Ajker Patrika

কপোতাক্ষ ও যমুনায় ভাঙন

  • জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে যমুনায় ৬ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র ভাঙন শুরু।
  • তালার ডুমুরিয়া ও শাহাজাদপুর অঞ্চলে কপোতাক্ষ নদের চার স্থানে বেড়িবাঁধে ভাঙন।
তালা প্রতিনিধিইসলামপুর প্রতিনিধি
কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া শাহাজাদপুর অঞ্চল (বাঁয়ে) এবং যমুনায় ৬ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। সম্প্রতি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের বাহাদুরাবাদ নৌ থানাসংলগ্ন এলাকায়।	ছবি: আজকের পত্রিকা
কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া শাহাজাদপুর অঞ্চল (বাঁয়ে) এবং যমুনায় ৬ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। সম্প্রতি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের বাহাদুরাবাদ নৌ থানাসংলগ্ন এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় অসময়ে যমুনা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তীব্র ভাঙনে প্রতিনিয়ত নিঃস্ব হচ্ছেন শত শত মানুষ। এ ছাড়া ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আগামী বর্ষার আগেই কয়েকটি গ্রাম নদীগর্ভে চলে যাবে বলে আশঙ্কা যমুনা পারের বাসিন্দাদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে যমুনা নদী। সম্প্রতি নদীর পূর্বপাড়ে বাহাদুরাবাদ নৌ থানাসংলগ্ন ইউনিয়নের খোলাবাড়ী এলাকা থেকে বড়খাল পর্যন্ত অন্তত ৬ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে ভাঙনঝুঁকিতে পড়েছে চরমাগুরীহাট, কিশোরখোলা মোড়, হুদার মোড়, মধুরভাঙ্গা গ্রাম, হাজারী গ্রাম, চরডাকাতিয়াপাড়া, খানপাড়া, মাঝিপাড়া, চরডাকাতিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেলোয়ার হোসেন উচ্চবিদ্যালয়, টাকিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্র্যাক স্কুল, এলজিইডি সড়ক, খানপাড়া জামে মসজিদ, খানপাড়া ঈদগাহ, নূরানি কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসা এবং কয়েকটি মসজিদসহ বিভিন্ন গ্রামীণ অবকাঠামো।

যমুনার ভাঙনে নিঃস্ব হওয়া আব্দুল আওয়াল, আলম মিয়া, মনি খাতুন, রেহানা, ইয়াসমিন বেগম এবং আলাল মিয়া বলেন, ‘প্রতিবছর এই অঞ্চলের মানুষ নদীতে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়। মাথা গোঁজার ঠাঁই জোটে অন্যের বাড়ির উঠানে। এরপর খেতখামারে দিনমজুরি করে, ঢাকায় রিকশা চালিয়ে, গার্মেন্টসে চাকরি করে সংসার চালাতে হয়। কয়েক বছর টাকা জমিয়ে নতুন করে নির্মাণ করতে হয় বসতভিটে। কিন্তু সেই নতুন ভিটাগুলোও দু-তিন বছর পর আবারও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এভাবে একটি পরিবার কয়েকবার ভাঙনের শিকার হন।’

এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত ভাঙন এলাকার খোঁজখবর রাখছি। ভাঙনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।’ জামালপুর জেলা পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান বলেন, কয়েক বছর ধরে ওই এলাকায় নদী ভাঙছে। সাড়ে ৫ কিলোমিটার এলাকার ভাঙন রোধে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিল করা হয়েছে, শিগগিরই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।

এদিকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া শাহাজাদপুর অঞ্চলে কপোতাক্ষ নদের চারটি স্থানে বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জমির পাকা ধান ঘরে তোলার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত অতিবাহিত করছেন তাঁরা। খবর পেয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কপোতাক্ষ নদের ডুমুরিয়া শাহাজাদপুর অংশে ডুমুরিয়ার জুলাপাড়া, শফিকুলের ঘেরের মাথা, গোওলা খেয়াঘাটসংলগ্ন ও শাহাজাদপুরের পুলিকপাড়া অঞ্চলে বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।

এর মধ্যে দুটি স্থান দিয়ে জোয়ারের সময় ফসলের জমিতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

জানতে চাইলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা এস এম লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘কপোতাক্ষ নদের তালার খেশরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া শাহাজাদপুর অঞ্চলের ৪টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে ফসলের জমিতে পানি ঢুকে যেতে পারে। এই বাঁধ ভেঙে গেলে উপজেলার খেশরা, খলিসখালী, মাগুরা ও জালালপুর ইউনিয়নের কিছু অংশ প্লাবিত হবে। হাজার হাজার বিঘা পাকা ধান, মাছের ঘের, সবজিখেত পানিতে ডুবে যাবে। কপোতাক্ষের পানি লোনা হওয়ায় আম-কাঁঠালের গাছসহ অধিকাংশ মারা যেতে পারে। এই অঞ্চলে মাটির বাঁধ দিলে টিকবে না। ব্লক তৈরি করে বাঁধ দিলে হয়তো টিকতে পারে।

এ বিষয়ে তালা উপজেলার ইউএনও শেখ মো. রাসেল বলেন, তালা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের ৪টি স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। এর মধ্যে দুই স্থান দ্রুত সংস্কারের জন্য আশু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘তালা উপজেলার ইউএনওর মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। এলাকা পরিদর্শনের জন্য একজন কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শনের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত