কমল দাশ
পাহাড় বলতে বান্দরবানই আমাকে বেশি মুগ্ধ করে। এর নৈসর্গিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুখে বলে কিংবা ছবিতে দেখিয়ে শেষ করা যাবে না।
পাহাড়ের নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণের জন্য আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছেন চেইন চেইন মারমা। তিনি সব সময় নতুন নতুন জায়গায় নতুন অভিজ্ঞতা লাভের জন্য ভ্রমণের আয়োজন করেন। তাঁর আয়োজনেই রেইছা ঝিরির পথ ধরে ঝরনা ট্রেকিং হলো। সঙ্গে ঝিরির পাশে রান্নাবান্না এবং কলাপাতায় খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা, রাতে বারবিকিউ আর পাহাড়ের চূড়ায় মাচাং ঘরে থাকার ব্যবস্থাও হলো।
আমরা যৌথ খামার এলাকার টাইগার পাড়ার রেইছা ঝিরিতে যাব। যৌথ খামার এলাকাটা নীলাচল যাওয়ার পথে পড়ে। সকাল ৮টার কিছু আগে চট্টগ্রাম নতুন ব্রিজ থেকে বাসে চেপে দেড় ঘণ্টার পথ পেরিয়ে বান্দরবান শহর ও নীলাচল সংযোগ সড়কে নেমে পড়লাম। তারপর সিএনজিযোগে নির্ধারিত কটেজে পৌঁছানো হলো। মাত্র সাত মিনিটের পথ, কেউ চাইলে হেঁটেও যেতে পারবে কটেজে। আমাদের কটেজের নাম ছিল ফানুস। সুন্দর আর পরিপাটি করে সাজানো।
ট্রেকিংয়ের প্রস্তুতি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ঝিরির উদ্দেশে। মোট ১৫ জনের দল। কিছুটা অটোরিকশা আর কিছুটা হেঁটে ঝিরির মুখে এসে নামলাম। পাহাড়ের পথে বুশ প্যাশন ফল খাওয়া হলো অনেক। খুব সুস্বাদু এ ফল অনেকটা পার্সিমনের মতো।
ঝিরির পাড়েই দুপুরের খাবারের আয়োজন। পাহাড়ের ওপর থেকে ঝিরিতে নামার জঙ্গল বেশ দুর্গম। তবে সফর সঙ্গীরা কষ্ট হলেও কিছুটা ঝুলে, কিছুটা থেমে থেমে নামাটা উপভোগ করেছেন। পাহাড়ের চূড়া থেকে ঝিরি প্রায় ১ হাজার ২০০ মিটার নিচে। অনেক ঘাম ঝরিয়ে খাড়া পাহাড় থেকে প্রায় ৩০ মিনিট পর ঝিরিতে নেমে পড়লাম। পাথরের ফাঁক গলে আসছে টলটলে ঝরনার পানি। সেখানে দুপুরের রান্নার সব বাজার ভোরবেলায় এসে পৌঁছেছে।
ঝিরিতে নেমে সবাই চারদিকের সৌন্দর্য দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। এরই মধ্যে কেউ গোসল করছে, কেউ গান গাইছে আবার কেউ ঝিরিতে চিংড়ি ধরছে। মেনুতে আছে পাহাড়ি মুরগি, ঝিরির চিংড়ি ভাজা, লেকের মাছ ভাজা, শুঁটকি দিয়ে কয়েক ধরনের সবজির মিশেল, ডাল, পাহাড়ি মরিচভর্তা, বাঁধাকপির তোজা অর্থাৎ সেদ্ধ। সেটা আবার খেতে হবে মরিচভর্তা দিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে। আর ছিল বাঁশের মধ্যে পোড়ানো মুরগির মাংস ও সবজির একটি সুস্বাদু খাবার। জুমের চালের ভাতের সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। অন্যদিকে অনেকে ট্রেকিংয়ে চলে গেল।
দুপুরে খাবারের আগে ডিমের তৈরি বিশেষ নাশতা ছিল। সঙ্গে ঝালমুড়ি আর চিপস। ঝিরির পাড়ে বসে সবাই একসঙ্গে কলাপাতায় খাবার শেষ করলাম। খাবার শেষ করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সূর্য ডোবার আগেই খাড়া পাহাড় বেয়ে রওনা হলাম মাচাং ঘরের দিকে। পথে টাইগার পাড়ায় কিছুক্ষণ চা বিরতি। ফিরে সবাই ফ্রেশ হয়ে আবার রওনা হলাম রাতের বারবিকিউ ও ডিনারের উদ্দেশে।
স্থানীয় একজনের বাগানে ছিল এই আয়োজন। বারবিকিউ ছাড়াও ছিল বিশেষ চিকেন স্যুপ ও মুরগির মাংসের ভর্তা, কয়লায় পোড়ানো বেগুনভর্তা আর সবজি। রাতের খাওয়া শেষে আমরা ফিরে গেলাম নিজেদের কটেজে।
ফিরতি পথে টাইগার পাড়ায় রাতের নীরবতা ছিল উপভোগ করার মতো। ভোরে পাহাড়ের সকালটা হয় দেখার মতো।
যেভাবে যাবেন
দেশের যেকোনো জেলা থেকে চট্টগ্রাম শহরে আসতে হবে। সেখান থেকে টাইগার হিল হয়ে বান্দরবানের রেইছা ঝিরি।
কোথায় থাকবেন
স্থানীয় ট্যুর অপারেটরদের মাধ্যমে ভালো মানের কটেজের সন্ধান নিয়ে সেখানেই থাকতে হবে। যেখানেই থাকুন, আগে থেকে অবশ্যই খবর নিয়ে যোগাযোগ করে বুকিং করে রাখতে হবে।
ভ্রমণের তথ্য
পাড়া শেষ করে রেইছা ঝিরির পথে হাঁটতে শুরু করলে আর কোনো দোকান পাওয়া যাবে না। তাই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিতে হবে। হাঁটার সময় খাওয়ার পানি এবং শুকনো খাবার নিতে পারেন। ঝিরিতে নামার পর কোনো ধরনের নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে না। তাই সবাই একসঙ্গে থাকাটা নিরাপদ। নিরাপত্তার জন্য ট্যুর গাইড, বিশেষ করে পাহাড়ের স্থানীয় মানুষ পরিচিত থাকলে আগেই যোগাযোগের কাজ সেরে নিতে পারেন।
পাহাড় বলতে বান্দরবানই আমাকে বেশি মুগ্ধ করে। এর নৈসর্গিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুখে বলে কিংবা ছবিতে দেখিয়ে শেষ করা যাবে না।
পাহাড়ের নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণের জন্য আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছেন চেইন চেইন মারমা। তিনি সব সময় নতুন নতুন জায়গায় নতুন অভিজ্ঞতা লাভের জন্য ভ্রমণের আয়োজন করেন। তাঁর আয়োজনেই রেইছা ঝিরির পথ ধরে ঝরনা ট্রেকিং হলো। সঙ্গে ঝিরির পাশে রান্নাবান্না এবং কলাপাতায় খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা, রাতে বারবিকিউ আর পাহাড়ের চূড়ায় মাচাং ঘরে থাকার ব্যবস্থাও হলো।
আমরা যৌথ খামার এলাকার টাইগার পাড়ার রেইছা ঝিরিতে যাব। যৌথ খামার এলাকাটা নীলাচল যাওয়ার পথে পড়ে। সকাল ৮টার কিছু আগে চট্টগ্রাম নতুন ব্রিজ থেকে বাসে চেপে দেড় ঘণ্টার পথ পেরিয়ে বান্দরবান শহর ও নীলাচল সংযোগ সড়কে নেমে পড়লাম। তারপর সিএনজিযোগে নির্ধারিত কটেজে পৌঁছানো হলো। মাত্র সাত মিনিটের পথ, কেউ চাইলে হেঁটেও যেতে পারবে কটেজে। আমাদের কটেজের নাম ছিল ফানুস। সুন্দর আর পরিপাটি করে সাজানো।
ট্রেকিংয়ের প্রস্তুতি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ঝিরির উদ্দেশে। মোট ১৫ জনের দল। কিছুটা অটোরিকশা আর কিছুটা হেঁটে ঝিরির মুখে এসে নামলাম। পাহাড়ের পথে বুশ প্যাশন ফল খাওয়া হলো অনেক। খুব সুস্বাদু এ ফল অনেকটা পার্সিমনের মতো।
ঝিরির পাড়েই দুপুরের খাবারের আয়োজন। পাহাড়ের ওপর থেকে ঝিরিতে নামার জঙ্গল বেশ দুর্গম। তবে সফর সঙ্গীরা কষ্ট হলেও কিছুটা ঝুলে, কিছুটা থেমে থেমে নামাটা উপভোগ করেছেন। পাহাড়ের চূড়া থেকে ঝিরি প্রায় ১ হাজার ২০০ মিটার নিচে। অনেক ঘাম ঝরিয়ে খাড়া পাহাড় থেকে প্রায় ৩০ মিনিট পর ঝিরিতে নেমে পড়লাম। পাথরের ফাঁক গলে আসছে টলটলে ঝরনার পানি। সেখানে দুপুরের রান্নার সব বাজার ভোরবেলায় এসে পৌঁছেছে।
ঝিরিতে নেমে সবাই চারদিকের সৌন্দর্য দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। এরই মধ্যে কেউ গোসল করছে, কেউ গান গাইছে আবার কেউ ঝিরিতে চিংড়ি ধরছে। মেনুতে আছে পাহাড়ি মুরগি, ঝিরির চিংড়ি ভাজা, লেকের মাছ ভাজা, শুঁটকি দিয়ে কয়েক ধরনের সবজির মিশেল, ডাল, পাহাড়ি মরিচভর্তা, বাঁধাকপির তোজা অর্থাৎ সেদ্ধ। সেটা আবার খেতে হবে মরিচভর্তা দিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে। আর ছিল বাঁশের মধ্যে পোড়ানো মুরগির মাংস ও সবজির একটি সুস্বাদু খাবার। জুমের চালের ভাতের সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। অন্যদিকে অনেকে ট্রেকিংয়ে চলে গেল।
দুপুরে খাবারের আগে ডিমের তৈরি বিশেষ নাশতা ছিল। সঙ্গে ঝালমুড়ি আর চিপস। ঝিরির পাড়ে বসে সবাই একসঙ্গে কলাপাতায় খাবার শেষ করলাম। খাবার শেষ করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সূর্য ডোবার আগেই খাড়া পাহাড় বেয়ে রওনা হলাম মাচাং ঘরের দিকে। পথে টাইগার পাড়ায় কিছুক্ষণ চা বিরতি। ফিরে সবাই ফ্রেশ হয়ে আবার রওনা হলাম রাতের বারবিকিউ ও ডিনারের উদ্দেশে।
স্থানীয় একজনের বাগানে ছিল এই আয়োজন। বারবিকিউ ছাড়াও ছিল বিশেষ চিকেন স্যুপ ও মুরগির মাংসের ভর্তা, কয়লায় পোড়ানো বেগুনভর্তা আর সবজি। রাতের খাওয়া শেষে আমরা ফিরে গেলাম নিজেদের কটেজে।
ফিরতি পথে টাইগার পাড়ায় রাতের নীরবতা ছিল উপভোগ করার মতো। ভোরে পাহাড়ের সকালটা হয় দেখার মতো।
যেভাবে যাবেন
দেশের যেকোনো জেলা থেকে চট্টগ্রাম শহরে আসতে হবে। সেখান থেকে টাইগার হিল হয়ে বান্দরবানের রেইছা ঝিরি।
কোথায় থাকবেন
স্থানীয় ট্যুর অপারেটরদের মাধ্যমে ভালো মানের কটেজের সন্ধান নিয়ে সেখানেই থাকতে হবে। যেখানেই থাকুন, আগে থেকে অবশ্যই খবর নিয়ে যোগাযোগ করে বুকিং করে রাখতে হবে।
ভ্রমণের তথ্য
পাড়া শেষ করে রেইছা ঝিরির পথে হাঁটতে শুরু করলে আর কোনো দোকান পাওয়া যাবে না। তাই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিতে হবে। হাঁটার সময় খাওয়ার পানি এবং শুকনো খাবার নিতে পারেন। ঝিরিতে নামার পর কোনো ধরনের নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে না। তাই সবাই একসঙ্গে থাকাটা নিরাপদ। নিরাপত্তার জন্য ট্যুর গাইড, বিশেষ করে পাহাড়ের স্থানীয় মানুষ পরিচিত থাকলে আগেই যোগাযোগের কাজ সেরে নিতে পারেন।
এই মৌসুমে অনেকেরই জ্বর হচ্ছে। আর জ্বর হলে আনারস খেলে আরামবোধ হয়। শুধু কেটে খেতে ভালো না লাগলে আনারসের টক ঝাল মিষ্টি ভর্তা বানিয়েও খেতে পারেন। আপনাদের জন্য রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
৩ ঘণ্টা আগেসকালের নাশতায় রোজ কি রুটির সঙ্গে আলুভাজি খেতে ভালো লাগে? কোনো একদিন সকালে বানিয়ে ফেলুন ফুলকো লুচি, আর সঙ্গে থাকতে পারে কাবলি ছোলার ঘুগনি। আপনাদের জন্য কাবলি ছোলার ঘুগনির রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
২১ ঘণ্টা আগেআজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলো ১১ অক্টোবর দিনটিকে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস হিসেবে পালন করে। আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘দ্য গার্ল, আই অ্যাম দ্য চেঞ্জ লিড: গার্লস অন দ্য ফ্রন্টলাইনস অব ক্রাইসিস’ বা ‘আমি সেই মেয়ে, আমিই পরিবর্তনের...
১ দিন আগেবাড়িতে থাকলে সকালে উঠেই চা বা কফি পান করা অনেকের প্রধান অভ্যাস। কোথাও ছুটিতে গেলেও সেই অভ্যাস ছাড়তে পারেন না তাঁরা। ভ্রমণের সময় হোটেলের যে কক্ষে থাকেন, সকালে উঠে সেখানেই সকালের চা-কফির পর্ব সেরে নিতে চান অনেকে। কিন্তু আপনি কি জানেন, কেটলি কতটা স্বাস্থ্যসম্মত? পরের বার যখন কোনো হোটেল রুমে থাকবেন..
১ দিন আগে