Ajker Patrika

স্থাপত্যে জাপানের নীরব বিপ্লব: অতীতের সৌন্দর্যে গড়া ভবিষ্যৎ

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০: ১৮
ছবি: ভিসিজ কোচই জাপান (visitkochijapan)
ছবি: ভিসিজ কোচই জাপান (visitkochijapan)

স্থাপত্যের জগতে এখন সম্ভবত জাপান যুগ চলছে। কিংগো কুমা, টাডাও আন্দো, শিগেরু বানসহ আধুনিক স্থাপত্যের গুরুদের সাতটি অনন্য সৃষ্টি যেন সে কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে বিশ্ববাসীকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য ও আধুনিক প্রযুক্তি একসঙ্গে মিলে অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা তৈরি করছে জাপানিজ আধুনিক স্থাপত্যকলায়। জাপানে ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকলে এই স্থাপত্যগুলোকে নিজের চোখে দেখা মিস করবেন না।

নিশ্চুপ পাহাড়ি গ্রাম থেকে শুরু করে টোকিওর স্টেডিয়ামের কেন্দ্র পর্যন্ত প্রতিটি স্থাপত্য যেন একেকটি ধ্যানমগ্ন উপাখ্যান। সেখানে আলো-ছায়া, বাতাস, কাঠ আর কংক্রিট একসঙ্গে বলে চলে নীরব গল্প। জাপানি স্থাপত্য উচ্চকিত নয়, ধ্যানস্থ। তারা চিৎকার করে জানান দেয় না নিজেদের অস্তিত্ব। কিন্তু একবার যদি তাতে চোখ পড়ে, দেখবেন, প্রতিটি রেখা, প্রতিটি কণা, প্রতিটি আলো-ছায়া আপনাকে শেখাচ্ছে, কীভাবে শিকড়ের মধ্যে ভবিষ্যতের বীজ লুকিয়ে থাকে।

ছবি: ভিসিজ কোচই জাপান (visitkochijapan)
ছবি: ভিসিজ কোচই জাপান (visitkochijapan)

ইউসুহারা গ্রাম

কোচি পর্বতের কোলে অবস্থিত ইউসুহারা গ্রাম। গ্রামটি পরিণত হয়েছে এক স্থাপত্য ল্যাবরেটরিতে। ১৯৯৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে স্থপতি কিংগো কুমা এখানে ছয়টি ভবন নির্মাণ করেন; যেগুলো একত্রে মনে হয় যেন একটি জাপানি লেগো সেট। সেখানে টাউন হল মোড়ানো হয়েছে সিডার কাঠে। জাদুঘরটি যেন একটি ঝুলন্ত সেতু আর লাইব্রেরি দেখলে মনে হবে একটি বনভূমি। প্রতিটি ভবনে ব্যবহৃত হয়েছে প্রাচীন জাপানি নির্মাণকৌশলের আধুনিক রূপায়ণ, যা একে বানিয়েছে দেশটির অন্যতম স্থাপত্যশিল্প গ্রাম।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

চার্চ অব লাইট

ওসাকার উপশহরের এক নিঃসঙ্গ কংক্রিটের বিল্ডিং। এর মধ্যে এক আধ্যাত্মিক বিস্ময় লুকিয়ে রয়েছে। এটি মূলত একটি চার্চ। বেদির পেছনে শুধু একটি ক্রস আকৃতির ফাটল, যা দিয়ে আলো ঢুকে তৈরি করে এক অলৌকিক পরিবেশ। ওই সূক্ষ্ম আলোকরেখায় কেটে যায় অন্ধকার। সেখানে কোনো অলংকরণ নেই। এর স্থপতি টাডাও আন্দো প্রমাণ করেছেন, কোনো গির্জার বিশাল গথিক কারুকাজের চেয়ে কখনো কখনো একটি ফাটল বেশি আবেগ জাগাতে পারে।

ছবি: মাই মর্ডান মেট
ছবি: মাই মর্ডান মেট

তাকাসুগি-আন টি-হাউস

নাগানোর পাহাড়ে দাঁড়িয়ে এক অদ্ভুত ও রূপকথার মতো টি-হাউস তাকাসুগি-আন। তাকাসুগি-আন শব্দটির অর্থ ‘অতিরিক্ত উঁচু বাড়ি’। ৬ মিটার ওপরে দুটি বাদাম কাঠের গুঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে বাড়িটি। এখানে উঠতে হয় একটি মই বেয়ে। ওঠার পর সেখানে চা পানের ব্যবস্থা আছে। এটি যেন স্টুডিও জিবলির কোনো চলচ্চিত্র থেকে উঠে আসা কবিতার ঘর।

ছবি: আভাউন্ট ম্যাগাজিন (avaunt magazine)
ছবি: আভাউন্ট ম্যাগাজিন (avaunt magazine)

চিচু আর্ট মিউজিয়াম

নাওশিমা দ্বীপে স্থাপত্যের ধারণা যেন পুরোপুরি বদলে দিয়েছেন টাডাও আন্দো। চিচু মিউজিয়াম গড়া হয়েছে মাটির নিচে। এর বাইরে থেকে কোনো কিছু দৃশ্যমান নয়, শুধু আকাশ থেকে দেখা যায় কিছুটা। এখানে সূর্যালোক পড়ে কৌণিকভাবে। তাতে জীবন্ত হয়ে ওঠে ক্লদ মনেট, জেমস টারেল ও ওয়াল্টার ডি মারিয়ার কাজ। এখানকার একটি ত্রিভুজাকৃতি সিঁড়ি আপনাকে নিয়ে যাবে এমন এক ঘরে, যেখানে মনেটের জলবৃক্ষের চিত্রকর্ম যেন প্রতিনিয়ত বদলে যায় আকাশের আলোয়। এখানে স্থাপত্য নিজেই এক শিল্পকর্ম।

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

ওইটা প্রিফেকচারাল আর্ট মিউজিয়াম

ওইটা শহরে এই শিল্পকেন্দ্র তৈরি করেছেন শিগেরু বান। প্রাচীন জাপানি বাড়ি ‘এনগাওয়া’র করিডর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা হয়েছিল জাদুঘরটির নকশা। এখানে দর্শনার্থী ও শহরের মানুষের মধ্যে একটি মুক্ত সংলাপ তৈরি হয়। ওপরের কাঠামোতে ব্যবহৃত বাঁশের নকশা স্থানীয় কারুশিল্পের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বিষয়টি আধুনিক স্থাপত্যে এনেছে এক পরিশীলিত ঐতিহ্য।

ছবি: আর্চ ডেইলি
ছবি: আর্চ ডেইলি

এনওরা অবজারভেটরি

সাগামি উপসাগরের এক খাড়া পাহাড়ে বিজ্ঞান আর কবিতার যুগলবন্দী এনওরা অবজারভেটরি। এনওরা অবজারভেটরিতে চিত্রশিল্পী হিরোশি সুগিমোতো নির্মাণ করেছেন এক আধুনিক মন্দির। ১০০ মিটার দীর্ঘ গ্যালারিতে সূর্যের আলো পড়ে ধীরে ধীরে গ্রীষ্মের দিক নির্দেশ করে। অপর দিকে ৭০ মিটার একটি সুড়ঙ্গ চিরে ঢোকে শীতকালীন সূর্য। আর সমুদ্রের ওপর ভেসে থাকা কাচের মঞ্চে একটি পাথরের নো থিয়েটার।

ছবি: জাপান স্পোর্ট কাউন্সিল
ছবি: জাপান স্পোর্ট কাউন্সিল

জাপান ন্যাশনাল স্টেডিয়াম

২০২০ অলিম্পিকের জন্য নির্মিত টোকিওর এই স্টেডিয়াম যেন একটি বন। কিংগো কুমা এখানে তৈরি করেছেন কাঠ ও স্টিলের বিশাল ছাদ, যেখানে হাজার হাজার সিডার কাঠের পাত লেগেছে। এই কাঠগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল জাপানের ৪৭টি প্রদেশ থেকে। পুরোনো মন্দিরের মতো এখানে আলো-ছায়ার খেলা, শীতলতা ও মানবিকতা—সবকিছু মিশে আছে। এই ৬০ হাজার আসন বিশিষ্ট স্টেডিয়ামের প্রযুক্তিনির্ভর গম্বুজের নিচে রয়েছে ঝুলন্ত বাগান, যা একে একুশ শতকের টেকসই স্থাপত্যের প্রতীক করে তুলেছে।

সূত্র: ইএন ভোলস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুন্দর ফিগার তৈরির ডায়েট যখন মরণফাঁদ

নাহিদা আহমেদ 
মডেল: জুনি
মডেল: জুনি

ফরসা রঙের মানুষদের একসময় সুন্দর বলা হতো; কিন্তু সৌন্দর্যের সেই ধারণা বর্তমানে বদলে গেছে। এখন সুন্দর বলতে বোঝায় দেহের সুন্দর গড়নকে। সেটিকে আমরা সুস্থতা না ধরে, ধরে নিয়েছি একটা নির্দিষ্ট মাপে, তা হলো ৩৬-২৪-৩৬। এটা যেন সব নারীর আরাধ্য ফিগার। কিন্তু ফিগার বাগে আনতে কিংবা বাড়তি ওজন কমানোর দৌড়ে আমরা কত দূর যাচ্ছি, কীভাবে যাচ্ছি, আর এর ফলটাই-বা কী?

সম্প্রতি এক ইনফ্লুয়েন্সার ও মেকআপ আর্টিস্টের মৃত্যুর ঘটনায় হয়তো এসব প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে রয়েছে। মাত্র ৬ মাসে ১২২ কেজি থেকে ৪২ কেজি ওজন কমিয়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অস্বাস্থ্যকর ওম্যাড ডায়েট কিংবা ওয়ান মিল আ ডে ডায়েটের ফলে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে তাঁকে হার মানতে হয়। অতিরিক্ত ওজন হওয়ার কারণে তিনি নানাভাবে বডিশেমিংয়ের শিকার হয়েছিলেন বলে বিভিন্ন সংবাদে উঠে এসেছে।

ওজন কমানোর ডায়েটে রয়েছে যে ধরনের ঝুঁকি

তিনি ওজন কমানোর জন্য বেছে নিয়েছিলেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ‘ট্রেন্ড ওম্যাড ডায়েট’। ইংরেজিতে যাকে বলে ওএমএডি (ওম্যাড) বা ওয়ান মিল আ ডে। ওম্যাড ডায়েট হলো, দিনে ২৩ ঘণ্টা না খেয়ে থেকে নির্দিষ্ট সময়ে ১ ঘণ্টার মধ্যে সারা দিনের দরকারি খাবার খাওয়া। এই কঠিন ডায়েটের কারণে শরীরে ক্যালরির ঘাটতি হয়, ফলে দ্রুত ওজন কমে।

তবে এ পর্যন্ত যা জানা গেছে, তা হলো তিনি অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য নিজেই ওম্যাড ডায়েট শুরু করেছিলেন। এতে অনেকটা ওজন তাঁর কমেছিল ঠিকই; কিন্তু পরবর্তী সময়ে নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। এরপর হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন; কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি।

ওম্যাড ডায়েটের ফলে বিপাকক্রিয়ার হার এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। তা ছাড়া ডায়েটের ফলে দেহে ভিটামিনের ঘাটতি হয়। ফলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে যায়। চুল পড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত মাসিকের সমস্যাও দেখা যায়। পাশাপাশি শরীরে স্ট্রেস হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস বা হৃদ্‌রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। সারা দিন না খেয়ে একসঙ্গে অনেক খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে বা কমে যেতে পারে, যা কখনো কখনো মারাত্মক জটিলতা কিংবা মৃত্যুঝুঁকি সৃষ্টি করে।

মডেল: সূর্য । ছবি: মঞ্জু আলম
মডেল: সূর্য । ছবি: মঞ্জু আলম

সৌন্দর্যের জন্য ওজন কমাতে যা জেনে রাখা জরুরি

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, দেহের চাহিদামতো সঠিক খাদ্যতালিকা মেনে চলা। তখন ওজন কমানোর জন্য কোনো একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে। পুষ্টিবিদ রক্তে শর্করার মাত্রা, কোলেস্টেরলের মাত্রা, লিভার ও কিডনির সুস্থতা, রক্তচাপের গতি, হরমোন অসমতা ইত্যাদি বিবেচনা করে বডি মাস ইনডেক্স কত হওয়া উচিত, তা জানিয়ে খাদ্যতালিকা তৈরি করে দেবেন। প্রত্যেক মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেমন আলাদা, তেমনি তাঁদের মেটাবলিজম বডি টাইপও আলাদা। তাই যেকোনো ধরনের খাদ্যে পরিবর্তন আনতে হলে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া বা বিভিন্ন অ্যাপস দেখে ডায়েট করলে আপনি উপকৃত হবেন, তা কিন্তু নয়। সাময়িক ফল পেলেও দীর্ঘ মেয়াদে শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এমনকি পরবর্তী সময়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ডায়েট করার উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত

ডায়েটের উদ্দেশ্য হলো শরীর সুস্থ রাখা। না খেয়ে কিংবা ভুল খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার মাধ্যমে কখনোই সেটা হতে পারে না। তবে সমস্যা হলো, শুধু অনলাইন ডায়েট প্ল্যান কিংবা ইউটিউব দেখে যোগব্যায়াম করার মাধ্যমে সুস্থতা অর্জন করা সম্ভব নয়। ওয়েলনেস ইনফ্লুয়েন্সারদের ভিডিও দেখে সেই লাইফস্টাইল নিজের করে নেওয়ার মধ্যেও বিশাল সমস্যা রয়েছে। এতেও পরবর্তী সময়ে ভয়াবহ স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি যেতে পারে।

আবার ভুল খাবার বেছে নিচ্ছেন না তো

বাজারে এখন নানা ধরনের স্লিমিং টি বা জুস পাওয়া যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এক মাসে ৭ থেকে ৯ কেজি পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব হবে সেসব জুস পান করলে; বিশেষ করে নারীরা এসব স্লিমিং টি ও জুস পানে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কিন্তু এসবে গা ভাসিয়ে সুস্থতা ও সৌন্দর্য কোনোভাবেই পাওয়া যায় না। নিজের শরীর বুঝতে হবে। আপনার শরীর কী চায়, তা নানা পরীক্ষার মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন।

লাল ও নীল বেরি জাতীয় ফল দিয়ে সাজানো ওট মিল, দামি কিনোয়া, অ্যাভোকাডো আর রঙিন সালাদসহ নামীদামি নানা খাবার রিলস কিংবা ভিডিওতে দেখতে সুন্দর লাগে। তবে আমাদের দেশে এগুলোর দাম আকাশছোঁয়া। তবে স্বীকার করতে হবে, এ ধরনের খাবার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত বাঙালি রান্নাঘরের জন্য খুবই বেমানান। আবার আবহাওয়া ও জলবায়ুর সঙ্গে এসব খাবার শরীরে কতটা উপযোগী, সেটাও প্রশ্ন।

তাই সোশ্যাল মিডিয়া দেখে ডায়েট করাটা ভীষণ বোকামি। ডায়েট যদি করতেই হয়, তাহলে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে দেশীয় সহজপ্রাপ্য ঘরের সাধারণ খাবার দিয়ে তালিকা বানিয়ে সেটা মেনে চলুন। ডায়েটকে এত কঠিন ও ব্যয়বহুল করার মানে নেই।

লেখক: পুষ্টিবিদ, ফরাজি হাসপাতাল, বারিধারা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘরোয়া উপায়ে যেভাবে অ্যালোভেরা জেল তৈরি করবেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
অ্যালোভেরা ত্বক আর্দ্র করে, সার্বিক সুস্থতায় কাজে দেয়। ছবি: ফ্রিপিক
অ্যালোভেরা ত্বক আর্দ্র করে, সার্বিক সুস্থতায় কাজে দেয়। ছবি: ফ্রিপিক

শীত এলেই ত্বক টানটান লাগে। এ ছাড়া নাকের পাশ শুকিয়ে যায়, ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হয়, চুলেও রুক্ষ ভাব বাড়ে। আবহাওয়ার কারণে শরীরের আর্দ্রতা কমে যায় বলে এই সমস্যাগুলো দেখা দেয়। এই মৌসুমে খুব ভালো কাজ করে অ্যালোভেরা জেল। এটি যেমন ত্বক আর্দ্র করে, তেমনি সার্বিক সুস্থতায়ও কাজে দেয়। দোকানে থাকা জেলে অনেক সময় সুগন্ধি আর রাসায়নিক মেশানো থাকে। কিন্তু ঘরে বানালে জেল হয় একদম তাজা ও প্রাকৃতিক।

ঘরে অ্যালোভেরা জেল বানানোর ধাপ

সঠিক পাতা বেছে নিন

ভালো ফল পেতে মোটা, সবুজ ও পরিপক্ব অ্যালোভেরা পাতা নিন। পরিপক্ব পাতায় জেলের পরিমাণ বেশি থাকে এবং এর উপকারিতাও বেশি।

হলদে তরল বের হতে দিন

পাতা কাটলেই হলুদ রঙের আঠালো তরল বের হয়। এটিকে ল্যাটেক্স বলা হয়, যা অনেকের ত্বকে জ্বালাপোড়া বা অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে। তাই পাতা নিচের দিকে ঝুলিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট রেখে দিন। হলদে অংশ গলে বের হয়ে গেলে পাতাটি পরিষ্কার পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিন।

পাতার খোসা ছাড়ান

পাতা ধোয়ার পর সেটি লম্বা করে মাঝ বরাবর রাখুন। দুই পাশে তীক্ষ্ণ কাঁটার মতো অংশ থাকে। সেগুলো প্রথমে ছুরি দিয়ে পাতলা করে কেটে ফেলে দিন। এবার পাতার এক পাশের শক্ত সবুজ খোসাটা ছুরি বা ভেজিটেবল পিলার দিয়ে তুলে ফেলুন। খোসা উঠতেই ভেতরের স্বচ্ছ, নরম জেল দেখা যাবে। চামচ দিয়ে জেল তুলে নিন।

জেল ব্লেন্ড করুন

জেল ব্লেন্ডারে দিন এবং ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড ব্লেন্ড করুন। এতে জেলটি খুবই নরম ও মসৃণ হবে, যা ত্বক ও চুলে ব্যবহার করতে পারবেন।

অ্যালোভেরা জেলের ৯৮ শতাংশই পানি, ফলে এটি শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ছবি: ফ্রিপিক
অ্যালোভেরা জেলের ৯৮ শতাংশই পানি, ফলে এটি শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ছবি: ফ্রিপিক

সংরক্ষণ করুন

এয়ারটাইট বয়ামে জেল ঢেলে নিন। ফ্রিজে রাখলে এটি এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে।

সংরক্ষণ করতে প্রিজারভেটিভ যোগ করুন

জেল যদি ১ থেকে ২ মাস ধরে ব্যবহার করতে চান, তাহলে ভিটামিন সি বা ভিটামিন ই মিশিয়ে নিন। প্রতি ১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ জেলে ৫০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি অথবা ৪০০ আইইউ ভিটামিন ই পাউডার যোগ করুন।

অ্যালোভেরার ৭টি প্রধান উপকারিতা

শুষ্ক ত্বক আর্দ্র রাখে

শীতে ত্বক দ্রুত আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। অ্যালোভেরা জেলের ৯৮ শতাংশই পানি, ফলে এটি ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এই জেল ব্যবহার করলে ত্বক নরম হয়।

রুক্ষ ও ফাটল ধরা ত্বক শান্ত করে

শীতে হাত-পা ফেটে যাওয়া খুব সাধারণ ঘটনা। অ্যালোভেরা জ্বালাপোড়া কমায় এবং দ্রুত ক্ষত শুকাতে সাহায্য করে।

ব্রণ ও দাগ কমাতে সহায়ক

অ্যালোভেরার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহার করলে ব্রণের লাল ও ফোলা ভাব এবং দাগ কমে। তেলতেলে ত্বকের জন্য এটি আদর্শ প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার।

চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে

শীতের বাতাসে চুল শুকনো হয়ে যায়। অ্যালোভেরা মাথার ত্বকে আর্দ্রতা ফিরিয়ে দেয়, খুশকি কমায়, চুলের গোড়া শক্ত করে। আমলা, পেঁয়াজের রস বা নারকেল তেলের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক বানিয়ে চুলে ব্যবহার করলে চুল নরম হয় এবং ঝলমলে দেখায়।

ঠোঁট, কনুই, গোড়ালির রুক্ষতা দূর করে

যে জায়গাগুলো বেশি শুকায়; যেমন ঠোঁট, কনুই, গোড়ালি—এসব জায়গায় অ্যালোভেরা খুব ভালো কাজে দেয়। রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে পরদিন সকালে ভালো ফল মিলবে।

মুখের স্বাস্থ্যে উপকার

অ্যালোভেরার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ দাঁতের প্লাক কমাতে সাহায্য করে। মুখের ভেতরের জ্বালাপোড়াও কমাতে পারে।

হজমে উপকার

অ্যালোভেরা জুস অনেকের ক্ষেত্রে অম্বল, গ্যাস্ট্রিক কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। কিছু গবেষণা বলছে, আইবিএসের মতো সমস্যা থাকলেও অ্যালোভেরা সাময়িক আরাম দিতে পারে। তবে হজমের জন্য নিয়মিত খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।

ব্যবহারের আগে কিছু সতর্কতা

প্রথমবার ব্যবহার করার আগে শরীরের ছোট কোনো জায়গায় পরীক্ষা করে নিন।

গর্ভবতী হলে বা দীর্ঘমেয়াদি অসুখ থাকলে এটি ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

জেল সব সময় ফ্রিজে রাখুন।

খুব সংবেদনশীল ত্বকে হলে ভিটামিন ই একটু কম ব্যবহার করুন।

সূত্র: হেলথশট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রপোজের জন্য বিপজ্জনক দিন, গ্রহরা একগুঁয়েমিটা ছাড়তে বলছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজকের রাশিফল: প্রপোজের জন্য বিপজ্জনক দিন, গ্রহরা একগুঁয়েমিটা ছাড়তে বলছে

মেষ

আজকের দিনে স্বাস্থ্য খুবই চাঙা থাকবে, যা আপনাকে নতুন কিছু করে দেখানোর শক্তি দেবে। তবে গ্রহরা বলছে, এই অতিরিক্ত এনার্জি যেন আবার ঝগড়া-বিবাদের দিকে না যায়! কর্মক্ষেত্রে আবেগ প্রকাশে শান্ত থাকতে বলা হচ্ছে। ‘ভালো স্বাস্থ্য’ মানে হলো, আজ আপনি ব্রেকফাস্টে দুটো পরোটা বেশি খেতে পারবেন, কিন্তু সেটার সুযোগ নিয়ে বসকে তর্কযুদ্ধে হারানো যাবে না। শান্ত থাকুন। রাশিতে জেদ এবং তাড়াহুড়ো করার যে একটা গোপন চুক্তি আছে, আজ সেটাকে সাসপেন্ড করে দিন। জেদ করে আজ কোনো সিদ্ধান্ত নিলে, পরে দেখা যাবে সেটা ছিল জীবনের সবচেয়ে খারাপ ইন্টারনেট প্ল্যান।

বৃষ

আপনার ইতিবাচক মনোভাব আজ চারপাশে সুগন্ধি ছড়াবে। পুরোনো বিনিয়োগ থেকে অপ্রত্যাশিত সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। পারিবারিক জীবনে সুখ থাকবে এবং বাড়িতে কোনো অতিথির আগমন হতে পারে। পজিটিভ অ্যাটিটিউড দেখে চারপাশের মানুষজন মুগ্ধ হবে। এর মানে হলো, তারা আপনার বসের কাছে আপনার নামে নালিশ করবে না। পুরোনো বিনিয়োগ থেকে সুবিধা মানে, সেই শেয়ারটা আজ বাড়বে, যেটা আপনি বেচার কথা ভাবছিলেন না। আর বাড়িতে অতিথি আসছে? দ্রুত আপনার কফি টেবিলের নোংরা কাপগুলো আর গোপন চিপসের প্যাকেটগুলো লুকিয়ে ফেলুন! আপনার দায়িত্বশীল কথাবার্তা আজ সম্পর্ককে মধুর করবে, তবে বেশি দায়িত্ব নিতে গিয়ে যেন আবার ফ্রিজ সামলে রাখার দায়িত্বটা না নিয়ে নেন। আজ যে কোনো হঠকারিতা এড়িয়ে চলুন। তাড়াহুড়ো করে অনলাইনে জামাকাপড় কিনলে দেখবেন, সাইজ ভুল আসবেই।

মিথুন

আপনার ব্যক্তিত্ব আজ সুগন্ধির মতো কাজ করবে—মানুষ কাছে আসতে চাইবে। মানসিক সম্পর্ক উন্নত হবে এবং সামাজিক বন্ধনের জন্য দিনটি খুবই ভালো। তবে প্রেমের সম্পর্কে সন্দেহপ্রবণতা আজ তিক্ততা বাড়াতে পারে। ব্যক্তিত্বই আজ সুগন্ধি, কিন্তু মাথায় রাখবেন, সুগন্ধি অতিরিক্ত হলে সেটা কিন্তু গ্যাস-চেম্বারের মতো লাগে। দুটো মন আজ সৌভাগ্যবশত একই দিকে হাঁটছে, তাই আজ দ্বৈত সত্তা কম জ্বালাবে। সভা-সমাবেশে উৎসাহ বজায় রাখবেন, কিন্তু সন্দেহপ্রবণতা ছাড়ুন! সঙ্গী ফোন কেন দেখালেন না, তার কারণ তিনি হয়তো আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ প্ল্যান করছিলেন, অথবা শুধু একটা গেমে আপনার চেয়ে বেশি স্কোর করেছেন, আর আপনি সেটা দেখলে মানবেন না। আজ ভাই-বোনের সঙ্গে তর্কে জড়ালে সেটা ডব্লুডব্লুই ফাইটের পর্যায়ে যেতে পারে, সাবধানে!

কর্কট

আটকে থাকা পাওনা টাকা আজ ফেরত পেতে পারেন। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাগুলো আজ গতি পাবে। স্ত্রীর ব্যবহারে আজ মনে শান্তি থাকবে। নতুন কোনো প্রকল্প শুরু করার এটি দারুণ সময়। মন আজ ভালো জিনিসের প্রতি আগ্রহী হবে। এই ‘ভালো জিনিস’ সম্ভবত হয় সুস্বাদু বিরিয়ানি, নয়তো দুপুর বেলার একটা আরামের ঘুম। আটকে থাকা টাকা ফেরত আসবে—তাই দ্রুত একটা নতুন বাজেট তৈরি করুন, যেখানে অন্তত ১০ পারসেন্ট ‘অহেতুক চিন্তা’-র জন্য বরাদ্দ থাকবে। স্ত্রীর ব্যবহারে শান্তি? এটি একটি বিরল গ্রহ-সংযোগ, উপভোগ করুন! কিন্তু প্রতিবেশী শত্রু হতে পারে, তাই ঝগড়া করে তাদের ট্রিট দিতে যাবেন না। কথাবার্তায় আজ অসাবধান হবেন না। আপনার বলা একটি নির্দোষ জোকস আজ কুরুক্ষেত্র বাঁধিয়ে দিতে পারে।

সিংহ

আজকের দিনটি বিশেষ, কারণ ভালো স্বাস্থ্য আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু করতে সাহায্য করবে। অর্থ উপার্জন ভালোই হবে, কিন্তু অর্থ লেনদেনে অসতর্কতা এড়িয়ে চলতে হবে। প্রেমের প্রস্তাব দিতে যাবেন না, নিরাশ হতে পারেন। আপনি আজ আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। এতটাই ভরপুর যে, মনে হতে পারে আপনিই বিশ্বের একমাত্র সিংহ। অর্থ লেনদেনে সতর্ক থাকুন, কারণ শিক্ষিত ও ভদ্র প্রতারকদের কাছ থেকে আজ ফাঁদ আসতে পারে। মানে, আপনার যে বন্ধুটা সবসময় ‘ব্যবসা শুরু করব’ বলে আপনার থেকে টাকা নেয়, তাকে এড়িয়ে চলুন। প্রেমের প্রস্তাব দিতে গেলে ‘না’ শুনতে হতে পারে, তাই তার বদলে বাড়িতে বসে ক্যাট ভিডিও দেখুন, যা আপনার অহংকারে আঘাত করবে না। আগুন থেকে সাবধান! রান্না করতে গিয়ে যদি আপনার রাজকীয় ডিনার পুড়ে যায়, নিজেকে দোষ দেবেন না।

কন্যা

একগুঁয়েমি দূর করুন, নইলে নিছক সময় নষ্ট হতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে। তবে আজ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যায় পড়তে পারেন এবং সর্দি-শ্লেষ্মার সমস্যা ভোগাতে পারে। গ্রহরা বলছে একগুঁয়েমি ছাড়তে—যেমনটা হয়তো আপনার কম্পিউটারকে বলছে—কিন্তু কেউই শোনার পাত্র নয়। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা হবে, তাই পারফেকশনিস্ট স্বভাবকে একটু বশে রাখুন, তাদের সামনে সবকিছু নিখুঁত করার চেষ্টা করতে গিয়ে সময় শেষ করে দেবেন না। সর্দি-শ্লেষ্মা হতে পারে, কারণ আপনার শরীর হয়তো এত নিখুঁত অর্গানাইজেশনের স্ট্রেস আর নিতে পারছে না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সমস্যা হলে, আজ বাজার থেকে কী কিনবেন, সেটাও বন্ধুকে জিজ্ঞেস করে নিন। লটারি থেকে অর্থপ্রাপ্তির যোগ আছে। তবে লটারি জেতার পর লটারির কাগজটা হারিয়ে ফেলবেন না যেন, কারণ আপনি কন্যা।

তুলা

আজ বাচ্চাদের সঙ্গে সান্ত্বনা খুঁজে নিন। কর্মক্ষেত্রে শত্রুতার মুখে পড়তে পারেন। সরকারি চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাবার স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়তে পারে। আজ জীবনে ভারসাম্য খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন হতে পারে, তাই বলা হচ্ছে বাচ্চাদের সঙ্গে থাকতে। বাচ্চারা তো আর ট্যাক্সের কথা বলবে না! কর্মক্ষেত্রে শত্রু? চিন্তা করবেন না, তারা শুধু আপনার সুন্দর টি-শার্ট দেখে হিংসা করছে। বাবার স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে, ডাক্তারের কথা শুনুন। আর যদি সরকারি চাকরির খবর পান, তাহলে বুঝবেন গ্রহরা সত্যিই আপনার জন্য একটা ব্রেকের ব্যবস্থা করেছে, যেখানে আর কারও সঙ্গে তর্ক করে সময় নষ্ট হবে না। চিকিৎসার খরচ আজ বাড়তে পারে। তাই আজ ভুল করেও রাস্তায় পড়ে থাকা পুরোনো ওয়ালেট তুলতে যাবেন না।

বৃশ্চিক

কর্মব্যস্ত দিন হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্য সুন্দর থাকবে। বন্ধুরা আপনাকে কোনো বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করাবে যিনি আপনার চিন্তায় লক্ষণীয় প্রভাব ফেলতে পারেন। কর্মব্যস্ততা আপনার জন্মগত অধিকার, তাই আজ ব্যস্ত থাকবেন—হয় কাজ নিয়ে, নয়তো গভীর দার্শনিক চিন্তা নিয়ে। কিন্তু এই ব্যস্ততার মধ্যেও স্বাস্থ্য ভালো থাকবে—কারণ আপনি এতটাই তীব্র ও ক্ষিপ্র যে ভাইরাসও আপনার কাছে আসতে ভয় পায়। বন্ধু আজ যে ‘বিশেষ ব্যক্তির’ সঙ্গে আলাপ করাবে, তিনি হয়তো আপনার নতুন বস হতে পারেন, অথবা এমন কেউ যিনি আপনার সব থেকে গোপন রহস্যগুলো নিয়ে জোকস করতে পারেন। প্রস্তুত থাকুন! আজ মন ভালো জিনিসের প্রতি আগ্রহী হবে। সেই ভালো জিনিসটা যাতে প্রতিশোধের প্ল্যান না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

ধনু

স্বাস্থ্য সুস্থ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুস্বাস্থ্যের কারণে নতুন সুযোগ আসবে। দুপুরের আগে জরুরি কাজ সেরে ফেলুন এবং আয়ের নতুন উৎস খুলতে পারে। স্বাস্থ্য এতটাই ভালো যে আজ মনে হবে আপনি চাইলেই মাউন্ট এভারেস্ট চড়তে পারবেন। এই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে আবার লটারিতে পুরো মাসের বেতন লাগিয়ে দেবেন না। জরুরি কাজ দুপুরের আগে শেষ করুন—এই প্রথমবার সময়মতো কিছু শেষ করার সুযোগ পাচ্ছেন। আয়ের নতুন উৎস মানে, আপনি হয়তো পুরোনো দিনের জমানো কয়েনগুলো খুঁজে পাবেন, যা আপনার অ্যাডভেঞ্চারের জন্য কাজে লাগতে পারে। আজ খুব বেশি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কোনো প্রতিশ্রুতি দেবেন না। কারণ গ্রহরা চায় না সব ফ্রি-টাইম অন্যের জন্য উৎসর্গ করুন।

মকর

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাগুলো আজ গতি পাবে। সামাজিক কাজে ভালো ভাবমূর্তি উন্নত হবে। অন্যরা আপনার ভালো উদ্দেশ্যকে স্বার্থপরতা বলে ভুল করতে পারে। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগে কিছুটা সতর্ক থাকুন। অবশেষে আপনার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাগুলো নড়েচড়ে বসছে! মনে রাখবেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি’ মানে ২০ বছর নয়, অন্তত পরের মাসের মধ্যে কিছু একটা করুন। আপনি আন্তরিকভাবে অন্যদের কল্যাণের কথা ভাবলেও, তারা ভাববে আপনি কেন তাদের আপনার কাজে লাগাচ্ছেন। আপনার কঠোর পরিশ্রমকে মানুষ ‘ট্যাক্স ফাঁকি’র প্ল্যানিংও ভাবতে পারে—অতএব, আজ একটু কম পারফেক্ট হোন। পরিবারের কোনো দূরবর্তী সদস্যকে মিস করতে পারেন। আজ তাকে একটা ফোন করুন, কিন্তু ভুলেও নিজের কাজের স্ট্রেস তাদের ওপর চাপিয়ে দেবেন না।

কুম্ভ

সাহস এবং বীরত্ব বাড়বে। রাজনীতিতে কর্মরতরা কাজে সাফল্য অর্জন করতে পারেন। তবে যানবাহন ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকুন এবং লোভ ও প্রলোভন এড়িয়ে চলুন। আপনার সাহস আজ এতটাই বাড়বে যে আপনি হয়তো আপনার পুরোনো ডায়েরিটা পাবলিকলি পোস্ট করে দেবেন। রাজনীতিতে সাফল্য মানে, সব বন্ধু আজ আপনার আইডিয়াই সবচেয়ে সেরা বলে মেনে নেবে। যানবাহন চালানোর সময় সতর্ক থাকুন, কারণ আপনার মন আজ পৃথিবী বাঁচানোর চিন্তায় ব্যস্ত থাকবে, রাস্তায় নয়। কোনো প্রলোভনে পড়বেন না! বিশেষ করে কোনো ‘অল্প সময়ে কোটিপতি’ হওয়ার স্কিমে, কারণ আপনার গ্রহরা জানে আপনি ওটা সামলাতে পারবেন না। আজ প্রেম জীবনের চেয়ে সামাজিক যোগাযোগে বেশি আগ্রহ দেখা যাবে। তাই ডেটিং অ্যাপের পরিবর্তে চ্যাট গ্রুপে বেশি সময় কাটান।

মীন

উন্নতির পথ খুলে যাবে এবং বন্ধুর মাধ্যমে আয়ের উৎসের সঙ্গে যোগাযোগ হতে পারে। অবিবাহিতরা সৌল মেটের সঙ্গে দেখা করতে পারে। স্বাস্থ্যের কিছুটা অবনতি হতে পারে, তাই সাবধানে বিবেচনা না করে কোনো প্রতিশ্রুতি দেবেন না। সৌল মেট আজ যে কোনো সময় দরজায় কড়া নাড়তে পারে! কিন্তু সাবধানে, তারা হয়তো আপনার সব থেকে বিশৃঙ্খল ঘরটা দেখতে পাবে। আয়ের নতুন উৎস মানে, হয়তো পুরোনো এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হবে যে আপনাকে তার নতুন এমএলএম স্কিমে জয়েন করতে বলবে—গ্রহরা অবশ্য অন্য উৎসের কথা বলছে। স্বাস্থ্যের সামান্য অবনতি হতে পারে, কারণ আপনি হয়তো সারা দিন স্বপ্নে ছিলেন আর বাস্তবে ঘুমোতে ভুলে গেছেন। সাবধানে বিবেচনা না করে কোনো প্রতিশ্রুতি দেবেন না। বিশেষ করে যদি সঙ্গী আপনাকে জিজ্ঞেস করে, ‘তুমি কি আজীবন সার্বক্ষণিক আমার পাশে থাকবে?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হালকা শীতে স্টাইলিশ থাকুন

ফারিয়া রহমান খান 
ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউস
ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউস

স্টাইল করে পোশাক পরতে জানলে শীতকালই কিন্তু সেরা সময়। রঙের মেলবন্ধন, পোশাকের কাটিং, টপ অ্যান্ড বটম নির্ধারণ করে শীতের পোশাক পরলেই আপনি ফিট। কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখলে শীতের পোশাকে নিজেকে অনবদ্যভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব।

ক্ল্যাসিকে মাতিয়ে দিন

শীতকালের কিছু চিরায়ত পোশাক রয়েছে, যেগুলো ফ্যাশনের ধারা থেকে কখনো হারিয়ে যায় না। তেমনই একটি পোশাক হলো স্কিনি জিনসের সঙ্গে ঢিলেঢালা সোয়েটার। তবে এই লুকের সুবিধা হলো, এর সঙ্গে যেকোনো ধরনের জুতা; যেমন বুট, অ্যাঙ্কেল বুট, হাঁটু পর্যন্ত বুট কিংবা স্নিকার সহজে মানিয়ে যায়।

আরেকটি ক্ল্যাসিক লুক হলো মার্লিন প্যান্ট, বুট কাট জিনসের মতো চওড়া পায়ের প্যান্টের সঙ্গে ক্যাশমেয়ার কার্ডিগান, ক্রপড জাম্পার অথবা ছোট ব্লেজারের মতো ফিটিং টপ।

এই লুকে কোমরের অংশটি খুব সুন্দরভাবে হাইলাইট হয়। তা ছাড়া শীতকালের আরেকটি ক্ল্যাসিক ড্রেস হলো স্কার্ট। আপনার পছন্দমতো মিডি বা ম্যাক্সি স্কার্ট, সঙ্গে লেগিংস ও ছোট বা লম্বা বুট জুতা, আর ওপরে ক্রপ সোয়েটার বা ব্লেজার পরতে পারেন।

ক্যাজুয়াল ও আরামদায়ক পোশাক

এ সময় ওভারসাইজড জাম্পার, কার্ডিগান, চওড়া প্যান্ট এবং লম্বা কোট দিয়ে সহজে কিছু ক্যাজুয়াল লুক তৈরি করা যায়। যেমন ওভারসাইজ জাম্পারের ওপর লম্বা কোট এবং নিচে একটি লেদারের প্যান্ট, সঙ্গে এক জোড়া স্নিকার খুব সুন্দর ক্যাজুয়াল লুক দেয়। তা ছাড়া স্টেট জিনসের সঙ্গে লম্বা হাতার শার্ট এবং একটি নিটেড কার্ডিগান পরা যেতে পারে।

স্টাইলিশ ও চিক পোশাক

যাঁরা একটু স্টাইলিশ লুক চান, তাঁরা লেদারের মিডি স্কার্টের সঙ্গে লেগিংস, একটি শর্ট ফিটিং জ্যাকেট ও হাঁটু পর্যন্ত লম্বা বুট পরতে পারেন। তা ছাড়া লম্বা প্লিটেড স্কার্টের সঙ্গে ক্রপড উলের জাম্পারও পরতে পারেন। আরেকটি চিক লুক হতে পারে লম্বা উলের ড্রেসের সঙ্গে ব্লেজার ও কোমরে বেল্ট।

নিত্যদিনের ব্যবহারের উপযোগী ও উৎসবমুখী এ দুটি ক্যাটাগরিতে এবারের শীতপোশাকগুলো সাজানো হয়েছে। সব বয়সী নারীর কথা বিবেচনায় রেখে বেছে নিয়েছি সূক্ষ্ম কিন্তু নজরকাড়া রং, সাহসী কাট, যা প্রতিটি পোশাককে স্টেটমেন্ট পিসে পরিণত করে। ডিজাইনগুলোতে ফ্লেয়ার ও ফাংশনালিটি একসঙ্গে মিলেছে। মিনিমাল এই শীতপোশাকগুলো সঠিক অ্যাকসেসরিজের সঙ্গে স্টাইলিশ কিংবা ক্যাজুয়াল—দুভাবেই পরা যাবে। স্ট্রাইপ, ডার্ক টোন, ডুডল ডিজাইন এবং প্রিন্টেড প্যাটার্নের জ্যাকেট ও ব্লেজারগুলোয় ব্যবহার করা হয়েছে পান্না সবুজ ও স্যাফায়ারের রং, ক্রিম, মেরুন এবং ইলেকট্রিক ব্লু রঙের সংমিশ্রণ।
তাসনিম ফেরদৌস প্রতিষ্ঠাতা ও ডিজাইনার, ওয়্যারহাউস

অনুষ্ঠানে শীতের পোশাক

সাধারণত শীতকালজুড়ে বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠান থাকে। এসব অনুষ্ঠানে ক্যাজুয়াল চিক লুক চাইলে জিনসের সঙ্গে লম্বা হাতার উলের সোয়েটার অথবা স্কার্টের সঙ্গে পোলো নেক টপ পরতে পারেন। আবার সেমি ফরমাল লুক চাইলে স্কার্টের সঙ্গে ব্লেজার কিংবা মার্লিন প্যান্টের সঙ্গে লম্বা হাতার উলের সোয়েটার হবে আপনার জন্য সেরা অপশন। উষ্ণতার জন্য পোশাকের ওপর একটি শাল কিংবা উলের কোট যোগ করতে পারেন। এটি আপনার লুককে আরও বেশি স্মার্ট করে তুলবে।

তবে যেকোনো অনুষ্ঠানে পরার জন্য সঠিক রং বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেমন রাতের অনুষ্ঠানে একটু গাঢ় রঙের পোশাক মানানসই। সঠিক কাপড় ও রঙের পাশাপাশি ফিটিংয়ের দিকেও নজর দিতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকার পরও ফিটিং যদি ঠিক না হয়, তাহলে দেখতে বড্ড বেমানান লাগে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত