জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাঁর জবানবন্দি নেওয়া হয়। তাঁকে নিয়ে এ মামলায় ৩৬ জন সাক্ষ্য দিলেন।
জবানবন্দিতে সাবেক আইজিপি বলেন, ‘আমার ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। আমাকে প্রথমে দেড় বছর এবং পরে আরও এক বছর আইজিপি হিসেবে এক্সটেনশন দেওয়া হয়। আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য সিনিয়র অফিসারদের মধ্যে গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক গ্রুপিং ছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর পুনরায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক রাজনৈতিক মেরুকরণ হয় এবং গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক বলয় তৈরি হয়। পুলিশ অফিসারেরা বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে এবং সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে পড়ে। এসব কারণে সিনিয়র অফিসারদের পক্ষে পুলিশকে কন্ট্রোল করার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে।’
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় আমি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ছিলাম। তখন আইজিপি ছিলেন জাবেদ পাটোয়ারী। আমি জানতে পারি, তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ৫০% ব্যালট ভর্তি করে রাখার পরামর্শ দেন। সরকারের পক্ষ থেকে সে মোতাবেক ডিসি, এসপি, ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি ও দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় তা বাস্তবায়ন করা হয়। আর যেসব পুলিশ কর্মকর্তা এসব নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করে, তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে বিপিএম ও পিপিএম পদক প্রদানের মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পুলিশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায়। কিছু কিছু পুলিশ কর্মকর্তা প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তাদের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল।’
চৌধুরী মামুন আরও বলেন, ‘তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় প্রায়ই রাতের বেলায় বৈঠক বসত এবং তা গভীর রাত পর্যন্ত চলত। যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ওইসব বৈঠকে অংশগ্রহণ করত, তাদের মধ্যে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবির অ্যাডিশনাল কমিশনার হারুন অর রশীদ, এসবির অ্যাডিশনাল আইজিপি মনিরুল ইসলাম, ঢাকার ডিআইজি নুরুল ইসলাম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি বিপ্লব কুমার, অ্যাডিশনাল এসপি কাফি, ওসি মাজহার, ওসি ফরমান, ওসি অপূর্ব হাসানসহ আরও বেশ কিছু কর্মকর্তা ছিল। তাদের কারও কারও সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি যোগাযোগ ছিল। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকার কারণে এসব পুলিশ কর্মকর্তা চেইন অব কমান্ড মানত না। কিন্তু আমি চাইতাম যে, তারা পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুক। প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মূলত দুটি গ্রুপ ছিল। একটি গ্রুপের নেতৃত্বে ছিল তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং অন্য গ্রুপের নেতৃত্বে ছিল তৎকালীন এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম। তাঁরা চাইতেন তাঁদের নিজস্ব বলয়ের লোকজন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং পাক এবং ঢাকায় থাকুক।’
জবানবন্দিতে র্যাব নিয়ে যা বললেন সাবেক আইজিপি
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় আমি জানতে পারি যে, র্যাবের হেডকোয়ার্টার কর্তৃক পরিচালিত উত্তরাস্থ র্যাব-১-এর কমপাউন্ডের ভেতরে টিএফআই সেল (টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেল) নামে একটি বন্দিশালা ছিল। অন্যান্য র্যাব ইউনিটের অধীনে আরও অনেকগুলো বন্দিশালা ছিল। এসব বন্দিশালায় রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী ও সরকারের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের আটক রেখে নির্যাতন করা হতো। যা একটি কালচারে পরিণত হয়েছিল। অপহরণ, গোপন বন্দিশালায় আটক, নির্যাতন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যার মতো কাজগুলো র্যাবের এডিজি ও র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকেরা সমন্বয় করতেন। র্যাব কর্তৃক কোনো ব্যক্তিকে উঠিয়ে আনা, আটক রাখা কিংবা হত্যা করার নির্দেশনাগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসত বলে শুনেছি। নির্দেশনাগুলো প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ও সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকের মাধ্যমে আসত বলে জানতে পারি। এ নির্দেশনাগুলো চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করে সরাসরি এডিজি (অপস) ও র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের (র্যাব ইন্ট) পরিচালকদের কাছে পাঠানো হতো।’
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমি র্যাবের ডিজি হিসেবে যোগদানের সময় আমার পূর্ববর্তী র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ আমাকে জানান যে, টিএফআই সেলে ব্যারিস্টার আরমান বন্দী আছে। আমি যোগদানের পরে র্যাব ইন্টের ডাইরেক্টর লেফটেনেন্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেমও আমাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। র্যাবের এডিজি (অপস) ও র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগ (র্যাব ইন্ট) সাধারণত সেনাবাহিনীর অফিসার থেকে নিয়োগ করা হতো। টিএফআই সেলে ব্যারিস্টার আরমানের বন্দী থাকার বিষয়টি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকের নিকট একাধিকবার উপস্থাপন করি এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানতে চাই। তিনি আমাকে পরে জানাবেন বলেন। কিন্তু পরে তিনি আর কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। আমি র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়ে আসার সময় পরবর্তী মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেনকে ব্যারিস্টার আরমানের সম্পর্কে অবহিত করি।’
সাবেক আইজিপি আরও বলেন, ‘র্যাব কর্মকর্তাদের মধ্যে অ্যাডিশনাল এসপি আলেপ উদ্দিন ও এসপি মহিউদ্দিন ফারুকী নামের দুজন অফিসারকে আমি চিনতাম, যারা বন্দীদের অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার মতো কাজে বিশেষ পারদর্শী ছিল। আলেপ উদ্দিন প্রথমে নারায়ণগঞ্জে ছিল। পরে তাকে র্যাব ইন্টেলে পদায়ন করা হয়। আমি র্যাব ডিজির দায়িত্ব পালনের সময় র্যাবের ডাইরেক্টর ইন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, লে. কর্নেল খাইরুল ইসলাম ও লে. কর্নেল মশিউর রহমান। এ ছাড়া এডিজি (অপস) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কর্নেল তোফায়েল, কর্নেল আজাদ ও কর্নেল কামরুল। আমার দায়িত্ব পালনকালে যদিও আমি র্যাব কর্তৃক মানুষকে বিনা বিচারে আটক, নির্যাতন ও কাউকে কাউকে ক্রসফায়ারে হত্যা করার মতো বিষয়গুলো জানতাম। কিন্তু আমি কোনো তদন্ত করিনি বা এগুলোর ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করিনি। এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্তগুলো বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে আসত এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে চেইন অব কমান্ড মানা হতো না।’
জুলাই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘গত বছর জুলাই আন্দোলন শুরু হওয়ার পর দেশব্যাপী সেনা মোতায়েন হয়। এরপর ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতেই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির সরকারি বাসায় কোর কমিটির মিটিং হতো। সেখানে আমাদের আন্দোলন দমনসহ সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হতো। কোর কমিটিতে আমিসহ সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) টিপু সুলতান, অতিরিক্ত সচিব রেজা মোস্তফা, এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, র্যাব ডিজি ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসারের ডিজি মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক, এনটিএমসির প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, ডিজিএফআইয়ের প্রধান ও এনএসআই প্রধানেরা উপস্থিত থাকতেন।’
সাবেক আইজিপি বলেন, ‘কোর কমিটির একটি বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করার সিদ্ধান্ত হয়। ডিজিএফআই ওই প্রস্তাব দেয়। আমি বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে আমি রাজি হই। ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ডিজিএফআই ও ডিবি তাদের আটক করে ডিবি হেফাজতে নিয়ে আসে। তাদের ডিবি হেফাজতে এনে আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আপস করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তাদের আত্মীয়স্বজনকেও ডিবিতে নিয়ে এসে চাপ দেওয়া হয়। সমন্বয়কদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে টেলিভিশনে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়। এ ব্যাপারে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ডিবিপ্রধান হারুনকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘‘জিন’’ বলে ডাকতেন। কারণ, সে সরকারের নির্দেশনা পালনে পারদর্শী ছিল। আন্দোলনের একপর্যায়ে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের নজরদারি, তাদের অবস্থান নির্ণয় ও গুলি করে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করা হয়। হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। যার পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন র্যাবের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ। পরে আন্দোলন দমনে সরাসরি লেথাল উইপন ব্যবহার করে এবং আন্দোলনপ্রবণ এলাকাগুলো ভাগ করে ব্লকরেইড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
মামুন বলেন, ‘১৮ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আমাকে ফোন করে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলন দমনে সরাসরি লেথাল উইপন ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। তখন আমি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে উপস্থিত ছিলাম এবং আমার সামনে অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় জোয়ার্দার উপস্থিত ছিলেন। আমি প্রলয় জোয়ার্দারকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানালে তিনি রুম থেকে বের হয়ে ডিএমপি কমিশনারসহ সারা দেশে এই নির্দেশনা পৌঁছে দেন। ওই দিন থেকে লেথাল উইপন ব্যবহার করা শুরু হয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান তাঁর অধীনস্ত কর্মকর্তাদের লেথাল উইপন ব্যবহারের নির্দেশনা দেন। লেথাল উইপন ব্যবহারের বিষয়ে অতি উৎসাহী ছিলেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল, যেকোনো মূল্যে আন্দোলন দমন করতে হবে।’
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মির্জা আযম, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন প্রধানমন্ত্রীকে মারণাস্ত্র ব্যবহারে প্ররোচিত করতেন। সারা দেশে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে ১৫ জুলাই ওবায়দুল কাদের, নানক মন্তব্য করেন যে, আন্দোলন দমনের জন্য ছাত্রলীগ ও যুবলীগই যথেষ্ট। এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ড্রোন, হেলিকপ্টার ও লেথাল উইপন ব্যবহার করে আন্দোলনরত অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে আহত ও নিহত করা হয়। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ক্যাডার বাহিনী ছাড়াও আন্দোলন দমনে সরকারকে উৎসাহিত করে আওয়ামীপন্থী বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীরা।’
শেখ হাসিনার পদত্যাগ যেভাবে
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘৪ আগস্ট বেলা ১১টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নিরাপত্তা সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তিন বাহিনীর প্রধান, এসবির প্রধান, ডিজিএফআইয়ের প্রধান, এনএসআইয়ের প্রধানসহ মোট ২৭ জন। আমি নিজেও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। ওই বৈঠকে আন্দোলন দমন ও নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পরিস্থিতির রিপোর্ট পেশ করছিল। ইতিমধ্যে চারদিকে পরিবেশ-পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় বৈঠকটি মুলতবি করা হয়। ওই দিন রাতের বেলায় আমাদের আবার গণভবনে ডাকা হয়। সেখানে আমি, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, র্যাবের ডিজি ও লে. জেনারেল মুজিব উপস্থিত ছিলাম। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। ডিজিএফআইয়ের প্রধান ও এসবির প্রধান মনিরুল বাইরে অপেক্ষমাণ ছিলেন। বৈঠকে ৫ আগস্ট আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ‘‘মার্চ টু ঢাকা’’ কর্মসূচি ঠেকানোর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে, পুলিশ ও সেনাবাহিনী সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবে। এরপর আমরা আর্মির অপারেশন কন্ট্রোল রুমে যাই। সেখানে আমি, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, র্যাবের ডিজি, লে. জেনারেল মুজিব, ডিজিএফআইয়ের প্রধান ও এসবির প্রধান মনিরুল এবং ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত ছিলাম। সেখানে ঢাকা শহরের প্রবেশমুখগুলোতে ফোর্স মোতায়েন করে কঠোর অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।’
সাবেক আইজিপি বলেন, ‘৪ আগস্ট মিটিং শেষে রাত সাড়ে ১২টায় আমরা আর্মির অপারেশন কন্ট্রোল রুম থেকে চলে আসি। ৫ তারিখ সকালে আমি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আমার দপ্তরে যাই। ইতিমধ্যে উত্তরা, যাত্রাবাড়ী ও বিভিন্ন পথ দিয়ে স্রোতের মতো ছাত্র-জনতা ঢাকা শহরে প্রবেশ করতে শুরু করে। দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টার দিকে জানতে পারি, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন। ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তিনি কোথায় যাবেন, তা আমরা জানতাম না। এরপর বিকেলবেলা আর্মির হেলিকপ্টার এসে আমাদের পুলিশ হেডাকোয়ার্টার্স থেকে প্রথমে তেজগাঁও বিমানবন্দরের হেলিপ্যাডে এবং সেখান থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের অফিসার্স মেসে নিয়ে যায়। হেলিকপ্টারে আমার সঙ্গে এসবির প্রধান মনিরুল, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিআইজি আমেনা ছিলেন। পরের শিফটে অ্যাডিশনাল ডিআইজি প্রলয়, অ্যাডিশনাল আইজি লুৎফুল কবিরসহ অন্যদের সেখানে নেওয়া হয়। ৬ তারিখ আইজিপি হিসেবে আমার নিয়োগ চুক্তি বাতিল করা হয়। ক্যান্টনমেন্টে অবস্থানকালে ৩ সেপ্টেম্বর আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
চৌধুরী মামুনের ক্ষমাপ্রার্থনা
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে সরকারের আদেশে আন্দোলনকারীদের ওপর অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে তাদের আহত ও নিহত করায় আমি পুলিশপ্রধান হিসেবে লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাসহ ব্যাপক নৃশংসতার জন্য আমি অপরাধবোধে ও বিবেকের তাড়নায় অ্যাপ্রুভার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ট্রাইব্যুনালে এসে স্বজন হারানো ব্যক্তিদের কান্না, আহাজারি, চিকিৎসা প্রদানে বাধা দেওয়া-সংক্রান্ত ডাক্তার ও ভিকটিমদের বক্তব্য, ভিডিওতে নৃশংসতাগুলো দেখে অ্যাপ্রুভার হওয়ার সিদ্ধান্ত আরও যৌক্তিক মনে হয়েছে। বিশেষ করে, হত্যা করার পর লাশগুলো একত্র করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার বীভৎসতা আমাকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে।’
মামুন আরও বলেন, ‘আমি সাড়ে ৩৬ বছর পুলিশে চাকরি করেছি। পুলিশের চাকরি খুবই ট্রিকি। সব সময় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। চাকরি জীবনে আমার বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি সব সময় যথেষ্ট মানবিকতা ও সচেতনার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। চাকরিজীবনের শেষপর্যায়ে এসে এত বড় গণহত্যা আমার দায়িত্বকালে সংঘটিত হয়েছে, তার দায় আমি স্বীকার করছি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে এই গণহত্যা সংঘটিত হয়। আমি গণহত্যার শিকার প্রতিটি পরিবার, আহত ব্যক্তিবর্গ, দেশবাসী ও ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’ এ সময় তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাকে দয়া করে ক্ষমা করে দিবেন। আমার এই সত্য ও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনার মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটন হলে আল্লাহ যদি আমাকে আরও হায়াত দান করেন, বাকি জীবন কিছুটা হলেও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।’

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাঁর জবানবন্দি নেওয়া হয়। তাঁকে নিয়ে এ মামলায় ৩৬ জন সাক্ষ্য দিলেন।
জবানবন্দিতে সাবেক আইজিপি বলেন, ‘আমার ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। আমাকে প্রথমে দেড় বছর এবং পরে আরও এক বছর আইজিপি হিসেবে এক্সটেনশন দেওয়া হয়। আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য সিনিয়র অফিসারদের মধ্যে গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক গ্রুপিং ছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর পুনরায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক রাজনৈতিক মেরুকরণ হয় এবং গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক বলয় তৈরি হয়। পুলিশ অফিসারেরা বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে এবং সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে পড়ে। এসব কারণে সিনিয়র অফিসারদের পক্ষে পুলিশকে কন্ট্রোল করার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে।’
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় আমি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ছিলাম। তখন আইজিপি ছিলেন জাবেদ পাটোয়ারী। আমি জানতে পারি, তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ৫০% ব্যালট ভর্তি করে রাখার পরামর্শ দেন। সরকারের পক্ষ থেকে সে মোতাবেক ডিসি, এসপি, ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি ও দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় তা বাস্তবায়ন করা হয়। আর যেসব পুলিশ কর্মকর্তা এসব নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করে, তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে বিপিএম ও পিপিএম পদক প্রদানের মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পুলিশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায়। কিছু কিছু পুলিশ কর্মকর্তা প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তাদের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল।’
চৌধুরী মামুন আরও বলেন, ‘তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় প্রায়ই রাতের বেলায় বৈঠক বসত এবং তা গভীর রাত পর্যন্ত চলত। যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ওইসব বৈঠকে অংশগ্রহণ করত, তাদের মধ্যে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবির অ্যাডিশনাল কমিশনার হারুন অর রশীদ, এসবির অ্যাডিশনাল আইজিপি মনিরুল ইসলাম, ঢাকার ডিআইজি নুরুল ইসলাম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি বিপ্লব কুমার, অ্যাডিশনাল এসপি কাফি, ওসি মাজহার, ওসি ফরমান, ওসি অপূর্ব হাসানসহ আরও বেশ কিছু কর্মকর্তা ছিল। তাদের কারও কারও সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি যোগাযোগ ছিল। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকার কারণে এসব পুলিশ কর্মকর্তা চেইন অব কমান্ড মানত না। কিন্তু আমি চাইতাম যে, তারা পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুক। প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মূলত দুটি গ্রুপ ছিল। একটি গ্রুপের নেতৃত্বে ছিল তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং অন্য গ্রুপের নেতৃত্বে ছিল তৎকালীন এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম। তাঁরা চাইতেন তাঁদের নিজস্ব বলয়ের লোকজন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং পাক এবং ঢাকায় থাকুক।’
জবানবন্দিতে র্যাব নিয়ে যা বললেন সাবেক আইজিপি
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় আমি জানতে পারি যে, র্যাবের হেডকোয়ার্টার কর্তৃক পরিচালিত উত্তরাস্থ র্যাব-১-এর কমপাউন্ডের ভেতরে টিএফআই সেল (টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেল) নামে একটি বন্দিশালা ছিল। অন্যান্য র্যাব ইউনিটের অধীনে আরও অনেকগুলো বন্দিশালা ছিল। এসব বন্দিশালায় রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী ও সরকারের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের আটক রেখে নির্যাতন করা হতো। যা একটি কালচারে পরিণত হয়েছিল। অপহরণ, গোপন বন্দিশালায় আটক, নির্যাতন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যার মতো কাজগুলো র্যাবের এডিজি ও র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকেরা সমন্বয় করতেন। র্যাব কর্তৃক কোনো ব্যক্তিকে উঠিয়ে আনা, আটক রাখা কিংবা হত্যা করার নির্দেশনাগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসত বলে শুনেছি। নির্দেশনাগুলো প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ও সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকের মাধ্যমে আসত বলে জানতে পারি। এ নির্দেশনাগুলো চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করে সরাসরি এডিজি (অপস) ও র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের (র্যাব ইন্ট) পরিচালকদের কাছে পাঠানো হতো।’
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমি র্যাবের ডিজি হিসেবে যোগদানের সময় আমার পূর্ববর্তী র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ আমাকে জানান যে, টিএফআই সেলে ব্যারিস্টার আরমান বন্দী আছে। আমি যোগদানের পরে র্যাব ইন্টের ডাইরেক্টর লেফটেনেন্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেমও আমাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। র্যাবের এডিজি (অপস) ও র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগ (র্যাব ইন্ট) সাধারণত সেনাবাহিনীর অফিসার থেকে নিয়োগ করা হতো। টিএফআই সেলে ব্যারিস্টার আরমানের বন্দী থাকার বিষয়টি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকের নিকট একাধিকবার উপস্থাপন করি এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানতে চাই। তিনি আমাকে পরে জানাবেন বলেন। কিন্তু পরে তিনি আর কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। আমি র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়ে আসার সময় পরবর্তী মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেনকে ব্যারিস্টার আরমানের সম্পর্কে অবহিত করি।’
সাবেক আইজিপি আরও বলেন, ‘র্যাব কর্মকর্তাদের মধ্যে অ্যাডিশনাল এসপি আলেপ উদ্দিন ও এসপি মহিউদ্দিন ফারুকী নামের দুজন অফিসারকে আমি চিনতাম, যারা বন্দীদের অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার মতো কাজে বিশেষ পারদর্শী ছিল। আলেপ উদ্দিন প্রথমে নারায়ণগঞ্জে ছিল। পরে তাকে র্যাব ইন্টেলে পদায়ন করা হয়। আমি র্যাব ডিজির দায়িত্ব পালনের সময় র্যাবের ডাইরেক্টর ইন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, লে. কর্নেল খাইরুল ইসলাম ও লে. কর্নেল মশিউর রহমান। এ ছাড়া এডিজি (অপস) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কর্নেল তোফায়েল, কর্নেল আজাদ ও কর্নেল কামরুল। আমার দায়িত্ব পালনকালে যদিও আমি র্যাব কর্তৃক মানুষকে বিনা বিচারে আটক, নির্যাতন ও কাউকে কাউকে ক্রসফায়ারে হত্যা করার মতো বিষয়গুলো জানতাম। কিন্তু আমি কোনো তদন্ত করিনি বা এগুলোর ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করিনি। এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্তগুলো বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে আসত এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে চেইন অব কমান্ড মানা হতো না।’
জুলাই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘গত বছর জুলাই আন্দোলন শুরু হওয়ার পর দেশব্যাপী সেনা মোতায়েন হয়। এরপর ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতেই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির সরকারি বাসায় কোর কমিটির মিটিং হতো। সেখানে আমাদের আন্দোলন দমনসহ সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হতো। কোর কমিটিতে আমিসহ সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) টিপু সুলতান, অতিরিক্ত সচিব রেজা মোস্তফা, এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, র্যাব ডিজি ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসারের ডিজি মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক, এনটিএমসির প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, ডিজিএফআইয়ের প্রধান ও এনএসআই প্রধানেরা উপস্থিত থাকতেন।’
সাবেক আইজিপি বলেন, ‘কোর কমিটির একটি বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করার সিদ্ধান্ত হয়। ডিজিএফআই ওই প্রস্তাব দেয়। আমি বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে আমি রাজি হই। ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ডিজিএফআই ও ডিবি তাদের আটক করে ডিবি হেফাজতে নিয়ে আসে। তাদের ডিবি হেফাজতে এনে আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আপস করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তাদের আত্মীয়স্বজনকেও ডিবিতে নিয়ে এসে চাপ দেওয়া হয়। সমন্বয়কদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে টেলিভিশনে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়। এ ব্যাপারে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ডিবিপ্রধান হারুনকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘‘জিন’’ বলে ডাকতেন। কারণ, সে সরকারের নির্দেশনা পালনে পারদর্শী ছিল। আন্দোলনের একপর্যায়ে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের নজরদারি, তাদের অবস্থান নির্ণয় ও গুলি করে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করা হয়। হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। যার পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন র্যাবের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ। পরে আন্দোলন দমনে সরাসরি লেথাল উইপন ব্যবহার করে এবং আন্দোলনপ্রবণ এলাকাগুলো ভাগ করে ব্লকরেইড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
মামুন বলেন, ‘১৮ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আমাকে ফোন করে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলন দমনে সরাসরি লেথাল উইপন ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। তখন আমি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে উপস্থিত ছিলাম এবং আমার সামনে অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় জোয়ার্দার উপস্থিত ছিলেন। আমি প্রলয় জোয়ার্দারকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানালে তিনি রুম থেকে বের হয়ে ডিএমপি কমিশনারসহ সারা দেশে এই নির্দেশনা পৌঁছে দেন। ওই দিন থেকে লেথাল উইপন ব্যবহার করা শুরু হয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান তাঁর অধীনস্ত কর্মকর্তাদের লেথাল উইপন ব্যবহারের নির্দেশনা দেন। লেথাল উইপন ব্যবহারের বিষয়ে অতি উৎসাহী ছিলেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল, যেকোনো মূল্যে আন্দোলন দমন করতে হবে।’
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মির্জা আযম, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন প্রধানমন্ত্রীকে মারণাস্ত্র ব্যবহারে প্ররোচিত করতেন। সারা দেশে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে ১৫ জুলাই ওবায়দুল কাদের, নানক মন্তব্য করেন যে, আন্দোলন দমনের জন্য ছাত্রলীগ ও যুবলীগই যথেষ্ট। এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ড্রোন, হেলিকপ্টার ও লেথাল উইপন ব্যবহার করে আন্দোলনরত অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে আহত ও নিহত করা হয়। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ক্যাডার বাহিনী ছাড়াও আন্দোলন দমনে সরকারকে উৎসাহিত করে আওয়ামীপন্থী বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীরা।’
শেখ হাসিনার পদত্যাগ যেভাবে
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘৪ আগস্ট বেলা ১১টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নিরাপত্তা সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তিন বাহিনীর প্রধান, এসবির প্রধান, ডিজিএফআইয়ের প্রধান, এনএসআইয়ের প্রধানসহ মোট ২৭ জন। আমি নিজেও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। ওই বৈঠকে আন্দোলন দমন ও নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পরিস্থিতির রিপোর্ট পেশ করছিল। ইতিমধ্যে চারদিকে পরিবেশ-পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় বৈঠকটি মুলতবি করা হয়। ওই দিন রাতের বেলায় আমাদের আবার গণভবনে ডাকা হয়। সেখানে আমি, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, র্যাবের ডিজি ও লে. জেনারেল মুজিব উপস্থিত ছিলাম। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। ডিজিএফআইয়ের প্রধান ও এসবির প্রধান মনিরুল বাইরে অপেক্ষমাণ ছিলেন। বৈঠকে ৫ আগস্ট আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ‘‘মার্চ টু ঢাকা’’ কর্মসূচি ঠেকানোর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে, পুলিশ ও সেনাবাহিনী সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবে। এরপর আমরা আর্মির অপারেশন কন্ট্রোল রুমে যাই। সেখানে আমি, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, র্যাবের ডিজি, লে. জেনারেল মুজিব, ডিজিএফআইয়ের প্রধান ও এসবির প্রধান মনিরুল এবং ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত ছিলাম। সেখানে ঢাকা শহরের প্রবেশমুখগুলোতে ফোর্স মোতায়েন করে কঠোর অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।’
সাবেক আইজিপি বলেন, ‘৪ আগস্ট মিটিং শেষে রাত সাড়ে ১২টায় আমরা আর্মির অপারেশন কন্ট্রোল রুম থেকে চলে আসি। ৫ তারিখ সকালে আমি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আমার দপ্তরে যাই। ইতিমধ্যে উত্তরা, যাত্রাবাড়ী ও বিভিন্ন পথ দিয়ে স্রোতের মতো ছাত্র-জনতা ঢাকা শহরে প্রবেশ করতে শুরু করে। দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টার দিকে জানতে পারি, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন। ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তিনি কোথায় যাবেন, তা আমরা জানতাম না। এরপর বিকেলবেলা আর্মির হেলিকপ্টার এসে আমাদের পুলিশ হেডাকোয়ার্টার্স থেকে প্রথমে তেজগাঁও বিমানবন্দরের হেলিপ্যাডে এবং সেখান থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের অফিসার্স মেসে নিয়ে যায়। হেলিকপ্টারে আমার সঙ্গে এসবির প্রধান মনিরুল, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিআইজি আমেনা ছিলেন। পরের শিফটে অ্যাডিশনাল ডিআইজি প্রলয়, অ্যাডিশনাল আইজি লুৎফুল কবিরসহ অন্যদের সেখানে নেওয়া হয়। ৬ তারিখ আইজিপি হিসেবে আমার নিয়োগ চুক্তি বাতিল করা হয়। ক্যান্টনমেন্টে অবস্থানকালে ৩ সেপ্টেম্বর আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
চৌধুরী মামুনের ক্ষমাপ্রার্থনা
চৌধুরী মামুন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে সরকারের আদেশে আন্দোলনকারীদের ওপর অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে তাদের আহত ও নিহত করায় আমি পুলিশপ্রধান হিসেবে লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাসহ ব্যাপক নৃশংসতার জন্য আমি অপরাধবোধে ও বিবেকের তাড়নায় অ্যাপ্রুভার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ট্রাইব্যুনালে এসে স্বজন হারানো ব্যক্তিদের কান্না, আহাজারি, চিকিৎসা প্রদানে বাধা দেওয়া-সংক্রান্ত ডাক্তার ও ভিকটিমদের বক্তব্য, ভিডিওতে নৃশংসতাগুলো দেখে অ্যাপ্রুভার হওয়ার সিদ্ধান্ত আরও যৌক্তিক মনে হয়েছে। বিশেষ করে, হত্যা করার পর লাশগুলো একত্র করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার বীভৎসতা আমাকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে।’
মামুন আরও বলেন, ‘আমি সাড়ে ৩৬ বছর পুলিশে চাকরি করেছি। পুলিশের চাকরি খুবই ট্রিকি। সব সময় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। চাকরি জীবনে আমার বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি সব সময় যথেষ্ট মানবিকতা ও সচেতনার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। চাকরিজীবনের শেষপর্যায়ে এসে এত বড় গণহত্যা আমার দায়িত্বকালে সংঘটিত হয়েছে, তার দায় আমি স্বীকার করছি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে এই গণহত্যা সংঘটিত হয়। আমি গণহত্যার শিকার প্রতিটি পরিবার, আহত ব্যক্তিবর্গ, দেশবাসী ও ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’ এ সময় তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাকে দয়া করে ক্ষমা করে দিবেন। আমার এই সত্য ও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনার মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটন হলে আল্লাহ যদি আমাকে আরও হায়াত দান করেন, বাকি জীবন কিছুটা হলেও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।’

লিখিত বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টিলগ্নে যে মৌলিক দুর্বলতার বীজ বপন করা হয়েছিল, তা কেন অব্যাহত রাখতে হবে, তা বোধগম্য নয়। কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের মধ্যে দুজনকে খণ্ডকালীন নিয়োগের বিধান বৈষম্যমূলক এবং সদস্যদের মধ্যে মর্যাদা ও এখতিয়ারে বিভাজন তৈরি করে, যা প্রতিষ্ঠানটির...
১৪ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অপর মামলায় মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
২৪ মিনিট আগে
বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব করতে সাংগঠনিক কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। বিনিয়োগের প্রতিটি ধাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নতুন কাঠামো সাজানো হয়েছে, যাতে বিনিয়োগকারীরা আরও দ্রুত এবং কার্যকর সেবা পান।
১ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এটিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার সঙ্গে মিলিয়ে কিছু বিরূপ মন্তব্য করেছেন। তবে আজ রোববার ফেসবুকের এক পোস্টে বিষয়টি খোলাসা করেছেন উপদেষ্টা নিজেই। সেই সঙ্গে সাত ঘণ্টা আগে দেওয়া ওই পোস্টে উপদেষ্টা জানতে চেয়েছেন, এ উপহার নিয়ে তিনি কী করবেন।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ বৈষম্যমূলক কমিশন গঠনে সহায়ক ধারা ও প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীনতা ক্ষুণ্নের ঝুঁকি সৃষ্টিকারী দুর্বল বিধান অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন এনে কমিশনকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে।
আজ রোববার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা জানান।
এই অধ্যাদেশের ফলে মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে বলেও মনে করে টিআইবি।
লিখিত বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টিলগ্নে যে মৌলিক দুর্বলতার বীজ বপন করা হয়েছিল, তা কেন অব্যাহত রাখতে হবে, তা বোধগম্য নয়। কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের মধ্যে দুজনকে খণ্ডকালীন নিয়োগের বিধান বৈষম্যমূলক এবং সদস্যদের মধ্যে মর্যাদা ও এখতিয়ারে বিভাজন তৈরি করে, যা প্রতিষ্ঠানটির অকার্যকরতার অন্যতম কারণ।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশনের সব সদস্যের পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও দায়িত্ব-কর্তব্যে সমতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি এই বিধান সংশোধন করে কমিশনের কার্যক্রমে গতিশীলতা ও কার্যকরতা আনা জরুরি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, চেয়ারপারসন ও কমিশনার বাছাইয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া এবং প্রাথমিকভাবে বাছাই করা প্রার্থীদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশের প্রস্তাব টিআইবি দিয়েছিল, কিন্তু তা গৃহীত হয়নি। তা ছাড়া কোনো সংস্থার আটকস্থল যদি কমিশনের নিকট আইনবহির্ভূত মনে হয়, তবে তা বন্ধের ক্ষমতা ও দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের সুপারিশও উপেক্ষিত হয়েছে, যা হতাশাজনক।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, মানবাধিকার সংরক্ষণের পরিপন্থী কোনো আইন সংশোধনের সুপারিশ করার ক্ষমতা কমিশনের থাকা উচিত।
টিআইবির মতে, অধ্যাদেশে ধারা ১৪-তে ‘মানবাধিকারসংক্রান্ত অন্য কোনো আইন এই আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে এই আইন প্রাধান্য পাবে’–এই অংশ যুক্ত করা হলে ভবিষ্যতে মানবাধিকার বিষয়ে আইনগত সংঘাত এড়ানো সহজ হতো।
এ ছাড়া সব অভিযোগে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক অনুসন্ধানের বিধান বাতিল করে আমলযোগ্য অভিযোগে সরাসরি তদন্তের সুযোগ রাখার প্রস্তাবও গৃহীত হয়নি।
টিআইবির আশঙ্কা, এতে অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হবে এবং ভুক্তভোগীর হয়রানি ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কর্মকর্তা বা সরকারি কর্মচারীকে কমিশনে প্রেষণে নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সীমা নির্ধারণ এবং প্রেষণপ্রক্রিয়াকে যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালনার প্রস্তাবও অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এমনকি কমিশনের দ্বিমতের ভিত্তিতে কোনো প্রেষণ প্রত্যাখ্যানের সুযোগের বিধান রাখার সুপারিশও বিবেচিত হয়নি।
টিআইবি মনে করে, কমিশনের আয়-ব্যয়ের বার্ষিক নিরীক্ষা সম্পন্নের পর তা ওয়েবসাইটে প্রকাশের বিধান যুক্ত করা উচিত। এসব সংস্কারই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।

উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ বৈষম্যমূলক কমিশন গঠনে সহায়ক ধারা ও প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীনতা ক্ষুণ্নের ঝুঁকি সৃষ্টিকারী দুর্বল বিধান অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন এনে কমিশনকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে।
আজ রোববার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা জানান।
এই অধ্যাদেশের ফলে মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে বলেও মনে করে টিআইবি।
লিখিত বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টিলগ্নে যে মৌলিক দুর্বলতার বীজ বপন করা হয়েছিল, তা কেন অব্যাহত রাখতে হবে, তা বোধগম্য নয়। কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের মধ্যে দুজনকে খণ্ডকালীন নিয়োগের বিধান বৈষম্যমূলক এবং সদস্যদের মধ্যে মর্যাদা ও এখতিয়ারে বিভাজন তৈরি করে, যা প্রতিষ্ঠানটির অকার্যকরতার অন্যতম কারণ।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশনের সব সদস্যের পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও দায়িত্ব-কর্তব্যে সমতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি এই বিধান সংশোধন করে কমিশনের কার্যক্রমে গতিশীলতা ও কার্যকরতা আনা জরুরি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, চেয়ারপারসন ও কমিশনার বাছাইয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া এবং প্রাথমিকভাবে বাছাই করা প্রার্থীদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশের প্রস্তাব টিআইবি দিয়েছিল, কিন্তু তা গৃহীত হয়নি। তা ছাড়া কোনো সংস্থার আটকস্থল যদি কমিশনের নিকট আইনবহির্ভূত মনে হয়, তবে তা বন্ধের ক্ষমতা ও দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের সুপারিশও উপেক্ষিত হয়েছে, যা হতাশাজনক।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, মানবাধিকার সংরক্ষণের পরিপন্থী কোনো আইন সংশোধনের সুপারিশ করার ক্ষমতা কমিশনের থাকা উচিত।
টিআইবির মতে, অধ্যাদেশে ধারা ১৪-তে ‘মানবাধিকারসংক্রান্ত অন্য কোনো আইন এই আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে এই আইন প্রাধান্য পাবে’–এই অংশ যুক্ত করা হলে ভবিষ্যতে মানবাধিকার বিষয়ে আইনগত সংঘাত এড়ানো সহজ হতো।
এ ছাড়া সব অভিযোগে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক অনুসন্ধানের বিধান বাতিল করে আমলযোগ্য অভিযোগে সরাসরি তদন্তের সুযোগ রাখার প্রস্তাবও গৃহীত হয়নি।
টিআইবির আশঙ্কা, এতে অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হবে এবং ভুক্তভোগীর হয়রানি ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কর্মকর্তা বা সরকারি কর্মচারীকে কমিশনে প্রেষণে নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সীমা নির্ধারণ এবং প্রেষণপ্রক্রিয়াকে যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালনার প্রস্তাবও অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এমনকি কমিশনের দ্বিমতের ভিত্তিতে কোনো প্রেষণ প্রত্যাখ্যানের সুযোগের বিধান রাখার সুপারিশও বিবেচিত হয়নি।
টিআইবি মনে করে, কমিশনের আয়-ব্যয়ের বার্ষিক নিরীক্ষা সম্পন্নের পর তা ওয়েবসাইটে প্রকাশের বিধান যুক্ত করা উচিত। এসব সংস্কারই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদ
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অপর মামলায় মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
২৪ মিনিট আগে
বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব করতে সাংগঠনিক কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। বিনিয়োগের প্রতিটি ধাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নতুন কাঠামো সাজানো হয়েছে, যাতে বিনিয়োগকারীরা আরও দ্রুত এবং কার্যকর সেবা পান।
১ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এটিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার সঙ্গে মিলিয়ে কিছু বিরূপ মন্তব্য করেছেন। তবে আজ রোববার ফেসবুকের এক পোস্টে বিষয়টি খোলাসা করেছেন উপদেষ্টা নিজেই। সেই সঙ্গে সাত ঘণ্টা আগে দেওয়া ওই পোস্টে উপদেষ্টা জানতে চেয়েছেন, এ উপহার নিয়ে তিনি কী করবেন।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অপর মামলায় মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
আজ রোববার পৃথক আদেশে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই নির্দেশ দেন।
অভিযোগ গঠনের আগে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনাল ইনুর কাছে জানতে চান, তিনি অভিযোগগুলো শুনতে পেয়েছেন কি না।
জবাবে ইনু জানান, তিনি কিছু শুনতে পেয়েছেন, কিছু শুনতে পাননি।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘আপনি দোষ স্বীকার করবেন কি না বলুন?’
ইনু বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা দুবার বলেছেন, দেশে গায়েবি মামলা হচ্ছে। আইন উপদেষ্টাও গায়েবি মামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আমি রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার, গায়েবি মামলার ঝড়ে আক্রান্ত। আমি মনে করি, আল্লাহর পর বিচার নিষ্পত্তির প্রতিনিধি আপনি। আপনি ন্যায়বিচার করবেন। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।’
পরে অভিযোগ গঠন করে ৩০ নভেম্বর এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী ও কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। তাঁরা সবাই পলাতক।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, যেহেতু আসামিরা উপস্থিত নেই, তাই তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো পঠিত বলে গণ্য হবে। পরে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ২৫ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়।
গত ২৮ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষে দুই মামলায় আদেশের জন্য আজ দিন ধার্য করা হয়েছিল।
সে অনুযায়ী আজ অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইনুর আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। আর পলাতক মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
চানখাঁরপুলের ঘটনায় সাক্ষ্য গ্রহণ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ রোকনুজ্জামান। তিনি পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে কর্মরত রয়েছেন।
এ ছাড়া সাক্ষ্য দিয়েছেন একই সংস্থার ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের উপপরিদর্শক শাহেদ জোবায়ের লরেন্স। তাঁরা এ মামলায় উদ্ধার করা আলামত যাচাই-বাছাইয়ের বর্ণনা দেন।
পরে তাঁদের জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। এ নিয়ে এ মামলায় মোট ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাঁদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অপর মামলায় মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
আজ রোববার পৃথক আদেশে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই নির্দেশ দেন।
অভিযোগ গঠনের আগে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনাল ইনুর কাছে জানতে চান, তিনি অভিযোগগুলো শুনতে পেয়েছেন কি না।
জবাবে ইনু জানান, তিনি কিছু শুনতে পেয়েছেন, কিছু শুনতে পাননি।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘আপনি দোষ স্বীকার করবেন কি না বলুন?’
ইনু বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা দুবার বলেছেন, দেশে গায়েবি মামলা হচ্ছে। আইন উপদেষ্টাও গায়েবি মামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আমি রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার, গায়েবি মামলার ঝড়ে আক্রান্ত। আমি মনে করি, আল্লাহর পর বিচার নিষ্পত্তির প্রতিনিধি আপনি। আপনি ন্যায়বিচার করবেন। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।’
পরে অভিযোগ গঠন করে ৩০ নভেম্বর এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী ও কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। তাঁরা সবাই পলাতক।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, যেহেতু আসামিরা উপস্থিত নেই, তাই তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো পঠিত বলে গণ্য হবে। পরে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ২৫ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়।
গত ২৮ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষে দুই মামলায় আদেশের জন্য আজ দিন ধার্য করা হয়েছিল।
সে অনুযায়ী আজ অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইনুর আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। আর পলাতক মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
চানখাঁরপুলের ঘটনায় সাক্ষ্য গ্রহণ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ রোকনুজ্জামান। তিনি পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে কর্মরত রয়েছেন।
এ ছাড়া সাক্ষ্য দিয়েছেন একই সংস্থার ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের উপপরিদর্শক শাহেদ জোবায়ের লরেন্স। তাঁরা এ মামলায় উদ্ধার করা আলামত যাচাই-বাছাইয়ের বর্ণনা দেন।
পরে তাঁদের জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। এ নিয়ে এ মামলায় মোট ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাঁদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদ
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
লিখিত বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টিলগ্নে যে মৌলিক দুর্বলতার বীজ বপন করা হয়েছিল, তা কেন অব্যাহত রাখতে হবে, তা বোধগম্য নয়। কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের মধ্যে দুজনকে খণ্ডকালীন নিয়োগের বিধান বৈষম্যমূলক এবং সদস্যদের মধ্যে মর্যাদা ও এখতিয়ারে বিভাজন তৈরি করে, যা প্রতিষ্ঠানটির...
১৪ মিনিট আগে
বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব করতে সাংগঠনিক কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। বিনিয়োগের প্রতিটি ধাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নতুন কাঠামো সাজানো হয়েছে, যাতে বিনিয়োগকারীরা আরও দ্রুত এবং কার্যকর সেবা পান।
১ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এটিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার সঙ্গে মিলিয়ে কিছু বিরূপ মন্তব্য করেছেন। তবে আজ রোববার ফেসবুকের এক পোস্টে বিষয়টি খোলাসা করেছেন উপদেষ্টা নিজেই। সেই সঙ্গে সাত ঘণ্টা আগে দেওয়া ওই পোস্টে উপদেষ্টা জানতে চেয়েছেন, এ উপহার নিয়ে তিনি কী করবেন।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব করতে সাংগঠনিক কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। বিনিয়োগের প্রতিটি ধাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নতুন কাঠামো সাজানো হয়েছে, যাতে বিনিয়োগকারীরা আরও দ্রুত এবং কার্যকর সেবা পান।
আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিডা জানায়, নতুন কাঠামোর ফলে দায়িত্ব ও কর্তব্যে আসবে স্পষ্টতা, কাজের গতি বাড়বে এবং সেবার মান উন্নত হবে। পাশাপাশি সেবার মান মূল্যায়নের জন্য সূচকভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি ‘কি পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটরস’ (কেপিআই)—চালু করা হয়েছে।
নতুন কাঠামোয় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাহী সদস্যপদে সরকারি কর্মকর্তার পাশাপাশি বেসরকারি খাতের পেশাজীবীদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি এবং ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন ইউনিটকে পৃথকভাবে গঠন, প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ ডেস্ক চালু এবং খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার নিয়োগের উদ্যোগ।
বিডার এই পুনর্গঠন সরকারের ঘোষিত ৩২ দফা বিনিয়োগ পরিবেশ সংস্কার কর্মপরিকল্পনার অংশ। এর লক্ষ্য, বাংলাদেশকে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
নতুন কাঠামো অনুযায়ী বিডার কার্যক্রম পরিচালিত হবে পাঁচটি মূল অনুবিভাগ বা উইংয়ের মাধ্যমে—ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি, অপারেশনস, ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। প্রতিটি ইউনিট বিনিয়োগের জীবনচক্রের নির্দিষ্ট পর্যায়ে কাজ করবে।
গত শনিবার রাজধানীর বিডা মাল্টিপারপাস হলে নতুন কাঠামো নিয়ে আয়োজিত অবহিতকরণ সভায় সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, বিডা কোনো সাধারণ সরকারি দপ্তর নয়; এটি বিনিয়োগকারীকেন্দ্রিক একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান। বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ পরিবেশ দ্রুত বদলাচ্ছে—আমাদেরও সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এই কাঠামোগত সংস্কার দেশি ও বিদেশি অংশীজনদের দীর্ঘদিনের পরামর্শের ফল। এখন আমরা সেটিকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছি।
এদিকে সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের জাতীয় কমিটি ইতিমধ্যে দেশের সব বিনিয়োগ সংস্থা (আইপিএ) একীভূত করার রোডম্যাপ প্রণয়ন করছে। এতে বিনিয়োগকারীরা বিচ্ছিন্ন সেবার পরিবর্তে একক প্ল্যাটফর্ম থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবেন।
বিডা জানিয়েছে, নতুন কাঠামোর বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং শিগগিরই এর বিস্তারিত তথ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব করতে সাংগঠনিক কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। বিনিয়োগের প্রতিটি ধাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নতুন কাঠামো সাজানো হয়েছে, যাতে বিনিয়োগকারীরা আরও দ্রুত এবং কার্যকর সেবা পান।
আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিডা জানায়, নতুন কাঠামোর ফলে দায়িত্ব ও কর্তব্যে আসবে স্পষ্টতা, কাজের গতি বাড়বে এবং সেবার মান উন্নত হবে। পাশাপাশি সেবার মান মূল্যায়নের জন্য সূচকভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি ‘কি পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটরস’ (কেপিআই)—চালু করা হয়েছে।
নতুন কাঠামোয় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাহী সদস্যপদে সরকারি কর্মকর্তার পাশাপাশি বেসরকারি খাতের পেশাজীবীদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি এবং ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন ইউনিটকে পৃথকভাবে গঠন, প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ ডেস্ক চালু এবং খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার নিয়োগের উদ্যোগ।
বিডার এই পুনর্গঠন সরকারের ঘোষিত ৩২ দফা বিনিয়োগ পরিবেশ সংস্কার কর্মপরিকল্পনার অংশ। এর লক্ষ্য, বাংলাদেশকে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
নতুন কাঠামো অনুযায়ী বিডার কার্যক্রম পরিচালিত হবে পাঁচটি মূল অনুবিভাগ বা উইংয়ের মাধ্যমে—ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি, অপারেশনস, ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। প্রতিটি ইউনিট বিনিয়োগের জীবনচক্রের নির্দিষ্ট পর্যায়ে কাজ করবে।
গত শনিবার রাজধানীর বিডা মাল্টিপারপাস হলে নতুন কাঠামো নিয়ে আয়োজিত অবহিতকরণ সভায় সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, বিডা কোনো সাধারণ সরকারি দপ্তর নয়; এটি বিনিয়োগকারীকেন্দ্রিক একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান। বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ পরিবেশ দ্রুত বদলাচ্ছে—আমাদেরও সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এই কাঠামোগত সংস্কার দেশি ও বিদেশি অংশীজনদের দীর্ঘদিনের পরামর্শের ফল। এখন আমরা সেটিকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছি।
এদিকে সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের জাতীয় কমিটি ইতিমধ্যে দেশের সব বিনিয়োগ সংস্থা (আইপিএ) একীভূত করার রোডম্যাপ প্রণয়ন করছে। এতে বিনিয়োগকারীরা বিচ্ছিন্ন সেবার পরিবর্তে একক প্ল্যাটফর্ম থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবেন।
বিডা জানিয়েছে, নতুন কাঠামোর বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং শিগগিরই এর বিস্তারিত তথ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদ
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
লিখিত বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টিলগ্নে যে মৌলিক দুর্বলতার বীজ বপন করা হয়েছিল, তা কেন অব্যাহত রাখতে হবে, তা বোধগম্য নয়। কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের মধ্যে দুজনকে খণ্ডকালীন নিয়োগের বিধান বৈষম্যমূলক এবং সদস্যদের মধ্যে মর্যাদা ও এখতিয়ারে বিভাজন তৈরি করে, যা প্রতিষ্ঠানটির...
১৪ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অপর মামলায় মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
২৪ মিনিট আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এটিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার সঙ্গে মিলিয়ে কিছু বিরূপ মন্তব্য করেছেন। তবে আজ রোববার ফেসবুকের এক পোস্টে বিষয়টি খোলাসা করেছেন উপদেষ্টা নিজেই। সেই সঙ্গে সাত ঘণ্টা আগে দেওয়া ওই পোস্টে উপদেষ্টা জানতে চেয়েছেন, এ উপহার নিয়ে তিনি কী করবেন।
১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ঢাকায় নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেল ওহাব সালদানি একটি নৌকা উপহার দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে। গতকাল শনিবার (১ অক্টোবর) আলজেরিয়া বিপ্লবের ৭১তম বার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ উপহার দেন। তবে এই উপহার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এটিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার সঙ্গে মিলিয়ে কিছু বিরূপ মন্তব্য করেছেন। তবে আজ রোববার ফেসবুকের এক পোস্টে বিষয়টি খোলাসা করেছেন উপদেষ্টা নিজেই। সেই সঙ্গে সাত ঘণ্টা আগে দেওয়া ওই পোস্টে উপদেষ্টা জানতে চেয়েছেন, এ উপহার নিয়ে তিনি কী করবেন।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির লিখেছেন, ‘গত সন্ধ্যায় আলজেরিয়ার জাতীয় দিবসে, আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনোনয়নক্রমে, প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেই। অনুষ্ঠানে আমাকে পালতোলা দাঁড় পরিচালনাকারী মাঝিসহ নৌকার প্রতিকৃতি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। কূটনৈতিক সৌজন্যবশত আমি তা গ্রহণ করি। উপহারটিতে দূতাবাসের নাম লিখিত আছে। লক্ষ করুন, এটার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীকের কোনো মিল নেই।’
পরামর্শ চেয়ে তিনি লেখেন, ‘এখন আমি এটি আলজেরীয় দূতাবাসে ফেরত পাঠাতে পারি। এটা অসৌজন্যমূলক ও হীনমন্যতার শামিল হবে; সরকারি তোশাখানায় জমা দিতে পারি। যদিও এটা খুব মূল্যবান কিছু নয়; শৈলান প্রবীণ নিবাসে রাখতে পারি; অথবা নিজে রেখে দিতে পারি।’
শেষে তিনি লেখেন, ‘পাঠকের পরামর্শ পেলে উপকৃত হব।’
উপদেষ্টার ওই পোস্টে প্রায় ৬৩২টি মন্তব্য দেখা গেছে। এখানে বিভিন্নজন বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। লোকমান হাকিম নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, ‘সবদিক বিবেচনায় সরাসরি তোশাখানায় জমা দিতে পারেন স্যার।’ ওয়াহিদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘আপনার মতো বিচক্ষণ ব্যক্তি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারদর্শী তাই অন্যের পরামর্শ প্রয়োজন নাই।’
মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, ‘তোষাখানায় জমা দেয়াই উত্তম। আর সঙ্গে অবশ্যই আলজেরিয়ার দুতাবাস কে ভবিষ্যত এর পরিবর্তে অন্য কোনো কিছু যেমন জাতীয় স্মৃতিসৌধ ইত্যাদি দেয়ার পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।’
মাহবুব আলম নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, ‘স্যার, শৈলান প্রবীণ নিবাসে রেখে দেন, আমাদের শ্রদ্ধাভাজন সিনিয়র সিটিজেন রা তাদের শৈশবের নৌকা আর খাল-বিল এর স্মৃতি চারন করতে পারবে।’
সর্বশেষ এক ঘণ্টা আগে দেওয়া এক পোস্টে উপদেষ্টা জানিয়েছেন, তিনি আলজেরীয় দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত উপহারটি সরকারি তোষাখানায় সংরক্ষণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন। সেই সঙ্গে ফেসবুকে মতামতের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
উপদেষ্টা তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘গত রাতে আলজেরীয় দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত উপহারটি সরকারি তোষাখানায় সংরক্ষণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রেরণ করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তর থেকে এ জন্য প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দেয়া হয়েছে। আপনাদের মতামতের জন্য ধন্যবাদ।’
প্রসঙ্গত, গতকাল রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ঢাকার আলজেরিয়া দূতাবাস ১৯৫৪ সালের গৌরবময় বিপ্লবের ৭১তম বার্ষিকী উদ্যাপন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে নৌকা উপহার দেন ঢাকায় নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেল ওহাব সালদানি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা অংশ নেন।

ঢাকায় নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেল ওহাব সালদানি একটি নৌকা উপহার দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে। গতকাল শনিবার (১ অক্টোবর) আলজেরিয়া বিপ্লবের ৭১তম বার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ উপহার দেন। তবে এই উপহার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এটিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার সঙ্গে মিলিয়ে কিছু বিরূপ মন্তব্য করেছেন। তবে আজ রোববার ফেসবুকের এক পোস্টে বিষয়টি খোলাসা করেছেন উপদেষ্টা নিজেই। সেই সঙ্গে সাত ঘণ্টা আগে দেওয়া ওই পোস্টে উপদেষ্টা জানতে চেয়েছেন, এ উপহার নিয়ে তিনি কী করবেন।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির লিখেছেন, ‘গত সন্ধ্যায় আলজেরিয়ার জাতীয় দিবসে, আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনোনয়নক্রমে, প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেই। অনুষ্ঠানে আমাকে পালতোলা দাঁড় পরিচালনাকারী মাঝিসহ নৌকার প্রতিকৃতি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। কূটনৈতিক সৌজন্যবশত আমি তা গ্রহণ করি। উপহারটিতে দূতাবাসের নাম লিখিত আছে। লক্ষ করুন, এটার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীকের কোনো মিল নেই।’
পরামর্শ চেয়ে তিনি লেখেন, ‘এখন আমি এটি আলজেরীয় দূতাবাসে ফেরত পাঠাতে পারি। এটা অসৌজন্যমূলক ও হীনমন্যতার শামিল হবে; সরকারি তোশাখানায় জমা দিতে পারি। যদিও এটা খুব মূল্যবান কিছু নয়; শৈলান প্রবীণ নিবাসে রাখতে পারি; অথবা নিজে রেখে দিতে পারি।’
শেষে তিনি লেখেন, ‘পাঠকের পরামর্শ পেলে উপকৃত হব।’
উপদেষ্টার ওই পোস্টে প্রায় ৬৩২টি মন্তব্য দেখা গেছে। এখানে বিভিন্নজন বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। লোকমান হাকিম নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, ‘সবদিক বিবেচনায় সরাসরি তোশাখানায় জমা দিতে পারেন স্যার।’ ওয়াহিদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘আপনার মতো বিচক্ষণ ব্যক্তি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারদর্শী তাই অন্যের পরামর্শ প্রয়োজন নাই।’
মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, ‘তোষাখানায় জমা দেয়াই উত্তম। আর সঙ্গে অবশ্যই আলজেরিয়ার দুতাবাস কে ভবিষ্যত এর পরিবর্তে অন্য কোনো কিছু যেমন জাতীয় স্মৃতিসৌধ ইত্যাদি দেয়ার পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।’
মাহবুব আলম নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, ‘স্যার, শৈলান প্রবীণ নিবাসে রেখে দেন, আমাদের শ্রদ্ধাভাজন সিনিয়র সিটিজেন রা তাদের শৈশবের নৌকা আর খাল-বিল এর স্মৃতি চারন করতে পারবে।’
সর্বশেষ এক ঘণ্টা আগে দেওয়া এক পোস্টে উপদেষ্টা জানিয়েছেন, তিনি আলজেরীয় দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত উপহারটি সরকারি তোষাখানায় সংরক্ষণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন। সেই সঙ্গে ফেসবুকে মতামতের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
উপদেষ্টা তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘গত রাতে আলজেরীয় দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত উপহারটি সরকারি তোষাখানায় সংরক্ষণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রেরণ করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তর থেকে এ জন্য প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দেয়া হয়েছে। আপনাদের মতামতের জন্য ধন্যবাদ।’
প্রসঙ্গত, গতকাল রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ঢাকার আলজেরিয়া দূতাবাস ১৯৫৪ সালের গৌরবময় বিপ্লবের ৭১তম বার্ষিকী উদ্যাপন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে নৌকা উপহার দেন ঢাকায় নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেল ওহাব সালদানি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা অংশ নেন।

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদ
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
লিখিত বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টিলগ্নে যে মৌলিক দুর্বলতার বীজ বপন করা হয়েছিল, তা কেন অব্যাহত রাখতে হবে, তা বোধগম্য নয়। কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের মধ্যে দুজনকে খণ্ডকালীন নিয়োগের বিধান বৈষম্যমূলক এবং সদস্যদের মধ্যে মর্যাদা ও এখতিয়ারে বিভাজন তৈরি করে, যা প্রতিষ্ঠানটির...
১৪ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অপর মামলায় মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
২৪ মিনিট আগে
বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব করতে সাংগঠনিক কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। বিনিয়োগের প্রতিটি ধাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নতুন কাঠামো সাজানো হয়েছে, যাতে বিনিয়োগকারীরা আরও দ্রুত এবং কার্যকর সেবা পান।
১ ঘণ্টা আগে