে এটিকে ‘মিশন’ এবং ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিয়ে কাজ করছেন।

সিইসি বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য কী বাংলাদেশ রেখে যাব, কোন ধরনের বাংলাদেশ রেখে যাব, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রেখে যাব কি না, কীভাবে রেখে যাব—সেই চিন্তা আমাকে সারাক্ষণ ভাবায়।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে গতানুগতিক ধারায় কাজ করলে চলবে না, বরং ‘দায়িত্বসীমার বাইরে গিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’

সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করে সিইসি বলেন, ‘ভোটার, রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেব।’

সিইসি জানান, এবারের নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে প্রায় ১০ লাখ লোক যুক্ত থাকবে। তাঁদের সুবিধার্থে নির্বাচন কমিশন এবার একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। সাধারণত যারা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকেন, তারা নিজেরা ভোট দিতে পারেন না। কিন্তু এবার সেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যেন সবাই ভোট দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘আইনি হেফাজতে যাঁরা কারাগারে রয়েছেন, তাঁরা এ দেশের নাগরিক। তাঁরাও যাতে ভোট দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এ ছাড়া প্রবাসীরা এবার ভোট দিতে পারবেন।’

ভোটকেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে আনসার সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে সিইসি তাঁদের ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল শক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের ওপর আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব এসে পড়েছে।’

আনসার প্লাটুন সদস্যদের প্রশিক্ষণকে ‘স্বস্তির’ উল্লেখ করে সিইসি দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশাল নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে এআইসহ যেকোনো অপপ্রচার রোধে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব জানান, নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের প্রস্তুতি হিসেবে গত এক বছরে বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে ১ লাখ ৪৫ হাজার নতুন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত