Ajker Patrika

মুদিদোকান থেকে বিশ্বমঞ্চে যে দুটি প্রতিষ্ঠান

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আলডি ও স্যামসাং। ছবি: কোলাজ
আলডি ও স্যামসাং। ছবি: কোলাজ

'ছোট ছোট বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল,/গড়ে তোলে মহাদেশ, সাগর অতল...' —লাইনগুলো আমরা বহুবার শুনেছি জীবনে। যেসব মানুষ এ লাইনগুলোর মর্মার্থ জীবনে প্রয়োগ করেছে, তারা ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে। সেই সব মানুষের প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে এমন কিছু প্রতিষ্ঠান, যারা আক্ষরিক অর্থেই বিন্দু বিন্দু করে সিন্ধু তৈরি করে এখন বিশ্বমঞ্চ দখল করে নিয়েছে। তেমনি দুটি প্রতিষ্ঠান আলডি ও স্যামসাং।

আক্ষরিক অর্থে এ দুটি প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়েছিল পাড়ার মোড়ের একতলা মুদিদোকানের মতো জায়গা থেকে। আলডি ও স্যামসাং দুটি ভিন্ন মহাদেশের প্রতিষ্ঠান। আলডি ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত জার্মানির একটি ছোট দোকান। আর স্যামসাং ছিল কোরিয়ার নুডলস ও শুকনা মাছ বিক্রয়কারী ছোট আরেকটি দোকান। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারা নিজেদের শ্রম ও মেধা দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।

স্যামসাং

স্যামসাংয়ের ইতিহাসটা আসলে মাছ বিক্রেতা থেকে টেক জায়ান্ট হয়ে ওঠার গল্প।

দক্ষিণ কোরিয়ার সিওল শহরের স্যামসাং টাউনে স্যামসাং-এর সদর দপ্তর। ছবি: উইকিপিডিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার সিওল শহরের স্যামসাং টাউনে স্যামসাং-এর সদর দপ্তর। ছবি: উইকিপিডিয়া

১৯৩৮ সালের ১ মার্চ। সে সময়কার তেগু আর বর্তমান দক্ষিণ কোরিয়ার দেগু শহরে লি বিউং-চুল ‘স্যামসাং স্যাংগু’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। মূলধন মাত্র ৩০ হাজার ওন অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা আর কর্মচারী প্রায় ৪০ জন। স্যামসাং শব্দের অর্থ তিনটি তারা। প্রতিষ্ঠানটির পণ্য কি ছিল জানেন? ছিল শুকনা মাছ, নুডলস আর কিছু মুদি-মনিহারি দ্রব্য। সেই দোকানের চারপাশে থাকত বাইসাইকেল, ভেতরে কাঠের টেবিল আর টালি দেওয়া ছাদ। এমনই ছিল ভবিষ্যতে পৃথিবীময় সাম্রাজ্য তৈরি করা এক প্রতিষ্ঠানের শুরু!

লি ছিলেন স্বপ্নবাজ মানুষ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিজের দোকান আরও প্রসারিত করেন। সুতা, চিনি, বিমা, ব্যাংক—যেখানে সুযোগ ছিল, সেখানেই পৌঁছে যায় স্যামসাং। ১৯৬৯ সালে তিনি নিলেন এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। প্রতিষ্ঠা করলেন স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। শুরুটা সাদা-কালো টেলিভিশন দিয়ে। এরপর এল ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, ভিডিও রেকর্ডার। বাড়তে বাড়তে সেই তালিকা ২০২৫ সালে কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, সেটা বুঝে নিন। স্যামসাং ১৯৭৪ সালে সেমিকন্ডাক্টর ব্যবসায় পা রেখে শুরু করে নিজেদের নতুন অধ্যায়।

১৯৩৮ সালে সে সময়কার তেগু আর বর্তমান দক্ষিণ কোরিয়ার দেগু শহরে লি বিউং-চুল এই ছোট্ট দোকান থেকে শুরু করেছিলেন স্যামসাং নামের প্রতিষ্ঠানটি। ছবি: উইকিপিডিয়া
১৯৩৮ সালে সে সময়কার তেগু আর বর্তমান দক্ষিণ কোরিয়ার দেগু শহরে লি বিউং-চুল এই ছোট্ট দোকান থেকে শুরু করেছিলেন স্যামসাং নামের প্রতিষ্ঠানটি। ছবি: উইকিপিডিয়া

১৯৮৭ সালের ১৯ নভেম্বর মারা যান স্যামসাংয়ের প্রতিষ্ঠাতা লি বিউং-চুল। তত দিনে এটি পৃথিবীময় ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। এরপর প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার হন তাঁর ছেলে লি কুন-হি। লি বিউং-চুলের ছোট মেয়ে লি মিয়ং-হি এখন শিনসেগায়ে গ্রুপের প্রধান।

১৯৯৩ সাল ছিল স্যামসাংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বছর। সে বছর প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট লি কুন-হি ঘোষণা দেন, সব বদলে ফেলবেন তিনি। এই মান উন্নয়ন নীতিতে প্রতিষ্ঠানটি চূড়ান্ত রূপান্তরের পথে পা রাখে। ২০০৯ সালে আসে স্যামসাংয়ের মোবাইল ফোন গ্যালাক্সি সিরিজ। ২০১২ সালে সে সময়কার জায়ান্ট নকিয়াকে টপকে স্যামসাং হয়ে ওঠে বিশ্বের বৃহত্তম স্মার্টফোন নির্মাতা। আজ শুধু মোবাইল ফোন নয়, ঘরের জিনিস থেকে শুরু করে প্রযুক্তি ব্যবসার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে স্যামসাং।

আলডি

মানুষের কম দামে জিনিসপত্র কেনার প্রবণতা আর দুই ভাইয়ের দূরদর্শী চিন্তার গল্প এক সুতায় বাঁধলে পাওয়া যায় আলডির ইতিহাস।

বাঁয়ে আলডি জ্যুড ও ডানে আলডি নর্ড এর লোগো। ছবি: উইকিপিডিয়া
বাঁয়ে আলডি জ্যুড ও ডানে আলডি নর্ড এর লোগো। ছবি: উইকিপিডিয়া

১৯৪৫ সালের কথা। যুদ্ধবিধ্বস্ত জার্মানি তখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ব্যস্ত। এমন সময় কার্ল আলব্রেখট ও থিও আলব্রেখট নামের দুই ভাই তাঁদের মায়ের চালানো ছোট্ট মুদিদোকানটি পরিচালনার ভার নেন। দোকানটি খোলা হতো সকালে, চলত সন্ধ্যা পর্যন্ত। সেই দোকানে দুই ভাই দাঁড়িয়ে থেকে চাহিদা বুঝে গ্রাহকদের হাতে পণ্য তুলে দিতেন।

দুই ভাইয়ের মধ্যে কার্ল ছিলেন বড় আর থিও ছোট। কার্ল ও থিও যথাক্রমে ১৯২০ ও ১৯২২ সালে জন্মেছিলেন। তাঁদের বাবা ছিলেন একজন খনি শ্রমিক। হাঁপানিজনিত অসুস্থতায় বাবার চাকরি চলে গেলে কার্ল ও থিওর মা মুদিদোকান চালু করেন। থিও মায়ের সঙ্গে কাজ করতেন। আর কার্ল অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি সেনাবাহিনীতেও কাজ করেন। ১৯৪৫ সালে তাঁরা তাঁদের মায়ের দোকানের দায়িত্ব নেন নিজেদের কাঁধে এবং পরবর্তী পাঁচ বছরে অর্থাৎ ১৯৫০ সালের মধ্যে তাঁরা ১৩টি দোকানের মালিক হয়ে যান।

এভাবে চলতে চলতে কার্ল ও থিও ভাবলেন, অন্য কী করা যায়। একেবারে নতুন কিছু, যা কেউ করেনি! খাতাকলম নিয়ে বসে গেলেন দুই ভাই। দেখলেন, যদি পণ্যের সংখ্যা সীমিত করা হয় আর বিজ্ঞাপনের পেছনে টাকা ঢালা না হয়, তাহলে দোকানটা একদম সরল আর ছিমছাম করে ফেলা যায়। সেটা করতে পারলে পণ্যের দাম কমানো সম্ভব। তাঁরা বুঝে গেলেন, মানুষ কম দামে পণ্য চায়। তাদের অনেক ধরনের পণ্য না হলেও চলে।

এই ব্যবসায়িক দর্শনের ওপর ভিত্তি করে জন্ম নিল জার্মান সুপারমার্কেট চেইন আলডি। আলব্রেখট ও ডিসকাউন্ট শব্দটির প্রথম অক্ষর দিয়ে তৈরি করা হলো আলডি নামটি। ছোট শহরের ছোট দোকান থেকে মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে জার্মানিতে তাঁদের শাখা হয়ে উঠল ৩০০।

আলডির আসল খেলা শুরু হয় ১৯৬০ সালে। সে বছর আলাদা হয়ে গেলেন কার্ল ও থিও। নিজেদের দোকানে সিগারেট বিক্রি করবেন কি না, সেই বিতর্ক থেকে আলাদা হয়ে যান দুই ভাই। এর পরেই জন্ম নেয় থিওর মালিকানায় আলডি নর্ড আর কার্লের মালিকানায় আলডি জ্যুড। ১৯৬৬ সাল থেকে প্রতিষ্ঠান দুটি আর্থিক ও আইনগতভাবে পৃথক হয়ে যাত্রা শুরু করে। দুটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠান হলেও আলডি পৌঁছে যায় বিভিন্ন দেশে। ১৯৬৭ সাল থেকে প্রতিষ্ঠান দুটি আন্তর্জাতিক অধিগ্রহণ শুরু করে।

প্রতিষ্ঠান আলাদা, কিন্তু মূলমন্ত্র একটাই—যা শুরু থেকে ছিল। কার্ল ও থিওর মূলমন্ত্র ছিল, কম ঝামেলায় দরকারি জিনিস যথাসম্ভব কম দামে গ্রাহকদের হাতে তুলে দেওয়া। দ্রুত চেক আউট, প্যাকেজে একাধিক বারকোড, প্যাকেটজাত পণ্য—সব মিলিয়ে আলডি হয়ে উঠেছিল ‘নো‑ফ্রিল’ রেভল্যুশনের ব্র্যান্ড। আর এই দর্শনের জোরেই আজ বিশ্বের নানান দেশে ১২ হাজারের বেশি স্টোর আছে আলডির।

সূত্র: দ্য সান, দ্য গার্ডিয়ান, ইয়াহু টেক, লাভ ফুড

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেমিককে লুকিয়ে রাখছেন নারীরা, কারণ কি শুধুই গোপনীয়তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি: ভোগ ম্যাগাজিনের সৌজন্যে
প্রতীকী ছবি: ভোগ ম্যাগাজিনের সৌজন্যে

ইনস্টাগ্রামে তাওয়ানা মুসভাবুরির অনুসারীর সংখ্যা ৩৩ হাজার। তাঁর অনুসারীরা হয়তো মনে করেন, তরুণ এই নারী ইনফ্লুয়েন্সারের জীবন সম্পর্কে তাঁরা সব জানেন। কিন্তু বেশির ভাগই জানেন না, তাঁর প্রেমিক দেখতে কেমন।

২৪ বছর বয়সী তাওয়ানার প্রোফাইলে তাঁর প্রেমিকের উপস্থিতি বোঝা যায় শুধুই ইঙ্গিতে—হয়তো কোনো ছবিতে মাথার পেছন দিক কিংবা রাতের ডিনারে দুই গ্লাস ওয়াইনের ঠোকাঠুকি। কিন্তু প্রেমিকের মুখ প্রকাশের কোনো ইচ্ছে তাঁর নেই।

তাওয়ানা বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে আমি শক্তিশালী ও স্বনির্ভর হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে চাই। যেন মনে হয়—আমার সবকিছু আমি নিজেই করেছি।’

অনলাইনে তাওয়ানার প্রেমিকের কোনো স্থান নেই। তাঁর ভাষায়, ‘আমার জীবনের কোনো অংশ পুরুষের সাহায্যে গড়ে উঠেছে—এমন ধারণা আমি দিতে চাই না। নিজের অর্জন নিজের বলেই দেখাতে ভালো লাগে।’

এমনকি সম্পর্ক আরও গভীর হলেও তিনি এই মত পাল্টাবেন না। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাগদান হয়ে গেলেও আমি সম্পর্ক নিয়ে পোস্ট করব না।’

এখন প্রশ্ন হতে পারে, বয়ফ্রেন্ড থাকা কি এখন বিব্রতকর?

তাওয়ানার মতো অনেক নারীই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের সম্পর্ক ‘হার্ড লঞ্চ’ বা প্রকাশ করতে অনীহা দেখাচ্ছেন। এই প্রবণতা এতটাই আলোচনায় এসেছে যে, গত মাসে ব্রিটিশ ভোগ ম্যাগাজিন প্রকাশ করে একটি ভাইরাল নিবন্ধ, যার শিরোনাম ছিল ‘বয়ফ্রেন্ড থাকা কি এখন বিব্রতকর?’ (Is Having a Boyfriend Embarrassing Now?)

সেই লেখায় সাংবাদিক চান্তে জোসেফ বলেন, এখনকার তরুণীরা তাঁদের সম্পর্কে নতুনভাবে ভাবছেন। তাঁরা চান প্রেমিক থাকার সামাজিক মর্যাদা বা সুবিধা পেতে, কিন্তু একই সঙ্গে ‘বয়ফ্রেন্ড-অবসেসড’ বা প্রেমিকনির্ভর বলে মনে হোক—তা চান না।

জোসেফ লিখেছেন, এখন কারও প্রেমিককে নিয়ে ঘন ঘন পোস্ট করা অনেকের কাছে ‘ক্রিঞ্জ’ বা বিব্রতকর মনে হয়, এমনকি ‘সাংস্কৃতিকভাবে অপ্রয়োজনীয়’ বলেও ধরা হয়।

জোসেফ বলেন, আজকের সমাজে প্রেমিক থাকা আর বড় কোনো বিষয় নয়। এটি নারীর পরিচয়কে বড়ও করে না, কমায়ও না।

বিবিসি রেডিও–ফোরের উইমেনস আওয়ারে জোসেফ বলেন, ‘অনেক নারী বলেন, বাগ্‌দত্তা থাকা ভালো বা স্বামী থাকা ভালো। কিন্তু ব্যাপারটা আসলে এমন নয়, আমাদের পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্কের সংজ্ঞা নতুনভাবে ভাবতে হবে।’

দক্ষিণ লন্ডনের কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও লেখক স্টেফানি ইয়েবোয়া বলেন, একসময় ইনস্টাগ্রামে নিজের প্রেমিকের ছবি পোস্ট করার সিদ্ধান্তে তিনি অনুতপ্ত হয়েছেন। তিনি ভোগ ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘আমার বয়ফ্রেন্ডের ছবি পোস্ট করার পর প্রচুর মানুষ ইনবক্সে জানালেন, তাঁরা আমাকে আনফলো করেছেন। কারণ, আমি প্রেমে পড়েছি—এটা তাঁদের ভালো লাগেনি।’

ইয়েবোয়া স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘সেদিন প্রায় এক হাজার মানুষ আমাকে আনফলো করেছিল।’ তবে তিনি এটাও বোঝেন, কেন মানুষ এখন প্রেম-সম্পর্কিত কনটেন্টকে বিরক্তিকর মনে করেন।

কিংস কলেজ লন্ডনের সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. জিলিয়ান ব্রুকস মনে করেন, যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অর্থ উপার্জন করেন, তাঁদের জন্য বয়ফ্রেন্ডের ছবি পোস্ট না করা কনটেন্ট ধারাবাহিকতার প্রশ্ন। কারণ, কনটেন্টের ধারা থেকে সরে গেলে দর্শকভিত্তি বিভ্রান্ত হতে পারে।

কিন্তু শুধু ইনফ্লুয়েন্সার নয়, সাধারণ নারীরাও এখন এ বিষয়ে সতর্ক।

২৫ বছর বয়সী মিলি প্রায় পাঁচ বছর ধরে প্রেম করছেন। সম্প্রতি তাঁর বাগদানও সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি চাই না মানুষ ভাবুক, আমি আমার প্রেমিকের ওপর নির্ভরশীল কিংবা সম্পর্কটাই আমার পুরো পরিচয়।’

মিলি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের সমাজের খুবই সংকীর্ণ চিত্র তুলে ধরে। যদি আমি শুধু প্রেমিকের সঙ্গে ছবি দিই, মানুষ ভাববে আমি সম্পর্কেই ডুবে আছি।’

২০ বছর বয়সী শার্লট দুই বছর ধরে প্রেম করছেন, কিন্তু তিনি তাঁর বয়ফ্রেন্ড বা তাঁদের সম্পর্কের কোনো ছবি পোস্ট করেন না। তিনি বলেন, ‘আমাদের একসঙ্গে তেমন ছবি নেই আর যেগুলো আছে, সেগুলো ইনস্টাগ্রামে দেওয়ার মতো মনে হয় না। তা ছাড়া আমি বিশ্বাস করি, এ ধরনের সম্পর্কগুলো বন্ধুত্বের চেয়েও বেশি গোপনীয়।’

অন্যদিকে, অ্যাথেরা (ছদ্মনাম) ও তাঁর বন্ধুরা তাঁদের সম্পর্ককে ‘ইভিল আই’ বা কুনজর থেকে রক্ষা করতে ছবি পোস্ট করা থেকে বিরত থাকেন। তাঁদের বিশ্বাস, ঈর্ষা থেকে আসা কুনজর সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে।

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির সমাজ মনোবিজ্ঞানী ড. গেন্ডোলিন সিডম্যান বলেন, অনলাইনে নিজের জীবনের ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে মানুষের এখন বেশি উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। তিনি মনে করেন, এখন অনেকেই বুঝছেন, একবার কিছু অনলাইনে পোস্ট করলে তা স্থায়ী হয়ে যায়। মুছে ফেললেও পুরোপুরি তা যায় না। তাই মানুষ এখন অনেক বেশি সতর্ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নভেম্বরের ফ্রেঞ্চ মেনিকিউর

ফারিয়া রহমান খান 
পশ্চিমা ফ্যাশনে ফ্রেঞ্চ মেনিকিউরকে নতুনরূপে উপস্থাপন করা হচ্ছে। সেগুলো আমাদের দেশেও বেশ জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে। ছবি: পেক্সেলস
পশ্চিমা ফ্যাশনে ফ্রেঞ্চ মেনিকিউরকে নতুনরূপে উপস্থাপন করা হচ্ছে। সেগুলো আমাদের দেশেও বেশ জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে। ছবি: পেক্সেলস

নভেম্বর মাস মানেই শীতের আগমনী বার্তা। এ সময় হালকা শীত শীত ভাব খুব আরামদায়ক আমেজ দেয়। এই মাসে নখের যত্নে ফ্রেঞ্চ মেনিকিউরেও আনা যেতে পারে আরামদায়ক ভাব। পশ্চিমা ফ্যাশনে ফ্রেঞ্চ মেনিকিউরকে নতুনরূপে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা আমাদের দেশেও বেশ জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে। এই মেনিকিউরগুলো একাধারে উষ্ণ ও আরামদায়ক রঙের ছোঁয়ার সঙ্গে নখে একটা আভিজাত্যের চমক এনে দেয়।

চকলেট ড্রিজেল

‘কফি হাউস’ স্টাইলের এই মেনিকিউরে ক্ল্যাসিক ফ্রেঞ্চের সাদা পলিশের বদলে কফি বা মোকা রঙের পলিশ ব্যবহার করা হয়। হালকা শীতে এই রংগুলো স্নিগ্ধ ও রুচিশীল আভা তৈরি করে।

চকলেট ড্রিজেল
চকলেট ড্রিজেল

লাতে নেইল

এটি কফি রঙের আরেকটা চমৎকার ব্যবহার। এখানে ন্যুড বেসের ওপর কফি রঙের টিপস থাকে। টিপসের বেইসের কাছে হালকা ক্রিম রঙের একটা পাতলা বর্ডার দেওয়া হয়, যা দেখতে অনেকটা ফেনার মতো লাগে। এই স্টাইল নখের লুকে একটা কোমল ছোঁয়া দেয়।

লাতে নেইল
লাতে নেইল

অনিক্স ফ্রেঞ্চ টিপস

যাঁরা হালকা বা ন্যুড রঙের পরিবর্তে একটু গাঢ় রং পছন্দ করেন, এই স্টাইল তাঁদের জন্য। এই লুকে নখের টিপসে সাদা রঙের বদলে অনিক্স বা গাঢ় কালো রং ব্যবহার করা হয়। এটি মার্জিত ও আধুনিক লুক দেয় এবং কর্মজীবী নারী থেকে শুরু করে যেকোনো ফ্যাশন-সচেতন মানুষের জন্য এই লুক দারুণ মানিয়ে যায়।

অনিক্স ফ্রেঞ্চ
অনিক্স ফ্রেঞ্চ

ব্ল্যাক চেরি

এই লুকে নখের ডগায় গাঢ় মেরুন বা কালো চেরির মতো রং ব্যবহার করা হয়, যা বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়। এই ‘ভ্যাম্পি’ শেড নখে নিয়ে আসে একধরনের আভিজাত্য ও নাটকীয়তা। এই স্টাইল যেকোনো অনুষ্ঠানে খুব সুন্দর মানিয়ে যায়।

ব্ল্যাক চেরি
ব্ল্যাক চেরি

ক্ল্যাসিক ফ্রেঞ্চ মেনিকিউর

এত এত নতুন স্টাইলের ভিড়েও মেনিকিউরের এই ক্ল্যাসিক স্টাইলের আবেদন এখনো অটুট রয়েছে। ন্যুড বেইজে সাদা টিপসের এই মেনিকিউর ‘স্টিলথ ওয়েলথ’ বা বনেদি আভিজাত্যের প্রতীক। এটি একেবারে ক্ল্যাসিক একটা লুক এবং যেকোনো সময় ও অনুষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত।

ক্লাসিক ফ্রেঞ্চ মেনিকিউর
ক্লাসিক ফ্রেঞ্চ মেনিকিউর

মেটালিক চারকোল টিপস

এই লুকে নখের সাজে টিপসে ব্যবহার করা হয় চারকোল রঙের মেটালিক বা ধাতব পলিশ। এই স্নিগ্ধ মেটালিক ছোঁয়া নখে দেয় আধুনিক রূপ, যা এই শীতকালের জন্য খুব মানানসই।

মেটালিক চারকোল টিপস
মেটালিক চারকোল টিপস

রিচ জেলি গ্লিটার

এই লুকে নখের টিপসে ব্যবহার করা হয় গাঢ় প্লাম বা বেগুনি রং। এই লুক নখের সাজকে করে মিষ্টি, আকর্ষণীয় এবং একেবারেই ভিন্ন।

রিচ জেলি গ্লিটার
রিচ জেলি গ্লিটার

সলিড গোল্ড টিপস

যাঁরা একটু ভিন্ন ধাঁচের মেনিকিউর পছন্দ করেন, তাঁরা নখের বেইজে ক্রস হ্যাচ নকশা এবং টিপসে সোনালি রং ব্যবহার করে সম্পূর্ণ অনন্য ফ্রেঞ্চ মেনিকিউর লুক তৈরি করতে পারেন। এই লুক একই সঙ্গে আকর্ষণীয় এবং বোল্ড।

সলিড গোল্ড টিপস
সলিড গোল্ড টিপস

সূত্র ও ছবি: বার্ডি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জলপাইয়ের ঝাল মিষ্টি মোরব্বা

ফিচার ডেস্ক
ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা
ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা

আমের মোরব্বা তো বহুবার তৈরি করেছেন। এখন পর্যন্ত যদি জলপাইয়ের মোরব্বা তৈরি না করে থাকেন, তাহলে এখনই শিখে নিন। আপনাদের জন্য জলপাইয়ের ঝাল-মিষ্টি মোরব্বার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।

উপকরণ

জলপাই এক কেজি, চিনি এক কাপ, পাঁচফোড়ন এক টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ ও বিট লবণ স্বাদমতো, শুকনা মরিচ ভাজা গুঁড়া এক টেবিল চামচ।

প্রণালি

জলপাই ভালো করে কেচে ধুয়ে নিন। এবার জলপাই আর চিনি মাখিয়ে ম্যারিনেট করে রাখুন এক ঘণ্টা। জলপাই থেকে চিনির পানি বের হলে চুলায় কম তাপে বসিয়ে নেড়েচেড়ে রান্না করুন। ফুটে উঠলে মরিচ গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া, পাঁচফোড়ন, লবণ ও বিট লবণ দিয়ে রান্না করে হালকা শিরার মতো হয়ে এলে ভাজা শুকনা মরিচের গুঁড়া ছড়িয়ে নামিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে পরিষ্কার জীবাণুমুক্ত কাচের বয়ামে ভরে রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রপোজ করতে গিয়ে গুলিয়ে ফেলবেন, আবেগ সামলে চলুন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৫
আজকের রাশিফল: প্রপোজ করতে গিয়ে গুলিয়ে ফেলবেন, আবেগ সামলে চলুন

মেষ

আজ আপনার ভেতরের ‘র‍্যাম’ একটু বেশি ফাস্ট কাজ করবে, কিন্তু সঠিক পথে নয়। সকালে হয়তো ট্রাফিকের মাঝখানে হঠাৎ মনে হবে, আপনি ফর্মুলা ওয়ান রেসে আছেন। বসের সামনে খুব সিরিয়াস মুখে একটি জ্ঞানগর্ভ কথা বলতে গিয়ে এমন একটি ভুল শব্দ ব্যবহার করে ফেলবেন, যাতে বসের কাশি এসে যাবে। সন্ধ্যায় আপনার অতিরিক্ত এনার্জি দিয়ে বন্ধুদের এমন একটি সমস্যার সমাধান করে দেবেন, যা আদতে তাদের সমস্যাই ছিল না, ছিল স্রেফ তাদের আলস্য। সাবধান! আজ অনলাইনে কিছু অর্ডার করার আগে দুবার ভাবুন। না হলে হয়তো দেখবেন, শাড়ি কিনতে গিয়ে ভুল করে একটা সাইকেল পাম্প কিনে ফেলেছেন। গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলার সময় পকেটে হাত দিয়ে খুঁজে দেখবেন, চশমাটা কি মাথায় আছে? (অবশ্যই আছে!)

বৃষ

আজ সারা দিন মন আর পেট—এই দুইয়ের মধ্যে একটি মহাযুদ্ধ চলবে। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবেন যে ডায়েট করবেন, কিন্তু প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর ফ্রিজের দরজা আপনাআপনি খুলে যাবে। অফিসের ক্যানটিনে কেউ মিষ্টি আনলে চোখ হবে শিকারি বাজের মতো। অর্থভাগ্য মোটামুটি, তবে শখের বশে এমন একটি জিনিস কিনবেন, যা পরে দেখে মনে হবে, এই টাকা দিয়ে অন্তত ১০টা রসগোল্লা খাওয়া যেত। কাউকে ধার দেওয়ার আগে সতর্ক হন। নাহলে সেই টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য হয়তো আপনাকে মঙ্গল গ্রহের টিকিট বুক করতে হবে। ডায়েটের জন্য শুধু এক চামচ ভাত মুখে নিয়ে বাকিটা প্লেটে এমনভাবে সাজিয়ে রাখবেন, যেন সেটা আর্ট গ্যালারির বস্তু!

মিথুন

আজ আপনি এক নন, যেন দুটি মানুষ! আপনার মন একটি জিনিস ভাববে, মুখ দিয়ে বেরোবে অন্যটা। ফলে বন্ধু বা প্রেমিকার সঙ্গে যোগাযোগে মারাত্মক ভুল-বোঝাবুঝি হতে পারে। হয়তো বলতে চাইবেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’, কিন্তু মুখ দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে, ‘তোমার জুতোটা খুব পছন্দ হয়েছে।’ কেউ আজ আপনার কাছে গোপন কথা ফাঁস করতে এলে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন, কিন্তু তারপর অজান্তেই সেই গোপন কথা অন্য এক বন্ধুর কাছে বলে ফেলবেন—‘আচ্ছা, তুই কি জানিস, কী হইছে?’ একই সময়ে দুটি ভিন্ন প্ল্যান করার চেষ্টা করবেন—যার একটি থাকবে পাহাড়ে চড়ার, অন্যটি সোফায় শুয়ে সিনেমা দেখার।

কর্কট

আজ সংবেদনশীলতা চরমে থাকবে। সামান্য মশারি টানানো নিয়েও আবেগে চোখ ভিজে আসতে পারে। দুপুরে বস ফোন করে ‘হ্যালো’ বললেই মনে হবে, তিনি নিশ্চয় আপনাকে বরখাস্ত করতে চলেছেন। সারা দিন ধরে নিজের অতীত নিয়ে একটি করুণ সিনেমা বানাবেন মনে মনে, যার প্রধান চরিত্রে থাকবেন নিজেই। সন্ধ্যায় মায়ের কাছে ফোন করে একটু বেশিই ন্যাকামো করবেন। তবে সাবধানে থাকুন, শ্বশুরবাড়ির কেউ আজ আপনার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হতে পারে। তাদের জন্য বাজার করতে গিয়ে পকেটে টান পড়তে পারে। চায়ে চিনি না দিয়ে ভুলে লবণ দিয়ে ফেলবেন এবং ভাববেন, ‘আজকের দিনটা কেন এত তিতকুটে লাগছে!’

সিংহ

আজ আপনার প্রয়োজন হবে ‘স্পটলাইট’। আপনি যেখানেই যাবেন, সেখানেই চাইবেন সবাই আপনার দিকে তাকাক। অফিসে নিজের কাজ শেষ করে অন্যের ফাইল নিয়ে বসবেন এবং প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন যে আপনিই আসল বস। সন্ধ্যায় কোনো পার্টি বা অনুষ্ঠানে গেলে এমন একটি পোশাক পরবেন, যা একটু বেশিই ঝলমলে। সবাই আপনার প্রশংসা করবে ঠিকই, কিন্তু আড়ালে ফিসফিস করবে আপনার ‘অতি-নাটুকে’ ফ্যাশন সেন্স নিয়ে। কেউ আপনার কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানালে, বাঘের মতো গর্জন করবেন—তবে মনে মনে। কফির কাপ হাতে নিয়ে এমনভাবে হেঁটে যাবেন, যেন কোনো ফ্যাশন র‍্যাম্পে ক্যাটওয়াক করছেন।

কন্যা

আজ আপনার ভেতরে লুকিয়ে থাকা পরিচ্ছন্নতাকর্মী জেগে উঠবে। অন্যের টেবিলের এলোমেলো কাগজ দেখে রক্তচাপ বেড়ে যাবে। আজ আপনি এমন একটি সূক্ষ্ম ভুল ধরবেন, যা বস বা সহকর্মী তো দূরের কথা, গুগলও খুঁজে বের করতে পারবে না। বাড়িতে কেউ সামান্য ন্যাপকিন ভাঁজ করতে ভুল করলেও আপনি এক ঘণ্টার একটি ‘কেন এই ভুল’ লেকচার দিতে পারেন। তবে এই অতিরিক্ত খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আজ পিছিয়ে যেতে পারে। একটু ঢিলে দিন, জীবন এতটা পারফেক্ট হতে পারে না! ফ্রিজের ভেতরে কোন সবজিটা আগে পচে যেতে পারে, তা নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা চালাবেন।

তুলা

আজ আপনি হবেন ন্যায়ের প্রতীক—কিন্তু দুটি সমান গুরুত্বের জিনিসের মধ্যে কোনটা বেশি ন্যায্য, তা বুঝতে সারা দিন কেটে যাবে। প্রেমিক/প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে একবার মনে হবে, এটাই সঠিক, পরক্ষণেই মনে হবে, উল্টোটাই ঠিক ছিল। বন্ধুদের আড্ডায় দুটি পক্ষের মধ্যে ঝগড়া থামাতে গিয়ে এমন মন্তব্য করবেন, যা শেষমেশ আপনাকে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আরও বড় বিপদে ফেলবে। সন্ধ্যায় শপিং করতে গেলে একই রঙের দুটি জামার মধ্যে কোনটি ভালো, তা নিয়ে দোকানেই একটি মিনি-জরিপ চালু করে দেবেন। দুপুরে কী খাবেন—বিরিয়ানি না ভাত? এই সিদ্ধান্ত নিতেই আপনার লঞ্চ আওয়ার শেষ হয়ে যাবে।

বৃশ্চিক

আজ চারপাশের সবাই মনে করবে আপনি কোনো গভীর ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। আপনার সামান্য নীরবতা বা একটি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিও অন্যের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করবে। অফিসে সহকর্মীর দিকে একবার তাকালেই সে ঘাবড়ে গিয়ে ভাববে, তার গোপন ফাইল নিশ্চয় আপনি হ্যাক করে ফেলেছেন। ব্যক্তিগত জীবনকে এতটাই রহস্যময় করে রাখবেন যে, আপনার মাও আপনার সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করতে শুরু করতে পারেন। তবে সাবধানে থাকুন, অতিরিক্ত রহস্যময়তা আজ আপনাকে হাস্যকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে। লিফটে কারোর দিকে না তাকিয়ে নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত এমনভাবে তাকাবেন, যেন আপনি তার শরীরের এক্স-রে করছেন। এই বোকামিটা করবেন না।

ধনু

আজ সবকিছুর মধ্যেই মজা খুঁজে নিতে চাইবেন। অতিরিক্ত আশাবাদ আজ আপনাকে এমন কিছু কথা বলিয়ে দেবে, যা শুনে অন্যরা হতবাক হয়ে যাবে। অফিসের ফরমাল মিটিংয়ে হয়তো বলে বসবেন, ‘চলুন, কাজ ফেলে আমরা সবাই মিলে একবার কফি খেতে যাই, কাজ তো আর বয়ে যাচ্ছে না!’ ভ্রমণের জন্য মন ছটফট করবে, আর যদি কোনো কারণে সেই প্ল্যান ভেস্তে যায়, তবে আপনার সব দুঃখ ট্রাভেল ব্লগে লিখে নিজের ওপর নিজেই হাসবেন। এই সরলতা এবং হাসিখুশি মনোভাবই আজ আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি।

কোনো বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দরজা খোলা পেতেই আপনি ভাবতে শুরু করবেন, নিশ্চয় সে আপনাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য দরজা খোলা রেখেছে! কিন্তু তা নয়।

মকর

আজ সকাল থেকেই নিজেকে একজন রোবট হিসেবে কল্পনা করবেন। মাথায় শুধু কাজ আর টাকা। আবেগের জন্য আজ কোনো স্পেস নেই। বসের সামনে এতটাই সিরিয়াস থাকবেন যে বস মজা করেও কিছু বলতে সাহস পাবেন না। খরচ করার সময় আপনার হাত কাঁপবে, মনে হবে প্রতিটি পয়সা যেন জীবন থেকে চলে যাচ্ছে। বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কেনার সময়ও ক্যালকুলেটরে হিসাব করবেন, কত টাকা সে আপনাকে ভবিষ্যতে ফেরত দিতে পারে। একটু আরাম করুন! কাজের বাইরেও একটি জগৎ আছে। স্বপ্ন দেখবেন যে অফিসের প্রমোশন লেটার খাচ্ছেন। কারণ, তাতে ল্যাভেন্ডার ফুলের গন্ধ!

কুম্ভ

আজ মস্তিষ্ক হবে অদ্ভুত সব ধারণার একটি আশ্চর্য ল্যাবরেটরি। এমন সব সমাধান নিয়ে আসবেন, যা অন্যরা বুঝতেই পারবে না। বন্ধুকে একটি সহজ সমস্যা সমাধানের জন্য এমনভাবে পরামর্শ দেবেন যে, সে আরও বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। আপনার মনে হবে, আপনি একজন মহান সমাজসংস্কারক, কিন্তু দিনের শেষে হয়তো দেখবেন, আপনি শুধু আপনার বাড়ির পোষা বিড়ালটির জন্য নতুন ধরনের খাবার তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। সন্ধ্যায় আপনার এই অদ্ভুত মেজাজের কারণে জীবনসঙ্গী বা বন্ধুরা একটু বিরক্ত হতে পারে। গাধার আত্মবিশ্বাস পেয়ে বসবে—পুরোনো ছেঁড়া মোজা দিয়ে কীভাবে একটি সোলার পাওয়ারড রোবট বানানো যায়, সেই তত্ত্ব নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করবেন।

মীন

আজ দিনের অনেকটা সময় স্বপ্নের জগতে ভেসে বেড়াবেন। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেবেন গভীর মনোযোগের সঙ্গে, কিন্তু সেই উত্তর হবে আপনার কল্পনার রাজ্যের কোনো বিষয় নিয়ে। ক্লায়েন্টকে প্রেজেন্টেশন দেওয়ার সময় হয়তো হঠাৎ মনে পড়ে যাবে, কী দারুণ একটি গল্প লিখতে পারতেন! ফলে প্রেজেন্টেশনে মনোযোগ থাকবে ৪০ শতাংশ, বাকি ৬০ শতাংশ থাকবে কল্পনার রাজ্যে। সন্ধ্যায় নিজের চাবি, মোবাইল বা মানিব্যাগ এমন জায়গায় রাখবেন, যা কল্পনাও করতে পারেননি; যেমন ফ্রিজের ডিমের ট্রেতে। সিনেমা দেখতে গিয়ে কাহিনির এমন একটি অংশে আবেগে ভেসে যাবেন, যা আদতে বিজ্ঞাপন বিরতি ছিল!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত