Ajker Patrika

স্যামসাং আনল গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ আলট্রাসহ নতুন ৪ ডিভাইস, দাম ও স্পেসিফিকেশন

আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ০৪
স্যামসাং আনল গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ আলট্রাসহ নতুন ৪ ডিভাইস, দাম ও স্পেসিফিকেশন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত একটি ইভেন্টে একই সঙ্গে চারটি নতুন ডিভাইস উন্মোচন করল স্যামসাং। গতকালের ইভেন্টে গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ প্লাস, গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ আলট্রা, গ্যালাক্সি এস ২৪ এফই স্মার্টফোন এবং গ্যালাক্সি ওয়াচ এফই এলটিইর বিভিন্ন ফিচার ও ডিজাইন তুলে ধরা হয়। 

গ্যালাক্সি এস ২৩ এফইয়ের উত্তরসূরি হিসেবে এসেছে গ্যালাক্সি এস ২৪ এফই স্মার্টফোন। তবে এই স্মার্টফোনের দাম আগের তুলনায় বেশি রাখা হয়েছে। আর এবার গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ সিরিজের কোনো বেস সংস্করণ পাওয়া যাবে না। 

গ্যালাক্সি ট্যাবের দুটি মডেলেই বিভিন্ন এআই ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ আলট্রা এবং গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ প্লাস উভয়েই অ্যান্টি-রিফ্লেকটিভ ডায়নামিক অ্যামলেড ২ এক্স ডিসপ্লে রয়েছে। একটি কোয়াড স্পিকার সেটআপের মধ্যে এআই ডায়ালগ বুস্ট রয়েছে এবং একটি শক্তিশালী আইপি ৬৮ রেটিং রয়েছে। উভয় ট্যাবলেট আগামী মাসে বাজারে পাওয়া যাবে। 

আগের সিরিজের মতো গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ সিরিজে কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন প্রসেসর পাওয়া যাবে না। এতে মিডিয়া টেক ডাইমেনসিনিটি ৯৩০০ প্লাস চিপসেট ব্যবহার করা হয়েছে। 

সাধারণভাবে সাশ্রয়ী ডিভাইসে মিডিয়াটেক চিপসেট ব্যবহার করা হয়। তবে স্যামসাং দাবি করছে যে, আগের প্রজন্মের মডেলের তুলনায় এই মডেলে সিপিইউর ক্ষমতা ১৮ শতাংশ ও গ্রাফিক্সের ২৮ শতাংশ বেড়েছে। 

স্যামসাং এআইভিত্তিক বিভিন্ন ফিচারের ওপর জোর দিচ্ছে। তাই ট্যাবলেটগুলোর কিবোর্ডের সঙ্গে নতুন এআই বাটনও যুক্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে দ্রুত এআই অ্যাসিস্টেন্ট ব্যবহার করা যাবে। 

গ্যালাক্সি এআই ফিচারের মধ্যে রয়েছে—স্কেচ টু ইমেজ, সার্কেল টু সার্চ ও নোট অ্যাসিস্ট। এ ছাড়া এস পেনের মাধ্যমে হাতের লেখা ভালো করার জন্যও বেশ কিছু ফিচার যুক্ত করা হবে। 

উভয় ট্যাবলেটই মুনস্টোন গ্রে ও প্লাটিনাম সিলভার রঙে পাওয়া যাবে। 

গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ প্লাস ও গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ আলট্রা এর দাম 
গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ প্লাসের ১২ জিবি র‍্যাম ও ২৫৬ জিবি ইন্টারন্যাল স্টোরেজ সংস্করনের দাম ৯৯৯ দশমিক ৯৯ ডলার বা প্রায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৩৩৭ টাকা। 
গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ প্লাসের ১২ জিবি র‍্যাম ও ৫১২ জিবি ইন্টারন্যাল স্টোরেজ সংস্করনের দাম ১ হাজার ৯৯৯ দশমিক ৯৯ ডলার বা প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫৭ টাকা। 
গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ আলট্রার ১২ জিবি র‍্যাম ও ২৫৬ জিবি ইন্টারন্যাল স্টোরেজ সংস্করনের দাম ১ হাজার ৯৯৯ দশমিক ৯৯ ডলার বা প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫৭ টাকা। 
গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ আলট্রার ১২ জিবি র‍্যাম ও ৫১২ জিবি ইন্টারন্যাল স্টোরেজ সংস্করনের দাম ১ হাজার ৩১৯ দশমিক ৯৯ ডলার বা প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫২৫ টাকা। 
গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ আলট্রার ১৬ জিবি র‍্যাম ও ১ টিবি (টেরাবাইট) ইন্টারন্যাল স্টোরেজ সংস্করনের দাম ১ হাজার ৬১৯ দশমিক ৯৯ ডলার বা প্রায় ১ লাখ ৯৩ হাজার ৩২৬ টাকা। 

গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ আলট্রা স্পেসিফিকেশন 
ডিসপ্লে: অ্যান্টি-রিফ্লেকটিভ কোটিং সহ ১৪.৬ ইঞ্চি (২৯৬০ x ১৮৪৮) 
রিফ্রেশ রেট: ১২০ হার্টজ
র‍্যাম: ১২ জিবি বা ১৬ জিবি 
ইন্টারন্যাল স্টোরেজ: ২৫৬ জিবি, ৫১২ জিবি ও ১ টিবি স্টোরেজ
প্রসেসর: মিডিয়াটেক ডিমেনসিটি ৯৩০০ +
পেছনের ক্যামেরা: ১৩ এমপি + ৮ এমপি আল্ট্রাওয়াইড 
 সামনের ক্যামেরা: ১২ এমপি + ১২ এমপি আল্ট্রাওয়াইড 
ব্যাটারি: ১১,২০০ এমএএইচ 
চার্জিং: ৪৫ ওয়াট 
আকার: ২০৮.৬ X ৩২৬.৪ X ৫.৪ মিমি 
সংযোগ: ৫জি 
ওয়াই-ফাই: ৭ / ৬ ই
ব্লুটুথ সংস্করণ ৫.৩ 
অপারেটিং সিস্টেম: অ্যান্ড্রয়েড ১৪.০ 

গ্যালাক্সি ট্যাব এস ১০ প্লাসের স্পেসিফিকেশন
ডিসপ্লে: অ্যান্টি-রিফ্লেকটিভ কোটিং সহ ১২.৪ ইঞ্চি (২৮০০ x ১৭৫২) 
রিফ্রেশ রেট: ১২০ হার্টজ
র‍্যাম: ১২ জিবি ও ১৬ জিবি 
ইন্টারন্যাল স্টোরেজ: ২৫৬ জিবি ও ৫১২ জিবি 
প্রসেসর: মিডিয়াটেক ডিমেনসিটি ৯৩০০ +
পেছনের ক্যামেরা: ১৩ এমপি + ৮ এমপি আল্ট্রাওয়াইড 
 সামনের ক্যামেরা: ১২ এমপি আল্ট্রাওয়াইড 
ব্যাটারি: ১০,০৯০ এমএএইচ
আকার: ১৮৫.৪ X ২৮৫.৪ X ৫.৬ মিমি
সংযোগ: ৫জি 
ওয়াই-ফাই: ৭ / ৬ ই, 
ব্লুটুথ সংস্করণ ৫.৩ 
অপারেটিং সিস্টেম: অ্যান্ড্রয়েড ১৪.০ 

স্যামসাং গ্যালাক্সি ওয়াচ এফই এলটিই 
স্যামসাং গ্যালাক্সি ওয়াচ এফই জুন মাসে উন্মোচন করা হয়েছিল। এবার গ্যালাক্সি ওয়াচ এফই এর একটি নতুন এলটিই সংস্করণ উন্মোচন করেছে কোম্পানিটি। অর্থাৎ যেকোনো জায়গা থেকে এখন আপনি কল নিতে, বার্তা পাঠাতে এবং আপনার অগ্রগতি ট্র্যাক করতে পারবেন। এমনকি ফোনের সংযোগ না থাকলেও। 

এটি ব্ল্যাক (কালো), সিলভার (ধূসর) এবং পিংক গোল্ড (গোলাপি সোনালি) রঙে আসবে। 
গ্যালাক্সি ওয়াচ এফই এলটিই–এর দাম শুরু হচ্ছে ২৪৯ দশমিক ৯৯ ডলার বা প্রায় ২৯ হাজার ৮৩৩ টাকা থেকে। 

গ্যালাক্সি এস ২৪ এফই স্মার্টফোন এর স্পেসিফিকেশন, ফিচার ও ডিজাইন
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ২৪ এফই স্লিক ডিজাইন সহ এসেছে। আর এর ডিসপ্লের চারপাশে চিকন বেজেল দেখা যাবে। স্মার্টফোনটির ডিসপ্লের ডিজাইন পাঞ্চ হোল এবং এর ব্যাক প্যানেলে উল্লম্ব ভাবে তিনটি ক্যামেরা সেন্সর থাকবে। 

স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ২৪ ফোনে আছে ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেটসহ ৬ দশমিক ৭ ইঞ্চি ডায়নামিক অ্যামোলেড ২ এক্স ডিসপ্লে যা সাপোর্ট করবে। এতে এক্সিনস ২৪০০ই প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে, 

এতে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ রয়েছে। এই ক্যামেরাগুলি হল ৫০ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা ওয়াইড লেন্স, ১২ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা ওয়াইড লেন্স, ৩ এক্স অপ্টিক্যাল জুম ৮ মেগাপিক্সেল টেলিফটো ক্যামেরা। সেলফি ও ভিডিও কলিংয়ের জন্য এতে ১০ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা পাওয়া যাবে। এতে প্রো ভিজ্যুয়াল ক্যামেরা ইঞ্জিন উপস্থিত। আর এই স্মার্টফোনে গ্যালাক্সি এআই ফটো এডিটিং ফিচার দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে আছে জেনারেটিভ এডিট, পোট্রেট স্টুডিও, এডিট সাজেশন, ইন্সট্যান্ট স্লো মো প্রভৃতি। 

 ফোনটিতে অ্যান্ড্রয়েড ১৪ ভিত্তিক ওয়ান ইউআই ৬.১ কাস্টম অপারেটিং সিস্টেম থাকবে। ডিভাইসটি ৭ বছর ধরে সিকিউরিটি আপডেট পাবে বলে কোম্পানিটি জানিয়েছে। এছাড়া এতে আছে ৪,৭০০ এমএএইচ ব্যাটারি, যা ২৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং ও ১৫ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্ট করে। ফোনটির অন্যান্য ফিচারের মধ্যে আছে আইপি ৬৮ রেটিং, ৫ জি, ওয়াই-ফাই ৬ ই, ব্লুটুথ ৫.৩ ও ইন ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। 

এই ফোনটি আগামী ৩ অক্টোবর থেকে বাজারে পাওয়া পাওয়া যাবে। এর দাম ৬৪৯ ডলার বা প্রায় ৭৭ হাজার ৪৫০ টাকা। 

তথ্যসূত্র: ম্যাশাবল, ফোন এরিনা ও এনগ্যাজেট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আটক

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

ডিউটিতে ইনচার্জ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ডিএমপি

বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণের আলটিমেটাম

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোশ্যাল মিডিয়ায় বয়ফ্রেন্ডকে আড়ালে রাখছেন তরুণীরা, এই প্রবণতার মানে কী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৫
সোশ্যাল মিডিয়ায় তরুণীরা এখন বিভিন্নভাবে বয়ফ্রেন্ডকে আড়াল করছেন। ছবি: প্রতীকী
সোশ্যাল মিডিয়ায় তরুণীরা এখন বিভিন্নভাবে বয়ফ্রেন্ডকে আড়াল করছেন। ছবি: প্রতীকী

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জীবনের প্রতিটি খুঁটিনাটি তুলে ধরার এই যুগে, প্রেম বা দাম্পত্য সম্পর্ককে প্রকাশ্যে আনা বা ‘হার্ড-লঞ্চ’ করার ক্ষেত্রে দ্বিধা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে তরুণী ও নারীদের মধ্যে এই প্রবণতা অনেক বেশি। পশ্চিমা দেশগুলোতে এই প্রবণতা এখন এতটাই প্রবল যে, ব্রিটিশ ভোগ ম্যাগাজিনও প্রশ্ন তুলেছে, ‘প্রেমিক থাকা কি এখন লজ্জার ব্যাপার?’

ইনস্টাগ্রাম বা টিকটকে এখন অনেকেই সঙ্গীর মুখ আড়াল করে ছবি দিচ্ছেন, শুধু হাত বা পানীয়ের গ্লাস ঠোকাঠুকির মতো ইঙ্গিতপূর্ণ ‘সফট লঞ্চ’ করছেন। এর পেছনে রয়েছে ব্র্যান্ডিং, আত্মনির্ভরতার বার্তা দেওয়া এবং ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা রক্ষার মতো একাধিক কারণ। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ প্রসঙ্গে দৃষ্টান্ত হিসেবে ইনফ্লুয়েন্সার তাওয়ানা মুসভাবুরির কথা উল্লেখ করেছে বিবিসি। তাওয়ানার ৩৩ হাজার ফলোয়ার রয়েছে। তিনি ইচ্ছা করে প্রেমিকের চেহারা আড়াল করে রাখেন। ২৪ বছর বয়সী এই তরুণী বলেন, তিনি এমন একটি ব্র্যান্ড তৈরি করেছেন যেখানে তাঁর প্রেমিকের কোনো অংশ নেই।

তিনি বিবিসি নিউজকে বলেন, ‘আমি নিজেকে একজন শক্তিশালী নারী হিসেবে তুলে ধরতে চাই, যেন মনে হয় আমার সবটা আমার নিয়ন্ত্রণে। আপনি চান না যে, লোকজনের মনে হোক যে এটি কোনো অংশ একজন পুরুষের সহায়তায় গড়ে উঠেছে। যখন আমি বলি, আমি এটি নিজেই করেছি, তখন সেটা আমাকে আরও বেশি তৃপ্তি দেয়।’

তাওয়ানার মতে, এমনকি যদি তিনি বাগদান বা বিয়েও করেন, তাহলেও সেই সম্পর্ক প্রকাশ্যে আনার জন্য শুধু একটি আংটিই যথেষ্ট নয়।

ভোগ ম্যাগাজিনের ভাইরাল হওয়া নিবন্ধে লেখক শঁতে জোসেফ উল্লেখ করেন, বিষমকামী নারীরা এখন তাঁদের সম্পর্ক অনলাইনে যেভাবে তুলে ধরছেন, তাতে একটি বড়সড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নারীরা এখন সঙ্গী থাকার ‘সামাজিক সুবিধা’ উপভোগ করতে চাইলেও, একই সঙ্গে ‘বয়ফ্রেন্ড-পাগল’ হিসেবে পরিচিত হতে চান না।

জোসেফের মতে, ঘন ঘন সঙ্গীর ছবি পোস্ট করাকে অনেকে ‘বিরক্তিকর’ বা ‘সাংস্কৃতিক দিক থেকে ব্যর্থতার লক্ষণ’ বলে মনে করেন। আরও গুরুতর যে বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেছেন সেটি হলো, প্রেমিক থাকা এখন আর ‘কোনো অর্জন’ হিসেবে বিবেচিত হয় না। তিনি মনে করেন, নারীরা এখন পিতৃতান্ত্রিক সমাজের ‘দমিয়ে রাখার’ প্রতিক্রিয়াস্বরূপ সম্পর্ক আড়াল করছেন।

ইনফ্লুয়েন্সারদের ক্ষেত্রে এটি কেবল সামাজিক ধারণা নয়, বরং উপার্জনের প্রশ্নও বটে। দক্ষিণ লন্ডনের কনটেন্ট ক্রিয়েটর স্টেফানি ইয়েবোয়াহ ভোগ ম্যাগাজিনকে জানান, একবার তাঁর প্রেমিকের ছবি পোস্ট করার পর তাঁর খুব অনুশোচনা হয়েছে।

তিনি বিবিসিকে বলেন, তাঁর ইনবক্সে বার্তা আসতে শুরু করে যে লোকেরা তাঁকে আর অনুসরণ করতে পারছে না। কারণ তাঁর কনটেন্টে এখন প্রেমিক যুক্ত হয়ে গেছেন। ইয়েবোয়াহ স্মরণ করেন, ‘সেই দিন প্রায় ১ হাজার মানুষ আমাকে আনফলো করেছিল।’

কিং’স কলেজ লন্ডনের ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ ড. জিলিয়ান ব্রুকস বলেন, ইনফ্লুয়েন্সাররা একটি স্বতন্ত্র রুচি বা নান্দনিকতা বিক্রি করেন। তাঁদের দর্শকদের জন্য একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড তৈরি করা হয়। যদি তাঁরা সেই ব্র্যান্ডের বাইরে চলে যান, তবে শ্রোতাদের বিভ্রান্ত করেন এবং এতে তাঁদের ফলোয়ার কমে যেতে পারে।

যারা ইনফ্লুয়েন্সার নন, তাঁদেরও সম্পর্ক আড়াল করার নিজস্ব অনেক কারণ আছে। যেমন: নির্ভরশীলতা এড়ানো—মিল্লি নামের ২৫ বছর বয়সী এক তরুণী বলেন, তিনি তাঁর বাগদত্তের ছবি দিতে দ্বিধা বোধ করেন। তিনি চান না যে তাঁকে সঙ্গীর ওপর ‘নির্ভরশীল’ বা এমন কেউ বলে মনে করা হোক যার ‘পুরো ব্যক্তিত্ব’টাই এই সম্পর্কের ওপর নির্ভরশীল।

গোপনীয়তা রক্ষাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ২০ বছর বয়সী শার্লট বিশ্বাস করেন, বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ককে ‘আরও বেশি ব্যক্তিগত’ রাখা উচিত। তিনি মনে করেন, ছবি পোস্ট করা মানেই লোককে বলা, ‘দেখো আমার কত গভীর নিখুঁত সম্পর্ক’—বাস্তবে এটি সত্য নয়।

কু-নজরের ভয়! প্রথম পাঠে খটকা লাগলেও অনেকে ক্ষেত্রে এটি সত্য। ২১ বছর বয়সী আথেরা জানান, তাঁর অনেক বন্ধু সম্পর্কের গোপনীয়তা রাখতে চান কু-নজর বা ‘ইভিল আই’-এর ভয়ে। প্রায় সব সংস্কৃতিতেই কু-নজর বলতে এমন একটি বিশ্বাস বা সংস্কার যে, ঈর্ষা বা বিদ্বেষপূর্ণ দৃষ্টির পড়লে ক্ষতি হতে পারে।

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির সমাজ মনোবিজ্ঞানী ড. গোয়েনডোলিন সাইডম্যান মনে করেন, ব্যক্তিগত জীবনের এত বড় অংশ অনলাইনে শেয়ার করার সঙ্গে এক ধরনের উদ্বেগ জড়িত। এই উদ্বেগ মূলত অনলাইনে তথ্যের স্থায়িত্বের ভয় থেকে আসে। মানুষ এখন বুঝতে পেরেছে যে একবার কিছু অনলাইনে পোস্ট হলে তা মুছে ফেলা কঠিন। তাই তারা এখন আরও সতর্ক থাকতে চাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আটক

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

ডিউটিতে ইনচার্জ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ডিএমপি

বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণের আলটিমেটাম

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থাইল্যান্ড যে কারণে ৩০০ ডলার জরিমানা করতে পারে পর্যটকদের

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ২২
দিনের বেলা নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অ্যালকোহল পান গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে থাইল্যান্ডে। ছবি: ফ্রিপিক
দিনের বেলা নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অ্যালকোহল পান গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে থাইল্যান্ডে। ছবি: ফ্রিপিক

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য থাইল্যান্ড। নিয়মিত যাঁরা ভ্রমণ করেন, তাঁদের অনেকে দেশটিতে একাধিকবার গেছেন। এর অন্যতম কারণ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ। পর্যটকদের জন্য সব ধরনের আয়োজন রয়েছে দেশটিতে। কিন্তু সম্প্রতি দেশটির সরকারের এক সিদ্ধান্ত পর্যটকদের কপালে ভাঁজ এনে দিয়েছে।

৮ নভেম্বর থেকে থাইল্যান্ডে দিনের বেলা নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অ্যালকোহল পান গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে থাইল্যান্ডে। এই অপরাধ করলে প্রায় ৩০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী শুধু বিক্রেতা নয়, গ্রাহকেরাও এই জরিমানার আওতায় আসবেন।

নতুন নিয়ম

বিক্রির অনুমোদিত সময়ের বাইরে রেস্টুরেন্ট বা বিনোদনের স্থানে বসে অ্যালকোহল পান করা নিষেধ। ধরা পড়লে এই জরিমানা প্রযোজ্য হবে। অ্যালকোহল কেনার অনুমোদিত সময় হলো—

  • বেলা ১১টা থেকে ২টা
  • বিকেল ৫টা থেকে মধ্যরাত

পর্যটন খাতের উদ্বেগ

নতুন নিয়মটি ঘোষণার পর থাইল্যান্ডের পর্যটন ও বিনোদন খাতের উদ্যোক্তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তাঁরা বলছেন, নিয়মটি করোনা-পরবর্তী পর্যটন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথে বড় বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এক রেস্টুরেন্টের মালিক জানান, নতুন নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদিত সময়ের বাইরে গ্রাহকেরা অ্যালকোহলের দোকানে বসে থাকলেও তাঁর জরিমানা হতে পারে। অর্থাৎ, বেলা ১১টা থেকে ২টা কিংবা বিকেল ৫টা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে মদ কেনা বৈধ হলেও যদি গ্রাহক সেই সময়ের বাইরে দোকানে মদ পান না করে বসে থাকলেও জরিমানা গুনতে হবে। রেস্টুরেন্ট মালিক ও পর্যটন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি পর্যটকদের জন্য অযৌক্তিক ও বিরক্তিকর। এমন নিয়ম পর্যটকেরা পছন্দ না-ও করতে পারেন। পর্যটন বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, শীতকালীন ছুটির মৌসুমে নতুন নিয়মের কারণে পর্যটক কমে যেতে পারে। পর্যটনশিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

নতুন আইনটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক মাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেক বিদেশি সংবাদপত্র পর্যটকদের সতর্ক করেছে, যাতে তাঁরা থাইল্যান্ডে ভ্রমণের সময় নতুন নিয়ম সম্পর্কে সচেতন থাকেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পর্যটকেরা এই নিয়মকে অযৌক্তিক এবং পর্যটকবিরোধী বলে সমালোচনা করেছেন। তাঁরা লিখেছেন, এমন কঠোর নিয়মের কারণে পর্যটকেরা স্বচ্ছন্দে ঘুরতে পারবেন না এবং তাঁদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা খারাপ হতে পারে। এমনকি কিছু বিদেশি পর্যটক সরাসরি বলেছেন, তাঁরা এবার থাইল্যান্ডে যাবেন না। এর পরিবর্তে পাশের দেশগুলোতে ছুটি কাটাবেন, যেখানে অ্যালকোহলের বিধিনিষেধ তুলনামূলক কম এবং পর্যটকদের জন্য সুবিধাজনক। এই প্রতিক্রিয়াগুলো দেখে বোঝা যায়, নতুন আইনটি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের মধ্যে উদ্বেগ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এটি দীর্ঘ মেয়াদে থাইল্যান্ডের পর্যটনশিল্পকে প্রভাবিত করতে পারে।

নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে বারগুলোতে বসে থাকলে বার মালিকদের গুনতে হতে পারে জরিমানা। ছবি: ফ্রিপিক
নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে বারগুলোতে বসে থাকলে বার মালিকদের গুনতে হতে পারে জরিমানা। ছবি: ফ্রিপিক

সরকারের পদক্ষেপ

এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল নির্দেশ দিয়েছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন নিয়মে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে হবে। প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে অঞ্চলভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা তুলে ফেলা, যাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অ্যালকোহল পানের সময় এক রকম হয়। এর সঙ্গে পরিবেশনের অনুমোদিত সময় রাত ৪টা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা। এ ছাড়া সরকার চাইছে, আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া জানুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে সম্পন্ন করা হোক। সরকার আশা করছে, অ্যালকোহল বিক্রির সময় বাড়ানো হলে পর্যটক বৃদ্ধি পাবে। রাতের সময়টা আরও জমজমাট হবে এবং এটি রাজস্ব বাড়াতে সাহায্য করবে।

পূর্ববর্তী বিধিনিষেধ

২০২৩ সালে ব্যাংকক, ফুকেট, চোনবুরি, চিয়াং মাই ও কো সমুই অঞ্চলের বিনোদনকেন্দ্রে রাত ৪টা পর্যন্ত অ্যালকোহল বিক্রির অনুমতি ছিল। তবে নিবন্ধন ও নিয়ম মানার প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী সমস্যায় পড়তেন।

মালিক ও পর্যটকের মন্তব্য

এক পর্যটন কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন, নিয়মটি ঠিকমতো না সাজালে পর্যটকেরা আতঙ্কিত হতে পারে। পর্যটনশিল্প এখনো পুনরুদ্ধারের সময়ে রয়েছে। নতুন আইন যদি শিথিল না হয়, তাহলে শীতকালীন পর্যটন মৌসুম ক্ষতির মুখে পড়বে।

এক রেস্টুরেন্ট মালিক আরও জানান, এমন কঠোর নিয়ম পর্যটকদের আগ্রহ কমাবে। সাধারণ পর্যটকেরা থাইল্যান্ড ভ্রমণে আগ্রহ হারাবেন। এটি সরাসরি পর্যটনশিল্পে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আটক

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

ডিউটিতে ইনচার্জ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ডিএমপি

বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণের আলটিমেটাম

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুন্দর ফিগার তৈরির ডায়েট যখন মরণফাঁদ

নাহিদা আহমেদ 
মডেল: জুনি
মডেল: জুনি

ফরসা রঙের মানুষদের একসময় সুন্দর বলা হতো; কিন্তু সৌন্দর্যের সেই ধারণা বর্তমানে বদলে গেছে। এখন সুন্দর বলতে বোঝায় দেহের সুন্দর গড়নকে। সেটিকে আমরা সুস্থতা না ধরে, ধরে নিয়েছি একটা নির্দিষ্ট মাপে, তা হলো ৩৬-২৪-৩৬। এটা যেন সব নারীর আরাধ্য ফিগার। কিন্তু ফিগার বাগে আনতে কিংবা বাড়তি ওজন কমানোর দৌড়ে আমরা কত দূর যাচ্ছি, কীভাবে যাচ্ছি, আর এর ফলটাই-বা কী?

সম্প্রতি এক ইনফ্লুয়েন্সার ও মেকআপ আর্টিস্টের মৃত্যুর ঘটনায় হয়তো এসব প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে রয়েছে। মাত্র ৬ মাসে ১২২ কেজি থেকে ৪২ কেজি ওজন কমিয়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অস্বাস্থ্যকর ওম্যাড ডায়েট কিংবা ওয়ান মিল আ ডে ডায়েটের ফলে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে তাঁকে হার মানতে হয়। অতিরিক্ত ওজন হওয়ার কারণে তিনি নানাভাবে বডিশেমিংয়ের শিকার হয়েছিলেন বলে বিভিন্ন সংবাদে উঠে এসেছে।

ওজন কমানোর ডায়েটে রয়েছে যে ধরনের ঝুঁকি

তিনি ওজন কমানোর জন্য বেছে নিয়েছিলেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ‘ট্রেন্ড ওম্যাড ডায়েট’। ইংরেজিতে যাকে বলে ওএমএডি (ওম্যাড) বা ওয়ান মিল আ ডে। ওম্যাড ডায়েট হলো, দিনে ২৩ ঘণ্টা না খেয়ে থেকে নির্দিষ্ট সময়ে ১ ঘণ্টার মধ্যে সারা দিনের দরকারি খাবার খাওয়া। এই কঠিন ডায়েটের কারণে শরীরে ক্যালরির ঘাটতি হয়, ফলে দ্রুত ওজন কমে।

তবে এ পর্যন্ত যা জানা গেছে, তা হলো তিনি অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য নিজেই ওম্যাড ডায়েট শুরু করেছিলেন। এতে অনেকটা ওজন তাঁর কমেছিল ঠিকই; কিন্তু পরবর্তী সময়ে নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। এরপর হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন; কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি।

ওম্যাড ডায়েটের ফলে বিপাকক্রিয়ার হার এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। তা ছাড়া ডায়েটের ফলে দেহে ভিটামিনের ঘাটতি হয়। ফলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে যায়। চুল পড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত মাসিকের সমস্যাও দেখা যায়। পাশাপাশি শরীরে স্ট্রেস হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস বা হৃদ্‌রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। সারা দিন না খেয়ে একসঙ্গে অনেক খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে বা কমে যেতে পারে, যা কখনো কখনো মারাত্মক জটিলতা কিংবা মৃত্যুঝুঁকি সৃষ্টি করে।

মডেল: সূর্য । ছবি: মঞ্জু আলম
মডেল: সূর্য । ছবি: মঞ্জু আলম

সৌন্দর্যের জন্য ওজন কমাতে যা জেনে রাখা জরুরি

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, দেহের চাহিদামতো সঠিক খাদ্যতালিকা মেনে চলা। তখন ওজন কমানোর জন্য কোনো একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে। পুষ্টিবিদ রক্তে শর্করার মাত্রা, কোলেস্টেরলের মাত্রা, লিভার ও কিডনির সুস্থতা, রক্তচাপের গতি, হরমোন অসমতা ইত্যাদি বিবেচনা করে বডি মাস ইনডেক্স কত হওয়া উচিত, তা জানিয়ে খাদ্যতালিকা তৈরি করে দেবেন। প্রত্যেক মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেমন আলাদা, তেমনি তাঁদের মেটাবলিজম বডি টাইপও আলাদা। তাই যেকোনো ধরনের খাদ্যে পরিবর্তন আনতে হলে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া বা বিভিন্ন অ্যাপস দেখে ডায়েট করলে আপনি উপকৃত হবেন, তা কিন্তু নয়। সাময়িক ফল পেলেও দীর্ঘ মেয়াদে শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এমনকি পরবর্তী সময়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ডায়েট করার উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত

ডায়েটের উদ্দেশ্য হলো শরীর সুস্থ রাখা। না খেয়ে কিংবা ভুল খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার মাধ্যমে কখনোই সেটা হতে পারে না। তবে সমস্যা হলো, শুধু অনলাইন ডায়েট প্ল্যান কিংবা ইউটিউব দেখে যোগব্যায়াম করার মাধ্যমে সুস্থতা অর্জন করা সম্ভব নয়। ওয়েলনেস ইনফ্লুয়েন্সারদের ভিডিও দেখে সেই লাইফস্টাইল নিজের করে নেওয়ার মধ্যেও বিশাল সমস্যা রয়েছে। এতেও পরবর্তী সময়ে ভয়াবহ স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি যেতে পারে।

আবার ভুল খাবার বেছে নিচ্ছেন না তো

বাজারে এখন নানা ধরনের স্লিমিং টি বা জুস পাওয়া যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এক মাসে ৭ থেকে ৯ কেজি পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব হবে সেসব জুস পান করলে; বিশেষ করে নারীরা এসব স্লিমিং টি ও জুস পানে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কিন্তু এসবে গা ভাসিয়ে সুস্থতা ও সৌন্দর্য কোনোভাবেই পাওয়া যায় না। নিজের শরীর বুঝতে হবে। আপনার শরীর কী চায়, তা নানা পরীক্ষার মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন।

লাল ও নীল বেরি জাতীয় ফল দিয়ে সাজানো ওট মিল, দামি কিনোয়া, অ্যাভোকাডো আর রঙিন সালাদসহ নামীদামি নানা খাবার রিলস কিংবা ভিডিওতে দেখতে সুন্দর লাগে। তবে আমাদের দেশে এগুলোর দাম আকাশছোঁয়া। তবে স্বীকার করতে হবে, এ ধরনের খাবার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত বাঙালি রান্নাঘরের জন্য খুবই বেমানান। আবার আবহাওয়া ও জলবায়ুর সঙ্গে এসব খাবার শরীরে কতটা উপযোগী, সেটাও প্রশ্ন।

তাই সোশ্যাল মিডিয়া দেখে ডায়েট করাটা ভীষণ বোকামি। ডায়েট যদি করতেই হয়, তাহলে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে দেশীয় সহজপ্রাপ্য ঘরের সাধারণ খাবার দিয়ে তালিকা বানিয়ে সেটা মেনে চলুন। ডায়েটকে এত কঠিন ও ব্যয়বহুল করার মানে নেই।

লেখক: পুষ্টিবিদ, ফরাজি হাসপাতাল, বারিধারা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আটক

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

ডিউটিতে ইনচার্জ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ডিএমপি

বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণের আলটিমেটাম

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘরোয়া উপায়ে যেভাবে অ্যালোভেরা জেল তৈরি করবেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
অ্যালোভেরা ত্বক আর্দ্র করে, সার্বিক সুস্থতায় কাজে দেয়। ছবি: ফ্রিপিক
অ্যালোভেরা ত্বক আর্দ্র করে, সার্বিক সুস্থতায় কাজে দেয়। ছবি: ফ্রিপিক

শীত এলেই ত্বক টানটান লাগে। এ ছাড়া নাকের পাশ শুকিয়ে যায়, ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হয়, চুলেও রুক্ষ ভাব বাড়ে। আবহাওয়ার কারণে শরীরের আর্দ্রতা কমে যায় বলে এই সমস্যাগুলো দেখা দেয়। এই মৌসুমে খুব ভালো কাজ করে অ্যালোভেরা জেল। এটি যেমন ত্বক আর্দ্র করে, তেমনি সার্বিক সুস্থতায়ও কাজে দেয়। দোকানে থাকা জেলে অনেক সময় সুগন্ধি আর রাসায়নিক মেশানো থাকে। কিন্তু ঘরে বানালে জেল হয় একদম তাজা ও প্রাকৃতিক।

ঘরে অ্যালোভেরা জেল বানানোর ধাপ

সঠিক পাতা বেছে নিন

ভালো ফল পেতে মোটা, সবুজ ও পরিপক্ব অ্যালোভেরা পাতা নিন। পরিপক্ব পাতায় জেলের পরিমাণ বেশি থাকে এবং এর উপকারিতাও বেশি।

হলদে তরল বের হতে দিন

পাতা কাটলেই হলুদ রঙের আঠালো তরল বের হয়। এটিকে ল্যাটেক্স বলা হয়, যা অনেকের ত্বকে জ্বালাপোড়া বা অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে। তাই পাতা নিচের দিকে ঝুলিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট রেখে দিন। হলদে অংশ গলে বের হয়ে গেলে পাতাটি পরিষ্কার পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিন।

পাতার খোসা ছাড়ান

পাতা ধোয়ার পর সেটি লম্বা করে মাঝ বরাবর রাখুন। দুই পাশে তীক্ষ্ণ কাঁটার মতো অংশ থাকে। সেগুলো প্রথমে ছুরি দিয়ে পাতলা করে কেটে ফেলে দিন। এবার পাতার এক পাশের শক্ত সবুজ খোসাটা ছুরি বা ভেজিটেবল পিলার দিয়ে তুলে ফেলুন। খোসা উঠতেই ভেতরের স্বচ্ছ, নরম জেল দেখা যাবে। চামচ দিয়ে জেল তুলে নিন।

জেল ব্লেন্ড করুন

জেল ব্লেন্ডারে দিন এবং ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড ব্লেন্ড করুন। এতে জেলটি খুবই নরম ও মসৃণ হবে, যা ত্বক ও চুলে ব্যবহার করতে পারবেন।

অ্যালোভেরা জেলের ৯৮ শতাংশই পানি, ফলে এটি শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ছবি: ফ্রিপিক
অ্যালোভেরা জেলের ৯৮ শতাংশই পানি, ফলে এটি শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ছবি: ফ্রিপিক

সংরক্ষণ করুন

এয়ারটাইট বয়ামে জেল ঢেলে নিন। ফ্রিজে রাখলে এটি এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে।

সংরক্ষণ করতে প্রিজারভেটিভ যোগ করুন

জেল যদি ১ থেকে ২ মাস ধরে ব্যবহার করতে চান, তাহলে ভিটামিন সি বা ভিটামিন ই মিশিয়ে নিন। প্রতি ১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ জেলে ৫০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি অথবা ৪০০ আইইউ ভিটামিন ই পাউডার যোগ করুন।

অ্যালোভেরার ৭টি প্রধান উপকারিতা

শুষ্ক ত্বক আর্দ্র রাখে

শীতে ত্বক দ্রুত আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। অ্যালোভেরা জেলের ৯৮ শতাংশই পানি, ফলে এটি ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এই জেল ব্যবহার করলে ত্বক নরম হয়।

রুক্ষ ও ফাটল ধরা ত্বক শান্ত করে

শীতে হাত-পা ফেটে যাওয়া খুব সাধারণ ঘটনা। অ্যালোভেরা জ্বালাপোড়া কমায় এবং দ্রুত ক্ষত শুকাতে সাহায্য করে।

ব্রণ ও দাগ কমাতে সহায়ক

অ্যালোভেরার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহার করলে ব্রণের লাল ও ফোলা ভাব এবং দাগ কমে। তেলতেলে ত্বকের জন্য এটি আদর্শ প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার।

চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে

শীতের বাতাসে চুল শুকনো হয়ে যায়। অ্যালোভেরা মাথার ত্বকে আর্দ্রতা ফিরিয়ে দেয়, খুশকি কমায়, চুলের গোড়া শক্ত করে। আমলা, পেঁয়াজের রস বা নারকেল তেলের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক বানিয়ে চুলে ব্যবহার করলে চুল নরম হয় এবং ঝলমলে দেখায়।

ঠোঁট, কনুই, গোড়ালির রুক্ষতা দূর করে

যে জায়গাগুলো বেশি শুকায়; যেমন ঠোঁট, কনুই, গোড়ালি—এসব জায়গায় অ্যালোভেরা খুব ভালো কাজে দেয়। রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে পরদিন সকালে ভালো ফল মিলবে।

মুখের স্বাস্থ্যে উপকার

অ্যালোভেরার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ দাঁতের প্লাক কমাতে সাহায্য করে। মুখের ভেতরের জ্বালাপোড়াও কমাতে পারে।

হজমে উপকার

অ্যালোভেরা জুস অনেকের ক্ষেত্রে অম্বল, গ্যাস্ট্রিক কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। কিছু গবেষণা বলছে, আইবিএসের মতো সমস্যা থাকলেও অ্যালোভেরা সাময়িক আরাম দিতে পারে। তবে হজমের জন্য নিয়মিত খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।

ব্যবহারের আগে কিছু সতর্কতা

প্রথমবার ব্যবহার করার আগে শরীরের ছোট কোনো জায়গায় পরীক্ষা করে নিন।

গর্ভবতী হলে বা দীর্ঘমেয়াদি অসুখ থাকলে এটি ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

জেল সব সময় ফ্রিজে রাখুন।

খুব সংবেদনশীল ত্বকে হলে ভিটামিন ই একটু কম ব্যবহার করুন।

সূত্র: হেলথশট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আটক

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

ডিউটিতে ইনচার্জ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ডিএমপি

বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণের আলটিমেটাম

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত