মোস্তাফিজ মিঠু, ঢাকা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেতে উড়োজাহাজে চড়তে হবে, এমন কথা প্রচলিত আছে। কিন্তু এর ব্যতিক্রমও ঘটতে দেখা যায় মাঝে মাঝে। তেমন ঘটনাই প্রমাণ করলেন ডেনমার্কের নাগরিক থর পেডারসেন। উড়োজাহাজে না চড়েই পৃথিবীর প্রতিটি দেশ দেখার বাসনা ছিল তাঁর। সে বাসনা পূরণ করতেই ২০১৩ সালে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন থর। উড়োজাহাজে চড়া ছাড়াই ২০৩টি দেশ ভ্রমণ শেষে ২০২৩ সালে ঘরে ফেরেন তিনি। প্রতিটি দেশে তিনি কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা অবস্থান করেছিলেন। জাতিসংঘ ১৯৫টি সার্বভৌম রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিলেও থর পেডারসেন তাঁর তালিকায় কিছু বিতর্কিত অঞ্চলকেও অন্তর্ভুক্ত করেছেন দেশ হিসেবে।
আক্ষেপ ছিল থরের। তিনি মনে করেন, ১০০ বছর দেরিতে জন্ম হয়েছে তাঁর। একটা সময় ছিল, যখন পৃথিবীর ওপর দিয়ে স্যাটেলাইট ছুটে বেড়াত না এবং অনেক কিছুর আবিষ্কার বাকি ছিল। তাঁর মনে হতো, পৃথিবীতে সব বড় অ্যাডভেঞ্চার তাঁর জন্মের আগেই ঘটে গেছে। কিন্তু ২০১৩ সালে তিনি বুঝতে পারেন, বিমানে না চড়ে পৃথিবীর সব দেশ ঘুরে বেড়ানোর কাজটা এখনো বাকি আছে। আর সেই রোমাঞ্চকর কাজটা শেষ করা তাঁর দায়িত্ব।
২০১৩ সালের অক্টোবর মাস। মাত্র চার বছরের পরিকল্পনা নিয়ে থর শুরু করলেন তাঁর রোমাঞ্চকর যাত্রা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সেই অভিযান শেষ হতে সময় লাগে ৩ হাজার ৫১২ দিন। এই দীর্ঘ সময়ে থর কোনো বিমান ব্যবহার করেননি। হেঁটে, গাড়িতে, বাসে, ট্রেনে ও জাহাজে করে পথ পাড়ি দিয়েছেন। এমনকি ৩৭টি কনটেইনার জাহাজেও যাত্রা করেছেন তিনি। সেই যাত্রায় থরের প্রতিদিনের বাজেট ছিল মাত্র ২০ মার্কিন ডলার। এর কিছু গেছে তাঁর ব্যক্তিগত সঞ্চয়, কিছু করপোরেট স্পনসর এবং ক্রাউডফান্ডিং থেকে।
১০ বছরের এই বিশ্বভ্রমণের অভিজ্ঞতায় প্রতিটি দেশে মানুষের ভালোবাসা ও সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানান থর। এ বিষয়গুলো নিয়ে তিনি সম্প্রতি একটি লেখা প্রকাশ করেন ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ানে’। তার কিছু অংশ তুলে ধরা হলো।
মানুষের উদারতা কখনো কখনো অবাক করে দেয়
ডিসেম্বরের বরফে ঢাকা এক ঠান্ডা রাত। আমি তখন পোল্যান্ডের সবচেয়ে ঠান্ডা শহর সুভাওয়কিতে পৌঁছেছি ট্রেনে চড়ে। চারদিক নিস্তব্ধ, শুধু হালকা বরফ ঝরছে। হাতে একটা কাগজে লেখা একটি নাম, ফোন নম্বর আর ঠিকানা; যেখানে আমার থাকার কথা। কিন্তু সিমকার্ড না থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগের উপায় নেই। হাঁটতে শুরু করলাম সাহায্যের খোঁজে। হঠাৎ একটি বাড়ির দরজা খুলে এক নারী বেরিয়ে এলেন। ছুটে গেলাম তাঁর কাছে। ভাগ্য ভালো, তিনি ইংরেজি জানতেন এবং বললেন, এই ঠান্ডায় বাইরে ঘোরাঘুরির কোনো মানে নেই। এ বলে তাঁর বাসায় থাকতে দিলেন। পরদিন সকালে আমাকে নাশতা করিয়ে লিথুয়ানিয়া যাওয়ার বাসে তিনি তুলে দিলেন।
হংকংয়ে করোনার সময় দুই বছর আটকে থাকা
কোভিড-১৯ মহামারির সময় আমি দুই বছর হংকংয়ে আটকে পড়েছিলাম। পরিস্থিতি এতটাই অনিশ্চিত ছিল, তখন ভ্রমণ প্রকল্পই ছেড়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। তখন তো ভ্যাকসিনও ছিল না। জানতাম না এই রোগ কতটা ভয়ানক হতে পারে, কবে শেষ হবে। শুধু দেখছিলাম, সময় যেন ক্রমেই সব পরিকল্পনা গিলে খাচ্ছে। এই সময়েই জীবনের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিই। দীর্ঘদিনের প্রেমিকা লে-কে বিয়ে করি। যখন বিশ্ব আবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে, একটি জাহাজে চেপে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা হই।
ভাষা ছাড়াও সম্পর্ক গড়া যায়
বেলারুশ থেকে মস্কো যাওয়ার ১২ ঘণ্টার ট্রেনে আমার আশপাশে ইংরেজি জানা তেমন কেউ ছিল না। তবু সবাই আমার সঙ্গে কথা বলল রাশিয়ান ভাষায়, খাবার ভাগ করে খেল, এমনকি ভদকা পর্যন্ত। ভাষা না জানলেও মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা কঠিন নয়। কখনো শুধু ইশারায়, কখনো শুধু হাসিতে মানুষ আপন হয়ে গেছে। অনেকবার দুঃখ-কষ্টের সময়েও একটা শিশুর হাসিই আমাকে ভেঙে পড়া থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
ভ্রমণ শেখায়, পৃথিবী কত বড়
লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক—বিমানে গেলে সেটা শুধু কয়েক ঘণ্টার পথ। কিন্তু আমি গিয়েছি সাতটি জাহাজ আর কয়েকটি বাসে চড়ে। তখন বুঝেছি, দূরত্ব মানে কী। দেখেছি মরুভূমি থেকে সবুজ বনভূমি হয়ে উঠতে, ছোট ঝোপ কেমন করে বড় গাছে পরিণত হয়, গ্রামের ভেতর শহর গড়ে ওঠে আর নদী কেমন করে সাগরে মিশে যায়। এক দেশ থেকে অন্য দেশে পার হলেও অনেক সময় কিছুই বদলায় না; মানুষ একই রকম পোশাক পরে, একই খাবার খায়, একই ভাষায় কথা বলে। পৃথিবী কত বিশাল, তা বুঝতে হলে ধীরগতিতে ভ্রমণ করতে হবে।
এবিসি নিউজ ও দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেতে উড়োজাহাজে চড়তে হবে, এমন কথা প্রচলিত আছে। কিন্তু এর ব্যতিক্রমও ঘটতে দেখা যায় মাঝে মাঝে। তেমন ঘটনাই প্রমাণ করলেন ডেনমার্কের নাগরিক থর পেডারসেন। উড়োজাহাজে না চড়েই পৃথিবীর প্রতিটি দেশ দেখার বাসনা ছিল তাঁর। সে বাসনা পূরণ করতেই ২০১৩ সালে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন থর। উড়োজাহাজে চড়া ছাড়াই ২০৩টি দেশ ভ্রমণ শেষে ২০২৩ সালে ঘরে ফেরেন তিনি। প্রতিটি দেশে তিনি কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা অবস্থান করেছিলেন। জাতিসংঘ ১৯৫টি সার্বভৌম রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিলেও থর পেডারসেন তাঁর তালিকায় কিছু বিতর্কিত অঞ্চলকেও অন্তর্ভুক্ত করেছেন দেশ হিসেবে।
আক্ষেপ ছিল থরের। তিনি মনে করেন, ১০০ বছর দেরিতে জন্ম হয়েছে তাঁর। একটা সময় ছিল, যখন পৃথিবীর ওপর দিয়ে স্যাটেলাইট ছুটে বেড়াত না এবং অনেক কিছুর আবিষ্কার বাকি ছিল। তাঁর মনে হতো, পৃথিবীতে সব বড় অ্যাডভেঞ্চার তাঁর জন্মের আগেই ঘটে গেছে। কিন্তু ২০১৩ সালে তিনি বুঝতে পারেন, বিমানে না চড়ে পৃথিবীর সব দেশ ঘুরে বেড়ানোর কাজটা এখনো বাকি আছে। আর সেই রোমাঞ্চকর কাজটা শেষ করা তাঁর দায়িত্ব।
২০১৩ সালের অক্টোবর মাস। মাত্র চার বছরের পরিকল্পনা নিয়ে থর শুরু করলেন তাঁর রোমাঞ্চকর যাত্রা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সেই অভিযান শেষ হতে সময় লাগে ৩ হাজার ৫১২ দিন। এই দীর্ঘ সময়ে থর কোনো বিমান ব্যবহার করেননি। হেঁটে, গাড়িতে, বাসে, ট্রেনে ও জাহাজে করে পথ পাড়ি দিয়েছেন। এমনকি ৩৭টি কনটেইনার জাহাজেও যাত্রা করেছেন তিনি। সেই যাত্রায় থরের প্রতিদিনের বাজেট ছিল মাত্র ২০ মার্কিন ডলার। এর কিছু গেছে তাঁর ব্যক্তিগত সঞ্চয়, কিছু করপোরেট স্পনসর এবং ক্রাউডফান্ডিং থেকে।
১০ বছরের এই বিশ্বভ্রমণের অভিজ্ঞতায় প্রতিটি দেশে মানুষের ভালোবাসা ও সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানান থর। এ বিষয়গুলো নিয়ে তিনি সম্প্রতি একটি লেখা প্রকাশ করেন ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ানে’। তার কিছু অংশ তুলে ধরা হলো।
মানুষের উদারতা কখনো কখনো অবাক করে দেয়
ডিসেম্বরের বরফে ঢাকা এক ঠান্ডা রাত। আমি তখন পোল্যান্ডের সবচেয়ে ঠান্ডা শহর সুভাওয়কিতে পৌঁছেছি ট্রেনে চড়ে। চারদিক নিস্তব্ধ, শুধু হালকা বরফ ঝরছে। হাতে একটা কাগজে লেখা একটি নাম, ফোন নম্বর আর ঠিকানা; যেখানে আমার থাকার কথা। কিন্তু সিমকার্ড না থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগের উপায় নেই। হাঁটতে শুরু করলাম সাহায্যের খোঁজে। হঠাৎ একটি বাড়ির দরজা খুলে এক নারী বেরিয়ে এলেন। ছুটে গেলাম তাঁর কাছে। ভাগ্য ভালো, তিনি ইংরেজি জানতেন এবং বললেন, এই ঠান্ডায় বাইরে ঘোরাঘুরির কোনো মানে নেই। এ বলে তাঁর বাসায় থাকতে দিলেন। পরদিন সকালে আমাকে নাশতা করিয়ে লিথুয়ানিয়া যাওয়ার বাসে তিনি তুলে দিলেন।
হংকংয়ে করোনার সময় দুই বছর আটকে থাকা
কোভিড-১৯ মহামারির সময় আমি দুই বছর হংকংয়ে আটকে পড়েছিলাম। পরিস্থিতি এতটাই অনিশ্চিত ছিল, তখন ভ্রমণ প্রকল্পই ছেড়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। তখন তো ভ্যাকসিনও ছিল না। জানতাম না এই রোগ কতটা ভয়ানক হতে পারে, কবে শেষ হবে। শুধু দেখছিলাম, সময় যেন ক্রমেই সব পরিকল্পনা গিলে খাচ্ছে। এই সময়েই জীবনের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিই। দীর্ঘদিনের প্রেমিকা লে-কে বিয়ে করি। যখন বিশ্ব আবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে, একটি জাহাজে চেপে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা হই।
ভাষা ছাড়াও সম্পর্ক গড়া যায়
বেলারুশ থেকে মস্কো যাওয়ার ১২ ঘণ্টার ট্রেনে আমার আশপাশে ইংরেজি জানা তেমন কেউ ছিল না। তবু সবাই আমার সঙ্গে কথা বলল রাশিয়ান ভাষায়, খাবার ভাগ করে খেল, এমনকি ভদকা পর্যন্ত। ভাষা না জানলেও মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা কঠিন নয়। কখনো শুধু ইশারায়, কখনো শুধু হাসিতে মানুষ আপন হয়ে গেছে। অনেকবার দুঃখ-কষ্টের সময়েও একটা শিশুর হাসিই আমাকে ভেঙে পড়া থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
ভ্রমণ শেখায়, পৃথিবী কত বড়
লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক—বিমানে গেলে সেটা শুধু কয়েক ঘণ্টার পথ। কিন্তু আমি গিয়েছি সাতটি জাহাজ আর কয়েকটি বাসে চড়ে। তখন বুঝেছি, দূরত্ব মানে কী। দেখেছি মরুভূমি থেকে সবুজ বনভূমি হয়ে উঠতে, ছোট ঝোপ কেমন করে বড় গাছে পরিণত হয়, গ্রামের ভেতর শহর গড়ে ওঠে আর নদী কেমন করে সাগরে মিশে যায়। এক দেশ থেকে অন্য দেশে পার হলেও অনেক সময় কিছুই বদলায় না; মানুষ একই রকম পোশাক পরে, একই খাবার খায়, একই ভাষায় কথা বলে। পৃথিবী কত বিশাল, তা বুঝতে হলে ধীরগতিতে ভ্রমণ করতে হবে।
এবিসি নিউজ ও দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে
কচি লাউ দিয়ে মজাদার ডেজার্ট তৈরি করা যায়। রাতে খাওয়ার পর মিষ্টি কিছু খেতে ইচ্ছা হওয়াটা দোষের কিছু নয়। লাউ দিয়েই বানিয়ে ফেলুন মজাদার বরফি। আপনাদের জন্য লাউয়ের বরফির রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী সানিয়া সোমা।
২১ ঘণ্টা আগেবলা হয়, ফ্যাশন উইকগুলোয় র্যাম্পে মডেলরা যেসব পোশাক পরে হেঁটে বেড়ান, সেগুলো আদৌ সাধারণ মানুষের আলমারিতে তোলার উপযোগী নয়। তাহলে অত দামি ফ্যাব্রিক গায়ে তোলেন কারা? হ্যাঁ, বলিউডের সোনম বা আলিয়াদের গায়ে কখনো কখনো রানওয়ে পোশাকের নকশা বা প্রিন্ট দেখা যায়; তবে সেখানেও প্রশ্ন যে উদ্ভট নকশাওয়ালা পোশাকগুলো..
১ দিন আগেতারুণ্যের পোশাক ডেনিম। একটা সময় মূলত পুরুষের পোশাক হয়ে থাকলেও এটি ক্রমেই ‘ইউনিসেক্স’ হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ নারী-পুরুষনির্বিশেষে এখন ডেনিমের পোশাক পরে। আর সে জন্যই সম্ভবত ডেনিম দিয়ে তৈরি পোশাকে বৈচিত্র্য এসেছে। এখন প্যান্ট, জ্যাকেট, কটি ও শার্টের বাইরে বানানো হচ্ছে নানা ডিজাইনের স্কার্ট, ড্রেস, ব্লাউজ...
১ দিন আগেগরমকাল পুরুষদের জন্য কালস্বরূপ! হ্যাঁ, সত্য়ি বলছি। গরমে পুরুষেরা অনেক বেশিই ঘামেন। বলতে দ্বিধা নেই, অধিকাংশ পুরুষ স্রেফ সচেতনতার অভাবে গরমে অস্বস্তিতে ভোগেন। এখন আর সেই সময় নেই যে, এক কাপড়ে বেরিয়ে গিয়ে সেই রাতে বাড়ি ফিরবেন। গ্রীষ্মকালে সূর্যের দাপট এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি।
১ দিন আগে