মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়, কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই নিয়েছেন।
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর সম-অধিকার আদায়ের একটা দিন। পুরো বিশ্ব এই দিবসকে কেন্দ্র করে নানা কর্মসূচি পালন করে। সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং থেকে শুরু করে অনলাইন আর অফলাইনে চলে নানা কর্মসূচি পালনের প্রতিযোগিতা। কিন্তু আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ইতিহাস, সে কথা অনেকেই ভুলতে বসেছেন। লাইজু বেগমের মতো নারীরা এখনো দেশে-বিদেশে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে।
এই বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘টেকসই আগামীর লক্ষ্যে লৈঙ্গিক সাম্য’। নারীর জেগে ওঠার কথা তো অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকাঠামো কতটা সহায় হয়েছে, সে প্রশ্ন তোলাই যায়।
ফেরা যাক লাইজু বেগমের কাছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের যাত্রা যে নারী শ্রমিকদের হাতে হয়েছিল, লাইজুও তেমনই একজন শ্রমিক। নারীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার নারীদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ দিবসের শুরুটা হলেও বৈষম্যের শেষ হয়নি। লাইজু বেগমেরা তাই নারী দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে না জানলেও ঠিকই জানেন বৈষম্যের প্রকরণ। অথচ নারী দিবসের সূত্রপাত হয়েছিল কিন্তু পোশাক কারখানায় নারীদের ন্যায্য মজুরি ও বাড়তি কাজ বাতিলের দাবিতে করা আন্দোলন থেকে।
লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না। আমরা সেই সকাল ৮টায় কারখানায় ঢুকি আর বের হই রাত ৮টায়। কারখানায় অতিরিক্ত সময় কাজ করেও টাকা পাই কম। এই কম টাকা দিয়ে তো সংসার চালাইতে পারি না। আমার তিন বছরের সন্তানের খাবারের টাকা জোগাড় করতে পারি না। ঘরভাড়া দিতে পারি না। যেখানে কম টাকার বাসা খুঁজে পাই, সেখানেই থাকতে হয়।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস রচনা করেছিলেন নারী শ্রমিকেরা। স্বল্প মজুরিতে নারী শ্রমিকের সস্তা শ্রম কেনার প্রতিবাদে গড়ে উঠেছিল সেই আন্দোলন। একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরের সেই পরিস্থিতির সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আজও বাংলাদেশের নারী শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে পাচ্ছেন না কাজের সঠিক মূল্যায়ন। নারীর কাছ থেকে সস্তায় শ্রম কেনায় কারখানাগুলোর মধ্যে তেমন ভিন্নতা দেখা যায় না। বলা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরে পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের বৈষম্য আজ বাংলাদেশের পোশাক কারখানায়ও বিরাজমান। এর মূল্য দিতে হচ্ছে শুধু সেই শ্রমিককে নয়, তার সন্তানকেও।
লাইজু বেগম বলেন, ‘বাজারের প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। আমরা একদিন হয়তো শাক খাই, আরেকদিন খাই আলু ভর্তা। ভালো খাবার আমরা খুব কম সময়ই খাই। নিজের পোলাটারেও ভালো-মন্দ খাওয়াতে পারি না। এভাবে থাকা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। আমরা তো কারখানায় প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি কাজ করি। আমরা কেন কম টাকা পাব?’
লাইজুর এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। সভা-সমিতিতে কিংবা নারী দিবসের নানা কর্মসূচিতে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলা হয়, এবারও হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি এখনো অনেকটাই কাগজকলমে রয়ে গেছে। লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের আরেক অপারেটর রিনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের মালিকপক্ষ ন্যায্য টাকা দেয় না। আমি ২০১৪ সাল থেকে ঢাকায় আছি। এই কারখানায় আমরা অসুস্থ হলে ছুটি পাই না। মাঝে মাঝে এখানকার কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করে, গালাগালি করে। আমরা কোথাও গিয়া শান্তি পাই না।’
রিনা আক্তার শুধু কর্মক্ষেত্রে নন, ঘরেও শান্তির খোঁজ পান না। অধিকারের প্রশ্নে সেখানেও তাঁকে একই আচরণ সহ্য করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এত খাটাখাটনির পর ঘরে গিয়া শুনতে হয় জামাইয়ের কথা। ঠিকঠাক নাকি কাজ করতে পারি না। আমরা নারীরা কী করব? সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করি। এরপর বাসায় গিয়া সংসারের কাজ। আমি নারী হয়ে ঘরে, কারখানায় এত কাজ করি, কিন্তু আমার জামাই শুধু বাইরে কাজ করে। আমার জামাই ঘরের কোনো কাজকর্ম করে না। তারে ঘরের কাজ করতে বললে গায়ে হাত তোলে।’
রিনা আক্তারের বর পেশায় একজন গাড়িচালক। তাঁরা দুজনই পরিশ্রম করেন। কিন্তু ঘরের পরিশ্রমটা শুধু রিনার জন্যই তোলা থাকে। সেখানে তাঁর স্বামীর হাত চলে না। এটা শুধু রিনার একার অভিজ্ঞতা নয়, কর্মজীবী নারীমাত্রই এ অভিজ্ঞতা কম-বেশি সবার আছে। রিনা বলেন, ‘আমরা তো দুজনই পরিশ্রম করি। আমি একদিন বাসায় দেরি করে এলে বা শরীর খারাপ লাগলে যদি তারে বলি ভাতটা একটু চুলায় বসায় দিয়ো, সে কিন্তু আমার কথা শোনে না। বরং কথা শোনায়, মেয়েদের জন্ম ঘরের কাজের জন্য। আমরা নারীরা আসলেই অসহায়।’
নিজের কাজের পরিসর, যোগ্যতা এবং বৈষম্য—এসব নিয়ে সচেতন রিনা বলেন, ‘আমাকে কারখানার যেই মেশিনে কাজ দেয়, আমি সে মেশিনে কাজ করতে পারি। কিন্তু মাস শেষে অনেক কম টাকা পাই। আমরা তো মালিক থেকে টাকা ভিক্ষা করছি না। আমরা আমাদের শ্রমের বিনিময়ে মাস শেষে বেতন পাই। সে বেতন আবার একই কাজ করা পুরুষদের সমান না। আমরা তো নারী, আমাদের কেউ সম্মান করে না। ঘরেও অত্যাচার সইতে হয়। কারখানায়ও কথা শুনতে হয়। আবার দেখেন নারীরা নির্যাতনের শিকারও হয় বেশি। আমাদের সরকার কি এসব দেখে না? আমরা আমাদের কাজের সমান মজুরি চাই।’
দেশে নারী দিবস নানা আয়োজনে পালন করা হলেও বাল্যবিবাহ, যৌতুকসহ নানাভাবে নারীরা নির্যাতিত। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ২৬৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৮ জন। তার মধ্যে ৪৬ জন কন্যাশিশুসহ ৭৫ জন ধর্ষণের শিকার, ৩ জন কন্যাশিশুসহ ১২ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, ১ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে। এ পরিসংখ্যান কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা খবরের ভিত্তিতে তৈরি। বলে রাখা ভালো—বহু নারী নির্যাতনের খবর সংবাদমাধ্যমে আসেই না। আর মজুরি বৈষম্য রয়ে গেছে সব স্তরে; কখনো প্রত্যক্ষ, কখনো পরোক্ষভাবে।
এ নিয়ে কথা হয় হবিগঞ্জের চা-বাগানের সাধারণ চা-শ্রমিক সন্ধ্যা রানী ভৌমিকের সঙ্গে। চা-বাগানে নারী-পুরুষ বৈষম্যের একটা চিত্র তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল। বললেন, ‘আমি চা-বাগানে ১০ বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের এখানে নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য না থাকলেও গাছ ছাঁটাইয়ের সময় শ্রম বৈষম্যের কবলে পড়তে হয়। যেমন আমরা যে সময়ে ১ হাজার ২০০ গাছের চারা কাটি, ঠিক সেই সময়ে পুরুষেরা কাটে ২০০ গাছের চারা। এই কাজ ছেলেরা ৬ ঘণ্টা করলেও নারীদের করতে হয় ৮ ঘণ্টা। এ ক্ষেত্রে ছেলেরা কম চারা গাছ কাটলেও কেউ কিছু বলে না। কিন্তু আমরা কম চারা গাছ কাটলে আমাদের টাকা কেটে রাখে। এ ভারী অন্যায়। আমাদের শ্রমের কি কোনো মূল্য নেই?’
সন্ধ্যা রানী নারী দিবস ও এর ইতিহাস সম্পর্কে জানেন। এ ক্ষেত্রে তিনি রিনা ও লাইজুর চেয়ে এগিয়ে বলা যায়। নারী দিবস কেন পালন করা হয়, জানতে চাইলে সন্ধ্যা রানী বলেন, ‘নারী দিবসটা হচ্ছে ১৮৫৭ সালে নারীদের মজুরি বৈষম্য কমানোর জন্য আন্দোলন হয়েছিল, সেখান থেকে। সেখানে নারীরা এই আন্দোলন সংগঠিত করেছিল। সেই আন্দোলনে মূল ভূমিকা পালন করেন ক্লারা জেটকিন নামের এক নেত্রী। তিনি এই দিবসের সূচনা করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমি যেটা বুঝি সেটা হলো, নারীরা এখনো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের বাগানগুলো টিকিয়ে রাখছে নারীরা। তারাই কাজ করে বেশি। কিন্তু দিন শেষে নারীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।’
সন্ধ্যা রানী এক অর্থে ঠিকই বলেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্পর্কে জানতে হলে ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চে যেতে হবে। ঘটনাস্থল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। ন্যায্য মজুরির দাবিতে রাস্তায় নামেন সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেদিনের আন্দোলনরত নারী শ্রমিকদের আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল অতিরিক্ত শ্রমঘণ্টা বাতিল, কর্মক্ষেত্রে অমানবিক আচরণ, ন্যায্য মজুরি, কাজের সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবি। সেদিনের সুচ কারখানার নারী শ্রমিকদের মিছিলে চলে সরকারি বাহিনীর দমনপীড়ন। গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলনকারীদের। ফলে এই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ে। জোরদার হয় আন্দোলন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তিন বছর পর ১৮৬০ সালে সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা তাঁদের নিজস্ব ইউনিয়ন গঠন করেন। এরপর ১৯০৮ সালে ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকেরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম বাতিলের দাবিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই আন্দোলনে প্রায় ২০ হাজার নারী শ্রমিক অংশ নেন। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সম-অধিকারের ঐক্যবদ্ধ এ আন্দোলন থেকেই এই দিবসের সূচনা।
এরপর এল ঐতিহাসিক ১৯১০ সাল। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেতা ক্লারা জেটকিন কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নারীদের অধিকারের দিন হিসেবে নারী দিবস ঘোষণার দাবি জানান। এই সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন। সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। পরে বিভিন্ন দেশের সমাজতান্ত্রিক নেতারা দিনটি পালনের বিশেষ উদ্যোগ নেন। এই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জাতিসংঘ বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর থেকে সারা বিশ্বে নারীর সম-অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যথাযথ মর্যাদায় পালন হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বাংলাদেশেও হচ্ছে। কিন্তু লাইজু বেগম, রিনা আক্তার, সন্ধ্যা রানীরা যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে যাচ্ছেন।

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়, কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই নিয়েছেন।
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর সম-অধিকার আদায়ের একটা দিন। পুরো বিশ্ব এই দিবসকে কেন্দ্র করে নানা কর্মসূচি পালন করে। সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং থেকে শুরু করে অনলাইন আর অফলাইনে চলে নানা কর্মসূচি পালনের প্রতিযোগিতা। কিন্তু আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ইতিহাস, সে কথা অনেকেই ভুলতে বসেছেন। লাইজু বেগমের মতো নারীরা এখনো দেশে-বিদেশে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে।
এই বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘টেকসই আগামীর লক্ষ্যে লৈঙ্গিক সাম্য’। নারীর জেগে ওঠার কথা তো অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকাঠামো কতটা সহায় হয়েছে, সে প্রশ্ন তোলাই যায়।
ফেরা যাক লাইজু বেগমের কাছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের যাত্রা যে নারী শ্রমিকদের হাতে হয়েছিল, লাইজুও তেমনই একজন শ্রমিক। নারীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার নারীদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ দিবসের শুরুটা হলেও বৈষম্যের শেষ হয়নি। লাইজু বেগমেরা তাই নারী দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে না জানলেও ঠিকই জানেন বৈষম্যের প্রকরণ। অথচ নারী দিবসের সূত্রপাত হয়েছিল কিন্তু পোশাক কারখানায় নারীদের ন্যায্য মজুরি ও বাড়তি কাজ বাতিলের দাবিতে করা আন্দোলন থেকে।
লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না। আমরা সেই সকাল ৮টায় কারখানায় ঢুকি আর বের হই রাত ৮টায়। কারখানায় অতিরিক্ত সময় কাজ করেও টাকা পাই কম। এই কম টাকা দিয়ে তো সংসার চালাইতে পারি না। আমার তিন বছরের সন্তানের খাবারের টাকা জোগাড় করতে পারি না। ঘরভাড়া দিতে পারি না। যেখানে কম টাকার বাসা খুঁজে পাই, সেখানেই থাকতে হয়।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস রচনা করেছিলেন নারী শ্রমিকেরা। স্বল্প মজুরিতে নারী শ্রমিকের সস্তা শ্রম কেনার প্রতিবাদে গড়ে উঠেছিল সেই আন্দোলন। একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরের সেই পরিস্থিতির সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আজও বাংলাদেশের নারী শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে পাচ্ছেন না কাজের সঠিক মূল্যায়ন। নারীর কাছ থেকে সস্তায় শ্রম কেনায় কারখানাগুলোর মধ্যে তেমন ভিন্নতা দেখা যায় না। বলা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরে পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের বৈষম্য আজ বাংলাদেশের পোশাক কারখানায়ও বিরাজমান। এর মূল্য দিতে হচ্ছে শুধু সেই শ্রমিককে নয়, তার সন্তানকেও।
লাইজু বেগম বলেন, ‘বাজারের প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। আমরা একদিন হয়তো শাক খাই, আরেকদিন খাই আলু ভর্তা। ভালো খাবার আমরা খুব কম সময়ই খাই। নিজের পোলাটারেও ভালো-মন্দ খাওয়াতে পারি না। এভাবে থাকা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। আমরা তো কারখানায় প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি কাজ করি। আমরা কেন কম টাকা পাব?’
লাইজুর এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। সভা-সমিতিতে কিংবা নারী দিবসের নানা কর্মসূচিতে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলা হয়, এবারও হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি এখনো অনেকটাই কাগজকলমে রয়ে গেছে। লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের আরেক অপারেটর রিনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের মালিকপক্ষ ন্যায্য টাকা দেয় না। আমি ২০১৪ সাল থেকে ঢাকায় আছি। এই কারখানায় আমরা অসুস্থ হলে ছুটি পাই না। মাঝে মাঝে এখানকার কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করে, গালাগালি করে। আমরা কোথাও গিয়া শান্তি পাই না।’
রিনা আক্তার শুধু কর্মক্ষেত্রে নন, ঘরেও শান্তির খোঁজ পান না। অধিকারের প্রশ্নে সেখানেও তাঁকে একই আচরণ সহ্য করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এত খাটাখাটনির পর ঘরে গিয়া শুনতে হয় জামাইয়ের কথা। ঠিকঠাক নাকি কাজ করতে পারি না। আমরা নারীরা কী করব? সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করি। এরপর বাসায় গিয়া সংসারের কাজ। আমি নারী হয়ে ঘরে, কারখানায় এত কাজ করি, কিন্তু আমার জামাই শুধু বাইরে কাজ করে। আমার জামাই ঘরের কোনো কাজকর্ম করে না। তারে ঘরের কাজ করতে বললে গায়ে হাত তোলে।’
রিনা আক্তারের বর পেশায় একজন গাড়িচালক। তাঁরা দুজনই পরিশ্রম করেন। কিন্তু ঘরের পরিশ্রমটা শুধু রিনার জন্যই তোলা থাকে। সেখানে তাঁর স্বামীর হাত চলে না। এটা শুধু রিনার একার অভিজ্ঞতা নয়, কর্মজীবী নারীমাত্রই এ অভিজ্ঞতা কম-বেশি সবার আছে। রিনা বলেন, ‘আমরা তো দুজনই পরিশ্রম করি। আমি একদিন বাসায় দেরি করে এলে বা শরীর খারাপ লাগলে যদি তারে বলি ভাতটা একটু চুলায় বসায় দিয়ো, সে কিন্তু আমার কথা শোনে না। বরং কথা শোনায়, মেয়েদের জন্ম ঘরের কাজের জন্য। আমরা নারীরা আসলেই অসহায়।’
নিজের কাজের পরিসর, যোগ্যতা এবং বৈষম্য—এসব নিয়ে সচেতন রিনা বলেন, ‘আমাকে কারখানার যেই মেশিনে কাজ দেয়, আমি সে মেশিনে কাজ করতে পারি। কিন্তু মাস শেষে অনেক কম টাকা পাই। আমরা তো মালিক থেকে টাকা ভিক্ষা করছি না। আমরা আমাদের শ্রমের বিনিময়ে মাস শেষে বেতন পাই। সে বেতন আবার একই কাজ করা পুরুষদের সমান না। আমরা তো নারী, আমাদের কেউ সম্মান করে না। ঘরেও অত্যাচার সইতে হয়। কারখানায়ও কথা শুনতে হয়। আবার দেখেন নারীরা নির্যাতনের শিকারও হয় বেশি। আমাদের সরকার কি এসব দেখে না? আমরা আমাদের কাজের সমান মজুরি চাই।’
দেশে নারী দিবস নানা আয়োজনে পালন করা হলেও বাল্যবিবাহ, যৌতুকসহ নানাভাবে নারীরা নির্যাতিত। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ২৬৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৮ জন। তার মধ্যে ৪৬ জন কন্যাশিশুসহ ৭৫ জন ধর্ষণের শিকার, ৩ জন কন্যাশিশুসহ ১২ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, ১ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে। এ পরিসংখ্যান কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা খবরের ভিত্তিতে তৈরি। বলে রাখা ভালো—বহু নারী নির্যাতনের খবর সংবাদমাধ্যমে আসেই না। আর মজুরি বৈষম্য রয়ে গেছে সব স্তরে; কখনো প্রত্যক্ষ, কখনো পরোক্ষভাবে।
এ নিয়ে কথা হয় হবিগঞ্জের চা-বাগানের সাধারণ চা-শ্রমিক সন্ধ্যা রানী ভৌমিকের সঙ্গে। চা-বাগানে নারী-পুরুষ বৈষম্যের একটা চিত্র তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল। বললেন, ‘আমি চা-বাগানে ১০ বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের এখানে নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য না থাকলেও গাছ ছাঁটাইয়ের সময় শ্রম বৈষম্যের কবলে পড়তে হয়। যেমন আমরা যে সময়ে ১ হাজার ২০০ গাছের চারা কাটি, ঠিক সেই সময়ে পুরুষেরা কাটে ২০০ গাছের চারা। এই কাজ ছেলেরা ৬ ঘণ্টা করলেও নারীদের করতে হয় ৮ ঘণ্টা। এ ক্ষেত্রে ছেলেরা কম চারা গাছ কাটলেও কেউ কিছু বলে না। কিন্তু আমরা কম চারা গাছ কাটলে আমাদের টাকা কেটে রাখে। এ ভারী অন্যায়। আমাদের শ্রমের কি কোনো মূল্য নেই?’
সন্ধ্যা রানী নারী দিবস ও এর ইতিহাস সম্পর্কে জানেন। এ ক্ষেত্রে তিনি রিনা ও লাইজুর চেয়ে এগিয়ে বলা যায়। নারী দিবস কেন পালন করা হয়, জানতে চাইলে সন্ধ্যা রানী বলেন, ‘নারী দিবসটা হচ্ছে ১৮৫৭ সালে নারীদের মজুরি বৈষম্য কমানোর জন্য আন্দোলন হয়েছিল, সেখান থেকে। সেখানে নারীরা এই আন্দোলন সংগঠিত করেছিল। সেই আন্দোলনে মূল ভূমিকা পালন করেন ক্লারা জেটকিন নামের এক নেত্রী। তিনি এই দিবসের সূচনা করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমি যেটা বুঝি সেটা হলো, নারীরা এখনো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের বাগানগুলো টিকিয়ে রাখছে নারীরা। তারাই কাজ করে বেশি। কিন্তু দিন শেষে নারীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।’
সন্ধ্যা রানী এক অর্থে ঠিকই বলেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্পর্কে জানতে হলে ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চে যেতে হবে। ঘটনাস্থল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। ন্যায্য মজুরির দাবিতে রাস্তায় নামেন সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেদিনের আন্দোলনরত নারী শ্রমিকদের আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল অতিরিক্ত শ্রমঘণ্টা বাতিল, কর্মক্ষেত্রে অমানবিক আচরণ, ন্যায্য মজুরি, কাজের সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবি। সেদিনের সুচ কারখানার নারী শ্রমিকদের মিছিলে চলে সরকারি বাহিনীর দমনপীড়ন। গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলনকারীদের। ফলে এই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ে। জোরদার হয় আন্দোলন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তিন বছর পর ১৮৬০ সালে সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা তাঁদের নিজস্ব ইউনিয়ন গঠন করেন। এরপর ১৯০৮ সালে ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকেরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম বাতিলের দাবিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই আন্দোলনে প্রায় ২০ হাজার নারী শ্রমিক অংশ নেন। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সম-অধিকারের ঐক্যবদ্ধ এ আন্দোলন থেকেই এই দিবসের সূচনা।
এরপর এল ঐতিহাসিক ১৯১০ সাল। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেতা ক্লারা জেটকিন কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নারীদের অধিকারের দিন হিসেবে নারী দিবস ঘোষণার দাবি জানান। এই সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন। সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। পরে বিভিন্ন দেশের সমাজতান্ত্রিক নেতারা দিনটি পালনের বিশেষ উদ্যোগ নেন। এই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জাতিসংঘ বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর থেকে সারা বিশ্বে নারীর সম-অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যথাযথ মর্যাদায় পালন হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বাংলাদেশেও হচ্ছে। কিন্তু লাইজু বেগম, রিনা আক্তার, সন্ধ্যা রানীরা যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে যাচ্ছেন।
মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়, কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই নিয়েছেন।
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর সম-অধিকার আদায়ের একটা দিন। পুরো বিশ্ব এই দিবসকে কেন্দ্র করে নানা কর্মসূচি পালন করে। সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং থেকে শুরু করে অনলাইন আর অফলাইনে চলে নানা কর্মসূচি পালনের প্রতিযোগিতা। কিন্তু আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ইতিহাস, সে কথা অনেকেই ভুলতে বসেছেন। লাইজু বেগমের মতো নারীরা এখনো দেশে-বিদেশে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে।
এই বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘টেকসই আগামীর লক্ষ্যে লৈঙ্গিক সাম্য’। নারীর জেগে ওঠার কথা তো অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকাঠামো কতটা সহায় হয়েছে, সে প্রশ্ন তোলাই যায়।
ফেরা যাক লাইজু বেগমের কাছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের যাত্রা যে নারী শ্রমিকদের হাতে হয়েছিল, লাইজুও তেমনই একজন শ্রমিক। নারীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার নারীদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ দিবসের শুরুটা হলেও বৈষম্যের শেষ হয়নি। লাইজু বেগমেরা তাই নারী দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে না জানলেও ঠিকই জানেন বৈষম্যের প্রকরণ। অথচ নারী দিবসের সূত্রপাত হয়েছিল কিন্তু পোশাক কারখানায় নারীদের ন্যায্য মজুরি ও বাড়তি কাজ বাতিলের দাবিতে করা আন্দোলন থেকে।
লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না। আমরা সেই সকাল ৮টায় কারখানায় ঢুকি আর বের হই রাত ৮টায়। কারখানায় অতিরিক্ত সময় কাজ করেও টাকা পাই কম। এই কম টাকা দিয়ে তো সংসার চালাইতে পারি না। আমার তিন বছরের সন্তানের খাবারের টাকা জোগাড় করতে পারি না। ঘরভাড়া দিতে পারি না। যেখানে কম টাকার বাসা খুঁজে পাই, সেখানেই থাকতে হয়।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস রচনা করেছিলেন নারী শ্রমিকেরা। স্বল্প মজুরিতে নারী শ্রমিকের সস্তা শ্রম কেনার প্রতিবাদে গড়ে উঠেছিল সেই আন্দোলন। একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরের সেই পরিস্থিতির সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আজও বাংলাদেশের নারী শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে পাচ্ছেন না কাজের সঠিক মূল্যায়ন। নারীর কাছ থেকে সস্তায় শ্রম কেনায় কারখানাগুলোর মধ্যে তেমন ভিন্নতা দেখা যায় না। বলা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরে পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের বৈষম্য আজ বাংলাদেশের পোশাক কারখানায়ও বিরাজমান। এর মূল্য দিতে হচ্ছে শুধু সেই শ্রমিককে নয়, তার সন্তানকেও।
লাইজু বেগম বলেন, ‘বাজারের প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। আমরা একদিন হয়তো শাক খাই, আরেকদিন খাই আলু ভর্তা। ভালো খাবার আমরা খুব কম সময়ই খাই। নিজের পোলাটারেও ভালো-মন্দ খাওয়াতে পারি না। এভাবে থাকা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। আমরা তো কারখানায় প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি কাজ করি। আমরা কেন কম টাকা পাব?’
লাইজুর এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। সভা-সমিতিতে কিংবা নারী দিবসের নানা কর্মসূচিতে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলা হয়, এবারও হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি এখনো অনেকটাই কাগজকলমে রয়ে গেছে। লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের আরেক অপারেটর রিনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের মালিকপক্ষ ন্যায্য টাকা দেয় না। আমি ২০১৪ সাল থেকে ঢাকায় আছি। এই কারখানায় আমরা অসুস্থ হলে ছুটি পাই না। মাঝে মাঝে এখানকার কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করে, গালাগালি করে। আমরা কোথাও গিয়া শান্তি পাই না।’
রিনা আক্তার শুধু কর্মক্ষেত্রে নন, ঘরেও শান্তির খোঁজ পান না। অধিকারের প্রশ্নে সেখানেও তাঁকে একই আচরণ সহ্য করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এত খাটাখাটনির পর ঘরে গিয়া শুনতে হয় জামাইয়ের কথা। ঠিকঠাক নাকি কাজ করতে পারি না। আমরা নারীরা কী করব? সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করি। এরপর বাসায় গিয়া সংসারের কাজ। আমি নারী হয়ে ঘরে, কারখানায় এত কাজ করি, কিন্তু আমার জামাই শুধু বাইরে কাজ করে। আমার জামাই ঘরের কোনো কাজকর্ম করে না। তারে ঘরের কাজ করতে বললে গায়ে হাত তোলে।’
রিনা আক্তারের বর পেশায় একজন গাড়িচালক। তাঁরা দুজনই পরিশ্রম করেন। কিন্তু ঘরের পরিশ্রমটা শুধু রিনার জন্যই তোলা থাকে। সেখানে তাঁর স্বামীর হাত চলে না। এটা শুধু রিনার একার অভিজ্ঞতা নয়, কর্মজীবী নারীমাত্রই এ অভিজ্ঞতা কম-বেশি সবার আছে। রিনা বলেন, ‘আমরা তো দুজনই পরিশ্রম করি। আমি একদিন বাসায় দেরি করে এলে বা শরীর খারাপ লাগলে যদি তারে বলি ভাতটা একটু চুলায় বসায় দিয়ো, সে কিন্তু আমার কথা শোনে না। বরং কথা শোনায়, মেয়েদের জন্ম ঘরের কাজের জন্য। আমরা নারীরা আসলেই অসহায়।’
নিজের কাজের পরিসর, যোগ্যতা এবং বৈষম্য—এসব নিয়ে সচেতন রিনা বলেন, ‘আমাকে কারখানার যেই মেশিনে কাজ দেয়, আমি সে মেশিনে কাজ করতে পারি। কিন্তু মাস শেষে অনেক কম টাকা পাই। আমরা তো মালিক থেকে টাকা ভিক্ষা করছি না। আমরা আমাদের শ্রমের বিনিময়ে মাস শেষে বেতন পাই। সে বেতন আবার একই কাজ করা পুরুষদের সমান না। আমরা তো নারী, আমাদের কেউ সম্মান করে না। ঘরেও অত্যাচার সইতে হয়। কারখানায়ও কথা শুনতে হয়। আবার দেখেন নারীরা নির্যাতনের শিকারও হয় বেশি। আমাদের সরকার কি এসব দেখে না? আমরা আমাদের কাজের সমান মজুরি চাই।’
দেশে নারী দিবস নানা আয়োজনে পালন করা হলেও বাল্যবিবাহ, যৌতুকসহ নানাভাবে নারীরা নির্যাতিত। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ২৬৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৮ জন। তার মধ্যে ৪৬ জন কন্যাশিশুসহ ৭৫ জন ধর্ষণের শিকার, ৩ জন কন্যাশিশুসহ ১২ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, ১ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে। এ পরিসংখ্যান কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা খবরের ভিত্তিতে তৈরি। বলে রাখা ভালো—বহু নারী নির্যাতনের খবর সংবাদমাধ্যমে আসেই না। আর মজুরি বৈষম্য রয়ে গেছে সব স্তরে; কখনো প্রত্যক্ষ, কখনো পরোক্ষভাবে।
এ নিয়ে কথা হয় হবিগঞ্জের চা-বাগানের সাধারণ চা-শ্রমিক সন্ধ্যা রানী ভৌমিকের সঙ্গে। চা-বাগানে নারী-পুরুষ বৈষম্যের একটা চিত্র তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল। বললেন, ‘আমি চা-বাগানে ১০ বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের এখানে নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য না থাকলেও গাছ ছাঁটাইয়ের সময় শ্রম বৈষম্যের কবলে পড়তে হয়। যেমন আমরা যে সময়ে ১ হাজার ২০০ গাছের চারা কাটি, ঠিক সেই সময়ে পুরুষেরা কাটে ২০০ গাছের চারা। এই কাজ ছেলেরা ৬ ঘণ্টা করলেও নারীদের করতে হয় ৮ ঘণ্টা। এ ক্ষেত্রে ছেলেরা কম চারা গাছ কাটলেও কেউ কিছু বলে না। কিন্তু আমরা কম চারা গাছ কাটলে আমাদের টাকা কেটে রাখে। এ ভারী অন্যায়। আমাদের শ্রমের কি কোনো মূল্য নেই?’
সন্ধ্যা রানী নারী দিবস ও এর ইতিহাস সম্পর্কে জানেন। এ ক্ষেত্রে তিনি রিনা ও লাইজুর চেয়ে এগিয়ে বলা যায়। নারী দিবস কেন পালন করা হয়, জানতে চাইলে সন্ধ্যা রানী বলেন, ‘নারী দিবসটা হচ্ছে ১৮৫৭ সালে নারীদের মজুরি বৈষম্য কমানোর জন্য আন্দোলন হয়েছিল, সেখান থেকে। সেখানে নারীরা এই আন্দোলন সংগঠিত করেছিল। সেই আন্দোলনে মূল ভূমিকা পালন করেন ক্লারা জেটকিন নামের এক নেত্রী। তিনি এই দিবসের সূচনা করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমি যেটা বুঝি সেটা হলো, নারীরা এখনো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের বাগানগুলো টিকিয়ে রাখছে নারীরা। তারাই কাজ করে বেশি। কিন্তু দিন শেষে নারীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।’
সন্ধ্যা রানী এক অর্থে ঠিকই বলেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্পর্কে জানতে হলে ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চে যেতে হবে। ঘটনাস্থল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। ন্যায্য মজুরির দাবিতে রাস্তায় নামেন সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেদিনের আন্দোলনরত নারী শ্রমিকদের আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল অতিরিক্ত শ্রমঘণ্টা বাতিল, কর্মক্ষেত্রে অমানবিক আচরণ, ন্যায্য মজুরি, কাজের সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবি। সেদিনের সুচ কারখানার নারী শ্রমিকদের মিছিলে চলে সরকারি বাহিনীর দমনপীড়ন। গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলনকারীদের। ফলে এই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ে। জোরদার হয় আন্দোলন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তিন বছর পর ১৮৬০ সালে সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা তাঁদের নিজস্ব ইউনিয়ন গঠন করেন। এরপর ১৯০৮ সালে ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকেরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম বাতিলের দাবিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই আন্দোলনে প্রায় ২০ হাজার নারী শ্রমিক অংশ নেন। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সম-অধিকারের ঐক্যবদ্ধ এ আন্দোলন থেকেই এই দিবসের সূচনা।
এরপর এল ঐতিহাসিক ১৯১০ সাল। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেতা ক্লারা জেটকিন কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নারীদের অধিকারের দিন হিসেবে নারী দিবস ঘোষণার দাবি জানান। এই সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন। সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। পরে বিভিন্ন দেশের সমাজতান্ত্রিক নেতারা দিনটি পালনের বিশেষ উদ্যোগ নেন। এই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জাতিসংঘ বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর থেকে সারা বিশ্বে নারীর সম-অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যথাযথ মর্যাদায় পালন হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বাংলাদেশেও হচ্ছে। কিন্তু লাইজু বেগম, রিনা আক্তার, সন্ধ্যা রানীরা যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে যাচ্ছেন।

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়, কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই নিয়েছেন।
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর সম-অধিকার আদায়ের একটা দিন। পুরো বিশ্ব এই দিবসকে কেন্দ্র করে নানা কর্মসূচি পালন করে। সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং থেকে শুরু করে অনলাইন আর অফলাইনে চলে নানা কর্মসূচি পালনের প্রতিযোগিতা। কিন্তু আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ইতিহাস, সে কথা অনেকেই ভুলতে বসেছেন। লাইজু বেগমের মতো নারীরা এখনো দেশে-বিদেশে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে।
এই বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘টেকসই আগামীর লক্ষ্যে লৈঙ্গিক সাম্য’। নারীর জেগে ওঠার কথা তো অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকাঠামো কতটা সহায় হয়েছে, সে প্রশ্ন তোলাই যায়।
ফেরা যাক লাইজু বেগমের কাছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের যাত্রা যে নারী শ্রমিকদের হাতে হয়েছিল, লাইজুও তেমনই একজন শ্রমিক। নারীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার নারীদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ দিবসের শুরুটা হলেও বৈষম্যের শেষ হয়নি। লাইজু বেগমেরা তাই নারী দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে না জানলেও ঠিকই জানেন বৈষম্যের প্রকরণ। অথচ নারী দিবসের সূত্রপাত হয়েছিল কিন্তু পোশাক কারখানায় নারীদের ন্যায্য মজুরি ও বাড়তি কাজ বাতিলের দাবিতে করা আন্দোলন থেকে।
লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না। আমরা সেই সকাল ৮টায় কারখানায় ঢুকি আর বের হই রাত ৮টায়। কারখানায় অতিরিক্ত সময় কাজ করেও টাকা পাই কম। এই কম টাকা দিয়ে তো সংসার চালাইতে পারি না। আমার তিন বছরের সন্তানের খাবারের টাকা জোগাড় করতে পারি না। ঘরভাড়া দিতে পারি না। যেখানে কম টাকার বাসা খুঁজে পাই, সেখানেই থাকতে হয়।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস রচনা করেছিলেন নারী শ্রমিকেরা। স্বল্প মজুরিতে নারী শ্রমিকের সস্তা শ্রম কেনার প্রতিবাদে গড়ে উঠেছিল সেই আন্দোলন। একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরের সেই পরিস্থিতির সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আজও বাংলাদেশের নারী শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে পাচ্ছেন না কাজের সঠিক মূল্যায়ন। নারীর কাছ থেকে সস্তায় শ্রম কেনায় কারখানাগুলোর মধ্যে তেমন ভিন্নতা দেখা যায় না। বলা যায়, সেদিনের নিউইয়র্ক শহরে পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের বৈষম্য আজ বাংলাদেশের পোশাক কারখানায়ও বিরাজমান। এর মূল্য দিতে হচ্ছে শুধু সেই শ্রমিককে নয়, তার সন্তানকেও।
লাইজু বেগম বলেন, ‘বাজারের প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। আমরা একদিন হয়তো শাক খাই, আরেকদিন খাই আলু ভর্তা। ভালো খাবার আমরা খুব কম সময়ই খাই। নিজের পোলাটারেও ভালো-মন্দ খাওয়াতে পারি না। এভাবে থাকা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। আমরা তো কারখানায় প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি কাজ করি। আমরা কেন কম টাকা পাব?’
লাইজুর এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। সভা-সমিতিতে কিংবা নারী দিবসের নানা কর্মসূচিতে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলা হয়, এবারও হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি এখনো অনেকটাই কাগজকলমে রয়ে গেছে। লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের আরেক অপারেটর রিনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের মালিকপক্ষ ন্যায্য টাকা দেয় না। আমি ২০১৪ সাল থেকে ঢাকায় আছি। এই কারখানায় আমরা অসুস্থ হলে ছুটি পাই না। মাঝে মাঝে এখানকার কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করে, গালাগালি করে। আমরা কোথাও গিয়া শান্তি পাই না।’
রিনা আক্তার শুধু কর্মক্ষেত্রে নন, ঘরেও শান্তির খোঁজ পান না। অধিকারের প্রশ্নে সেখানেও তাঁকে একই আচরণ সহ্য করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এত খাটাখাটনির পর ঘরে গিয়া শুনতে হয় জামাইয়ের কথা। ঠিকঠাক নাকি কাজ করতে পারি না। আমরা নারীরা কী করব? সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করি। এরপর বাসায় গিয়া সংসারের কাজ। আমি নারী হয়ে ঘরে, কারখানায় এত কাজ করি, কিন্তু আমার জামাই শুধু বাইরে কাজ করে। আমার জামাই ঘরের কোনো কাজকর্ম করে না। তারে ঘরের কাজ করতে বললে গায়ে হাত তোলে।’
রিনা আক্তারের বর পেশায় একজন গাড়িচালক। তাঁরা দুজনই পরিশ্রম করেন। কিন্তু ঘরের পরিশ্রমটা শুধু রিনার জন্যই তোলা থাকে। সেখানে তাঁর স্বামীর হাত চলে না। এটা শুধু রিনার একার অভিজ্ঞতা নয়, কর্মজীবী নারীমাত্রই এ অভিজ্ঞতা কম-বেশি সবার আছে। রিনা বলেন, ‘আমরা তো দুজনই পরিশ্রম করি। আমি একদিন বাসায় দেরি করে এলে বা শরীর খারাপ লাগলে যদি তারে বলি ভাতটা একটু চুলায় বসায় দিয়ো, সে কিন্তু আমার কথা শোনে না। বরং কথা শোনায়, মেয়েদের জন্ম ঘরের কাজের জন্য। আমরা নারীরা আসলেই অসহায়।’
নিজের কাজের পরিসর, যোগ্যতা এবং বৈষম্য—এসব নিয়ে সচেতন রিনা বলেন, ‘আমাকে কারখানার যেই মেশিনে কাজ দেয়, আমি সে মেশিনে কাজ করতে পারি। কিন্তু মাস শেষে অনেক কম টাকা পাই। আমরা তো মালিক থেকে টাকা ভিক্ষা করছি না। আমরা আমাদের শ্রমের বিনিময়ে মাস শেষে বেতন পাই। সে বেতন আবার একই কাজ করা পুরুষদের সমান না। আমরা তো নারী, আমাদের কেউ সম্মান করে না। ঘরেও অত্যাচার সইতে হয়। কারখানায়ও কথা শুনতে হয়। আবার দেখেন নারীরা নির্যাতনের শিকারও হয় বেশি। আমাদের সরকার কি এসব দেখে না? আমরা আমাদের কাজের সমান মজুরি চাই।’
দেশে নারী দিবস নানা আয়োজনে পালন করা হলেও বাল্যবিবাহ, যৌতুকসহ নানাভাবে নারীরা নির্যাতিত। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ২৬৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৮ জন। তার মধ্যে ৪৬ জন কন্যাশিশুসহ ৭৫ জন ধর্ষণের শিকার, ৩ জন কন্যাশিশুসহ ১২ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, ১ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে। এ পরিসংখ্যান কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা খবরের ভিত্তিতে তৈরি। বলে রাখা ভালো—বহু নারী নির্যাতনের খবর সংবাদমাধ্যমে আসেই না। আর মজুরি বৈষম্য রয়ে গেছে সব স্তরে; কখনো প্রত্যক্ষ, কখনো পরোক্ষভাবে।
এ নিয়ে কথা হয় হবিগঞ্জের চা-বাগানের সাধারণ চা-শ্রমিক সন্ধ্যা রানী ভৌমিকের সঙ্গে। চা-বাগানে নারী-পুরুষ বৈষম্যের একটা চিত্র তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল। বললেন, ‘আমি চা-বাগানে ১০ বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের এখানে নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য না থাকলেও গাছ ছাঁটাইয়ের সময় শ্রম বৈষম্যের কবলে পড়তে হয়। যেমন আমরা যে সময়ে ১ হাজার ২০০ গাছের চারা কাটি, ঠিক সেই সময়ে পুরুষেরা কাটে ২০০ গাছের চারা। এই কাজ ছেলেরা ৬ ঘণ্টা করলেও নারীদের করতে হয় ৮ ঘণ্টা। এ ক্ষেত্রে ছেলেরা কম চারা গাছ কাটলেও কেউ কিছু বলে না। কিন্তু আমরা কম চারা গাছ কাটলে আমাদের টাকা কেটে রাখে। এ ভারী অন্যায়। আমাদের শ্রমের কি কোনো মূল্য নেই?’
সন্ধ্যা রানী নারী দিবস ও এর ইতিহাস সম্পর্কে জানেন। এ ক্ষেত্রে তিনি রিনা ও লাইজুর চেয়ে এগিয়ে বলা যায়। নারী দিবস কেন পালন করা হয়, জানতে চাইলে সন্ধ্যা রানী বলেন, ‘নারী দিবসটা হচ্ছে ১৮৫৭ সালে নারীদের মজুরি বৈষম্য কমানোর জন্য আন্দোলন হয়েছিল, সেখান থেকে। সেখানে নারীরা এই আন্দোলন সংগঠিত করেছিল। সেই আন্দোলনে মূল ভূমিকা পালন করেন ক্লারা জেটকিন নামের এক নেত্রী। তিনি এই দিবসের সূচনা করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমি যেটা বুঝি সেটা হলো, নারীরা এখনো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের বাগানগুলো টিকিয়ে রাখছে নারীরা। তারাই কাজ করে বেশি। কিন্তু দিন শেষে নারীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।’
সন্ধ্যা রানী এক অর্থে ঠিকই বলেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্পর্কে জানতে হলে ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চে যেতে হবে। ঘটনাস্থল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। ন্যায্য মজুরির দাবিতে রাস্তায় নামেন সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেদিনের আন্দোলনরত নারী শ্রমিকদের আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল অতিরিক্ত শ্রমঘণ্টা বাতিল, কর্মক্ষেত্রে অমানবিক আচরণ, ন্যায্য মজুরি, কাজের সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবি। সেদিনের সুচ কারখানার নারী শ্রমিকদের মিছিলে চলে সরকারি বাহিনীর দমনপীড়ন। গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলনকারীদের। ফলে এই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ে। জোরদার হয় আন্দোলন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তিন বছর পর ১৮৬০ সালে সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা তাঁদের নিজস্ব ইউনিয়ন গঠন করেন। এরপর ১৯০৮ সালে ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকেরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম বাতিলের দাবিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই আন্দোলনে প্রায় ২০ হাজার নারী শ্রমিক অংশ নেন। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সম-অধিকারের ঐক্যবদ্ধ এ আন্দোলন থেকেই এই দিবসের সূচনা।
এরপর এল ঐতিহাসিক ১৯১০ সাল। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেতা ক্লারা জেটকিন কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নারীদের অধিকারের দিন হিসেবে নারী দিবস ঘোষণার দাবি জানান। এই সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন। সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। পরে বিভিন্ন দেশের সমাজতান্ত্রিক নেতারা দিনটি পালনের বিশেষ উদ্যোগ নেন। এই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জাতিসংঘ বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর থেকে সারা বিশ্বে নারীর সম-অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যথাযথ মর্যাদায় পালন হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বাংলাদেশেও হচ্ছে। কিন্তু লাইজু বেগম, রিনা আক্তার, সন্ধ্যা রানীরা যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে যাচ্ছেন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার বিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ট্রাইব্যুনালের মূল ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
৯ মিনিট আগে
দীর্ঘ আলোচনার পর স্বাক্ষর হলেও এখন বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে আটকে আছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা অনিরসনের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতে দলগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে সাত দিন সময় দেওয়া হলেও কোনো সমাধান আসেনি।
৮ ঘণ্টা আগে
জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই তারিখ ধার্য করবেন।
৯ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হবে আজ। তার আগেই সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা।
৯ ঘণ্টা আগেআজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার বিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ট্রাইব্যুনালের মূল ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে অর্ধশতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্বরত আছেন।

সরেজমিনে হাইকোর্টের সামনে বিজিবি ও পুলিশ সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে। এ সময় অর্ধশতাধিক পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের ওই এলাকায় দায়িত্বপালন করতে দেখা গেছে। হাইকোর্টের ভেতরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনেও রয়েছেন পুলিশ, র্যাব এবং সেনাবাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই তারিখ ধার্য করবেন।

এদিকে রায়ের দিন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আজ লকডাউন ঘোষণা করায় এবং কয়েক দিন ধরে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল ও সংলগ্ন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে গতকাল বুধবার সেনাসদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্য- বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা এই মামলায় গত ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। সেদিন রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক এবং চৌধুরী মামুন কারাগারে রয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ২৩ অক্টোবর সর্বশেষ যুক্তি উপস্থাপনকালে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ সাজার (মৃত্যুদণ্ড) আবেদন জানান। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের খালাস চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
চলতি বছরের ১ জুন এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে ১৬ জুন নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বিজ্ঞপ্তি জারির পরও হাজির না হলে ২৪ জুন তাঁদের দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, প্রতক্ষ্যদর্শীসহ ৫৪ জন। অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়।
নিরাপত্তা জোরদার
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি এবং গত কয়েক দিনের নাশকতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়ন করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে সেনাসদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একটি সূত্র বলেছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং মামলাটির সংবেদনশীলতার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বৃহস্পতিবার পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি রুখে দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: প্রসিকিউটর মিজানুল
ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে গতকাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, দেশে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা রুখে দেবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বচ্ছ এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে তারা এটা বলছে।
সহিংসতাকে ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল বলেন, এটাকে হুমকি মনে করেন না। তিনি মনে করেন, বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য করছে। এই ট্রাইব্যুনাল কোনোভাবেই কারও দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। বিচারের ক্ষেত্রে বিচারকেরা স্বাধীন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার বিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ট্রাইব্যুনালের মূল ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে অর্ধশতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্বরত আছেন।

সরেজমিনে হাইকোর্টের সামনে বিজিবি ও পুলিশ সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে। এ সময় অর্ধশতাধিক পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের ওই এলাকায় দায়িত্বপালন করতে দেখা গেছে। হাইকোর্টের ভেতরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনেও রয়েছেন পুলিশ, র্যাব এবং সেনাবাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই তারিখ ধার্য করবেন।

এদিকে রায়ের দিন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আজ লকডাউন ঘোষণা করায় এবং কয়েক দিন ধরে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল ও সংলগ্ন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে গতকাল বুধবার সেনাসদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্য- বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা এই মামলায় গত ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। সেদিন রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক এবং চৌধুরী মামুন কারাগারে রয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ২৩ অক্টোবর সর্বশেষ যুক্তি উপস্থাপনকালে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ সাজার (মৃত্যুদণ্ড) আবেদন জানান। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের খালাস চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
চলতি বছরের ১ জুন এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে ১৬ জুন নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বিজ্ঞপ্তি জারির পরও হাজির না হলে ২৪ জুন তাঁদের দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, প্রতক্ষ্যদর্শীসহ ৫৪ জন। অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়।
নিরাপত্তা জোরদার
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি এবং গত কয়েক দিনের নাশকতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়ন করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে সেনাসদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একটি সূত্র বলেছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং মামলাটির সংবেদনশীলতার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বৃহস্পতিবার পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি রুখে দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: প্রসিকিউটর মিজানুল
ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে গতকাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, দেশে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা রুখে দেবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বচ্ছ এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে তারা এটা বলছে।
সহিংসতাকে ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল বলেন, এটাকে হুমকি মনে করেন না। তিনি মনে করেন, বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য করছে। এই ট্রাইব্যুনাল কোনোভাবেই কারও দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। বিচারের ক্ষেত্রে বিচারকেরা স্বাধীন।

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই ন
০৮ মার্চ ২০২২
দীর্ঘ আলোচনার পর স্বাক্ষর হলেও এখন বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে আটকে আছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা অনিরসনের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতে দলগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে সাত দিন সময় দেওয়া হলেও কোনো সমাধান আসেনি।
৮ ঘণ্টা আগে
জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই তারিখ ধার্য করবেন।
৯ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হবে আজ। তার আগেই সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা।
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দীর্ঘ আলোচনার পর স্বাক্ষর হলেও এখন বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে আটকে আছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা অনিরসনের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতে দলগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে সাত দিন সময় দেওয়া হলেও কোনো সমাধান আসেনি। এই অবস্থার মধ্যে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই বৈঠক থেকে সরকার কী সিদ্ধান্ত দেয়, তার অপেক্ষায় আছে দলগুলো।
সরকারসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ কিছুটা সংশোধন করে আদেশ জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। ১৫ নভেম্বর আদেশ জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি ঠিক করা হবে। এরপর তা রাজনৈতিক দলগুলোকে জানিয়ে দেবে সরকার।
এদিকে জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে যে যার অবস্থানে এখনো অনড় রয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট করার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো।
বিএনপির দলীয় সূত্র বলছে, জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, তার জন্য অপেক্ষা করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে সরকারের ভূমিকা, জামায়াতসহ ৮ দলের আন্দোলন নিয়ে কথা বলেন নেতারা। সনদ নিয়ে সৃষ্ট সংকট নিরসনে সরকারের দিক থেকে কার্যকর পদক্ষেপ আসার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তাঁরা।
গতকাল বুধবার রাজধানীতে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কি কোনো রাজনৈতিক দলের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করবে নাকি দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের কাছে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দেবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, জুলাই সনদের বিষয়াদির বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো দলের জন্য তা মান্য করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। সে ক্ষেত্রে সব দায়দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তাবে।’
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনে আছে জামায়াতে ইসলামীসহ ৮ দল। দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার ঢাকায় সমাবেশ করার পর এবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি পালনের হুমকি দিয়েছে তারা। গতকাল এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান বলেন, ১৬ নভেম্বর আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে জনগণের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়া না হলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি)। এনসিপির পলিসি ও রিসার্চ লিড খালেদ সাইফুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত দেখে এনসিপি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা তো সরকারের সিদ্ধান্ত এখনো জানি না। সরকার যখন সিদ্ধান্ত দেয়, তখন আমরা সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
এনসিপির নেতারা বলছেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা কেমন চাই, আমরা সেটা জানিয়েছি। আমরা বলেছি যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে যে গণভোট হবে, সেখানে কোনো নোট অব ডিসেন্ট থাকবে না। কারণ, গণভোটে নোট অব ডিসেন্ট থাকলে গণভোট অর্থহীন হয়ে যায়। গণভোটে যে ফলাফলই আসুক না কেন, পার্টিগুলোর তা অগ্রাহ্য করার সুযোগ তৈরি হয়।’

দীর্ঘ আলোচনার পর স্বাক্ষর হলেও এখন বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে আটকে আছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা অনিরসনের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতে দলগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে সাত দিন সময় দেওয়া হলেও কোনো সমাধান আসেনি। এই অবস্থার মধ্যে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই বৈঠক থেকে সরকার কী সিদ্ধান্ত দেয়, তার অপেক্ষায় আছে দলগুলো।
সরকারসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ কিছুটা সংশোধন করে আদেশ জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। ১৫ নভেম্বর আদেশ জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি ঠিক করা হবে। এরপর তা রাজনৈতিক দলগুলোকে জানিয়ে দেবে সরকার।
এদিকে জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে যে যার অবস্থানে এখনো অনড় রয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট করার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো।
বিএনপির দলীয় সূত্র বলছে, জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, তার জন্য অপেক্ষা করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে সরকারের ভূমিকা, জামায়াতসহ ৮ দলের আন্দোলন নিয়ে কথা বলেন নেতারা। সনদ নিয়ে সৃষ্ট সংকট নিরসনে সরকারের দিক থেকে কার্যকর পদক্ষেপ আসার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তাঁরা।
গতকাল বুধবার রাজধানীতে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কি কোনো রাজনৈতিক দলের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করবে নাকি দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের কাছে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দেবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, জুলাই সনদের বিষয়াদির বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো দলের জন্য তা মান্য করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। সে ক্ষেত্রে সব দায়দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তাবে।’
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনে আছে জামায়াতে ইসলামীসহ ৮ দল। দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার ঢাকায় সমাবেশ করার পর এবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি পালনের হুমকি দিয়েছে তারা। গতকাল এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান বলেন, ১৬ নভেম্বর আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে জনগণের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়া না হলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি)। এনসিপির পলিসি ও রিসার্চ লিড খালেদ সাইফুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত দেখে এনসিপি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা তো সরকারের সিদ্ধান্ত এখনো জানি না। সরকার যখন সিদ্ধান্ত দেয়, তখন আমরা সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
এনসিপির নেতারা বলছেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা কেমন চাই, আমরা সেটা জানিয়েছি। আমরা বলেছি যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে যে গণভোট হবে, সেখানে কোনো নোট অব ডিসেন্ট থাকবে না। কারণ, গণভোটে নোট অব ডিসেন্ট থাকলে গণভোট অর্থহীন হয়ে যায়। গণভোটে যে ফলাফলই আসুক না কেন, পার্টিগুলোর তা অগ্রাহ্য করার সুযোগ তৈরি হয়।’

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই ন
০৮ মার্চ ২০২২
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার বিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ট্রাইব্যুনালের মূল ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
৯ মিনিট আগে
জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই তারিখ ধার্য করবেন।
৯ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হবে আজ। তার আগেই সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা।
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই তারিখ ধার্য করবেন।
এদিকে রায়ের দিন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আজ লকডাউন ঘোষণা করায় এবং কয়েক দিন ধরে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল ও সংলগ্ন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে গতকাল বুধবার সেনাসদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটর বলেছেন, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রুখে দেবে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্য- বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা এই মামলায় গত ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। সেদিন রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক এবং চৌধুরী মামুন কারাগারে রয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ২৩ অক্টোবর সর্বশেষ যুক্তি উপস্থাপনকালে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ সাজার (মৃত্যুদণ্ড) আবেদন জানান। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের খালাস চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
চলতি বছরের ১ জুন এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে ১৬ জুন নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বিজ্ঞপ্তি জারির পরও হাজির না হলে ২৪ জুন তাঁদের দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, প্রতক্ষ্যদর্শীসহ ৫৪ জন। অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়।
নিরাপত্তা জোরদার
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি এবং গত কয়েক দিনের নাশকতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়ন করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে সেনাসদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একটি সূত্র বলেছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং মামলাটির সংবেদনশীলতার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বৃহস্পতিবার পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি রুখে দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: প্রসিকিউটর মিজানুল
ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে গতকাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, দেশে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা রুখে দেবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বচ্ছ এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে তারা এটা বলছে।
সহিংসতাকে ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল বলেন, এটাকে হুমকি মনে করেন না। তিনি মনে করেন, বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য করছে। এই ট্রাইব্যুনাল কোনোভাবেই কারও দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। বিচারের ক্ষেত্রে বিচারকেরা স্বাধীন।

জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই তারিখ ধার্য করবেন।
এদিকে রায়ের দিন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আজ লকডাউন ঘোষণা করায় এবং কয়েক দিন ধরে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল ও সংলগ্ন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে গতকাল বুধবার সেনাসদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটর বলেছেন, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রুখে দেবে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্য- বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা এই মামলায় গত ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। সেদিন রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক এবং চৌধুরী মামুন কারাগারে রয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ২৩ অক্টোবর সর্বশেষ যুক্তি উপস্থাপনকালে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ সাজার (মৃত্যুদণ্ড) আবেদন জানান। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের খালাস চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
চলতি বছরের ১ জুন এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে ১৬ জুন নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বিজ্ঞপ্তি জারির পরও হাজির না হলে ২৪ জুন তাঁদের দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, প্রতক্ষ্যদর্শীসহ ৫৪ জন। অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়।
নিরাপত্তা জোরদার
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি এবং গত কয়েক দিনের নাশকতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়ন করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে সেনাসদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একটি সূত্র বলেছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং মামলাটির সংবেদনশীলতার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বৃহস্পতিবার পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি রুখে দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: প্রসিকিউটর মিজানুল
ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে গতকাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, দেশে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা রুখে দেবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বচ্ছ এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে তারা এটা বলছে।
সহিংসতাকে ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল বলেন, এটাকে হুমকি মনে করেন না। তিনি মনে করেন, বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য করছে। এই ট্রাইব্যুনাল কোনোভাবেই কারও দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। বিচারের ক্ষেত্রে বিচারকেরা স্বাধীন।

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই ন
০৮ মার্চ ২০২২
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার বিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ট্রাইব্যুনালের মূল ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
৯ মিনিট আগে
দীর্ঘ আলোচনার পর স্বাক্ষর হলেও এখন বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে আটকে আছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা অনিরসনের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতে দলগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে সাত দিন সময় দেওয়া হলেও কোনো সমাধান আসেনি।
৮ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হবে আজ। তার আগেই সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা।
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হবে আজ। তার আগেই সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস ও ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। স্লিপার তুলে ফেলা হয়েছে রেললাইনের। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল রাজধানীতে চার জায়গায় বাস ও অন্যান্য যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঢাকার পার্শ্ববর্তী আশুলিয়া ও গাজীপুরে তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্তব্যরত এক আনসার সদস্যকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, মিরপুরের পল্লবী, কারওয়ানবাজারের সার্ক ফোয়ারা মোড় এবং মৌচাকে ফরচুন টাওয়ারের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সিলেট-আখাউড়া রেলপথের ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল স্টেশনের মধ্যবর্তী মৌলভীবাজার কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে রেললাইনের স্লিপার ফেলে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ১ থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ১৫টি স্থানে ২৭টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কোনো হতাহতের খবর নেই। তবে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত এবং আইনের আওতায় আনার কাজ করছে। ঢাকা ও আশপাশের জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর শাহ আলী থানা এলাকায় শতাব্দী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মিরপুর-২ নম্বর এলাকা থেকে নিউমার্কেটের দিকে যাওয়ার পথে যাত্রীবেশে থাকা তিনজন বাসটিতে আগুন দেয়। বাসের সামনের কয়েকটি আসন পুড়ে যায়, তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শাহ আলী থানার ওসি গোলাম আযম বলেন, মিরপুর-২ নম্বরের দিক থেকে সনি সিনেমা পেরিয়ে নিউমার্কেটের দিকে যাওয়ার পথে যাত্রীবেশে থাকা তিনজন বাসটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভানো হয়।
গতকাল রাতে রাজধানীর দোলাইরপাড়ে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুখে সড়কে আরেকটি বাস আগুনে পুড়েছে। এর বাইরে ঢাকার কাকরাইলে রমনা থানার সামনে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান এবং উত্তরায় একটি মাইক্রোবাসও আগুনে পুড়ে যায়। তবে এই দুটি ঘটনা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
গতকাল রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে জাহাঙ্গীর আলম চাকলাদার নামের এক পথচারী আহত হয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে। রাত সাড়ে নয়টায় পল্লবীতে জুলাই ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী চলার সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে এবং প্রায় একই সময়ে মৌচাকে ফরচুন টাওয়ারের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ ছাড়া রাত ১০টার পর কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এদিকে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় তেজগাঁও রেলস্টেশনের পরিত্যক্ত লাইনে থাকা ট্রেনের কোচে আগুন দেয় দুষ্কৃতকারীরা । স্থানীয় লোকজনের তৎপরতায় আগুন দ্রুত নিভিয়ে ফেলা হয়। ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দা ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সহযোগিতায় ঘটনাস্থলের পাশ থেকে সন্দেহভাজন দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের প্রিপারেটরি স্কুলের সামনে দুটি পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। একই রাতে ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় সড়কের পাশে পার্ক করা আলিফ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। বাসের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা চালক আহত হন এবং বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
গাজীপুরে সাত ঘণ্টার মধ্যে তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত গাজীপুর নগর ও শ্রীপুরে এসব ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
এদিকে সিলেট-আখাউড়া রেলপথের ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল স্টেশনের মধ্যবর্তী মৌলভীবাজার কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে রেললাইনের স্লিপার ফেলে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। তবে ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সময়মতো থামিয়ে বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। এসব ঘটনার পর রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোট ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেকোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে এবং সাধারণ মানুষ যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারে, তা নিশ্চিত করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রল ঢেলে আগুন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির আসবাবসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে গেছে। তবে টাকার ভল্টের কোনো ক্ষতি হয়নি। কে বা কারা এই অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে, সেটাও জানা যায়নি।
ব্যাংকের চান্দুরা শাখার ম্যানেজার মো. কলিম উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে বাইরে থেকে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগানো হয়। নৈশপ্রহরী বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁদের অবহিত করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরই মধ্যে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন পুরোপুরি নেভান। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হবে বলে উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হবে আজ। তার আগেই সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস ও ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। স্লিপার তুলে ফেলা হয়েছে রেললাইনের। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল রাজধানীতে চার জায়গায় বাস ও অন্যান্য যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঢাকার পার্শ্ববর্তী আশুলিয়া ও গাজীপুরে তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্তব্যরত এক আনসার সদস্যকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, মিরপুরের পল্লবী, কারওয়ানবাজারের সার্ক ফোয়ারা মোড় এবং মৌচাকে ফরচুন টাওয়ারের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সিলেট-আখাউড়া রেলপথের ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল স্টেশনের মধ্যবর্তী মৌলভীবাজার কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে রেললাইনের স্লিপার ফেলে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ১ থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ১৫টি স্থানে ২৭টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কোনো হতাহতের খবর নেই। তবে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত এবং আইনের আওতায় আনার কাজ করছে। ঢাকা ও আশপাশের জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর শাহ আলী থানা এলাকায় শতাব্দী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মিরপুর-২ নম্বর এলাকা থেকে নিউমার্কেটের দিকে যাওয়ার পথে যাত্রীবেশে থাকা তিনজন বাসটিতে আগুন দেয়। বাসের সামনের কয়েকটি আসন পুড়ে যায়, তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শাহ আলী থানার ওসি গোলাম আযম বলেন, মিরপুর-২ নম্বরের দিক থেকে সনি সিনেমা পেরিয়ে নিউমার্কেটের দিকে যাওয়ার পথে যাত্রীবেশে থাকা তিনজন বাসটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভানো হয়।
গতকাল রাতে রাজধানীর দোলাইরপাড়ে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুখে সড়কে আরেকটি বাস আগুনে পুড়েছে। এর বাইরে ঢাকার কাকরাইলে রমনা থানার সামনে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান এবং উত্তরায় একটি মাইক্রোবাসও আগুনে পুড়ে যায়। তবে এই দুটি ঘটনা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
গতকাল রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে জাহাঙ্গীর আলম চাকলাদার নামের এক পথচারী আহত হয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে। রাত সাড়ে নয়টায় পল্লবীতে জুলাই ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী চলার সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে এবং প্রায় একই সময়ে মৌচাকে ফরচুন টাওয়ারের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ ছাড়া রাত ১০টার পর কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এদিকে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় তেজগাঁও রেলস্টেশনের পরিত্যক্ত লাইনে থাকা ট্রেনের কোচে আগুন দেয় দুষ্কৃতকারীরা । স্থানীয় লোকজনের তৎপরতায় আগুন দ্রুত নিভিয়ে ফেলা হয়। ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দা ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সহযোগিতায় ঘটনাস্থলের পাশ থেকে সন্দেহভাজন দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের প্রিপারেটরি স্কুলের সামনে দুটি পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। একই রাতে ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় সড়কের পাশে পার্ক করা আলিফ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। বাসের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা চালক আহত হন এবং বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
গাজীপুরে সাত ঘণ্টার মধ্যে তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত গাজীপুর নগর ও শ্রীপুরে এসব ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
এদিকে সিলেট-আখাউড়া রেলপথের ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল স্টেশনের মধ্যবর্তী মৌলভীবাজার কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে রেললাইনের স্লিপার ফেলে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। তবে ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সময়মতো থামিয়ে বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। এসব ঘটনার পর রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোট ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেকোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে এবং সাধারণ মানুষ যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারে, তা নিশ্চিত করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রল ঢেলে আগুন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির আসবাবসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে গেছে। তবে টাকার ভল্টের কোনো ক্ষতি হয়নি। কে বা কারা এই অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে, সেটাও জানা যায়নি।
ব্যাংকের চান্দুরা শাখার ম্যানেজার মো. কলিম উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে বাইরে থেকে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগানো হয়। নৈশপ্রহরী বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁদের অবহিত করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরই মধ্যে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন পুরোপুরি নেভান। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হবে বলে উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।

‘এই যে নারী দিবস, নারী দিবস কারে বলে, আমরা তো জানি না। আমাদের কারখানায় পুরুষেরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু আমরা ওভারটাইম করলেও ন্যায্য মজুরি পাই না।’ কথাটা তৈরি পোশাক কারখানা লোডস্টার ফ্যাশন লিমিটেডের অপারেটর লাইজু বেগমের। নারী দিবস কী, কেন ইত্যাদি না জানলেও বৈষম্যের পাঠটা তিনি নিজের জীবন দিয়েই ন
০৮ মার্চ ২০২২
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার বিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ট্রাইব্যুনালের মূল ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
৯ মিনিট আগে
দীর্ঘ আলোচনার পর স্বাক্ষর হলেও এখন বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে আটকে আছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা অনিরসনের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতে দলগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে সাত দিন সময় দেওয়া হলেও কোনো সমাধান আসেনি।
৮ ঘণ্টা আগে
জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই তারিখ ধার্য করবেন।
৯ ঘণ্টা আগে