Ajker Patrika

সবার অভিন্ন লক্ষ্য ছিল স্বৈরতন্ত্রের পতন

কামাল আহমেদ
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৯: ৪২
কামাল আহমেদ
কামাল আহমেদ

টানা তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে এবং দমনপীড়নের নির্লজ্জ রূপ প্রদর্শন করে ১৫ বছর ৭ মাস প্রধানমন্ত্রিত্ব ধরে রাখার মাধ্যমে শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম নিকৃষ্ট স্বৈরাচারী শাসকদের কাতারে নিজের অবস্থান পাকা করেছিলেন। গণ-অভ্যুত্থানের মুখে তাঁর অনুগত বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী পর্যন্ত তাঁকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়। এক বছর আগে, ঠিক এই দিনে তিনি পদত্যাগ করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ভারতে চলে যান। স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) একটি গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়, সেদিনই গণভবন, সংসদ ভবনসহ চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় তাঁর ও পরিবারের নিরাপত্তায় থাকা এসএসএফ সদস্যদের অস্ত্র ও সরঞ্জাম লুট হয়ে যায়। (সূত্র: ইত্তেফাক, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪)

জনতার ক্ষোভের মাত্রা বোঝাতে এই একটি ঘটনাই যথেষ্ট নয়; জুলাই ও আগস্টের প্রথম পাঁচ দিনের আন্দোলনে হতাহতের পরিসংখ্যান এবং আন্দোলনের ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে জনগণ আর চুপ থাকার অবস্থায় ছিল না। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য কোটা পুনর্বহাল-সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ১ জুলাই রাজপথে নামেন। ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি বিদ্রূপ মন্তব্য করেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা না পেলে রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে?’ ওই রাতেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উত্তাল হয়ে ওঠে। ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে স্লোগান তোলেন—‘তুমি কে, আমি কে? রাজাকার রাজাকার!’; ‘কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার।’

পরদিন ছাত্রলীগ সশস্ত্র হামলা চালায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর, যেখান থেকে সহিংসতার সূচনা। ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন আবু সাঈদ, চট্টগ্রামে শহীদ হন ওয়াসিম আকরাম। সেদিন পাঁচ শিক্ষার্থী শহীদ হন। এরপর সরকার এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন যৌথভাবে রক্তক্ষয়ী দমনপীড়ন চালায়। কারফিউ দিয়ে, ইন্টারনেট বন্ধ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করে, ব্লক রেইডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারসহ নানা অপারেশন পরিচালনা করে তারা।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে দলীয় সহিংসতা ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের স্পষ্ট চিত্র উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনের হিসাব অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০। অন্যান্য হিসাবে আহত ১০ হাজারের বেশি। পাঁচ শতাধিক মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে, ১৩৩টি শিশুর প্রাণ গেছে। সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন শ্রমজীবীরা। তবু মানুষ রাজপথ ছাড়েনি; শহীদদের দাফন করে তারা আবার বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। কবির ভাষায়, ‘জনতা সাগরে জেগেছে ঊর্মি টালমাটাল’। এটি এক অপ্রতিরোধ্য সত্যে পরিণত হয়েছে।

১৯ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ৯ দফা দাবি পেশ করে। এরপর আন্দোলনের পরিধি বাড়তে থাকে। ঢাকার অলিগলি ও জেলাগুলোয় সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন পেশাজীবী, শ্রমজীবী, অভিভাবক সবাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্ম হয়। ৩ আগস্ট ঘোষণা আসে এক দফা—শেখ হাসিনার পদত্যাগ। এই এক দফাকে ঘিরে গড়ে ওঠে জাতীয় ঐক্য, যা অবশেষে বিভিন্ন মতাদর্শের দলগুলোকে একত্র করে, এমনকি ইসলামপন্থীদের সঙ্গে যে বামপন্থীরা দেড় দশক ধরে কোনো ধরনের আন্দোলনে শামিল হতে চায়নি, সেই অসম্ভবকেও সম্ভব হতে দেখা যায়।

স্বৈরতন্ত্রের পতনের পর একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের যে প্রত্যাশা, তা তরুণ প্রজন্মের ওপর নির্ভরশীল। অনেকে একে বলছেন, ‘বাংলাদেশ ২.০’। কিন্তু এই নতুন বাংলাদেশের রূপ কেমন হবে, সে প্রশ্ন এখনো উন্মুক্ত। স্বপ্নদ্রষ্টা তরুণ, নিপীড়িত রাজনৈতিক কর্মী, বিপ্লবী কিংবা নৈরাজ্যবাদী—সবার অভিন্ন লক্ষ্য ছিল স্বৈরতন্ত্রের পতন; কিন্তু তার স্থলে কী আসবে, সে বিষয়ে ঐক্য তখনো ছিল না, এখনো বহুলাংশে অনুপস্থিত।

এই অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠিত হয়, যারা ৪৫ দিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথকভাবে এবং ২৩ দিন সর্বদলীয় আলোচনায় সময় ব্যয় করেছে। যে রাজনীতিকেরা এক টেবিলে বসতে রাজি ছিলেন না, তাঁরা আজ ৯টি মূল বিষয়ে একমত হয়েছেন এবং অন্যান্য বিষয়ে মতপার্থক্য কমিয়ে এনেছেন; এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে বাস্তবায়নের জন্য আইন প্রণয়ন প্রয়োজন, যা সময়সাপেক্ষ।

জনগণের ধৈর্যচ্যুতি লক্ষ করা যাচ্ছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে। এই হতাশার পেছনে অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু দায় রয়েছে। গত এক বছরে সরকার অনেক কিছু করতে চেয়েছে, কিন্তু সব ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ যথাযথ ছিল না। যেসব ক্ষেত্রে উপদেষ্টারা তাঁদের ব্যতিক্রমী কাজে সফল হয়েছেন, সেগুলোর সুফল দৃশ্যমান নয় বা তাঁরা তা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। উপদেষ্টাদের অনেককে নিষ্ক্রিয় বলে মনে হয়, যা জন-আস্থার সংকট বাড়িয়ে তুলেছে।

১৮ কোটি মানুষের দেশে অপ্রত্যাশিত ঘটনা অসম্ভব নয়। কিন্তু যখন সরকার প্রতিক্রিয়াহীন, অপ্রস্তুত কিংবা দর্শকের ভূমিকায় আবির্ভূত হয়, তখন সবাই তার পূর্ববর্তী সরকারের সঙ্গে যে তুলনা টানবে, সেটি স্বাভাবিক। বিপ্লব বা গণ-অভ্যুত্থানের পর তাই প্রয়োজন হয় দৃঢ় ও দক্ষ নেতৃত্ব। কেননা মানুষ নেতৃত্বের মধ্যে দক্ষতা ও দূরদর্শিতা প্রত্যাশা করে।

সে কারণে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চলমান প্রক্রিয়াটি গুরুত্বপূর্ণ। যদি এই ধারা এগিয়ে নেওয়া যায়, তাহলে গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ সার্থক হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সালমানসহ ৩৪ জনের নামে দুদকের পাঁচ মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সালমান এফ রহমান। ফাইল ছবি
সালমান এফ রহমান। ফাইল ছবি

প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি, আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানসহ ৩৪ জনের নামে পৃথক পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মামলার বিষয়টি জানান কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধান শেষে গত বৃহস্পতিবার মামলা করার আবেদন করলে কমিশন তা অনুমোদন করে।

দুদকের মহাপরিচালক বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে জালিয়াতি, প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট, অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎসহ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে মামলাগুলো করা হয়।

এই পাঁচ মামলার বাদী হলেন দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন রহমান ও সাজ্জাদ হোসেন, উপসহকারী পরিচালক রোমান উদ্দিন ও এলমান আহম্মদ অনি।

মামলাগুলোতে সালমান এফ রহমান ছাড়াও তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, সালমানের ভাই এ এস এফ রহমান, তাঁর ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানসহ তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১৮ জন ও রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের ১২ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন বেক্সিমকো লিমিটেডের পরিচালক ইকবাল আহমেদ, এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক, রীম এইচ শামসুদ্দোহা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান কাওসার চৌধুরী, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি আনোয়ারুল বাশার, পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজ লিমিটেডের এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন, পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার, মোসা. নুসরাত হায়দার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন খান মজলিস, পরিচালক আব্দুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপারেলসের এমডি মাহফুজুর রহমান খান, পরিচালক সৈয়দ তানভীর এলাহী, পিয়ারলেস গার্মেন্টসের এমডি ওয়াসীউর রহমান, পরিচালক রিজিয়া আক্তার।

জনতা ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে তাঁরা হলেন ব্যাংকটির সাবেক এমডি ও সিইও আবদুস ছালাম আজাদ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক (অব.) মো. আব্দুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. শহিদুল ইসলাম, ডিজিএম (অব.) মো. মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক মো. সালেহ আহমেদ, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (অব.) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম মোহাম্মদ শাজাহান, ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির ঢালী ও ব্যবস্থাপক শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশা।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পিয়ারলেস গার্মেন্টস ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার, প্লাটিনাম গার্মেন্টস ১ কোটি ৮৯ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৯ ডলার, কাঁচপুর অ্যাপারেলস ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭ দশমিক ৪৪ ডলার, স্কাইনেট অ্যাপারেলস ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ ডলার এবং নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ দশমিক ৪৬ ডলারসহ মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ ডলার বা (প্রতি ডলার ৯০ টাকা হারে) ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার ৯৪ টাকা জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে ঋণের নামে আত্মসাৎ করে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।

সালমানের বিরুদ্ধে আরও ২০ মামলা হচ্ছে

জনতা ব্যাংক থেকে ঋণের নামে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সালমান এফ রহমানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আরও ২০টি মামলা করা হবে বলে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন।

দুদকের ওই কর্মকর্তা জানান, এসব মামলায় জনতা ব্যাংক থেকে এলসি সুবিধা নেওয়ার নামে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হবে।

মামলাগুলোতে সায়ান ফজলুর রহমান, সোহেল ফশিউর রহমানের (এ এস এফ রহমান), আহমেদ শাহরিয়ার রহমান ও জনতা ব্যাংকের সাবেক এমডি আবদুস ছালামসহ প্রায় ৬০০ জনকে আসামি করা হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাক-প্রস্তুতি সভার নির্দেশ ‎ইসির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাক-প্রস্তুতি সভা আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ ‎সোমবার ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের সই করা এ-সংক্রান্ত চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ইসির সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের এর মধ্যে এ নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ইসি সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে গত ১৬ অক্টোবর মাসিক সমন্বয় সভায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারের ৩১টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে প্রাক-প্রস্তুতি সভা করেছে ইসি।

এর ধারাবাহিকতায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভোটের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা জানাতে তাঁদের সঙ্গেও নির্বাচনী প্রস্তুতিমূলক সভায় বসবে ইসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ২৩
ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে তিন বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

এ-সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব।

আব্দুল ওয়াহাব বলেন, রিটের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

গত ১৪ আগস্ট ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে তিন বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। পরে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন লিয়াকত আলী নামের এক ব্যক্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো কিছু যাচাই না করে শেয়ার করবেন না: সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। ফাইল ছবি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। ফাইল ছবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু দেখলেই তা বিশ্বাস করবেন না, শেয়ার করবেন না। আগে সেই তথ্যের সঠিকতা যাচাই করবেন। তথ্য সঠিক হলে তারপর তা শেয়ার করবেন।’

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারার আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) জাতীয় নির্বাচনে আনসার-ভিডিপির ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা মহড়া ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সিইসি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ বর্তমানে এক ‘সংকটময় অবস্থায়’ দাঁড়িয়ে আছে এবং আগামী সংসদ নির্বাচন দেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ ও গণতন্ত্রের পথচলা নির্ধারণ করবে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, তিনি তাঁর দায়িত্বকে গতানুগতিক ‘রুটিন কাজ’ বা ‘চাকরি’ হিসেবে না দেখে এটিকে ‘মিশন’ এবং ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিয়ে কাজ করছেন।

সিইসি বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য কী বাংলাদেশ রেখে যাব, কোন ধরনের বাংলাদেশ রেখে যাব, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রেখে যাব কি না, কীভাবে রেখে যাব—সেই চিন্তা আমাকে সারাক্ষণ ভাবায়।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে গতানুগতিক ধারায় কাজ করলে চলবে না, বরং ‘দায়িত্বসীমার বাইরে গিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’

সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করে সিইসি বলেন, ‘ভোটার, রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেব।’

সিইসি জানান, এবারের নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে প্রায় ১০ লাখ লোক যুক্ত থাকবে। তাঁদের সুবিধার্থে নির্বাচন কমিশন এবার একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। সাধারণত যারা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকেন, তারা নিজেরা ভোট দিতে পারেন না। কিন্তু এবার সেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যেন সবাই ভোট দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘আইনি হেফাজতে যাঁরা কারাগারে রয়েছেন, তাঁরা এ দেশের নাগরিক। তাঁরাও যাতে ভোট দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এ ছাড়া প্রবাসীরা এবার ভোট দিতে পারবেন।’

ভোটকেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে আনসার সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে সিইসি তাঁদের ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল শক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের ওপর আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব এসে পড়েছে।’

আনসার প্লাটুন সদস্যদের প্রশিক্ষণকে ‘স্বস্তির’ উল্লেখ করে সিইসি দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশাল নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে এআইসহ যেকোনো অপপ্রচার রোধে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব জানান, নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের প্রস্তুতি হিসেবে গত এক বছরে বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে ১ লাখ ৪৫ হাজার নতুন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত