আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। অন্য অনেক মামলা তো বটেই, হাইকোর্টে যাওয়া সেই শিক্ষিকার মামলাটির পরিণতিও ঝুলে আছে নির্দেশিত সময়সীমার প্রায় তিন বছর পরও। শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলায় এভাবেই গড়িয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর।
উল্লিখিত শিক্ষিকা কাজ করেন রাজধানীর মিরপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে। বনিবনা না হওয়ায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে স্বামীকে তালাক দেন। স্বামী তাঁদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চলে যান ঢাকার বাইরের একটি জেলায়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মেয়ের অভিভাবকত্ব দাবি করে ওই নারী ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া। আদালত স্বামীকে হাজির হয়ে জবাব দিতে সমন জারি করেন। স্বামী দীর্ঘদিনেও আদালতে হাজির না হওয়ায় স্ত্রী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আবেদনে তিনি সন্তানের সঙ্গে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করতে দেওয়ার সুযোগ এবং মা হিসেবে তার হেফাজতকারীর স্বীকৃতি দাবি করেন। তবে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের এ-সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে হাইকোর্ট বিভাগে বিবাহবিচ্ছেদসহ বিভিন্ন কারণে শিশুদের হেফাজত নিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেবিয়াস কর্পাস (রিট) মামলা পরিচালনা করতে হচ্ছে। আদালত দেখেছেন, পারিবারিক আদালতগুলোতে শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলছে। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মামলা এখনো বিচারাধীন উল্লেখ করে আদালত বলেন, শিশুদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো এত দীর্ঘ সময় ধরে চলা দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কিত মামলাগুলো যাতে দায়ের হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ঢাকার ওই স্কুলের শিক্ষক নারীটির করা মামলাটি পারিবারিক আদালতকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলাটি চলছিল ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ দ্বিতীয় আদালত ও পারিবারিক আদালতে। মামলাটির বিভিন্ন আদেশ থেকে দেখা যায়, হাইকোর্টের আদেশ পৌঁছানোর পরও নির্দেশিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আবার বিবাদীপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করলে অন্য একটি বেঞ্চ ২০২২ সালের ১৫ মার্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।
মামলা দায়েরকারী নারীর আইনজীবী সেঁজুতি ঘোষ আজকের পত্রিকাকে সম্প্রতি বলেন, ‘মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিসংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ পারিবারিক আদালতে পৌঁছানোর পরও ‘প্রি-ট্রায়াল’-এর জন্য কয়েকটি তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। দ্রুত নিষ্পত্তির কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ স্থগিত করেছেন। তাই মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে তা অজানা।’
সন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলার জটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যে বহুসংখ্যক অভিভাবক, এই শিক্ষিকা তাঁদেরই একজন।
রাজধানীর ভাটারা থানার শহীদ আজিজ সড়কের বাসিন্দা এক মা চার বছর বয়সী শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত দাবি করে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি। এখন পঞ্চম অতিরিক্ত সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। বাদীর আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলাটির নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
সন্তানকে নিজ হেফাজতে রাখার নির্দেশ চেয়ে ঢাকার অতিরিক্ত দ্বিতীয় সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে ২০১৭ সালে মামলা করেন একটি শিশুর বাবা। লালবাগের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির দাবি, স্ত্রীর কাছে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়। ৭ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। নথি থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে পারিবারিক আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাদীর আইনজীবী পলাশ বৈদ্য বলেন, ‘কারণে-অকারণে মামলার বিলম্ব হচ্ছে’।
ঢাকার ১৫তম পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন এক মামলার বাদী ঢাকার মহাখালী ওয়্যারলেস গেট এলাকার এক নারী। স্বামী এক দিন দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর চলে যান। দুই নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করে স্ত্রী মামলা করেন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। মামলার নথি থেকে দেখা যায়, স্বামী একবারও আদালতে হাজির হননি। আর তাই সমন জারিসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য বারবার দিন ধার্য করা হচ্ছে।
মামলার বাদী ওই নারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে আদালতে ঘুরছি। আইনজীবী বলেছেন, মামলা এখনো প্রস্তুত হয়নি।’
সংসদে সর্বশেষ আইনমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের হিসাব অনুযায়ী পারিবারিক মামলা বিচারাধীন ৬০ হাজার ৯২৫টি। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলা ৫ হাজার ৭৩৪টি। আর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৯৫টি। এসবের মধ্যে দেনমোহরের দাবিতে করা মামলাও রয়েছে। সন্তানের হেফাজত বা অভিভাবকত্বের মামলা কতগুলো তা পৃথকভাবে হিসাব করা হয়নি। তবে কমপক্ষে ২০ হাজার মামলা চলমান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১, পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ ও গার্ডিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এ নাবালক শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব, তত্ত্বাবধান বা ভরণপোষণের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এসব আইন ও বিধান অনুযায়ী, নাবালকের স্বাভাবিক ও আইনগত অভিভাবক বাবা হলেও বাবার অনুপস্থিতি কিংবা অযোগ্যতায় মা অভিভাবক হতে পারেন। আর নাবালক শিশুর সার্বিক কল্যাণ ও তত্ত্বাবধানে মায়ের অগ্রাধিকার রয়েছে। বিচ্ছেদ বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর বয়স ও মেয়েসন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত মায়ের জিম্মায় থাকার কথা। কিন্তু মামলা যদি বছরের পর বছর চলে, তাহলে শিশুসন্তানেরা মামলা শেষ হতে হতেই সাবালক হয়ে যায়। সে অবস্থায় আদালতে দায়ের করা মামলাগুলোর আর কোনো গুরুত্ব থাকে না। আবার অনেক মামলা পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার পরও জেলা জজ আদালত, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়। নাবালক শিশু সাবালক হওয়ার পর আইনত নিজেই নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সমাজবিজ্ঞানী ও শিশু মনোবিদেরা বলে থাকেন, হেফাজত নিয়ে মা-বাবার আইনি লড়াই শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মামলা দীর্ঘায়িত হলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিও বেশি হয়। বিচ্ছিন্ন মা-বাবার মামলার জালে পড়ে নাবালক সন্তানদের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়া সমাজে এখন পরিচিত চিত্র।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্দেশ অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করা হাইকোর্টের আদেশের লঙ্ঘন।’
সালমা আলী বলেন, ‘এসব মামলার বিবাদীদের নামে সমন ইস্যু করতে হয়। অনেক সময় সমন যথাযথভাবে জারি হয় না। এ কারণেও মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মেনে সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য পারিবারিক আদালতের চেষ্টা থাকতে হবে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।’
আরেকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিলে নিম্ন আদালত তা মানতে বাধ্য। না মানলে সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদও লঙ্ঘন করা হয়। পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে বিবাদী পক্ষের নামে সমন যথাযথভাবে জারি হচ্ছে না। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমন জারি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া আদালত প্রশাসনকে খুঁজে বের করতে হবে।’

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। অন্য অনেক মামলা তো বটেই, হাইকোর্টে যাওয়া সেই শিক্ষিকার মামলাটির পরিণতিও ঝুলে আছে নির্দেশিত সময়সীমার প্রায় তিন বছর পরও। শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলায় এভাবেই গড়িয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর।
উল্লিখিত শিক্ষিকা কাজ করেন রাজধানীর মিরপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে। বনিবনা না হওয়ায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে স্বামীকে তালাক দেন। স্বামী তাঁদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চলে যান ঢাকার বাইরের একটি জেলায়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মেয়ের অভিভাবকত্ব দাবি করে ওই নারী ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া। আদালত স্বামীকে হাজির হয়ে জবাব দিতে সমন জারি করেন। স্বামী দীর্ঘদিনেও আদালতে হাজির না হওয়ায় স্ত্রী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আবেদনে তিনি সন্তানের সঙ্গে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করতে দেওয়ার সুযোগ এবং মা হিসেবে তার হেফাজতকারীর স্বীকৃতি দাবি করেন। তবে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের এ-সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে হাইকোর্ট বিভাগে বিবাহবিচ্ছেদসহ বিভিন্ন কারণে শিশুদের হেফাজত নিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেবিয়াস কর্পাস (রিট) মামলা পরিচালনা করতে হচ্ছে। আদালত দেখেছেন, পারিবারিক আদালতগুলোতে শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলছে। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মামলা এখনো বিচারাধীন উল্লেখ করে আদালত বলেন, শিশুদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো এত দীর্ঘ সময় ধরে চলা দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কিত মামলাগুলো যাতে দায়ের হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ঢাকার ওই স্কুলের শিক্ষক নারীটির করা মামলাটি পারিবারিক আদালতকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলাটি চলছিল ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ দ্বিতীয় আদালত ও পারিবারিক আদালতে। মামলাটির বিভিন্ন আদেশ থেকে দেখা যায়, হাইকোর্টের আদেশ পৌঁছানোর পরও নির্দেশিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আবার বিবাদীপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করলে অন্য একটি বেঞ্চ ২০২২ সালের ১৫ মার্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।
মামলা দায়েরকারী নারীর আইনজীবী সেঁজুতি ঘোষ আজকের পত্রিকাকে সম্প্রতি বলেন, ‘মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিসংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ পারিবারিক আদালতে পৌঁছানোর পরও ‘প্রি-ট্রায়াল’-এর জন্য কয়েকটি তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। দ্রুত নিষ্পত্তির কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ স্থগিত করেছেন। তাই মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে তা অজানা।’
সন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলার জটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যে বহুসংখ্যক অভিভাবক, এই শিক্ষিকা তাঁদেরই একজন।
রাজধানীর ভাটারা থানার শহীদ আজিজ সড়কের বাসিন্দা এক মা চার বছর বয়সী শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত দাবি করে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি। এখন পঞ্চম অতিরিক্ত সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। বাদীর আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলাটির নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
সন্তানকে নিজ হেফাজতে রাখার নির্দেশ চেয়ে ঢাকার অতিরিক্ত দ্বিতীয় সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে ২০১৭ সালে মামলা করেন একটি শিশুর বাবা। লালবাগের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির দাবি, স্ত্রীর কাছে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়। ৭ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। নথি থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে পারিবারিক আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাদীর আইনজীবী পলাশ বৈদ্য বলেন, ‘কারণে-অকারণে মামলার বিলম্ব হচ্ছে’।
ঢাকার ১৫তম পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন এক মামলার বাদী ঢাকার মহাখালী ওয়্যারলেস গেট এলাকার এক নারী। স্বামী এক দিন দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর চলে যান। দুই নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করে স্ত্রী মামলা করেন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। মামলার নথি থেকে দেখা যায়, স্বামী একবারও আদালতে হাজির হননি। আর তাই সমন জারিসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য বারবার দিন ধার্য করা হচ্ছে।
মামলার বাদী ওই নারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে আদালতে ঘুরছি। আইনজীবী বলেছেন, মামলা এখনো প্রস্তুত হয়নি।’
সংসদে সর্বশেষ আইনমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের হিসাব অনুযায়ী পারিবারিক মামলা বিচারাধীন ৬০ হাজার ৯২৫টি। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলা ৫ হাজার ৭৩৪টি। আর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৯৫টি। এসবের মধ্যে দেনমোহরের দাবিতে করা মামলাও রয়েছে। সন্তানের হেফাজত বা অভিভাবকত্বের মামলা কতগুলো তা পৃথকভাবে হিসাব করা হয়নি। তবে কমপক্ষে ২০ হাজার মামলা চলমান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১, পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ ও গার্ডিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এ নাবালক শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব, তত্ত্বাবধান বা ভরণপোষণের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এসব আইন ও বিধান অনুযায়ী, নাবালকের স্বাভাবিক ও আইনগত অভিভাবক বাবা হলেও বাবার অনুপস্থিতি কিংবা অযোগ্যতায় মা অভিভাবক হতে পারেন। আর নাবালক শিশুর সার্বিক কল্যাণ ও তত্ত্বাবধানে মায়ের অগ্রাধিকার রয়েছে। বিচ্ছেদ বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর বয়স ও মেয়েসন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত মায়ের জিম্মায় থাকার কথা। কিন্তু মামলা যদি বছরের পর বছর চলে, তাহলে শিশুসন্তানেরা মামলা শেষ হতে হতেই সাবালক হয়ে যায়। সে অবস্থায় আদালতে দায়ের করা মামলাগুলোর আর কোনো গুরুত্ব থাকে না। আবার অনেক মামলা পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার পরও জেলা জজ আদালত, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়। নাবালক শিশু সাবালক হওয়ার পর আইনত নিজেই নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সমাজবিজ্ঞানী ও শিশু মনোবিদেরা বলে থাকেন, হেফাজত নিয়ে মা-বাবার আইনি লড়াই শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মামলা দীর্ঘায়িত হলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিও বেশি হয়। বিচ্ছিন্ন মা-বাবার মামলার জালে পড়ে নাবালক সন্তানদের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়া সমাজে এখন পরিচিত চিত্র।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্দেশ অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করা হাইকোর্টের আদেশের লঙ্ঘন।’
সালমা আলী বলেন, ‘এসব মামলার বিবাদীদের নামে সমন ইস্যু করতে হয়। অনেক সময় সমন যথাযথভাবে জারি হয় না। এ কারণেও মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মেনে সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য পারিবারিক আদালতের চেষ্টা থাকতে হবে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।’
আরেকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিলে নিম্ন আদালত তা মানতে বাধ্য। না মানলে সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদও লঙ্ঘন করা হয়। পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে বিবাদী পক্ষের নামে সমন যথাযথভাবে জারি হচ্ছে না। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমন জারি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া আদালত প্রশাসনকে খুঁজে বের করতে হবে।’
আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। অন্য অনেক মামলা তো বটেই, হাইকোর্টে যাওয়া সেই শিক্ষিকার মামলাটির পরিণতিও ঝুলে আছে নির্দেশিত সময়সীমার প্রায় তিন বছর পরও। শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলায় এভাবেই গড়িয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর।
উল্লিখিত শিক্ষিকা কাজ করেন রাজধানীর মিরপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে। বনিবনা না হওয়ায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে স্বামীকে তালাক দেন। স্বামী তাঁদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চলে যান ঢাকার বাইরের একটি জেলায়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মেয়ের অভিভাবকত্ব দাবি করে ওই নারী ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া। আদালত স্বামীকে হাজির হয়ে জবাব দিতে সমন জারি করেন। স্বামী দীর্ঘদিনেও আদালতে হাজির না হওয়ায় স্ত্রী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আবেদনে তিনি সন্তানের সঙ্গে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করতে দেওয়ার সুযোগ এবং মা হিসেবে তার হেফাজতকারীর স্বীকৃতি দাবি করেন। তবে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের এ-সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে হাইকোর্ট বিভাগে বিবাহবিচ্ছেদসহ বিভিন্ন কারণে শিশুদের হেফাজত নিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেবিয়াস কর্পাস (রিট) মামলা পরিচালনা করতে হচ্ছে। আদালত দেখেছেন, পারিবারিক আদালতগুলোতে শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলছে। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মামলা এখনো বিচারাধীন উল্লেখ করে আদালত বলেন, শিশুদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো এত দীর্ঘ সময় ধরে চলা দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কিত মামলাগুলো যাতে দায়ের হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ঢাকার ওই স্কুলের শিক্ষক নারীটির করা মামলাটি পারিবারিক আদালতকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলাটি চলছিল ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ দ্বিতীয় আদালত ও পারিবারিক আদালতে। মামলাটির বিভিন্ন আদেশ থেকে দেখা যায়, হাইকোর্টের আদেশ পৌঁছানোর পরও নির্দেশিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আবার বিবাদীপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করলে অন্য একটি বেঞ্চ ২০২২ সালের ১৫ মার্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।
মামলা দায়েরকারী নারীর আইনজীবী সেঁজুতি ঘোষ আজকের পত্রিকাকে সম্প্রতি বলেন, ‘মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিসংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ পারিবারিক আদালতে পৌঁছানোর পরও ‘প্রি-ট্রায়াল’-এর জন্য কয়েকটি তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। দ্রুত নিষ্পত্তির কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ স্থগিত করেছেন। তাই মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে তা অজানা।’
সন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলার জটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যে বহুসংখ্যক অভিভাবক, এই শিক্ষিকা তাঁদেরই একজন।
রাজধানীর ভাটারা থানার শহীদ আজিজ সড়কের বাসিন্দা এক মা চার বছর বয়সী শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত দাবি করে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি। এখন পঞ্চম অতিরিক্ত সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। বাদীর আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলাটির নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
সন্তানকে নিজ হেফাজতে রাখার নির্দেশ চেয়ে ঢাকার অতিরিক্ত দ্বিতীয় সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে ২০১৭ সালে মামলা করেন একটি শিশুর বাবা। লালবাগের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির দাবি, স্ত্রীর কাছে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়। ৭ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। নথি থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে পারিবারিক আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাদীর আইনজীবী পলাশ বৈদ্য বলেন, ‘কারণে-অকারণে মামলার বিলম্ব হচ্ছে’।
ঢাকার ১৫তম পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন এক মামলার বাদী ঢাকার মহাখালী ওয়্যারলেস গেট এলাকার এক নারী। স্বামী এক দিন দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর চলে যান। দুই নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করে স্ত্রী মামলা করেন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। মামলার নথি থেকে দেখা যায়, স্বামী একবারও আদালতে হাজির হননি। আর তাই সমন জারিসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য বারবার দিন ধার্য করা হচ্ছে।
মামলার বাদী ওই নারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে আদালতে ঘুরছি। আইনজীবী বলেছেন, মামলা এখনো প্রস্তুত হয়নি।’
সংসদে সর্বশেষ আইনমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের হিসাব অনুযায়ী পারিবারিক মামলা বিচারাধীন ৬০ হাজার ৯২৫টি। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলা ৫ হাজার ৭৩৪টি। আর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৯৫টি। এসবের মধ্যে দেনমোহরের দাবিতে করা মামলাও রয়েছে। সন্তানের হেফাজত বা অভিভাবকত্বের মামলা কতগুলো তা পৃথকভাবে হিসাব করা হয়নি। তবে কমপক্ষে ২০ হাজার মামলা চলমান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১, পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ ও গার্ডিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এ নাবালক শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব, তত্ত্বাবধান বা ভরণপোষণের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এসব আইন ও বিধান অনুযায়ী, নাবালকের স্বাভাবিক ও আইনগত অভিভাবক বাবা হলেও বাবার অনুপস্থিতি কিংবা অযোগ্যতায় মা অভিভাবক হতে পারেন। আর নাবালক শিশুর সার্বিক কল্যাণ ও তত্ত্বাবধানে মায়ের অগ্রাধিকার রয়েছে। বিচ্ছেদ বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর বয়স ও মেয়েসন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত মায়ের জিম্মায় থাকার কথা। কিন্তু মামলা যদি বছরের পর বছর চলে, তাহলে শিশুসন্তানেরা মামলা শেষ হতে হতেই সাবালক হয়ে যায়। সে অবস্থায় আদালতে দায়ের করা মামলাগুলোর আর কোনো গুরুত্ব থাকে না। আবার অনেক মামলা পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার পরও জেলা জজ আদালত, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়। নাবালক শিশু সাবালক হওয়ার পর আইনত নিজেই নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সমাজবিজ্ঞানী ও শিশু মনোবিদেরা বলে থাকেন, হেফাজত নিয়ে মা-বাবার আইনি লড়াই শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মামলা দীর্ঘায়িত হলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিও বেশি হয়। বিচ্ছিন্ন মা-বাবার মামলার জালে পড়ে নাবালক সন্তানদের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়া সমাজে এখন পরিচিত চিত্র।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্দেশ অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করা হাইকোর্টের আদেশের লঙ্ঘন।’
সালমা আলী বলেন, ‘এসব মামলার বিবাদীদের নামে সমন ইস্যু করতে হয়। অনেক সময় সমন যথাযথভাবে জারি হয় না। এ কারণেও মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মেনে সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য পারিবারিক আদালতের চেষ্টা থাকতে হবে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।’
আরেকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিলে নিম্ন আদালত তা মানতে বাধ্য। না মানলে সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদও লঙ্ঘন করা হয়। পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে বিবাদী পক্ষের নামে সমন যথাযথভাবে জারি হচ্ছে না। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমন জারি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া আদালত প্রশাসনকে খুঁজে বের করতে হবে।’

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। অন্য অনেক মামলা তো বটেই, হাইকোর্টে যাওয়া সেই শিক্ষিকার মামলাটির পরিণতিও ঝুলে আছে নির্দেশিত সময়সীমার প্রায় তিন বছর পরও। শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলায় এভাবেই গড়িয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর।
উল্লিখিত শিক্ষিকা কাজ করেন রাজধানীর মিরপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে। বনিবনা না হওয়ায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে স্বামীকে তালাক দেন। স্বামী তাঁদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চলে যান ঢাকার বাইরের একটি জেলায়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মেয়ের অভিভাবকত্ব দাবি করে ওই নারী ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া। আদালত স্বামীকে হাজির হয়ে জবাব দিতে সমন জারি করেন। স্বামী দীর্ঘদিনেও আদালতে হাজির না হওয়ায় স্ত্রী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আবেদনে তিনি সন্তানের সঙ্গে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করতে দেওয়ার সুযোগ এবং মা হিসেবে তার হেফাজতকারীর স্বীকৃতি দাবি করেন। তবে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের এ-সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে হাইকোর্ট বিভাগে বিবাহবিচ্ছেদসহ বিভিন্ন কারণে শিশুদের হেফাজত নিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেবিয়াস কর্পাস (রিট) মামলা পরিচালনা করতে হচ্ছে। আদালত দেখেছেন, পারিবারিক আদালতগুলোতে শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলছে। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মামলা এখনো বিচারাধীন উল্লেখ করে আদালত বলেন, শিশুদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো এত দীর্ঘ সময় ধরে চলা দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কিত মামলাগুলো যাতে দায়ের হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ঢাকার ওই স্কুলের শিক্ষক নারীটির করা মামলাটি পারিবারিক আদালতকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলাটি চলছিল ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ দ্বিতীয় আদালত ও পারিবারিক আদালতে। মামলাটির বিভিন্ন আদেশ থেকে দেখা যায়, হাইকোর্টের আদেশ পৌঁছানোর পরও নির্দেশিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আবার বিবাদীপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করলে অন্য একটি বেঞ্চ ২০২২ সালের ১৫ মার্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।
মামলা দায়েরকারী নারীর আইনজীবী সেঁজুতি ঘোষ আজকের পত্রিকাকে সম্প্রতি বলেন, ‘মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিসংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ পারিবারিক আদালতে পৌঁছানোর পরও ‘প্রি-ট্রায়াল’-এর জন্য কয়েকটি তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। দ্রুত নিষ্পত্তির কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ স্থগিত করেছেন। তাই মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে তা অজানা।’
সন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলার জটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যে বহুসংখ্যক অভিভাবক, এই শিক্ষিকা তাঁদেরই একজন।
রাজধানীর ভাটারা থানার শহীদ আজিজ সড়কের বাসিন্দা এক মা চার বছর বয়সী শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত দাবি করে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি। এখন পঞ্চম অতিরিক্ত সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। বাদীর আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলাটির নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
সন্তানকে নিজ হেফাজতে রাখার নির্দেশ চেয়ে ঢাকার অতিরিক্ত দ্বিতীয় সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে ২০১৭ সালে মামলা করেন একটি শিশুর বাবা। লালবাগের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির দাবি, স্ত্রীর কাছে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়। ৭ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। নথি থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে পারিবারিক আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাদীর আইনজীবী পলাশ বৈদ্য বলেন, ‘কারণে-অকারণে মামলার বিলম্ব হচ্ছে’।
ঢাকার ১৫তম পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন এক মামলার বাদী ঢাকার মহাখালী ওয়্যারলেস গেট এলাকার এক নারী। স্বামী এক দিন দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর চলে যান। দুই নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করে স্ত্রী মামলা করেন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। মামলার নথি থেকে দেখা যায়, স্বামী একবারও আদালতে হাজির হননি। আর তাই সমন জারিসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য বারবার দিন ধার্য করা হচ্ছে।
মামলার বাদী ওই নারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে আদালতে ঘুরছি। আইনজীবী বলেছেন, মামলা এখনো প্রস্তুত হয়নি।’
সংসদে সর্বশেষ আইনমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের হিসাব অনুযায়ী পারিবারিক মামলা বিচারাধীন ৬০ হাজার ৯২৫টি। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলা ৫ হাজার ৭৩৪টি। আর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৯৫টি। এসবের মধ্যে দেনমোহরের দাবিতে করা মামলাও রয়েছে। সন্তানের হেফাজত বা অভিভাবকত্বের মামলা কতগুলো তা পৃথকভাবে হিসাব করা হয়নি। তবে কমপক্ষে ২০ হাজার মামলা চলমান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১, পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ ও গার্ডিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এ নাবালক শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব, তত্ত্বাবধান বা ভরণপোষণের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এসব আইন ও বিধান অনুযায়ী, নাবালকের স্বাভাবিক ও আইনগত অভিভাবক বাবা হলেও বাবার অনুপস্থিতি কিংবা অযোগ্যতায় মা অভিভাবক হতে পারেন। আর নাবালক শিশুর সার্বিক কল্যাণ ও তত্ত্বাবধানে মায়ের অগ্রাধিকার রয়েছে। বিচ্ছেদ বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর বয়স ও মেয়েসন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত মায়ের জিম্মায় থাকার কথা। কিন্তু মামলা যদি বছরের পর বছর চলে, তাহলে শিশুসন্তানেরা মামলা শেষ হতে হতেই সাবালক হয়ে যায়। সে অবস্থায় আদালতে দায়ের করা মামলাগুলোর আর কোনো গুরুত্ব থাকে না। আবার অনেক মামলা পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার পরও জেলা জজ আদালত, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়। নাবালক শিশু সাবালক হওয়ার পর আইনত নিজেই নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সমাজবিজ্ঞানী ও শিশু মনোবিদেরা বলে থাকেন, হেফাজত নিয়ে মা-বাবার আইনি লড়াই শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মামলা দীর্ঘায়িত হলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিও বেশি হয়। বিচ্ছিন্ন মা-বাবার মামলার জালে পড়ে নাবালক সন্তানদের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়া সমাজে এখন পরিচিত চিত্র।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্দেশ অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করা হাইকোর্টের আদেশের লঙ্ঘন।’
সালমা আলী বলেন, ‘এসব মামলার বিবাদীদের নামে সমন ইস্যু করতে হয়। অনেক সময় সমন যথাযথভাবে জারি হয় না। এ কারণেও মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মেনে সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য পারিবারিক আদালতের চেষ্টা থাকতে হবে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।’
আরেকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিলে নিম্ন আদালত তা মানতে বাধ্য। না মানলে সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদও লঙ্ঘন করা হয়। পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে বিবাদী পক্ষের নামে সমন যথাযথভাবে জারি হচ্ছে না। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমন জারি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া আদালত প্রশাসনকে খুঁজে বের করতে হবে।’

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
৬ ঘণ্টা আগে
১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগেতানিম আহমেদ, ঢাকা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
সংসদ কার্যকর না থাকায় অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতা এখন রাষ্ট্রপতির হাতে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অধ্যাদেশ চায় না। কাজেই প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে আদেশ জারির পথেই সরকার এগোচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
তবে বিএনপি আবার আদেশ জারির বিরোধিতা করছে। জুলাই সনদ নিয়ে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করলে তার ওপর গণভোট হতে পারে বলে মত দিয়েছে দলটি।
সূত্র জানায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কীভাবে জারি করা হবে, আইনি কাঠামোর মধ্য থেকে সে পথ বের করার উপায় খুঁজছে সরকার। এক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে জনগণের অভিপ্রায়কে প্রাধান্য দেওয়ার চিন্তা চলছে।
জুলাই সনদের খসড়ায় সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদবলে আপিল বিভাগের মতামতের আলোকে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলা ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত জুলাই সনদে এই অংশটুকু বাদ দিয়ে বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এর মধ্য দিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে জনগণের অভিপ্রায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশে বলেছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন করতে একটি আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি করা একান্ত প্রয়োজন। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে সরকারকে এই আদেশ জারির সুপারিশ করেছে কমিশন।
সরকারের কয়েকটি সূত্র বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে কীভাবে এই আদেশ জারি করা যায়, তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আইনি জটিলতা না থাকলে প্রধান উপদেষ্টা এই আদেশ জারি করবেন। তবে আদেশটি রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জারি করা যায় কি না, এখনো সে বিষয়টি ভাবনার মধ্যে রয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যাতে নতুন কোনো বিভেদ সৃষ্টি না হয়, তা মাথায় রাখছে সরকার।
গত ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ নামে আদেশ জারির সুপারিশ করে কমিশন। সেখানে আদেশে থাকা সংবিধান-সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে গণভোট এবং আগামী সংসদের দ্বৈত ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের ৮৪টি সুপারিশের মধ্যে ৪৭টি সংবিধান-সম্পর্কিত।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির পাশাপাশি বাস্তবায়নের দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণভোটে বিষয়টি পাস হলে সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে ২৭০ দিনের মধ্যে এসব সংস্কার শেষ করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে শেষ না করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে সংবিধান সংস্কার পরিষদকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হলেও প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার শেষ করতে হবে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কীভাবে জারি করা যাবে, তা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই কোনো অধ্যাদেশ নয়, আবার সংসদ দ্বারা তৈরি কোনো আইনও নয়।
জানতে চাইলে ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির আইনগত কিছু নেই। যেহেতু বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, সেই অনুযায়ী আদেশ জারির বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা। সরকার যেভাবে চায়, সেভাবে জারি করতে পারে। সরকার যদি মনে করে প্রধান উপদেষ্টা এটি জারি করবেন, সেটা পারবেন। আবার সরকার যদি মনে করে রাষ্ট্রপতি এটা জারি করবেন, সেটাও হতে পারে। এ ক্ষমতাটা সরকারের।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এই আদেশ জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের প্রতীক হিসেবে প্রধান উপদেষ্টাকে বেশি ধারক বলা যায়, তাই তিনি এই আদেশ জারি করতে পারেন। এক্ষেত্রে আইনি কোনো ঝামেলা নেই, কারণ এটি অধ্যাদেশ নয়।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
সংসদ কার্যকর না থাকায় অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতা এখন রাষ্ট্রপতির হাতে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অধ্যাদেশ চায় না। কাজেই প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে আদেশ জারির পথেই সরকার এগোচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
তবে বিএনপি আবার আদেশ জারির বিরোধিতা করছে। জুলাই সনদ নিয়ে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করলে তার ওপর গণভোট হতে পারে বলে মত দিয়েছে দলটি।
সূত্র জানায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কীভাবে জারি করা হবে, আইনি কাঠামোর মধ্য থেকে সে পথ বের করার উপায় খুঁজছে সরকার। এক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে জনগণের অভিপ্রায়কে প্রাধান্য দেওয়ার চিন্তা চলছে।
জুলাই সনদের খসড়ায় সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদবলে আপিল বিভাগের মতামতের আলোকে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলা ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত জুলাই সনদে এই অংশটুকু বাদ দিয়ে বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এর মধ্য দিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে জনগণের অভিপ্রায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশে বলেছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন করতে একটি আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি করা একান্ত প্রয়োজন। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে সরকারকে এই আদেশ জারির সুপারিশ করেছে কমিশন।
সরকারের কয়েকটি সূত্র বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে কীভাবে এই আদেশ জারি করা যায়, তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আইনি জটিলতা না থাকলে প্রধান উপদেষ্টা এই আদেশ জারি করবেন। তবে আদেশটি রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জারি করা যায় কি না, এখনো সে বিষয়টি ভাবনার মধ্যে রয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যাতে নতুন কোনো বিভেদ সৃষ্টি না হয়, তা মাথায় রাখছে সরকার।
গত ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ নামে আদেশ জারির সুপারিশ করে কমিশন। সেখানে আদেশে থাকা সংবিধান-সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে গণভোট এবং আগামী সংসদের দ্বৈত ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের ৮৪টি সুপারিশের মধ্যে ৪৭টি সংবিধান-সম্পর্কিত।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির পাশাপাশি বাস্তবায়নের দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণভোটে বিষয়টি পাস হলে সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে ২৭০ দিনের মধ্যে এসব সংস্কার শেষ করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে শেষ না করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে সংবিধান সংস্কার পরিষদকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হলেও প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার শেষ করতে হবে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কীভাবে জারি করা যাবে, তা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই কোনো অধ্যাদেশ নয়, আবার সংসদ দ্বারা তৈরি কোনো আইনও নয়।
জানতে চাইলে ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির আইনগত কিছু নেই। যেহেতু বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, সেই অনুযায়ী আদেশ জারির বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা। সরকার যেভাবে চায়, সেভাবে জারি করতে পারে। সরকার যদি মনে করে প্রধান উপদেষ্টা এটি জারি করবেন, সেটা পারবেন। আবার সরকার যদি মনে করে রাষ্ট্রপতি এটা জারি করবেন, সেটাও হতে পারে। এ ক্ষমতাটা সরকারের।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এই আদেশ জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের প্রতীক হিসেবে প্রধান উপদেষ্টাকে বেশি ধারক বলা যায়, তাই তিনি এই আদেশ জারি করতে পারেন। এক্ষেত্রে আইনি কোনো ঝামেলা নেই, কারণ এটি অধ্যাদেশ নয়।

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
৬ ঘণ্টা আগে
১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগেরাহুল শর্মা, ঢাকা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৫ (সংশোধিত)-এর খসড়ায় এসব প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়ায় উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি করার বিধান রাখা হয়েছে।
বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরাই বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করে কেবল ইউজিসিকে জানায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এ ফি নির্ধারণে ইউজিসির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, ভর্তি হওয়ার পর হঠাৎ করে টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেক সময় লিখিত নোটিশও দেয় না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ইউজিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সংশোধিত নতুন আইন কার্যকর হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি নির্ধারণ ও আদায় করতে পারবে না। এতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। ভোগান্তিরও অবসান হবে।
জানতে চাইলে গত বুধবার ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংশোধিত আইনের খসড়াটি শিগগির চূড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রণালয় তা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
ইউজিসির সূত্র বলছে, গত ২৩ অক্টোবর ইউজিসির ৫৭তম মাসিক সভায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৫-এর সংশোধনীর খসড়া নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা হয়। ওই সভায় আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে একটি কমিটি করার এবং অংশীজনদের নিয়ে কর্মশালা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় আইন লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ানো, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রির বিষয়ে ইউজিসির নীতিমালা অনুসরণ, একাডেমিক প্রোগ্রাম অনুমোদনে বাধ্যবাধকতা, ট্রাস্টি বোর্ডে পরিবর্তন, যৌন হয়রানি নিরোধ ও সাইবার নিরাপত্তা কমিটি করাসহ বেশ কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ইউজিসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১১৬টি। এগুলোর মধ্যে ১০৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে। ৪টির কার্যক্রম নানা কারণে বন্ধ রয়েছে। আর বাকি ৫টির একাডেমিক কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪১৪ জন।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি মো. সবুর খান বলেন, ইউজিসি এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য ডাকলে তাঁরা মতামত দেবেন।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় টিউশন ফির বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফি কাঠামো তৈরি করে কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন নেবে এবং সরকারকে জানাবে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এই ফির হার ৫০ শতাংশ বেশি হবে। একজন শিক্ষার্থী যে ফি কাঠামোয় ভর্তি হবেন, প্রোগ্রাম শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনোক্রমেই তা বাড়ানো যাবে না। অন্য কোনো নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফি আদায় করা যাবে না।
খসড়ায় আইন লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিধান লঙ্ঘনে অনূর্ধ্ব ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। এর আগে ছিল ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। সার্টিফিকেট (সনদ) জালিয়াতির শাস্তি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ন্যূনতম দুই বছর বন্ধের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়ায় তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়ে বলা হয়েছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ৬০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিল করতে হবে, এই সময়সীমা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদনক্রমে আরও ৩০ দিন বাড়ানো যেতে পারে। এ ছাড়া কমিশনের তদন্ত, তল্লাশি ও গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত ক্ষমতাও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাল সনদ তৈরি বা অননুমোদিত ক্যাম্পাস পরিচালনার ক্ষেত্রে কমিশনের টিমকে তাৎক্ষণিক তল্লাশি, সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র, দলিল ও দ্রব্যাদি জব্দ এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করা হবে।
খসড়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য ইউজিসির সদস্যের (চেয়ারম্যান) নেতৃত্বে সাত সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই কমিটি উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করে চ্যান্সেলরের কাছে প্রতিটি পদের বিপরীতে তিনজন প্রার্থীর নাম সুপারিশ করবে।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব বা ভাড়া বাড়ির কথা বলা হয়েছে। ২০১০ সালের আইনে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভবনের প্রয়োজনীয় আয়তন ছিল ২৫ হাজার বর্গফুট। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ১ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতার স্থলে ৫ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪ সালের আগে অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে জমির পরিমাণের এই বাধ্যবাধকতা শিথিল থাকবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালাতে সরকার থেকে সনদ নিতে হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে সাময়িক সনদ দেওয়া হয়। বর্তমান আইনে সাত বছরের মধ্যে বেসরকারি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী সনদ না নিলে কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিধান রয়েছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় এতে পরিবর্তন এনে সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী সনদের জন্য আবেদন এবং ১২ বছরের মধ্যে সনদ না পেলে ভর্তিসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, মহাসড়ক ও বাইপাসের কাছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া বার্ষিক বাজেটের ন্যূনতম ২ শতাংশ অর্থ গবেষণা খাতে বরাদ্দ করে কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী খরচ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে শহর, জেলা, বিভাগ, দেশের নাম, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শব্দ ব্যবহার না করা, অভিন্ন গ্রেডিং সিস্টেম অনুসরণ ও ক্রেডিট ট্রান্সফার উন্মুক্ত রাখা, প্রোগ্রামের আসনসংখ্যা ইউজিসির অনুমোদনে নির্ধারণ, ন্যূনতম ৯ শতাংশ আসনে মেধাবী অথচ দরিদ্র/প্রত্যন্ত অঞ্চলের/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইত্যাদি এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড গঠনে কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে সংশোধিত আইনের খসড়ায়। এতে বলা হয়েছে, অনধিক ১৫ সদস্য কিন্তু অন্যূন ৯ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করতে হবে। তবে একই পরিবার থেকে পাঁচজনের বেশি বোর্ড সদস্য হতে পারবেন না। খসড়ায় জমি বা ভবন সম্প্রসারণে বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ভূমি বা ভবন না পাওয়া গেলে কমিশনের সুপারিশ ও সরকারের অনুমোদন নিয়ে এক বর্গকিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ভূমি বা ভবন কেনা যেতে পারে। তবে এক বা একাধিক পূর্ণাঙ্গ ফ্যাকাল্টি ভিন্ন স্থানে পরিচালনা করা যাবে না।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান আইনটি যুগোপযোগী করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের যে অভিযোগ ছিল, এ আইন কার্যকরের ফলে তা লাঘব হবে বলে আশা করি।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৫ (সংশোধিত)-এর খসড়ায় এসব প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়ায় উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি করার বিধান রাখা হয়েছে।
বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরাই বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করে কেবল ইউজিসিকে জানায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এ ফি নির্ধারণে ইউজিসির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, ভর্তি হওয়ার পর হঠাৎ করে টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেক সময় লিখিত নোটিশও দেয় না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ইউজিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সংশোধিত নতুন আইন কার্যকর হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি নির্ধারণ ও আদায় করতে পারবে না। এতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। ভোগান্তিরও অবসান হবে।
জানতে চাইলে গত বুধবার ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংশোধিত আইনের খসড়াটি শিগগির চূড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রণালয় তা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
ইউজিসির সূত্র বলছে, গত ২৩ অক্টোবর ইউজিসির ৫৭তম মাসিক সভায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৫-এর সংশোধনীর খসড়া নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা হয়। ওই সভায় আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে একটি কমিটি করার এবং অংশীজনদের নিয়ে কর্মশালা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় আইন লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ানো, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রির বিষয়ে ইউজিসির নীতিমালা অনুসরণ, একাডেমিক প্রোগ্রাম অনুমোদনে বাধ্যবাধকতা, ট্রাস্টি বোর্ডে পরিবর্তন, যৌন হয়রানি নিরোধ ও সাইবার নিরাপত্তা কমিটি করাসহ বেশ কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ইউজিসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১১৬টি। এগুলোর মধ্যে ১০৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে। ৪টির কার্যক্রম নানা কারণে বন্ধ রয়েছে। আর বাকি ৫টির একাডেমিক কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪১৪ জন।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি মো. সবুর খান বলেন, ইউজিসি এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য ডাকলে তাঁরা মতামত দেবেন।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় টিউশন ফির বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফি কাঠামো তৈরি করে কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন নেবে এবং সরকারকে জানাবে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এই ফির হার ৫০ শতাংশ বেশি হবে। একজন শিক্ষার্থী যে ফি কাঠামোয় ভর্তি হবেন, প্রোগ্রাম শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনোক্রমেই তা বাড়ানো যাবে না। অন্য কোনো নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফি আদায় করা যাবে না।
খসড়ায় আইন লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিধান লঙ্ঘনে অনূর্ধ্ব ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। এর আগে ছিল ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। সার্টিফিকেট (সনদ) জালিয়াতির শাস্তি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ন্যূনতম দুই বছর বন্ধের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়ায় তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়ে বলা হয়েছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ৬০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিল করতে হবে, এই সময়সীমা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদনক্রমে আরও ৩০ দিন বাড়ানো যেতে পারে। এ ছাড়া কমিশনের তদন্ত, তল্লাশি ও গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত ক্ষমতাও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাল সনদ তৈরি বা অননুমোদিত ক্যাম্পাস পরিচালনার ক্ষেত্রে কমিশনের টিমকে তাৎক্ষণিক তল্লাশি, সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র, দলিল ও দ্রব্যাদি জব্দ এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করা হবে।
খসড়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য ইউজিসির সদস্যের (চেয়ারম্যান) নেতৃত্বে সাত সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই কমিটি উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করে চ্যান্সেলরের কাছে প্রতিটি পদের বিপরীতে তিনজন প্রার্থীর নাম সুপারিশ করবে।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব বা ভাড়া বাড়ির কথা বলা হয়েছে। ২০১০ সালের আইনে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভবনের প্রয়োজনীয় আয়তন ছিল ২৫ হাজার বর্গফুট। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ১ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতার স্থলে ৫ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪ সালের আগে অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে জমির পরিমাণের এই বাধ্যবাধকতা শিথিল থাকবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালাতে সরকার থেকে সনদ নিতে হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে সাময়িক সনদ দেওয়া হয়। বর্তমান আইনে সাত বছরের মধ্যে বেসরকারি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী সনদ না নিলে কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিধান রয়েছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় এতে পরিবর্তন এনে সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী সনদের জন্য আবেদন এবং ১২ বছরের মধ্যে সনদ না পেলে ভর্তিসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, মহাসড়ক ও বাইপাসের কাছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া বার্ষিক বাজেটের ন্যূনতম ২ শতাংশ অর্থ গবেষণা খাতে বরাদ্দ করে কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী খরচ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে শহর, জেলা, বিভাগ, দেশের নাম, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শব্দ ব্যবহার না করা, অভিন্ন গ্রেডিং সিস্টেম অনুসরণ ও ক্রেডিট ট্রান্সফার উন্মুক্ত রাখা, প্রোগ্রামের আসনসংখ্যা ইউজিসির অনুমোদনে নির্ধারণ, ন্যূনতম ৯ শতাংশ আসনে মেধাবী অথচ দরিদ্র/প্রত্যন্ত অঞ্চলের/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইত্যাদি এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড গঠনে কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে সংশোধিত আইনের খসড়ায়। এতে বলা হয়েছে, অনধিক ১৫ সদস্য কিন্তু অন্যূন ৯ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করতে হবে। তবে একই পরিবার থেকে পাঁচজনের বেশি বোর্ড সদস্য হতে পারবেন না। খসড়ায় জমি বা ভবন সম্প্রসারণে বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ভূমি বা ভবন না পাওয়া গেলে কমিশনের সুপারিশ ও সরকারের অনুমোদন নিয়ে এক বর্গকিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ভূমি বা ভবন কেনা যেতে পারে। তবে এক বা একাধিক পূর্ণাঙ্গ ফ্যাকাল্টি ভিন্ন স্থানে পরিচালনা করা যাবে না।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান আইনটি যুগোপযোগী করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের যে অভিযোগ ছিল, এ আইন কার্যকরের ফলে তা লাঘব হবে বলে আশা করি।’

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বদলি করা জেলা প্রশাসকদের মধ্যে বাগেরহাটের ডিসি আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালীতে, কুষ্টিয়ার ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনকে হবিগঞ্জে, ভোলার ডিসি মো. আজাদ জাহানকে গাজীপুরে, বরগুনার ডিসি মোহাম্মদ শফিউল আলমকে ঢাকায়, সিরাজগঞ্জের ডিসি মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে গাইবান্ধায় এবং খুলনার ডিসি মো. তৌফিকুর রহমানকে বগুড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহকে বরগুনায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সচিব (উপসচিব) মো. আমিনুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জে, বাণিজ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে মাগুরায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সাঈদকে পিরোজপুরে, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পাবনার জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মিজ আফরোজা আখতারকে সাতক্ষীরায়, স্থানীয় সরকার ফেনীর উপপরিচালক (উপসচিব) গোলাম মো. বাতেনকে বাগেরহাটে, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) একান্ত সচিব স. ম. জামশেদ খোন্দকারকে খুলনায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেনকে কুষ্টিয়ায় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব ডা. শামীম রহমানকে ভোলার ডিসি পদে পদায়ন করা হয়েছে।

১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বদলি করা জেলা প্রশাসকদের মধ্যে বাগেরহাটের ডিসি আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালীতে, কুষ্টিয়ার ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনকে হবিগঞ্জে, ভোলার ডিসি মো. আজাদ জাহানকে গাজীপুরে, বরগুনার ডিসি মোহাম্মদ শফিউল আলমকে ঢাকায়, সিরাজগঞ্জের ডিসি মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে গাইবান্ধায় এবং খুলনার ডিসি মো. তৌফিকুর রহমানকে বগুড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহকে বরগুনায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সচিব (উপসচিব) মো. আমিনুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জে, বাণিজ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে মাগুরায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সাঈদকে পিরোজপুরে, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পাবনার জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মিজ আফরোজা আখতারকে সাতক্ষীরায়, স্থানীয় সরকার ফেনীর উপপরিচালক (উপসচিব) গোলাম মো. বাতেনকে বাগেরহাটে, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) একান্ত সচিব স. ম. জামশেদ খোন্দকারকে খুলনায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেনকে কুষ্টিয়ায় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব ডা. শামীম রহমানকে ভোলার ডিসি পদে পদায়ন করা হয়েছে।

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
৬ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, আমরা লক্ষ করছি যে ‘#TMD’ অর্থাৎ ‘Total Maloun Death’ নামীয় হিন্দুবিদ্বেষী হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক উসকানি প্রচার করছে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। এতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারিত হচ্ছে, যা মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এ ট্যাগকে ব্যবহার করে অসংখ্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও সহিংসতাপ্রবণ পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ছে। যার ফলে দেশের ছাত্র ও যুব সমাজের মধ্যে বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ দ্রুত ছড়ানোর কারণে এক সম্প্রদায়ের প্রতি অন্য সম্প্রদায়ের বিদ্বেষ ক্রমবর্ধমান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক প্রচারণার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থানের একটি স্বাধীন দেশে এ ধরনের ধর্মবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার কখনো কাম্য হতে পারে না।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী এবং ধর্মীয় উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাসহ এমন প্রচার বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, আমরা লক্ষ করছি যে ‘#TMD’ অর্থাৎ ‘Total Maloun Death’ নামীয় হিন্দুবিদ্বেষী হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক উসকানি প্রচার করছে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। এতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারিত হচ্ছে, যা মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এ ট্যাগকে ব্যবহার করে অসংখ্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও সহিংসতাপ্রবণ পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ছে। যার ফলে দেশের ছাত্র ও যুব সমাজের মধ্যে বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ দ্রুত ছড়ানোর কারণে এক সম্প্রদায়ের প্রতি অন্য সম্প্রদায়ের বিদ্বেষ ক্রমবর্ধমান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক প্রচারণার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থানের একটি স্বাধীন দেশে এ ধরনের ধর্মবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার কখনো কাম্য হতে পারে না।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী এবং ধর্মীয় উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাসহ এমন প্রচার বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
৬ ঘণ্টা আগে
১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে