Ajker Patrika

এখনো সাজা কার্যকর হয়নি ১০ আসামির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২১, ০৮: ৫৩
এখনো সাজা কার্যকর হয়নি ১০ আসামির

বাঙালি জাতির ইতিহাসে অন্যতম কলঙ্কিত দিন, জেলহত্যা দিবস আজ। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে জাতীয় চার নেতা–মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় মামলা হলেও বিচার বন্ধ ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে হত্যাকাণ্ডের ২৩ বছর পর মামলাটি সচল করে।

২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং এবং ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে এই মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড ও ৮ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়।

৪৬ বছর আগের ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হলেও এখনো দণ্ড কার্যকর করা সম্ভব হয়নি পলাতক ১০ আসামির। যাঁদের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৭ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার চেষ্টা করছে বঙ্গবন্ধু ও জেলহত্যা মামলার আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করতে। তবে সবার অবস্থান জানা না গেলেও কয়েকজন কানাডায় অবস্থান করছেন বলে জানান তিনি। 

এই মামলায় মোসলেহ উদ্দীন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার আবুল হাসেম মৃধা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

আর আহমেদ শরফুল হোসেন, কিসমত হাশেম, নাজমুল হোসেন আনসার, খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী ও রাশেদ চৌধুরী যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত।

রাষ্ট্রপতির বাণী: জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান কারাগারে বন্দী থাকার সময় তাঁর অবর্তমানে ১৯৭১ সালে জাতীয় চার নেতা মুজিবনগর সরকার গঠন, রণনীতি ও রণকৌশল প্রণয়ন, প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা, কূটনৈতিক তৎপরতা, শরণার্থীদের তদারকিসহ মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে পরিণত করতে অসামান্য অবদান রাখেন। জাতি তাঁদের অবদান চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

প্রধানমন্ত্রীর বাণী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, কারাগারের অভ্যন্তরে এ ধরনের বর্বর হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। আত্মস্বীকৃত খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল জারির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করেন। সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করেন। হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনার পরিবর্তে পুরস্কৃত করেন।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি: সীমিত পরিসরে নানা কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে সংগঠনের সব স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন। আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের কালরাতে নিহত সব শহীদ ও কারাগারে নির্মমভাবে নিহত জাতীয় নেতাদের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহীতে জাতীয় নেতা শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও মোনাজাত করা হবে।

জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ই-পোস্টার প্রকাশ করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত