মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম
চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই এমনই এক জায়গা, যেখানে আছে অনেক প্রাকৃতিক ঝরনা আর বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি। ফলে এই বর্ষাকালে সেখানে না গিয়ে উপায় কি!
আহা রে আহা রে, আবারও পাহাড়ে বলে বেরিয়ে পড়লাম। ঝিরি, জঙ্গল আর পাহাড়ে ট্রেকিং ট্রেইলের কথা এলেই মনের ভেতর ঝিলমিল করে ওঠে। সারা রাত খোশগল্প করতে করতে সকাল ৭টায় পৌঁছাই গন্তব্যে। বারইয়ারহাটে গাইড নিজাম আমাদের স্বাগত জানালেন। আমবাড়িয়া ছোট বাজারের ঝুপড়ি হোটেলে নাশতা সেরে নিই। ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৮টা।
আজ সারা দিনের জন্য দুই পা হবে ভরসা। তাই মাপমতো বাঁশ নিয়ে প্রথমে বোয়ালিয়া ঝরনার দিকে রওনা হলাম। পাহাড়ি পথে আপনার সবচেয়ে কাছের বন্ধু হবে বাঁশ। খুব স্বল্প সময়ে চলে গেলাম বোয়ালিয়া ঝরনার কাছে। সারা দিনে মোট সাতটি ঝরনা দেখার পরিকল্পনা।
বোয়ালিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে যেন সবাই আত্মহারা। অবিরাম ঝরে পড়া পানিতে শুরু হলো জলকেলি। এরপরে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম। তখন দেহমনে শুধুই নিসর্গ। কিছু দূরে পেয়ে গেলাম পালাকাটা কুম। কারও কারও মতে বাউশ্যা ঝরনা। নামে কীই-বা আসে যায়। সৌন্দর্যই মুখ্য বিষয়। রিমঝিম শব্দ আর সৌন্দর্যই হলো ঝরনার অলংকার।
এবার পাহাড়ের ঝিরিপথ ট্রেইল করে যাচ্ছি আন্ধারমানিক ঝরনার দিকে। দুপাশের গাছের ডালপালা এমনভাবে একে অন্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে, যেন দিনের আলো সেখানে মুখ লুকিয়েছে। ভরদুপুরেও মনে হচ্ছে সন্ধ্যা! আন্ধারমানিক ট্রেইলের সেই সৌন্দর্যের বর্ণনা ভাষায় প্রকাশ করা সত্যিই কঠিন। প্রায় ৭০ ফুট ওপর থেকে অবিরাম ধারায় ঝরে পড়া পানিতে শরীর ভিজিয়ে নিই আরও একবার। তারপর রওনা দিই তিন নম্বর ছড়া ঝরনার উদ্দেশে।
বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন ক্যাসকেড ও রোমাঞ্চকর ট্রেইল অতিক্রম করে চলেছি ঝরনার রাজা নোহাতে খুম। উচ্চতা খুব একটা নয়; তবে নোহাতের নিসর্গ অপার। ঝরনার চারপাশে পাথরের ভাঁজে ভাঁজে প্রাকৃতিকভাবে খাঁজ কাটা বেঞ্চের মতো। বেশ কিছুটা সময় নোহাতে খুমের সাহচর্যে থেকে ছুটলাম কলাতলী ঝরনার পথে। যাচ্ছি আর ভাবছি, পথের যে বুনো পরিবেশ, তাতে এবার মনে হয়, আমাদের না আবার টারজানের ভূমিকা পালন করতে হয়! যা ভেবেছি, তা-ই সত্যি। অনেক দিন পর লতাগুল্ম ধরে ঝুলেছি। আমার নাদুসনুদুস দেহটা বরাবরই রনি আর ইউশার সাহায্যে পার পেয়েছে। একটা সময় নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের এমন ঝিরিপথ এল, যা ছিল অকল্পনীয়। হাঁটু পর্যন্ত দেবে যাওয়া কাদামাটি। গা ছমছম করা নৈঃশব্দ্যের প্রকৃতি, কালো চিংড়ির ছোটাছুটি, ডুমুরের বুনো গন্ধ, নাম না জানা বাহারি রঙের ফুলের সৌরভ! আরও অনেক কিছু দেখতে দেখতে কানে ভেসে আসে রিমঝিম শব্দ। অনেকটা পথ হাঁটায় সবাই যখন কিছুটা ক্লান্ত, তখন ঝিরির পানিতে শুয়ে-বসে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়ে আবারও হাঁটা শুরু। অল্প সময় পরেই দেখা মেলে রূপসী কন্যার!
ভিন্ন পরিবেশে এক অন্য রকম সৌন্দর্যের কলাতলী ঝরনা। কাপ পাহাড় থেকে প্রায় ১০০ ফুট ওপর থেকে সরাসরি পড়ছে ঝরনার পানি। প্রতিটি ঝরনাই তার নিজস্ব রূপে উজ্জ্বল। স্বচক্ষে না দেখা পর্যন্ত এর রূপ বর্ণনা করা কঠিন।
স্বভাবসুলভ অভ্যাস অনুযায়ী এবার একটু ঝুঁকি নিয়ে আরেকটু ওপরে উঠে মনমাতানো কলাতলী ঝরনার পানিতে মেতে উঠি আনন্দে। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, গড়িয়ে নয়, সরাসরি পাহাড় থেকে পড়ে পানি। বাড়ির শাওয়ার থেকে যেমন পানি পড়ে, ঠিক তেমনি। ঝরনার পানিতে আছে এক দুর্নিবার আকর্ষণ। আপনি যতই ভিজবেন, স্বাদ মিটবে না।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ৬টি ঝরনায় অবগাহনের পরও যেন আমাদের তৃপ্তি মিটল না। অন্ধকার নেমে আসায় কেম্বাতলী ঝরনা দেখার মিশন বাদ রেখে ফেরার পথ ধরতে হলো আমাদের। তবে ফিরছি বৈবাঙ্গা পাহাড় দিয়ে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা আনুমানিক ১ হাজার ফুট। দেহকে জোঁকের কাছে সমর্পণ করে আমরা হাঁটছি পাহাড়ি জঙ্গল পথ ধরে। কোথাও কোথাও এতটা ঘন জঙ্গল আর খাড়া পথ যে পা পিছলে গেলেই শেষনিশ্বাস ত্যাগ করতে হতে পারে। এর মধ্যে আবার সারা দিন থেমে থেমে চলছে বৃষ্টি। আপনারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, কেমন পিচ্ছিল পথ।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো পরিবহনে মিরসরাই যেতে হবে। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আমবাড়িয়া ব্র্যাক পোলট্রি। এর পাশেই ঝুপড়ি হোটেলে খুঁজলে পাবেন গাইড। তাদের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন মাত্র ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার বিনিময়ে। গাইড নিয়ে যাওয়া ভালো। রাতের বাসে চড়ে সকালে মিরসরাই নেমে সারা দিন ঘুরে আবার রাতের বাসেই ফিরতে পারবেন।
খাওয়াদাওয়া
খাওয়াদাওয়ার সেখানে তেমন ভালো রেস্টুরেন্ট নেই। তাই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার এবং পানি রাখবেন। রাত্রি যাপন করতে চাইলে বারইয়ারহাট এলাকায় সাধারণ মানের বোর্ডিংয়ে থাকা যাবে।
চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই এমনই এক জায়গা, যেখানে আছে অনেক প্রাকৃতিক ঝরনা আর বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি। ফলে এই বর্ষাকালে সেখানে না গিয়ে উপায় কি!
আহা রে আহা রে, আবারও পাহাড়ে বলে বেরিয়ে পড়লাম। ঝিরি, জঙ্গল আর পাহাড়ে ট্রেকিং ট্রেইলের কথা এলেই মনের ভেতর ঝিলমিল করে ওঠে। সারা রাত খোশগল্প করতে করতে সকাল ৭টায় পৌঁছাই গন্তব্যে। বারইয়ারহাটে গাইড নিজাম আমাদের স্বাগত জানালেন। আমবাড়িয়া ছোট বাজারের ঝুপড়ি হোটেলে নাশতা সেরে নিই। ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৮টা।
আজ সারা দিনের জন্য দুই পা হবে ভরসা। তাই মাপমতো বাঁশ নিয়ে প্রথমে বোয়ালিয়া ঝরনার দিকে রওনা হলাম। পাহাড়ি পথে আপনার সবচেয়ে কাছের বন্ধু হবে বাঁশ। খুব স্বল্প সময়ে চলে গেলাম বোয়ালিয়া ঝরনার কাছে। সারা দিনে মোট সাতটি ঝরনা দেখার পরিকল্পনা।
বোয়ালিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে যেন সবাই আত্মহারা। অবিরাম ঝরে পড়া পানিতে শুরু হলো জলকেলি। এরপরে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম। তখন দেহমনে শুধুই নিসর্গ। কিছু দূরে পেয়ে গেলাম পালাকাটা কুম। কারও কারও মতে বাউশ্যা ঝরনা। নামে কীই-বা আসে যায়। সৌন্দর্যই মুখ্য বিষয়। রিমঝিম শব্দ আর সৌন্দর্যই হলো ঝরনার অলংকার।
এবার পাহাড়ের ঝিরিপথ ট্রেইল করে যাচ্ছি আন্ধারমানিক ঝরনার দিকে। দুপাশের গাছের ডালপালা এমনভাবে একে অন্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে, যেন দিনের আলো সেখানে মুখ লুকিয়েছে। ভরদুপুরেও মনে হচ্ছে সন্ধ্যা! আন্ধারমানিক ট্রেইলের সেই সৌন্দর্যের বর্ণনা ভাষায় প্রকাশ করা সত্যিই কঠিন। প্রায় ৭০ ফুট ওপর থেকে অবিরাম ধারায় ঝরে পড়া পানিতে শরীর ভিজিয়ে নিই আরও একবার। তারপর রওনা দিই তিন নম্বর ছড়া ঝরনার উদ্দেশে।
বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন ক্যাসকেড ও রোমাঞ্চকর ট্রেইল অতিক্রম করে চলেছি ঝরনার রাজা নোহাতে খুম। উচ্চতা খুব একটা নয়; তবে নোহাতের নিসর্গ অপার। ঝরনার চারপাশে পাথরের ভাঁজে ভাঁজে প্রাকৃতিকভাবে খাঁজ কাটা বেঞ্চের মতো। বেশ কিছুটা সময় নোহাতে খুমের সাহচর্যে থেকে ছুটলাম কলাতলী ঝরনার পথে। যাচ্ছি আর ভাবছি, পথের যে বুনো পরিবেশ, তাতে এবার মনে হয়, আমাদের না আবার টারজানের ভূমিকা পালন করতে হয়! যা ভেবেছি, তা-ই সত্যি। অনেক দিন পর লতাগুল্ম ধরে ঝুলেছি। আমার নাদুসনুদুস দেহটা বরাবরই রনি আর ইউশার সাহায্যে পার পেয়েছে। একটা সময় নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের এমন ঝিরিপথ এল, যা ছিল অকল্পনীয়। হাঁটু পর্যন্ত দেবে যাওয়া কাদামাটি। গা ছমছম করা নৈঃশব্দ্যের প্রকৃতি, কালো চিংড়ির ছোটাছুটি, ডুমুরের বুনো গন্ধ, নাম না জানা বাহারি রঙের ফুলের সৌরভ! আরও অনেক কিছু দেখতে দেখতে কানে ভেসে আসে রিমঝিম শব্দ। অনেকটা পথ হাঁটায় সবাই যখন কিছুটা ক্লান্ত, তখন ঝিরির পানিতে শুয়ে-বসে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়ে আবারও হাঁটা শুরু। অল্প সময় পরেই দেখা মেলে রূপসী কন্যার!
ভিন্ন পরিবেশে এক অন্য রকম সৌন্দর্যের কলাতলী ঝরনা। কাপ পাহাড় থেকে প্রায় ১০০ ফুট ওপর থেকে সরাসরি পড়ছে ঝরনার পানি। প্রতিটি ঝরনাই তার নিজস্ব রূপে উজ্জ্বল। স্বচক্ষে না দেখা পর্যন্ত এর রূপ বর্ণনা করা কঠিন।
স্বভাবসুলভ অভ্যাস অনুযায়ী এবার একটু ঝুঁকি নিয়ে আরেকটু ওপরে উঠে মনমাতানো কলাতলী ঝরনার পানিতে মেতে উঠি আনন্দে। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, গড়িয়ে নয়, সরাসরি পাহাড় থেকে পড়ে পানি। বাড়ির শাওয়ার থেকে যেমন পানি পড়ে, ঠিক তেমনি। ঝরনার পানিতে আছে এক দুর্নিবার আকর্ষণ। আপনি যতই ভিজবেন, স্বাদ মিটবে না।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ৬টি ঝরনায় অবগাহনের পরও যেন আমাদের তৃপ্তি মিটল না। অন্ধকার নেমে আসায় কেম্বাতলী ঝরনা দেখার মিশন বাদ রেখে ফেরার পথ ধরতে হলো আমাদের। তবে ফিরছি বৈবাঙ্গা পাহাড় দিয়ে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা আনুমানিক ১ হাজার ফুট। দেহকে জোঁকের কাছে সমর্পণ করে আমরা হাঁটছি পাহাড়ি জঙ্গল পথ ধরে। কোথাও কোথাও এতটা ঘন জঙ্গল আর খাড়া পথ যে পা পিছলে গেলেই শেষনিশ্বাস ত্যাগ করতে হতে পারে। এর মধ্যে আবার সারা দিন থেমে থেমে চলছে বৃষ্টি। আপনারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, কেমন পিচ্ছিল পথ।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো পরিবহনে মিরসরাই যেতে হবে। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আমবাড়িয়া ব্র্যাক পোলট্রি। এর পাশেই ঝুপড়ি হোটেলে খুঁজলে পাবেন গাইড। তাদের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন মাত্র ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার বিনিময়ে। গাইড নিয়ে যাওয়া ভালো। রাতের বাসে চড়ে সকালে মিরসরাই নেমে সারা দিন ঘুরে আবার রাতের বাসেই ফিরতে পারবেন।
খাওয়াদাওয়া
খাওয়াদাওয়ার সেখানে তেমন ভালো রেস্টুরেন্ট নেই। তাই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার এবং পানি রাখবেন। রাত্রি যাপন করতে চাইলে বারইয়ারহাট এলাকায় সাধারণ মানের বোর্ডিংয়ে থাকা যাবে।
পদ্মফুলের ফেসপ্যাক ব্যবহার করে ত্বকে তাৎক্ষণিক উজ্জ্বলতা পাওয়া যায়। পদ্মের পাপড়ি বাটা ও কাঁচা দুধ মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এ ছাড়া ত্বকের ব্রণ সারাতে পদ্মফুলের জুড়ি নেই।
২ ঘণ্টা আগেতাই হাই গ্রামের বাসিন্দারা ২২ বছর ধরে একসঙ্গে তিন বেলা খাওয়াদাওয়া করে। ২০১৪ সালে ভিয়েতনামের থাই গুয়েন প্রদেশ সরকার এই গ্রামকে আনুষ্ঠানিক পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণা করে। ২০২২ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা তাই হাই-কে বিশ্বের অন্যতম সেরা পর্যটন গ্রামের মর্যাদা দেয়।
১৭ ঘণ্টা আগেআমরা সবাই কখনো না কখনো রেগে যাই। কারও ওপর, নিজের ওপর, পরিস্থিতির ওপর, কিংবা কখনো এমনকি অজানা এক শূন্যতার ওপরও। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষ কেন রেগে যায়? রাগ কি কেবলই একটি আবেগ, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে থাকে বহুস্তর বিশ্লেষণ, অতীত অভিজ্ঞতা, অসহায়ত্ব, অপূর্ণতা এবং একধরনের মানসিক প্রতিক্রিয়া?
১ দিন আগেঅনেকে কাঁকড়া খেতে ভালোবাসেন। তবে যাঁরা এই প্রথম বাজার থেকে কাঁকড়া কিনে এনেছেন রাঁধবেন বলে, তাঁদের জন্য কাঁকড়া ভুনার রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী ওমাম রায়হান।
২ দিন আগে