Ajker Patrika

বিদেশ হতে চিকিৎসক আনতে বলা হলেও, আনছে না বিএনপি: আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিদেশ হতে চিকিৎসক আনতে বলা হলেও, আনছে না বিএনপি: আইনমন্ত্রী

চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা বিদেশে নিতে চায় বিএনপি। এ দাবি দলীয় কর্মসূচি ও জাতীয় সংসদে করে আসছে দলটির নেতারা। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ বিষয়টি আবারও উত্থাপন করেন সাংসদ হারুনুর রশীদ। তবে তাঁর এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, তাঁর চিকিৎসায় বিদেশ হতে চিকিৎসক আনতে আমরা বলেছি। কিন্তু তারা সেটা নিয়ে চিন্তা করছে না। কোন পদক্ষেপও নিচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী।  বুধবার জাতীয় সংসদে এ সাধারণ আলোচনার জন্য প্রস্তাব তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে সংসদে স্মারক বক্তৃতা দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। 

বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি একাধিকবার সংসদ নেতার সঙ্গে কথা বলেছি। আমি বলেছি, আজকে ওনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক যে অবস্থা ওনাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার অনুমতি দিতে অসুবিধা কোথায়? আপনি তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগটি দিন। এতে আপনি সম্মানিত হবেন। দেশের মানুষ আপনাকে অবশ্যই সম্মান করবে। তাঁর (খালেদা জিয়া) যে বয়স, তাঁর যে অবস্থা এই অবস্থায় তাকে এইটা বিবেচনা করা উচিত। 

হারুনের কথার জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির সকলেই বলে আমাদের নেত্রীকে এখনই বিদেশে পাঠাতে হবে। আর ওনার চিকিৎসা করাতে হবে বিদেশে। আমাদের দেশের চিকিৎসা খুব খারাপ। বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া তিন তিনবার হাসপাতালে গেছেন। সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। আমরা বলেছি বিদেশ থেকে যদি চিকিৎসক আনতে চান। সেই কথা চিন্তাও করবে না, পদক্ষেপও নেবে না। শুধু বলবে বিদেশ পাঠাই দেন। বিদেশ থেকে একজন চিকিৎসক এনে যদি চিকিৎসা করায়…’

মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতা হারুনুর রশিদ সাহেব বলেছেন বাঙালি খালি বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ছুটে চলে যান। ওনারাতো ২৬ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। আমি বলব সেবা করেন নাই, শাসন করেছেন। ওনারা কি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তৈরি করেছেন? যেটা থেকে মানুষ বিদেশে গিয়ে স্বাস্থ্য সেবা নিবে না কেন? এখনো বাংলার গরিব জনগণ চায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে বা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের চিকিৎসা হোক। কারণ তাঁরা বলেন সেখানে চিকিৎসা পায়। কম খরচে ও বিনা পয়সায় চিকিৎসা পায়। ওনারাতো দেখেন খালি পশ্চিম দিক, কাবা শরীফের পরে আর আমাদের চেয়ে আগে। ওই জায়গার মধ্যে ওনারা ন্যস্ত। সেটা থেকে বের হতে পারছেন না।

১৯৯৬ সাল পরবর্তী আওয়ামী লীগর ক্ষমতা গ্রহণকে সোনালী অধ্যায় বলে দাবি করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা নিয়ে আইনের শাসন চালু করে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু করেন। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। আইন মন্ত্রী বলেন, একটা উন্নয়ন সঙ্গে সঙ্গে হয়ে যায় না। এটা ভাঙা সুটকেস থেকে আলাউদ্দিনের চেরাগ নয় যে, কোকো জাহাজ হয়ে যাবে। এটা করতে হলে প্রথম ভৌত অবকাঠামো দাঁড় করাতে হয়। এই ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রী সেটা করেছেন। এটার ফল আগামী ১২ বছরে দেখবেন।  

সেনানিবাস থেকে রাজনৈতিক দলকে আইনের শাসন বলে দাবি করে বিএনপি জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করেছিল তাঁরা। এটাকে তারা বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা। আর ছেঁড়া গেঞ্জি হয়ে যায় ড্যান্ডি ডাইংসহ বড় বড় শিল্প কারখানা আর ভাঙা সুটকেস থেকে বের হয়ে আসে কোকো জাহাজ। কৃষক সার চাইতে গেলে বন্দুকের গুলি নামে গণতন্ত্র। অন্ধকার অধ্যায়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল বঙ্গবন্ধুর আইনের শাসনকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করা এবং বন্দুকের নলের মাধ্যমে দেশ শাসন করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত