ইকবাল হাসান
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। এই ঈদ নিয়ে আমাদের অনেক রকমের পরিকল্পনা থাকে। বাড়িতে চলে বাহারি রান্নার ধুম। ঈদ-পরবর্তী দিনগুলোতেও আমরা কোরবানির মাংসের বিভিন্ন পদের আয়োজন করে থাকি। এই সময়ে খাবারের প্রকারভেদ এবং পরিমাণ দুটোই অনেক বেশি থাকে। তাই আমরা না চাইলেও মনের অজান্তে হয়তো কিছু খাবার বেশি খেয়ে ফেলি; বিশেষ করে মাংস এবং মাংস দিয়ে তৈরি খাবারগুলো, যেটা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
আমাদের প্রত্যেকের শরীরে একটা নির্দিষ্ট চাহিদা আছে। আপনি চাহিদার অতিরিক্ত খেলে পরবর্তী সময়ে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঈদের দিনগুলোতে মূলত আমাদের মাংসটাই বেশি খাওয়া হয়। তাই সতর্ক থাকতে হবে খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে।
এক দিনে কতটুকু মাংস খাওয়া যাবে
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে
প্রতিটি মানুষের শরীরের বৈশিষ্ট্য আলাদা, তাই খাবারের চাহিদাও আলাদা। ধরা যাক, একজন স্বাভাবিক ওজন ও উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তাঁর ওজন ৭৫ কেজি হলে তিনি সারা দিনে মাংসের গুণগতমানভেদে ৩৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ গ্রাম মাংস খেতে পারেন। তবে সেটা একেবারে না খেয়ে সারা দিনে তিনবারে ভাগ করে খেতে হবে। সঙ্গে প্রতিবেলায় কিছু শাকসবজি বা সালাদ অবশ্যই রাখতে হবে।
রোগীদের ক্ষেত্রে
বাড়িতে যদি কোনো কিডনি রোগী থাকেন, তাহলে তাঁর জন্য খাবারে ভিন্নতা আনতে হবে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তাঁর প্রোটিনের পরিমাণ কমাতে হবে ঈদের সময়। তাই কিডনি আক্রান্ত ব্যক্তি মাংস খাবেন খুবই কম পরিমাণে। সে ক্ষেত্রে গরু ও খাসি না খেয়ে মুরগির মাংস খাওয়া উত্তম। মাংস দিয়ে তৈরি খাবার সীমিত পরিমাণে দিতে হবে। এর বাইরে ডাল ও বিচিজাতীয় খাবার বা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার বন্ধ করে দিতে হবে।
অনেকের আবার গরুর মাংসে অ্যালার্জি থাকে। সে ক্ষেত্রে মাংস খাওয়া বাদ দেওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই। আপনার যে যে খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেগুলো অবশ্যই বাদ দিতে হবে।
বাসায় যদি কোনো হৃদ্রোগের বা ডায়াবেটিসের রোগী থাকেন, সে ক্ষেত্রেও আপনাকে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ঈদের দিনেও তাঁদের খাদ্যতালিকা মেনেই রান্না করুন। হৃদ্রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য গরু ও খাসির মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। চামড়া ছাড়া মুরগি বা হাঁসের মাংস খাওয়া যাবে। তবে মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে, সেটা বাদ দিতে হবে। কারও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে বা রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও গরু, খাসির মাংসের পরিবর্তে চামড়াছাড়া হাঁস-মুরগির মাংসই উত্তম।
অনেকে প্রশ্ন করেন, হার্টের রোগী বা যাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক বেশি বা যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাঁরা কি কোনোভাবেই ঈদের দিনে একটু কোরবানির মাংস খেতে পারবেন না? বিষয়টি খুব আবেগময়। পরিবারের লোকজনও চায়, অসুস্থ ব্যক্তিরা অন্তত এক দিন একটু রেডমিট খাক। সে ক্ষেত্রে নিচের শর্তগুলো মেনে খেতে হবে।
যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্যও গরু ও খাসির মাংস খেতে নিষেধ করা হয়। তবে আপনার যদি অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা না থাকে, তাহলে আপনিও ওপরের শর্তগুলো মেনে পরিমিত পরিমাণে মাংস খাবেন।
কম তাপে, কম সময়ে রান্না করলে মাংসের পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকে। সে ক্ষেত্রে খোলা পাত্রে রান্না না করে, ঢাকনাযুক্ত পাত্রে মাংস রান্না করুন। গরুর মাংসের প্রধান সমস্যা হচ্ছে সেদ্ধ হতে দেরি হওয়া, তাতে রান্নায় সময় লাগে বেশি। সে ক্ষেত্রে মাংসের সঙ্গে এক টুকরো পেঁপে বা আনারস দিতে পারেন। অথবা রান্নার কয়েক ঘণ্টা আগে মেরিনেট করে রেখে দিন, তাতে মাংস কম সময়ে সেদ্ধ হবে।
৪৫ বছরের পর মাংস খাওয়া কমাতে হবে। হয়তো আগে সপ্তাহে দুই দিন মাংস খেতেন, এখন এক দিন খাবেন। মাংসের পরিমাণ আপনার বয়স, ওজন, উচ্চতা এবং অন্যান্য শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে। সে ক্ষেত্রে মাংস খাওয়ার বিষয়ে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
এক দিন বেশি খেলে কিছু হয় না
এ ধরনের ভাবনা না ভাবাই ভালো। বেশি খেলে বেশি ক্যালরি শরীরে প্রবেশ করবে। সুস্থ থাকতে সে ক্যালরি ঝরাতে পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু সেটা করা হয় না। ফলে এক দিন বেশি না খেয়ে প্রতিদিনই পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া ভালো।
ইকবাল হাসান, সিনিয়র পুষ্টিবিদ, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। এই ঈদ নিয়ে আমাদের অনেক রকমের পরিকল্পনা থাকে। বাড়িতে চলে বাহারি রান্নার ধুম। ঈদ-পরবর্তী দিনগুলোতেও আমরা কোরবানির মাংসের বিভিন্ন পদের আয়োজন করে থাকি। এই সময়ে খাবারের প্রকারভেদ এবং পরিমাণ দুটোই অনেক বেশি থাকে। তাই আমরা না চাইলেও মনের অজান্তে হয়তো কিছু খাবার বেশি খেয়ে ফেলি; বিশেষ করে মাংস এবং মাংস দিয়ে তৈরি খাবারগুলো, যেটা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
আমাদের প্রত্যেকের শরীরে একটা নির্দিষ্ট চাহিদা আছে। আপনি চাহিদার অতিরিক্ত খেলে পরবর্তী সময়ে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঈদের দিনগুলোতে মূলত আমাদের মাংসটাই বেশি খাওয়া হয়। তাই সতর্ক থাকতে হবে খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে।
এক দিনে কতটুকু মাংস খাওয়া যাবে
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে
প্রতিটি মানুষের শরীরের বৈশিষ্ট্য আলাদা, তাই খাবারের চাহিদাও আলাদা। ধরা যাক, একজন স্বাভাবিক ওজন ও উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তাঁর ওজন ৭৫ কেজি হলে তিনি সারা দিনে মাংসের গুণগতমানভেদে ৩৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ গ্রাম মাংস খেতে পারেন। তবে সেটা একেবারে না খেয়ে সারা দিনে তিনবারে ভাগ করে খেতে হবে। সঙ্গে প্রতিবেলায় কিছু শাকসবজি বা সালাদ অবশ্যই রাখতে হবে।
রোগীদের ক্ষেত্রে
বাড়িতে যদি কোনো কিডনি রোগী থাকেন, তাহলে তাঁর জন্য খাবারে ভিন্নতা আনতে হবে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তাঁর প্রোটিনের পরিমাণ কমাতে হবে ঈদের সময়। তাই কিডনি আক্রান্ত ব্যক্তি মাংস খাবেন খুবই কম পরিমাণে। সে ক্ষেত্রে গরু ও খাসি না খেয়ে মুরগির মাংস খাওয়া উত্তম। মাংস দিয়ে তৈরি খাবার সীমিত পরিমাণে দিতে হবে। এর বাইরে ডাল ও বিচিজাতীয় খাবার বা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার বন্ধ করে দিতে হবে।
অনেকের আবার গরুর মাংসে অ্যালার্জি থাকে। সে ক্ষেত্রে মাংস খাওয়া বাদ দেওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই। আপনার যে যে খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেগুলো অবশ্যই বাদ দিতে হবে।
বাসায় যদি কোনো হৃদ্রোগের বা ডায়াবেটিসের রোগী থাকেন, সে ক্ষেত্রেও আপনাকে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ঈদের দিনেও তাঁদের খাদ্যতালিকা মেনেই রান্না করুন। হৃদ্রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য গরু ও খাসির মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। চামড়া ছাড়া মুরগি বা হাঁসের মাংস খাওয়া যাবে। তবে মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে, সেটা বাদ দিতে হবে। কারও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে বা রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও গরু, খাসির মাংসের পরিবর্তে চামড়াছাড়া হাঁস-মুরগির মাংসই উত্তম।
অনেকে প্রশ্ন করেন, হার্টের রোগী বা যাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক বেশি বা যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাঁরা কি কোনোভাবেই ঈদের দিনে একটু কোরবানির মাংস খেতে পারবেন না? বিষয়টি খুব আবেগময়। পরিবারের লোকজনও চায়, অসুস্থ ব্যক্তিরা অন্তত এক দিন একটু রেডমিট খাক। সে ক্ষেত্রে নিচের শর্তগুলো মেনে খেতে হবে।
যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্যও গরু ও খাসির মাংস খেতে নিষেধ করা হয়। তবে আপনার যদি অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা না থাকে, তাহলে আপনিও ওপরের শর্তগুলো মেনে পরিমিত পরিমাণে মাংস খাবেন।
কম তাপে, কম সময়ে রান্না করলে মাংসের পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকে। সে ক্ষেত্রে খোলা পাত্রে রান্না না করে, ঢাকনাযুক্ত পাত্রে মাংস রান্না করুন। গরুর মাংসের প্রধান সমস্যা হচ্ছে সেদ্ধ হতে দেরি হওয়া, তাতে রান্নায় সময় লাগে বেশি। সে ক্ষেত্রে মাংসের সঙ্গে এক টুকরো পেঁপে বা আনারস দিতে পারেন। অথবা রান্নার কয়েক ঘণ্টা আগে মেরিনেট করে রেখে দিন, তাতে মাংস কম সময়ে সেদ্ধ হবে।
৪৫ বছরের পর মাংস খাওয়া কমাতে হবে। হয়তো আগে সপ্তাহে দুই দিন মাংস খেতেন, এখন এক দিন খাবেন। মাংসের পরিমাণ আপনার বয়স, ওজন, উচ্চতা এবং অন্যান্য শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে। সে ক্ষেত্রে মাংস খাওয়ার বিষয়ে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
এক দিন বেশি খেলে কিছু হয় না
এ ধরনের ভাবনা না ভাবাই ভালো। বেশি খেলে বেশি ক্যালরি শরীরে প্রবেশ করবে। সুস্থ থাকতে সে ক্যালরি ঝরাতে পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু সেটা করা হয় না। ফলে এক দিন বেশি না খেয়ে প্রতিদিনই পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া ভালো।
ইকবাল হাসান, সিনিয়র পুষ্টিবিদ, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম
ভ্রমণ সব বয়সের মানুষের জন্যই আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীর ও প্রয়োজনের ধরণও বদলায়। তাই বয়স্ক বা সিনিয়র নাগরিকদের জন্য ভ্রমণের আগে কিছু বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, আরাম, খাওয়া-দাওয়া সব দিকেই বিশেষ মনোযোগ দেওয়া দরকার।
২৭ মিনিট আগেছোট হোক বা বড়, যে কাজেই ব্যবহার হোক না কেন প্রায় সবার বাড়িতে একটি করে বুকশেলফ বা বইয়ের তাক থাকে। একটি বুকশেলফ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা যায়, তা সে কাঠ, বেত, বাঁশ, প্লাইউড বা যে উপকরণেই তৈরি হোক। কিন্তু এমন যদি হয় বহু পুরোনো বুকশেলফের কোনো অংশ ভেঙে গেছে, পায়া নষ্ট হয়ে গেছে বা এই বুকশেলফটি পরিবর্তন করে
১ ঘণ্টা আগেবিদেশ ভ্রমণে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ অনেক সময় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়। নতুন দেশে গিয়ে সিম কেনার আগে পর্যন্ত নিয়মিত যোগাযোগ থেকে অনেক সময় বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। তবে এর বিকল্প হিসেবে দেশের সিম দিয়ে রোমিং সুবিধা নেন অনেকে। তবে এর জন্য ডলারে পেমেন্ট করতে হয়। যেটি কারও কারও জন্য বিপত্তি তৈরি করে।
২ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের মানুষের জাতীগত বড় সমস্যা হলো, তারা মনে করে পৃথিবীর সব ‘প্রথম’ ও ‘সবচেয়ে বড় বা ছোট’র রেকর্ড থাকবে শুধু তাদের অধিকারে। কিন্তু না। আপনি যদি ভোরবেলা হাঁসের মাংসে খেতে যেতে পারেন, তো অন্য অনেকে আপনাকে টেক্কা দিয়ে রাত ও ভোরের সঙ্গমস্থলের যে সময়, যাকে উষা নামে ডাকা হয়, সে সময় হাঁসের মাংস...
৪ ঘণ্টা আগে