Ajker Patrika

রেমা-কালেঙ্গার পথে

সুমন্ত গুপ্ত 
রেমা-কালেঙ্গার পথে

ঠিক সকাল ৯টায় আমাদের গাড়ি এসে হাজির। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না, কোথায় যাওয়া যায়। ড্রাইভারের কাছে নিদান চাইলাম। তিনি বললেন, রেমা-কালেঙ্গা ফরেস্ট।

রেমা-কালেঙ্গা নাম শুনে নিজের ওপর রাগ হলো, কেন এই নাম এতক্ষণ মনে করতে পারছিলাম না, সেটা ভেবে। আমি নিজেও যাইনি সেখানে। সবাই খুব আনন্দিত; কিন্তু কেউ রাস্তা চেনে না। শেষমেশ ইন্টারনেটের ওপর ভরসা করে রওনা দিলাম।

বৃষ্টিতে বেহাল রাস্তা। সেই পথে চলতে চলতে আমাদের গাড়ির অবস্থাও নাজুক। বহু নাটকীয়তার পর গাড়ি ছেড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রেমা-কালেঙ্গার উপকণ্ঠে পৌঁছানো গেল অবশেষে। নেমে শুরু হলো হাঁটা। শেষ পর্যন্ত দেখা মিলল রেমা-কালেঙ্গার। ঘড়িতে তখন বেলা ৩টা বাজে। গাইড আমিনের সঙ্গে দেখা হলো।

প্রকৃতি এখানে উজাড় করে সব দিয়েছে। এখন শুধুই সৌন্দর্য উপভোগ। বনের ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ল চশমাপরা হনুমান। এই অভয়ারণ্যে ৬৩৮ প্রজাতির উদ্ভিদ, গাছপালা ও লতাপাতা আছে। এখানকার উল্লেখযোগ্য উদ্ভিদগুলোর মধ্যে রয়েছে সেগুন, কাঁকড়, হারগোজা, হরীতকী, বহেড়া, জাম, ডুমুর, কাঁঠাল, রাতা ইত্যাদি। আছে ৭ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ১৬৭ প্রজাতির পাখি। উল্লেখযোগ্য পাখিগুলো হচ্ছে ভীমরাজ, পাহাড়ি ময়না, কাও ধনেশ, বনমোরগ ইত্যাদি। ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে এখানে।

গাছে ঘুরছে হনুমান। ছবি: লেখকছবির মতো সুন্দর এ বন দেখার জন্য আছে তিনটি ট্রেইল বা পথ। ৩০ মিনিট, ১ ঘণ্টা ও ৩ ঘণ্টার ট্রেইলের যেকোনো একটি বেছে নেওয়া যায়। এক ঘণ্টার ট্রেইল ধরে আমরা এগিয়ে চললাম। প্রথমে দেখা পেলাম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ক্যাম্প। কিছু দূর যাওয়ার পর দেখা গেল বীর উত্তম আবদুল মান্নানের কবর। তিনি এখানে সম্মুখযুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন।

রেমা-কালেঙ্গা যাওয়ার পথ। ছবি: লেখকআমরা এগিয়ে যাচ্ছি, আবার কোথাও নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে আছি নতুন কিছু দেখার আশায়। বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলকাকলিতে যে কারও মন ভরে যাবে রেমা-কালেঙ্গায়। আমরা গভীর বন দিয়ে হাঁটছি। কোথাও প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। গাইড জানালেন, রেমা, কালেঙ্গা আর ছনবাড়ির ১ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জঙ্গল নিয়ে রেমা-কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য। ১৯৮১ সালে এই রিজার্ভ ফরেস্টের ১ হাজার ৯৫ হেক্টর এলাকাকে বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৬ সালে ফরেস্টের আরও কিছু জমি বৃদ্ধি করে মোট ১ হাজার ৭৯৫ হেক্টর করা হয়। এই বনে ত্রিপুরা, সাঁওতাল এবং ওঁরাও সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে।

বনমুরগির ডিম। ছবি: লেখকগভীর বনে গিয়ে দেখা গেল বনমুরগির ডিম। হঠাৎ গাইড মুখে আঙুল দিয়ে আমাদের চুপ থাকতে বললেন। একটা ঝাঁজালো গন্ধ নাকে লাগছে। মনে হচ্ছে, কোনো বিষধর সাপ শ্বাস ছাড়ছে। আমরা এদিক-ওদিক তাকালাম। এক অদ্ভুত সৌন্দর্যের মাঝে আমরা  এগিয়ে চলছি।

ট্রেইলের শেষ প্রান্তে দেখা গেল অসম্ভব সুন্দর একটি লেক। বন্য প্রাণীদের পানির চাহিদা মেটাতে এটি তৈরি করা হয়েছে। লেকের পাশে রয়েছে একটা ওয়াচ টাওয়ার। ইচ্ছা করলে উঠে যাওয়া যায়। ওপর থেকে পুরো বনভূমি দেখার মজাই আলাদা।

যাবেন কীভাবে
রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্যের অবস্থান হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায়। দুইভাবে যাওয়া যায় সেখানে। ঢাকা থেকে সিলেটগামী বাস কিংবা ট্রেনে শায়েস্তাগঞ্জ পর্যন্ত; সেখান থেকে অটোরিকশায় কালেঙ্গা। বাসভাড়া ২৫৯ থেকে ৪০০ টাকা। শায়েস্তাগঞ্জে থামে আন্তনগর ট্রেন উপবন এক্সপ্রেস। বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ১০টায় ছাড়ে এই ট্রেন। ভাড়া ১৭০ থেকে ৬৭৩ টাকা। শায়েস্তাগঞ্জ থেকে কালেঙ্গার ট্যাক্সিভাড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। কালেঙ্গা যাওয়ার অন্য পথটি হলো ঢাকা থেকে বাস কিংবা ট্রেনে শ্রীমঙ্গল। সেখান থেকে জিপে কালেঙ্গা। শ্রীমঙ্গল থেকে গেলে জঙ্গলের ভেতরের দীর্ঘ পথটি চলতে ভালো লাগবে সবার। রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ভ্রমণে অবশ্যই সঙ্গে গাইড নিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুরু থেকে শেষ: হংকংয়ের মাটিতে বাংলাদেশের ড্র

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

সখীপুরে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

অব্যাহতি চাওয়ার পর মাউশি মহাপরিচালক আজাদ খানকে ওএসডি

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট আয়োজন করেছে ‘দ্য লোকাল কালিনারি হেরিটেজ অব বাংলাদেশ’

ফিচার ডেস্ক
ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট আয়োজন করেছে ‘দ্য লোকাল কালিনারি হেরিটেজ অব বাংলাদেশ’

দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খাবারের বৈচিত্র্য ও সমৃদ্ধির স্বাক্ষর নিয়ে ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট আয়োজন করেছে এক বিশেষ অনুষ্ঠান। নাম ‘দ্য লোকাল কালিনারি হেরিটেজ অব বাংলাদেশ’। এই আয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অপ্রচলিত এবং হারিয়ে যাওয়া খাবার তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, যাতে সবার সামনে বাংলাদেশের প্রাচীন খাদ্য ঐতিহ্য পুনরায় তুলে ধরা যায়। এ আয়োজন ১৫ অক্টোবর শুরু হয়ে চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। রিজেন্সির গ্র্যান্ডডিওস রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অতিথিদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই আয়োজন।

এই আয়োজন ঢাকা রিজেন্সির নিজস্ব উদ্যোগ। এর মাধ্যমে স্থানীয় খাবারের বৈচিত্র্য ও স্বাদ গ্রহণের সুযোগ পাবেন অতিথিরা। এসব খাবারের মধ্যে থাকবে পুরান ঢাকার বাখরখানি, চট্টগ্রামের মেজবান মাংস, রাজশাহীর চাপাটি, খুলনার চুইঝাল, কক্সবাজারের লইট্টা ভাজি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কালাইয়ের রুটি, চাটগাঁওয়ের কালা ভুনা, সিলেটের সাতকড়া মাংসসহ আরও নানা রকম মুখরোচক খাবার।

মিষ্টি মণ্ডার মধ্যে আছে নাটোরের কাঁচাগোল্লা; নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি; বরগুনার চুইয়া পিঠা, চ্যাবা পিঠা, মুইট্টা পিঠা; বগুড়ার দই; টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ীর চমচম; কুমিল্লার রসমালাই; মেহেরপুরের রস কদম্ব। এ ছাড়া থাকবে হরেক রকমের ভর্তা।

ঢাকা রিজেন্সির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর (কারেন্ট ইনচার্জ) শাহিদ হামিদ এফ আই এইচ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য শুধু একটি খাবারের উৎসব আয়োজন করা নয়, বরং বাংলাদেশের খাবারের ঐতিহ্যকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা। আশা করি, এই আয়োজনের মাধ্যমে দেশি ও বিদেশি অতিথিরা বাংলাদেশের খাবারের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য সম্পর্কে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন।’

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টায় কেক কাটার মাধ্যমে জমজমাট এই আয়োজনের উদ্বোধন করবেন বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী। আরও উপস্থিত থাকবেন ঢাকা রিজেন্সির নির্বাহী পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (কারেন্ট ইনচার্জ) শাহিদ হামিদ এফআইএইচসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, বিদেশি অতিথি ও ফুড ক্রিটিকস, বিভিন্ন দূতাবাস ও এয়ারলাইনসের অতিথিরা।

ঐতিহ্যবাহী নানা খাবারে সাজানো এই বিশাল আয়োজনে খাবার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে জনপ্রতি ৫ হাজার ৫৫৫ টাকা। এ ছাড়া অতিথিদের জন্য থাকবে র‍্যাফল ড্র। সিলেক্টেড কার্ড হোল্ডার পাবেন বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি। ঢাকা রিজেন্সির লয়্যালটি প্রোগ্রাম প্রিমিয়ার ক্লাব মেম্বাররা বুফে ডিনারে পাবেন অগ্রাধিকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুরু থেকে শেষ: হংকংয়ের মাটিতে বাংলাদেশের ড্র

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

সখীপুরে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

অব্যাহতি চাওয়ার পর মাউশি মহাপরিচালক আজাদ খানকে ওএসডি

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিকেল বেলার জিবে জল আনা স্ন্যাকস টক-ঝাল-মিষ্টি পেয়ারা মাখা

ফিচার ডেস্ক
ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা
ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা

বিকেল বেলা ছাদে ফুরফুরে হাওয়া খেতে যাচ্ছেন? খালি হাতে যাবেন নাকি? সঙ্গে জিবে জল আনা টক-ঝাল-মিষ্টি কিছু নেবেন না? এখন পেয়ারার মৌসুম। এক বাটি মসলামাখা পেয়ারা সঙ্গে নিয়ে ছাদে বসে খান। গল্পও জমবে, সময়টাও ভালো কাটবে। আপনাদের জন্য টক-ঝাল-মিষ্টি পেয়ারা মাখার রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।

উপকরণ

পেয়ারা ৩টা, লেবুর রস ১ চা-চামচ, বিট লবণ আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, শুকনো মরিচ ভাজাগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, কাসুন্দি ১ টেবিল চামচ ও চিনি স্বাদমতো।

প্রণালি

পেয়ারা ধুয়ে ছোট ছোট টুকরা করে কেটে নিন। এবার একটা বাটিতে সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে নিন। পরে পরিবেশন করুন। তৈরি হয়ে গেল পেয়ারার টক-ঝাল-মিষ্টি ভর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুরু থেকে শেষ: হংকংয়ের মাটিতে বাংলাদেশের ড্র

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

সখীপুরে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

অব্যাহতি চাওয়ার পর মাউশি মহাপরিচালক আজাদ খানকে ওএসডি

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যে ৫ কারণে নিয়মিত ব্যায়াম করার পরও কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছেন না

ফিচার ডেস্ক
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

জিমে গিয়ে নতুন ওয়ার্কআউট সেশন নিচ্ছেন, কিন্তু দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করেও কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছেন না। এমন হলে হতাশ তো হতেই হয়। বাড়তি ওজন ঝরানো ও শক্তি বৃদ্ধির জন্য সুপরিকল্পিত ওয়ার্কআউট পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ। তবে ফিটনেসের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যায়ামই একমাত্র উপায় নয়; ব্যায়ামের সঙ্গে জীবনযাপনের আরও কিছু বিষয় যদি যুক্ত না করা যায় বা বাদ দেওয়া না যায়, তাহলে ফিট থাকা সম্ভব নয়। জেনে নিন যেসব কারণে নিয়মিত ব্যায়াম করার পরও কাঙ্ক্ষিত ফিটনেসের লক্ষ্য অর্জন করতে পারছেন না।

মানসিক চাপ ও ভালো ঘুম না হওয়া

সব সময় মানসিক চাপে যাঁরা থাকেন, তাঁদের কাজকর্ম, ব্যক্তিগত জীবন, স্বাস্থ্য তথা সামগ্রিক জীবনযাপনে ছন্দপতন ঘটে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের শারীরিকভাবে ফিট থাকার অন্তরায়। স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে বাড়তি চর্বি জমা হতে পারে। বিশেষ করে পেটের উপরিভাগের মেদের জন্য এই কর্টিসল অনেকাংশে দায়ী। শুধু তা-ই নয়, অতিমাত্রায় নিঃসরণের ফলে পেশির ক্ষতি বা ক্লান্তি কেটে গিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে এই হরমোন।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

শক্তি বৃদ্ধি এবং শরীরের চর্বি পোড়ার জন্য পেশির ক্লান্তি দূর করা অত্যাবশ্যক। আর পেশির পুনরুদ্ধারে পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। কিন্তু যদি আপনি তীব্র মানিসক চাপে থাকেন, তাহলে আপনার ঘুম ভালো না-ও হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ কর্টিসলের মাত্রা এবং কম ঘুমের মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে। প্রতি রাতে যদি পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, তাহলে জিমে আপনার কঠোর পরিশ্রম পণ্ড হয়ে যেতে পারে। তাই দৈনন্দিন রুটিনে ব্যায়ামকে যেমন অন্তর্ভুক্ত করেছেন, তেমনি আপনার মানসিক সুস্থতার জন্য উপকারী নয়—এমন কার্যকলাপ ছেড়ে দিন। তাহলে ধীরে ধীরে শরীরের পরিবর্তন চোখে পড়বে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

পেশি বৃদ্ধির পরিবর্তে চর্বি ঝরানোয় মনোযোগ

আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন, কার্ডিও এবং শক্তি প্রশিক্ষণের মিশ্রণ ঘটান; তাহলে আপনার শরীরে পেশি ও চর্বির অনুপাত ঠিক থাকবে। যদি আপনি চর্বি ঝরানোর সময় একই সঙ্গে পেশি বৃদ্ধি করেন; তবে ওজন মেশিনে আপনার ওজনের তারতম্য না-ও চোখে পড়তে পারে। তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। পেশি বৃদ্ধি অনেক সময় ওজন মাপার যন্ত্রে চর্বি হ্রাস হওয়াকে ঠাহর করতে দেয় না। কারণ, পেশি চর্বির চেয়ে ঘন হয়, কিন্তু তা শরীরে চর্বির তুলনায় কম জায়গা নেয়। এ কারণে হয়তো ওজন মাপা যন্ত্রে ওজন আগের মতো দেখালেও আগের তুলনায় জামাকাপড়ে আপনাকে অনেক বেশি ফিট দেখায়।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

ব্যায়াম ছাড়া কায়িক পরিশ্রম করেন

শরীরের শক্তি বৃদ্ধি ও ওজন কমানোর লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আপনার ওয়ার্কআউটের বাইরে আপনি আর কী কী করেন, তা-ও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ফিটনেস ধরে রাখার জন্য। সারা দিন ছোট ছোট নড়াচড়া, যেমন হাঁটা, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করা, খেলাধুলা, নিজের কাজ নিজে করা ইত্যাদি ক্যালরি পোড়াতে সহায়তা করে। হয়তো জিমে প্রতিদিন একটু একটু করে সময় বাড়াচ্ছেন। অন্যদিকে সারা দিন শুয়ে-বসে আছেন; তাহলে কাঙ্ক্ষিত শরীরের মাপে ফেরত আসা সম্ভব হবে। লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা অথবা অফিসে কাজের ফাঁকে ডেস্ক থেকে উঠে হাঁটাহাঁটি করা, ঘর মোছা ইত্যাদির মাধ্যমে আপনার ফিটনেস কসরত আরেকটু এগিয়ে নিতে পারেন।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

লাগাম ছাড়া ডায়েট রুটিন

নতুন জিমে ভর্তি হয়েছেন? তাহলে এর মর্ম আপনি বুঝবেন। দুই ঘণ্টা ব্যায়াম করার পর তীব্র ক্ষুধা অনুভব করা স্বাভাবিক। কারণ, শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্যালরি পোড়াচ্ছে। তখন উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবারের চেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবারকে অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে। তীব্র অনীহার সঙ্গে সেগুলো খেতেও হচ্ছে। অনেকে অল্প খাওয়ার জন্য শরীরের চাহিদা পূরণ না করে খাবারের টেবিল থেকে উঠে যাচ্ছেন। এটা মনে রাখা জরুরি যে অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে তৃপ্তি ও শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য পুষ্টিকর খাবার দিয়ে শরীরকে জ্বালানি দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে বেছে নিতে হবে ফুল প্লেট স্বাস্থ্যকর খাবার। ফল ও শাকসবজির মতো পূর্ণ, উচ্চ প্রোটিন এবং উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার ওপর মনোযোগ দিতে হবে। যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ক্যালরির ঘাটতিতে নজর রাখে। এসব খাবার সময় নিয়ে ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে। ধীরে ধীরে শরীরের পরিবর্তন চোখে পড়বে।

সূত্র: নাইকি ডটকম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুরু থেকে শেষ: হংকংয়ের মাটিতে বাংলাদেশের ড্র

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

সখীপুরে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

অব্যাহতি চাওয়ার পর মাউশি মহাপরিচালক আজাদ খানকে ওএসডি

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিমানযাত্রায় কোন ধরনের জুতা পরবেন না

ফিচার ডেস্ক
বন্ধ জুতা বা ফ্ল্যাট জুতা বিমানযাত্রাকালে অনেক বেশি নিরাপদ। ছবি: পেক্সেলস
বন্ধ জুতা বা ফ্ল্যাট জুতা বিমানযাত্রাকালে অনেক বেশি নিরাপদ। ছবি: পেক্সেলস

তারকাদের এয়ারপোর্ট স্টাইল যতই প্রশংসা করি না কেন, যখন বিমান ভ্রমণের জন্য পোশাক বাছতে হয়, তখন কী পরা উচিত, তা ঠিক করা সব সময় সহজ নয়। যেমন ফ্লিপ ফ্লপ স্যান্ডেল যেকোনো সৈকত ছুটির জন্য অপরিহার্য অনুষঙ্গ। কিন্তু বিমান ভ্রমণের জন্য ফ্লিপ ফ্লপ ধরণেনের জুতা বা স্যান্ডেল পরা উচিত নয়। অনেকে আরামের জন্য এই ধরনের স্যান্ডেল পরে থাকেন। কিন্তু বিমানযাত্রার সময় এটি এড়িয়ে চলায় ভালো। গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত ফ্লিপ-ফ্লপগুলো নিজের ব্যাগে প্যাক করে রাখাই উত্তম। লাস ভেগাসভিত্তিক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ভ্যানজিয়া ম্যাকিয়াস বলেন, ‘ফ্লিপ ফ্লপ ও খোলা পায়ের জুতা আরামদায়ক হতে পারে, তবে বিমানের জন্য এগুলো ভয়াবহ ধারণা।’

সবার আগে নিরাপত্তা

যেকোনো যাত্রায় আমরা সবার আগে নিরাপত্তার কথা ভাবি। আর সে ক্ষেত্রে ফ্লিপ ফ্লপ স্যান্ডেল জোড়া সফরসঙ্গী হলেও যাত্রাপথের সঙ্গী হওয়া থেকে পিছিয়ে যায়। বিমানযাত্রায় এই স্যান্ডেল ব্যবহারের বড় সমস্যাই হলো নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ। ম্যাকিয়াস বলেন, ‘একান্তই যদি জরুরি অবস্থার কারণে বিমান থেকে দ্রুত বের হওয়ার প্রয়োজন হয়, তবে দুর্বল জুতা আপনার গতি কমিয়ে দিতে পারে বা আপনার পা অরক্ষিত রাখতে পারে।’

বিষয়টির সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন ভ্রমণভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘ট্রাভেল+লিজার’-এর পরামর্শদাতা লরা অ্যাসিলিস। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার কারণে, জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে ফ্লিপ ফ্লপগুলো কাজের নয়। এগুলো আপনার গতি কমাতে পারে।’ এ ক্ষেত্রে তিনি বন্ধ জুতা বা ফ্ল্যাট জুতা অনেক বেশি নিরাপদ বলে উল্লেখ করেন। বিমান থেকে দ্রুত বের হওয়ার সময়, ফ্লিপ ফ্লপ স্যান্ডেলের কারণে আপনার পা পিছলে যেতে পারে। ফলে আপনাকে হয় সেগুলো ফেলে যেতে হবে, নয়তো কুড়াতে গিয়ে আপনার গতি কমে যেতে পারে। এ ছাড়া এমন পরিস্থিতিতে অন্যান্য বিপদ থেকে পায়ের আঙুল রক্ষা করতে সেগুলো ঢাকা থাকা জরুরি।

ফ্লিপ ফ্লপ স্যান্ডেল সৈকত ছুটির জন্য সঠিক হলেও বিমানযাত্রাকালে তা না পড়াই ভালো। ছবি: পেক্সেলস
ফ্লিপ ফ্লপ স্যান্ডেল সৈকত ছুটির জন্য সঠিক হলেও বিমানযাত্রাকালে তা না পড়াই ভালো। ছবি: পেক্সেলস

যাত্রাপথে আরাম

নিরাপত্তা উদ্বেগ ছাড়াও এ ক্ষেত্রে আরামের বিষয় রয়েছে। অ্যাসিলিস বলেন, ‘বিমানের কেবিন বেশ ঠান্ডা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ফ্লিপ ফ্লপ জুতা কোনো সুরক্ষা দেবে না।’ পায়ের আঙুল খোলা থাকলে আরও বেশি ঠান্ডা লাগবে। এ ছাড়া যাওয়া-আসার পথে সহযাত্রীদের মাধ্যমে দুর্ঘটনাক্রমে আঘাত লাগার ঝুঁকিও থাকে অনেক সময়। ম্যাকিয়াস বলেন, ‘বিমানের সরু পথে মানুষ অবিরাম একে অপরের পায়ের ওপর পা দিয়ে দেয়।’ এমনকি অনেক সময় পায়ের ওপর দিয়ে নিজেদের ব্যাগ রোল করে নিয়ে যায়। সেটা তারা হয়তো টেরও পায় না। এ ধরনের ঘটনা এমনিতেই বেদনাদায়ক। আর আপনার পায়ে যদি সঠিক সুরক্ষা না থাকে, তবে এটি আরও সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে।

এমন জুতা নির্বাচন করবেন, যেগুলো নিরাপত্তা তল্লাশির সময় সহজে খোলা যায়। ছবি: পেক্সেলস
এমন জুতা নির্বাচন করবেন, যেগুলো নিরাপত্তা তল্লাশির সময় সহজে খোলা যায়। ছবি: পেক্সেলস

শৌচাগারের পরিচ্ছন্নতা

এরপর আসে পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি। অ্যাসিলিস সতর্ক করে বলেন, ‘টয়লেট ব্যবহারের সময় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে পায়ে ময়লা লাগার আশঙ্কা বেশি থাকে।’ ম্যাকিয়াস সরাসরি বলেন, ‘বিমানের মেঝে; বিশেষ করে শৌচাগারগুলো পরিচ্ছন্ন নয়।’

তিনি ব্যাখ্যা করেন, বিমানের বাথরুমগুলো পরিষ্কার রাখা কঠিন এবং মেঝে প্রায়ই ভেজা থাকে। ফ্লিপ ফ্লপে সাধারণত ভালো গ্রিপ থাকে না। পা পূর্ববর্তী যাত্রীর ব্যবহৃত অস্বাস্থ্যকর পৃষ্ঠের সংস্পর্শে আসতে পারে। এ ছাড়া ফ্লিপ ফ্লপ পরা যাত্রীরা ফ্লাইটের সময় সেগুলো খুলে খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি করার পরিকল্পনা করেন, যা খুবই অস্বাস্থ্যকর। বিমানের ভেতরের অংশ পরিষ্কার করার জন্য লোকবল থাকে। তবু আপনার আগে বিপুলসংখ্যক মানুষ সেই সিটে বসে গেছেন। তাই জায়গাটি যতই পরিষ্কার করা হোক, তাতে জীবাণু থেকেই যায়।

বিকল্প

আপনার সুরক্ষা ও আরামকে ঝুঁকিতে ফেলে না, এমন পা ঢাকা জুতা বেছে নিন। মনে রাখতে হবে, এমন জুতা নির্বাচন করবেন, যেগুলো নিরাপত্তা তল্লাশির সময় সহজে খোলা যায়। পাশাপাশি আপনার পা-কে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেয়। স্নিকার্স, লোফার বা ফ্ল্যাট জুতা বিমানে ভ্রমণের জন্য নিরাপত্তা, আরাম ও সুবিধা নিশ্চিত করতে পারে। খোলা পায়ের জুতা সুবিধাজনক হলেও সেগুলো সেরা বিকল্প নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুরু থেকে শেষ: হংকংয়ের মাটিতে বাংলাদেশের ড্র

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

সখীপুরে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

অব্যাহতি চাওয়ার পর মাউশি মহাপরিচালক আজাদ খানকে ওএসডি

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত