Ajker Patrika

আওয়ামী লীগ-বিএনপির অনড় অবস্থান দেশের জন্য খুব বিপজ্জনক: সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১: ৩৭
আওয়ামী লীগ-বিএনপির অনড় অবস্থান দেশের জন্য খুব বিপজ্জনক: সিইসি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর ৯ মাস বাকি। এখনো বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি। এই দুই দলের অনড় অবস্থান দেশের জন্য বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

নির্বাচন ভবনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ইএমএফ) আয়োজিত বৈঠক শেষে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

সিইসি বলেন, ‘দুই দলের এই অবস্থান খুব বিপজ্জনক দেশের জন্য। যদি নির্বাচন এই অনড় অবস্থার কারণে হয় কোনো বড়দল পার্টিসিপেশন না করে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বলব—নির্বাচনের মূল ফলাফলের ওপর একটু ঝুঁকি থাকতে পারে।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল মনে করেন, কোনো এক দল যদি নির্বাচনের ফল মেনে না নেয় তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায় এবং মানুষ বিপদগ্রস্ত হয়।

সিইসি বলেন, ‘আমরা চাই না ওই ধরনের কোনো সৃষ্টি। সরকারে অধিষ্ঠিত দলের প্রতি আমার আহবান থাকবে, আপনারাও আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যান বিরোধী দলগুলোকে সঙ্গে নিতে। তারাও যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনটাকে আমরা যেন অবিতর্কিতভাবে তুলে আনতে পারি।’ 

এ সময় সিইসি জানান, নির্বাচন কমিশন সীমাবদ্ধতার জায়গা রয়েছে। ইসি সংবিধানের বাইরে যেতে পারবে না। সংবিধানের আলোকেই সংস্থাটি নির্বাচন করবে। 

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রত্যাশা জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘প্রধানতম রাজনৈতিক দলগুলো যেন অতি অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করে। কারণ, নির্বাচনে এবং নির্বাচনের চেয়ে ভোটকেন্দ্রগুলোকে যদি ইফেক্টিভ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হয় প্রত্যাশিত ভারসাম্য সেটা সৃষ্টি হবে না।’ 

সিইসি আরেও আশা প্রকাশ করেন, ‘আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটা রাজনৈতিক সমঝোতা হয়ে সব দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’ 
 
এর আগে বিকেল সোয়া ৫টা থেকে শুরু হওয়া বৈঠক প্রসঙ্গে সিইসি জানান, ইএমএফের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। দুপক্ষের কেউ কাউকে পরামর্শ দেয়নি। 

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমাদের ইলেকশনটা যাতে আগামীতে সুন্দর হয়। জানতে চেয়েছেন, আমরা পর্যবেক্ষক ওয়েলকাম করি কি-না। উই আর ভেরি ওয়েলকাম পর্যবেক্ষকদের সম্পর্কে। বিষয় হচ্ছে আমরা ট্রান্সপারেন্সি (স্বচ্ছতা) চাচ্ছি।’ 

সিইসি জানান, স্বচ্ছতার স্বার্থে নির্বাচন কমিশন পর্যবেক্ষকদের জন্য একেবারে উন্মুক্ত। আগামী নির্বাচন শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যাতে নিরপেক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে সেটা ইসি দেখাতে চায়। 

ইএমএফের সদস্য এবং নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঝালা নাথ খানাল জানান, ইসির সঙ্গে পারস্পরিক মতামত আদান-প্রদানের জন্য এটি তাঁদের জন্য একটি বড় সুযোগ। কীভাবে খুব পক্ষপাতহীন নির্বাচন করা যায় এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা যায়, এই দিক থেকে আমাদের অনেক কিছু করতে হবে। আমরা এই বিষয়টিও আলোচনা করেছি যে নির্বাচন খুব ব্যয়বহুল হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। কীভাবে এটি কমানো যায়, আমরা আমাদের মতামত আদান প্রদান করেছি। 

আমরা আশা করব, এই কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন খুব প্রায়োগিক, শান্তিপূর্ণ এবং পক্ষপাতহীন হবে বলেও যোগ করে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। 
 
জার্মানির জিবিপি ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভলকার ইউ. ফ্রেডরিচ বলেন, ‘আমরা সিইসি কাছে থেকে সমস্যা, তা উত্তরণের উপায়, তাদের পরিকল্পনা শুনেছি। আমরা পারস্পরিক মতামত আদান-প্রদান করেছি। কোনো কিছুই পারফেক্ট নয়, এমনকি গণতন্ত্রও নয়। আমরা আাশা করব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুব অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হবে। নির্বাচনের পূর্বে আগামী কয়েক মাসে আমার আরও সহকর্মী আসবে পর্যবেক্ষণের জন্য।’ 

প্রধান বিরোধী দলের অংশগ্রহণের ওপর নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করবে বলে মনে করেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ফ্রেডরিচ বলেন, ‘এখানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, যেকোনো একটি দলকে অংশগ্রহণ করতেই হবে। নিবন্ধিত এবং যোগ্যতা থাকলে তাদের ভোটে অংশগ্রহণ করার অধিকার আছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

এর আগে বিকেল ৫টা থেকে সোয়া ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, বেগম রাশেদা সুলতানা, আনিছুর রহমান এবং ইএমএফ সদস্য নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য আলহ্বাজ তাজ মোহাম্মদ মিয়া, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের (ভারত) বিশেষ প্রতিনিধি মিসেস স্বপ্না, ইএমএফ চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী, ডুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি মিজানুর রহমান মজুমদার ও ড. আজাদুল হক বৈঠকে অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২১৬ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩৭
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও তাঁর স্ত্রী সিতারা আলমগীরের বিরুদ্ধে ২১৬ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলার অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ বাদী হয়ে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেছেন বলে আজ বুধবার নিশ্চিত করেছেন সংস্থার মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে আসামিরা ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ এক হিসাব থেকে অন্য হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন।

তদন্তে দুদক জানতে পেরেছে, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, তাঁর স্ত্রী ও তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৭৯টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২১৬ কোটি ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪৯ টাকা এবং ৬ হাজার ১৮৮ মার্কিন ডলার জমা রাখা হয়। একই সঙ্গে তাঁরা ২০৯ কোটি ১৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬৪০ টাকা ও ৬ হাজার মার্কিন ডলার উত্তোলন করেন। এসব অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন আসামিরা।

তাঁদের এ কর্মকাণ্ড মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ২৩ অক্টোবর আলোচিত ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মহীউদ্দীন খান আলমগীরসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ত্রুটিপূর্ণ বিমান ভাড়ায় ৭৪১ কোটি টাকা ক্ষতি: সাবেক বিচারপতিসহ ৩ জনের জামিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ২১
ত্রুটিপূর্ণ বিমান ভাড়ায় ৭৪১ কোটি টাকা ক্ষতি: সাবেক বিচারপতিসহ ৩ জনের জামিন

পুরোনো ও ত্রুটিপূর্ণ মিসরীয় বিমান ভাড়ায় এনে সরকারের ৭৪১ কোটি টাকা ক্ষতির মামলায় সাবেক বিচারপতি এ এফ এ মেসবাহ উদ্দিনসহ তিনজনকে জামিন দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ তাঁদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

জামিনপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন—বিমানের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিন আহমেদ ও সাবেক পরিচালক ফজলে কবির।

আজ সকালে এই তিনজন আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। শুনানি শেষে আদালত তিনজনকে জামিন দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৫ নভেম্বর এ মামলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কর্মকর্তাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত। ওই দিন পলাতক থাকায় সাবেক বিচারপতি এ এফ এম মেজবাউদ্দিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ ছাড়া ১৮ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিরা হলেন—বিমানের সাবেক পরিচালক খোরশেদ আলম চৌধুরী, সাবেক পরিচালক এয়ার ভাইস মার্শাল আবু এসরার, সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইকবাল আহমেদ।

মামলায় আগেই জামিনে রয়েছেন—বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাবেক পরিচালক (ফ্লাইট অপারেশনস) ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ, সাবেক ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল আলম সিদ্দিক (মো. এসএ সিদ্দিক), সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার দেবেশ চৌধুরী, সাবেক এয়ারক্রাফট মেকানিক বর্তমানে প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম ভূঁইয়া, প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার (স্ট্রাকচার) শরীফ রুহুল কুদ্দুস, সাবেক উপপ্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, ইঞ্জিনিয়ার অফিসার (অব.) মো. জাহিদ হোসেন, প্রকৌশলী কর্মকর্তা হীরালাল চক্রবর্তী, প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার অশোক কুমার সর্দার, প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান।

২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপপরিচালক জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক আনোয়ারুল হক আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে ১৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এর মধ্যে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেভিন জন স্টিল মারা গেছেন। পরে অধিকতর তদন্তে আরও সাতজনকে অভিযুক্ত করে ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজ দুটি লিজ নিয়েছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনও। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে ফের ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। পরে ভাড়ায় আনা ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়। সেই ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। সে কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে ইজিপ্ট এয়ার এবং মেরামতকারী কোম্পানি উভয়কেই অর্থ দিতে হয়েছে। ফলে উড়োজাহাজ দুটির জন্য রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় ৭৪১ কোটি টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শপথ নিলেন হাইকোর্টে স্থায়ী নিয়োগ পাওয়া ২১ বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে শপথ নেন ২১ বিচারপতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে শপথ নেন ২১ বিচারপতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

হাইকোর্টে স্থায়ী নিয়োগ পাওয়া ২১ বিচারপতি শপথ নিয়েছেন। আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তাঁদের শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

এ সময় সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যানসহ সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী নিয়োগ পাওয়া বিচারপতিদের পরিবারের সদস্যরাও। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ২২ বিচারপতিকে স্থায়ী নিয়োগ দিয়েছে সরকার। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় থেকে ২২ জনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে হাইকোর্ট বিভাগের ২২ জন অতিরিক্ত বিচারককে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগদান করেছেন। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ হতে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

গত বছরের ৮ অক্টোবর তাদের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। শপথ নেওয়া ২১ বিচারপতি হলেন— বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি মো. মনসুর আলম, বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুর, বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা, বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেন, বিচারপতি মুবিনা আসাফ, বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম, বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা, বিচারপতি মো. আবদুল মান্নান, বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদী, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ, বিচারপতি মো. হামিদুর রহমান, বিচারপতি নাসরিন আক্তার, বিচারপতি সাথীকা হোসেন, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেন, বিচারপতি মো. তৌফিক ইনাম, বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমন, বিচারপতি শেখ তাহসিন আলী, বিচারপতি ফয়েজ আহমেদ, বিচারপতি মো. সগীর হোসেন ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী।

এদিকে স্থায়ী নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন অসুস্থতার কারণে শপথ অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি। তাঁকে সুস্থ হওয়ার পর শপথ পড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ৪৬৯: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

গত অক্টোবর মাসে সারা দেশে ৪৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৮০ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে ১৭০টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৬ জন নিহত ও ১৩৭ জন আহত হয়েছেন।

আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এসব তথ্য জানান।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, ১২৬টি দুর্ঘটনায় ১৩০ জন নিহত ও ৩৪৩ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহ বিভাগে, ২০টি দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় মোট ৭৭২টি যানবাহনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৫ দশমিক ৯০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২১ দশমিক ২৪ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বাস, ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৮ দশমিক ৪১ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা এবং ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।

মোট দুর্ঘটনার ৪৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৫ দশমিক ১৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৯ দশমিক ৬১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যাওয়া, ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটেছে।

স্থানভেদে দেখা যায়, ৪২ দশমিক ৪৩ শতাংশ দুর্ঘটনা জাতীয় মহাসড়কে, ২৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৭ দশমিক ২৯ শতাংশ ফিডার রোডে, ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ ঢাকা মহানগরে, ১ দশমিক ২৭ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরে এবং শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে ঘটেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, অক্টোবর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে— বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজি ও নসিমন-করিমনের অবাধ চলাচল, জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং ও সড়কবাতির অভাব, মিডিয়ান বা রোড ডিভাইডার না থাকা, সড়কে গাছপালায় অন্ধবাঁক সৃষ্টি, মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি ও যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য, উল্টোপথে গাড়ি চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রীবহন এবং বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালানো।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামত করা, রাতের বেলায় জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ ও যানবাহনের ডিজিটাল ফিটনেস প্রদান, গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে ফুটপাত ও সার্ভিস লেনের ব্যবস্থা করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা।

এছাড়া মহাসড়কে পথচারী পারাপার, রোড সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপন করা, সড়ক পরিবহন আইনকে উন্নত বিশ্বের আদলে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে প্রয়োগ করা, সারাদেশে আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও নিয়মিত রোড সেফটি অডিট করা, মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া, প্রশিক্ষণরত চালকদের ওপর আরোপিত ভ্যাট ও আয়কর মওকুফ করা এবং মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার আমদানি ও নিবন্ধন নিয়ন্ত্রণ করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত