আমানুর রহমান রনি, ঢাকা

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশবাসী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করলেও ঘটেছে তার উল্টো। রাজধানীতে গত ৬ মাসে প্রায় সব সূচকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহে পাঁচবার পুলিশের ওপর হামলা ও দুটি থানায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় একাধিক আসামি।
ঢাকার অনেক এলাকায় এখন সন্ধ্যার পর মানুষ বাসার বাইরে বের হতে ভয় পায়। এই অবস্থায় কোনো কোনো এলাকায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ে অতিষ্ঠ মানুষ নিজেরাই পাহারার ব্যবস্থা করেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, পুলিশ তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পুলিশের আইনি দায়িত্ব পালনে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ বদ্ধপরিকর।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য বলছে, ঢাকায় গত আগস্ট থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। আগস্টে রাজধানীর ৫০টি থানায় ৪টি ছিনতাইয়ের মামলা করা হলেও তা বেড়ে ডিসেম্বরে ৩৮টি হয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারির ১৫ দিনেই ছিনতাইয়ের মামলা করা হয় ৩১টি।
প্রকৃত ছিনতাই আরও বেশি। কারণ ছিনতাইয়ের শিকার বেশির ভাগ পথচারী মামলা করে না। আইনিপ্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় ও হয়রানির আশঙ্কায় তারা মামলা করতে চায় না।
গত আগস্টে ঢাকায় চুরির মামলা করা হয়েছিল ৪৩টি। মাসে মাসে বেড়ে ডিসেম্বরে তা ১২৬টি হয়। এভাবে ডাকাতি ও নারী নির্যাতনের ঘটনাও বেড়েছে।
গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর আদাবরে সুমন শেখ নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেয় সন্ত্রাসীরা। ছিনিয়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইল ফোন ও টাকাপয়সা। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত বৃহস্পতিবার সুমন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমি শ্রমিক, আমাকে কাজের কথা বলে ডেকে নেয় কয়েকজন। পরে অন্ধকারে নিয়ে আমার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যেতে চায়। আমি বাধা দিলে আমার হাতে কোপ দিয়ে মানিব্যাগ নিয়ে যায়।’
সুমনের জীবন রক্ষা পেলেও তিনি এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। হাত হারানোয় বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা তাঁর। কীভাবে পরিবার চালাবেন, সে চিন্তায় ডুবে থাকেন তিনি; আর কাঁদেন। এ ঘটনায় আদাবরের ছিনতাই চক্রের সদস্য টুন্ডা বাবু, রাজু, জনিসহ আরও কয়েকজন জড়িত। যাদের নামে মামলা করেছেন সুমন। তারা সবাই এখন পলাতক।
গত ডিসেম্বরে নবীনগর হাউজিংয়ের বাসিন্দা ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা মসজিদ এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছিনতাইয়ের ভয়ে এখন দামী মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ সঙ্গে রাখেন না তিনি। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় দারোয়ানের কাছে ওগুলো রেখে যান।
পুলিশের দাবি, রাজধানীর সীমান্তবর্তী থানাগুলোতে বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ, দারুসসালাম, কামরাঙ্গীরচর, রূপনগর, শাহআলী, পল্লবী, ডেমরা, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী ও তুরাগ এলাকায় বেশি অপরাধের ঘটনা ঘটছে। পুলিশ জানিয়েছে, এসব এলাকায় বস্তি থাকায় সেখানে মাদক ও চোরাচালানকেন্দ্রিক অপরাধীরা থাকে, তারা অপরাধ করে ডিএমপি এলাকা থেকে বের হয়ে গাজীপুর, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ চলে যায়। তাই তাদের সহজে ধরা যায় না।
মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চন্দ্রিমা উদ্যান, নবীনগর হাউজিং ও তুরাগ হাউজিং এলাকায় রাতে চরমোনাই পীরের অনুসারীরা পাহারা দেন। তাঁরা বাঁশ হাতে পাহারা বসান।
রাজধানীর এসব এলাকার অপরাধ দমনে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকায় পদায়ন পাওয়া নতুন পুলিশ। তারা অভিযানে গিয়ে প্রায়ই হামলার শিকার হচ্ছে।
এক সপ্তাহে দেশের পাঁচটি জায়গায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে উত্তরার দুটি থানায় ভাঙচুর করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। আটক ব্যক্তিদের ছাড়াতে এই হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে ও টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া কাশিমপুর কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, প্রতিটি ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
৫ ফেব্রুয়ারি মাদক চোরাকারবারি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করতে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধসংলগ্ন বোটঘাট বস্তিতে যায় পুলিশ। সেখানে পুলিশের ওপর হামলা চালায় অপরাধীরা। এতে চার পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। পরে ওই এলাকা থেকে যৌথ বাহিনী ২৩ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এ চক্রটি বেড়িবাঁধ এলাকায় ছিনতাই করত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান।
ওই ঘটনায় আহত মোহাম্মদপুর থানার এসআই শেখ আফজালুল হক দুদিন একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, মোহাম্মদপুর থানার ৯ জনের একটি দল হাসান নামের এক ছিনতাইকারী ও মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করতে বোটঘাট মসজিদসংলগ্ন বস্তিতে গেলে ৫০-৬০ জনের একটি দল তাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। হাসানকে আর গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘(পুলিশের ওপর হামলার) প্রতিটি ঘটনা আমরা তদন্ত করে দেখব। যারা এর জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশের ওপর হামলা রোধে মন্ত্রণালয় থেকে কী নির্দেশনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে আইজি সাহেবের নির্দেশনা একেবারে স্পষ্ট। গত ১৫ বছর যে পুলিশ ছিল, ওই আচরণ তো আপনারা আবার চাচ্ছেন না।’

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশবাসী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করলেও ঘটেছে তার উল্টো। রাজধানীতে গত ৬ মাসে প্রায় সব সূচকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহে পাঁচবার পুলিশের ওপর হামলা ও দুটি থানায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় একাধিক আসামি।
ঢাকার অনেক এলাকায় এখন সন্ধ্যার পর মানুষ বাসার বাইরে বের হতে ভয় পায়। এই অবস্থায় কোনো কোনো এলাকায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ে অতিষ্ঠ মানুষ নিজেরাই পাহারার ব্যবস্থা করেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, পুলিশ তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পুলিশের আইনি দায়িত্ব পালনে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ বদ্ধপরিকর।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য বলছে, ঢাকায় গত আগস্ট থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। আগস্টে রাজধানীর ৫০টি থানায় ৪টি ছিনতাইয়ের মামলা করা হলেও তা বেড়ে ডিসেম্বরে ৩৮টি হয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারির ১৫ দিনেই ছিনতাইয়ের মামলা করা হয় ৩১টি।
প্রকৃত ছিনতাই আরও বেশি। কারণ ছিনতাইয়ের শিকার বেশির ভাগ পথচারী মামলা করে না। আইনিপ্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় ও হয়রানির আশঙ্কায় তারা মামলা করতে চায় না।
গত আগস্টে ঢাকায় চুরির মামলা করা হয়েছিল ৪৩টি। মাসে মাসে বেড়ে ডিসেম্বরে তা ১২৬টি হয়। এভাবে ডাকাতি ও নারী নির্যাতনের ঘটনাও বেড়েছে।
গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর আদাবরে সুমন শেখ নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেয় সন্ত্রাসীরা। ছিনিয়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইল ফোন ও টাকাপয়সা। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত বৃহস্পতিবার সুমন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমি শ্রমিক, আমাকে কাজের কথা বলে ডেকে নেয় কয়েকজন। পরে অন্ধকারে নিয়ে আমার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যেতে চায়। আমি বাধা দিলে আমার হাতে কোপ দিয়ে মানিব্যাগ নিয়ে যায়।’
সুমনের জীবন রক্ষা পেলেও তিনি এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। হাত হারানোয় বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা তাঁর। কীভাবে পরিবার চালাবেন, সে চিন্তায় ডুবে থাকেন তিনি; আর কাঁদেন। এ ঘটনায় আদাবরের ছিনতাই চক্রের সদস্য টুন্ডা বাবু, রাজু, জনিসহ আরও কয়েকজন জড়িত। যাদের নামে মামলা করেছেন সুমন। তারা সবাই এখন পলাতক।
গত ডিসেম্বরে নবীনগর হাউজিংয়ের বাসিন্দা ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা মসজিদ এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছিনতাইয়ের ভয়ে এখন দামী মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ সঙ্গে রাখেন না তিনি। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় দারোয়ানের কাছে ওগুলো রেখে যান।
পুলিশের দাবি, রাজধানীর সীমান্তবর্তী থানাগুলোতে বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ, দারুসসালাম, কামরাঙ্গীরচর, রূপনগর, শাহআলী, পল্লবী, ডেমরা, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী ও তুরাগ এলাকায় বেশি অপরাধের ঘটনা ঘটছে। পুলিশ জানিয়েছে, এসব এলাকায় বস্তি থাকায় সেখানে মাদক ও চোরাচালানকেন্দ্রিক অপরাধীরা থাকে, তারা অপরাধ করে ডিএমপি এলাকা থেকে বের হয়ে গাজীপুর, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ চলে যায়। তাই তাদের সহজে ধরা যায় না।
মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চন্দ্রিমা উদ্যান, নবীনগর হাউজিং ও তুরাগ হাউজিং এলাকায় রাতে চরমোনাই পীরের অনুসারীরা পাহারা দেন। তাঁরা বাঁশ হাতে পাহারা বসান।
রাজধানীর এসব এলাকার অপরাধ দমনে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকায় পদায়ন পাওয়া নতুন পুলিশ। তারা অভিযানে গিয়ে প্রায়ই হামলার শিকার হচ্ছে।
এক সপ্তাহে দেশের পাঁচটি জায়গায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে উত্তরার দুটি থানায় ভাঙচুর করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। আটক ব্যক্তিদের ছাড়াতে এই হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে ও টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া কাশিমপুর কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, প্রতিটি ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
৫ ফেব্রুয়ারি মাদক চোরাকারবারি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করতে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধসংলগ্ন বোটঘাট বস্তিতে যায় পুলিশ। সেখানে পুলিশের ওপর হামলা চালায় অপরাধীরা। এতে চার পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। পরে ওই এলাকা থেকে যৌথ বাহিনী ২৩ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এ চক্রটি বেড়িবাঁধ এলাকায় ছিনতাই করত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান।
ওই ঘটনায় আহত মোহাম্মদপুর থানার এসআই শেখ আফজালুল হক দুদিন একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, মোহাম্মদপুর থানার ৯ জনের একটি দল হাসান নামের এক ছিনতাইকারী ও মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করতে বোটঘাট মসজিদসংলগ্ন বস্তিতে গেলে ৫০-৬০ জনের একটি দল তাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। হাসানকে আর গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘(পুলিশের ওপর হামলার) প্রতিটি ঘটনা আমরা তদন্ত করে দেখব। যারা এর জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশের ওপর হামলা রোধে মন্ত্রণালয় থেকে কী নির্দেশনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে আইজি সাহেবের নির্দেশনা একেবারে স্পষ্ট। গত ১৫ বছর যে পুলিশ ছিল, ওই আচরণ তো আপনারা আবার চাচ্ছেন না।’
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশবাসী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করলেও ঘটেছে তার উল্টো। রাজধানীতে গত ৬ মাসে প্রায় সব সূচকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহে পাঁচবার পুলিশের ওপর হামলা ও দুটি থানায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় একাধিক আসামি।
ঢাকার অনেক এলাকায় এখন সন্ধ্যার পর মানুষ বাসার বাইরে বের হতে ভয় পায়। এই অবস্থায় কোনো কোনো এলাকায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ে অতিষ্ঠ মানুষ নিজেরাই পাহারার ব্যবস্থা করেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, পুলিশ তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পুলিশের আইনি দায়িত্ব পালনে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ বদ্ধপরিকর।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য বলছে, ঢাকায় গত আগস্ট থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। আগস্টে রাজধানীর ৫০টি থানায় ৪টি ছিনতাইয়ের মামলা করা হলেও তা বেড়ে ডিসেম্বরে ৩৮টি হয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারির ১৫ দিনেই ছিনতাইয়ের মামলা করা হয় ৩১টি।
প্রকৃত ছিনতাই আরও বেশি। কারণ ছিনতাইয়ের শিকার বেশির ভাগ পথচারী মামলা করে না। আইনিপ্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় ও হয়রানির আশঙ্কায় তারা মামলা করতে চায় না।
গত আগস্টে ঢাকায় চুরির মামলা করা হয়েছিল ৪৩টি। মাসে মাসে বেড়ে ডিসেম্বরে তা ১২৬টি হয়। এভাবে ডাকাতি ও নারী নির্যাতনের ঘটনাও বেড়েছে।
গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর আদাবরে সুমন শেখ নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেয় সন্ত্রাসীরা। ছিনিয়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইল ফোন ও টাকাপয়সা। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত বৃহস্পতিবার সুমন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমি শ্রমিক, আমাকে কাজের কথা বলে ডেকে নেয় কয়েকজন। পরে অন্ধকারে নিয়ে আমার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যেতে চায়। আমি বাধা দিলে আমার হাতে কোপ দিয়ে মানিব্যাগ নিয়ে যায়।’
সুমনের জীবন রক্ষা পেলেও তিনি এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। হাত হারানোয় বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা তাঁর। কীভাবে পরিবার চালাবেন, সে চিন্তায় ডুবে থাকেন তিনি; আর কাঁদেন। এ ঘটনায় আদাবরের ছিনতাই চক্রের সদস্য টুন্ডা বাবু, রাজু, জনিসহ আরও কয়েকজন জড়িত। যাদের নামে মামলা করেছেন সুমন। তারা সবাই এখন পলাতক।
গত ডিসেম্বরে নবীনগর হাউজিংয়ের বাসিন্দা ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা মসজিদ এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছিনতাইয়ের ভয়ে এখন দামী মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ সঙ্গে রাখেন না তিনি। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় দারোয়ানের কাছে ওগুলো রেখে যান।
পুলিশের দাবি, রাজধানীর সীমান্তবর্তী থানাগুলোতে বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ, দারুসসালাম, কামরাঙ্গীরচর, রূপনগর, শাহআলী, পল্লবী, ডেমরা, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী ও তুরাগ এলাকায় বেশি অপরাধের ঘটনা ঘটছে। পুলিশ জানিয়েছে, এসব এলাকায় বস্তি থাকায় সেখানে মাদক ও চোরাচালানকেন্দ্রিক অপরাধীরা থাকে, তারা অপরাধ করে ডিএমপি এলাকা থেকে বের হয়ে গাজীপুর, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ চলে যায়। তাই তাদের সহজে ধরা যায় না।
মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চন্দ্রিমা উদ্যান, নবীনগর হাউজিং ও তুরাগ হাউজিং এলাকায় রাতে চরমোনাই পীরের অনুসারীরা পাহারা দেন। তাঁরা বাঁশ হাতে পাহারা বসান।
রাজধানীর এসব এলাকার অপরাধ দমনে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকায় পদায়ন পাওয়া নতুন পুলিশ। তারা অভিযানে গিয়ে প্রায়ই হামলার শিকার হচ্ছে।
এক সপ্তাহে দেশের পাঁচটি জায়গায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে উত্তরার দুটি থানায় ভাঙচুর করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। আটক ব্যক্তিদের ছাড়াতে এই হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে ও টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া কাশিমপুর কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, প্রতিটি ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
৫ ফেব্রুয়ারি মাদক চোরাকারবারি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করতে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধসংলগ্ন বোটঘাট বস্তিতে যায় পুলিশ। সেখানে পুলিশের ওপর হামলা চালায় অপরাধীরা। এতে চার পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। পরে ওই এলাকা থেকে যৌথ বাহিনী ২৩ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এ চক্রটি বেড়িবাঁধ এলাকায় ছিনতাই করত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান।
ওই ঘটনায় আহত মোহাম্মদপুর থানার এসআই শেখ আফজালুল হক দুদিন একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, মোহাম্মদপুর থানার ৯ জনের একটি দল হাসান নামের এক ছিনতাইকারী ও মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করতে বোটঘাট মসজিদসংলগ্ন বস্তিতে গেলে ৫০-৬০ জনের একটি দল তাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। হাসানকে আর গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘(পুলিশের ওপর হামলার) প্রতিটি ঘটনা আমরা তদন্ত করে দেখব। যারা এর জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশের ওপর হামলা রোধে মন্ত্রণালয় থেকে কী নির্দেশনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে আইজি সাহেবের নির্দেশনা একেবারে স্পষ্ট। গত ১৫ বছর যে পুলিশ ছিল, ওই আচরণ তো আপনারা আবার চাচ্ছেন না।’

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশবাসী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করলেও ঘটেছে তার উল্টো। রাজধানীতে গত ৬ মাসে প্রায় সব সূচকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহে পাঁচবার পুলিশের ওপর হামলা ও দুটি থানায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় একাধিক আসামি।
ঢাকার অনেক এলাকায় এখন সন্ধ্যার পর মানুষ বাসার বাইরে বের হতে ভয় পায়। এই অবস্থায় কোনো কোনো এলাকায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ে অতিষ্ঠ মানুষ নিজেরাই পাহারার ব্যবস্থা করেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, পুলিশ তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পুলিশের আইনি দায়িত্ব পালনে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ বদ্ধপরিকর।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য বলছে, ঢাকায় গত আগস্ট থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। আগস্টে রাজধানীর ৫০টি থানায় ৪টি ছিনতাইয়ের মামলা করা হলেও তা বেড়ে ডিসেম্বরে ৩৮টি হয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারির ১৫ দিনেই ছিনতাইয়ের মামলা করা হয় ৩১টি।
প্রকৃত ছিনতাই আরও বেশি। কারণ ছিনতাইয়ের শিকার বেশির ভাগ পথচারী মামলা করে না। আইনিপ্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় ও হয়রানির আশঙ্কায় তারা মামলা করতে চায় না।
গত আগস্টে ঢাকায় চুরির মামলা করা হয়েছিল ৪৩টি। মাসে মাসে বেড়ে ডিসেম্বরে তা ১২৬টি হয়। এভাবে ডাকাতি ও নারী নির্যাতনের ঘটনাও বেড়েছে।
গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর আদাবরে সুমন শেখ নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেয় সন্ত্রাসীরা। ছিনিয়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইল ফোন ও টাকাপয়সা। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত বৃহস্পতিবার সুমন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমি শ্রমিক, আমাকে কাজের কথা বলে ডেকে নেয় কয়েকজন। পরে অন্ধকারে নিয়ে আমার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যেতে চায়। আমি বাধা দিলে আমার হাতে কোপ দিয়ে মানিব্যাগ নিয়ে যায়।’
সুমনের জীবন রক্ষা পেলেও তিনি এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। হাত হারানোয় বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা তাঁর। কীভাবে পরিবার চালাবেন, সে চিন্তায় ডুবে থাকেন তিনি; আর কাঁদেন। এ ঘটনায় আদাবরের ছিনতাই চক্রের সদস্য টুন্ডা বাবু, রাজু, জনিসহ আরও কয়েকজন জড়িত। যাদের নামে মামলা করেছেন সুমন। তারা সবাই এখন পলাতক।
গত ডিসেম্বরে নবীনগর হাউজিংয়ের বাসিন্দা ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা মসজিদ এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছিনতাইয়ের ভয়ে এখন দামী মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ সঙ্গে রাখেন না তিনি। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় দারোয়ানের কাছে ওগুলো রেখে যান।
পুলিশের দাবি, রাজধানীর সীমান্তবর্তী থানাগুলোতে বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ, দারুসসালাম, কামরাঙ্গীরচর, রূপনগর, শাহআলী, পল্লবী, ডেমরা, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী ও তুরাগ এলাকায় বেশি অপরাধের ঘটনা ঘটছে। পুলিশ জানিয়েছে, এসব এলাকায় বস্তি থাকায় সেখানে মাদক ও চোরাচালানকেন্দ্রিক অপরাধীরা থাকে, তারা অপরাধ করে ডিএমপি এলাকা থেকে বের হয়ে গাজীপুর, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ চলে যায়। তাই তাদের সহজে ধরা যায় না।
মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চন্দ্রিমা উদ্যান, নবীনগর হাউজিং ও তুরাগ হাউজিং এলাকায় রাতে চরমোনাই পীরের অনুসারীরা পাহারা দেন। তাঁরা বাঁশ হাতে পাহারা বসান।
রাজধানীর এসব এলাকার অপরাধ দমনে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকায় পদায়ন পাওয়া নতুন পুলিশ। তারা অভিযানে গিয়ে প্রায়ই হামলার শিকার হচ্ছে।
এক সপ্তাহে দেশের পাঁচটি জায়গায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে উত্তরার দুটি থানায় ভাঙচুর করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। আটক ব্যক্তিদের ছাড়াতে এই হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে ও টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া কাশিমপুর কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, প্রতিটি ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
৫ ফেব্রুয়ারি মাদক চোরাকারবারি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করতে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধসংলগ্ন বোটঘাট বস্তিতে যায় পুলিশ। সেখানে পুলিশের ওপর হামলা চালায় অপরাধীরা। এতে চার পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। পরে ওই এলাকা থেকে যৌথ বাহিনী ২৩ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এ চক্রটি বেড়িবাঁধ এলাকায় ছিনতাই করত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান।
ওই ঘটনায় আহত মোহাম্মদপুর থানার এসআই শেখ আফজালুল হক দুদিন একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, মোহাম্মদপুর থানার ৯ জনের একটি দল হাসান নামের এক ছিনতাইকারী ও মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করতে বোটঘাট মসজিদসংলগ্ন বস্তিতে গেলে ৫০-৬০ জনের একটি দল তাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। হাসানকে আর গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘(পুলিশের ওপর হামলার) প্রতিটি ঘটনা আমরা তদন্ত করে দেখব। যারা এর জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশের ওপর হামলা রোধে মন্ত্রণালয় থেকে কী নির্দেশনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে আইজি সাহেবের নির্দেশনা একেবারে স্পষ্ট। গত ১৫ বছর যে পুলিশ ছিল, ওই আচরণ তো আপনারা আবার চাচ্ছেন না।’

জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি।
৫ ঘণ্টা আগে
সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
৫ ঘণ্টা আগে
নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত।
৫ ঘণ্টা আগেরেজা করিম ও তানিম আহমেদ, ঢাকা

জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি। দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে নৈরাজ্য। যানবাহনে একের পর এক আগুন দেওয়া হচ্ছে। ধর্মীয় উপাসনালয়, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো লক্ষ্য করে ছোড়া হচ্ছে ককটেল।
সরকারঘোষিত সময় অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন নির্বাচনী প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। পাশাপাশি জুলাই জাতীয় সনদ ও গণভোট নিয়ে নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মাঠে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আট দল। এমন একসময়ে রাজধানীসহ দেশজুড়ে নৈরাজ্য ও অস্থিরতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, নানা কারণে সে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। জুলাই জাতীয় সনদ ও গণভোট প্রশ্নে মতভিন্নতায় দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েনের সুযোগ নিচ্ছে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে আসতে পারছে না। দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ায় তাদের মধ্যে বিভাজনটা সৃষ্টি হয়েছে এবং মতভেদ বেড়েছে। সময়ের সঙ্গে যা সংকটে পরিণত হয়েছে। এর দায় তাদের নিতে হবে।
আগামীকাল ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এদিনকে ঘিরে ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। দলটির বিদেশে অবস্থানকারী নেতারা একের পর এক হুমকি দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। গত কয়েক দিনে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঢাকা, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি স্থানে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গতকালও রাজধানীর সূত্রাপুরে একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে নির্বাচনী গণসংযোগকালে গুলিবিদ্ধ হন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। একই সময়ে সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। গত সোমবার দিনদুপুরে রাজধানীতে গুলি করে মারা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে। এ দুই ঘটনা দীর্ঘদিন পর আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামীতে আরও বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব ঘটনায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে, প্রশাসনে দেখা দিয়েছে গভীর উদ্বেগ।
এমন অবস্থার জন্য দলগুলোর ব্যর্থতার পাশাপাশি সরকারের ভূমিকাকেও দায়ী করেছেন অনেক বিশ্লেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের চেয়ারম্যান শারমীন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন শক্তি এখানে কাজ করছে। যারা নির্বাচনকে সঠিক সময়ে হতে দিতে চায় না বা সুষ্ঠু নির্বাচনে যাদের রাজনৈতিক পরিকল্পনায় অসুবিধা হতে পারে, তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারগুলো আছে।
বিরাজমান পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনের কারণ নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও। রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে না দেশের প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াত। দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটার সঙ্গে বর্তমানে সৃষ্ট যে অসন্তোষ বা অশান্তি, তার কোনো সম্পর্ক নেই বলে আমরা মনে করি।’ তিনি বলেন, ‘এখানে নির্বাচনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না, নানাভাবে দেশে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তারাই এ বিশৃঙ্খলা করছে।’
চলমান নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য অবশ্য সরাসরি সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছে জামায়াতে ইসলামী। জানতে চাইলে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘এটা তো রাজনৈতিক দল বা নেতাদের ব্যর্থতা নয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের, তাদের এত বাহিনী কী করে, গোয়েন্দা বাহিনী কী করে? তাদের কাজ তো এগুলো দমন করা। এ ব্যর্থতা হলো সরকারের, সরকারের প্রশাসনের।’
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সরকার ও রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতাকে সমানভাবে দায়ী করছে জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি)। বিভিন্ন ইস্যুতে দলগুলোর অনৈক্যে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ করে দিচ্ছে বলে মনে করেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন। একই সঙ্গে সরকারের ভূমিকাকেও দায়ী করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ ও আগুন জ্বালিয়ে ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে এবং জনমনে ভীতি ছড়াচ্ছে। সরকার ও প্রশাসন নির্বিকার বলেই এসব ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও ব্যর্থতা রয়েছে। এ ছাড়া আমরা দেখেছি, বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অনেক অপরাধীই জামিন পেয়ে গেছে। তারা কারাগার থেকে বের হয়ে এখন দেশকে অস্থিতিশীল এবং পুরোনো বন্দোবস্তে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।’
রাজধানীতে বাসে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে গতকাল সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখানে গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা নেই। এগুলো যেন আর না হয়, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এগুলো যারা করছে তারা দুষ্কৃতকারী। এসব দুষ্কৃতকারীকে প্রতিহত করা শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ নয়, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। গতকাল মঞ্চের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গণভোটের সময় প্রশ্নে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থান এবং সরকারের দায়সারা আচরণের ফলে যে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ সুযোগে পরাজিত মাফিয়া গোষ্ঠী অস্থিরতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হুমকির মুখে পড়েছে। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।’

জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি। দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে নৈরাজ্য। যানবাহনে একের পর এক আগুন দেওয়া হচ্ছে। ধর্মীয় উপাসনালয়, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো লক্ষ্য করে ছোড়া হচ্ছে ককটেল।
সরকারঘোষিত সময় অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন নির্বাচনী প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। পাশাপাশি জুলাই জাতীয় সনদ ও গণভোট নিয়ে নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মাঠে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আট দল। এমন একসময়ে রাজধানীসহ দেশজুড়ে নৈরাজ্য ও অস্থিরতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, নানা কারণে সে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। জুলাই জাতীয় সনদ ও গণভোট প্রশ্নে মতভিন্নতায় দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েনের সুযোগ নিচ্ছে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে আসতে পারছে না। দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ায় তাদের মধ্যে বিভাজনটা সৃষ্টি হয়েছে এবং মতভেদ বেড়েছে। সময়ের সঙ্গে যা সংকটে পরিণত হয়েছে। এর দায় তাদের নিতে হবে।
আগামীকাল ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এদিনকে ঘিরে ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। দলটির বিদেশে অবস্থানকারী নেতারা একের পর এক হুমকি দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। গত কয়েক দিনে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঢাকা, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি স্থানে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গতকালও রাজধানীর সূত্রাপুরে একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে নির্বাচনী গণসংযোগকালে গুলিবিদ্ধ হন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। একই সময়ে সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। গত সোমবার দিনদুপুরে রাজধানীতে গুলি করে মারা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে। এ দুই ঘটনা দীর্ঘদিন পর আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামীতে আরও বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব ঘটনায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে, প্রশাসনে দেখা দিয়েছে গভীর উদ্বেগ।
এমন অবস্থার জন্য দলগুলোর ব্যর্থতার পাশাপাশি সরকারের ভূমিকাকেও দায়ী করেছেন অনেক বিশ্লেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের চেয়ারম্যান শারমীন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন শক্তি এখানে কাজ করছে। যারা নির্বাচনকে সঠিক সময়ে হতে দিতে চায় না বা সুষ্ঠু নির্বাচনে যাদের রাজনৈতিক পরিকল্পনায় অসুবিধা হতে পারে, তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারগুলো আছে।
বিরাজমান পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনের কারণ নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও। রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে না দেশের প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াত। দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটার সঙ্গে বর্তমানে সৃষ্ট যে অসন্তোষ বা অশান্তি, তার কোনো সম্পর্ক নেই বলে আমরা মনে করি।’ তিনি বলেন, ‘এখানে নির্বাচনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না, নানাভাবে দেশে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তারাই এ বিশৃঙ্খলা করছে।’
চলমান নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য অবশ্য সরাসরি সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছে জামায়াতে ইসলামী। জানতে চাইলে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘এটা তো রাজনৈতিক দল বা নেতাদের ব্যর্থতা নয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের, তাদের এত বাহিনী কী করে, গোয়েন্দা বাহিনী কী করে? তাদের কাজ তো এগুলো দমন করা। এ ব্যর্থতা হলো সরকারের, সরকারের প্রশাসনের।’
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সরকার ও রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতাকে সমানভাবে দায়ী করছে জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি)। বিভিন্ন ইস্যুতে দলগুলোর অনৈক্যে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ করে দিচ্ছে বলে মনে করেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন। একই সঙ্গে সরকারের ভূমিকাকেও দায়ী করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ ও আগুন জ্বালিয়ে ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে এবং জনমনে ভীতি ছড়াচ্ছে। সরকার ও প্রশাসন নির্বিকার বলেই এসব ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও ব্যর্থতা রয়েছে। এ ছাড়া আমরা দেখেছি, বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অনেক অপরাধীই জামিন পেয়ে গেছে। তারা কারাগার থেকে বের হয়ে এখন দেশকে অস্থিতিশীল এবং পুরোনো বন্দোবস্তে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।’
রাজধানীতে বাসে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে গতকাল সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখানে গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা নেই। এগুলো যেন আর না হয়, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এগুলো যারা করছে তারা দুষ্কৃতকারী। এসব দুষ্কৃতকারীকে প্রতিহত করা শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ নয়, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। গতকাল মঞ্চের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গণভোটের সময় প্রশ্নে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থান এবং সরকারের দায়সারা আচরণের ফলে যে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ সুযোগে পরাজিত মাফিয়া গোষ্ঠী অস্থিরতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হুমকির মুখে পড়েছে। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।’

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশবাসী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করলেও ঘটেছে তার উল্টো। রাজধানীতে গত ৬ মাসে প্রায় সব সূচকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহে পাঁচবার পুলিশের ওপর হামলা ও দুটি থানায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় একাধিক আসামি।
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
৫ ঘণ্টা আগে
নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত।
৫ ঘণ্টা আগেইফতেখারুজ্জামান

সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
তবে এটুকু অনুমান করা অযৌক্তিক হবে না যে এর পেছনে মূলত পতিত কর্তৃত্ববাদী শক্তি, যারা অভূতপূর্ব জুলাই আন্দোলনের ফলে তাদের পরাজয় মেনে নিতে পারছে না। তাদের কোনো অনুশোচনা নেই, যা তাদের কাছে আশা করাও অবাস্তব। বরং তাদের আছে চোরতন্ত্রের ফলে অর্জিত সীমাহীন অর্থ ও পেশিশক্তি, যার ষড়যন্ত্রমূলক ব্যবহার করে তারা দেশে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করতে চাইছে।
তাদের রেখে যাওয়া জঞ্জাল অপসারণ করে রাষ্ট্র সংস্কার ও গণতন্ত্রে উত্তরণের অপরিহার্য পদক্ষেপ হিসেবে ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করার লক্ষ্যে দেশে ও দেশের বাইরে থেকে সমন্বিত কৌশলে অপতৎপরতায় লিপ্ত এই স্বার্থান্বেষী মহল। এটি উপলব্ধি করা যেমন কোনো রকেট বিজ্ঞানের বিষয় নয়, তেমনি শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সরকার ও উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হাতে এদের নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করি। যদি এই সক্ষমতার প্রয়োগ অ্যাডহকভিত্তিক না হয়ে সুচিন্তিত ও বহুমাত্রিক কৌশলনির্ভর হয়।
একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে বিজয়ী ও বর্তমানে সক্রিয় রাজনৈতিক দলসমূহের সবচেয়ে প্রভাবশালী অংশের মধ্যে চলমান অনৈক্য, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও অসহিষ্ণুতা যেন পতিত অপশক্তির জন্য অধিকতর সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি না করে, তা মনে রাখা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য অপরিহার্য।
লেখক: নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি

সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
তবে এটুকু অনুমান করা অযৌক্তিক হবে না যে এর পেছনে মূলত পতিত কর্তৃত্ববাদী শক্তি, যারা অভূতপূর্ব জুলাই আন্দোলনের ফলে তাদের পরাজয় মেনে নিতে পারছে না। তাদের কোনো অনুশোচনা নেই, যা তাদের কাছে আশা করাও অবাস্তব। বরং তাদের আছে চোরতন্ত্রের ফলে অর্জিত সীমাহীন অর্থ ও পেশিশক্তি, যার ষড়যন্ত্রমূলক ব্যবহার করে তারা দেশে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করতে চাইছে।
তাদের রেখে যাওয়া জঞ্জাল অপসারণ করে রাষ্ট্র সংস্কার ও গণতন্ত্রে উত্তরণের অপরিহার্য পদক্ষেপ হিসেবে ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করার লক্ষ্যে দেশে ও দেশের বাইরে থেকে সমন্বিত কৌশলে অপতৎপরতায় লিপ্ত এই স্বার্থান্বেষী মহল। এটি উপলব্ধি করা যেমন কোনো রকেট বিজ্ঞানের বিষয় নয়, তেমনি শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সরকার ও উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হাতে এদের নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করি। যদি এই সক্ষমতার প্রয়োগ অ্যাডহকভিত্তিক না হয়ে সুচিন্তিত ও বহুমাত্রিক কৌশলনির্ভর হয়।
একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে বিজয়ী ও বর্তমানে সক্রিয় রাজনৈতিক দলসমূহের সবচেয়ে প্রভাবশালী অংশের মধ্যে চলমান অনৈক্য, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও অসহিষ্ণুতা যেন পতিত অপশক্তির জন্য অধিকতর সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি না করে, তা মনে রাখা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য অপরিহার্য।
লেখক: নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশবাসী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করলেও ঘটেছে তার উল্টো। রাজধানীতে গত ৬ মাসে প্রায় সব সূচকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহে পাঁচবার পুলিশের ওপর হামলা ও দুটি থানায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় একাধিক আসামি।
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি।
৫ ঘণ্টা আগে
দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
৫ ঘণ্টা আগে
নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত।
৫ ঘণ্টা আগেরাশেদা কে চৌধূরী

দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
কিন্তু সেই আশার বিপরীতে এখন গোটা দেশে ‘ঘোলাটে’ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা। প্রতিনিয়ত অবনতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। এসব অপতৎপরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। আর এ পরিস্থিতি কেউ কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাঙ্গনগুলোয় উদ্বেগজনকভাবে অস্থিরতা বিরাজ করছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নানা ধরনের উল্টাপাল্টা গোষ্ঠীর উদয় হয়েছে। এগুলো চিহ্নিত করা বা নিরসনের দায়িত্ব তো নাগরিকের না, রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রের উচিত এসব বিষয়ে দৃঢ়ভাবে দায়িত্ব নেওয়া; কারণ, অরাজকতার ভার জনগণের নয়, সরকারকেই বহন করতে হবে। তবে এ দায় শুধু সরকারের ওপর চাপিয়ে দিলেও হবে না। আমরা নাগরিকেরাও এই অবস্থার জন্য কমবেশি দায়ী। কখনো সচেতনভাবে, কখনো অবচেতনে আমরা অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে নীরব থেকেছি।
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটেও রাজনীতির মাঠে সমঝোতার দেখা মিলছে না। রাজনৈতিক দলগুলোকেও ভাবতে হবে, জনগণের প্রত্যাশা কী? জনগণ শান্তি চায়, স্থিতিশীলতা চায়। তাই দলগুলোকে কমপক্ষে একটি ন্যূনতম ঐক্যের জায়গায় আসতে হবে। মতবিরোধ থাকবে, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু সমঝোতা ছাড়া কোনো সমাজে শান্তি আসে না।
আজকের এই অস্থিরতার ফলে বিনিয়োগ কমছে, কর্মসংস্থান হ্রাস পাচ্ছে, দারিদ্র্য বাড়ছে। রাজনৈতিক নেতাদের উচিত জনগণের স্বার্থকে কেন্দ্র করে দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া।
লেখক: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা

দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
কিন্তু সেই আশার বিপরীতে এখন গোটা দেশে ‘ঘোলাটে’ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা। প্রতিনিয়ত অবনতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। এসব অপতৎপরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। আর এ পরিস্থিতি কেউ কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাঙ্গনগুলোয় উদ্বেগজনকভাবে অস্থিরতা বিরাজ করছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নানা ধরনের উল্টাপাল্টা গোষ্ঠীর উদয় হয়েছে। এগুলো চিহ্নিত করা বা নিরসনের দায়িত্ব তো নাগরিকের না, রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রের উচিত এসব বিষয়ে দৃঢ়ভাবে দায়িত্ব নেওয়া; কারণ, অরাজকতার ভার জনগণের নয়, সরকারকেই বহন করতে হবে। তবে এ দায় শুধু সরকারের ওপর চাপিয়ে দিলেও হবে না। আমরা নাগরিকেরাও এই অবস্থার জন্য কমবেশি দায়ী। কখনো সচেতনভাবে, কখনো অবচেতনে আমরা অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে নীরব থেকেছি।
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটেও রাজনীতির মাঠে সমঝোতার দেখা মিলছে না। রাজনৈতিক দলগুলোকেও ভাবতে হবে, জনগণের প্রত্যাশা কী? জনগণ শান্তি চায়, স্থিতিশীলতা চায়। তাই দলগুলোকে কমপক্ষে একটি ন্যূনতম ঐক্যের জায়গায় আসতে হবে। মতবিরোধ থাকবে, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু সমঝোতা ছাড়া কোনো সমাজে শান্তি আসে না।
আজকের এই অস্থিরতার ফলে বিনিয়োগ কমছে, কর্মসংস্থান হ্রাস পাচ্ছে, দারিদ্র্য বাড়ছে। রাজনৈতিক নেতাদের উচিত জনগণের স্বার্থকে কেন্দ্র করে দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া।
লেখক: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশবাসী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করলেও ঘটেছে তার উল্টো। রাজধানীতে গত ৬ মাসে প্রায় সব সূচকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহে পাঁচবার পুলিশের ওপর হামলা ও দুটি থানায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় একাধিক আসামি।
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি।
৫ ঘণ্টা আগে
সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত।
৫ ঘণ্টা আগেফরহাদ মজহার

নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত। গণ-অভ্যুত্থানের পরে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় যদি আমরা যেতাম, তাহলে সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে জনগণকে আমরা যুক্ত করে নিতে পারতাম। কিন্তু জনগণকে আমরা বাংলাদেশ নতুনভাবে গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত করিনি। বিপরীতে আমরা যুক্ত লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে তথাকথিত ‘জাতীয় ঐকমত্য’ স্থাপনের চেষ্টা করছি।
গণ-অভ্যুত্থান যৌক্তিকভাবে যেখানে পৌঁছানোর কথা, আমরা তাকে সেখানে যেতে দিইনি। না দেওয়ার কারণে বিদ্যমান সংবিধানের অধীনে আমরা সরকারটা গঠন করেছি। বিদ্যমান সংবিধানে ‘উপদেষ্টা’ বলে কোনো কিছু নেই। ফলে এই সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শুরুতেই। অবৈধ সরকার সমঝোতা করতে বসেছে লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির সঙ্গে। ফলে গলদ তো এই জায়গাতেই। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য আমরা এখন নির্বাচনের ধুয়া তুলছি, ভুলে যাচ্ছি, আমরা একটি গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতির মধ্যে আছি।
উপদেষ্টা সরকার শেখ হাসিনার সংবিধান রক্ষা করতে শপথ নিয়েছে। তাহলে কী করে আবার বিভিন্ন রকম কমিশন (জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ ১১টি সংস্কার কমিশন) করে? সংবিধান সংস্কারের কোনো এখতিয়ার তো সরকারের নেই। এই প্রকট স্ববিরোধিতাই হলো এখনকার অস্থিতিশীলতার প্রধান কারণ। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোকে একতরফা দোষারোপ করা যাবে না। প্রধান দোষ কিন্তু সরকারের।
বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করতে হলে বর্তমান সংবিধান অবশ্যই ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে বলতে হবে—আমরা সাংবিধানিকভাবে আমাদের সংকট সমাধান করার চেষ্টা করেছি এবং আমরা দেখেছি, ঐকমত্য কমিশনের চেষ্টা এবং প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দলগুলো কোনো অর্থপূর্ণ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। ফলে আমাদের সাংবিধানিকভাবে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের চেষ্টাটা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আমরা এখন বর্তমান সংবিধানকে বাতিল ঘোষণা করছি এবং এখন থেকে আমরা আমরা আমাদের পূর্ণ গাঠনিক ক্ষমতা (Constituent) সম্পন্ন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলে ঘোষণা করছি। আগামী নির্বাচনটা হবে গণপরিষদ নির্বাচন এবং গণপরিষদে বাংলাদেশের জন্য নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হবে।
তাহলে সংকটটা কী আসলে? বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন এবং গণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ কায়েম। এটাই তো সংকট? তো গঠনতন্ত্র (Constitution) তৈরি করতে দেবেন না?
বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নেই। সবই লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধি। কেন? বলা হয়, নির্বাচন করতে ২০-৩০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এ টাকা দিয়ে কি কোনো সাধারণ লোকের পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব? লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধি ছাড়া নির্বাচনের কি কারও সামর্থ্য আছে? তাই নির্বাচনের কথা বলা অবান্তর ও অবাস্তব।
লেখক: কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক

নৈরাজ্যের মূল সূত্রপাত হয়েছে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট। সেদিন যদি গণ-অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য একটা কনস্টিটিউশনাল কাউন্টার রেভল্যুশন, মানে সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব না হতো, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুণগত রূপান্তর ঘটত। গণ-অভ্যুত্থানের পরে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় যদি আমরা যেতাম, তাহলে সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে জনগণকে আমরা যুক্ত করে নিতে পারতাম। কিন্তু জনগণকে আমরা বাংলাদেশ নতুনভাবে গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত করিনি। বিপরীতে আমরা যুক্ত লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে তথাকথিত ‘জাতীয় ঐকমত্য’ স্থাপনের চেষ্টা করছি।
গণ-অভ্যুত্থান যৌক্তিকভাবে যেখানে পৌঁছানোর কথা, আমরা তাকে সেখানে যেতে দিইনি। না দেওয়ার কারণে বিদ্যমান সংবিধানের অধীনে আমরা সরকারটা গঠন করেছি। বিদ্যমান সংবিধানে ‘উপদেষ্টা’ বলে কোনো কিছু নেই। ফলে এই সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শুরুতেই। অবৈধ সরকার সমঝোতা করতে বসেছে লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির সঙ্গে। ফলে গলদ তো এই জায়গাতেই। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য আমরা এখন নির্বাচনের ধুয়া তুলছি, ভুলে যাচ্ছি, আমরা একটি গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতির মধ্যে আছি।
উপদেষ্টা সরকার শেখ হাসিনার সংবিধান রক্ষা করতে শপথ নিয়েছে। তাহলে কী করে আবার বিভিন্ন রকম কমিশন (জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ ১১টি সংস্কার কমিশন) করে? সংবিধান সংস্কারের কোনো এখতিয়ার তো সরকারের নেই। এই প্রকট স্ববিরোধিতাই হলো এখনকার অস্থিতিশীলতার প্রধান কারণ। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোকে একতরফা দোষারোপ করা যাবে না। প্রধান দোষ কিন্তু সরকারের।
বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করতে হলে বর্তমান সংবিধান অবশ্যই ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে বলতে হবে—আমরা সাংবিধানিকভাবে আমাদের সংকট সমাধান করার চেষ্টা করেছি এবং আমরা দেখেছি, ঐকমত্য কমিশনের চেষ্টা এবং প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দলগুলো কোনো অর্থপূর্ণ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। ফলে আমাদের সাংবিধানিকভাবে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের চেষ্টাটা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আমরা এখন বর্তমান সংবিধানকে বাতিল ঘোষণা করছি এবং এখন থেকে আমরা আমরা আমাদের পূর্ণ গাঠনিক ক্ষমতা (Constituent) সম্পন্ন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলে ঘোষণা করছি। আগামী নির্বাচনটা হবে গণপরিষদ নির্বাচন এবং গণপরিষদে বাংলাদেশের জন্য নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হবে।
তাহলে সংকটটা কী আসলে? বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন এবং গণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ কায়েম। এটাই তো সংকট? তো গঠনতন্ত্র (Constitution) তৈরি করতে দেবেন না?
বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নেই। সবই লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধি। কেন? বলা হয়, নির্বাচন করতে ২০-৩০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এ টাকা দিয়ে কি কোনো সাধারণ লোকের পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব? লুটেরা-মাফিয়া শ্রেণির প্রতিনিধি ছাড়া নির্বাচনের কি কারও সামর্থ্য আছে? তাই নির্বাচনের কথা বলা অবান্তর ও অবাস্তব।
লেখক: কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশবাসী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করলেও ঘটেছে তার উল্টো। রাজধানীতে গত ৬ মাসে প্রায় সব সূচকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহে পাঁচবার পুলিশের ওপর হামলা ও দুটি থানায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় একাধিক আসামি।
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জুলাই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তাতে এখন ফাটল ধরেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিপরীত মেরুতে চলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে সমমনা দলগুলোও। এমন বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জুলাইয়ের পরাজিত শক্তি।
৫ ঘণ্টা আগে
সাম্প্রতিক সহিংস কর্মকাণ্ড কেন হচ্ছে, এসবের দায় কার এবং এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না হিমশৈলের চূড়ামাত্র? এসব প্রশ্নের জবাব বের করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত। দীর্ঘ এক শাসনের অবসানের পর মানুষ ভেবেছিল, এবার হয়তো দেশের রাজনীতি ও সমাজে যুক্তি, সহনশীলতা ও ‘গুড সেন্স’ ফিরে আসবে।
৫ ঘণ্টা আগে