Ajker Patrika

নিষ্পত্তির অপেক্ষায় দেড় লাখ মামলা

  • ১৮০ দিনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি প্রায় ৩৩ হাজার মামলার বিচার।
  • এই আইনের মামলার বিচারে সারা দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রয়েছে ১০১টি।
  • বিচার বিলম্বের জন্য অপর্যাপ্ত ট্রাইব্যুনালকে কারণ বলছে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
  • আরও ২০০ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি অ্যাসোসিয়েশনের। মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবেন সুপ্রিম কোর্ট।
এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে বিশেষ আইন করা হয় এবং মামলার বিচারকাজ শেষ করার জন্য ১৮০ দিন সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়। অথচ সারা দেশের আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতনের দেড় লাখেরও বেশি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে প্রায় ৩৩ হাজার মামলা বিচারাধীন রয়েছে পাঁচ বছরের বেশি সময়।

নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার বিচারকাজ হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে, দেশে এই ট্রাইব্যুনাল রয়েছে ১০১টি। বিচারকদের সংগঠন জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এসব মামলার বিচারকাজ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা আরও ২০০টি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে।

জানতে চাইলে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সালমা আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষ প্রসিকিউশন নিয়োগ দেওয়া উচিত। তদন্তকারী কর্মকর্তা, প্রসিকিউশন ও বিচারকের মধ্যে সমন্বয় ও সদিচ্ছা থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবার জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিচারে দেরি হলে অনেক সময় সাক্ষ্য-প্রমাণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই আইনে উল্লিখিত প্রতি কার্যদিবসেই একটানা বিচার করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সারা দেশের আদালতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার মামলা বিচারাধীন ১ লাখ ৫১ হাজার ৩১৭টি। এর মধ্যে ঢাকার ৯টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালেই ছিল ১৫ হাজার ২১৩টি। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩২ হাজার ৯৭২টি। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ১ হাজার ৬০৭টি মামলার বিচারকাজ।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০(২) ধারায় বলা হয়েছে, ট্রাইব্যুনালে মামলার শুনানি শুরু হলে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি কর্মদিবসে একটানা চলবে। ২০(৩) ধারায় বলা হয়েছে, মামলা প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করতে হবে।

এদিকে মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুর মৃত্যুর পর ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুত করার জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ২৫ মার্চ ওই সংশোধনীর গেজেট প্রকাশ করা হয়।

সংশোধিত আইনে ২০ (৩ ক)-তে বলা হয়েছে, এই ধারার অধীন ধর্ষণ-সংক্রান্ত মামলার বিচারকাজ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের পর থেকে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে।

বর্তমানে সারা দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রয়েছে ১০১টি। গড়ে প্রতিটি ট্রাইব্যুনালে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মামলা বিচারাধীন। এসব ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের এই আইনের মামলার পাশাপাশি শিশু আদালত এবং মানব পাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকের দায়িত্বও পালন করতে হয়।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোয়াজ্জেম হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার তুলনায় ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা কম। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। শিগগির এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হবে।’

এদিকে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ১৩ মার্চ এক বিবৃতিতে বলেছে, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ার অন্যতম কারণ মামলার সংখ্যার সঙ্গে সংগতি রেখে পর্যাপ্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল না থাকা। বিবৃতিতে বিদ্যমান মামলার সংখ্যা বিবেচনায় আরও অন্তত ২০০টি ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানানো হয়।

জানতে চাইলে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে মামলা বিবেচনায় সারা দেশে পর্যাপ্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নেই। এসব ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের শিশু আদালত ও মানব পাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকের দায়িত্বও পালন করতে হয়। আবার ট্রাইব্যুনালগুলোয় পর্যাপ্তসংখ্যক কর্মচারীর পদও সৃজন করা হয়নি। ফলে দেশের ট্রাইব্যুনালগুলো প্রত্যাশামতো কাজ করতে পারছে না। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার দ্রুত বিচারের স্বার্থে পর্যাপ্তসংখ্যক ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত