Ajker Patrika

খুলনায় নারী ফুটবলারদের ওপর হামলার ঘটনায় এমএসএফের নিন্দা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
খুলনায় নারী ফুটবলারদের ওপর হামলার ঘটনায় এমএসএফের নিন্দা

খুলনায় নারী ফুটবলারদের ওপর হামলার ঘটনায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নারীদের জন্য নির্বিঘ্নে খেলাধুলা ও চলাফেরার সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারা রাষ্ট্রের দুর্বলতা বলে মনে করছে সংস্থাটি। আজ বুধবার গণমাধ্যম পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৯ জুলাই সন্ধ্যায় খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা স্কুলমাঠ এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন যুবক বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-ও চ্যাম্পিয়ন দলের নারী ফুটবলার মঙ্গলী বাগচী, হাজেরা খাতুন, জুই মণ্ডল এবং সাদিয়া নাসরিনের ওপর হামলা ও তাঁদের লাঞ্ছিত করে আহত ও পরিবারের সদস্যদের মারধর করার ঘটনায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি নারীদের প্রতি বৈষম্য ও বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করায় দ্রুততার সঙ্গে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণসহ সামাজিক সচেতনতা তৈরি এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিষয়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে বলা হয়, খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা গ্রামের সাদিয়া নাসরিন খুলনার অনূর্ধ্ব-ও দলের ফুটবলার। স্থানীয় ‘সুপার কুইন ফুটবল একাডেমিতে’ নিয়মিত অনুশীলন করেন তিনি। সুপার কুইন ফুটবল একাডেমি মেয়েদের একটি ফুটবল ক্লাব, যা পরিচালনা করেন উক্ত স্কুলের শিক্ষক এবং স্থানীয় কয়েকজন ক্রীড়া সংগঠক। সেখানকার স্কুল ও কলেজে পড়ুয়া অনেক মেয়ে নিয়মিত ফুটবল প্র্যাকটিস করে থাকেন। ২৭ জুলাই যখন মেয়েরা ফুটবল খেলছিলেন তখন নুপুর খাতুন নামের এক তরুণী একটি ছবি তোলেন। সেদিন খেলা শেষে বাসায় ফিরে সাদিয়া নাসরিন জানতে পারেন তরুণীটি সাদিয়ার মা এবং আত্মীয়স্বজনকে মাঠে তোলা ছবি পাঠিয়ে তাঁর ‘পোশাক নিয়ে কটূক্তি করেছে’।

পরে ২৯ জুলাই বিকেলে নুপুরদের বাসায় গিয়ে তার ছবি তোলা ও তা পাঠানোর কারণ জানতে চান সাদিয়া। বিষয়টি নিয়ে কথোপকথনের একপর্যায়ে হাতাহাতিতে গড়ায়। এ সময় নুপুর ও তার মা সাদিয়াকে মারধর করেন। বাড়িতে গিয়ে সাদিয়া তার মাকে সব ঘটনা জানালে সন্ধ্যার পর সাদিয়ার মা, নানি ও বন্ধু মঙ্গলী নুপুরদের বাসায় গিয়ে নুপুরের বাবার কাছে সাদিয়াকে মারধরের কারণ জানতে চান। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে নুপুরের মা সাদিয়ার মাকে আঘাত করেন। সাদিয়ার বন্ধু মঙ্গলী বাগচী বাধা দিতে গেলে তাকেও আঘাত করা হয়। পরে নুপুরের বাবা লোহার রড দিয়ে মঙ্গলীর মাথায় আঘাত করেন। 

বিষয়টি ক্লাবের কোচ মুস্তাকুজ্জামান মুস্তাক ও অন্যান্য খেলোয়াড়কে জানানো হলে, তারা নুপুরদের বাড়িতে যান। এতে নুপুরের পরিবারের লোকজন ক্ষুব্ধ হন। পরে আলাউদ্দিন, সালাউদ্দিন, নুর আলম, রঞ্জি বেগম, নুপুর ও মনোয়ারা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে মঙ্গলীসহ সাদিয়া, হাজেরা ও জুই আহত হন। 

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মনে করে, নারী ফুটবলারদের ওপরে যে আচরণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক, অন্যায় ও অনভিপ্রেত। আধুনিক এই সময়ে যেখানে বিশ্বব্যাপী নারীদের সর্বক্ষেত্রে খেলাধুলায় উৎসাহিত করা হচ্ছে, সেখানে একটি রাষ্ট্রের নারী ফুটবলারদের ওপর এই ধরনের নারী বিদ্বেষী হামলা ও মারধরের ঘটনা কারও কাম্য হতে পারে না। নারীদের জন্য নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে জীবন যাপন, খেলাধুলা ও চলাফেরার মতো সহায়ক উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারা রাষ্ট্রের দুর্বলতা। এমএসএফ সমাজে নারীদের প্রতি যে কোনো ধরনের সহিংসতারোধে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি  দ্রুততার সঙ্গে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণসহ সামাজিক সচেতনতা তৈরি এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলা ও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধের বিষয়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত