শাহ মো. সুলতান
‘পর্যটনের আনন্দে, তুলসীমালার সুগন্ধে’ —এই স্লোগানে চেনা যায় সীমান্ত জেলা শেরপুর। তুলসীমালা ধান আর ছানার পায়েসের জন্যই শুধু নয়, এই জেলা পরিচিত প্রকৃতি আর ইতিহাসের অংশ হিসেবে। এক দিনের ট্যুরে ঘুরে আসতে পারেন এই জেলায়। রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার দূরত্ব এই জেলার। শীত শেষ হওয়ার এই সময় শেরপুরে যেতে পারেন। খুব বেশি শীত কিংবা গরম না থাকায় ঘুরে আনন্দ পাবেন।
মধ্যরাত পেরিয়ে যেতে বসেছে। ঘড়িতে তখন রাত দেড়টা। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ঝিনাইগাতী এক্সপ্রেস বাসে চেপে রওনা দিলাম শেরপুরের উদ্দেশে। ভোর ৫টার দিকে ঝিনাইগাতী বাজারে নামলাম। স্থানীয় একটি হোটেলে নাশতা সেরে নিলাম সারা দিন ঘোরাঘুরির শক্তি অর্জনের জন্য।
আমাদের প্রথম গন্তব্য নাকুগাঁও স্থলবন্দর। ঝিনাইগাতী বাজার থেকে অটোরিকশা ভাড়া করে নলকুড়া হয়ে নাকুগাঁও যাওয়ার পরিকল্পনা বদল করতে হলো। নন্নী বাজার হয়ে নাকুগাঁও রওনা দিলাম। পথিমধ্যে বারোমারী মিশন থাকলেও সংগত কারণে এর ভেতর প্রবেশ করা সম্ভব হলো না। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নাকুগাঁও স্থলবন্দরে পৌঁছালাম। আশ্চর্যের বিষয়, আমাদের আগেই আরও কয়েকজন দর্শনার্থী পৌঁছে ছবি তুলছেন। এই সীমান্তের শেষ প্রান্তে ছোট একটি চায়ের দোকানে বিশেষ একধরনের চা পান করলাম। এই চায়ে বেলের গুঁড়া ব্যবহার করা হয় বলে স্বাদে ভিন্নমাত্রা যোগ করে।
সীমান্ত এলাকায় খানিকটা সময় কাটানোর পর প্রথমে অটোরিকশা এবং পরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নালিতাবাড়ী উপজেলা হয়ে শেরপুর শহরে পৌঁছে গেলাম। এই শহরে আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল শতবর্ষী জি কে পাইলট উচ্চবিদ্যালয়। শেরপুর জেলার জমিদার গোবিন্দ কুমার চৌধুরী ১৯১৯ সালে নিজের পছন্দের নকশা এঁকে পুরো বিদ্যালয়টি নির্মাণ করেন। তাই তাঁর নামেই এর নামকরণ করা হয়। ব্রিটিশ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যে এর যেকোনো দিক থেকে তাকালেই নির্মাণশৈলী একই রকম দেখা যায়।
শুক্রবার আমরা শেরপুর সদর মডেল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করি। এই মসজিদে নারীদের নামাজ আদায়ের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা।
দুপুরের খাবার খাওয়া হলো হোটেলে। এই হোটেলের গরুর কালা ভুনা বেশ ভালো দামে আর মানে। খানিক শক্তি জুগিয়ে নিয়ে বেরিয়ে গেলাম এই জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান তিন আনি জমিদারবাড়ি দেখতে। জমিদার সত্যেন্দ্র মোহন চৌধুরী ও জ্ঞানেন্দ্র মোহন চৌধুরীর বাড়ি এটি। বাড়ির ভেতরে মন্দিরের সুপ্রশস্ত বেদি, প্রবেশদ্বারের দুই প্রান্তে অলংকৃত স্তম্ভ এবং কার্নিশের মোটিফও নজর কাড়ে। এর চমৎকার নকশা করা স্তম্ভগুলো এখনো জমিদারি আমলের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। এটি গ্রিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। বাড়িগুলোর দেয়ালে আছে চুন-সুরকির পলেস্তারা। জমিদারবাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব কোণে আছে রংমহল।
এই দালানের লতাপাতা ও ফুলেল নকশা জমিদারি গাম্ভীর্য ও নান্দনিকতা প্রকাশ করে চলেছে।
সূর্য তখন হেলে পড়েছে পশ্চিম দিকে। বেলা তিনটা। এ সময় আমরা উপস্থিত হলাম প্রায় আড়াই শ বছরের মাই সাহেবা জামে মসজিদের সামনে। মসজিদটির সংস্কার করা হয়েছে। তারপরও এর নির্মাণশৈলীতে ঐতিহ্যের ছাপ স্পষ্ট। এই মসজিদের দুই পাশের উঁচু মিনার শেরপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেখা যায়। মসজিদে প্রবেশের জন্য রয়েছে বিশাল ও দৃষ্টিনন্দন দুটি দরজা। তিনতলা এই মসজিদ শেরপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এখানে প্রায় ৯ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
শেরপুরের খাবারদাবার
ছানার পায়েস, গুড়ের সন্দেশ, মালাই চপ, মালাইকারি, দই ও তুলসীমালা চালের জন্য বিখ্যাত শেরপুর। এসব দিয়ে তৈরি খাবার পাওয়া যাবে যেকোনো জায়গায়। চারু সুইটস, রাজবল্লভ মিষ্টান্ন ভান্ডার, নন্দগোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডার, প্রেমানন্দ গ্র্যান্ড সন্স—এসব দোকানে ভালো মিষ্টি পাওয়া যায়। আর তুলসীমালা চাল শহরের নয়আনি বাজারের চালের বিভিন্ন দোকান থেকে সংগ্রহ করা যায়।
‘পর্যটনের আনন্দে, তুলসীমালার সুগন্ধে’ —এই স্লোগানে চেনা যায় সীমান্ত জেলা শেরপুর। তুলসীমালা ধান আর ছানার পায়েসের জন্যই শুধু নয়, এই জেলা পরিচিত প্রকৃতি আর ইতিহাসের অংশ হিসেবে। এক দিনের ট্যুরে ঘুরে আসতে পারেন এই জেলায়। রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার দূরত্ব এই জেলার। শীত শেষ হওয়ার এই সময় শেরপুরে যেতে পারেন। খুব বেশি শীত কিংবা গরম না থাকায় ঘুরে আনন্দ পাবেন।
মধ্যরাত পেরিয়ে যেতে বসেছে। ঘড়িতে তখন রাত দেড়টা। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ঝিনাইগাতী এক্সপ্রেস বাসে চেপে রওনা দিলাম শেরপুরের উদ্দেশে। ভোর ৫টার দিকে ঝিনাইগাতী বাজারে নামলাম। স্থানীয় একটি হোটেলে নাশতা সেরে নিলাম সারা দিন ঘোরাঘুরির শক্তি অর্জনের জন্য।
আমাদের প্রথম গন্তব্য নাকুগাঁও স্থলবন্দর। ঝিনাইগাতী বাজার থেকে অটোরিকশা ভাড়া করে নলকুড়া হয়ে নাকুগাঁও যাওয়ার পরিকল্পনা বদল করতে হলো। নন্নী বাজার হয়ে নাকুগাঁও রওনা দিলাম। পথিমধ্যে বারোমারী মিশন থাকলেও সংগত কারণে এর ভেতর প্রবেশ করা সম্ভব হলো না। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নাকুগাঁও স্থলবন্দরে পৌঁছালাম। আশ্চর্যের বিষয়, আমাদের আগেই আরও কয়েকজন দর্শনার্থী পৌঁছে ছবি তুলছেন। এই সীমান্তের শেষ প্রান্তে ছোট একটি চায়ের দোকানে বিশেষ একধরনের চা পান করলাম। এই চায়ে বেলের গুঁড়া ব্যবহার করা হয় বলে স্বাদে ভিন্নমাত্রা যোগ করে।
সীমান্ত এলাকায় খানিকটা সময় কাটানোর পর প্রথমে অটোরিকশা এবং পরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নালিতাবাড়ী উপজেলা হয়ে শেরপুর শহরে পৌঁছে গেলাম। এই শহরে আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল শতবর্ষী জি কে পাইলট উচ্চবিদ্যালয়। শেরপুর জেলার জমিদার গোবিন্দ কুমার চৌধুরী ১৯১৯ সালে নিজের পছন্দের নকশা এঁকে পুরো বিদ্যালয়টি নির্মাণ করেন। তাই তাঁর নামেই এর নামকরণ করা হয়। ব্রিটিশ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যে এর যেকোনো দিক থেকে তাকালেই নির্মাণশৈলী একই রকম দেখা যায়।
শুক্রবার আমরা শেরপুর সদর মডেল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করি। এই মসজিদে নারীদের নামাজ আদায়ের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা।
দুপুরের খাবার খাওয়া হলো হোটেলে। এই হোটেলের গরুর কালা ভুনা বেশ ভালো দামে আর মানে। খানিক শক্তি জুগিয়ে নিয়ে বেরিয়ে গেলাম এই জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান তিন আনি জমিদারবাড়ি দেখতে। জমিদার সত্যেন্দ্র মোহন চৌধুরী ও জ্ঞানেন্দ্র মোহন চৌধুরীর বাড়ি এটি। বাড়ির ভেতরে মন্দিরের সুপ্রশস্ত বেদি, প্রবেশদ্বারের দুই প্রান্তে অলংকৃত স্তম্ভ এবং কার্নিশের মোটিফও নজর কাড়ে। এর চমৎকার নকশা করা স্তম্ভগুলো এখনো জমিদারি আমলের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। এটি গ্রিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। বাড়িগুলোর দেয়ালে আছে চুন-সুরকির পলেস্তারা। জমিদারবাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব কোণে আছে রংমহল।
এই দালানের লতাপাতা ও ফুলেল নকশা জমিদারি গাম্ভীর্য ও নান্দনিকতা প্রকাশ করে চলেছে।
সূর্য তখন হেলে পড়েছে পশ্চিম দিকে। বেলা তিনটা। এ সময় আমরা উপস্থিত হলাম প্রায় আড়াই শ বছরের মাই সাহেবা জামে মসজিদের সামনে। মসজিদটির সংস্কার করা হয়েছে। তারপরও এর নির্মাণশৈলীতে ঐতিহ্যের ছাপ স্পষ্ট। এই মসজিদের দুই পাশের উঁচু মিনার শেরপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেখা যায়। মসজিদে প্রবেশের জন্য রয়েছে বিশাল ও দৃষ্টিনন্দন দুটি দরজা। তিনতলা এই মসজিদ শেরপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এখানে প্রায় ৯ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
শেরপুরের খাবারদাবার
ছানার পায়েস, গুড়ের সন্দেশ, মালাই চপ, মালাইকারি, দই ও তুলসীমালা চালের জন্য বিখ্যাত শেরপুর। এসব দিয়ে তৈরি খাবার পাওয়া যাবে যেকোনো জায়গায়। চারু সুইটস, রাজবল্লভ মিষ্টান্ন ভান্ডার, নন্দগোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডার, প্রেমানন্দ গ্র্যান্ড সন্স—এসব দোকানে ভালো মিষ্টি পাওয়া যায়। আর তুলসীমালা চাল শহরের নয়আনি বাজারের চালের বিভিন্ন দোকান থেকে সংগ্রহ করা যায়।
ত্বকের বিশেষ যত্নে হোক বা না হোক, কমবেশি সবাই রোজ ত্বকে দুই বেলা ব্যবহার করেন, এমন একটি প্রসাধনী হচ্ছে ফেসওয়াশ। সাধারণত এটি খুব ভেবেচিন্তে বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না মেনে পছন্দ হলেই কিনে ফেলি। কিন্তু কাজ হয় কি না, সেদিকে অনেক সময় খেয়ালও করি না। কিন্তু নালিশ করেই যাই, অমুক ব্র্যান্ডের ফেসওয়াশ...
৮ ঘণ্টা আগেকফি পান করতে গিয়ে জামাকাপড়ে পড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। কখনোবা অসাবধানতাবশত কার্পেট বা মেঝেতেও পড়ে যায়। কফির দাগ তুলতে বেগ পেতে হয়। সঠিক নিয়ম জানা থাকলে কঠিন দাগ নিমেষে দূর করা সম্ভব।
৯ ঘণ্টা আগেএই রোদ, এই বৃষ্টি। এই আবহাওয়ায় সব বয়সী মানুষ নানা ধরনের ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অতিরিক্ত গরমে, বিশেষ করে স্কুলগামী শিশুদের ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়, পাশাপাশি এই সময় ওদের মেজাজও খিটমিটে হয়ে থাকে। তাই স্কুলগামী শিশুদের খাবার, জীবনযাপন এবং তাদের খিটমিটে মেজাজ ঠিক রাখার জন্য অভিভাবকদের...
১০ ঘণ্টা আগেরাজা হেনরি ২-এর মনে হয়েছিল, পাই ও পেস্ট্রি খেলে তাঁর সৈন্যরা সব অলস হয়ে যাবে। সে তো আর হতে দেওয়া যায় না। তাই তিনি এ দুটি খাবার বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন। সেটাই হয়ে গেল আইন। ১২ শতকের এই আইনের নাম ‘পাই অ্যান্ড পেস্ট্রি অ্যাক্ট’। এই আইনে বলা হয়েছিল, রোববার ছাড়া অন্য দিন পাই বা পেস্ট্রি বিক্রি
১০ ঘণ্টা আগে