Ajker Patrika

সৌদি আরবে ভ্রমণ গন্তব্যে যুক্ত হলো প্রাকৃতিক গুহা

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের রুক্ষ মরুভূমি আর বিশাল পাথরের স্তূপের মধ্যে লুকিয়ে আছে অদ্ভুত সব গুহা। কোটি কোটি বছর ধরে তৈরি হওয়া এই গুহাগুলো শুধু প্রাকৃতিক বিস্ময় নয়, এগুলো বৈজ্ঞানিক এবং পর্যটনের জন্যও অমূল্য সম্পদ। সৌদি আরব এরই মধ্যে পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন শহর ও স্থানকে নতুন করে সাজিয়ে পর্যটকদের ভ্রমণে উপযোগী করে তুলছে। এবার সেই তালিকায় যোগ হচ্ছে দেশটির বিভিন্ন গুহা।

গুহা গবেষক হাসান আল-রাশিদি ছোটবেলা থেকেই গুহা অন্বেষণে আগ্রহী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে আমি কয়েকজন বন্ধুর জন্য গুহার ভিডিও বানানো শুরু করি। ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখাতে গিয়ে মানুষের আগ্রহ দেখে আরও উৎসাহ পেলাম। তখন বুঝলাম, আমাদের দেশে অনেক অজানা গুহা আছে, যেগুলো সাধারণ মানুষ কখনো দেখেনি।’

নতুন আকর্ষণ আবু আল-ওয়াল গুহা

সৌদি আরবের জনপ্রিয় একটি গন্তব্য আবু আল-ওয়াল গুহা। এটি মদিনার খাইবারে অবস্থিত। সেখানকার ভূপ্রকৃতি নজরকাড়া। জমাটবদ্ধ লাভা থেকে তৈরি গুহা ও মাটির স্তর দেখে মনে হয় প্রাকৃতিক শিল্পকর্ম। এই গুহার দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। গুহাটিতে প্রবেশ করলে দেখা মিলবে শিয়াল, হায়েনা, নেকড়ের মতো নানান প্রাণীর। দিনের বেলায় এসব প্রাণীর জন্য গুহা নিরাপদ আশ্রয়স্থল।

আবু আল-ওয়াল গুহা ছাড়াও মদিনার কাছে উম জারসান গুহা রয়েছে। এটি প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ। এই গুহা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। সৌদি আরবের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা এই গুহাগুলোকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে ঘোষণার পর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে।

পর্যটকদের জন্য যেভাবে সাজানো হচ্ছে গুহাগুলো

সৌদি আরবের পর্যটন উন্নয়ন তহবিল ও ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা গুহাগুলোকে পর্যটকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা স্থাপন, গাইডলাইন প্রদান এবং পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করা।

গুহা ভ্রমণের প্রতিবন্ধকতা

গুহা ঘুরে দেখা খুব একটা সহজ নয়, ঝুঁকিও আছে। হঠাৎ ধস বা পাথর পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই প্রস্তুতি নিতে হয় পুরোপুরি। দূরত্ব মাপার যন্ত্র, রশি, হেলমেট, শক্ত জুতা, পর্যাপ্ত খাবার ও পানি, আলো—সবকিছু সঙ্গে রাখতে হয়।

কিছু গুহা তৈরি হয় আগ্নেয়গিরির লাভা থেকে। সেগুলোতে বাইরের অংশ জমে যায় কিন্তু ভেতরে লাভার উদ্‌গিরণ চলতে থাকে। আবার কিছু ক্যালসারিয়াস স্যান্ডস্টোন গুহা, যেগুলো কোটি কোটি বছর আগে বৃষ্টির প্রভাবে গঠিত হয়েছিল। ফলে এগুলোর ভেতরে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিকের বিক্রিয়া চলতে থাকে, যা মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

সৌদি আরবের গুহাগুলো দিন দিন পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। গুহাগুলো শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, বরং তাদের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটকেরা এখানে এসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন এবং একই সঙ্গে সৌদি আরবের ইতিহাস ও ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে পারেন।

সূত্র: আরব নিউজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত