Ajker Patrika

ভোটের শর্ত হয়ে উঠছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন

তানিম আহমেদ, ঢাকা 
আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২২
ভোটের শর্ত হয়ে উঠছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন

চলতি সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করার কথা। তবে ইসি নির্বাচন আয়োজনে নিজেদের প্রস্তুতি তুলে ধরলেও রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি এবং বাস্তবায়ন নিয়ে মতবিরোধ দূর করতে পারেনি। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থী দলগুলো নির্বাচনের আগে এটির বাস্তবায়ন চায়। অন্যদিকে বিএনপি ও সমমনা জোট-দলগুলো সাংবিধানিক বিষয়গুলো আগামী জাতীয় সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানের কারণে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বড় শর্ত হয়ে দাঁড়াচ্ছে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন। এই অবস্থায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিচ্ছে। আগামী সপ্তাহে কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় ধাপে সংলাপ করবে।

জুলাই সনদে ৮৪টি বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যের কথা বলা আছে। এগুলোর মধ্যে মৌলিক বিষয়গুলো হলো সংবিধান-সম্পর্কিত। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়েও দলগুলোর মতপার্থক্য রয়েছে। এনসিপি নির্বাচিত গণপরিষদে, জামায়াত অধ্যাদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে এবং বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ সংবিধান সংস্কার সভায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবি করেছে।

নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দাবি করা দলগুলো বলছে, এর আগে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের শেষ সময়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ৭ দল, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ৮ দল, বামপন্থীদের নেতৃত্বাধীন ৫ দল মিলে সরকারব্যবস্থার রূপরেখা দিয়েছিল। ১৯৯০ সালের ১৯ নভেম্বর ওই তিন জোট আলাদা সমাবেশে ওই রূপরেখা তুলে ধরে। ৬ ডিসেম্বর গণ-অভ্যুত্থানে এরশাদের পতন হয়। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি। পরে শুধু সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তন ছাড়া ওই রূপরেখার কিছুই বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই এবারও নির্বাচনের আগে আইনি ভিত্তি না দিলে জুলাই সনদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হবে বলে আশঙ্কা এসব দলের। এ জন্য এনসিপি, জামায়াত এ ক্ষেত্রে ছাড় দিতে রাজি নয়।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, জুলাই সনদকে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে কার্যকর করতে হবে। আইনি ভিত্তি দিতে হবে। জুলাই সনদের ভিত্তিতে সামনের নির্বাচন হতে হবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য না হলে সংকট তৈরি হবে। তিনি বলেন, শুধু সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে মৌলিক সংস্কার হলে বৈধতার সংকট দেখা দিতে পারে, যেমন ত্রয়োদশ সংশোধনী সংসদে পাস হলেও আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। সংবিধান সংস্কার সভার মাধ্যমে সংস্কার হলে তা টেকসই হবে।

এদিকে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির দাবিতে গত বুধবার রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে জামায়াত। ওই সমাবেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি দেওয়া ছাড়া এবং বিদেশিদের দ্বারা কোনো পাতানো নির্বাচনে জামায়াত যাবে না।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় বলেছিল, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংস্কার করবে। তাই তাঁরা মনে করেন, সংস্কারের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। সরকার দাবি না মানলে তাঁরা আন্দোলনে যাবেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, বিএনপি ছাড়া সবাই চায় অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন।

এদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে গতকাল শনিবার আলোচনা সভা করেছে এনসিপি। সভায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নতুন সংবিধানের বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, এটা পাশ কাটানো যাবে না। নির্বাচন যেকোনো সময় হতে পারে। কিন্তু সামনে যে নির্বাচন হবে, তাতে যেন পুরোনো ব্যবস্থা টিকিয়ে না রাখা হয়।

সভায় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বাংলাদেশে সামনে যদি কোনো নির্বাচন হয়, তবে সেটা গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। গণপরিষদের মধ্য দিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন দাবিতে গতকাল দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে গণপদযাত্রা ও গণসংলাপ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক গণসংহতি আন্দোলন।

গণতন্ত্র মঞ্চ বলছে, যেহেতু সংবিধানের সংস্কার করতে হবে। তাই ভোটের মাধ্যমে ওই সংস্কারের ক্ষমতা জনগণের কাছ থেকে নিতে হবে। এ জন্য জাতীয় নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার সভার নির্বাচন একই সঙ্গে করা যেতে পারে। জনপ্রতিনিধিরা প্রথমে সংবিধান সংস্কার করে পরে সংসদের স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করবেন। এতে নির্বাচন প্রলম্বিত হওয়ার সুযোগ থাকছে না।

গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, তাঁরাও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চান। কিন্তু এটাকে এখনো নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত করার বিষয়ে ভাবেননি। এটির আইনি ভিত্তি চাওয়ার অনেক যৌক্তিক কারণ রয়েছে। কারণ, অতীতে সব দল মিলে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও পরবর্তী ক্ষমতাসীনেরা পাত্তা দেয়নি। নব্বইয়ের পরের ঘটনা এর উদাহরণ।

বিএনপি এবং তার সমমনা দল-জোটগুলো মনে করছে, পরবর্তী নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করে জুলাই সনদের সাংবিধানিক বিষয়গুলোর সমাধান হবে। বাকিগুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে আগেই করা যেতে পারে। বর্তমান সরকার সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছে, সে ক্ষেত্রে তারা সংবিধান বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। নির্বাচিত সংসদই সেটা করবে।

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ বলেন, জুলাই সনদের যেসব বিষয় সংবিধান-সম্পর্কিত, তা নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে করা হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, যে দলই ক্ষমতায় আসবে, তারা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে।

বেশির ভাগ দল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায় বলে জানান এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে। কোনো না কোনো প্রক্রিয়া বের হবে। তখন বিতর্ক কমে আসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের যে ব্যাখ্যা দিল সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।

আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি জানানো হয়েছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।

সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

সচিব কমিটি মনে করে, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না এবং এতে বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশেই প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলে একই শিক্ষককে ২০টির বেশি বিদ্যালয়ে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর ফলে তাঁর পক্ষে কর্মঘণ্টা ম্যানেজ করা সম্ভব হবে না বলে সচিব কমিটি মনে করে।

পরে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সব স্কুলে এ রকম নতুন বিষয়ের শিক্ষকের পদ সৃজন ও সেসব পদে নিয়োগদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি অভিমত ব্যক্ত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় তাঁদের পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে ছিলেন– অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ এবং সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম থাকলেও নানা কারণে বেশ কয়েকজনের নাম অনুমোদন হয়নি।

২০২৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারও ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তবে সরকারি ক্যালেন্ডার এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় তা অনুমোদিত হয়নি।

সম্প্রতি ১ হাজার ১০৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পদোন্নতির প্যানেলে ছিল কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান।

বিচারকদের পদোন্নতি যেভাবে হয়

সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। ওই কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির জিও জারি করা হয়।

তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন পাওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হওয়ার পর সময়ে সময়ে জিও জারি করা হয়।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই বছরের পর বছর প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৪৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ: নিজাম হাজারীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ০২
ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারী এবং তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগম। ছবি: সংগৃহীত
ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারী এবং তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগম। ছবি: সংগৃহীত

ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে ৪৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ৪৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ মঙ্গলবার দুদকের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদক মহাপরিচালক বলেন, অভিযুক্ত নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সন্দেহজনক লেনদেনের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।

এ ছাড়া ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত নুরজাহান বেগমের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি হিসাবে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮০৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করেছে দুদক।

এ তথ্য আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যাচাই করা হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এর আগেও অবৈধ সম্পদ অর্জন, ফেনী ও ঢাকায় নামে-বেনামে জমি ও ভবন ক্রয় এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে একাধিক তদন্ত চলছে।

সূত্রটি আরও জানায়, দুদকে পাঠানো সম্পদ বিবরণীতে ঘোষিত তথ্য ও বাস্তব সম্পদের মধ্যে বিশাল অমিল পাওয়া যায়। এর ধারাবাহিকতায় নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফেনী-২ আসন থেকে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নিজাম উদ্দিন হাজারী। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দখলদারত্বের অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১০১ জন। সব মিলিয়ে এ বছর ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৯২৩ জনে। তাদের মধ্যে ২৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে মশাবাহিত এ রোগে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ করা তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, সর্বশেষ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে তিনজন।

এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় একজন মারা গেছে। নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে সর্বোচ্চ ২৪১ জন ভর্তি হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৭৫ জন, রাজধানীর বাইরে ঢাকা বিভাগে ২০৮, বরিশালে ১৫১, খুলনায় ৫৯, চট্টগ্রামে ১২৫, রাজশাহীতে ৪৫, ময়মনসিংহে ৭৫, রংপুরে ১৯ ও সিলেটে তিনজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

গত অক্টোবর মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২২ হাজার ৫২০ জন, যা এই বছরের এক মাসে সর্বোচ্চ। একই সময়ে ৮০ জন মারা গেছে, যা এ বছরে একক মাসের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ১৫ হাজার ৮৬৬ জন ভর্তি হয়েছিল এবং ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ ছাড়া জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১ ও আগস্টে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মার্চ মাসে কোনো মৃত্যু হয়নি।

চলতি মাসের চার দিনে ৪ হাজার ৬১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে আর মারা গেছে ১৪ জন চিকিৎসাধীন রোগী।

দেশে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। আর মারা গেছে ১ হাজার ৭০৫ জন।

২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১১ জন, ২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২, ২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯, ২০২০ সালে ১ হাজার ৪০৫ এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত