সেলিম জাহান
আজ আমাদের বিজয় দিবস। তিপ্পান্ন বছর আগে ৯ মাসের একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয়ের সূর্যকে আমরা ছিনিয়ে এনেছিলাম। পেয়েছিলাম একটি স্বাধীন দেশ—বাংলাদেশ। বিজয় দিবস তাই বাংলাদেশের জন্য আনন্দের, উৎসবের। কিন্তু আমাদের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছে জীবন, ঝরেছে রক্ত, হারাতে হয়েছে সম্ভ্রম, ধ্বংস হয়েছে ভূখণ্ড। তাই বিজয় দিবসের পেছনের ইতিহাস দুঃখের, বেদনার, হারানোর এবং শোকেরও। কিন্তু শোক থেকেই তো মানুষ শক্তি পায়। তাই বিজয় দিবস পেছনে ফেরার নয়, বিজয় দিবস অগ্রসর হওয়ার; বিজয় দিবস শুধু পেছনে তাকানোর নয়, বিজয় দিবস সামনে তাকানোরও; বিজয় দিবস শুধু মুক্তির নয়, বিজয় দিবস আশারও। কারণ, মুক্তি তো আশা জাগায়, জোগায় সামনে তাকানোর অনুপ্রেরণা।
আজ বাংলাদেশ নতুন করে স্বপ্ন দেখছে একটি বৈষম্যহীন দেশের, একটি সমতার সমাজের।
১৯৭১-এর বিজয়ের পরে নতুন স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশ উচ্চারণ করেছিল সাম্যের, সামাজিক ন্যায্যতার এবং মানবিক মর্যাদার। তিপ্পান্ন বছর পরও বলতে হচ্ছে এসব মূল্যবোধের কথা। আগামী দিনের বৈষম্যহীন বাংলাদেশের ভিত্তিভূমি আসলে এগুলোই। সাম্য ও সমতার মূল কথা হচ্ছে, কোনো অসমতা ও বৈষম্য থাকবে না গোষ্ঠীতে-গোষ্ঠীতে, অঞ্চলে-অঞ্চলে, নারী-পুরুষে, যুবা-বৃদ্ধতে, নানান আর্থসামাজিক শ্রেণিতে। বৈষম্য এবং অসমতা থাকবে না শুধু ফলাফলে নয়, বৈষম্য এবং অসমতা থাকবে না সুযোগেও। তাই আয় কিংবা সম্পদের অসমতাই বড় কথা নয়, শেষ কথা তো নয়ই; সেই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে সুযোগের বৈষম্য। শিক্ষার সুযোগে, স্বাস্থ্যসেবা বা পুষ্টি প্রাপ্তিতে বৈষম্য রয়েছে নানান মাত্রিকতায়। বিজয়ের সবটুকু আনন্দ পাওয়ার জন্য শেষ করে দিতে হবে এসব অসমতা ও বৈষম্য। সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে যে মানুষের বস্তুগত প্রাপ্তিই শেষ কথা নয়, মানুষ চায় তার কণ্ঠের অধিকার, তার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, অংশগ্রহণের বলয় এবং যূথবদ্ধতার সুযোগ। সেসব ক্ষেত্রেও অসমতা ও বৈষম্য দূর করতে হবে বিজয়ের আনন্দকে সব মানুষের কাছে অর্থবহ করার জন্য। যাপিত জীবনের এসব গুণগত দিকের সমতা বড় প্রয়োজন মুক্তির আস্বাদের জন্য।
সাম্য ও সমতার দৃষ্টিকোণ থেকে যদি দেখি, তাহলে সামাজিক ন্যায্যতার মূল কেন্দ্র হলো সম-অধিকার ও ন্যায়বিচার। সম-অধিকারের আঙ্গিকে প্রাসঙ্গিক বিষয় হলো সমতা—অনপেক্ষ সমতা। সেই অধিকারের পরিপ্রেক্ষিতে সব মানুষই সমান, সেখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের ভিত্তিতে কোনো বিভাজন করা যাবে না। তেমনিভাবে আইনের চোখে দেশের সব নাগরিক সমান—ন্যায্য বিচার পাওয়ার অধিকার সব মানুষের আছে। সুতরাং সামাজিক ন্যায্যতার দৃষ্টিকোণে কোনো ধর্ম অন্য ধর্মকে দলন করতে পারে না, পীড়ন করতে পারে না; কোনো গোষ্ঠীই অন্য কোনো গোষ্ঠীকে অত্যাচার করতে পারে না, শোষণ করতে পারে না; বিচারব্যবস্থা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে না—না বিত্ত প্রভাবিত হয়ে, না রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা আদিষ্ট হয়ে।
মানবিক মর্যাদা হচ্ছে সমতাসম্পন্ন ও বৈষম্যহীন সমাজের আবশ্যকীয় শর্ত। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী-পুরুষ, বয়স, আর্থসামাজিক অবস্থাননির্বিশেষে সব মানুষের মর্যাদা বড় মূল্যবান, বড় পবিত্র। মানুষের সেই মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখা, তাকে সম্মান করা, তাকে রক্ষা করা ছাড়া বৈষম্যহীন সমাজ গড়া যাবে না। মানুষকে অসম্মান করা একটি সামন্ততান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ট্য। একটি স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোর লক্ষণ। গণতান্ত্রিক সমাজে এটা পরিত্যাজ্য।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে চলছে। আমাদের বিজয়কে সংহত করার, আমাদের মুক্তিকে দৃঢ় প্রতিষ্ঠা করার, আমাদের প্রত্যাশাকে সঠিক পথে চালনা করার একটি অপূর্ব সুযোগ আমরা পেয়েছি। এর জন্য প্রয়োজন হবে যূথবদ্ধতার, যেমনটি আমরা হয়েছিলাম আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়। এর জন্য দরকার হবে ঐক্যের, স্বাধীনতাকে সংহত করার জন্য; এর জন্য প্রয়োজন হবে স্থিতিশীলতার ও সহনশীলতার। বিভাজন এখানে কোনো সুফল বয়ে আনবে না, খণ্ডিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য অর্জিত হবে না এবং সহিংসতা, অসহনশীলতা ও পরমত-অসহিষ্ণুতা আমাদের ভুল পথে চালিত করবে মাত্র।
বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন আছে, প্রচেষ্টা আছে, কর্মকুশলতা আছে। সেই সঙ্গে আছে সাহস, সৃজনশীলতা ও সংনম্যতা। সুতরাং আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আমরা যা করেছি, আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামে আমরা যা পেরেছি, সেই শক্তি নিয়ে একটি বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণে আমরা ব্রতী হতে পারি। ২০২৪ সালের বিজয় দিবস সে পথে চলার জন্য আমাদের প্রেরণা জোগাক।
আজ আমাদের বিজয় দিবস। তিপ্পান্ন বছর আগে ৯ মাসের একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয়ের সূর্যকে আমরা ছিনিয়ে এনেছিলাম। পেয়েছিলাম একটি স্বাধীন দেশ—বাংলাদেশ। বিজয় দিবস তাই বাংলাদেশের জন্য আনন্দের, উৎসবের। কিন্তু আমাদের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছে জীবন, ঝরেছে রক্ত, হারাতে হয়েছে সম্ভ্রম, ধ্বংস হয়েছে ভূখণ্ড। তাই বিজয় দিবসের পেছনের ইতিহাস দুঃখের, বেদনার, হারানোর এবং শোকেরও। কিন্তু শোক থেকেই তো মানুষ শক্তি পায়। তাই বিজয় দিবস পেছনে ফেরার নয়, বিজয় দিবস অগ্রসর হওয়ার; বিজয় দিবস শুধু পেছনে তাকানোর নয়, বিজয় দিবস সামনে তাকানোরও; বিজয় দিবস শুধু মুক্তির নয়, বিজয় দিবস আশারও। কারণ, মুক্তি তো আশা জাগায়, জোগায় সামনে তাকানোর অনুপ্রেরণা।
আজ বাংলাদেশ নতুন করে স্বপ্ন দেখছে একটি বৈষম্যহীন দেশের, একটি সমতার সমাজের।
১৯৭১-এর বিজয়ের পরে নতুন স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশ উচ্চারণ করেছিল সাম্যের, সামাজিক ন্যায্যতার এবং মানবিক মর্যাদার। তিপ্পান্ন বছর পরও বলতে হচ্ছে এসব মূল্যবোধের কথা। আগামী দিনের বৈষম্যহীন বাংলাদেশের ভিত্তিভূমি আসলে এগুলোই। সাম্য ও সমতার মূল কথা হচ্ছে, কোনো অসমতা ও বৈষম্য থাকবে না গোষ্ঠীতে-গোষ্ঠীতে, অঞ্চলে-অঞ্চলে, নারী-পুরুষে, যুবা-বৃদ্ধতে, নানান আর্থসামাজিক শ্রেণিতে। বৈষম্য এবং অসমতা থাকবে না শুধু ফলাফলে নয়, বৈষম্য এবং অসমতা থাকবে না সুযোগেও। তাই আয় কিংবা সম্পদের অসমতাই বড় কথা নয়, শেষ কথা তো নয়ই; সেই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে সুযোগের বৈষম্য। শিক্ষার সুযোগে, স্বাস্থ্যসেবা বা পুষ্টি প্রাপ্তিতে বৈষম্য রয়েছে নানান মাত্রিকতায়। বিজয়ের সবটুকু আনন্দ পাওয়ার জন্য শেষ করে দিতে হবে এসব অসমতা ও বৈষম্য। সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে যে মানুষের বস্তুগত প্রাপ্তিই শেষ কথা নয়, মানুষ চায় তার কণ্ঠের অধিকার, তার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, অংশগ্রহণের বলয় এবং যূথবদ্ধতার সুযোগ। সেসব ক্ষেত্রেও অসমতা ও বৈষম্য দূর করতে হবে বিজয়ের আনন্দকে সব মানুষের কাছে অর্থবহ করার জন্য। যাপিত জীবনের এসব গুণগত দিকের সমতা বড় প্রয়োজন মুক্তির আস্বাদের জন্য।
সাম্য ও সমতার দৃষ্টিকোণ থেকে যদি দেখি, তাহলে সামাজিক ন্যায্যতার মূল কেন্দ্র হলো সম-অধিকার ও ন্যায়বিচার। সম-অধিকারের আঙ্গিকে প্রাসঙ্গিক বিষয় হলো সমতা—অনপেক্ষ সমতা। সেই অধিকারের পরিপ্রেক্ষিতে সব মানুষই সমান, সেখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের ভিত্তিতে কোনো বিভাজন করা যাবে না। তেমনিভাবে আইনের চোখে দেশের সব নাগরিক সমান—ন্যায্য বিচার পাওয়ার অধিকার সব মানুষের আছে। সুতরাং সামাজিক ন্যায্যতার দৃষ্টিকোণে কোনো ধর্ম অন্য ধর্মকে দলন করতে পারে না, পীড়ন করতে পারে না; কোনো গোষ্ঠীই অন্য কোনো গোষ্ঠীকে অত্যাচার করতে পারে না, শোষণ করতে পারে না; বিচারব্যবস্থা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে না—না বিত্ত প্রভাবিত হয়ে, না রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা আদিষ্ট হয়ে।
মানবিক মর্যাদা হচ্ছে সমতাসম্পন্ন ও বৈষম্যহীন সমাজের আবশ্যকীয় শর্ত। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী-পুরুষ, বয়স, আর্থসামাজিক অবস্থাননির্বিশেষে সব মানুষের মর্যাদা বড় মূল্যবান, বড় পবিত্র। মানুষের সেই মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখা, তাকে সম্মান করা, তাকে রক্ষা করা ছাড়া বৈষম্যহীন সমাজ গড়া যাবে না। মানুষকে অসম্মান করা একটি সামন্ততান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ট্য। একটি স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোর লক্ষণ। গণতান্ত্রিক সমাজে এটা পরিত্যাজ্য।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে চলছে। আমাদের বিজয়কে সংহত করার, আমাদের মুক্তিকে দৃঢ় প্রতিষ্ঠা করার, আমাদের প্রত্যাশাকে সঠিক পথে চালনা করার একটি অপূর্ব সুযোগ আমরা পেয়েছি। এর জন্য প্রয়োজন হবে যূথবদ্ধতার, যেমনটি আমরা হয়েছিলাম আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়। এর জন্য দরকার হবে ঐক্যের, স্বাধীনতাকে সংহত করার জন্য; এর জন্য প্রয়োজন হবে স্থিতিশীলতার ও সহনশীলতার। বিভাজন এখানে কোনো সুফল বয়ে আনবে না, খণ্ডিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য অর্জিত হবে না এবং সহিংসতা, অসহনশীলতা ও পরমত-অসহিষ্ণুতা আমাদের ভুল পথে চালিত করবে মাত্র।
বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন আছে, প্রচেষ্টা আছে, কর্মকুশলতা আছে। সেই সঙ্গে আছে সাহস, সৃজনশীলতা ও সংনম্যতা। সুতরাং আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আমরা যা করেছি, আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামে আমরা যা পেরেছি, সেই শক্তি নিয়ে একটি বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণে আমরা ব্রতী হতে পারি। ২০২৪ সালের বিজয় দিবস সে পথে চলার জন্য আমাদের প্রেরণা জোগাক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই হামলার পরিণতিতে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা ইতিমধ্যেই নাজুক একটি অঞ্চলের স্থিতিশীলতা আরও বিঘ্নিত করার ঝুঁকি তৈরি করেছে, যা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ। বাংলাদেশ সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা
১ ঘণ্টা আগেদূতাবাস বলছে, তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন স্থানে বৈধ ও অবৈধভাবে অবস্থান করছেন প্রায় আড়াই হাজার বাংলাদেশি। তাঁদের মধ্যে ২০০ শিক্ষার্থী, দূতাবাসের কূটনীতিক কর্মী, তাঁদের পরিবারসহ প্রায় ৪০ জন, চিকিৎসার জন্য সেখানে যাওয়া কিছু রোগীসহ প্রায় ৩০০ জনের নিরাপত্তা ও অন্যান্য ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি।
২ ঘণ্টা আগেবিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিইসি ও ইসি সচিবের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছি। আমরা জানি, বর্তমান কমিশন এ অভিযোগের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। আগের কমিশন যেহেতু সংবিধান লঙ্ঘন করে ফৌজদারি অপরাধ করেছে, এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা থানায় মামলা করা হয়েছে।’
২ ঘণ্টা আগেপ্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল ১০ বছরের বিষয়ে জামায়াত, এনসিপিসহ অধিকাংশ দল একমত হলেও বিএনপিসহ তিনটি দল দ্বিমত পোষণ করেছ বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। আজ রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের পঞ্চম দিনের মুলতবি শেষে
৩ ঘণ্টা আগে