Ajker Patrika

‘মিয়ানমার সীমান্তে গুলি করার নির্দেশ নেই, তবে হামলা হলে ছাড় নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‘মিয়ানমার সীমান্তে গুলি করার নির্দেশ নেই, তবে হামলা হলে ছাড় নয়’

মিয়ানমার থেকে অবৈধ অস্ত্র, মাদক, মানবপাচার ও চোরাচালান রোধে প্রয়োজনে সীমান্তে গুলি চালানো হবে। মাসের শুরুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। তবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীমান্তে গোলাগুলির আমাদের কোনো উদ্দেশ্য নেই। কেউ যদি সীমান্তের নিয়ম ভাঙে তখন বিজিবি ব্যবস্থা নেবে।

কেউ যদি ফায়ার ওপেন করে, বিজিবিও পাল্টা ফায়ার ওপেন করে। নিরপরাধ লোককে ফায়ার করা বিজিবির কর্ম নয়। ফায়ার করার জন্য বিজিবি নয়, বিজিবি সীমান্ত রক্ষা করার জন্য। সীমান্ত রক্ষা করার জন্য যা যা প্রয়োজন বিজিবিকে সেটা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কাজেই নতুন করে আদেশ নির্দেশ সেখানে বিজিবির জন্য দেওয়া হয়নি। 

বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব‍্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসসহ কমিটির অন্য সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, লাগামহীনভাবে রোহিঙ্গাদের ফ্যামিলির পরিসর বেড়ে যাচ্ছে। জন্মহার নিয়ন্ত্রণ ও নতুন জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গাদের তালিকাভুক্তিকরণের বিষয়টি আলোচনায় আসছে। রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহর হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রায় সবাইকে ধরা হয়েছে। খুনের মোটিভ কী ছিল তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর আমরা জানতে পারব। আমাদের নিরাপত্তায় কোনো দুর্বলতা নেই। 

এদিকে ভাসানচর থেকে সন্ধ্যার পর আর মূল ভূখণ্ডে কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ভাসানচর থেকে সন্ধ্যার পর আর মূল ভূখণ্ডে কোনো  নৌযান চলবে না। সন্ধ্যার পর ভাসানচর থেকে নোয়াখালী কিংবা হাতিয়ার যাতায়াত বন্ধ থাকবে। 

কামাল জানান, কক্সবাজার ও ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে পুলিশ, এপিবিএন, আনসার ও র‍্যাবের যৌথ টহল আরও বাড়বে। ক্যাম্পের বাইরে সেনবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব সব সময় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক প্রবেশ, মাদক বিক্রিরোধে মনিটরিং বাড়ানো হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চালানো হবে। 

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বেশ কিছু ওয়াচ টাওয়ার হয়েছে, আরও হবে। অভ্যন্তরীণ রাস্তার কাজও শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছ, সেটা অব্যাহত থাকবে। নাফ নদীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি আরও জোরদার করা হবে। প্রয়োজনে উখিয়া ও টেকনাফে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।    

তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ভাসানচরে ডিসেম্বর থেকে স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের টার্গেট অনুযায়ী এক লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জোরদার করব। যাতে ডিসেম্বর থেকে শুরু করে এক লাখ রোহিঙ্গা তারপর আরও অবশিষ্ট অংশ সেখানে নেব। তাদের থাকা, নিরাপত্তা, আসা-যাওয়ার জন্য যা যা লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার সেগুলো সেখানে প্রতিষ্ঠিত করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত