Ajker Patrika

ঈদে লম্বা ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে যা করবেন

ডেস্ক রিপোর্ট
ঈদে লম্বা ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে যা করবেন

ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে এবার প্রায় এক সপ্তাহের ছুটি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি ২৯ রোজা হয় তাহলে একসঙ্গে ছয় দিন ছুটি পাওয়া যাবে। আর ৩০ রোজা হলে মিলবে টানা পাঁচ দিনের ছুটি। ফলে সারা বছর যাঁদের লম্বা ভ্রমণে যাওয়ার ফুরসত মেলে না, তাঁদের জন্য এ সময়টা আদর্শ।

যাঁরা বিদেশে যেতে চান, তাঁরা এখন থেকে খোঁজখবর শুরু করুন। বিশেষত হোটেল ও ভ্রমণ গন্তব্য। এখন অবশ্য হোটেল বুক করা কিংবা ভ্রমণ পরিকল্পনা করা বেশ সহজ। কাউচ সার্ফিং কিংবা এয়ারবিএনবির মতো সেবা এখন ভ্রমণ অনেক সহজ করেছে। ক্ষেত্রবিশেষে এই সেবাগুলো বেশ সাশ্রয়ীও বটে। ভারত, নেপাল, ভুটানসহ আশপাশের দেশগুলোতে যেতে চাইলে কাউচ সার্ফিং কিংবা এয়ারবিএনবির সুবিধা নিতে পারেন। তাতে গতানুগতিক ভ্রমণের বাইরে আলাদা এক পৃথিবীর সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তা ছাড়া আগে থেকে বিমানের টিকিট বুকিং করলে কিছুটা ছাড় পাওয়া যায়। আর ভিসার জন্য এখনই আবেদন না করলে ঈদের ছুটিতে দেশের বাইরে যাওয়া নাও হতে পারে।

প্রায় প্রতিটি এয়ারলাইন ও বড় ট্যুর অপারেটর এ সময় অনেক ধরনের প্যাকেজ দিয়ে থাকে, সেগুলোর খোঁজ রাখুন অনলাইনে। আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে থাকেন তাহলে তাতেও অনেক অফার পাওয়ার কথা। সে বিষয়ে আপডেট থাকতে আপনার মোবাইল ফোনে পাঠানো মেসেজগুলো দেখে নিন। তারপর সুবিধামতো অফারে ঘুরে আসুন যেকোনো জায়গা থেকে।

যাঁরা দেশে ঘুরতে চান তাঁদের বেলায়ও প্রস্তুতির দরকার আছে। ঈদ ও পয়লা বৈশাখ মিলিয়ে যেহেতু ছুটি থাকবে, তাই জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোতে উপচে পড়া মানুষের ভিড় হবে স্বাভাবিকভাবে। তাতে হোটেল, রিসোর্টসহ থাকার জায়গাগুলোর ওপর চাপ থাকবে প্রচুর। সে চাপে পড়তে না চাইলে এখনই হোটেল বুক করুন। তবে তার আগে ঠিক করুন কোথায় যাবেন। আমাদের ছোট্ট দেশে যাওয়ার জায়গাগুলোর কথা সবাই জানি। সেগুলোতে যেতে পারেন কিংবা নতুনত্বের জন্য নিজের পছন্দমতো জায়গা খুঁজে বের করে সেখান থেকেও ঘুরে আসতে পারেন।

ছবি: সংগৃহীতটিপস

  • কোথায় যেতে চান তা ঠিক করুন।
  • এয়ারবিএনবি, কাউচ সার্ফিং কিংবা ভরসা করার মতো অন্য অ্যাপগুলোর সহায়তা নিন থাকার জায়গা ও গন্তব্য ঠিক করার জন্য।
  • এক সপ্তাহে সব ঘুরে ফেলবেন এমন না ভেবে ভালোভাবে ঘোরা যাবে, দেখা যাবে এমন পরিকল্পনা করুন।
  • প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ দিয়ে থাকে। সেসব বিষয়ে খোঁজ রাখুন এবং সুবিধামতো প্যাকেজ নিয়ে ভ্রমণ করুন।
  • এয়ারলাইনস ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলোও বিভিন্ন রকম প্যাকেজ অফার করছে। খোঁজ রাখুন।
  • ট্রাভেল এজেন্সিগুলো নেপাল, ভারত, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের জন্য প্রচুর অফার দিয়ে থাকে। যেসব প্রতিষ্ঠানের সুনাম আছে সেসব প্রতিষ্ঠানের প্যাকেজ নেওয়া ভালো। নইলে ঠকে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।­

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

পাকিস্তান থেকে এল নিষিদ্ধ পণ্য, বার্ড ফুডের নামে পপিবীজের চালান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধনেপাতার যত উপকারিতা: ব্যথা, উদ্বেগ ও রক্তে শর্করা কমায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ধনেপাতা এমন এক ভেষজ, যা নিয়ে মতভেদ চরমে। কেউ একে ভীষণ ভালোবাসেন; আবার কারও কাছে এটি অত্যন্ত অপছন্দের।

অনেকের জন্য সালাদে ধনের কয়েকটি পাতা স্বাদে এনে দেয় নতুন মাত্রা। তবে বিশেষ জিন বহনকারী কিছু মানুষের কাছে এর স্বাদ ঠিক সাবানের মতো।

‘ইন দ্য কিচেন উইথ শেফ বে’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ব্রুক বেভস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪ থেকে ১৪ শতাংশ মানুষের দেহে এই জিনগত বৈচিত্র্য আছে; যার ফলে ধনেপাতার স্বাদ তাঁদের কাছে সাবানের মতো লাগে। অন্যদের কাছে এটি একদমই তাজা ও সুগন্ধি ভেষজ।

তবে ধনেপাতা খাওয়ার কিছু অপ্রত্যাশিত স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে এটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে—যে ব্যথা অটোইমিউন, স্নায়ুবিক অবক্ষয়জনিত, পরিপাকতন্ত্রের বা হৃদ্‌রোগের কারণ হতে পারে, এমনকি কিছু ক্যানসারের সঙ্গেও সম্পর্কিত। এ ছাড়া এই ভেষজ উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি ঘটে প্রদাহজনিত রোগের কারণে।

ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এই উদ্ভিদ—যা ধনেবীজও উৎপাদন করে—তাতে এমন কিছু যৌগ রয়েছে, যা গবেষকদের মতে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।

২০২৩ সালে ইতালির গবেষকেরা বলেন, ধনে নির্যাসের জৈব কার্যকারিতার কারণে ভেষজটিকে স্থূলতা, মেটাবলিক সিনড্রোম ও ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে মূল্যবান কার্যকর খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র: দি ইনডিপেনডেন্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

পাকিস্তান থেকে এল নিষিদ্ধ পণ্য, বার্ড ফুডের নামে পপিবীজের চালান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫৪ বছরে টাবু, রূপের রহস্য কী

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
৩৪ বছরের অভিনয় জীবনে টাবুকে গ্ল্যামারের ওপর নির্ভর করতে হয়নি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
৩৪ বছরের অভিনয় জীবনে টাবুকে গ্ল্যামারের ওপর নির্ভর করতে হয়নি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

৪ নভেম্বর ছিল ভারতীয় অভিনেত্রী টাবুর জন্মদিন। সে উপলক্ষে বোল্ড স্কাই ডট কম প্রকাশ করেছিল রিনি জনের একটি লেখা। এই লেখা তারই অনুবাদ।

‘ম্যায় হু না’, ‘হায়দার’, ‘চিনি কম’, ‘চাঁদনি বার’ কিংবা ‘আন্ধাধুন’ সিনেমার কথা মনে আছে নিশ্চয়? তাহলেই মনে পড়বে টাবুর কথা। সু-অভিনয়, সাধারণ জীবনযাপন আর সময়ানুবর্তিতা—এই তিন মিলে তিনি টাবু। ৪ নভেম্বর ছিল তাঁর জন্মদিন। এই দিনে সামনে এসেছে তাঁর রূপরহস্যের কথা।

চুয়ান্নতম জন্মদিনে টাবু পার করছেন ভারতীয় সিনেমার জগতে তাঁর ৩৪ বছরের কর্মজীবন। এই দীর্ঘ কর্মময় জীবনে তাঁকে গ্ল্যামারের ওপর নির্ভর করতে হয়নি। দক্ষ অভিনয়, অভিব্যক্তি, কণ্ঠস্বর আর ব্যক্তিত্ব তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। পর্দায় সহজ-সরল উপস্থিতি আসলে তাঁর সহজ-সরল জীবনযাপনেরই যেন প্রতিচ্ছবি। তাই বলে তিনি কি নিজের যত্নে উদাসীন? তা নয়; বরং তিনি নিজের ত্বক, চুলসহ শরীরের যত্নে বেশ সংবেদনশীল।

সহজে বিশ্বাসী

হ্যাঁ, টাবু জটিল ধরনের ত্বক পরিচর্যায় বিশ্বাসী নন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি সহজ ও ধারাবাহিকভাবে রুটিন মেনে চলার কথা জানিয়েছেন বহুবার। তাঁর সকালের রুটিনে সাধারণত ক্লিনজিং ও ময়শ্চারাইজিং এবং সান প্রোটেকশন বা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষার বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে। এগুলোর কোনো ধাপ তিনি কখনোই বাদ দেন না।

দীর্ঘদিনের অভ্যাস

গোসলের আগে সি সল্ট ও পেট্রোলিয়াম জেলির মিশ্রণ দিয়ে এক্সফোলিয়েট করা তাঁর দীর্ঘদিনের অভ্যাস। তিনি মনে করেন, এটি তাঁর ত্বক নরম ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। তিনি হালকা, নন-গ্রিজি ময়শ্চারাইজার পছন্দ করেন এবং চরিত্রের প্রয়োজনে না হলে ভারী মেকআপ এড়িয়ে চলেন।

ত্বকের যত্ন শুধু পণ্য ব্যবহারের বিষয় নয় বলে মনে করেন টাবু। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ত্বকের যত্ন শুধু পণ্য ব্যবহারের বিষয় নয় বলে মনে করেন টাবু। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

খাদ্য, পানি ও বিশ্রাম

ত্বকের যত্ন শুধু পণ্য ব্যবহারের বিষয় নয় বলে মনে করেন টাবু। তিনি জ্বালানি হিসেবে শরীর কোন ধরনের খাদ্য-পানীয় দিচ্ছেন, সেদিকেও মনোযোগ দেন। টাবু জানিয়েছেন, তিনি পর্যাপ্ত পানি পান করেন, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলেন এবং তাঁর খাদ্যতালিকায় থাকে সুষম খাবারের উপস্থিতি। তাতে থাকে তাজা ফল, সবজি ও ঘরে তৈরি পুষ্টিকর সাধারণ ও সহজ খাবার।

টাবু বিশ্বাস করেন, তিনি কেমন বোধ করছেন এবং কেমন দেখাচ্ছেন, এ দুয়ের ওপর ঘুমের বড় ভূমিকা আছে। দীর্ঘ সময় কাজ করা এবং রাতের শুটিং স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, তাই সুযোগ পেলেই তিনি বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করেন।

সেই একটি দামি ক্রিম

টাবু একবার কোনো সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নিজের মেকআপ আর্টিস্টের পরামর্শে তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ফেস ক্রিম কিনেছিলেন। পরে তিনি সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে হাসাহাসি করেন। তিনি সে ধরনের পণ্য আর কিনবেন না বলেও জানিয়েছিলেন। ‘ফিল্ম কম্প্যানিয়ন’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটি একবার কিনেছিলাম এবং সেটাই শেষ।’ এসব দেখে বোঝা যায়, আর যা-ই হোক, তিনি ট্রেন্ড বা দামের ট্যাগ দেখে আবেগতাড়িত হন না। তাঁর জন্য সৌন্দর্য সব সময়ই স্বাচ্ছন্দ্য, ধারাবাহিকতা এবং একটি এমন রুটিনের বিষয়, যা বিলাসিতার চেয়ে অনেক বেশি প্রাকৃতিক।

টাবু নিউট্রাল টোন, হালকা আইশ্যাডো এবং প্রাকৃতিক লুক পছন্দ করেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
টাবু নিউট্রাল টোন, হালকা আইশ্যাডো এবং প্রাকৃতিক লুক পছন্দ করেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ন্যূনতম মেকআপ, সর্বোচ্চ স্বাচ্ছন্দ্য

সাধারণত পাবলিক ইভেন্টেও টাবুকে কখনো ভারী মেকআপে দেখা যায় না। তিনি নিউট্রাল টোন, হালকা আইশ্যাডো এবং প্রাকৃতিক লুক পছন্দ করেন। এই ন্যূনতম মেকআপের জন্য তাঁর ত্বক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারে। তিনি যেমন মিতভাষী ও আত্মবিশ্বাসী, তাঁর মেকআপও তেমনি মৃদু কিন্তু পূর্ণ।

তিনি দীর্ঘ শুটিংয়ের পর মেকআপ ঠিকঠাকমতো তুলে ফেলার বিষয়েও বিশেষ যত্নবান, যাতে তাঁর ত্বক সারা দিনের ক্ষয়ক্ষতি পুনরুদ্ধারের সময় পায়।

বয়সের সঙ্গে বদলে যাওয়া

টাবুকে অনন্য করে তুলেছে যে বিষয়টি, তা হলো তিনি কখনো বয়স লুকানোর চেষ্টা করেন না। তিনি এটিকে তাঁর জীবনের যাত্রাপথের একটি স্বাভাবিক অংশ হিসেবে মেনে নেন এবং এটিই সম্ভবত তাঁর সবচেয়ে বড় রহস্য। কোনো নির্দিষ্ট চেহারা বজায় রাখার চাপ নেই বা তার চেয়ে কম দেখানোরও কোনো তাড়না নেই; বরং তিনি সুস্থ বোধ করা, সক্রিয় থাকা এবং অনায়াসে জীবনযাপনের ওপর অনেক বেশি মনোযোগী।

সে জন্যই হয়তো তিনি বলতে পারেন, ‘আমি শুধু সেই গল্প বলতে চাই, যা আমাকে অনুভব করতে শেখায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

পাকিস্তান থেকে এল নিষিদ্ধ পণ্য, বার্ড ফুডের নামে পপিবীজের চালান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘুরে আসুন লামা থেকে

মিঠু দাশ, লামা, বান্দরবান
ছবি: লেখক
ছবি: লেখক

ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে পাহাড় ও মাতামুহুরী নদীবেষ্টিত বান্দরবানের লামা উপজেলা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বৈচিত্র্যময়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু সারি সারি সবুজ পাহাড়। সেই সবুজ পাহাড়ে মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে নেই মানা। মাঝে মাঝে ঢুকে যাবেন মেঘের রাজ্যে। সূর্যের আলো ফোটার আগে বোঝার উপায় নেই, এটি কোন জনপদ। সূর্যোদয়ের পর হেসে ওঠে সব। প্রকৃতি যেন তার সবটুকু রূপ দিয়ে সাজিয়ে তুলেছে বান্দরবানের লামাকে। সারি সারি পাহাড় আর সবুজ বনানীবেষ্টিত এলাকায় আপনার আগমনে যোগ হবে ভিন্ন মাত্রা। পাহাড় থেকে সূর্যাস্ত না দেখলে প্রকৃতির বর্ণনাতীত সৌন্দর্যের অনেকটাই অদেখা থেকে যায়। মেঘ আর কুয়াশাঢাকা পাহাড়ি পথে পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার রোমাঞ্চকর অনুভূতি ডাকছে আপনাকে।

ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্মবিশ্বাস অন্যান্য জেলার চেয়ে তিন পার্বত্য জেলা সম্পূর্ণ আলাদা। বান্দরবানের লামার মিরিঞ্জা পাহাড় থেকে দেখা যাবে লামা শহর, পাশের সবুজ সুন্দর প্রকৃতি এবং পশ্চিমে তাকালে উপকূলীয় সবুজ বনানীর পর মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কুতুবদিয়া-মহেশখালী দ্বীপের বাইরে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান জাহাজ এবং বোটগুলো যেন পাহাড়ি নদীর পানসি নৌকা! লামার বুকে বয়ে চলা মাতামুহুরী নদী যেন স্বপ্নের জগতে নিয়ে যাবে আপনাকে। মাঝেমধ্যে উঁচু উঁচু পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেয় সূর্যের আলো। প্রকৃতির খুব কাছাকাছি আসার, বুকভরে নির্মল বাতাস নেওয়ার আর স্বর্গীয় দৃশ্য দেখে চোখ জুড়ানোর একমাত্র জায়গা লামা। এখানে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। অরণ্য রানিখ্যাত লামার মিরিঞ্জা পাহাড়, সুখীয়া ও দুঃখীয়া পাহাড় এবং আশপাশের এলাকায় আবিষ্কৃত হয়েছে শতাধিক পর্যটনকেন্দ্র। দুর্গম সব পাহাড় আর বুনো প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে অনেক স্থান লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে।

মিরিঞ্জা

এই জায়গা এরই মধ্যে দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। এখানে আছে উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স। মিরিঞ্জা নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর এক পর্যটনকেন্দ্র। পাহাড়টি ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ ফুট উঁচু। মিরিঞ্জা পর্যটনকেন্দ্র থেকে নয়ন ভরে সাগর, পাহাড়, আকাশ এবং হরেক রকম পাখি দেখা যায়। এর ওপর রয়েছে নীল আকাশে মেঘের বিচরণ। প্রতিনিয়ত মেঘ ছুঁয়ে যায় মিরিঞ্জা পাহাড়ের গা, দৃষ্টিনন্দন টাইটানিক ভিউ পয়েন্ট, ওয়াকওয়ে ও মিনি শিশুপার্ক। মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সের গোড়াপত্তন হয়েছিল ২০০৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর, প্রায় ৩৩ একর পাহাড়ি ভূমি ঘিরে।

সুখীয়া ও দুঃখীয়া ভ্যালি

মাতামুহুরী নদীর দুই তীরে সুখীয়া ও দুঃখীয়া ভ্যালি। চোখজুড়ানো সবুজ স্নিগ্ধ বনানীঘেরা এ দুই পাহাড়ের বুক চিরে সর্পিলাকারে বহমান মাতামুহুরী নদী। সুখীয়া ও দুঃখীয়া পাহাড়ের উঁচু চূড়ার মনোরম দৃশ্যের সমারোহ দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিয়াসি পর্যটকদের হৃদয় মোহিত করেছে। এ দুই পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে মনপ্রাণ ফুরফুরে হয়ে যাবে।

পাহাড়ে জুমিয়ারা বাগান পাহারা দেওয়া এবং ফসল সংগ্রহের জন্য জুমের খেতে বাঁশ ও ছন দিয়ে জুমঘর তৈরি করে থাকে। এ জুমঘরকে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় ‘প্রবাস্যা ঘর’, ম্রো ভাষায় ‘ঐবক’, মারমা ভাষায় ‘বাও’ এবং ত্রিপুরা ভাষায় ‘হুৎমাইঞা’ বলে। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এ জুমঘর বেশ জনপ্রিয় এখন। ইতিমধ্যে দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে এই জুমঘর। মিরিঞ্জা পাহাড়, সুখীয়া-দুঃখীয়া পাহাড় এবং আশপাশের এলাকার নয়নাভিরাম পর্যটন স্থানগুলো ভ্রমণপিয়াসি পর্যটকদের প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করে চলেছে। লামায় পর্যটকদের তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি পাহাড়ি সংস্কৃতি ও জুম চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয় ঘটার সুযোগ অনেক বেশি।

পর্বত, অরণ্য ও সমুদ্রপ্রেমী—এই তিন শ্রেণির পর্যটকের সেরা গন্তব্য মেঘে আবৃত পাহাড়, সবুজ উপত্যকার মায়াবী জনপদ লামা।

যেভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ, ফকিরাপুল অথবা সায়েদাবাদ থেকে হানিফ কিংবা শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস বাসে সরাসরি লামায় যাওয়া যায়। এ ছাড়া কক্সবাজারগামী যেকোনো বাসে চকরিয়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, জিপগাড়ি বা চাঁদের গাড়ি কিংবা বাসযোগে মিরিঞ্জা বাজারে নেমে ১০ মিনিট হেঁটে মিরিঞ্জা ভ্যালি যাওয়া যায়। ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চকরিয়া স্টেশন পর্যন্ত যেতে হবে। সেখান থেকে চকরিয়া বাস টার্মিনালে গিয়ে অন্য পরিবহনে মিরিঞ্জায় যাওয়া যাবে। দেশের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চল থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম, তারপর লামায় যেতে হবে।

ভ্রমণকালীন সতর্কতা

  • সার্বিক নিরাপত্তার প্রয়োজনে কিছু জায়গায় তল্লাশি হতে পারে। তাই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র বা পেশাগত বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
  • পাহাড়ের ওপর নির্বিঘ্নে চলাফেরা করার জন্য ভালো গ্রিপসহ জুতা পরতে হবে।
  • টর্চ লাইট, ওরস্যালাইন, দড়ি, প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সঙ্গে রাখতে হবে। কাঁধের ব্যাগ যেন খুব বেশি ভারী হয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • ভ্রমণের জন্য গাইড নিতে হবে।
  • বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঝরনাগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
  • ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাদের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি আপনার চেয়ে আলাদা। তাই তাদের সামাজিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিকে সম্মান করতে হবে।
  • খাবারের প্যাকেট, পানির বোতলসহ যেকোনো আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলা যাবে না।
  • পাহাড়ি এলাকায় সন্ধ্যার পর রাত্রিযাপনের জায়গার আশপাশে থাকুন। সন্ধ্যার পর নিরিবিলি অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকা এড়িয়ে চলা উত্তম।
  • হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য ব্যয় সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়। তাই ভ্রমণে যাওয়ার আগে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পরিবর্তিত ব্যয় জেনে নেওয়া ভালো।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

পাকিস্তান থেকে এল নিষিদ্ধ পণ্য, বার্ড ফুডের নামে পপিবীজের চালান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এশিয়ার ভ্রমণ গন্তব্যে বাড়ছে ভিড় ও বিশৃঙ্খলা

ফিচার ডেস্ক
এশিয়ার ভ্রমণ গন্তব্যে বাড়ছে ভিড় ও বিশৃঙ্খলা

ইউরোপের অনেক দেশ পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন নিয়ম যোগ করেছে। এর কারণও আছে। অতিরিক্ত পর্যটকের কারণে স্থানীয় অধিবাসীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না। ফলে তাঁরা পর্যটকদের ওপর বিরক্ত। এসব বিষয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন দেশে। আবার অতিরিক্ত পর্যটনের বিরুদ্ধে স্পেনের রাস্তায় বিক্ষোভ পর্যন্ত দেখা গেছে। ইউরোপ ছাড়িয়ে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে এশিয়ার পর্যটনশিল্পও।

পর্যটন বিশেষজ্ঞ গ্যারি বাওয়ারম্যান বলছেন, বালি, কিয়োটো এবং ফুকেট পর্যটকদের নিয়ে সমস্যার মুখে পড়েছে। আসলে ভ্রমণের জায়গা কম, এমনটা নয়। সমস্যা হলো, একই সময় একই জায়গায় অতিরিক্ত পর্যটক জড়ো হওয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক শ্যানন ক্লার্ক বলেন, ‘আমরা ভোর ৫টায় কিয়োটোর বিখ্যাত ফুশিমি ইনারি মন্দিরে গিয়েছিলাম। যাওয়ার পথে ভিড় কম ছিল। কিন্তু ফেরার সময় ঢল নামল পর্যটকের। হাঁটতেও খুব কষ্ট হচ্ছিল।’

মহামারির পর ভ্রমণের ঢল

মহামারির পর অনেকের ভ্রমণে আগ্রহ বেড়েছে। বিমান ভাড়া মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে হওয়ায় এশিয়ার পর্যটন আবার চাঙা হয়ে উঠেছে। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় পর্যটক বেড়েছে ২০ শতাংশ। ভিয়েতনামে বিভিন্ন শহরে এখন মানুষ গিজগিজ করছে। থাইল্যান্ডে সামান্য পর্যটক কমলেও ফুকেটের জনপ্রিয় জায়গাগুলোয় ভিড় কমছে না। যানজট, পানির সংকট এবং বর্জ্য—সব মিলিয়ে পর্যটনশিল্প চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

প্রকৃতি ও সংস্কৃতি

‘সাউথ ইস্ট এশিয়া ব্যাকপ্যাকার ম্যাগাজিন’-এর সম্পাদক নিকি স্কট বলেন, অতিরিক্ত পর্যটক পরিবেশ ধ্বংস করছে, প্রাকৃতিক সম্পদ শেষ করছে এবং স্থানীয় সংস্কৃতিকে বিকৃত করছে।

এ ক্ষেত্রে দ্বীপ ও সৈকত এলাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। বালিতে পানিসংকট, যানজট, প্লাস্টিকদূষণ এখন প্রতিদিনের ঘটনা। সেখানকার ধানখেত কেটে হোটেল বানানোর ফলে বন্যা আরও বেড়েছে। ফিলিপাইনের বোরাকায়ও একই সমস্যা হয়েছিল ২০১৮ সালে। ছয় মাস দ্বীপটি বন্ধ রেখে পর্যটন সংস্কার করা হয়েছিল।

কিয়োটোর সমস্যা

২০২৪ সালে ৫ কোটি ৬০ লাখ মানুষ কিয়োটো ভ্রমণ করেছে। এই বিশালসংখ্যক পর্যটক সামাল দিতে স্থানীয়দের প্রতিদিনের জীবন পড়েছে সংকটের মুখে। হাঁটার সংকীর্ণ রাস্তা কিংবা গণপরিবহন—সবই জনাকীর্ণ। জাপানের সংবাদমাধ্যম ‘ইওমিউরি শিম্বুন’-এর জরিপে দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ বাসিন্দা অতিরিক্ত পর্যটন বা ওভার ট্যুরিজমে বিরক্ত। এসব কারণে স্থানীয় সরকার নতুন কিছু নিয়ম চালু করেছে। কিয়োটোর গিয়ন এলাকার মহল্লাগুলোর রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে। সেখানে ছবি তুললে রাখা হয়েছে জরিমানার ব্যবস্থা। তবে বড় শহরে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব কঠিন।

সমাধান হলো ভ্রমণ সচেতনতা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কার্যকর সমাধান হলো পর্যটকের সংখ্যা সীমিত করা এবং নির্দিষ্ট এলাকা বন্ধ রাখা। তবে বড় শহরে তা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠছে। গ্যারি বাওয়ারম্যান বলেন, এশিয়ার দেশগুলো পর্যটনকে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির মূল খাত হিসেবে দেখছে। তাই তাদের পক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া অনেক সময় যথেষ্ট কঠিন।

নিকি স্কট পরামর্শ দেন, জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যের বাইরে গিয়ে নতুন গন্তব্যগুলোকে সামনে আনা উচিত। এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলা জরুরি। এমন অনেক জায়গা আছে, যেগুলো প্রচারণার জন্য পিছিয়ে পড়েছে। তাই এককেন্দ্রিক ভ্রমণ পরিকল্পনা থেকে বের হতে হবে।

সূত্র: সিএনএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

পাকিস্তান থেকে এল নিষিদ্ধ পণ্য, বার্ড ফুডের নামে পপিবীজের চালান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত