Ajker Patrika

সব খুলে দেওয়ায় বিপদের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

আজাদুল আদনান, ঢাকা
সব খুলে দেওয়ায় বিপদের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ও মৃত্যু ঠেকাতে গত দেড় বছরে যত বিধিনিষেধ চালু হয়েছিল, তার সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন হয়েছে জুলাই থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এই সময়ে একদিকে রাস্তাঘাটে কম ছিল মানুষের আনাগোনা, অন্যদিকে হাসপাতালগুলোতে ছিল রোগীদের প্রচণ্ড চাপ। তারপরেও জুলাই থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দেড় শর নিচে নামেনি।

বাস্তবিক অর্থে জুলাইয়ের শুরু থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধের কার্যকর ব্যবস্থা কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। জুলাই জুড়ে যেখানে সংক্রমণের হার ৩২ শতাংশ উঠেছিল, আগস্টের মাঝামাঝি এসে তা ২০ শতাংশে নেমেছে।

তবে এটি খুব বেশি স্বস্তিদায়ক নয়। এরই মধ্যে জীবন-জীবিকার তাগিদে ও দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে ১৯ আগস্ট থেকে সব বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তই আরেক দফা সর্বনাশের কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংক্রমণ বাড়লে আবার বিধিনিষেধ জারি হতে পারে। ১১ আগস্ট থেকে সরকারের বিধিনিষেধ শিথিল করায় রাস্তাঘাট, দোকানপাট, শপিংমল, গণপরিবহন এমনকি টিকাদান কেন্দ্রেও স্বাস্থ্যবিধির বাস্তবায়ন নেই।

বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করেছে করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের এমন সিদ্ধান্তের মাশুল দিতে হবে শিগগিরই। বিধিনিষেধ আরও অন্তত দুই সপ্তাহ চালু রাখতে পারলে স্থায়ী ইতিবাচক ফল আসত। পাশাপাশি সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী টিকা নিশ্চিত করতে না পারায় পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা তাঁদের।

কমিটির একাধিক সদস্য বলছেন, পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। সংক্রমণ সামান্য কমলেও শনাক্তের হার এখনো স্বস্তির পর্যায়ে যেতে পারেনি, মৃত্যুও অনেক বেশি। তাহলে কিসের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে? শুধু অর্থনীতির কথা ভাবলে হবে না, মানুষের জীবনকেও গুরুত্ব দিতে হবে।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ বলছেন, ‘লকডাউনের প্রত্যাশিত ফল না পেলেও কিছুটা ইতিবাচক ফল আমরা পেয়েছি। সেখানে বিধিনিষেধ একেবারে তুলে দিলে হঠাৎ করেই আরও বড় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও অন্তত পর্যটনকেন্দ্র, সভা-সমাবেশ ও রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখা হোক। এসব সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।’

বিষয়টি স্বীকার করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সংক্রমণের মাত্রা ৫ শতাংশের নিচে আনা। পরামর্শক কমিটি সব সময় ভালো পরামর্শ দিয়ে আসছে, কিন্তু মানুষের জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে আমাদের সিদ্ধান্তগুলো নিতে হচ্ছে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রস্তুতির বিষয়টি নির্ভর করছে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হয়, সেটির ওপর। হাসপাতালের শুধু শয্যা বাড়ালেই হবে না, অনেক বিষয় এটার সঙ্গে জড়িত। ডাক্তার থেকে শুরু করে চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন ধরে টানা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, কারও বিশ্রাম নেই। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি যদি আরও ভয়াবহ হয়, তাহলে চরম দুর্যোগে পড়তে হবে আমাদের।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিৎকার শুনে ছুটে আসা স্থানীয়রা ধর্ষণের শিকার নারীকেই মারধর করে

বিমানবন্দরের প্রকল্পে ‘অসম’ চুক্তি, স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়েছেন ঢাকায় ইউএই রাষ্ট্রদূত

মন্ত্রীর আত্মীয়তাই ‘যোগ্যতা’

আদানিকে আরও ৩৮৪ মিলিয়ন ডলার দিল বাংলাদেশ, মোট পরিশোধ ১.৫ বিলিয়ন

অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দুই বন্ধুর ধর্ষণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত