মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার
মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা
সব নিয়মকানুন মেনে বৈধভাবেই কর্মী ভিসায় মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন নাজমুল ইসলাম। কিন্তু গিয়ে দেখেন নিয়োগকর্তা যে কাজের জন্য তাঁকে নিয়ে যান, সে রকম কোনো কাজই তাঁর কাছে নেই, মিলছে না কোনো বেতনও। ফলে বাধ্য হয়ে কুয়ালালামপুরে অন্য একজনের অধীনে নির্মাণ খাতে কাজ করছেন এই কর্মী। মালয়েশিয়ার আইনে এটি অবৈধ।
শুধু নাজমুলই নন, তাঁর মতো বৈধ ভিসায় মালয়েশিয়ায় গিয়ে ‘অবৈধভাবে’ কাজ করছেন অসংখ্য প্রবাসী কর্মী। তাঁদের সঠিক সংখ্যা কত তা জানা না গেলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়োগকর্তার কোনো কাজ না থাকায় অবৈধভাবে অন্য কোথাও কাজ করছেন হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি। মূলত কিছু অসাধু এজেন্ট ও স্থানীয় দালালদের খপ্পরে পড়ে এ দশা হয়েছে তাঁদের।
বৈধ ভিসায় গিয়েও অবৈধভাবে কাজ করছেন– এমন কয়েকজন বাংলাদেশি কর্মীর সঙ্গে কথা হয়। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা আজকের পত্রিকার কাছে অভিযোগ করেন, মালিকপক্ষ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে কম বেতন দেয়, অতিরিক্ত সময় কাজ করায় এবং শ্রমিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। ফলে তাঁরা নির্ধারিত মালিকের অধীনে কাজ করতে না চেয়ে অন্য জায়গায় কাজ খোঁজেন। আবার অনেকেই অন্য মালিকের অধীনে কাজ করেন, কারণ তাঁদের মূল নিয়োগকর্তার কাছে কোনো কাজই নেই।
মালয়েশিয়ার জহুরবারুর বাংলাদেশি কমিউনিটির তথ্য বলছে, কর্মসংস্থানের অভাবে অনেক প্রবাসী শ্রমিক মূল মালিকের অধীনে কাজ করতে পারেন না। কারণ অনেক রিক্রুটিং এজেন্সি শ্রমিকদের ভুয়া তথ্য দিয়ে কর্মী ভিসায় মালয়েশিয়ায় পাঠায়। তাঁরা দেশটিতে পৌঁছে কাজ পান না। এ অবস্থায় জীবিকা নির্বাহের জন্য বাধ্য হয়ে তাঁরা অন্য প্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে কাজ করতে যান।
মালয়েশিয়ায় এভাবে অবৈধভাবে কাজের পরিণতি ভয়াবহ। দেশটির অভিবাসন আইন অনুযায়ী, বৈধ ওয়ার্ক পারমিট থাকা সত্ত্বেও নির্ধারিত নিয়োগকর্তা ছাড়া অন্যত্র কাজ করা অবৈধ। এ কারণে পুলিশ ও ইমিগ্রেশন বিভাগের নিয়মিত অভিযানে অনেক শ্রমিক আটক হন এবং দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
অনেক শ্রমিক অবৈধভাবে কাজ করতে গিয়ে বেতন পান না, মালিকের হয়রানির শিকার হন, এমনকি প্রতারণারও শিকার হন। আইনগত সুরক্ষা না থাকায় তাঁরা এ ধরনের সমস্যার বিরুদ্ধে অভিযোগও করতে পারেন না। নিজ মালিকের অধীনে না থাকায় অনেক শ্রমিক চিকিৎসাসেবা পান না এবং শ্রম আইনের সুরক্ষাও ভোগ করতে পারেন না। ফলে কাজের পরিবেশে দুর্ঘটনা ঘটলে বা অসুস্থ হলে তাঁরা বিপদে পড়েন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের উচিত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম কঠোরভাবে মনিটর করা, যাতে শ্রমিকেরা প্রতিশ্রুত কাজ পান। পাশাপাশি শ্রমিকদের অবৈধভাবে অন্যত্র কাজের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে এবং প্রয়োজনে তাঁদের জন্য সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। যাঁরা মালিকের অধীনে কাজ পাচ্ছেন না, তাঁদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা দরকার। শুধু তা-ই নয়, অবৈধভাবে শ্রমিকদের অন্যত্র কাজ করতে উৎসাহিত করা এজেন্ট ও দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় তথাকথিত ফ্রি ভিসার নামে যাঁদের পাঠানো হচ্ছে, তাঁরাই মূলত বৈধ ভিসায় অবৈধভাবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের প্রত্যেকেই বিএমইটি থেকে ছাড়পত্র নিয়ে যাওয়ার পর দেখেছেন কোম্পানিটি নামসর্বস্ব। সেখানে কোনো কাজই নেই। ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ করে যাওয়ার পর তাঁরা যখন এমন পরিস্থিতিতে পড়েন, তখন বাধ্য হয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে বাধ্য হন, যা মূলত অবৈধ। ফলে তাঁদের অনেক কম বেতনে কাজ করতে হয়। চিকিৎসা, বিমাসহ সব ধরনের সুবিধা থেকেও তাঁদের বঞ্চিত হতে হয়। পাশাপাশি এভাবে কাজ করায় তাঁদের মনে সব সময় পুলিশের ভয়ও কাজ করে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের শ্রমবাজারকে শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
বিষয়টি জানতে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে (বিএমইটি) যোগাযোগ করা হলে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, মালয়েশিয়া থেকে কাজের যেসব চাহিদাপত্র আসে, তা দূতাবাস যাচাই-বাছাই করেই পাঠায়। প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মীর প্রয়োজন রয়েছে কি না, কর্মীদের বেতন দিতে পারবে কি না, সেগুলো দূতাবাস থেকে যাচাই করা হয়। পরবর্তী সময়ে রিক্রুটিং এজেন্সির আবেদনের ভিত্তিতে স্মার্টকাড দেয় বিএমইটি।
বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য বলছে, সৌদি আরবের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় কর্মরত। চার বছর পর ২০২২ সালে দেশটির শ্রমবাজার খোলার পর ওই বছর গিয়েছিলেন ৫০ হাজার ৯০ জন। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জনে। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে দেশটিতে যান ৯৩ হাজার ৬৩২ জন। আর চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় গেছেন ১ হাজার ৫৮৭ জন।
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) একাধিক সদস্যের অভিযোগ, রাঘববোয়ালদের চক্রের কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মীরা নানা সমস্যায় পড়ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বায়রার এক সদস্য বলেন, শ্রমিকদের বিদেশ যেতে সরকার ৮০ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে জনপ্রতি সাড়ে ৫ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। যেখানে ৫০ জনের কাজের জায়গা রয়েছে, সেখানে ৫০০ লোক নিয়েছে। ফলে সেখানে গিয়ে শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা লুটে নেওয়ার তথ্য এসেছে ‘একটি উন্নয়ন বয়ানের ব্যবচ্ছেদ’ নামের শ্বেতপত্রে। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি গত বছর দেশের অর্থনীতি নিয়ে যে শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে, সেখানে এটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠিয়ে ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির চক্র দেড় বছরেই হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। প্রায় পৌনে ৫ লাখ কর্মীর কাছ থেকে অতিরিক্ত এই অর্থ নিয়ে নিজেদের পকেটে ভরেছে চক্রটি। চাহিদার বেশি কর্মী পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে।
এই চক্রের সঙ্গে জড়িত হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের চার সংসদ সদস্যের নামও এসেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতিমধ্যে সাবেক চার এমপির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাঁরা হলেন সাবেক মন্ত্রী ও এমপি আ হ ম মুস্তফা কামাল, নিজাম উদ্দিন হাজারী, বেনজীর আহমেদ এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। প্রথম তিনজন আওয়ামী লীগের এবং মাসুদ উদ্দিন জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন।
সব নিয়মকানুন মেনে বৈধভাবেই কর্মী ভিসায় মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন নাজমুল ইসলাম। কিন্তু গিয়ে দেখেন নিয়োগকর্তা যে কাজের জন্য তাঁকে নিয়ে যান, সে রকম কোনো কাজই তাঁর কাছে নেই, মিলছে না কোনো বেতনও। ফলে বাধ্য হয়ে কুয়ালালামপুরে অন্য একজনের অধীনে নির্মাণ খাতে কাজ করছেন এই কর্মী। মালয়েশিয়ার আইনে এটি অবৈধ।
শুধু নাজমুলই নন, তাঁর মতো বৈধ ভিসায় মালয়েশিয়ায় গিয়ে ‘অবৈধভাবে’ কাজ করছেন অসংখ্য প্রবাসী কর্মী। তাঁদের সঠিক সংখ্যা কত তা জানা না গেলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়োগকর্তার কোনো কাজ না থাকায় অবৈধভাবে অন্য কোথাও কাজ করছেন হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি। মূলত কিছু অসাধু এজেন্ট ও স্থানীয় দালালদের খপ্পরে পড়ে এ দশা হয়েছে তাঁদের।
বৈধ ভিসায় গিয়েও অবৈধভাবে কাজ করছেন– এমন কয়েকজন বাংলাদেশি কর্মীর সঙ্গে কথা হয়। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা আজকের পত্রিকার কাছে অভিযোগ করেন, মালিকপক্ষ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে কম বেতন দেয়, অতিরিক্ত সময় কাজ করায় এবং শ্রমিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। ফলে তাঁরা নির্ধারিত মালিকের অধীনে কাজ করতে না চেয়ে অন্য জায়গায় কাজ খোঁজেন। আবার অনেকেই অন্য মালিকের অধীনে কাজ করেন, কারণ তাঁদের মূল নিয়োগকর্তার কাছে কোনো কাজই নেই।
মালয়েশিয়ার জহুরবারুর বাংলাদেশি কমিউনিটির তথ্য বলছে, কর্মসংস্থানের অভাবে অনেক প্রবাসী শ্রমিক মূল মালিকের অধীনে কাজ করতে পারেন না। কারণ অনেক রিক্রুটিং এজেন্সি শ্রমিকদের ভুয়া তথ্য দিয়ে কর্মী ভিসায় মালয়েশিয়ায় পাঠায়। তাঁরা দেশটিতে পৌঁছে কাজ পান না। এ অবস্থায় জীবিকা নির্বাহের জন্য বাধ্য হয়ে তাঁরা অন্য প্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে কাজ করতে যান।
মালয়েশিয়ায় এভাবে অবৈধভাবে কাজের পরিণতি ভয়াবহ। দেশটির অভিবাসন আইন অনুযায়ী, বৈধ ওয়ার্ক পারমিট থাকা সত্ত্বেও নির্ধারিত নিয়োগকর্তা ছাড়া অন্যত্র কাজ করা অবৈধ। এ কারণে পুলিশ ও ইমিগ্রেশন বিভাগের নিয়মিত অভিযানে অনেক শ্রমিক আটক হন এবং দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
অনেক শ্রমিক অবৈধভাবে কাজ করতে গিয়ে বেতন পান না, মালিকের হয়রানির শিকার হন, এমনকি প্রতারণারও শিকার হন। আইনগত সুরক্ষা না থাকায় তাঁরা এ ধরনের সমস্যার বিরুদ্ধে অভিযোগও করতে পারেন না। নিজ মালিকের অধীনে না থাকায় অনেক শ্রমিক চিকিৎসাসেবা পান না এবং শ্রম আইনের সুরক্ষাও ভোগ করতে পারেন না। ফলে কাজের পরিবেশে দুর্ঘটনা ঘটলে বা অসুস্থ হলে তাঁরা বিপদে পড়েন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের উচিত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম কঠোরভাবে মনিটর করা, যাতে শ্রমিকেরা প্রতিশ্রুত কাজ পান। পাশাপাশি শ্রমিকদের অবৈধভাবে অন্যত্র কাজের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে এবং প্রয়োজনে তাঁদের জন্য সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। যাঁরা মালিকের অধীনে কাজ পাচ্ছেন না, তাঁদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা দরকার। শুধু তা-ই নয়, অবৈধভাবে শ্রমিকদের অন্যত্র কাজ করতে উৎসাহিত করা এজেন্ট ও দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় তথাকথিত ফ্রি ভিসার নামে যাঁদের পাঠানো হচ্ছে, তাঁরাই মূলত বৈধ ভিসায় অবৈধভাবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের প্রত্যেকেই বিএমইটি থেকে ছাড়পত্র নিয়ে যাওয়ার পর দেখেছেন কোম্পানিটি নামসর্বস্ব। সেখানে কোনো কাজই নেই। ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ করে যাওয়ার পর তাঁরা যখন এমন পরিস্থিতিতে পড়েন, তখন বাধ্য হয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে বাধ্য হন, যা মূলত অবৈধ। ফলে তাঁদের অনেক কম বেতনে কাজ করতে হয়। চিকিৎসা, বিমাসহ সব ধরনের সুবিধা থেকেও তাঁদের বঞ্চিত হতে হয়। পাশাপাশি এভাবে কাজ করায় তাঁদের মনে সব সময় পুলিশের ভয়ও কাজ করে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের শ্রমবাজারকে শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
বিষয়টি জানতে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে (বিএমইটি) যোগাযোগ করা হলে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, মালয়েশিয়া থেকে কাজের যেসব চাহিদাপত্র আসে, তা দূতাবাস যাচাই-বাছাই করেই পাঠায়। প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মীর প্রয়োজন রয়েছে কি না, কর্মীদের বেতন দিতে পারবে কি না, সেগুলো দূতাবাস থেকে যাচাই করা হয়। পরবর্তী সময়ে রিক্রুটিং এজেন্সির আবেদনের ভিত্তিতে স্মার্টকাড দেয় বিএমইটি।
বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য বলছে, সৌদি আরবের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় কর্মরত। চার বছর পর ২০২২ সালে দেশটির শ্রমবাজার খোলার পর ওই বছর গিয়েছিলেন ৫০ হাজার ৯০ জন। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জনে। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে দেশটিতে যান ৯৩ হাজার ৬৩২ জন। আর চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় গেছেন ১ হাজার ৫৮৭ জন।
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) একাধিক সদস্যের অভিযোগ, রাঘববোয়ালদের চক্রের কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মীরা নানা সমস্যায় পড়ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বায়রার এক সদস্য বলেন, শ্রমিকদের বিদেশ যেতে সরকার ৮০ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে জনপ্রতি সাড়ে ৫ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। যেখানে ৫০ জনের কাজের জায়গা রয়েছে, সেখানে ৫০০ লোক নিয়েছে। ফলে সেখানে গিয়ে শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা লুটে নেওয়ার তথ্য এসেছে ‘একটি উন্নয়ন বয়ানের ব্যবচ্ছেদ’ নামের শ্বেতপত্রে। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি গত বছর দেশের অর্থনীতি নিয়ে যে শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে, সেখানে এটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠিয়ে ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির চক্র দেড় বছরেই হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। প্রায় পৌনে ৫ লাখ কর্মীর কাছ থেকে অতিরিক্ত এই অর্থ নিয়ে নিজেদের পকেটে ভরেছে চক্রটি। চাহিদার বেশি কর্মী পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে।
এই চক্রের সঙ্গে জড়িত হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের চার সংসদ সদস্যের নামও এসেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতিমধ্যে সাবেক চার এমপির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাঁরা হলেন সাবেক মন্ত্রী ও এমপি আ হ ম মুস্তফা কামাল, নিজাম উদ্দিন হাজারী, বেনজীর আহমেদ এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। প্রথম তিনজন আওয়ামী লীগের এবং মাসুদ উদ্দিন জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে মামলা লড়তে আবেদন করেছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। সেই আবেদন খারিজ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, ‘আপনি ট্রেন মিস করেছেন।’
৩৬ মিনিট আগেসচিবালয়ের ভেতরে মিছিল, সমাবেশ ও গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে সরকার। যদিও সরকারি কর্মচারীরা দলবদ্ধভাবে আন্দোলনে অংশ নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
৪২ মিনিট আগেদেশে গত জুলাই মাসে ৫০৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২০ জন নিহত এবং ১৩৫৬ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৬২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৬৯ জন এবং আহত হয়েছেন ১৪৪ জন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, নিহতের ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং আহতের ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ।
১ ঘণ্টা আগেমাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্থগিত হওয়া জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্যাপনের নতুন সূচি ঘোষণা করেছে সরকার। ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট সারা দেশে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্যাপন করা কবে। এর লক্ষ্য, দেশের মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধি, সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবহারে জনসচেতনতা তৈরি করা।
১ ঘণ্টা আগে