কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন মাস আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কথা হয়েছিল চীন ও ভারতের দুই শীর্ষ নেতার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত বরফ গলতে শুরু করবে, এমন আশাবাদ ছিল সরকারের। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের সুযোগে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের পালে জোর হাওয়া লাগার আশা জাগে সরকারের অনেকের ভেতর। কিন্তু বাস্তবে দুই আঞ্চলিক পরাশক্তির কারও সঙ্গেই সম্পর্ক তেমন এগোচ্ছে না।
তিন দেশের কূটনীতিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত শুরু থেকেই খুব প্রয়োজন না হলে দূরত্ব বজায় রাখার কৌশল নেয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা আসার পর বাংলাদেশে সরকারের ভেতরে-বাইরে ধীরে হলেও নির্বাচনের হাওয়া বইছে। কয়েকটি দল এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী প্রচারও শুরু করে দিয়েছে। এখন ভারতের পাশাপাশি চীনও নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তার সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা মনে করছেন, দিল্লি থেকে একের পর এক বিভ্রান্তিকর সংকেত আসছে। ভারতের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে ‘সম্পর্ক মেরামতের’ পরামর্শ দিচ্ছেন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মাঝেমধ্যে ভালো ভালো কথা বলে। কিন্তু বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তার উল্টো। পুশ ইন ও সীমান্ত হত্যা চলছে। নিয়মিত কিছু বৈঠক চেয়েও কোনো সাড়া মেলে না। এমন অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্পর্কের বরফ গলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকারের বাইরের বিশ্লেষকেরা অবশ্য মনে করছেন, বাংলাদেশের চারদিকে ভারত থাকায় দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও সমালোচনার ভয়ে সরকার সেদিকে যাচ্ছে না। এর বাইরে চীনসহ অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কেও বাস্তবে তেমন অগ্রগতি নেই।
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারও সঙ্গেই সম্পর্ক খুব একটা এগোচ্ছে না। সরকারের নামই যখন অন্তর্বর্তী সরকার, তখন সবাই বোঝে, এ সরকার সীমিত সময়ের জন্য। এ কারণে দেশগুলো নিয়মিত সরকারের মতো এ সরকারকে গণ্য করে না; এটাই স্বাভাবিক।
চীনে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা এই কূটনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এ সরকার এলেও তারা কতটা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে, সে বিষয়েও বিদেশিদের মধ্যে প্রশ্ন আছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। এ কারণে প্রায় সব দেশ নির্বাচিত নিয়মিত সরকার দায়িত্বে আসার জন্য অপেক্ষা করছে।
মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি গত ৪ এপ্রিল ব্যাংককের বৈঠকে গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন।
এমন প্রেক্ষাপটে দিল্লি থেকে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর সংকেত আসার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এক কূটনীতিক বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গত ২৬ জুন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ‘ভালো করার’ চেষ্টার কথা ঢাকায় সাংবাদিকদের জানান। পরদিন (২৭ জুন) দিল্লি থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিন ধরনের সংকেত এসেছে।
তৌহিদ হোসেনের মন্তব্যকে সূত্র করে দিল্লিতে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ২৭ জুন বলেন, অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে ভারত সরকার প্রস্তুত। বাংলাদেশের সঙ্গে ঝুলে থাকা বিভিন্ন ইস্যু সমাধানেও ভারত সরকার অপেক্ষা করছে।
একই দিন (২৭ জুন) দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে কথা বলেন দেশটির সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, বাংলাদেশে সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস, অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ আতা হাসনাইন ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অমিতাভ মাতো।
কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী কংগ্রেস নেতা ও এমপি শশী থারুর বৈঠকের পর দিল্লির গণমাধ্যমকে জানান, বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তাঁদের অভিমত দিয়েছেন। তাঁরা ভারতে যাওয়া বাংলাদেশের নাগরিকের সংখ্যা কমে আসার কথা জানান।
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান ক্ষমতাকাঠামোর নতুন বাস্তবতা বুঝে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মেরামত করা দরকার। বেসরকারি খাতের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে হলেও ইউনূসের সরকারের সঙ্গে ভারতকে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ তৈরি করতে হবে।
ভারতীয় বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ‘চীন-পাকিস্তান চক্র’ অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন উপায়ে যেভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা বাড়াচ্ছে, তার প্রভাব বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বর্তমান টানাপোড়েনের সম্পর্কের ওপর পড়বে। পাকিস্তানকে ভারত যেভাবে দেখে, বাংলাদেশকে একই দৃষ্টিতে না দেখার ওপরও তাঁরা জোর দেন। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা নেতিবাচক।
সেদিনই (২৭ জুন) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। যেসব পণ্যের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা এসেছে, সেগুলো হলো কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড়। তবে শুধু মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য ভারতে যেতে পারবে। অথচ এসব পণ্য সাধারণত স্থলবন্দর হয়েই রপ্তানি হয়ে থাকে।
সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, এই ৯ বাংলাদেশি পণ্য ভারতের স্থলবন্দর হয়ে নেপাল ও ভুটানে রপ্তানির ক্ষেত্রে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এসব পণ্য ব্যবহার করে তৈরি হওয়া পণ্য দেশ দুটি অন্য দেশে রপ্তানি করতে পারবে না।
এই নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে ভারত তিন মাসে তিন দফা বিধিনিষেধ আরোপ করল। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা, সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় বাংলাদেশ থেকে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আর গত ৭ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা ভারত সরকার প্রত্যাহার করে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশটি থেকে স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে রপ্তানির ওপর আসা বিধিনিষেধের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত।
বাংলাভাষী ভারতীয়দের বাংলাদেশে পুশ ইন করার বিপক্ষে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সার্বিকভাবে পুশ ইন বন্ধ হয়নি। পুশ ইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার জন্য কনস্যুলার সংলাপ চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এ বিষয়ে ভারতের দিক থেকে কোনো সাড়া নেই। এর বাইরে অনেকগুলো নিয়মিত বৈঠকও আটকে আছে ভারতের অনাগ্রহে।
বাংলাদেশে ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর বিষয়ে ভারত সরকারের মন্তব্য করাকেও এখানে সরকার ভালোভাবে নিচ্ছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নীতিগত অবস্থান হিসেবেই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা হয় না। কিন্তু ভারতের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ সেটাই করে চলেছে।
১৯৯৬ সালে ৩০ বছরের জন্য সই হওয়া গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগি চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর (২০২৬) শেষ হচ্ছে। ২০২৪ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতে শেখ হাসিনার সর্বশেষ সফরে চুক্তিটি পর্যালোচনার বিষয়টি আসে। দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের এ বিষয়ে কাজ করার কথা। কিন্তু হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর বিষয়টি আর এগোয়নি।
ভারতে অথবা ভারত হয়ে অন্য দেশে রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি ভারত থেকে মানুষের পুশ ইন, সীমান্ত হত্যাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপকে স্থানীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশের ওপর চাপ তৈরির কৌশল হিসেবে গণ্য করছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করার আশাবাদের কথা জানান।
এর তিন মাসের মাথায় গত সপ্তাহে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটি সফর করে এলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল ঢাকায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর আশাবাদের কথা চীনা নেতারা তাঁদের জানিয়েছেন।
ফখরুল বলেন, ‘চীন আশা করছে, একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তারা আরও গভীর, আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে পারবে।’
বিএনপি নেতার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বজায় রাখার দিকটিতেও চীনাদের আগ্রহ আছে।
চীনের এক কূটনীতিক বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক বজায় থাকা তিন দেশের জন্যই প্রয়োজন। এতে চীনেরও স্বার্থ আছে। সেটা হলো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকা। এ ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা দরকার।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন মাস আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কথা হয়েছিল চীন ও ভারতের দুই শীর্ষ নেতার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত বরফ গলতে শুরু করবে, এমন আশাবাদ ছিল সরকারের। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের সুযোগে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের পালে জোর হাওয়া লাগার আশা জাগে সরকারের অনেকের ভেতর। কিন্তু বাস্তবে দুই আঞ্চলিক পরাশক্তির কারও সঙ্গেই সম্পর্ক তেমন এগোচ্ছে না।
তিন দেশের কূটনীতিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত শুরু থেকেই খুব প্রয়োজন না হলে দূরত্ব বজায় রাখার কৌশল নেয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা আসার পর বাংলাদেশে সরকারের ভেতরে-বাইরে ধীরে হলেও নির্বাচনের হাওয়া বইছে। কয়েকটি দল এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী প্রচারও শুরু করে দিয়েছে। এখন ভারতের পাশাপাশি চীনও নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তার সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা মনে করছেন, দিল্লি থেকে একের পর এক বিভ্রান্তিকর সংকেত আসছে। ভারতের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে ‘সম্পর্ক মেরামতের’ পরামর্শ দিচ্ছেন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মাঝেমধ্যে ভালো ভালো কথা বলে। কিন্তু বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তার উল্টো। পুশ ইন ও সীমান্ত হত্যা চলছে। নিয়মিত কিছু বৈঠক চেয়েও কোনো সাড়া মেলে না। এমন অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্পর্কের বরফ গলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকারের বাইরের বিশ্লেষকেরা অবশ্য মনে করছেন, বাংলাদেশের চারদিকে ভারত থাকায় দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও সমালোচনার ভয়ে সরকার সেদিকে যাচ্ছে না। এর বাইরে চীনসহ অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কেও বাস্তবে তেমন অগ্রগতি নেই।
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারও সঙ্গেই সম্পর্ক খুব একটা এগোচ্ছে না। সরকারের নামই যখন অন্তর্বর্তী সরকার, তখন সবাই বোঝে, এ সরকার সীমিত সময়ের জন্য। এ কারণে দেশগুলো নিয়মিত সরকারের মতো এ সরকারকে গণ্য করে না; এটাই স্বাভাবিক।
চীনে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা এই কূটনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এ সরকার এলেও তারা কতটা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে, সে বিষয়েও বিদেশিদের মধ্যে প্রশ্ন আছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। এ কারণে প্রায় সব দেশ নির্বাচিত নিয়মিত সরকার দায়িত্বে আসার জন্য অপেক্ষা করছে।
মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি গত ৪ এপ্রিল ব্যাংককের বৈঠকে গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন।
এমন প্রেক্ষাপটে দিল্লি থেকে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর সংকেত আসার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এক কূটনীতিক বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গত ২৬ জুন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ‘ভালো করার’ চেষ্টার কথা ঢাকায় সাংবাদিকদের জানান। পরদিন (২৭ জুন) দিল্লি থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিন ধরনের সংকেত এসেছে।
তৌহিদ হোসেনের মন্তব্যকে সূত্র করে দিল্লিতে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ২৭ জুন বলেন, অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে ভারত সরকার প্রস্তুত। বাংলাদেশের সঙ্গে ঝুলে থাকা বিভিন্ন ইস্যু সমাধানেও ভারত সরকার অপেক্ষা করছে।
একই দিন (২৭ জুন) দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে কথা বলেন দেশটির সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, বাংলাদেশে সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস, অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ আতা হাসনাইন ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অমিতাভ মাতো।
কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী কংগ্রেস নেতা ও এমপি শশী থারুর বৈঠকের পর দিল্লির গণমাধ্যমকে জানান, বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তাঁদের অভিমত দিয়েছেন। তাঁরা ভারতে যাওয়া বাংলাদেশের নাগরিকের সংখ্যা কমে আসার কথা জানান।
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান ক্ষমতাকাঠামোর নতুন বাস্তবতা বুঝে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মেরামত করা দরকার। বেসরকারি খাতের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে হলেও ইউনূসের সরকারের সঙ্গে ভারতকে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ তৈরি করতে হবে।
ভারতীয় বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ‘চীন-পাকিস্তান চক্র’ অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন উপায়ে যেভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা বাড়াচ্ছে, তার প্রভাব বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বর্তমান টানাপোড়েনের সম্পর্কের ওপর পড়বে। পাকিস্তানকে ভারত যেভাবে দেখে, বাংলাদেশকে একই দৃষ্টিতে না দেখার ওপরও তাঁরা জোর দেন। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা নেতিবাচক।
সেদিনই (২৭ জুন) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। যেসব পণ্যের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা এসেছে, সেগুলো হলো কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড়। তবে শুধু মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য ভারতে যেতে পারবে। অথচ এসব পণ্য সাধারণত স্থলবন্দর হয়েই রপ্তানি হয়ে থাকে।
সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, এই ৯ বাংলাদেশি পণ্য ভারতের স্থলবন্দর হয়ে নেপাল ও ভুটানে রপ্তানির ক্ষেত্রে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এসব পণ্য ব্যবহার করে তৈরি হওয়া পণ্য দেশ দুটি অন্য দেশে রপ্তানি করতে পারবে না।
এই নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে ভারত তিন মাসে তিন দফা বিধিনিষেধ আরোপ করল। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা, সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় বাংলাদেশ থেকে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আর গত ৭ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা ভারত সরকার প্রত্যাহার করে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশটি থেকে স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে রপ্তানির ওপর আসা বিধিনিষেধের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত।
বাংলাভাষী ভারতীয়দের বাংলাদেশে পুশ ইন করার বিপক্ষে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সার্বিকভাবে পুশ ইন বন্ধ হয়নি। পুশ ইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার জন্য কনস্যুলার সংলাপ চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এ বিষয়ে ভারতের দিক থেকে কোনো সাড়া নেই। এর বাইরে অনেকগুলো নিয়মিত বৈঠকও আটকে আছে ভারতের অনাগ্রহে।
বাংলাদেশে ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর বিষয়ে ভারত সরকারের মন্তব্য করাকেও এখানে সরকার ভালোভাবে নিচ্ছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নীতিগত অবস্থান হিসেবেই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা হয় না। কিন্তু ভারতের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ সেটাই করে চলেছে।
১৯৯৬ সালে ৩০ বছরের জন্য সই হওয়া গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগি চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর (২০২৬) শেষ হচ্ছে। ২০২৪ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতে শেখ হাসিনার সর্বশেষ সফরে চুক্তিটি পর্যালোচনার বিষয়টি আসে। দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের এ বিষয়ে কাজ করার কথা। কিন্তু হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর বিষয়টি আর এগোয়নি।
ভারতে অথবা ভারত হয়ে অন্য দেশে রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি ভারত থেকে মানুষের পুশ ইন, সীমান্ত হত্যাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপকে স্থানীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশের ওপর চাপ তৈরির কৌশল হিসেবে গণ্য করছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করার আশাবাদের কথা জানান।
এর তিন মাসের মাথায় গত সপ্তাহে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটি সফর করে এলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল ঢাকায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর আশাবাদের কথা চীনা নেতারা তাঁদের জানিয়েছেন।
ফখরুল বলেন, ‘চীন আশা করছে, একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তারা আরও গভীর, আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে পারবে।’
বিএনপি নেতার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বজায় রাখার দিকটিতেও চীনাদের আগ্রহ আছে।
চীনের এক কূটনীতিক বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক বজায় থাকা তিন দেশের জন্যই প্রয়োজন। এতে চীনেরও স্বার্থ আছে। সেটা হলো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকা। এ ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা দরকার।
কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন মাস আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কথা হয়েছিল চীন ও ভারতের দুই শীর্ষ নেতার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত বরফ গলতে শুরু করবে, এমন আশাবাদ ছিল সরকারের। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের সুযোগে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের পালে জোর হাওয়া লাগার আশা জাগে সরকারের অনেকের ভেতর। কিন্তু বাস্তবে দুই আঞ্চলিক পরাশক্তির কারও সঙ্গেই সম্পর্ক তেমন এগোচ্ছে না।
তিন দেশের কূটনীতিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত শুরু থেকেই খুব প্রয়োজন না হলে দূরত্ব বজায় রাখার কৌশল নেয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা আসার পর বাংলাদেশে সরকারের ভেতরে-বাইরে ধীরে হলেও নির্বাচনের হাওয়া বইছে। কয়েকটি দল এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী প্রচারও শুরু করে দিয়েছে। এখন ভারতের পাশাপাশি চীনও নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তার সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা মনে করছেন, দিল্লি থেকে একের পর এক বিভ্রান্তিকর সংকেত আসছে। ভারতের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে ‘সম্পর্ক মেরামতের’ পরামর্শ দিচ্ছেন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মাঝেমধ্যে ভালো ভালো কথা বলে। কিন্তু বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তার উল্টো। পুশ ইন ও সীমান্ত হত্যা চলছে। নিয়মিত কিছু বৈঠক চেয়েও কোনো সাড়া মেলে না। এমন অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্পর্কের বরফ গলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকারের বাইরের বিশ্লেষকেরা অবশ্য মনে করছেন, বাংলাদেশের চারদিকে ভারত থাকায় দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও সমালোচনার ভয়ে সরকার সেদিকে যাচ্ছে না। এর বাইরে চীনসহ অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কেও বাস্তবে তেমন অগ্রগতি নেই।
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারও সঙ্গেই সম্পর্ক খুব একটা এগোচ্ছে না। সরকারের নামই যখন অন্তর্বর্তী সরকার, তখন সবাই বোঝে, এ সরকার সীমিত সময়ের জন্য। এ কারণে দেশগুলো নিয়মিত সরকারের মতো এ সরকারকে গণ্য করে না; এটাই স্বাভাবিক।
চীনে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা এই কূটনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এ সরকার এলেও তারা কতটা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে, সে বিষয়েও বিদেশিদের মধ্যে প্রশ্ন আছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। এ কারণে প্রায় সব দেশ নির্বাচিত নিয়মিত সরকার দায়িত্বে আসার জন্য অপেক্ষা করছে।
মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি গত ৪ এপ্রিল ব্যাংককের বৈঠকে গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন।
এমন প্রেক্ষাপটে দিল্লি থেকে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর সংকেত আসার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এক কূটনীতিক বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গত ২৬ জুন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ‘ভালো করার’ চেষ্টার কথা ঢাকায় সাংবাদিকদের জানান। পরদিন (২৭ জুন) দিল্লি থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিন ধরনের সংকেত এসেছে।
তৌহিদ হোসেনের মন্তব্যকে সূত্র করে দিল্লিতে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ২৭ জুন বলেন, অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে ভারত সরকার প্রস্তুত। বাংলাদেশের সঙ্গে ঝুলে থাকা বিভিন্ন ইস্যু সমাধানেও ভারত সরকার অপেক্ষা করছে।
একই দিন (২৭ জুন) দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে কথা বলেন দেশটির সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, বাংলাদেশে সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস, অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ আতা হাসনাইন ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অমিতাভ মাতো।
কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী কংগ্রেস নেতা ও এমপি শশী থারুর বৈঠকের পর দিল্লির গণমাধ্যমকে জানান, বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তাঁদের অভিমত দিয়েছেন। তাঁরা ভারতে যাওয়া বাংলাদেশের নাগরিকের সংখ্যা কমে আসার কথা জানান।
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান ক্ষমতাকাঠামোর নতুন বাস্তবতা বুঝে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মেরামত করা দরকার। বেসরকারি খাতের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে হলেও ইউনূসের সরকারের সঙ্গে ভারতকে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ তৈরি করতে হবে।
ভারতীয় বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ‘চীন-পাকিস্তান চক্র’ অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন উপায়ে যেভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা বাড়াচ্ছে, তার প্রভাব বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বর্তমান টানাপোড়েনের সম্পর্কের ওপর পড়বে। পাকিস্তানকে ভারত যেভাবে দেখে, বাংলাদেশকে একই দৃষ্টিতে না দেখার ওপরও তাঁরা জোর দেন। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা নেতিবাচক।
সেদিনই (২৭ জুন) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। যেসব পণ্যের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা এসেছে, সেগুলো হলো কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড়। তবে শুধু মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য ভারতে যেতে পারবে। অথচ এসব পণ্য সাধারণত স্থলবন্দর হয়েই রপ্তানি হয়ে থাকে।
সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, এই ৯ বাংলাদেশি পণ্য ভারতের স্থলবন্দর হয়ে নেপাল ও ভুটানে রপ্তানির ক্ষেত্রে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এসব পণ্য ব্যবহার করে তৈরি হওয়া পণ্য দেশ দুটি অন্য দেশে রপ্তানি করতে পারবে না।
এই নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে ভারত তিন মাসে তিন দফা বিধিনিষেধ আরোপ করল। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা, সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় বাংলাদেশ থেকে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আর গত ৭ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা ভারত সরকার প্রত্যাহার করে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশটি থেকে স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে রপ্তানির ওপর আসা বিধিনিষেধের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত।
বাংলাভাষী ভারতীয়দের বাংলাদেশে পুশ ইন করার বিপক্ষে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সার্বিকভাবে পুশ ইন বন্ধ হয়নি। পুশ ইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার জন্য কনস্যুলার সংলাপ চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এ বিষয়ে ভারতের দিক থেকে কোনো সাড়া নেই। এর বাইরে অনেকগুলো নিয়মিত বৈঠকও আটকে আছে ভারতের অনাগ্রহে।
বাংলাদেশে ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর বিষয়ে ভারত সরকারের মন্তব্য করাকেও এখানে সরকার ভালোভাবে নিচ্ছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নীতিগত অবস্থান হিসেবেই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা হয় না। কিন্তু ভারতের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ সেটাই করে চলেছে।
১৯৯৬ সালে ৩০ বছরের জন্য সই হওয়া গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগি চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর (২০২৬) শেষ হচ্ছে। ২০২৪ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতে শেখ হাসিনার সর্বশেষ সফরে চুক্তিটি পর্যালোচনার বিষয়টি আসে। দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের এ বিষয়ে কাজ করার কথা। কিন্তু হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর বিষয়টি আর এগোয়নি।
ভারতে অথবা ভারত হয়ে অন্য দেশে রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি ভারত থেকে মানুষের পুশ ইন, সীমান্ত হত্যাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপকে স্থানীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশের ওপর চাপ তৈরির কৌশল হিসেবে গণ্য করছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করার আশাবাদের কথা জানান।
এর তিন মাসের মাথায় গত সপ্তাহে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটি সফর করে এলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল ঢাকায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর আশাবাদের কথা চীনা নেতারা তাঁদের জানিয়েছেন।
ফখরুল বলেন, ‘চীন আশা করছে, একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তারা আরও গভীর, আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে পারবে।’
বিএনপি নেতার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বজায় রাখার দিকটিতেও চীনাদের আগ্রহ আছে।
চীনের এক কূটনীতিক বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক বজায় থাকা তিন দেশের জন্যই প্রয়োজন। এতে চীনেরও স্বার্থ আছে। সেটা হলো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকা। এ ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা দরকার।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন মাস আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কথা হয়েছিল চীন ও ভারতের দুই শীর্ষ নেতার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত বরফ গলতে শুরু করবে, এমন আশাবাদ ছিল সরকারের। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের সুযোগে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের পালে জোর হাওয়া লাগার আশা জাগে সরকারের অনেকের ভেতর। কিন্তু বাস্তবে দুই আঞ্চলিক পরাশক্তির কারও সঙ্গেই সম্পর্ক তেমন এগোচ্ছে না।
তিন দেশের কূটনীতিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত শুরু থেকেই খুব প্রয়োজন না হলে দূরত্ব বজায় রাখার কৌশল নেয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা আসার পর বাংলাদেশে সরকারের ভেতরে-বাইরে ধীরে হলেও নির্বাচনের হাওয়া বইছে। কয়েকটি দল এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী প্রচারও শুরু করে দিয়েছে। এখন ভারতের পাশাপাশি চীনও নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার আসবে, তার সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা মনে করছেন, দিল্লি থেকে একের পর এক বিভ্রান্তিকর সংকেত আসছে। ভারতের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে ‘সম্পর্ক মেরামতের’ পরামর্শ দিচ্ছেন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মাঝেমধ্যে ভালো ভালো কথা বলে। কিন্তু বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তার উল্টো। পুশ ইন ও সীমান্ত হত্যা চলছে। নিয়মিত কিছু বৈঠক চেয়েও কোনো সাড়া মেলে না। এমন অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্পর্কের বরফ গলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকারের বাইরের বিশ্লেষকেরা অবশ্য মনে করছেন, বাংলাদেশের চারদিকে ভারত থাকায় দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও সমালোচনার ভয়ে সরকার সেদিকে যাচ্ছে না। এর বাইরে চীনসহ অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কেও বাস্তবে তেমন অগ্রগতি নেই।
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারও সঙ্গেই সম্পর্ক খুব একটা এগোচ্ছে না। সরকারের নামই যখন অন্তর্বর্তী সরকার, তখন সবাই বোঝে, এ সরকার সীমিত সময়ের জন্য। এ কারণে দেশগুলো নিয়মিত সরকারের মতো এ সরকারকে গণ্য করে না; এটাই স্বাভাবিক।
চীনে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা এই কূটনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এ সরকার এলেও তারা কতটা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে, সে বিষয়েও বিদেশিদের মধ্যে প্রশ্ন আছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। এ কারণে প্রায় সব দেশ নির্বাচিত নিয়মিত সরকার দায়িত্বে আসার জন্য অপেক্ষা করছে।
মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি গত ৪ এপ্রিল ব্যাংককের বৈঠকে গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন।
এমন প্রেক্ষাপটে দিল্লি থেকে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর সংকেত আসার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এক কূটনীতিক বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গত ২৬ জুন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ‘ভালো করার’ চেষ্টার কথা ঢাকায় সাংবাদিকদের জানান। পরদিন (২৭ জুন) দিল্লি থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিন ধরনের সংকেত এসেছে।
তৌহিদ হোসেনের মন্তব্যকে সূত্র করে দিল্লিতে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ২৭ জুন বলেন, অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে ভারত সরকার প্রস্তুত। বাংলাদেশের সঙ্গে ঝুলে থাকা বিভিন্ন ইস্যু সমাধানেও ভারত সরকার অপেক্ষা করছে।
একই দিন (২৭ জুন) দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে কথা বলেন দেশটির সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, বাংলাদেশে সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস, অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ আতা হাসনাইন ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অমিতাভ মাতো।
কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী কংগ্রেস নেতা ও এমপি শশী থারুর বৈঠকের পর দিল্লির গণমাধ্যমকে জানান, বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তাঁদের অভিমত দিয়েছেন। তাঁরা ভারতে যাওয়া বাংলাদেশের নাগরিকের সংখ্যা কমে আসার কথা জানান।
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান ক্ষমতাকাঠামোর নতুন বাস্তবতা বুঝে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মেরামত করা দরকার। বেসরকারি খাতের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে হলেও ইউনূসের সরকারের সঙ্গে ভারতকে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ তৈরি করতে হবে।
ভারতীয় বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ‘চীন-পাকিস্তান চক্র’ অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন উপায়ে যেভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা বাড়াচ্ছে, তার প্রভাব বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বর্তমান টানাপোড়েনের সম্পর্কের ওপর পড়বে। পাকিস্তানকে ভারত যেভাবে দেখে, বাংলাদেশকে একই দৃষ্টিতে না দেখার ওপরও তাঁরা জোর দেন। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা নেতিবাচক।
সেদিনই (২৭ জুন) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। যেসব পণ্যের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা এসেছে, সেগুলো হলো কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড়। তবে শুধু মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য ভারতে যেতে পারবে। অথচ এসব পণ্য সাধারণত স্থলবন্দর হয়েই রপ্তানি হয়ে থাকে।
সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, এই ৯ বাংলাদেশি পণ্য ভারতের স্থলবন্দর হয়ে নেপাল ও ভুটানে রপ্তানির ক্ষেত্রে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এসব পণ্য ব্যবহার করে তৈরি হওয়া পণ্য দেশ দুটি অন্য দেশে রপ্তানি করতে পারবে না।
এই নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে ভারত তিন মাসে তিন দফা বিধিনিষেধ আরোপ করল। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা, সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় বাংলাদেশ থেকে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আর গত ৭ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা ভারত সরকার প্রত্যাহার করে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশটি থেকে স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে রপ্তানির ওপর আসা বিধিনিষেধের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত।
বাংলাভাষী ভারতীয়দের বাংলাদেশে পুশ ইন করার বিপক্ষে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সার্বিকভাবে পুশ ইন বন্ধ হয়নি। পুশ ইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার জন্য কনস্যুলার সংলাপ চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এ বিষয়ে ভারতের দিক থেকে কোনো সাড়া নেই। এর বাইরে অনেকগুলো নিয়মিত বৈঠকও আটকে আছে ভারতের অনাগ্রহে।
বাংলাদেশে ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর বিষয়ে ভারত সরকারের মন্তব্য করাকেও এখানে সরকার ভালোভাবে নিচ্ছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নীতিগত অবস্থান হিসেবেই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা হয় না। কিন্তু ভারতের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ সেটাই করে চলেছে।
১৯৯৬ সালে ৩০ বছরের জন্য সই হওয়া গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগি চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর (২০২৬) শেষ হচ্ছে। ২০২৪ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতে শেখ হাসিনার সর্বশেষ সফরে চুক্তিটি পর্যালোচনার বিষয়টি আসে। দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের এ বিষয়ে কাজ করার কথা। কিন্তু হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর বিষয়টি আর এগোয়নি।
ভারতে অথবা ভারত হয়ে অন্য দেশে রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি ভারত থেকে মানুষের পুশ ইন, সীমান্ত হত্যাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপকে স্থানীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশের ওপর চাপ তৈরির কৌশল হিসেবে গণ্য করছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস গত ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করার আশাবাদের কথা জানান।
এর তিন মাসের মাথায় গত সপ্তাহে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটি সফর করে এলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল ঢাকায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর আশাবাদের কথা চীনা নেতারা তাঁদের জানিয়েছেন।
ফখরুল বলেন, ‘চীন আশা করছে, একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তারা আরও গভীর, আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করতে পারবে।’
বিএনপি নেতার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বজায় রাখার দিকটিতেও চীনাদের আগ্রহ আছে।
চীনের এক কূটনীতিক বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক বজায় থাকা তিন দেশের জন্যই প্রয়োজন। এতে চীনেরও স্বার্থ আছে। সেটা হলো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকা। এ ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা দরকার।

দেশে দ্রুত বাড়ছে তামাক চাষ। কৃষিজমি দখল করে তামাকের এই সম্প্রসারণ শুধু কৃষিকে নয়, দেশের খাদ্যনিরাপত্তাকেও ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলছে। তামাক কোম্পানিগুলোর প্রচারণায় বলা হয়, তামাক চাষে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি পায়।
৪৪ মিনিট আগে
পরিষদের নেতারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৯ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখে দেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিশুদের মা-বাবার পরেই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাদের মানসিক উন্নয়নে কাজ করেন।
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তিকে জাপানের শ্রমবাজারে আরও বেশি অন্তর্ভুক্ত করতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া।
১ ঘণ্টা আগে
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬)-এর বিধান অনুযায়ী তাঁকে অপসারণ করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে দ্রুত বাড়ছে তামাক চাষ। কৃষিজমি দখল করে তামাকের এই সম্প্রসারণ শুধু কৃষিকে নয়, দেশের খাদ্যনিরাপত্তাকেও ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলছে। তামাক কোম্পানিগুলোর প্রচারণায় বলা হয়, তামাক চাষে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বাস্তবে যেসব জেলায় তামাক চাষ হয়, সেসব এলাকায় দারিদ্র্যের হার তুলনামূলকভাবে বেশি; যা কোম্পানির প্রচারণার সম্পূর্ণ বিপরীত। তামাকপাতা রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহার ও কোম্পানির আগ্রাসী প্রভাব কৃষকদের বিভ্রান্ত করছে, স্থানীয় অর্থনীতিতে বাড়ছে ক্ষতি।
গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো (বিইআর) মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা। কর্মশালার আয়োজন করে বিইআর, বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) এবং বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি)। কর্মশালার বিষয় ছিল, ‘কোম্পানির আগ্রাসনে বাড়ছে তামাক চাষ, জনস্বাস্থ্য ও খাদ্যনিরাপত্তায় হুমকি’। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৩৫ সাংবাদিক অংশ নেন।
কর্মশালার সেশন পরিচালনা করেন তামাক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক গবেষক ও বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সুশান্ত সিনহা। তিনি বলেন, তামাকপাতা রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার তামাক চাষ বৃদ্ধির প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। শুল্ক প্রত্যাহারের পর তামাক রপ্তানির পাশাপাশি চাষও বেড়েছে, যা পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনছে। কোম্পানিগুলো ‘তামাক চাষ লাভজনক’—এমন একটি মিথ্যা তথ্য মানুষকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয়েছে। বাস্তবতা হলো, যেসব জেলায় তামাক চাষ হয়, দারিদ্র্য সূচকে সেসব জেলার অবস্থান সবার ওপরে।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ড. রুমানা হক বলেন, তামাক চাষ থেকে বের হয়ে আসার উপায় খুঁজতে হবে। এর প্রথম পদক্ষেপ হলো, দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা। কৃষকেরা যেন বিকল্প ফসলের ন্যায্যমূল্য পান, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে তামাকপাতা ও তামাকজাত পণ্যের রপ্তানিতে পুনরায় ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে হবে। কারণ, তামাক থেকে যে রাজস্ব আয় হয়, তার দ্বিগুণের বেশি ব্যয় হয় তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায়।
বিএজেএফ সভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন বলেন, তামাক কোম্পানি ১০টি খাতে ব্যাপক ক্ষতি করছে। তাদের কর ফাঁকির প্রকৃত হিসাব নেই। তামাক চাষের কারণে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতি বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকিও বাড়ছে। তামাক চাষের কারণে দেশে প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
সাহানোয়ার সাইদ শাহীন অভিযোগ করেন, তামাকপাতার দাম নির্ধারণে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কমিটিতে কোম্পানির প্রতিনিধিরাই প্রভাবশালী। যাঁরা তামাক কিনবেন, তাঁরাই আবার দাম ঠিক করবেন—এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
জনস্বাস্থ্যবিষয়ক নীতি বিশ্লেষক ও বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম তাহিন বলেন, হাইকোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশনের আদেশে বলা হয়েছিল, দেশে তামাক চাষ কমাতে হবে এবং নতুন কোনো তামাক কোম্পানিকে অনুমতি দেওয়া যাবে না। কিন্তু সেই আদেশ অমান্য করে নতুন করে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।

দেশে দ্রুত বাড়ছে তামাক চাষ। কৃষিজমি দখল করে তামাকের এই সম্প্রসারণ শুধু কৃষিকে নয়, দেশের খাদ্যনিরাপত্তাকেও ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলছে। তামাক কোম্পানিগুলোর প্রচারণায় বলা হয়, তামাক চাষে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বাস্তবে যেসব জেলায় তামাক চাষ হয়, সেসব এলাকায় দারিদ্র্যের হার তুলনামূলকভাবে বেশি; যা কোম্পানির প্রচারণার সম্পূর্ণ বিপরীত। তামাকপাতা রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহার ও কোম্পানির আগ্রাসী প্রভাব কৃষকদের বিভ্রান্ত করছে, স্থানীয় অর্থনীতিতে বাড়ছে ক্ষতি।
গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো (বিইআর) মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা। কর্মশালার আয়োজন করে বিইআর, বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) এবং বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি)। কর্মশালার বিষয় ছিল, ‘কোম্পানির আগ্রাসনে বাড়ছে তামাক চাষ, জনস্বাস্থ্য ও খাদ্যনিরাপত্তায় হুমকি’। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৩৫ সাংবাদিক অংশ নেন।
কর্মশালার সেশন পরিচালনা করেন তামাক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক গবেষক ও বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সুশান্ত সিনহা। তিনি বলেন, তামাকপাতা রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার তামাক চাষ বৃদ্ধির প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। শুল্ক প্রত্যাহারের পর তামাক রপ্তানির পাশাপাশি চাষও বেড়েছে, যা পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনছে। কোম্পানিগুলো ‘তামাক চাষ লাভজনক’—এমন একটি মিথ্যা তথ্য মানুষকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয়েছে। বাস্তবতা হলো, যেসব জেলায় তামাক চাষ হয়, দারিদ্র্য সূচকে সেসব জেলার অবস্থান সবার ওপরে।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ড. রুমানা হক বলেন, তামাক চাষ থেকে বের হয়ে আসার উপায় খুঁজতে হবে। এর প্রথম পদক্ষেপ হলো, দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা। কৃষকেরা যেন বিকল্প ফসলের ন্যায্যমূল্য পান, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে তামাকপাতা ও তামাকজাত পণ্যের রপ্তানিতে পুনরায় ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে হবে। কারণ, তামাক থেকে যে রাজস্ব আয় হয়, তার দ্বিগুণের বেশি ব্যয় হয় তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায়।
বিএজেএফ সভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন বলেন, তামাক কোম্পানি ১০টি খাতে ব্যাপক ক্ষতি করছে। তাদের কর ফাঁকির প্রকৃত হিসাব নেই। তামাক চাষের কারণে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতি বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকিও বাড়ছে। তামাক চাষের কারণে দেশে প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
সাহানোয়ার সাইদ শাহীন অভিযোগ করেন, তামাকপাতার দাম নির্ধারণে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কমিটিতে কোম্পানির প্রতিনিধিরাই প্রভাবশালী। যাঁরা তামাক কিনবেন, তাঁরাই আবার দাম ঠিক করবেন—এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
জনস্বাস্থ্যবিষয়ক নীতি বিশ্লেষক ও বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম তাহিন বলেন, হাইকোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশনের আদেশে বলা হয়েছিল, দেশে তামাক চাষ কমাতে হবে এবং নতুন কোনো তামাক কোম্পানিকে অনুমতি দেওয়া যাবে না। কিন্তু সেই আদেশ অমান্য করে নতুন করে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন মাস আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কথা হয়েছিল চীন ও ভারতের দুই শীর্ষ নেতার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত বরফ গলতে
০১ জুলাই ২০২৫
পরিষদের নেতারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৯ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখে দেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিশুদের মা-বাবার পরেই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাদের মানসিক উন্নয়নে কাজ করেন।
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তিকে জাপানের শ্রমবাজারে আরও বেশি অন্তর্ভুক্ত করতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া।
১ ঘণ্টা আগে
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬)-এর বিধান অনুযায়ী তাঁকে অপসারণ করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়কে এমপিওভুক্ত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ সময় দাবি মানা না হলে আগামী রোববার থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে আজ বুধবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে পরিষদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন এর সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি, এমপিওভুক্তি ও প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে; বিশেষ শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষা ভাতা তিন হাজার টাকা নিশ্চিত করা; শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিলসহ শিক্ষা উপকরণ ও খেলাধুলার সরঞ্জাম প্রদান; থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন করা; ছাত্রছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ব্যক্তিদের কোটা অনুযায়ী চাকরি সুনিশ্চিত করতে হবে।
কর্মসূচিতে ইলিয়াস রাজ বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক দাবি সরকারকে মেনে নিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ফিরব না।’
পরিষদের নেতারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৯ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখে দেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিশুদের মা-বাবার পরেই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাদের মানসিক উন্নয়নে কাজ করেন।
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিমা খাতুন জানান, ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু করে। এতে ২ হাজার ৭৪১টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে, যার মধ্যে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ১ হাজার ৭৭২টি আবেদন গৃহীত হয়। পরে অফলাইনে আরও প্রায় ২০০টি আবেদন নেওয়া হয়। এরপর বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা, ২০১৯ অনুযায়ী জাতীয় স্বীকৃতি ও এমপিও কমিটি গঠন করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক, খ, গ–এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করে কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু তা অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে। এর ফলে প্রায় ৬৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন এবং শিক্ষা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

দেশের সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়কে এমপিওভুক্ত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ সময় দাবি মানা না হলে আগামী রোববার থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে আজ বুধবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে পরিষদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন এর সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি, এমপিওভুক্তি ও প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে; বিশেষ শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষা ভাতা তিন হাজার টাকা নিশ্চিত করা; শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিলসহ শিক্ষা উপকরণ ও খেলাধুলার সরঞ্জাম প্রদান; থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন করা; ছাত্রছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ব্যক্তিদের কোটা অনুযায়ী চাকরি সুনিশ্চিত করতে হবে।
কর্মসূচিতে ইলিয়াস রাজ বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক দাবি সরকারকে মেনে নিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ফিরব না।’
পরিষদের নেতারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৯ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখে দেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিশুদের মা-বাবার পরেই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাদের মানসিক উন্নয়নে কাজ করেন।
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিমা খাতুন জানান, ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু করে। এতে ২ হাজার ৭৪১টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে, যার মধ্যে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ১ হাজার ৭৭২টি আবেদন গৃহীত হয়। পরে অফলাইনে আরও প্রায় ২০০টি আবেদন নেওয়া হয়। এরপর বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা, ২০১৯ অনুযায়ী জাতীয় স্বীকৃতি ও এমপিও কমিটি গঠন করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক, খ, গ–এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করে কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু তা অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে। এর ফলে প্রায় ৬৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন এবং শিক্ষা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন মাস আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কথা হয়েছিল চীন ও ভারতের দুই শীর্ষ নেতার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত বরফ গলতে
০১ জুলাই ২০২৫
দেশে দ্রুত বাড়ছে তামাক চাষ। কৃষিজমি দখল করে তামাকের এই সম্প্রসারণ শুধু কৃষিকে নয়, দেশের খাদ্যনিরাপত্তাকেও ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলছে। তামাক কোম্পানিগুলোর প্রচারণায় বলা হয়, তামাক চাষে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি পায়।
৪৪ মিনিট আগে
বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তিকে জাপানের শ্রমবাজারে আরও বেশি অন্তর্ভুক্ত করতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া।
১ ঘণ্টা আগে
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬)-এর বিধান অনুযায়ী তাঁকে অপসারণ করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তিকে জাপানের শ্রমবাজারে আরও বেশি অন্তর্ভুক্ত করতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া।
আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) টোকিওতে জাপানের কৃষি, বন ও মৎস্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিকবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার ওয়াতানাবে ইয়োইচির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ সময় জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে সিনিয়র সচিব বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং বিশেষ করে, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে জাপান সরকারের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ শ্রমিকের প্রয়োজন হবে—বাংলাদেশ এই বিশাল সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে চায়।
সিনিয়র সচিব জানান, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে দুটি সহযোগিতা স্মারক ও দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। একই সঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ ‘জাপান সেল’ গঠন করা হয়েছে, যা জাপানি ভাষা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্প্রসারণে কাজ করছে।
সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা স্পেসিফায়েড স্কিল্ড ওয়ার্কার (এসএসডব্লিউ) কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশে পাঁচটি ক্ষেত্রে দক্ষতা পরীক্ষা চালু করায় জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি খাদ্য ও পানীয় উৎপাদন, খাদ্য পরিবেশন শিল্প, বনশিল্পসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার পরিধি বাড়ানোর অনুরোধ জানান।
ভাইস মিনিস্টার ওয়াতানাবে ইয়োইচি এ প্রস্তাবে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে জাপান দূতাবাস নতুন খাত অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।
সাক্ষাৎ শেষে সিনিয়র সচিব ভাইস মিনিস্টারকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে দক্ষতা উন্নয়ন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানে দুই দেশের সহযোগিতা আরও জোরদার হয়।
পরে ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া জাপানের শীর্ষ জনশক্তি গ্রহণকারী সংস্থা আইএম জাপান অফিস পরিদর্শন করেন এবং সংস্থার প্রধান নির্বাহী কানামোরি হিতোশির সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে জানানো হয়, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ থেকে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেইনি ও এসএসডব্লিউ কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে অন্তত ৩০০ জনে উন্নীত করা হবে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিনিয়র সচিব টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের অডিটরিয়ামে আয়োজিত বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তিকে জাপানের শ্রমবাজারে আরও বেশি অন্তর্ভুক্ত করতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া।
আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) টোকিওতে জাপানের কৃষি, বন ও মৎস্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিকবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার ওয়াতানাবে ইয়োইচির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ সময় জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে সিনিয়র সচিব বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং বিশেষ করে, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে জাপান সরকারের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ শ্রমিকের প্রয়োজন হবে—বাংলাদেশ এই বিশাল সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে চায়।
সিনিয়র সচিব জানান, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে দুটি সহযোগিতা স্মারক ও দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। একই সঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ ‘জাপান সেল’ গঠন করা হয়েছে, যা জাপানি ভাষা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্প্রসারণে কাজ করছে।
সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা স্পেসিফায়েড স্কিল্ড ওয়ার্কার (এসএসডব্লিউ) কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশে পাঁচটি ক্ষেত্রে দক্ষতা পরীক্ষা চালু করায় জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি খাদ্য ও পানীয় উৎপাদন, খাদ্য পরিবেশন শিল্প, বনশিল্পসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার পরিধি বাড়ানোর অনুরোধ জানান।
ভাইস মিনিস্টার ওয়াতানাবে ইয়োইচি এ প্রস্তাবে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে জাপান দূতাবাস নতুন খাত অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।
সাক্ষাৎ শেষে সিনিয়র সচিব ভাইস মিনিস্টারকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে দক্ষতা উন্নয়ন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানে দুই দেশের সহযোগিতা আরও জোরদার হয়।
পরে ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া জাপানের শীর্ষ জনশক্তি গ্রহণকারী সংস্থা আইএম জাপান অফিস পরিদর্শন করেন এবং সংস্থার প্রধান নির্বাহী কানামোরি হিতোশির সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে জানানো হয়, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ থেকে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেইনি ও এসএসডব্লিউ কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে অন্তত ৩০০ জনে উন্নীত করা হবে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিনিয়র সচিব টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের অডিটরিয়ামে আয়োজিত বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন মাস আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কথা হয়েছিল চীন ও ভারতের দুই শীর্ষ নেতার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত বরফ গলতে
০১ জুলাই ২০২৫
দেশে দ্রুত বাড়ছে তামাক চাষ। কৃষিজমি দখল করে তামাকের এই সম্প্রসারণ শুধু কৃষিকে নয়, দেশের খাদ্যনিরাপত্তাকেও ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলছে। তামাক কোম্পানিগুলোর প্রচারণায় বলা হয়, তামাক চাষে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি পায়।
৪৪ মিনিট আগে
পরিষদের নেতারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৯ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখে দেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিশুদের মা-বাবার পরেই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাদের মানসিক উন্নয়নে কাজ করেন।
১ ঘণ্টা আগে
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬)-এর বিধান অনুযায়ী তাঁকে অপসারণ করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬)-এর বিধান অনুযায়ী তাঁকে অপসারণ করেছেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের তদন্তে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার তাঁর পদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে অযোগ্য হয়ে পড়েছেন বিধায় রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬)-এর বিধান অনুযায়ী তাঁকে অপসারণ করেছেন।

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬)-এর বিধান অনুযায়ী তাঁকে অপসারণ করেছেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের তদন্তে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার তাঁর পদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে অযোগ্য হয়ে পড়েছেন বিধায় রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬)-এর বিধান অনুযায়ী তাঁকে অপসারণ করেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিন মাস আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কথা হয়েছিল চীন ও ভারতের দুই শীর্ষ নেতার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত বরফ গলতে
০১ জুলাই ২০২৫
দেশে দ্রুত বাড়ছে তামাক চাষ। কৃষিজমি দখল করে তামাকের এই সম্প্রসারণ শুধু কৃষিকে নয়, দেশের খাদ্যনিরাপত্তাকেও ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলছে। তামাক কোম্পানিগুলোর প্রচারণায় বলা হয়, তামাক চাষে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি পায়।
৪৪ মিনিট আগে
পরিষদের নেতারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৯ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখে দেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিশুদের মা-বাবার পরেই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাদের মানসিক উন্নয়নে কাজ করেন।
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তিকে জাপানের শ্রমবাজারে আরও বেশি অন্তর্ভুক্ত করতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া।
১ ঘণ্টা আগে