Ajker Patrika

ই-কমার্সে শৃঙ্খলা ফেরাতে সিপিডির ৭ সুপারিশ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০: ৩৯
ই-কমার্সে শৃঙ্খলা ফেরাতে সিপিডির ৭ সুপারিশ 

অনলাইন বাণিজ্য বা ই-কমার্সে শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন সাতটি সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এর জন্য আলাদাভাবে কোন নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের প্রয়োজন নেই। শনিবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় বক্তারা জানান, বিদ্যমান যেসব আইন রয়েছে সেগুলো দিয়েই ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। 

ওয়েবিনারে ই-কমার্স খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, শৃঙ্খলা ও গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সাতটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশে বলা হয়, বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান সংশোধন করে প্রতারক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পর্যাপ্ত, দক্ষ মানবসম্পদ ও প্রযুক্তি উদ্যোগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট এবং প্রতিযোগিতা কমিশনের মতো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে। 

সুপারিশে আরও বলা হয়, ই-কমার্সের ওপর নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করা উচিত এবং জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) মতো বেসরকারি সংস্থার নিবন্ধনের আগে নতুন ব্যবসার ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ, স্থায়িত্ব যাচাই এবং ব্যবসার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে সদস্যপদ দিতে হবে। এ ছাড়া প্রতারক প্রতিষ্ঠানে জনগণ যেন বিনিয়োগ না করে সে জন্য সরকারকে কোম্পানি আইনের আইনি কাঠামোর মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে সুপারিশ করা হয়।

আলোচনাসভায় বিডি জবসের প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর জানান, ই-কমার্সে শৃঙ্খলা আনতে হলে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরও কার্যকর করতে হবে। ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যর্থ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের চোখের সামনে এসব ঘটনা ঘটেছে। দেশের অসংখ্য তরুণ বেকার। তারাই ই-কমার্সে বিনিয়োগ করছে। চাকরি না থাকলে তো এখানে আসবেই। ব্যাংকের সুদের হার কম। শেয়ারবাজারও নিরাপদ নয়। তাহলে তরুণ জনগোষ্ঠী যাবে কোথায়?’ 

আইনজীবী তানজীব উল আলম বলেন, ‘বিদ্যমান আইনেই সব সমস্যার সমাধান আছে। একই সঙ্গে যেহেতু এ খাতের কেউ নতুন করে আইন চায় না, তাই সরকারের আগ বাড়িয়ে উচিত হবে না নতুন করে কোনো আইন কিংবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করা। নতুন প্রতিষ্ঠান করলে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান আরও দুর্বল হবে।’ 

ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘ই-কমার্স নতুন একটি শিল্প। ই-কমার্সে যা কিছু ঘটেছে, তাতে একক কাউকে দোষ না দিয়ে বলা যায়, এখানে সবারই দোষ ছিল। যে টাকা লোপাট হয়েছে, এখন জরুরি সেই টাকা ফিরিয়ে আনা।’ 

চালডাল ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিম আলিম বলেন, ‘ই-কমার্সে শৃঙ্খলা ফেরাতে আলাদা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ই-কমার্সকে আরও কঠিন করে ফেলবে। সরকারের বিদ্যমান যেসব সংস্থা আছে, তাদের মাধ্যমে নজরদারি বাড়ালে সেটি আরও বেশি কার্যকর হবে।’ 

ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ‘তিন বছর আগেই সরকারকে বলেছিলাম একটা জটিলতা তৈরি হতে পারে। ই-কমার্সে যে স্বচ্ছতা নেই, তা সরকারকে জানানো হয়েছিল। ইভ্যালিসহ অন্যদের বিজনেস মডেল নিয়ে অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু তখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ 

ওয়েবিনারের সমাপনী বক্তব্যে সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান বলেন, ‘দেশে সুশাসনের মারাত্মক ঘাটতি আছে। সে কারণে গ্রাহকের টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটছে। আর ই-কমার্সের মাধ্যমে প্রথম এ ঘটনা ঘটেনি। এর আগেও বহুবার একই ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু বিচার হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত