জাহীদ রেজা নূর

নিউইয়র্কে পা দিতে না দিতেই ঈদের আমেজ। সৌদি আরবে কবে চাঁদ দেখা যাবে, তা নিয়ে ছিল সংশয়। মনে করা হচ্ছিল, এবার এক দিন পিছিয়ে যেতে পারে ঈদ। কিন্তু একসময় বলা হলো, সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, তাই এবার ঈদ হবে ২১ এপ্রিল। ব্যস, শুরু হয়ে গেল তোড়জোড়। বাঙালি পাড়ায় পাড়ায় এল ঈদের আমেজ। জ্যাকসন হাইটস জেগে থাকল সারা রাত। পালা করে চলল মেহেদী উৎসব। সাজগোজের হিড়িক পড়ে গেল। ঈদের দিন কে কার বাড়িতে বেড়াতে যাবে, তা নিয়ে শুরু হলো জল্পনা-কল্পনা।
যারা বহুদিন ধরে বসবাস করছেন এই নগরীতে, তাদের বন্ধুমহল দাঁড়িয়ে গেছে। ঈদ বা যে কোনো উৎসব এলে এই পরিবারগুলো একে অন্যের সঙ্গে মোলাকাত করে।
আমরা তিন পরিবার মিলে ঠিক করলাম যে যার বাড়িতে রান্না করে কুইনস ভিলেজে বড় ভাইয়ের বাড়িতে দুপুরের খাবার খাব। বন্ধু যাঁরা আছেন, তাঁদেরও কেউ কেউ যোগ দেবেন লাঞ্চে। কে কী রান্না করল, সে কথা না বলে জানিয়ে রাখি, সেদিন কোন কোন খাবারের ভারে নুয়ে পড়েছিল টেবিল। ছিল খাসির বিরিয়ানি, গরুর রেজালা, চাপালি কাবাব, মুরগির রোস্ট, রাশান বেগুন, ডিম ভুনা, ফ্রেশ সালাদ, জর্দা, পায়েস, সেমাই। টেবিলে এই খাবারগুলো সাজিয়ে রাখার পর বোঝা গেল, এত আয়োজনের প্রয়োজন ছিল না। খাসির বিরিয়ানি থাকলে ফ্রেশ সালাদই যথেষ্ট। আর কিছু তৈরি না করলেও চলত।
সেদিন আরো দুই পরিবার এসে যোগ দিয়েছিল আমাদের মিলনমেলায়। সবচেয়ে দরকারি কথা হলো, সেই দুই পরিবারের তরুণ সদস্যরাও এবার এসেছিল বাবা-মায়ের সঙ্গে। নিউইয়র্কের বাঙালি পরিবারগুলোর দিকে খেয়াল করলে দেখা যায়, তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা নিজেদের মতো করে সময় কাটাতে পছন্দ করে। বাবা-মায়েরা যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলে, আড্ডা দেয়, তার সঙ্গে তরুণদের যোগাযোগ কম। এটাকেই বুঝি জেনারেশন গ্যাপ বলে।
একটু নির্দয় হয়েই বলি, বাবা-মায়ের প্রজন্ম যে বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ করে, তাতে নস্টালজিয়ার পরিমাণ থাকে বেশি, এই এলাকায় একত্রে বসবাসকারী পরিবারগুলোর ভালো-মন্দ নিয়ে থাকে আলোচনা, ইহকাল ও পরকাল নিয়ে থাকে গম্ভীর আলোচনা, পোশাক-আশাক নিয়ে কথাবার্তা। এইগুলো তরুণ প্রজন্মকে একেবারেই টানে না। নতুন প্রযুক্তির প্রতি সারা বিশ্বের তরুণদের যে আগ্রহ, এখানকার বাঙালি তরুণ-তরুণীর আগ্রহও সেদিকে। ফলে বড়দের সঙ্গে কথা বলার মতো বিষয়বস্তুর বড্ড অভাব তাদের। সে রকম একটা পরিপ্রেক্ষিতে দুই পরিবারের তরুণেরা বেড়াতে এল, এটা খুবই আশাপ্রদ একটি ব্যাপার। এর মধ্যে এক তরুণ তার মনের মানুষ খুঁজে পেয়েছে, সেই খবরও পাওয়া গেল।
আমরা একসময় ঢাকার চামেলীবাগে বসবাস করেছি। সেখানে পাশের বাড়িতে ছিল শামীম ভাইদের বাস। তিনি এসেছিলেন সস্ত্রীক, সসন্তান। সেই ছেলেবেলার চামেলীবাগ নিয়ে যখন আলাপ শুরু হলো, তখন কত না নাম ভেসে এল। যা ছিল বিস্মৃতির অতলে, তাও বেরিয়ে এল। মনে হলো, কত দিন পর সেই নামগুলো শোনা যাচ্ছে আর এক একটা চেহারা ভেসে উঠছে চোখের সামনে, অথচ সময়ের ব্যবধানে হয়তো সেই মুখগুলো এমনভাবে পরিবর্তন করে দিয়েছে, যে সামনাসামনি দেখা হলেও তাদের অনেককেই চিনতে পারব না।
মুখোশহীন অবয়ব এবং মনের সুখে গান
গতবার যখন এসেছিলাম নিউইয়র্কে, তখনো করোনার ভয় ছিল মানুষের মনে। তখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্টে মাস্ক ছাড়া ওঠা যেত না। দোকানে ঢুকতে হলেও মাস্কের প্রয়োজনীয়তা ছিল। এবার সে ভয় নেই। যত্রতত্র মাস্কহীন চলাচল। খাবার-দাবারের জন্য আমাদের প্রিয় দোকান কি-ফুডে ঢুকলাম মাস্ক ছাড়াই। বিশাল সেই দোকানটা একাই একটা মার্কেটের সমান। থরে থরে সাজানো খাবারদাবার। ফলমূল। মরিচ-পেঁয়াজ। রুটি-মাখন। কাচা, আধা রান্না করা, খাওয়ার উপযোগী কত না খাবার সেখানে।
সেখানেই দেখলাম এক বৃদ্ধা এসেছেন মাস্ক পরে। তিনি হয়তো এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না, করোনা আর নেই। তাঁকে দেখেই মনে পড়ল, করোনাকালে বিমানযাত্রার সময় করোনার টেস্ট ছিল কী ভয়ংকর। শীতের মধ্যে হাসপাতালের সামনে ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে করোনার টেস্ট করাতে হতো। সময়মতো সেই টেস্টের ফল না এলে বিমানে ওঠা যেত না। একবার সময়মতো আসেনি বলে আমাকে ফিরে আসতে হয়েছিল। পরে আরো ৩০০ ডলার গচ্চা দিয়ে তিন দিন পরের টিকিট জোগাড় করতে হয়েছিল। নতুন করে লাইনে দাঁড়িয়ে করোনা টেস্ট করাতে হয়েছিল। সে যে কী এক সময় পার করতে হয়েছে!
মাস্ক কখনো কখনো নিরাপদ রাখে শরীর। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হলেই কেবল মনে হয়, কেন এই বাড়াবাড়ি!
এখন চারদিকে মাস্কবিহীন মানুষের চলাচল দেখে বোঝারই উপায় নেই, কী এক সময় পার করেছিল পৃথিবী!
কাল শনিবার সাবওয়ে থেকে নেমে বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় এক নারীকে দেখলাম মুখে মাস্ক দিয়ে রেখেছেন। কিউ ৪৩ বাস এলে আমরা একেবারে পেছন দিকে গিয়ে বসলাম। আমাদের পেছনে বসলেন সেই নারী। বয়স আনুমানিক ৫০। কিছু বেশিও হতে পারে। চেহারা দেখে মনে হলো লাতিন আর আফ্রিকান মিশ্রণ। বাস চলা শুরু করলে তিনি মাস্ক খুললেন। রং করা চুলগুলো ঝুঁটি করে বাঁধলেন। তারপর মোবাইল ফোনে গান ছাড়লেন এবং দুচোখ বন্ধ করে মনের সুখে গাইতে লাগলেন গান। সেই গান অন্য কাউকে অস্বস্তিতে ফেলছে কি না, সেদিকে নজরই দিলেন না। আমাদের অবশ্য ভালোই লাগছিল। একঘেয়ে জীবনে মাঝে মাঝে এ রকম ঘটনা মনকে শান্ত করে।
কিন্তু সেই শান্তি একটু পরই উধাও হলো। বাসের সামনের দিক থেকেও ভেসে আসতে শুরু করল আরেক নারীর কণ্ঠনিসৃত গান। গানটি কর্কশ। বোঝাই যাচ্ছিল, গোটা দুনিয়াকে তাচ্ছিল্য করে গাইছেন তিনি। এই নারীর বয়স আরো বেশি। জীবনসংগ্রামের চিহ্ন তাঁর চোখে-মুখে। কেউ প্রতিবাদ করছে না। সবাই জানে, প্রতিবাদে কাজ হবে না। যে কষ্ট আর বঞ্চনার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে গানে, তাতে নিষেধ করা হেল বারুদে আগুন দেওয়া হবে।
আমরা যে স্টেশনে বাস থেকে নামলাম, এই গায়িকাও সেখানেই নামলেন। তারপর আরেকটু এগিয়ে অন্য এক বাসস্টেশনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে লাগলেন। যেন হাজার মানুষের জনসভায় বক্তৃতা দিচ্ছেন। বিষয়টিতকে হাস্যকর ভাবলে এক রকম, কষ্টের ভাবলে আরেক রকম।
আমার বুক থেকে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।
মাঠের বাতাসে কীসের গন্ধ?
ব্র্যাডক অ্যাভিনিউতে যে পার্কটি আছে, সেটায় হাঁটতে যাই। ঘণ্টাখানেক হাঁটলে শরীর ঝরঝরে হয়ে ওঠে। সেদিনও গেছি হাঁটতে। মাঠে কেউ নেই। শুধু একপাশে এক বেঞ্চিতে বসে আছে এক তরুণী আর এক তরুণ। তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক তরুণ। তাদের সামনে দিয়ে হেঁটে আসার সময় দেখলাম, বসে থাকা তরুণটি দাঁড়িয়ে থাকা তরুণের হাতে ধরিয়ে দিল তার হাতে থাকা সিগারেটটি। সিগারেটে টান দিয়ে যখন ধোঁয়া ছাড়ল সেই তরুণ, আমি টের পেলাম, এই গন্ধ আমি চিনি। ইদানীং ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় এই গন্ধ পাওয়া যায়। বিশেষ করে ধানমন্ডি লেকের আশপাশে পরিচিত এই গন্ধ।
হ্যাঁ, গাঁজার গন্ধ।
ব্র্যাডক অ্যাভিনিউর পার্কটার বেঞ্চিতে বসে গাঁজা টেনে চলেছে তিন তরুণ-তরুণী।
এতে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। নিউইয়র্ক শহরে এখন গাঁজা কোনো নিষিদ্ধ বন্তু নয়। ক্যানাবিস, মারিউয়ানা, পট কিংবা গাঁজা যে নামেই ডাকা হোক না কেন, এই নেশায় এখন নিষেধাজ্ঞা নেই। আইনগতভাবেই গাঁজার বিক্রি এখন বৈধ, সুতরাং সিগারেটের মতো গাঁজায় দম দেওয়া এই শহরে স্বাভাবিক ব্যাপার।
গাঁজাকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য কিছুদিন আগে নিউইয়র্কে গাঁজা উৎসবও হয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, আগামী ৬ মে নিউইয়র্ক ক্যানাবিস প্যারেড হবে ম্যানহাটনে। ব্রডওয়েতে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত হবে ক্যানাবিস মেলা।
নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি এই সিনেটে রিক্রিয়েশনাল মারিউয়ানা বিক্রি ও সেবন বিল পাশ হয়েছিল ২০২১ সালে। একসঙ্গে তিন আউন্স গাঁজা ব্যবহারের জন্য যে কেউ কাছে রাখতে পারবে, এটাই ছিল আইন। তবে গাঁজা সেবনের জন্য বয়স হতে হবে অন্তত ২১।
গাঁজা বিক্রি থেকে যে রাজস্ব আয় হবে, তা মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো। প্রথম বছরে নিউইয়র্ক স্টেট ক্যানাবিস বিক্রি থেকে রাজস্ব পাবে ১.২ বিলিয়ন ডলার। ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে এই আয় বেড়ে দাঁড়াবে ৪ বিলিয়ন ডলার। ভাবা যায়!
আবহাওয়া
সকালের দিকে রোদ ওঠার পর বাইরে বের হলে হালকা জামার ওপর হালকা সোয়েটার জড়ালেই চলে। কিন্তু দিন যত বিকেলের দিকে গড়ায়, ততোই বাতাসে ভর করে শীত এসে জাঁকিয়ে বসে নিউইয়র্ক শহরে। এ সময় বীরত্ব দেখিয়ে সোয়েটারের ওপর ভরসা করলেই মুশকিল। শীতে দাঁতকপাটি লেগে গেলে কাউকে দোষ দেওয়া যাবে না।
সোভিয়েত ইউনিয়নের রাশিয়ায় বসবাস করেছি ১০ বছর। শীতের নাড়ি-নক্ষত্রের খোঁজ নিয়েছিলাম এবং তা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার উপায় শিখেছিলাম সেখানেই। একটা কথা কখনই ভুলি না। খুব বেশি শীত পড়লে শরীরের তিনটি স্থান সুরক্ষিত রাখতে হয়। মাথা-বুক-পা। এই তিন জায়গায় ভারী কাপড় থাকলে শীতের বাবার সাধ্য নেই কাউকে কাবু করে ফেলবে।
এখানে, এই নিউইয়র্কেও সেই সত্য মেনে চলি। জানি, হঠাৎ করে আসা ঠান্ডা বাতাস কতটা নিস্তেজ করে দিতে পারে শরীর।
হুমায়ূন আহমেদ তাঁর লেখায় নিউইয়র্কের নীল আকাশ নিয়ে লিখেছেন। তিনি ভুল লেখেননি। এখানকার আকাশটা সত্যিই অদ্ভুত সুন্দর। এই এপ্রিলের শেষে ঋতু পরিবর্তনের তোড়জোড়ের মধ্যে নীল আকাশে সাদা মেঘ এমনভাবে ছড়িয়ে আছে, যেন মনে হচ্ছে শিল্পীর তুলিতে আঁকা কোনো ছবি। সে তেলরং হতে পারে, জলরংও হতে পারে, অ্যাক্রিলিকের ছোঁয়া থাকলেও ক্ষতি নেই।
আমরা এই শহরে ঘুরতে আসা মানুষরা যেভাবে এই আকাশ দেখি, নিউইয়র্কবাসী কি সেভাবে দেখে? এই প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। কাউকে ভরসা করে জিজ্ঞেস করতেও ইচ্ছে করে না। কে জানে, যদি ভেবে বসেন, এত ‘আজাইরা’ ভাবনারও সময় আছে আমার!
কুইনস ভিলেজের সারি সারি বাড়ির মাঝ দিয়ে তৈরি রাস্তাগুলোয় হাঁটতে ভালো লাগে। কাল দুপুরে যখন হাঁটতে বের হলাম, তখন মনে হলো এ যেন এক মৃত শহর। বাড়িগুলোর ভেতরে নিশ্চয়ই মানুষ আছে, কিন্তু তাদের কারো দেখা নেই রাস্তায়। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার সময় একজন মানুষও চোখে পড়ল না। রাস্তায় সারি সারি গাড়ি অলসভাবে দাঁড়িয়ে আছে। বহুক্ষণ সময় পার করে কোনো গাড়ি পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। ওটুকুতেই বোঝা যায়, শহরটা মৃত নয়।
জ্যামাইকা অ্যাভিনিউ পর্যন্ত গিয়ে ডলার শপ আর টিডি ব্যাংক পার হয়ে কি-ফুডে ঢুকলাম কিছুক্ষণের জন্য। সেখানে অদ্ভুত রঙের একটি মাছ আমার দৃষ্টি কেড়ে নিল। মাছ যে এ রকম সাজুগুজু করে বিক্রির জন্য হাজির হতে পারে, তা আমার জানা ছিল না। আর সেই সাজগোজ মোটেই কৃত্রিম নয়, একেবারে প্রাকৃতিক। একবার ভাবলাম, কিনে ফেলি মাছ। কিন্তু তখনই মনে পড়ল, ফ্রিজে রাখা খাবারের একটা হিল্লে না হওয়া পর্যন্ত অযথা টাকা খরচ করা বারন।
২১৩ নম্বর স্ট্রিট দিয়ে ফিরে আসার পথে হাতের বাঁয়ে একটা বাড়ির নাম দেখে থমকে দাঁড়ালাম।
বাড়িটির নাম ‘ক্ষণিকা’। বাংলায় লেখা। আমি দাঁড়াতেই দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন এক ভদ্রলোক। আমি তাঁর পরিচয় জানতে চাইলাম না। বাংলাতেই জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি তো বাঙালি।’
হাসলেন ভদ্রলোক। বললেন, ‘হ্যাঁ, বাঙালি। আপনি কোনদিকে থাকেন, বেলরোজের দিকে?’
আমি যে পথ ধরে হেঁটে আসছিলাম, তার পেছন দিকটায় বেলরোজ পাড়া।
বললাম, ‘না, আমি আছি স্প্রিংফিল্ডের দিকে। আপনার বাড়ির নামটা সুন্দর।’
ভদ্রলোক হাসলেন। বিদায় নিয়ে যখন আবার পা বাড়িয়েছি রাস্তায়, তখনই কেবল মনে পড়ল, ভদ্রলোকের নামটাও তো জানা হলো না। কবে থেকে এখানে আছেন, বয়স কত, এখানেই থেকে গেলেন কেন—কত প্রশ্নই তো করা যেত। তা নিয়ে লেখা যেত একটা ফিচার। কিন্তু সেটা সময়মতো মনে পড়ল না। বহমান জীবনে কত কিছুই তো ঘটে যায়, কত কিছু মনোযোগ পায়, আবার কত কিছুই তো বিনা মনোযোগে চলে যায় দূরে। একসময় অদৃশ্য হয়ে যায় জীবন থেকে। এই যে নিউইয়র্কের কুইনস ভিলেজে একটি বাড়ির নাম বাংলায় ‘ক্ষণিকা’ হয়ে রয়েছে, তার ইতিহাস কি আর জানা হবে কখনো? আমি নিজেই কি দ্বিতীয়বারের মতো এই বাড়ির কাছে যাব আর?
উত্তর মেলে না।
শুধু মনে হয়, ‘ক্ষণিকা’ নামটিই তো বুঝিয়ে দিচ্ছে, খুব স্বল্প সময়ের জন্যই আমাদের এই চলাফেরা। খুব অল্প সময়ের গল্পগুলোই বেঁচে থাকে মনে। তাই ক্ষণিকা বা ক্ষণিকের এই হৃদয়ে দোলা দেওয়া ঘটনারও একটা মানে থেকে যায়।
আরে! দেখ দেখি কাণ্ড! ভদ্রলোকের অনুমতি নিয়ে বাড়ির নামসহ একটা ছবি ত্র তুলতে পারতাম। সেটাও হলো না! পথে আরেকটু এগোতেই এক মহাজ্ঞানী কাঠবেড়ালি লেজতুলে যখন পালাচ্ছিল, তখন তার পায়ের শব্দে উড়ে গেল কয়েকটি পাখি। আকাশে ভাসতে থাকা পাখিগুলোকে দেখে হঠাৎ করেই মনে ভেসে উঠল গানটি, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়…।’ কেন ভেসে উঠল, কে জানে!

নিউইয়র্কে পা দিতে না দিতেই ঈদের আমেজ। সৌদি আরবে কবে চাঁদ দেখা যাবে, তা নিয়ে ছিল সংশয়। মনে করা হচ্ছিল, এবার এক দিন পিছিয়ে যেতে পারে ঈদ। কিন্তু একসময় বলা হলো, সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, তাই এবার ঈদ হবে ২১ এপ্রিল। ব্যস, শুরু হয়ে গেল তোড়জোড়। বাঙালি পাড়ায় পাড়ায় এল ঈদের আমেজ। জ্যাকসন হাইটস জেগে থাকল সারা রাত। পালা করে চলল মেহেদী উৎসব। সাজগোজের হিড়িক পড়ে গেল। ঈদের দিন কে কার বাড়িতে বেড়াতে যাবে, তা নিয়ে শুরু হলো জল্পনা-কল্পনা।
যারা বহুদিন ধরে বসবাস করছেন এই নগরীতে, তাদের বন্ধুমহল দাঁড়িয়ে গেছে। ঈদ বা যে কোনো উৎসব এলে এই পরিবারগুলো একে অন্যের সঙ্গে মোলাকাত করে।
আমরা তিন পরিবার মিলে ঠিক করলাম যে যার বাড়িতে রান্না করে কুইনস ভিলেজে বড় ভাইয়ের বাড়িতে দুপুরের খাবার খাব। বন্ধু যাঁরা আছেন, তাঁদেরও কেউ কেউ যোগ দেবেন লাঞ্চে। কে কী রান্না করল, সে কথা না বলে জানিয়ে রাখি, সেদিন কোন কোন খাবারের ভারে নুয়ে পড়েছিল টেবিল। ছিল খাসির বিরিয়ানি, গরুর রেজালা, চাপালি কাবাব, মুরগির রোস্ট, রাশান বেগুন, ডিম ভুনা, ফ্রেশ সালাদ, জর্দা, পায়েস, সেমাই। টেবিলে এই খাবারগুলো সাজিয়ে রাখার পর বোঝা গেল, এত আয়োজনের প্রয়োজন ছিল না। খাসির বিরিয়ানি থাকলে ফ্রেশ সালাদই যথেষ্ট। আর কিছু তৈরি না করলেও চলত।
সেদিন আরো দুই পরিবার এসে যোগ দিয়েছিল আমাদের মিলনমেলায়। সবচেয়ে দরকারি কথা হলো, সেই দুই পরিবারের তরুণ সদস্যরাও এবার এসেছিল বাবা-মায়ের সঙ্গে। নিউইয়র্কের বাঙালি পরিবারগুলোর দিকে খেয়াল করলে দেখা যায়, তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা নিজেদের মতো করে সময় কাটাতে পছন্দ করে। বাবা-মায়েরা যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলে, আড্ডা দেয়, তার সঙ্গে তরুণদের যোগাযোগ কম। এটাকেই বুঝি জেনারেশন গ্যাপ বলে।
একটু নির্দয় হয়েই বলি, বাবা-মায়ের প্রজন্ম যে বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ করে, তাতে নস্টালজিয়ার পরিমাণ থাকে বেশি, এই এলাকায় একত্রে বসবাসকারী পরিবারগুলোর ভালো-মন্দ নিয়ে থাকে আলোচনা, ইহকাল ও পরকাল নিয়ে থাকে গম্ভীর আলোচনা, পোশাক-আশাক নিয়ে কথাবার্তা। এইগুলো তরুণ প্রজন্মকে একেবারেই টানে না। নতুন প্রযুক্তির প্রতি সারা বিশ্বের তরুণদের যে আগ্রহ, এখানকার বাঙালি তরুণ-তরুণীর আগ্রহও সেদিকে। ফলে বড়দের সঙ্গে কথা বলার মতো বিষয়বস্তুর বড্ড অভাব তাদের। সে রকম একটা পরিপ্রেক্ষিতে দুই পরিবারের তরুণেরা বেড়াতে এল, এটা খুবই আশাপ্রদ একটি ব্যাপার। এর মধ্যে এক তরুণ তার মনের মানুষ খুঁজে পেয়েছে, সেই খবরও পাওয়া গেল।
আমরা একসময় ঢাকার চামেলীবাগে বসবাস করেছি। সেখানে পাশের বাড়িতে ছিল শামীম ভাইদের বাস। তিনি এসেছিলেন সস্ত্রীক, সসন্তান। সেই ছেলেবেলার চামেলীবাগ নিয়ে যখন আলাপ শুরু হলো, তখন কত না নাম ভেসে এল। যা ছিল বিস্মৃতির অতলে, তাও বেরিয়ে এল। মনে হলো, কত দিন পর সেই নামগুলো শোনা যাচ্ছে আর এক একটা চেহারা ভেসে উঠছে চোখের সামনে, অথচ সময়ের ব্যবধানে হয়তো সেই মুখগুলো এমনভাবে পরিবর্তন করে দিয়েছে, যে সামনাসামনি দেখা হলেও তাদের অনেককেই চিনতে পারব না।
মুখোশহীন অবয়ব এবং মনের সুখে গান
গতবার যখন এসেছিলাম নিউইয়র্কে, তখনো করোনার ভয় ছিল মানুষের মনে। তখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্টে মাস্ক ছাড়া ওঠা যেত না। দোকানে ঢুকতে হলেও মাস্কের প্রয়োজনীয়তা ছিল। এবার সে ভয় নেই। যত্রতত্র মাস্কহীন চলাচল। খাবার-দাবারের জন্য আমাদের প্রিয় দোকান কি-ফুডে ঢুকলাম মাস্ক ছাড়াই। বিশাল সেই দোকানটা একাই একটা মার্কেটের সমান। থরে থরে সাজানো খাবারদাবার। ফলমূল। মরিচ-পেঁয়াজ। রুটি-মাখন। কাচা, আধা রান্না করা, খাওয়ার উপযোগী কত না খাবার সেখানে।
সেখানেই দেখলাম এক বৃদ্ধা এসেছেন মাস্ক পরে। তিনি হয়তো এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না, করোনা আর নেই। তাঁকে দেখেই মনে পড়ল, করোনাকালে বিমানযাত্রার সময় করোনার টেস্ট ছিল কী ভয়ংকর। শীতের মধ্যে হাসপাতালের সামনে ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে করোনার টেস্ট করাতে হতো। সময়মতো সেই টেস্টের ফল না এলে বিমানে ওঠা যেত না। একবার সময়মতো আসেনি বলে আমাকে ফিরে আসতে হয়েছিল। পরে আরো ৩০০ ডলার গচ্চা দিয়ে তিন দিন পরের টিকিট জোগাড় করতে হয়েছিল। নতুন করে লাইনে দাঁড়িয়ে করোনা টেস্ট করাতে হয়েছিল। সে যে কী এক সময় পার করতে হয়েছে!
মাস্ক কখনো কখনো নিরাপদ রাখে শরীর। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হলেই কেবল মনে হয়, কেন এই বাড়াবাড়ি!
এখন চারদিকে মাস্কবিহীন মানুষের চলাচল দেখে বোঝারই উপায় নেই, কী এক সময় পার করেছিল পৃথিবী!
কাল শনিবার সাবওয়ে থেকে নেমে বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় এক নারীকে দেখলাম মুখে মাস্ক দিয়ে রেখেছেন। কিউ ৪৩ বাস এলে আমরা একেবারে পেছন দিকে গিয়ে বসলাম। আমাদের পেছনে বসলেন সেই নারী। বয়স আনুমানিক ৫০। কিছু বেশিও হতে পারে। চেহারা দেখে মনে হলো লাতিন আর আফ্রিকান মিশ্রণ। বাস চলা শুরু করলে তিনি মাস্ক খুললেন। রং করা চুলগুলো ঝুঁটি করে বাঁধলেন। তারপর মোবাইল ফোনে গান ছাড়লেন এবং দুচোখ বন্ধ করে মনের সুখে গাইতে লাগলেন গান। সেই গান অন্য কাউকে অস্বস্তিতে ফেলছে কি না, সেদিকে নজরই দিলেন না। আমাদের অবশ্য ভালোই লাগছিল। একঘেয়ে জীবনে মাঝে মাঝে এ রকম ঘটনা মনকে শান্ত করে।
কিন্তু সেই শান্তি একটু পরই উধাও হলো। বাসের সামনের দিক থেকেও ভেসে আসতে শুরু করল আরেক নারীর কণ্ঠনিসৃত গান। গানটি কর্কশ। বোঝাই যাচ্ছিল, গোটা দুনিয়াকে তাচ্ছিল্য করে গাইছেন তিনি। এই নারীর বয়স আরো বেশি। জীবনসংগ্রামের চিহ্ন তাঁর চোখে-মুখে। কেউ প্রতিবাদ করছে না। সবাই জানে, প্রতিবাদে কাজ হবে না। যে কষ্ট আর বঞ্চনার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে গানে, তাতে নিষেধ করা হেল বারুদে আগুন দেওয়া হবে।
আমরা যে স্টেশনে বাস থেকে নামলাম, এই গায়িকাও সেখানেই নামলেন। তারপর আরেকটু এগিয়ে অন্য এক বাসস্টেশনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে লাগলেন। যেন হাজার মানুষের জনসভায় বক্তৃতা দিচ্ছেন। বিষয়টিতকে হাস্যকর ভাবলে এক রকম, কষ্টের ভাবলে আরেক রকম।
আমার বুক থেকে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।
মাঠের বাতাসে কীসের গন্ধ?
ব্র্যাডক অ্যাভিনিউতে যে পার্কটি আছে, সেটায় হাঁটতে যাই। ঘণ্টাখানেক হাঁটলে শরীর ঝরঝরে হয়ে ওঠে। সেদিনও গেছি হাঁটতে। মাঠে কেউ নেই। শুধু একপাশে এক বেঞ্চিতে বসে আছে এক তরুণী আর এক তরুণ। তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক তরুণ। তাদের সামনে দিয়ে হেঁটে আসার সময় দেখলাম, বসে থাকা তরুণটি দাঁড়িয়ে থাকা তরুণের হাতে ধরিয়ে দিল তার হাতে থাকা সিগারেটটি। সিগারেটে টান দিয়ে যখন ধোঁয়া ছাড়ল সেই তরুণ, আমি টের পেলাম, এই গন্ধ আমি চিনি। ইদানীং ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় এই গন্ধ পাওয়া যায়। বিশেষ করে ধানমন্ডি লেকের আশপাশে পরিচিত এই গন্ধ।
হ্যাঁ, গাঁজার গন্ধ।
ব্র্যাডক অ্যাভিনিউর পার্কটার বেঞ্চিতে বসে গাঁজা টেনে চলেছে তিন তরুণ-তরুণী।
এতে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। নিউইয়র্ক শহরে এখন গাঁজা কোনো নিষিদ্ধ বন্তু নয়। ক্যানাবিস, মারিউয়ানা, পট কিংবা গাঁজা যে নামেই ডাকা হোক না কেন, এই নেশায় এখন নিষেধাজ্ঞা নেই। আইনগতভাবেই গাঁজার বিক্রি এখন বৈধ, সুতরাং সিগারেটের মতো গাঁজায় দম দেওয়া এই শহরে স্বাভাবিক ব্যাপার।
গাঁজাকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য কিছুদিন আগে নিউইয়র্কে গাঁজা উৎসবও হয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, আগামী ৬ মে নিউইয়র্ক ক্যানাবিস প্যারেড হবে ম্যানহাটনে। ব্রডওয়েতে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত হবে ক্যানাবিস মেলা।
নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি এই সিনেটে রিক্রিয়েশনাল মারিউয়ানা বিক্রি ও সেবন বিল পাশ হয়েছিল ২০২১ সালে। একসঙ্গে তিন আউন্স গাঁজা ব্যবহারের জন্য যে কেউ কাছে রাখতে পারবে, এটাই ছিল আইন। তবে গাঁজা সেবনের জন্য বয়স হতে হবে অন্তত ২১।
গাঁজা বিক্রি থেকে যে রাজস্ব আয় হবে, তা মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো। প্রথম বছরে নিউইয়র্ক স্টেট ক্যানাবিস বিক্রি থেকে রাজস্ব পাবে ১.২ বিলিয়ন ডলার। ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে এই আয় বেড়ে দাঁড়াবে ৪ বিলিয়ন ডলার। ভাবা যায়!
আবহাওয়া
সকালের দিকে রোদ ওঠার পর বাইরে বের হলে হালকা জামার ওপর হালকা সোয়েটার জড়ালেই চলে। কিন্তু দিন যত বিকেলের দিকে গড়ায়, ততোই বাতাসে ভর করে শীত এসে জাঁকিয়ে বসে নিউইয়র্ক শহরে। এ সময় বীরত্ব দেখিয়ে সোয়েটারের ওপর ভরসা করলেই মুশকিল। শীতে দাঁতকপাটি লেগে গেলে কাউকে দোষ দেওয়া যাবে না।
সোভিয়েত ইউনিয়নের রাশিয়ায় বসবাস করেছি ১০ বছর। শীতের নাড়ি-নক্ষত্রের খোঁজ নিয়েছিলাম এবং তা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার উপায় শিখেছিলাম সেখানেই। একটা কথা কখনই ভুলি না। খুব বেশি শীত পড়লে শরীরের তিনটি স্থান সুরক্ষিত রাখতে হয়। মাথা-বুক-পা। এই তিন জায়গায় ভারী কাপড় থাকলে শীতের বাবার সাধ্য নেই কাউকে কাবু করে ফেলবে।
এখানে, এই নিউইয়র্কেও সেই সত্য মেনে চলি। জানি, হঠাৎ করে আসা ঠান্ডা বাতাস কতটা নিস্তেজ করে দিতে পারে শরীর।
হুমায়ূন আহমেদ তাঁর লেখায় নিউইয়র্কের নীল আকাশ নিয়ে লিখেছেন। তিনি ভুল লেখেননি। এখানকার আকাশটা সত্যিই অদ্ভুত সুন্দর। এই এপ্রিলের শেষে ঋতু পরিবর্তনের তোড়জোড়ের মধ্যে নীল আকাশে সাদা মেঘ এমনভাবে ছড়িয়ে আছে, যেন মনে হচ্ছে শিল্পীর তুলিতে আঁকা কোনো ছবি। সে তেলরং হতে পারে, জলরংও হতে পারে, অ্যাক্রিলিকের ছোঁয়া থাকলেও ক্ষতি নেই।
আমরা এই শহরে ঘুরতে আসা মানুষরা যেভাবে এই আকাশ দেখি, নিউইয়র্কবাসী কি সেভাবে দেখে? এই প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। কাউকে ভরসা করে জিজ্ঞেস করতেও ইচ্ছে করে না। কে জানে, যদি ভেবে বসেন, এত ‘আজাইরা’ ভাবনারও সময় আছে আমার!
কুইনস ভিলেজের সারি সারি বাড়ির মাঝ দিয়ে তৈরি রাস্তাগুলোয় হাঁটতে ভালো লাগে। কাল দুপুরে যখন হাঁটতে বের হলাম, তখন মনে হলো এ যেন এক মৃত শহর। বাড়িগুলোর ভেতরে নিশ্চয়ই মানুষ আছে, কিন্তু তাদের কারো দেখা নেই রাস্তায়। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার সময় একজন মানুষও চোখে পড়ল না। রাস্তায় সারি সারি গাড়ি অলসভাবে দাঁড়িয়ে আছে। বহুক্ষণ সময় পার করে কোনো গাড়ি পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। ওটুকুতেই বোঝা যায়, শহরটা মৃত নয়।
জ্যামাইকা অ্যাভিনিউ পর্যন্ত গিয়ে ডলার শপ আর টিডি ব্যাংক পার হয়ে কি-ফুডে ঢুকলাম কিছুক্ষণের জন্য। সেখানে অদ্ভুত রঙের একটি মাছ আমার দৃষ্টি কেড়ে নিল। মাছ যে এ রকম সাজুগুজু করে বিক্রির জন্য হাজির হতে পারে, তা আমার জানা ছিল না। আর সেই সাজগোজ মোটেই কৃত্রিম নয়, একেবারে প্রাকৃতিক। একবার ভাবলাম, কিনে ফেলি মাছ। কিন্তু তখনই মনে পড়ল, ফ্রিজে রাখা খাবারের একটা হিল্লে না হওয়া পর্যন্ত অযথা টাকা খরচ করা বারন।
২১৩ নম্বর স্ট্রিট দিয়ে ফিরে আসার পথে হাতের বাঁয়ে একটা বাড়ির নাম দেখে থমকে দাঁড়ালাম।
বাড়িটির নাম ‘ক্ষণিকা’। বাংলায় লেখা। আমি দাঁড়াতেই দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন এক ভদ্রলোক। আমি তাঁর পরিচয় জানতে চাইলাম না। বাংলাতেই জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি তো বাঙালি।’
হাসলেন ভদ্রলোক। বললেন, ‘হ্যাঁ, বাঙালি। আপনি কোনদিকে থাকেন, বেলরোজের দিকে?’
আমি যে পথ ধরে হেঁটে আসছিলাম, তার পেছন দিকটায় বেলরোজ পাড়া।
বললাম, ‘না, আমি আছি স্প্রিংফিল্ডের দিকে। আপনার বাড়ির নামটা সুন্দর।’
ভদ্রলোক হাসলেন। বিদায় নিয়ে যখন আবার পা বাড়িয়েছি রাস্তায়, তখনই কেবল মনে পড়ল, ভদ্রলোকের নামটাও তো জানা হলো না। কবে থেকে এখানে আছেন, বয়স কত, এখানেই থেকে গেলেন কেন—কত প্রশ্নই তো করা যেত। তা নিয়ে লেখা যেত একটা ফিচার। কিন্তু সেটা সময়মতো মনে পড়ল না। বহমান জীবনে কত কিছুই তো ঘটে যায়, কত কিছু মনোযোগ পায়, আবার কত কিছুই তো বিনা মনোযোগে চলে যায় দূরে। একসময় অদৃশ্য হয়ে যায় জীবন থেকে। এই যে নিউইয়র্কের কুইনস ভিলেজে একটি বাড়ির নাম বাংলায় ‘ক্ষণিকা’ হয়ে রয়েছে, তার ইতিহাস কি আর জানা হবে কখনো? আমি নিজেই কি দ্বিতীয়বারের মতো এই বাড়ির কাছে যাব আর?
উত্তর মেলে না।
শুধু মনে হয়, ‘ক্ষণিকা’ নামটিই তো বুঝিয়ে দিচ্ছে, খুব স্বল্প সময়ের জন্যই আমাদের এই চলাফেরা। খুব অল্প সময়ের গল্পগুলোই বেঁচে থাকে মনে। তাই ক্ষণিকা বা ক্ষণিকের এই হৃদয়ে দোলা দেওয়া ঘটনারও একটা মানে থেকে যায়।
আরে! দেখ দেখি কাণ্ড! ভদ্রলোকের অনুমতি নিয়ে বাড়ির নামসহ একটা ছবি ত্র তুলতে পারতাম। সেটাও হলো না! পথে আরেকটু এগোতেই এক মহাজ্ঞানী কাঠবেড়ালি লেজতুলে যখন পালাচ্ছিল, তখন তার পায়ের শব্দে উড়ে গেল কয়েকটি পাখি। আকাশে ভাসতে থাকা পাখিগুলোকে দেখে হঠাৎ করেই মনে ভেসে উঠল গানটি, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়…।’ কেন ভেসে উঠল, কে জানে!

নীল কিংবা সবুজ প্রচ্ছদের একটি বই, হাতে থাকলে পাড়ি জমানো যায় আটলান্টিকের ওপারে, আরবের মরুভূমি, ইউরোপের সরু গলি কিংবা হিমালয়ের পাদদেশে; বাধা হয় না কোনো সীমান্ত, কোনো প্রহরী। এতটুকু একটু নথি! অথচ তার ক্ষমতা সীমানা ছাড়িয়ে, এক দেশ থেকে আরও এক দেশে। পাসপোর্ট একই সঙ্গে পরিচয়, আবার বিশ্বভ্রমণের চাবিকাঠি।
৯ ঘণ্টা আগে
সোহা আলি খান সম্প্রতি তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে নিজের ত্বকযত্নের জন্য তৈরি করা একটি প্যাকের কথা লিখেছেন, ছবিও দিয়েছেন। সেই প্যাক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে বেসন, হলুদগুঁড়া, দইয়ের মতো দেশীয় উপাদান। তিনি জানিয়েছেন, এসব উপাদান একেবারে তাঁর রান্নাঘর থেকে নেওয়া।...
১২ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতিতে এমন কিছু পাতা আছে যা অনেক গুণে গুণান্বিত। তেমনই একটি পাতা হলো তুলসী। এই পাতার গুণ ও উপকারিতা অনেক। মূলত ভারত, এশিয়া এবং আফ্রিকা অঞ্চলের স্থানীয় এই বেসিল বা তুলসীকে একটি পবিত্র এবং মহৎ ভেষজ হিসেবে গণ্য করা হয়। অনেকেই তাদের রান্নাঘর বা বাগানে এটি চাষ করেন। ৬০ টিরও বেশি ধরনের তুলসী রয়েছে,
১৫ ঘণ্টা আগে
অতিরিক্ত সিবাম নিঃসৃত হলে ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। এতে রোমকূপ বন্ধ হয়ে ত্বকে ব্রণ হয়। বংশগতি, হরমোনের পরিবর্তন, এমনকি মানসিক চাপও সিবাম উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ যত সহজে হয়, তত সহজে সারে না। তবে নিয়মিত পরিচর্যা করে ত্বকের অতিরিক্ত তেল ভাব এবং ব্রণ দূর করা সম্ভব।...
১৮ ঘণ্টা আগেজিনাতুন নুর

নীল কিংবা সবুজ প্রচ্ছদের একটি বই, হাতে থাকলে পাড়ি জমানো যায় আটলান্টিকের ওপারে, আরবের মরুভূমি, ইউরোপের সরু গলি কিংবা হিমালয়ের পাদদেশে; বাধা হয় না কোনো সীমান্ত, কোনো প্রহরী। এতটুকু একটু নথি! অথচ তার ক্ষমতা সীমানা ছাড়িয়ে, এক দেশ থেকে আরও এক দেশে। পাসপোর্ট একই সঙ্গে পরিচয়, আবার বিশ্বভ্রমণের চাবিকাঠি। কিন্তু এই পাসপোর্ট কীভাবে এল মানুষের হাতে?
পাসপোর্ট কেবল একটি নথি নয়, বরং এটি একেকটি যুগের গল্প; যেখানে যুদ্ধ, শাসন, বাণিজ্য আর নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে বিশ্বভ্রমণের নিয়মকানুন। মধ্যযুগের ইউরোপীয় পর্যটকদের হাতে যে ভ্রমণ নথি দেখা যেত, তারও বহু আগে রোমান সাম্রাজ্য ও প্রাচীন চীনা রাজদরবার থেকে এ ধরনের নথি ইস্যু করা হতো।
তবে আধুনিক পাসপোর্টের ইতিহাস খুব দীর্ঘদিনের নয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যখন চলাচলের স্বাধীনতা অবারিত থেকে হয়ে উঠল নিয়ন্ত্রিত। ছোট নথিটি কীভাবে হয়ে উঠল বিশ্বরাজনীতির অংশ, জাতীর পরিচয়পত্র আর একবিংশ শতাব্দীর অদৃশ্য দরজা খোলার চাবিকাঠি, সে গল্পই আমরা জানব।
পাসপোর্টের ইতিহাস বহু পুরোনো ও জটিল। প্রাচীন চীন থেকে শুরু করে রোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত হাজার বছর ধরে মানুষ পাসপোর্টের মতো নথি ব্যবহার করে আসছে। তবে মধ্যযুগের ‘সেফ কন্ডাক্ট ইন্সট্রুমেন্ট’ নামে একধরনের নথিকে আধুনিক পাসপোর্টের মূল উৎস হিসেবে ধরা হয়। পর্যটক, ব্যবসায়ী ও যাজকেরা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভিন দেশে যেতে এই নথি পরিচয়পত্র হিসেব ব্যবহার করতেন।
পাসপোর্ট শব্দটি দুটি ল্যাটিন শব্দযোগে সৃষ্ট। ল্যাটিন passer (পার হওয়া) থেকে pass ও portus (বন্দর বা প্রবেশদ্বার) থেকে port একসঙ্গে যুক্ত হয়ে পাসপোর্ট। ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরির শাসনামলে ১৫৪০ সালে পাসপোর্ট শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়। তবে একেবারে আধুনিক পাসপোর্টের ধারণা এসেছে বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে। ১৯২০ সালের লিগ অব নেশনসে আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে প্রথম আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন থেকে পাসপোর্ট যেমন বৈশ্বিক ভ্রমণের অপরিহার্য নথি, তেমনই চলাচল নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার।
ভ্রমণের প্রাচীন অনুমতিপত্র
পাসপোর্টের গল্প শুরু বহু আগে, প্রাচীন চীনে। তখনকার শাসকেরা গুয়োসৌ (তালা ও তল্লাশিচৌকি) নামে এক ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল—কে কোথায় যাচ্ছে এবং কী নিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণ করা। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৭৫ থেকে ২২১ সালের মধ্যে ঝৌ রাজবংশের শাসনকালে যখন রাজ্যগুলোর মধ্যে যুদ্ধ লেগে থাকত, তখন এই গুয়োসৌ ব্যবস্থা চালু হয়। পরে খ্রিষ্টপূর্ব ২০২ থেকে ২২০ সালে হান রাজবংশের যুগে এ ব্যবস্থা আরও কড়াকড়ি করা হয়। কেউ রাজ্যের এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যেতে চাইলে তাঁকে সঙ্গে রাখতে হতো কাঠের একটা অনুমতিপত্র, যাতে নাম, গন্তব্য ও যাত্রার কারণ লেখা থাকত। এই অনুমতিপত্র দেখিয়ে তাঁরা বিভিন্ন তল্লাশিচৌকি পার হতেন। সিল্করোড দিয়ে চলাচল করা বণিকদেরও এমন অনুমতিপত্র দেখাতে হতো। গুয়োসৌ ব্যবস্থার মাধ্যমে সমগ্র সাম্রাজ্যে মানুষের চলাচলের সঙ্গে পণ্য পরিবহনও নিয়ন্ত্রণ করা হতো। গুয়োসৌ ব্যবস্থায় কাঠের অনুমতিপত্র দেখতে অনেকটা আধুনিক পাসপোর্ট বা ভিসার মতোই ছিল।
আবার রোমান সাম্রাজ্যে সরকারি কাজে ভ্রমণকারীদের সম্রাটের নামে লেখা একটি চিঠি দেওয়া হতো, যাকে বলা হতো ‘ট্র্যাক্টরিয়াম’। এই কাগজ দেখিয়ে ভ্রমণকারীরা নিরাপদে যাত্রা করতেন; পথে সাহায্য পেতেন। এটি ছিল পরিচয়পত্র ও ভ্রমণের জন্য সম্রাটের অনুমোদনপত্র। রোমের নাগরিকেরা সাম্রাজ্যের মধ্যে স্বাধীনভাবে চলাচল করলেও অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ‘ডিপ্লোমা’ নামের একটা নথি দেওয়া হতো।
মধ্যযুগে নিরাপদ যাত্রায় সেফ কন্ডাক্ট
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজা ও সম্রাটদের ক্ষমতা বেড়ে যায়, বাণিজ্য বিস্তৃত হয়। তখন ইউরোপে নিরাপদে চলাচলের জন্য ‘সেফ কন্ডাক্ট’ নথির প্রচলন হয়। এতে ভ্রমণকারীর নাম ও ভ্রমণের উদ্দেশ্য লেখা থাকত, কাগজের নিচের দিকে থাকত রাজা বা সম্রাটের স্বাক্ষর। এর মাধ্যমে যাত্রাপথে সুরক্ষা নিশ্চিত করা হতো। সেফ কন্ডাক্ট নামে এই নথি দুই নামে পরিচিতি ছিল—গুইডাটিকাম ও সো কনডুইও।
স্পেনের আরাগো কাতানোলিয়া অঞ্চলে গুইডাটিকাম নামের নথি বণিকদের দেওয়া হতো। এটি নিরাপদ যাতায়াত ও বাণিজ্যে সাহায্য করত। আর সো কনডুইও চলত ফ্রান্সে। কূটনীতিক, ব্যবসায়ী ও তীর্থযাত্রীরা নিরাপদ যাত্রার জন্য এই নথি ব্যবহার করতেন। সেফ কন্ডাক্ট নামের নথির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৪১৪ সালে, ইংল্যান্ডে রাজা পঞ্চম হেনরির শাসনামলে সংসদে পাস হওয়া এক আইনে।
সব মিলিয়ে রাজা, সম্রাট বা শাসকের অনুমোদিত এসব নথি ভ্রমণকারীদের নিরাপদভাবে চলাফেরা ও কূটনৈতিক যোগাযোগের নিশ্চয়তা দিত।
পাসপোর্ট নাম হলো যেভাবে
১৫৪০ সালের দিকে রাজা অষ্টম হেনরির শাসনামলে ইংল্যান্ডের প্রিভি কাউন্সিল আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পাসপোর্ট’ নামে নথি চালু করে। ১৬৪১ সালের ১৮ জুন রাজা প্রথম চার্লসের স্বাক্ষরসহ পাসপোর্টটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পুরোনো পাসপোর্ট।
এরপর ১৭৯৪ সালে পাসপোর্ট ইস্যুর দায়িত্ব ব্রিটিশ সেক্রেটারি অব স্টেট বা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে আসে। এর মধ্য দিয়ে আধুনিক পাসপোর্ট ব্যবস্থার সূচনা হয়।
শুরুতে যেমন ছিল আধুনিক পাসপোর্ট
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আধুনিক পাসপোর্টের ধারণা গড়ে ওঠে। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে মানুষের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ১৯২০ সালে চুক্তির মাধ্যমে পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ করে লিগ অব নেশনস্। কেবল ভ্রমণ সহজ করাই নয়, ভ্রমণ সীমিত করা ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণও এর লক্ষ্য ছিল।
পাসপোর্ট ইস্যুকারী রাষ্ট্রের ক্ষমতার সঙ্গে নাগরিকের চলাচলের স্বাধীনতা জড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ১৯৬৩ সালে জাতিসংঘে সংকট হিসেবে দেখা দেয়। প্রথম আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট সম্মেলনে পাসপোর্ট বাতিলের প্রস্তাবে অধিকাংশ দেশ সম্মত হলেও ‘জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা হুমকির’ কারণ দেখিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে।
আজকের বিশ্বে ভ্রমণ যখন বহু মানুষের শখ, তখন পাসপোর্ট ছাড়া জীবন কল্পনাই কঠিন। শুধু দেশের সীমানা পাড়ি নয়, চাকরি, শিক্ষাসহ বহু কাজে লাগে গুরুত্বপূর্ণ এই নথি। তবে এতে আছে অদ্ভুদ এক প্যারাডক্স—এটি যেমন বিশ্বভ্রমণের স্বাধীনতা, রাষ্ট্র ও সংস্থারও নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির হাতিয়ার।

নীল কিংবা সবুজ প্রচ্ছদের একটি বই, হাতে থাকলে পাড়ি জমানো যায় আটলান্টিকের ওপারে, আরবের মরুভূমি, ইউরোপের সরু গলি কিংবা হিমালয়ের পাদদেশে; বাধা হয় না কোনো সীমান্ত, কোনো প্রহরী। এতটুকু একটু নথি! অথচ তার ক্ষমতা সীমানা ছাড়িয়ে, এক দেশ থেকে আরও এক দেশে। পাসপোর্ট একই সঙ্গে পরিচয়, আবার বিশ্বভ্রমণের চাবিকাঠি। কিন্তু এই পাসপোর্ট কীভাবে এল মানুষের হাতে?
পাসপোর্ট কেবল একটি নথি নয়, বরং এটি একেকটি যুগের গল্প; যেখানে যুদ্ধ, শাসন, বাণিজ্য আর নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে বিশ্বভ্রমণের নিয়মকানুন। মধ্যযুগের ইউরোপীয় পর্যটকদের হাতে যে ভ্রমণ নথি দেখা যেত, তারও বহু আগে রোমান সাম্রাজ্য ও প্রাচীন চীনা রাজদরবার থেকে এ ধরনের নথি ইস্যু করা হতো।
তবে আধুনিক পাসপোর্টের ইতিহাস খুব দীর্ঘদিনের নয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যখন চলাচলের স্বাধীনতা অবারিত থেকে হয়ে উঠল নিয়ন্ত্রিত। ছোট নথিটি কীভাবে হয়ে উঠল বিশ্বরাজনীতির অংশ, জাতীর পরিচয়পত্র আর একবিংশ শতাব্দীর অদৃশ্য দরজা খোলার চাবিকাঠি, সে গল্পই আমরা জানব।
পাসপোর্টের ইতিহাস বহু পুরোনো ও জটিল। প্রাচীন চীন থেকে শুরু করে রোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত হাজার বছর ধরে মানুষ পাসপোর্টের মতো নথি ব্যবহার করে আসছে। তবে মধ্যযুগের ‘সেফ কন্ডাক্ট ইন্সট্রুমেন্ট’ নামে একধরনের নথিকে আধুনিক পাসপোর্টের মূল উৎস হিসেবে ধরা হয়। পর্যটক, ব্যবসায়ী ও যাজকেরা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভিন দেশে যেতে এই নথি পরিচয়পত্র হিসেব ব্যবহার করতেন।
পাসপোর্ট শব্দটি দুটি ল্যাটিন শব্দযোগে সৃষ্ট। ল্যাটিন passer (পার হওয়া) থেকে pass ও portus (বন্দর বা প্রবেশদ্বার) থেকে port একসঙ্গে যুক্ত হয়ে পাসপোর্ট। ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরির শাসনামলে ১৫৪০ সালে পাসপোর্ট শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়। তবে একেবারে আধুনিক পাসপোর্টের ধারণা এসেছে বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে। ১৯২০ সালের লিগ অব নেশনসে আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে প্রথম আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন থেকে পাসপোর্ট যেমন বৈশ্বিক ভ্রমণের অপরিহার্য নথি, তেমনই চলাচল নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার।
ভ্রমণের প্রাচীন অনুমতিপত্র
পাসপোর্টের গল্প শুরু বহু আগে, প্রাচীন চীনে। তখনকার শাসকেরা গুয়োসৌ (তালা ও তল্লাশিচৌকি) নামে এক ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল—কে কোথায় যাচ্ছে এবং কী নিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণ করা। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৭৫ থেকে ২২১ সালের মধ্যে ঝৌ রাজবংশের শাসনকালে যখন রাজ্যগুলোর মধ্যে যুদ্ধ লেগে থাকত, তখন এই গুয়োসৌ ব্যবস্থা চালু হয়। পরে খ্রিষ্টপূর্ব ২০২ থেকে ২২০ সালে হান রাজবংশের যুগে এ ব্যবস্থা আরও কড়াকড়ি করা হয়। কেউ রাজ্যের এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যেতে চাইলে তাঁকে সঙ্গে রাখতে হতো কাঠের একটা অনুমতিপত্র, যাতে নাম, গন্তব্য ও যাত্রার কারণ লেখা থাকত। এই অনুমতিপত্র দেখিয়ে তাঁরা বিভিন্ন তল্লাশিচৌকি পার হতেন। সিল্করোড দিয়ে চলাচল করা বণিকদেরও এমন অনুমতিপত্র দেখাতে হতো। গুয়োসৌ ব্যবস্থার মাধ্যমে সমগ্র সাম্রাজ্যে মানুষের চলাচলের সঙ্গে পণ্য পরিবহনও নিয়ন্ত্রণ করা হতো। গুয়োসৌ ব্যবস্থায় কাঠের অনুমতিপত্র দেখতে অনেকটা আধুনিক পাসপোর্ট বা ভিসার মতোই ছিল।
আবার রোমান সাম্রাজ্যে সরকারি কাজে ভ্রমণকারীদের সম্রাটের নামে লেখা একটি চিঠি দেওয়া হতো, যাকে বলা হতো ‘ট্র্যাক্টরিয়াম’। এই কাগজ দেখিয়ে ভ্রমণকারীরা নিরাপদে যাত্রা করতেন; পথে সাহায্য পেতেন। এটি ছিল পরিচয়পত্র ও ভ্রমণের জন্য সম্রাটের অনুমোদনপত্র। রোমের নাগরিকেরা সাম্রাজ্যের মধ্যে স্বাধীনভাবে চলাচল করলেও অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ‘ডিপ্লোমা’ নামের একটা নথি দেওয়া হতো।
মধ্যযুগে নিরাপদ যাত্রায় সেফ কন্ডাক্ট
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজা ও সম্রাটদের ক্ষমতা বেড়ে যায়, বাণিজ্য বিস্তৃত হয়। তখন ইউরোপে নিরাপদে চলাচলের জন্য ‘সেফ কন্ডাক্ট’ নথির প্রচলন হয়। এতে ভ্রমণকারীর নাম ও ভ্রমণের উদ্দেশ্য লেখা থাকত, কাগজের নিচের দিকে থাকত রাজা বা সম্রাটের স্বাক্ষর। এর মাধ্যমে যাত্রাপথে সুরক্ষা নিশ্চিত করা হতো। সেফ কন্ডাক্ট নামে এই নথি দুই নামে পরিচিতি ছিল—গুইডাটিকাম ও সো কনডুইও।
স্পেনের আরাগো কাতানোলিয়া অঞ্চলে গুইডাটিকাম নামের নথি বণিকদের দেওয়া হতো। এটি নিরাপদ যাতায়াত ও বাণিজ্যে সাহায্য করত। আর সো কনডুইও চলত ফ্রান্সে। কূটনীতিক, ব্যবসায়ী ও তীর্থযাত্রীরা নিরাপদ যাত্রার জন্য এই নথি ব্যবহার করতেন। সেফ কন্ডাক্ট নামের নথির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৪১৪ সালে, ইংল্যান্ডে রাজা পঞ্চম হেনরির শাসনামলে সংসদে পাস হওয়া এক আইনে।
সব মিলিয়ে রাজা, সম্রাট বা শাসকের অনুমোদিত এসব নথি ভ্রমণকারীদের নিরাপদভাবে চলাফেরা ও কূটনৈতিক যোগাযোগের নিশ্চয়তা দিত।
পাসপোর্ট নাম হলো যেভাবে
১৫৪০ সালের দিকে রাজা অষ্টম হেনরির শাসনামলে ইংল্যান্ডের প্রিভি কাউন্সিল আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পাসপোর্ট’ নামে নথি চালু করে। ১৬৪১ সালের ১৮ জুন রাজা প্রথম চার্লসের স্বাক্ষরসহ পাসপোর্টটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পুরোনো পাসপোর্ট।
এরপর ১৭৯৪ সালে পাসপোর্ট ইস্যুর দায়িত্ব ব্রিটিশ সেক্রেটারি অব স্টেট বা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে আসে। এর মধ্য দিয়ে আধুনিক পাসপোর্ট ব্যবস্থার সূচনা হয়।
শুরুতে যেমন ছিল আধুনিক পাসপোর্ট
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আধুনিক পাসপোর্টের ধারণা গড়ে ওঠে। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে মানুষের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ১৯২০ সালে চুক্তির মাধ্যমে পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ করে লিগ অব নেশনস্। কেবল ভ্রমণ সহজ করাই নয়, ভ্রমণ সীমিত করা ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণও এর লক্ষ্য ছিল।
পাসপোর্ট ইস্যুকারী রাষ্ট্রের ক্ষমতার সঙ্গে নাগরিকের চলাচলের স্বাধীনতা জড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ১৯৬৩ সালে জাতিসংঘে সংকট হিসেবে দেখা দেয়। প্রথম আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট সম্মেলনে পাসপোর্ট বাতিলের প্রস্তাবে অধিকাংশ দেশ সম্মত হলেও ‘জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা হুমকির’ কারণ দেখিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে।
আজকের বিশ্বে ভ্রমণ যখন বহু মানুষের শখ, তখন পাসপোর্ট ছাড়া জীবন কল্পনাই কঠিন। শুধু দেশের সীমানা পাড়ি নয়, চাকরি, শিক্ষাসহ বহু কাজে লাগে গুরুত্বপূর্ণ এই নথি। তবে এতে আছে অদ্ভুদ এক প্যারাডক্স—এটি যেমন বিশ্বভ্রমণের স্বাধীনতা, রাষ্ট্র ও সংস্থারও নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির হাতিয়ার।

নিউইয়র্কে পা দিতে না দিতেই ঈদের আমেজ। সৌদি আরবে কবে চাঁদ দেখা যাবে, তা নিয়ে ছিল সংশয়। মনে করা হচ্ছিল, এবার এক দিন পিছিয়ে যেতে পারে ঈদ। কিন্তু একসময় বলা হলো, সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, তাই এবার ঈদ হবে ২১ এপ্রিল। ব্যস, শুরু হয়ে গেল তোড়জোড়। বাঙালি পাড়ায় পাড়ায় এল ঈদের আমেজ।
২৬ এপ্রিল ২০২৩
সোহা আলি খান সম্প্রতি তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে নিজের ত্বকযত্নের জন্য তৈরি করা একটি প্যাকের কথা লিখেছেন, ছবিও দিয়েছেন। সেই প্যাক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে বেসন, হলুদগুঁড়া, দইয়ের মতো দেশীয় উপাদান। তিনি জানিয়েছেন, এসব উপাদান একেবারে তাঁর রান্নাঘর থেকে নেওয়া।...
১২ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতিতে এমন কিছু পাতা আছে যা অনেক গুণে গুণান্বিত। তেমনই একটি পাতা হলো তুলসী। এই পাতার গুণ ও উপকারিতা অনেক। মূলত ভারত, এশিয়া এবং আফ্রিকা অঞ্চলের স্থানীয় এই বেসিল বা তুলসীকে একটি পবিত্র এবং মহৎ ভেষজ হিসেবে গণ্য করা হয়। অনেকেই তাদের রান্নাঘর বা বাগানে এটি চাষ করেন। ৬০ টিরও বেশি ধরনের তুলসী রয়েছে,
১৫ ঘণ্টা আগে
অতিরিক্ত সিবাম নিঃসৃত হলে ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। এতে রোমকূপ বন্ধ হয়ে ত্বকে ব্রণ হয়। বংশগতি, হরমোনের পরিবর্তন, এমনকি মানসিক চাপও সিবাম উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ যত সহজে হয়, তত সহজে সারে না। তবে নিয়মিত পরিচর্যা করে ত্বকের অতিরিক্ত তেল ভাব এবং ব্রণ দূর করা সম্ভব।...
১৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

বয়স তাঁর ৪৬। কিন্তু দেখে বোঝার উপায় নেই। অনেকে বলবেন, রাজপরিবারের মেয়ে, তার ওপর আবার বলিউড অভিনেত্রী, শরীরের যত্নআত্তির কমতি কি আর থাকে! ফলে বয়স বোঝা যাবে না, সেটাই স্বাভাবিক। হয়তো কথাটায় অতিরঞ্জন নেই।
কিন্তু জানেন কি, সোহা আলি খান সম্প্রতি তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে নিজের ত্বকযত্নের জন্য তৈরি করা একটি প্যাকের কথা লিখেছেন, ছবিও দিয়েছেন। সেই প্যাক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে বেসন, হলুদগুঁড়া, দইয়ের মতো দেশীয় উপাদান। তিনি জানিয়েছেন, এসব উপাদান একেবারে তাঁর রান্নাঘর থেকে নেওয়া।

এসবই কি বলিউড অভিনেত্রী সোহা আলি খানের পরিষ্কার ও উজ্জ্বল ত্বকের গোপন রহস্য? ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, কীভাবে বিয়ে বা অন্যান্য উৎসবের পর ত্বককে কিছুটা স্বস্তি দেওয়া প্রয়োজন। তবে স্বস্তি দেওয়ার জন্য অনেক দামি জিনিসের দরকার নেই। সোহা বলেছেন, শুধু রান্নাঘরের কিছু জিনিস দিয়ে সহজে ত্বকের যত্ন নেওয়ার সুন্দর ব্যবস্থা করে ফেলা যায়।
সোহা লিখেছেন, ‘গত কয়েক রাতের উৎসবের পর আমার ত্বকে একটু বিশেষ যত্নের দরকার ছিল! তাই আমি চলে গেলাম রান্নাঘরে তাজা, পরিষ্কার, সাদামাটা উপকরণ ব্যবহার করে একটি অতি সহজ ফেস প্যাক বানানোর জন্য।’ এরপর তিনি বলেন, ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল করে তোলা এই ডিআইওয়াই ফেস প্যাক তৈরি করতে মাত্র দুই মিনিট লাগে। তিনি মজা করে বলেছেন, ‘আপনার স্বামী টেরও পাবেন না! এটি সত্যিই প্রাকৃতিকভাবে ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে তোলার কাজ করে!’

বলে রাখা দরকার, সামনে আসছে শীত। শুরু হবে উৎসব ও বিয়ের মৌসুম। এ সময় আপনার আশপাশে থাকবে প্রচুর আলো, মানুষের হাসি আর সুস্বাদু খাবার। ঠিক এ সময় আপনার ত্বকের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গেলে সতেজ থাকতে হবে। ফলে এ সময় ত্বকের বাড়তি যত্ন জরুরি। প্রতিদিন তো আর রাসায়নিক উপাদানে তৈরি পণ্য দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায় না। তাতে দীর্ঘ মেয়াদে ভালোর চেয়ে খারাপই হবে বেশি।
কিন্তু একটু সচেতন হলেই দেখতে পাবেন, আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন ত্বকবান্ধব উপকরণ। সেগুলো কাজে লাগিয়ে বাড়িতেই তৈরি করে নেওয়া যায় ত্বকচর্চার বিভিন্ন প্যাক ও অন্যান্য জিনিস। সোহা আলি খানও সেটাই বলতে চেয়েছেন। ফলে তাঁর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া যায়। আর যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশের নারীরা এসব ভেষজ উপকরণের ওপর আস্থা রেখে চলেছেন। বলিউড সুন্দরীরা বাদ যাবেন কেন? তবে হ্যাঁ, সোহার মতো মানুষদের কাছ থেকে ভেষজ পণ্য ব্যবহারের নতুন নতুন আইডিয়া পাওয়া যায়। সেগুলো অনুসরণ করে কেউ ঠকেছে বলে শোনা যায়নি এখনো।
চলুন, এবার দেখে নেওয়া যাক সোহা আলি খান রান্নাঘরে থাকা যেসব উপকরণ দিয়ে তৈরি করেছিলেন নিজের ত্বকচর্চার প্যাক, সেগুলোর তালিকা
কিন্তু একটু সচেতন হলেই দেখতে পাবেন, আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন ত্বকবান্ধব উপকরণ। সেগুলো কাজে লাগিয়ে বাড়িতেই তৈরি করে নেওয়া যায় ত্বকচর্চার বিভিন্ন প্যাক ও অন্যান্য জিনিস। সোহা আলি খানও সেটাই বলতে চেয়েছেন। ফলে তাঁর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া যায়। আর যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশের নারীরা এসব ভেষজ উপকরণের ওপর আস্থা রেখে চলেছেন। বলিউড সুন্দরীরা বাদ যাবেন কেন? তবে হ্যাঁ, সোহার মতো মানুষদের কাছ থেকে ভেষজ পণ্য ব্যবহারের নতুন নতুন আইডিয়া পাওয়া যায়। সেগুলো অনুসরণ করে কেউ ঠকেছে বলে শোনা যায়নি এখনো।
চলুন, এবার দেখে নেওয়া যাক সোহা আলি খান রান্নাঘরে থাকা যেসব উপকরণ দিয়ে তৈরি করেছিলেন নিজের ত্বকচর্চার প্যাক, সেগুলোর তালিকা।
প্যাক তৈরির উপকরণ
ফেস প্যাক তৈরির নিয়ম
প্রথমে ছোলার ময়দা, চন্দনগুঁড়া, দই, মধু ও হলুদগুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এরপর তাতে বেশ কয়েক ফোঁটা গোলাপজল দিয়ে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট গলা ও মুখে ভালো করে মেখে ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
যদি আপনার ত্বক সংবেদনশীল হয়, তাহলে ব্যবহারের আগে এই পেস্ট হাতের ত্বকে অল্প পরিমাণ লাগিয়ে টেস্ট করে নিন।
সূত্র: ইনস্টাগ্রাম ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

বয়স তাঁর ৪৬। কিন্তু দেখে বোঝার উপায় নেই। অনেকে বলবেন, রাজপরিবারের মেয়ে, তার ওপর আবার বলিউড অভিনেত্রী, শরীরের যত্নআত্তির কমতি কি আর থাকে! ফলে বয়স বোঝা যাবে না, সেটাই স্বাভাবিক। হয়তো কথাটায় অতিরঞ্জন নেই।
কিন্তু জানেন কি, সোহা আলি খান সম্প্রতি তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে নিজের ত্বকযত্নের জন্য তৈরি করা একটি প্যাকের কথা লিখেছেন, ছবিও দিয়েছেন। সেই প্যাক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে বেসন, হলুদগুঁড়া, দইয়ের মতো দেশীয় উপাদান। তিনি জানিয়েছেন, এসব উপাদান একেবারে তাঁর রান্নাঘর থেকে নেওয়া।

এসবই কি বলিউড অভিনেত্রী সোহা আলি খানের পরিষ্কার ও উজ্জ্বল ত্বকের গোপন রহস্য? ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, কীভাবে বিয়ে বা অন্যান্য উৎসবের পর ত্বককে কিছুটা স্বস্তি দেওয়া প্রয়োজন। তবে স্বস্তি দেওয়ার জন্য অনেক দামি জিনিসের দরকার নেই। সোহা বলেছেন, শুধু রান্নাঘরের কিছু জিনিস দিয়ে সহজে ত্বকের যত্ন নেওয়ার সুন্দর ব্যবস্থা করে ফেলা যায়।
সোহা লিখেছেন, ‘গত কয়েক রাতের উৎসবের পর আমার ত্বকে একটু বিশেষ যত্নের দরকার ছিল! তাই আমি চলে গেলাম রান্নাঘরে তাজা, পরিষ্কার, সাদামাটা উপকরণ ব্যবহার করে একটি অতি সহজ ফেস প্যাক বানানোর জন্য।’ এরপর তিনি বলেন, ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল করে তোলা এই ডিআইওয়াই ফেস প্যাক তৈরি করতে মাত্র দুই মিনিট লাগে। তিনি মজা করে বলেছেন, ‘আপনার স্বামী টেরও পাবেন না! এটি সত্যিই প্রাকৃতিকভাবে ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে তোলার কাজ করে!’

বলে রাখা দরকার, সামনে আসছে শীত। শুরু হবে উৎসব ও বিয়ের মৌসুম। এ সময় আপনার আশপাশে থাকবে প্রচুর আলো, মানুষের হাসি আর সুস্বাদু খাবার। ঠিক এ সময় আপনার ত্বকের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গেলে সতেজ থাকতে হবে। ফলে এ সময় ত্বকের বাড়তি যত্ন জরুরি। প্রতিদিন তো আর রাসায়নিক উপাদানে তৈরি পণ্য দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায় না। তাতে দীর্ঘ মেয়াদে ভালোর চেয়ে খারাপই হবে বেশি।
কিন্তু একটু সচেতন হলেই দেখতে পাবেন, আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন ত্বকবান্ধব উপকরণ। সেগুলো কাজে লাগিয়ে বাড়িতেই তৈরি করে নেওয়া যায় ত্বকচর্চার বিভিন্ন প্যাক ও অন্যান্য জিনিস। সোহা আলি খানও সেটাই বলতে চেয়েছেন। ফলে তাঁর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া যায়। আর যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশের নারীরা এসব ভেষজ উপকরণের ওপর আস্থা রেখে চলেছেন। বলিউড সুন্দরীরা বাদ যাবেন কেন? তবে হ্যাঁ, সোহার মতো মানুষদের কাছ থেকে ভেষজ পণ্য ব্যবহারের নতুন নতুন আইডিয়া পাওয়া যায়। সেগুলো অনুসরণ করে কেউ ঠকেছে বলে শোনা যায়নি এখনো।
চলুন, এবার দেখে নেওয়া যাক সোহা আলি খান রান্নাঘরে থাকা যেসব উপকরণ দিয়ে তৈরি করেছিলেন নিজের ত্বকচর্চার প্যাক, সেগুলোর তালিকা
কিন্তু একটু সচেতন হলেই দেখতে পাবেন, আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন ত্বকবান্ধব উপকরণ। সেগুলো কাজে লাগিয়ে বাড়িতেই তৈরি করে নেওয়া যায় ত্বকচর্চার বিভিন্ন প্যাক ও অন্যান্য জিনিস। সোহা আলি খানও সেটাই বলতে চেয়েছেন। ফলে তাঁর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া যায়। আর যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশের নারীরা এসব ভেষজ উপকরণের ওপর আস্থা রেখে চলেছেন। বলিউড সুন্দরীরা বাদ যাবেন কেন? তবে হ্যাঁ, সোহার মতো মানুষদের কাছ থেকে ভেষজ পণ্য ব্যবহারের নতুন নতুন আইডিয়া পাওয়া যায়। সেগুলো অনুসরণ করে কেউ ঠকেছে বলে শোনা যায়নি এখনো।
চলুন, এবার দেখে নেওয়া যাক সোহা আলি খান রান্নাঘরে থাকা যেসব উপকরণ দিয়ে তৈরি করেছিলেন নিজের ত্বকচর্চার প্যাক, সেগুলোর তালিকা।
প্যাক তৈরির উপকরণ
ফেস প্যাক তৈরির নিয়ম
প্রথমে ছোলার ময়দা, চন্দনগুঁড়া, দই, মধু ও হলুদগুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এরপর তাতে বেশ কয়েক ফোঁটা গোলাপজল দিয়ে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট গলা ও মুখে ভালো করে মেখে ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
যদি আপনার ত্বক সংবেদনশীল হয়, তাহলে ব্যবহারের আগে এই পেস্ট হাতের ত্বকে অল্প পরিমাণ লাগিয়ে টেস্ট করে নিন।
সূত্র: ইনস্টাগ্রাম ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

নিউইয়র্কে পা দিতে না দিতেই ঈদের আমেজ। সৌদি আরবে কবে চাঁদ দেখা যাবে, তা নিয়ে ছিল সংশয়। মনে করা হচ্ছিল, এবার এক দিন পিছিয়ে যেতে পারে ঈদ। কিন্তু একসময় বলা হলো, সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, তাই এবার ঈদ হবে ২১ এপ্রিল। ব্যস, শুরু হয়ে গেল তোড়জোড়। বাঙালি পাড়ায় পাড়ায় এল ঈদের আমেজ।
২৬ এপ্রিল ২০২৩
নীল কিংবা সবুজ প্রচ্ছদের একটি বই, হাতে থাকলে পাড়ি জমানো যায় আটলান্টিকের ওপারে, আরবের মরুভূমি, ইউরোপের সরু গলি কিংবা হিমালয়ের পাদদেশে; বাধা হয় না কোনো সীমান্ত, কোনো প্রহরী। এতটুকু একটু নথি! অথচ তার ক্ষমতা সীমানা ছাড়িয়ে, এক দেশ থেকে আরও এক দেশে। পাসপোর্ট একই সঙ্গে পরিচয়, আবার বিশ্বভ্রমণের চাবিকাঠি।
৯ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতিতে এমন কিছু পাতা আছে যা অনেক গুণে গুণান্বিত। তেমনই একটি পাতা হলো তুলসী। এই পাতার গুণ ও উপকারিতা অনেক। মূলত ভারত, এশিয়া এবং আফ্রিকা অঞ্চলের স্থানীয় এই বেসিল বা তুলসীকে একটি পবিত্র এবং মহৎ ভেষজ হিসেবে গণ্য করা হয়। অনেকেই তাদের রান্নাঘর বা বাগানে এটি চাষ করেন। ৬০ টিরও বেশি ধরনের তুলসী রয়েছে,
১৫ ঘণ্টা আগে
অতিরিক্ত সিবাম নিঃসৃত হলে ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। এতে রোমকূপ বন্ধ হয়ে ত্বকে ব্রণ হয়। বংশগতি, হরমোনের পরিবর্তন, এমনকি মানসিক চাপও সিবাম উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ যত সহজে হয়, তত সহজে সারে না। তবে নিয়মিত পরিচর্যা করে ত্বকের অতিরিক্ত তেল ভাব এবং ব্রণ দূর করা সম্ভব।...
১৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

প্রকৃতিতে এমন কিছু পাতা আছে যা অনেক গুণে গুণান্বিত। তেমনই একটি পাতা হলো তুলসী। এই পাতার গুণ ও উপকারিতা অনেক। মূলত ভারত, এশিয়া এবং আফ্রিকা অঞ্চলের স্থানীয় এই বেসিল বা তুলসীকে একটি পবিত্র এবং মহৎ ভেষজ হিসেবে গণ্য করা হয়। অনেকেই তাদের রান্নাঘর বা বাগানে এটি চাষ করেন। ৬০ টির বেশি ধরনের তুলসী রয়েছে, যার মধ্যে অপেক্ষাকৃত মিষ্টি স্বাদের তুলসী সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা
টাইপ ২ ডায়াবেটিস:
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৬০ জন ব্যক্তি তিন মাস ধরে প্রতিদিন প্রাতরাশ এবং রাতের খাবারের আগে একটি ডায়াবেটিস ওষুধের সঙ্গে ২৫০ মিলিগ্রাম তুলসীর নির্যাস গ্রহণ করেছিলেন। যারা শুধুমাত্র ওষুধ গ্রহণ করেছিলেন তাদের তুলনায় তাদের গড় রক্তে শর্করা ১৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। তুলসী শরীরে কর্টিসোলের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে। রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে প্রতিদিন খাওয়ার আগে তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন। নিয়মিত তুলসীপাতা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাও বাড়ে। ফলে শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কাই থাকে না।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আয়ুর্বেদের একটি ঐতিহ্যগত বিশ্বাস হলো খালি পেটে তুলসী খেলে সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়। এ ছাড়া জ্বরের সময়ও তুলসী পাতা খুব উপকারী। বিভিন্ন সার্জারির পর বা কোনো ক্ষতস্থানে তুলসী পাতা বেটে লাগালে তা বেশ তাড়াতাড়ি শুকিয়ে ওঠে। ক্যানসার প্রতিরোধ করতে তুলসী পাতা খুবই উপকারী। তুলসী পাতায় রয়েছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান, যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে। পুষ্টিগুণে ভরপুর তুলসী পাতা, দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ছানি এবং গ্লুকোমার মতো চোখের রোগকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে। তুলসির অনেক নিরাময় বৈশিষ্ট্য কিডনিতে পাথর রোগীদের জন্যও উপকারী হতে পারে। রেনাল স্টোনে আক্রান্ত মধুর সঙ্গে এই পাতার রস খেলে উপকার পাবেন।

মানসিক চাপ হ্রাস
মানসিক চাপের কমপক্ষে তিনটি লক্ষণ রয়েছে এমন ১৫৮ জন ব্যক্তির ওপর একটি গবেষণা করা হয়েছে। তাদের ছয় সপ্তাহের জন্য প্রতিদিন ১,২০০ মিলিগ্রাম পবিত্র তুলসীর নির্যাস গ্রহণ করা প্লাসিবোর তুলনায় সাধারণ চাপের লক্ষণগুলো ভালো করতে ৩৯ শতাংশ বেশি কার্যকর ছিল। তুলসীর ভিটামিন সি, অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি ও অন্যান্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। এ উপাদানগুলো নার্ভকে শান্ত করে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তুলসী শরীরে কর্টিসোলের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত উত্তেজনা ও চাপ থেকে মুক্তি দেয়।
হাঁপানির লক্ষণ ভালো করে
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যদি হাঁপানি থাকে তবে আপনার শ্বাসনালির ফোলা কমাতে পারে তুলসী। তবে, এই গবেষণাগুলোর মধ্যে একটি প্রাণীর ওপর নির্ভর করে করা হয়েছিল।
ত্বক ভালো রাখে
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, কিংবা ব্রণের সমস্যা দূর করতে তুলসীপাতা ব্যবহার করতে পারেন। তুলসীপাতার রসের সঙ্গে নারকেলের তেল মিশিয়ে পোড়া জায়গায় লাগালে জ্বালাপোড়া কমবে এবং দাগ দূর হবে। এই পাতায় আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি ত্বকের দূষিত পদার্থ বের করে দিতে কাজ করে। ধুলো এবং দূষণের কারণে ত্বকে লালচে ভাব দেখা দিতে পারে। এই পাতায় থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ত্বকের সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে। ত্বকের প্রদাহ বা জ্বালা ভাব কমাতে তুলসীপাতা কাজ করে থাকে।
ঘরে তৈরি তুলসীর চা তৈরির সহজ পদ্ধতি
প্রথমে পাত্রে পানি নিয়ে হালকা ফোটাতে শুরু করুন। যদি তাজা তুলসীপাতা ব্যবহার করেন, তবে পাতাগুলো সরাসরি ফুটন্ত পানিতে যোগ করুন। তারপর তাপ বন্ধ করে দিন এবং ৫ থেকে ৭ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন। শুকনো তুলসীপাতা ব্যবহার করলে, শুকনো ভেষজটি যোগ করুন এবং ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পাতাগুলো ছেঁকে চা পরিবেশন করুন। স্বাদে নতুনত্ব যোগ করতে চাইলে এতে আদা এবং লেবু মিশিয়ে নিতে পারেন। মিষ্টি যোগ করতে চাইলে পান করার ঠিক আগে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
সূত্র: ওয়েব মেদ, হেলথ লাইন, কাল্টিভেটেড আর্থ

প্রকৃতিতে এমন কিছু পাতা আছে যা অনেক গুণে গুণান্বিত। তেমনই একটি পাতা হলো তুলসী। এই পাতার গুণ ও উপকারিতা অনেক। মূলত ভারত, এশিয়া এবং আফ্রিকা অঞ্চলের স্থানীয় এই বেসিল বা তুলসীকে একটি পবিত্র এবং মহৎ ভেষজ হিসেবে গণ্য করা হয়। অনেকেই তাদের রান্নাঘর বা বাগানে এটি চাষ করেন। ৬০ টির বেশি ধরনের তুলসী রয়েছে, যার মধ্যে অপেক্ষাকৃত মিষ্টি স্বাদের তুলসী সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা
টাইপ ২ ডায়াবেটিস:
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৬০ জন ব্যক্তি তিন মাস ধরে প্রতিদিন প্রাতরাশ এবং রাতের খাবারের আগে একটি ডায়াবেটিস ওষুধের সঙ্গে ২৫০ মিলিগ্রাম তুলসীর নির্যাস গ্রহণ করেছিলেন। যারা শুধুমাত্র ওষুধ গ্রহণ করেছিলেন তাদের তুলনায় তাদের গড় রক্তে শর্করা ১৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। তুলসী শরীরে কর্টিসোলের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে। রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে প্রতিদিন খাওয়ার আগে তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন। নিয়মিত তুলসীপাতা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাও বাড়ে। ফলে শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কাই থাকে না।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আয়ুর্বেদের একটি ঐতিহ্যগত বিশ্বাস হলো খালি পেটে তুলসী খেলে সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়। এ ছাড়া জ্বরের সময়ও তুলসী পাতা খুব উপকারী। বিভিন্ন সার্জারির পর বা কোনো ক্ষতস্থানে তুলসী পাতা বেটে লাগালে তা বেশ তাড়াতাড়ি শুকিয়ে ওঠে। ক্যানসার প্রতিরোধ করতে তুলসী পাতা খুবই উপকারী। তুলসী পাতায় রয়েছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান, যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে। পুষ্টিগুণে ভরপুর তুলসী পাতা, দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ছানি এবং গ্লুকোমার মতো চোখের রোগকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে। তুলসির অনেক নিরাময় বৈশিষ্ট্য কিডনিতে পাথর রোগীদের জন্যও উপকারী হতে পারে। রেনাল স্টোনে আক্রান্ত মধুর সঙ্গে এই পাতার রস খেলে উপকার পাবেন।

মানসিক চাপ হ্রাস
মানসিক চাপের কমপক্ষে তিনটি লক্ষণ রয়েছে এমন ১৫৮ জন ব্যক্তির ওপর একটি গবেষণা করা হয়েছে। তাদের ছয় সপ্তাহের জন্য প্রতিদিন ১,২০০ মিলিগ্রাম পবিত্র তুলসীর নির্যাস গ্রহণ করা প্লাসিবোর তুলনায় সাধারণ চাপের লক্ষণগুলো ভালো করতে ৩৯ শতাংশ বেশি কার্যকর ছিল। তুলসীর ভিটামিন সি, অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি ও অন্যান্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। এ উপাদানগুলো নার্ভকে শান্ত করে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তুলসী শরীরে কর্টিসোলের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত উত্তেজনা ও চাপ থেকে মুক্তি দেয়।
হাঁপানির লক্ষণ ভালো করে
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যদি হাঁপানি থাকে তবে আপনার শ্বাসনালির ফোলা কমাতে পারে তুলসী। তবে, এই গবেষণাগুলোর মধ্যে একটি প্রাণীর ওপর নির্ভর করে করা হয়েছিল।
ত্বক ভালো রাখে
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, কিংবা ব্রণের সমস্যা দূর করতে তুলসীপাতা ব্যবহার করতে পারেন। তুলসীপাতার রসের সঙ্গে নারকেলের তেল মিশিয়ে পোড়া জায়গায় লাগালে জ্বালাপোড়া কমবে এবং দাগ দূর হবে। এই পাতায় আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি ত্বকের দূষিত পদার্থ বের করে দিতে কাজ করে। ধুলো এবং দূষণের কারণে ত্বকে লালচে ভাব দেখা দিতে পারে। এই পাতায় থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ত্বকের সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে। ত্বকের প্রদাহ বা জ্বালা ভাব কমাতে তুলসীপাতা কাজ করে থাকে।
ঘরে তৈরি তুলসীর চা তৈরির সহজ পদ্ধতি
প্রথমে পাত্রে পানি নিয়ে হালকা ফোটাতে শুরু করুন। যদি তাজা তুলসীপাতা ব্যবহার করেন, তবে পাতাগুলো সরাসরি ফুটন্ত পানিতে যোগ করুন। তারপর তাপ বন্ধ করে দিন এবং ৫ থেকে ৭ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন। শুকনো তুলসীপাতা ব্যবহার করলে, শুকনো ভেষজটি যোগ করুন এবং ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পাতাগুলো ছেঁকে চা পরিবেশন করুন। স্বাদে নতুনত্ব যোগ করতে চাইলে এতে আদা এবং লেবু মিশিয়ে নিতে পারেন। মিষ্টি যোগ করতে চাইলে পান করার ঠিক আগে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
সূত্র: ওয়েব মেদ, হেলথ লাইন, কাল্টিভেটেড আর্থ

নিউইয়র্কে পা দিতে না দিতেই ঈদের আমেজ। সৌদি আরবে কবে চাঁদ দেখা যাবে, তা নিয়ে ছিল সংশয়। মনে করা হচ্ছিল, এবার এক দিন পিছিয়ে যেতে পারে ঈদ। কিন্তু একসময় বলা হলো, সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, তাই এবার ঈদ হবে ২১ এপ্রিল। ব্যস, শুরু হয়ে গেল তোড়জোড়। বাঙালি পাড়ায় পাড়ায় এল ঈদের আমেজ।
২৬ এপ্রিল ২০২৩
নীল কিংবা সবুজ প্রচ্ছদের একটি বই, হাতে থাকলে পাড়ি জমানো যায় আটলান্টিকের ওপারে, আরবের মরুভূমি, ইউরোপের সরু গলি কিংবা হিমালয়ের পাদদেশে; বাধা হয় না কোনো সীমান্ত, কোনো প্রহরী। এতটুকু একটু নথি! অথচ তার ক্ষমতা সীমানা ছাড়িয়ে, এক দেশ থেকে আরও এক দেশে। পাসপোর্ট একই সঙ্গে পরিচয়, আবার বিশ্বভ্রমণের চাবিকাঠি।
৯ ঘণ্টা আগে
সোহা আলি খান সম্প্রতি তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে নিজের ত্বকযত্নের জন্য তৈরি করা একটি প্যাকের কথা লিখেছেন, ছবিও দিয়েছেন। সেই প্যাক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে বেসন, হলুদগুঁড়া, দইয়ের মতো দেশীয় উপাদান। তিনি জানিয়েছেন, এসব উপাদান একেবারে তাঁর রান্নাঘর থেকে নেওয়া।...
১২ ঘণ্টা আগে
অতিরিক্ত সিবাম নিঃসৃত হলে ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। এতে রোমকূপ বন্ধ হয়ে ত্বকে ব্রণ হয়। বংশগতি, হরমোনের পরিবর্তন, এমনকি মানসিক চাপও সিবাম উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ যত সহজে হয়, তত সহজে সারে না। তবে নিয়মিত পরিচর্যা করে ত্বকের অতিরিক্ত তেল ভাব এবং ব্রণ দূর করা সম্ভব।...
১৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

তৈলাক্ত ত্বকে সেবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত সিবাম উৎপাদিত হয়। সিবাম মূলত চর্বি দিয়ে তৈরি তৈলাক্ত পদার্থ। তবে এটি খারাপ জিনিস নয়। এটি ত্বক প্রাকৃতিকভাবে ময়শ্চারাইজ রাখতে সহায়তা করে, ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়তে দেয় না এবং ত্বক সুস্থ রাখে। তবে অতিরিক্ত সিবাম নিঃসৃত হলে ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। এতে রোমকূপ বন্ধ হয়ে ত্বকে ব্রণ হয়। বংশগতি, হরমোনের পরিবর্তন, এমনকি মানসিক চাপও সিবাম উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ যত সহজে হয়, তত সহজে সারে না। তবে নিয়মিত পরিচর্যা করে ত্বকের অতিরিক্ত তেল ভাব এবং ব্রণ দূর করা সম্ভব।
তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের ইনফেকশন হয়ে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ খেতে হবে। এর বাইরে সুষম খাবার রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়। টাটকা ফল, শাকসবজি খেতে হবে বেশি করে। অতিরিক্ত তেল ও চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এ ছাড়া প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে বরফ থেরাপি নিতে হবে। শারমিন কচি, রূপবিশেষজ্ঞ ও স্বত্বাধিকারী, বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ার
ঘরোয়া উপায়ে এ সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। যা করবেন,
প্রতিদিন অন্তত দুবার মুখ ধুতে হবে
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা বাড়ার প্রথম কারণ মুখ না ধোয়া। গোসল বাদেও প্রতিদিন অন্তত দুবার মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তবে মুখ ধোয়ার জন্য খুব হালকা ফেসওয়াশ বা গ্লিসারিন সমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করতে হবে।
মধুর প্রলেপ দিন
মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে। ফলে এটি তৈলাক্ত ও ব্রণপ্রবণ ত্বকের জন্য উপকারী। ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়ার পর মুখে এক পরত মধু মেখে রেখে দিন ১০ মিনিট। এরপর কুসুম গরম পানির ঝাপটায় ধুয়ে নিন।
ওটমিলের প্যাক
ওটমিল ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে নেয়। এটি ত্বকের ব্রণ ও মরা কোষ দূর করতেও খুব ভালো কাজ করে। ওটমিল গুঁড়া করে টক দই, মধু, কলা বা পেঁপে বাটা মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই প্যাক মুখে প্রায় ৩ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ডিমের সাদা অংশ ও লেবু
ডিমের সাদা অংশ ও লেবুর রস রোমকূপ বড় হয়ে যাওয়ার সমস্যা দূর করে। লেবু ও অন্যান্য সাইট্রাস ফলের অ্যাসিড ত্বকের তেল শুষে নেয়। লেবুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতা থাকায় তা ব্রণ সারাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তবে সরাসরি মুখে লেবুর রস লাগাবেন না। একটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে এক চা-চামচ তাজা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এটি মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত রেখে দিন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরার প্রলেপ
ব্রণসহ তৈলাক্ত ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে অ্যালোভেরার বহুল ব্যবহার রয়েছে। রাতে ঘুমানোর আগে মুখে অ্যালোভেরার একটি পাতলা প্রলেপ লাগিয়ে ঘুমাতে যান। সকালে ঘুম থেকে উঠে ধুয়ে নিন। সংবেদনশীল ত্বকে অ্যালোভেরা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। যদি আপনি আগে অ্যালোভেরা ব্যবহার না করে থাকেন, তাহলে আপনার হাতের অল্প জায়গায় লাগিয়ে পরীক্ষা করুন। যদি ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না যায়, তাহলে এটি ব্যবহার করা নিরাপদ।
টমেটো ও চিনির প্যাক
টমেটোতে স্যালিসিলিক অ্যাসিড থাকে, যা ব্রণের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ ঘরোয়া প্রতিকার। টমেটোতে থাকা অ্যাসিড ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া রোমকূপ খুলে দিতে সাহায্য করে। টমেটো ফেসপ্যাক তৈরি করতে ১টি টমেটো বাটার সঙ্গে ১ চা-চামচ চিনি মিশিয়ে নিন। বৃত্তাকার গতিতে ত্বকে লাগিয়ে প্যাকটি ৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। চাইলে চিনি বাদ দিয়ে শুধু টমেটো বাটা দিয়েও তৈরি প্যাক তৈরি করা যায়।
অলিভ অয়েল ও মধুর প্যাক
একটি পাত্রে এক চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার মাইক্রোওয়েভে সেই মিশ্রণ ১০ সেকেন্ডের জন্য গরম করুন। এতে মধু খুব ভালোভাবে তেলের সঙ্গে মিশে যাবে। এই মিশ্রণ সারা মুখে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
ছবি: পেক্সেলস

তৈলাক্ত ত্বকে সেবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত সিবাম উৎপাদিত হয়। সিবাম মূলত চর্বি দিয়ে তৈরি তৈলাক্ত পদার্থ। তবে এটি খারাপ জিনিস নয়। এটি ত্বক প্রাকৃতিকভাবে ময়শ্চারাইজ রাখতে সহায়তা করে, ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়তে দেয় না এবং ত্বক সুস্থ রাখে। তবে অতিরিক্ত সিবাম নিঃসৃত হলে ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। এতে রোমকূপ বন্ধ হয়ে ত্বকে ব্রণ হয়। বংশগতি, হরমোনের পরিবর্তন, এমনকি মানসিক চাপও সিবাম উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ যত সহজে হয়, তত সহজে সারে না। তবে নিয়মিত পরিচর্যা করে ত্বকের অতিরিক্ত তেল ভাব এবং ব্রণ দূর করা সম্ভব।
তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের ইনফেকশন হয়ে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ খেতে হবে। এর বাইরে সুষম খাবার রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়। টাটকা ফল, শাকসবজি খেতে হবে বেশি করে। অতিরিক্ত তেল ও চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এ ছাড়া প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে বরফ থেরাপি নিতে হবে। শারমিন কচি, রূপবিশেষজ্ঞ ও স্বত্বাধিকারী, বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ার
ঘরোয়া উপায়ে এ সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। যা করবেন,
প্রতিদিন অন্তত দুবার মুখ ধুতে হবে
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা বাড়ার প্রথম কারণ মুখ না ধোয়া। গোসল বাদেও প্রতিদিন অন্তত দুবার মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তবে মুখ ধোয়ার জন্য খুব হালকা ফেসওয়াশ বা গ্লিসারিন সমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করতে হবে।
মধুর প্রলেপ দিন
মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে। ফলে এটি তৈলাক্ত ও ব্রণপ্রবণ ত্বকের জন্য উপকারী। ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়ার পর মুখে এক পরত মধু মেখে রেখে দিন ১০ মিনিট। এরপর কুসুম গরম পানির ঝাপটায় ধুয়ে নিন।
ওটমিলের প্যাক
ওটমিল ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে নেয়। এটি ত্বকের ব্রণ ও মরা কোষ দূর করতেও খুব ভালো কাজ করে। ওটমিল গুঁড়া করে টক দই, মধু, কলা বা পেঁপে বাটা মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই প্যাক মুখে প্রায় ৩ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ডিমের সাদা অংশ ও লেবু
ডিমের সাদা অংশ ও লেবুর রস রোমকূপ বড় হয়ে যাওয়ার সমস্যা দূর করে। লেবু ও অন্যান্য সাইট্রাস ফলের অ্যাসিড ত্বকের তেল শুষে নেয়। লেবুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতা থাকায় তা ব্রণ সারাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তবে সরাসরি মুখে লেবুর রস লাগাবেন না। একটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে এক চা-চামচ তাজা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এটি মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত রেখে দিন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরার প্রলেপ
ব্রণসহ তৈলাক্ত ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে অ্যালোভেরার বহুল ব্যবহার রয়েছে। রাতে ঘুমানোর আগে মুখে অ্যালোভেরার একটি পাতলা প্রলেপ লাগিয়ে ঘুমাতে যান। সকালে ঘুম থেকে উঠে ধুয়ে নিন। সংবেদনশীল ত্বকে অ্যালোভেরা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। যদি আপনি আগে অ্যালোভেরা ব্যবহার না করে থাকেন, তাহলে আপনার হাতের অল্প জায়গায় লাগিয়ে পরীক্ষা করুন। যদি ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না যায়, তাহলে এটি ব্যবহার করা নিরাপদ।
টমেটো ও চিনির প্যাক
টমেটোতে স্যালিসিলিক অ্যাসিড থাকে, যা ব্রণের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ ঘরোয়া প্রতিকার। টমেটোতে থাকা অ্যাসিড ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া রোমকূপ খুলে দিতে সাহায্য করে। টমেটো ফেসপ্যাক তৈরি করতে ১টি টমেটো বাটার সঙ্গে ১ চা-চামচ চিনি মিশিয়ে নিন। বৃত্তাকার গতিতে ত্বকে লাগিয়ে প্যাকটি ৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। চাইলে চিনি বাদ দিয়ে শুধু টমেটো বাটা দিয়েও তৈরি প্যাক তৈরি করা যায়।
অলিভ অয়েল ও মধুর প্যাক
একটি পাত্রে এক চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার মাইক্রোওয়েভে সেই মিশ্রণ ১০ সেকেন্ডের জন্য গরম করুন। এতে মধু খুব ভালোভাবে তেলের সঙ্গে মিশে যাবে। এই মিশ্রণ সারা মুখে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
ছবি: পেক্সেলস

নিউইয়র্কে পা দিতে না দিতেই ঈদের আমেজ। সৌদি আরবে কবে চাঁদ দেখা যাবে, তা নিয়ে ছিল সংশয়। মনে করা হচ্ছিল, এবার এক দিন পিছিয়ে যেতে পারে ঈদ। কিন্তু একসময় বলা হলো, সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, তাই এবার ঈদ হবে ২১ এপ্রিল। ব্যস, শুরু হয়ে গেল তোড়জোড়। বাঙালি পাড়ায় পাড়ায় এল ঈদের আমেজ।
২৬ এপ্রিল ২০২৩
নীল কিংবা সবুজ প্রচ্ছদের একটি বই, হাতে থাকলে পাড়ি জমানো যায় আটলান্টিকের ওপারে, আরবের মরুভূমি, ইউরোপের সরু গলি কিংবা হিমালয়ের পাদদেশে; বাধা হয় না কোনো সীমান্ত, কোনো প্রহরী। এতটুকু একটু নথি! অথচ তার ক্ষমতা সীমানা ছাড়িয়ে, এক দেশ থেকে আরও এক দেশে। পাসপোর্ট একই সঙ্গে পরিচয়, আবার বিশ্বভ্রমণের চাবিকাঠি।
৯ ঘণ্টা আগে
সোহা আলি খান সম্প্রতি তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে নিজের ত্বকযত্নের জন্য তৈরি করা একটি প্যাকের কথা লিখেছেন, ছবিও দিয়েছেন। সেই প্যাক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে বেসন, হলুদগুঁড়া, দইয়ের মতো দেশীয় উপাদান। তিনি জানিয়েছেন, এসব উপাদান একেবারে তাঁর রান্নাঘর থেকে নেওয়া।...
১২ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতিতে এমন কিছু পাতা আছে যা অনেক গুণে গুণান্বিত। তেমনই একটি পাতা হলো তুলসী। এই পাতার গুণ ও উপকারিতা অনেক। মূলত ভারত, এশিয়া এবং আফ্রিকা অঞ্চলের স্থানীয় এই বেসিল বা তুলসীকে একটি পবিত্র এবং মহৎ ভেষজ হিসেবে গণ্য করা হয়। অনেকেই তাদের রান্নাঘর বা বাগানে এটি চাষ করেন। ৬০ টিরও বেশি ধরনের তুলসী রয়েছে,
১৫ ঘণ্টা আগে