ইশতিয়াক হাসান

ফেলুদা আমার এত প্রিয় যে এটি নিয়ে লিখতে দিন-ক্ষণ লাগে না। তার পরও আজ বিশেষ একটি দিন। ১৯২১ সালের এই দিনে, মানে ২ মে জন্ম সত্যজিৎ রায়ের। চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালকসহ কত পরিচয় তাঁর। তবে সত্যজিতের নাম মাথায় এলে রহস্য কাহিনিপ্রেমীদের প্রথমেই যে কথাটি মনে পড়ে যায়, তা হলো তিনি না থাকলে ফেলুদার জন্মই হতো না। তাই সত্যজিতের জন্মদিনে আবারও লিখতে বসে গেলাম তাঁর অমর সৃষ্টি ‘ফেলুদা’ নিয়ে।
ফেলুদা এবার ন্যাড়া জায়গাটার পাশে ঘাসের ওপর বসে পড়ে বলল, পাথরটা কীভাবে পড়েছিল জানিস? ‘কীভাবে?’...ফেলুদা ন্যাড়া অংশটার একটা জায়গায় আঙুল দিয়ে দেখাল।...সেখানে ছোট্ট একটা গর্ত রয়েছে। সাপের গর্ত নাকি?...ফেলুদা বলে চলল, ‘প্রায় পঁচাত্তর পার্সেন্ট শিওর হয়ে বলা চলে যে একটা লম্বা লোহার ডান্ডা বা ওই জাতীয় একটা কিছু মাটিতে ঢুকিয়ে চাড় দিয়ে পাথরটাকে ফেলা হয়েছিল।..অর্থাৎ...মিস্টার শিবকুমার শেলভাস্কারের অ্যাক্সিডেন্টটা প্রকৃতির নয়, মানুষের কীর্তি।...অর্থাৎ–এক কথায়–গণ্ডগোল, বিস্তর গণ্ডগোল...’
বুঝতেই পারছেন ফেলুদার একটি কাহিনির কিছুটা অংশ তুলে দিয়েছি।
আরেকটি কাহিনির কয়েকটি লাইন পড়ুন...ঘরের মধ্যে একটা অদ্ভুত থমথমে ভাব...অরুণবাবু উঠে দাঁড়িয়েছেন—তাঁর চোখ লাল, তাঁর কপালের রগ ফুলে উঠেছে।
‘শুনুন মি: মিত্তির’, গর্জিয়ে উঠলেন অরুণবাবু, ‘আপনি নিজেকে যত বড় গোয়েন্দাই ভাবুন না কেন, আপনার কাছ থেকে এমন মিথ্যে, অমূলক, ভিত্তিহীন অভিযোগ আমি বরদাস্ত করব না।—জগৎ সিং!’...
...‘আর একটি পা এগোবে না তুমি?’ ফেলুদার হাতে রিভলবার, সেটার লক্ষ্য অরুণবাবুর পেছনে জগৎ সিংয়ের দিকে। ‘ওর মাথার একগাছা চুল কাল রাত্রে আমার হাতে উঠে এসেছিল। আমি জানি ও আপনারই আজ্ঞা পালন করতে এসেছিল আমার ঘরে।’...
এমনই আগাগোড়া রহস্য-রোমাঞ্চে ভরপুর ফেলুদার কাহিনিগুলো। শুরুর অংশ দুটি কোন বই থেকে নেওয়া, পাঠকেরা নিশ্চয় বুঝে গেছেন। যাঁরা বোঝেননি তাঁদের উত্তর পেতে হলে লেখাটা পড়া চালিয়ে যেতে হবে।
এবার ফেলুদার সঙ্গে আমার পরিচয়টা কীভাবে তা বরং সংক্ষেপে বলি। তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি। আব্বুর চাকরি সূত্রে থাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ডাক্তার দেখাতে কিংবা ছুটিছাঁটায় আসা হতো ঢাকায়। বেইলি রোডে খালার বাসায় ওঠা হতো বেশি। আমার থেকে বছর কয়েকের বড় খালাতো ভাই নাহিদ বইয়ের পোকা। তাঁর বইয়ের আলমারিতে হত্যাপুরী, বাক্স রহস্য, গোরস্থানে সাবধান, দার্জিলিং জমজমাট, গ্যাংটকে গণ্ডগোল বইগুলো দেখতাম। কৌতূহলও জাগত মনে। তবে তখনো রহস্য–রোমাঞ্চের দুনিয়া নিতান্ত অপরিচিত। আমার দৌড় তখন রূপকথা, বড়জোর কমিকস পর্যন্ত।
পরের বছর। ক্লাস ফোরে পড়ি। তিন গোয়েন্দা দিয়ে রহস্য-রোমাঞ্চ জগতের সঙ্গে পরিচয় হয়ে গেছে তত দিনে। ঢাকায় আসার পর একদিন নাহিদ ভাইয়ার আলমারি থেকে কী ভেবে সাহস করে হত্যাপুরী বইটা নিলাম। পড়তে পড়তে খুন-জখম-সাগরসৈকতময় এক কেসে ফেলুদার সঙ্গে জড়িয়ে পড়লাম। ব্যাস, পরের কয়েকটা দিন ফেলুদায় বুঁদ হয়ে রইলাম। তখন থেকেই আমার ‘খুব প্রিয়’র তালিকায় চলে এলো ফেলুদা, সেই সঙ্গে সত্যজিৎ রায়।
ফেলুদার বই মানেই দুই মলাটের মধ্যে একসঙ্গে অনেক কিছু। রহস্যকাহিনি, এক কথায় দুর্দান্ত। অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ভ্রমণকাহিনি, অসাধারণ। এখানেই কি শেষ? ইতিহাস, মঞ্চ-সিনেমা, সার্কাস, শিকার কত্ত কিছুর সঙ্গে যে পরিচয় করিয়ে দিল ফেলুদা। তোপসে, লালমোহন গাঙ্গুলিও জায়গা করে নিল আমার বালক মনে। এদের বাস্তব অস্তিত্ব নেই এটা বিশ্বাস করতে মন চাইত না। এখনো মানতে পারি না। এরপর থেকে ফেলুদা পড়েই যাচ্ছি। একই বই কয়েকবারও কিনেছি, পড়েছি।
চেহারাটা ভাসছে লিখতে বসে। সাতাশ বছরের এক তরুণ, বয়স যাঁর আটকে আছে সেখানেই। উচ্চতা ছয় ফুট দুই ইঞ্চি। ঠোঁটে চারমিনার। মার্শাল আর্টে দক্ষ, ভয়ানক সব অপরাধীদের সঙ্গে লড়াই বাড়তি ভরসা সঙ্গে ৩২ কোল্ট রিভলবার। তবে ফেলুদার মূল অস্ত্র ধারালো মগজটা। দুর্দান্ত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণক্ষমতা ব্যবহার করে জটিল সব রহস্য সমাধান করে অবলীলায়।
একটা বই পড়ি, নতুন একটা দুয়ার খুলে যায় আমার সামনে। রহস্য-রোমাঞ্চের পাশাপাশি ফেলুদা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মনটাকেও উন্মাতাল করে তুলল। ‘গ্যাংটকে গণ্ডগোল’ পড়তে পড়তে বরফঢাকা শহরটিতে না গিয়েও যেন যাওয়া হয়ে গেল আমার। সিকিমের রাজধানীতে সশরীরে হাজিরা দিতে পারিনি এখনো, তবে ফেলুদা বা প্রদোষ চন্দ্র মিত্রর ট্রেইল অনুসরণ করে গিয়েছি অনেক জায়গায়ই।
‘রাজেনবাবুকে রোজ বিকেলে ম্যাল্-এ আসতে দেখি। মাথার চুল সব পাকা, গায়ের রং ফরসা, মুখের ভাব হাসিখুশি। পুরোনো নেপালি জিনিস-টিনিসের যে দোকানটা আছে, সেটায় কিছুক্ষণ কাটিয়ে বাইরে এসে বেঞ্চিতে আধঘণ্টার মতো বসে সন্ধে হব-হব হলে জলাপাহাড়ে বাড়ি ফিরে যান।’
‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’র শুরুটা এভাবেই, দার্জিলিংয়ে। ওটাই ছিল ফেলুদার প্রথম গোয়েন্দাকাহিনি। তবে আমার দার্জিলিংকে চেনা শুরু ফেলুদার ‘দার্জিলিং জমজমাট’ বইটি দিয়ে। কারণ ফেলুদার গোয়েন্দাগিরির আগে আমার পড়া হয়ে যায় দার্জিলিং জমজমাট। এখনো ফেলুদার বইয়ের মধ্যে সবার আগে মনের পর্দায় ভেসে ওঠে এই বইয়ের মলাট।
তেমনি তোপসের মতো আমিও কিউরিও যে পুরোনো দুষ্প্রাপ্য জিনিস, সেটা শিখি ফেলুদার কাছ থেকেই। তাই ২০১৭ সালে প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, সিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলো বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নিই।
তবে ফেলুদাকে অনুসরণ শুরু আরও আগে। সালটা ২০১৪, জানুয়ারির ৭ তারিখ রাতে স্ত্রী পুনমসহ মধুচন্দ্রিমায় পৌঁছাই কাঠমাণ্ডু। নেপাল আমাকে টেনেছিল সেই ক্লাস সেভেনে পড়ার সময়। তখন ফেলুদার যত কাণ্ড কাঠমান্ডু পড়েই বলা চলে হিমালয়রাজ্যের শহরটা মনে গেঁথে যায়। একইভাবে ২০১৮তে ঋষিকেশের রামঝুলা-লছমন ঝুলা দেখতে যাওয়ার পেছনেও ওই ফেলুদাই। লছমন ঝুলার কথা প্রথম জানতে পারি যে ফেলুদার ‘বাদশাহী আংটি’ পড়ে। পাহাড়-অরণ্যময় জায়গা না হয়েও ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে ভারতের কলকাতার প্রতি আমার টানটা ফেলুদা এবং কলেজ স্ট্রিটের কল্যাণেই। তবে গতবার কলকাতায় গিয়ে গোরস্থানে সাবধানের সেই পার্ক স্ট্রিট সিমেট্রিতে একবার ঢুঁ মারতে না পারার যন্ত্রণাটা পোড়ায়। মোটের ওপর ভ্রমণ আমার প্রিয় হয়ে ওঠার পেছনেও ফেলুদা ও সত্যজিতের অবদান কম-বেশি আছেই।
প্রদোষ চন্দ্র মিত্র একা নয়। আরও কত আকর্ষণীয়, কখনো বিচিত্র চরিত্রের দেখা মেলে ফেলুদার বইগুলোতে। তোপসে, অর্থাৎ তপেশরঞ্জন মিত্রর কথা বলতে হবে সবার আগে। একেবারে শুরু থেকেই যে প্রিয় গোয়েন্দার সঙ্গে আছে তার খুড়তুতো ভাইটি। তার জবানীতেই ফেলুদার কাহিনিগুলো জানতে পারি। তা ছাড়া যখন ফেলুদা পড়া শুরু করি, তোপসের জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেওয়াটা অনেক সহজ ছিল।
সোনার কেল্লায় ওই যে লালমোহন গাঙ্গুলির সঙ্গে পরিচয় হলো, তারপর থেকে ফেলুদার প্রতিটি বইয়ের আশ্চর্য এক চাটনি হয়ে উঠলেন রহস্য-রোমাঞ্চ সাহিত্যিক জটায়ু। টানটান উত্তেজনায় ভরা রহস্যকাহিনিগুলোয় জটায়ুর অদ্ভুত, হাস্য-রসাত্মক কাণ্ডকীর্তি যেন আনন্দময় রিলিফ।
তেমনি ফেলুদা পড়তে পড়তে আরও কত চরিত্র যে আপন হয়ে গেল আমার। দুর্ধর্ষ মগনলাল মেঘরাজ, জীবন্ত জ্ঞানকোষ সিধু জ্যাঠা, ছিন্নমস্তার অভিশাপের দুর্ধর্ষ কারাণ্ডিকার, ধাঁধাপাগল মহেশ চৌধুরী, বাদশাহী আংটির বনবিহারী বাবু, সোনার কেল্লার মুকুলসহ কত কত চরিত্র লিখতে বসে চোখের সামনে চলে আসছে।
সাধারণত কোনো বই পড়তে গেলে চরিত্রগুলোর চেহারা-ছবি নিজের মতো করে তৈরি করে নিই মনে মনে। সিনেমা দেখার থেকে আমি বই পড়াকে এগিয়ে রাখার এটাও একটা কারণ। তবে ফেলুদার বেলায় সত্যজিতের আঁকায় যে সাদাকালো চেহারাগুলো পেয়েছি, সেগুলো প্রভাব বিস্তার করেছে মনের ওপর বেশ।
আশ্চর্য ব্যাপার, এই আধবুড়ো বয়সেও ফেলুদা আমাকে টানে। এখনো অবসরে হাতের কাছে মনের মতো বই না পেলে বুকশেলফের নির্দিষ্ট একটি তাক চাবি দিয়ে খুলে বের করে আনি ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’ কিংবা ‘রয়েল বেঙ্গল রহস্য’। তারপর বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে প্রিয় ফেলুদার সঙ্গে হারিয়ে যাই রহস্য-রোমাঞ্চে ভরা এক জগতে।
ফেলুদার জন্মটা যে শার্লক হোমসে অনুপ্রাণিত হয়ে, বুঝে নিতে কষ্ট হয় না। সত্যজিৎ ফেলুদার গুরু হিসেবে বারবারই পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন হোমসকে। এমনকি ফেলুদাকে ঘুরিয়ে এনেছেন তার গুরু হোমসের বেকার স্ট্রিট থেকে। শুধু তাই নয়, সত্যজিৎ রায় ফেলুদার আস্তানা হিসেবে ২২১ বি বেকার স্ট্রিটের অদলেই হয়তো দেখিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার ২১ রজনী সেন রোডকে। মজার ঘটনা, ২২১ বি নামে বাড়ির কোনো অস্তিত্ব যেমন নেই, তেমনি রজনী সেন রোড থাকলেও ২১ নম্বর বাড়ির খোঁজ মেলেনি সেখানে।
ফেলুদা চরিত্রটির জন্ম যেন অনেকটা হঠাৎ করেই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষুরধার গোয়েন্দাটির স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়ের একটা লাল খেরো খাতা ছিল। ওখানে নিজের গল্পগুলোর খসড়া লিখতেন। খসড়া লেখার জন্য আরও বেশ কয়েকটা খাতাও ছিল। কিন্তু কী আশ্চর্য! ১৯৬৫ সালের আগে কোথাও ফেলুদা চরিত্রটি সম্পর্কে কিছুই ছিল না। ১৯৬৫ সালে লাল খেরো খাতার তৃতীয় পাতায় হঠাৎ করেই এই গোয়েন্দার দেখা মেলে।
‘সন্দেশ’ পত্রিকায় ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর সংখ্যায় আবির্ভাব ফেলুদার, ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’ গল্পটির মাধ্যমে। পরপর তিনটি সংখ্যায় শেষ হয়েছিল গোটা গল্পটি। তবে ফেলুদার প্রথম উপন্যাস ‘বাদশাহী আংটি’, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বই আকারে যেটি বের হয় ১৯৬৯-এ। সত্যজিৎ সম্ভবত নিজেও ভাবেননি এভাবে বাঙালি পাঠকের মন জয় করে নেবে ফেলুদা। সিরিজটির জনপ্রিয়তা এতটাই তুঙ্গে ছিল যে বাদশাহী আংটির পর থেকে ফি বছরই বলা চলে গোয়েন্দাটিকে নিয়ে উপন্যাস না হয় গল্প কিছু না কিছু লিখেছেন।
১৯৯২ সালে সত্যজিৎ মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রবল জনপ্রিয় এই গোয়েন্দাকে নিয়ে লেখেন ৩৫টি সম্পূর্ণ গল্প-উপন্যাস। এ ছাড়া শেষ হয়নি এমন কয়েকটি পান্ডুলিপিও ছিল।
সত্যজিৎ রায় মারা যাওয়ার কয়েক বছর পরের ঘটনা। চট্টগ্রামে বেড়াতে গিয়েছি। আবারও সেই নাহিদ ভাইয়াদের বাসা। ওর বাবা তখন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। নিউ মার্কেটে গেলাম সবাই মিলে। দুটো বই কিনলাম। এর একটা ‘রবার্টসনের রুবি’। স্পষ্ট মনে আছে, বইটি কেনার সময় বিষাদে ছেয়ে গিয়েছিল মনটা, কারণ সত্যজিৎ তত দিনে দুনিয়া ছেড়ে গিয়েছেন। জানামতে, ওটাই ফেলুদার পূর্ণাঙ্গ শেষ উপন্যাস।
‘রবার্টসনের রুবি’ কেনার সময় কিংবা পরে একটা চিন্তা বারবারই উদয় হয়েছে মনে—আহ! সত্যজিৎ যদি আরও কয়েকটি বছর বাঁচতেন! গোটা আটেক ফেলুদা, দুই-তিনটা শঙ্কু কিংবা একটা তারিণীখুড়োর বই পেয়ে যেতাম হয়তো। বড় স্বার্থপর চিন্তা! কী বলব বলুন! সত্যজিতের এই অমর সৃষ্টিগুলো যে এখনো মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে।
ফেলুদাকে নিয়ে হয়েছে বেশ কিছু সিনেমা, হালফিল ওয়েব সিরিজও। এ ব্যাপারে বেশি কিছু লিখতে চাই না। তবে পর্দায় ফেলুদা হিসেবে আমার প্রথম পছন্দ সব্যসাচী চক্রবর্তী। যদি চেহারাটা শুরুতে মোটেই ফেলুদাকে যেভাবে মনে মনে কল্পনা করেছি এর সঙ্গে যায়নি। তবে সব্যসাচীর অভিনয়ে মুগ্ধ হই।
প্রথম ফেলুদা হিসেবে দেখেছি কিন্তু সৌমিত্রকেই। ১৯৭৪ সালে, ‘সোনার কেল্লা’ দিয়ে তাঁর আবির্ভাব। চেহারার কথা বললে কল্পনার ফেলুদার সঙ্গে তাঁর মিলই পেয়েছি বেশি। হবে নাই বা কেন? আমার জানামতে, সত্যজিৎ ফেলুদাকে বইয়ে এঁকেছিলেন সৌমিত্রকে মাথায় রেখেই। ফেলুদা হিসেবে সৌমিত্রর অভিনয় ফেলুদার স্রষ্টার কাছে কিন্তু ছিল দশে দশই। ওপার বাংলার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় আমার প্রিয় অভিনেতা হয়ে ওঠার শুরু সেই তোপসে দিয়েই।
শুরুতে যে বইটার কাহিনি দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেটার নামটা বলে দিচ্ছি, যারা জানেন না তাঁদের জন্য, ‘গ্যাংটকে গণ্ডগোল’। আর এর পরের অংশটি ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’।

ফেলুদা আমার এত প্রিয় যে এটি নিয়ে লিখতে দিন-ক্ষণ লাগে না। তার পরও আজ বিশেষ একটি দিন। ১৯২১ সালের এই দিনে, মানে ২ মে জন্ম সত্যজিৎ রায়ের। চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালকসহ কত পরিচয় তাঁর। তবে সত্যজিতের নাম মাথায় এলে রহস্য কাহিনিপ্রেমীদের প্রথমেই যে কথাটি মনে পড়ে যায়, তা হলো তিনি না থাকলে ফেলুদার জন্মই হতো না। তাই সত্যজিতের জন্মদিনে আবারও লিখতে বসে গেলাম তাঁর অমর সৃষ্টি ‘ফেলুদা’ নিয়ে।
ফেলুদা এবার ন্যাড়া জায়গাটার পাশে ঘাসের ওপর বসে পড়ে বলল, পাথরটা কীভাবে পড়েছিল জানিস? ‘কীভাবে?’...ফেলুদা ন্যাড়া অংশটার একটা জায়গায় আঙুল দিয়ে দেখাল।...সেখানে ছোট্ট একটা গর্ত রয়েছে। সাপের গর্ত নাকি?...ফেলুদা বলে চলল, ‘প্রায় পঁচাত্তর পার্সেন্ট শিওর হয়ে বলা চলে যে একটা লম্বা লোহার ডান্ডা বা ওই জাতীয় একটা কিছু মাটিতে ঢুকিয়ে চাড় দিয়ে পাথরটাকে ফেলা হয়েছিল।..অর্থাৎ...মিস্টার শিবকুমার শেলভাস্কারের অ্যাক্সিডেন্টটা প্রকৃতির নয়, মানুষের কীর্তি।...অর্থাৎ–এক কথায়–গণ্ডগোল, বিস্তর গণ্ডগোল...’
বুঝতেই পারছেন ফেলুদার একটি কাহিনির কিছুটা অংশ তুলে দিয়েছি।
আরেকটি কাহিনির কয়েকটি লাইন পড়ুন...ঘরের মধ্যে একটা অদ্ভুত থমথমে ভাব...অরুণবাবু উঠে দাঁড়িয়েছেন—তাঁর চোখ লাল, তাঁর কপালের রগ ফুলে উঠেছে।
‘শুনুন মি: মিত্তির’, গর্জিয়ে উঠলেন অরুণবাবু, ‘আপনি নিজেকে যত বড় গোয়েন্দাই ভাবুন না কেন, আপনার কাছ থেকে এমন মিথ্যে, অমূলক, ভিত্তিহীন অভিযোগ আমি বরদাস্ত করব না।—জগৎ সিং!’...
...‘আর একটি পা এগোবে না তুমি?’ ফেলুদার হাতে রিভলবার, সেটার লক্ষ্য অরুণবাবুর পেছনে জগৎ সিংয়ের দিকে। ‘ওর মাথার একগাছা চুল কাল রাত্রে আমার হাতে উঠে এসেছিল। আমি জানি ও আপনারই আজ্ঞা পালন করতে এসেছিল আমার ঘরে।’...
এমনই আগাগোড়া রহস্য-রোমাঞ্চে ভরপুর ফেলুদার কাহিনিগুলো। শুরুর অংশ দুটি কোন বই থেকে নেওয়া, পাঠকেরা নিশ্চয় বুঝে গেছেন। যাঁরা বোঝেননি তাঁদের উত্তর পেতে হলে লেখাটা পড়া চালিয়ে যেতে হবে।
এবার ফেলুদার সঙ্গে আমার পরিচয়টা কীভাবে তা বরং সংক্ষেপে বলি। তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি। আব্বুর চাকরি সূত্রে থাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ডাক্তার দেখাতে কিংবা ছুটিছাঁটায় আসা হতো ঢাকায়। বেইলি রোডে খালার বাসায় ওঠা হতো বেশি। আমার থেকে বছর কয়েকের বড় খালাতো ভাই নাহিদ বইয়ের পোকা। তাঁর বইয়ের আলমারিতে হত্যাপুরী, বাক্স রহস্য, গোরস্থানে সাবধান, দার্জিলিং জমজমাট, গ্যাংটকে গণ্ডগোল বইগুলো দেখতাম। কৌতূহলও জাগত মনে। তবে তখনো রহস্য–রোমাঞ্চের দুনিয়া নিতান্ত অপরিচিত। আমার দৌড় তখন রূপকথা, বড়জোর কমিকস পর্যন্ত।
পরের বছর। ক্লাস ফোরে পড়ি। তিন গোয়েন্দা দিয়ে রহস্য-রোমাঞ্চ জগতের সঙ্গে পরিচয় হয়ে গেছে তত দিনে। ঢাকায় আসার পর একদিন নাহিদ ভাইয়ার আলমারি থেকে কী ভেবে সাহস করে হত্যাপুরী বইটা নিলাম। পড়তে পড়তে খুন-জখম-সাগরসৈকতময় এক কেসে ফেলুদার সঙ্গে জড়িয়ে পড়লাম। ব্যাস, পরের কয়েকটা দিন ফেলুদায় বুঁদ হয়ে রইলাম। তখন থেকেই আমার ‘খুব প্রিয়’র তালিকায় চলে এলো ফেলুদা, সেই সঙ্গে সত্যজিৎ রায়।
ফেলুদার বই মানেই দুই মলাটের মধ্যে একসঙ্গে অনেক কিছু। রহস্যকাহিনি, এক কথায় দুর্দান্ত। অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ভ্রমণকাহিনি, অসাধারণ। এখানেই কি শেষ? ইতিহাস, মঞ্চ-সিনেমা, সার্কাস, শিকার কত্ত কিছুর সঙ্গে যে পরিচয় করিয়ে দিল ফেলুদা। তোপসে, লালমোহন গাঙ্গুলিও জায়গা করে নিল আমার বালক মনে। এদের বাস্তব অস্তিত্ব নেই এটা বিশ্বাস করতে মন চাইত না। এখনো মানতে পারি না। এরপর থেকে ফেলুদা পড়েই যাচ্ছি। একই বই কয়েকবারও কিনেছি, পড়েছি।
চেহারাটা ভাসছে লিখতে বসে। সাতাশ বছরের এক তরুণ, বয়স যাঁর আটকে আছে সেখানেই। উচ্চতা ছয় ফুট দুই ইঞ্চি। ঠোঁটে চারমিনার। মার্শাল আর্টে দক্ষ, ভয়ানক সব অপরাধীদের সঙ্গে লড়াই বাড়তি ভরসা সঙ্গে ৩২ কোল্ট রিভলবার। তবে ফেলুদার মূল অস্ত্র ধারালো মগজটা। দুর্দান্ত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণক্ষমতা ব্যবহার করে জটিল সব রহস্য সমাধান করে অবলীলায়।
একটা বই পড়ি, নতুন একটা দুয়ার খুলে যায় আমার সামনে। রহস্য-রোমাঞ্চের পাশাপাশি ফেলুদা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মনটাকেও উন্মাতাল করে তুলল। ‘গ্যাংটকে গণ্ডগোল’ পড়তে পড়তে বরফঢাকা শহরটিতে না গিয়েও যেন যাওয়া হয়ে গেল আমার। সিকিমের রাজধানীতে সশরীরে হাজিরা দিতে পারিনি এখনো, তবে ফেলুদা বা প্রদোষ চন্দ্র মিত্রর ট্রেইল অনুসরণ করে গিয়েছি অনেক জায়গায়ই।
‘রাজেনবাবুকে রোজ বিকেলে ম্যাল্-এ আসতে দেখি। মাথার চুল সব পাকা, গায়ের রং ফরসা, মুখের ভাব হাসিখুশি। পুরোনো নেপালি জিনিস-টিনিসের যে দোকানটা আছে, সেটায় কিছুক্ষণ কাটিয়ে বাইরে এসে বেঞ্চিতে আধঘণ্টার মতো বসে সন্ধে হব-হব হলে জলাপাহাড়ে বাড়ি ফিরে যান।’
‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’র শুরুটা এভাবেই, দার্জিলিংয়ে। ওটাই ছিল ফেলুদার প্রথম গোয়েন্দাকাহিনি। তবে আমার দার্জিলিংকে চেনা শুরু ফেলুদার ‘দার্জিলিং জমজমাট’ বইটি দিয়ে। কারণ ফেলুদার গোয়েন্দাগিরির আগে আমার পড়া হয়ে যায় দার্জিলিং জমজমাট। এখনো ফেলুদার বইয়ের মধ্যে সবার আগে মনের পর্দায় ভেসে ওঠে এই বইয়ের মলাট।
তেমনি তোপসের মতো আমিও কিউরিও যে পুরোনো দুষ্প্রাপ্য জিনিস, সেটা শিখি ফেলুদার কাছ থেকেই। তাই ২০১৭ সালে প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, সিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলো বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নিই।
তবে ফেলুদাকে অনুসরণ শুরু আরও আগে। সালটা ২০১৪, জানুয়ারির ৭ তারিখ রাতে স্ত্রী পুনমসহ মধুচন্দ্রিমায় পৌঁছাই কাঠমাণ্ডু। নেপাল আমাকে টেনেছিল সেই ক্লাস সেভেনে পড়ার সময়। তখন ফেলুদার যত কাণ্ড কাঠমান্ডু পড়েই বলা চলে হিমালয়রাজ্যের শহরটা মনে গেঁথে যায়। একইভাবে ২০১৮তে ঋষিকেশের রামঝুলা-লছমন ঝুলা দেখতে যাওয়ার পেছনেও ওই ফেলুদাই। লছমন ঝুলার কথা প্রথম জানতে পারি যে ফেলুদার ‘বাদশাহী আংটি’ পড়ে। পাহাড়-অরণ্যময় জায়গা না হয়েও ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে ভারতের কলকাতার প্রতি আমার টানটা ফেলুদা এবং কলেজ স্ট্রিটের কল্যাণেই। তবে গতবার কলকাতায় গিয়ে গোরস্থানে সাবধানের সেই পার্ক স্ট্রিট সিমেট্রিতে একবার ঢুঁ মারতে না পারার যন্ত্রণাটা পোড়ায়। মোটের ওপর ভ্রমণ আমার প্রিয় হয়ে ওঠার পেছনেও ফেলুদা ও সত্যজিতের অবদান কম-বেশি আছেই।
প্রদোষ চন্দ্র মিত্র একা নয়। আরও কত আকর্ষণীয়, কখনো বিচিত্র চরিত্রের দেখা মেলে ফেলুদার বইগুলোতে। তোপসে, অর্থাৎ তপেশরঞ্জন মিত্রর কথা বলতে হবে সবার আগে। একেবারে শুরু থেকেই যে প্রিয় গোয়েন্দার সঙ্গে আছে তার খুড়তুতো ভাইটি। তার জবানীতেই ফেলুদার কাহিনিগুলো জানতে পারি। তা ছাড়া যখন ফেলুদা পড়া শুরু করি, তোপসের জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেওয়াটা অনেক সহজ ছিল।
সোনার কেল্লায় ওই যে লালমোহন গাঙ্গুলির সঙ্গে পরিচয় হলো, তারপর থেকে ফেলুদার প্রতিটি বইয়ের আশ্চর্য এক চাটনি হয়ে উঠলেন রহস্য-রোমাঞ্চ সাহিত্যিক জটায়ু। টানটান উত্তেজনায় ভরা রহস্যকাহিনিগুলোয় জটায়ুর অদ্ভুত, হাস্য-রসাত্মক কাণ্ডকীর্তি যেন আনন্দময় রিলিফ।
তেমনি ফেলুদা পড়তে পড়তে আরও কত চরিত্র যে আপন হয়ে গেল আমার। দুর্ধর্ষ মগনলাল মেঘরাজ, জীবন্ত জ্ঞানকোষ সিধু জ্যাঠা, ছিন্নমস্তার অভিশাপের দুর্ধর্ষ কারাণ্ডিকার, ধাঁধাপাগল মহেশ চৌধুরী, বাদশাহী আংটির বনবিহারী বাবু, সোনার কেল্লার মুকুলসহ কত কত চরিত্র লিখতে বসে চোখের সামনে চলে আসছে।
সাধারণত কোনো বই পড়তে গেলে চরিত্রগুলোর চেহারা-ছবি নিজের মতো করে তৈরি করে নিই মনে মনে। সিনেমা দেখার থেকে আমি বই পড়াকে এগিয়ে রাখার এটাও একটা কারণ। তবে ফেলুদার বেলায় সত্যজিতের আঁকায় যে সাদাকালো চেহারাগুলো পেয়েছি, সেগুলো প্রভাব বিস্তার করেছে মনের ওপর বেশ।
আশ্চর্য ব্যাপার, এই আধবুড়ো বয়সেও ফেলুদা আমাকে টানে। এখনো অবসরে হাতের কাছে মনের মতো বই না পেলে বুকশেলফের নির্দিষ্ট একটি তাক চাবি দিয়ে খুলে বের করে আনি ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’ কিংবা ‘রয়েল বেঙ্গল রহস্য’। তারপর বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে প্রিয় ফেলুদার সঙ্গে হারিয়ে যাই রহস্য-রোমাঞ্চে ভরা এক জগতে।
ফেলুদার জন্মটা যে শার্লক হোমসে অনুপ্রাণিত হয়ে, বুঝে নিতে কষ্ট হয় না। সত্যজিৎ ফেলুদার গুরু হিসেবে বারবারই পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন হোমসকে। এমনকি ফেলুদাকে ঘুরিয়ে এনেছেন তার গুরু হোমসের বেকার স্ট্রিট থেকে। শুধু তাই নয়, সত্যজিৎ রায় ফেলুদার আস্তানা হিসেবে ২২১ বি বেকার স্ট্রিটের অদলেই হয়তো দেখিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার ২১ রজনী সেন রোডকে। মজার ঘটনা, ২২১ বি নামে বাড়ির কোনো অস্তিত্ব যেমন নেই, তেমনি রজনী সেন রোড থাকলেও ২১ নম্বর বাড়ির খোঁজ মেলেনি সেখানে।
ফেলুদা চরিত্রটির জন্ম যেন অনেকটা হঠাৎ করেই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষুরধার গোয়েন্দাটির স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়ের একটা লাল খেরো খাতা ছিল। ওখানে নিজের গল্পগুলোর খসড়া লিখতেন। খসড়া লেখার জন্য আরও বেশ কয়েকটা খাতাও ছিল। কিন্তু কী আশ্চর্য! ১৯৬৫ সালের আগে কোথাও ফেলুদা চরিত্রটি সম্পর্কে কিছুই ছিল না। ১৯৬৫ সালে লাল খেরো খাতার তৃতীয় পাতায় হঠাৎ করেই এই গোয়েন্দার দেখা মেলে।
‘সন্দেশ’ পত্রিকায় ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর সংখ্যায় আবির্ভাব ফেলুদার, ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’ গল্পটির মাধ্যমে। পরপর তিনটি সংখ্যায় শেষ হয়েছিল গোটা গল্পটি। তবে ফেলুদার প্রথম উপন্যাস ‘বাদশাহী আংটি’, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বই আকারে যেটি বের হয় ১৯৬৯-এ। সত্যজিৎ সম্ভবত নিজেও ভাবেননি এভাবে বাঙালি পাঠকের মন জয় করে নেবে ফেলুদা। সিরিজটির জনপ্রিয়তা এতটাই তুঙ্গে ছিল যে বাদশাহী আংটির পর থেকে ফি বছরই বলা চলে গোয়েন্দাটিকে নিয়ে উপন্যাস না হয় গল্প কিছু না কিছু লিখেছেন।
১৯৯২ সালে সত্যজিৎ মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রবল জনপ্রিয় এই গোয়েন্দাকে নিয়ে লেখেন ৩৫টি সম্পূর্ণ গল্প-উপন্যাস। এ ছাড়া শেষ হয়নি এমন কয়েকটি পান্ডুলিপিও ছিল।
সত্যজিৎ রায় মারা যাওয়ার কয়েক বছর পরের ঘটনা। চট্টগ্রামে বেড়াতে গিয়েছি। আবারও সেই নাহিদ ভাইয়াদের বাসা। ওর বাবা তখন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। নিউ মার্কেটে গেলাম সবাই মিলে। দুটো বই কিনলাম। এর একটা ‘রবার্টসনের রুবি’। স্পষ্ট মনে আছে, বইটি কেনার সময় বিষাদে ছেয়ে গিয়েছিল মনটা, কারণ সত্যজিৎ তত দিনে দুনিয়া ছেড়ে গিয়েছেন। জানামতে, ওটাই ফেলুদার পূর্ণাঙ্গ শেষ উপন্যাস।
‘রবার্টসনের রুবি’ কেনার সময় কিংবা পরে একটা চিন্তা বারবারই উদয় হয়েছে মনে—আহ! সত্যজিৎ যদি আরও কয়েকটি বছর বাঁচতেন! গোটা আটেক ফেলুদা, দুই-তিনটা শঙ্কু কিংবা একটা তারিণীখুড়োর বই পেয়ে যেতাম হয়তো। বড় স্বার্থপর চিন্তা! কী বলব বলুন! সত্যজিতের এই অমর সৃষ্টিগুলো যে এখনো মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে।
ফেলুদাকে নিয়ে হয়েছে বেশ কিছু সিনেমা, হালফিল ওয়েব সিরিজও। এ ব্যাপারে বেশি কিছু লিখতে চাই না। তবে পর্দায় ফেলুদা হিসেবে আমার প্রথম পছন্দ সব্যসাচী চক্রবর্তী। যদি চেহারাটা শুরুতে মোটেই ফেলুদাকে যেভাবে মনে মনে কল্পনা করেছি এর সঙ্গে যায়নি। তবে সব্যসাচীর অভিনয়ে মুগ্ধ হই।
প্রথম ফেলুদা হিসেবে দেখেছি কিন্তু সৌমিত্রকেই। ১৯৭৪ সালে, ‘সোনার কেল্লা’ দিয়ে তাঁর আবির্ভাব। চেহারার কথা বললে কল্পনার ফেলুদার সঙ্গে তাঁর মিলই পেয়েছি বেশি। হবে নাই বা কেন? আমার জানামতে, সত্যজিৎ ফেলুদাকে বইয়ে এঁকেছিলেন সৌমিত্রকে মাথায় রেখেই। ফেলুদা হিসেবে সৌমিত্রর অভিনয় ফেলুদার স্রষ্টার কাছে কিন্তু ছিল দশে দশই। ওপার বাংলার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় আমার প্রিয় অভিনেতা হয়ে ওঠার শুরু সেই তোপসে দিয়েই।
শুরুতে যে বইটার কাহিনি দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেটার নামটা বলে দিচ্ছি, যারা জানেন না তাঁদের জন্য, ‘গ্যাংটকে গণ্ডগোল’। আর এর পরের অংশটি ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’।

রান্নাঘরে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল এখন পরিচিত উপকরণ। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ছড়িয়েছে, রান্নার সময় অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করলে শরীরে অ্যালুমিনিয়াম জমে গিয়ে গুরুতর অসুখের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি পুরোপুরি ভয় পাওয়ার মতো নয়। আবার একেবারে ঝুঁকিমুক্তও বলা যায় না...
৯ ঘণ্টা আগে
বিশ্বের অনেক দেশেই খাবারের বিষয়ে একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে। সেটা হলো, খাবার ভালোভাবে রান্না করতে হবে, পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। কিন্তু জাপানে এই ধারণার ব্যতিক্রম দেখা যায়, বিশেষ করে ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে। সেখানে কাঁচা ডিম খাওয়া শুধু সাধারণ নয়, দৈনন্দিন খাদ্যসংস্কৃতির অংশ। বিশ্বের অনেক দেশেই খাবারের...
১১ ঘণ্টা আগে
আমিষ হোক কিংবা নিরামিষ, খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে এর জুড়ি নেই। রসুনের আছে কড়া ঘ্রাণ, যা রান্নায় যোগ করে নতুন মাত্রা। শুধু তা-ই নয়, কাঁচা রসুনও পেটের অসুখ ভালো করে দেওয়া পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমরা কি রসুনের সঠিক ব্যবহার জানি? অনেক সময় রসুন ব্যবহারের সাধারণ কিছু ভুলেই...
১৩ ঘণ্টা আগে
একজন নারী বেশি বুদ্ধিমান নাকি একজন পুরুষের মাথায় বুদ্ধির ভারটা বেশি, তুমুল সেই বিতর্কের ফাঁক গলে নারীরা বাড়ির আঙিনা থেকে পাড়ি জমাচ্ছে মহাকাশে। এমনকি একজন পুরুষ জটিলতম মেশিনের ডিজাইন করতে করতে রান্নাঘরে তৈরি করছে নতুন নতুন খাবারের রেসিপি। তা-ও থামছে না বুদ্ধির ঘটে কার পাল্লা ভারী, তা নিয়ে ঝগড়া...
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

রান্নাঘরে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল এখন পরিচিত উপকরণ। মাংস বা সবজি বেক করা, খাবার ঢেকে রাখা কিংবা ওভেনে ব্যবহার—সব ক্ষেত্রেই ফয়েলের ব্যবহার ব্যাপক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ছড়িয়েছে, রান্নার সময় অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করলে শরীরে অ্যালুমিনিয়াম জমে গিয়ে গুরুতর অসুখের কারণ হতে পারে। ফলে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন, আসলে বিষয়টি কতটা সত্য?
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি পুরোপুরি ভয় পাওয়ার মতো নয়। আবার একেবারে ঝুঁকিমুক্তও বলা যায় না। সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল সাধারণ রান্নার জন্য নিরাপদ।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের খাদ্যনিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক ডা. ড্যারিন ডেটওয়াইলার বলেন, ‘প্রতিদিনের সাধারণ রান্না ও বেকিংয়ের কাজে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার সাধারণত নিরাপদ। এতে হঠাৎ করে অ্যালুমিনিয়াম বিষক্রিয়ার আশঙ্কা নেই।’
তবে তিনি সতর্ক করে জানান, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ফয়েল থেকে অল্প পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম খাবারের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। বিশেষ করে খুব বেশি তাপমাত্রায় রান্না করলে বা টক ও অ্যাসিডিক খাবারের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি বাড়ে।

টক খাবারে কেন ঝুঁকি বেশি
টমেটো, লেবু, কমলা, ভিনেগার বা টক-মিষ্টি সসজাতীয় খাবারে প্রাকৃতিকভাবে অ্যাসিড থাকে। এই অ্যাসিড অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটাতে পারে। ফলে ফয়েলের গঠন ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং সেখান থেকে অল্প পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম খাবারের মধ্যে চলে আসতে পারে।
ড. ডেটওয়াইলারের ভাষায়, ‘এর পরিমাণ সাধারণত খুবই সামান্য। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিতভাবে বেশি পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম শরীরে প্রবেশ করলে তা স্নায়বিক রোগসহ কিছু দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যসমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।’
সর্বোচ্চ কত তাপমাত্রা পর্যন্ত নিরাপদ
ইন্টারন্যাশনাল ফুড ইনফরমেশন কাউন্সিলের যোগাযোগ পরিচালক তামিকা সিমস জানান, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ২০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় নিরাপদভাবে ব্যবহার করা যায়। এই সীমার মধ্যে ওভেন বা সাধারণ রান্নার বেশির ভাগ কাজই পড়ে। রান্নাবিষয়ক মার্কিন বিশেষজ্ঞ জেসিকা গেভিন বলেন, ‘দৈনন্দিন রান্নায় অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল সাধারণত নিরাপদ। তবে টক বা অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার দীর্ঘ সময় ফয়েলের সংস্পর্শে রাখা উচিত নয়। এতে খাবারে ধাতব স্বাদ আসতে পারে এবং ফয়েলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
শরীরে অ্যালুমিনিয়াম কতটা প্রবেশ করে
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানায়, একজন গড় আমেরিকান প্রতিদিন খাবারের মাধ্যমে প্রায় ৭ থেকে ৯ মিলিগ্রাম অ্যালুমিনিয়াম গ্রহণ করেন। এর বেশির ভাগ অংশ শরীর স্বাভাবিকভাবেই প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। জেসিকা গ্যাভিনের মতে, শরীরে প্রবেশ করা মোট অ্যালুমিনিয়ামের মাত্র ৪ শতাংশের মতো আসে রান্নার সরঞ্জাম, কাটলারি, বেকিং ট্রে বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল থেকে। বাকি অংশ আসে খাবার, প্রসাধনী, ওষুধ, পানি এবং বাতাসে থাকা কণিকার মাধ্যমে।
কারা বেশি সতর্ক থাকবেন
ডা. ডেটওয়াইলার জানান, মাঝেমধ্যে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করলে ঝুঁকি খুবই সামান্য। তবে যাঁরা নিয়মিত ও দীর্ঘদিন ধরে বেশি পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম গ্রহণ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
বিশেষ করে—
নিরাপদ ব্যবহারের পরামর্শ
বিশেষজ্ঞরা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহারের কয়েকটি সহজ পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো হলো:
বিকল্প কী
যাঁরা একেবারে ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে চান, তাঁদের জন্য ভালো বিকল্প হলো কাচের বেকিং ট্রে বা পাত্র। এগুলো রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয়, খাবারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে না এবং কোনো ক্ষতিকর উপাদান খাবারে মেশার আশঙ্কা নেই।
সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল রান্নার ক্ষেত্রে সাধারণত নিরাপদ। তবে টক খাবার, অতিরিক্ত তাপ ও দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি। সচেতন ব্যবহারই পারে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে।
সূত্র: হাফপোস্ট

রান্নাঘরে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল এখন পরিচিত উপকরণ। মাংস বা সবজি বেক করা, খাবার ঢেকে রাখা কিংবা ওভেনে ব্যবহার—সব ক্ষেত্রেই ফয়েলের ব্যবহার ব্যাপক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ছড়িয়েছে, রান্নার সময় অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করলে শরীরে অ্যালুমিনিয়াম জমে গিয়ে গুরুতর অসুখের কারণ হতে পারে। ফলে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন, আসলে বিষয়টি কতটা সত্য?
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি পুরোপুরি ভয় পাওয়ার মতো নয়। আবার একেবারে ঝুঁকিমুক্তও বলা যায় না। সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল সাধারণ রান্নার জন্য নিরাপদ।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের খাদ্যনিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক ডা. ড্যারিন ডেটওয়াইলার বলেন, ‘প্রতিদিনের সাধারণ রান্না ও বেকিংয়ের কাজে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার সাধারণত নিরাপদ। এতে হঠাৎ করে অ্যালুমিনিয়াম বিষক্রিয়ার আশঙ্কা নেই।’
তবে তিনি সতর্ক করে জানান, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ফয়েল থেকে অল্প পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম খাবারের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। বিশেষ করে খুব বেশি তাপমাত্রায় রান্না করলে বা টক ও অ্যাসিডিক খাবারের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি বাড়ে।

টক খাবারে কেন ঝুঁকি বেশি
টমেটো, লেবু, কমলা, ভিনেগার বা টক-মিষ্টি সসজাতীয় খাবারে প্রাকৃতিকভাবে অ্যাসিড থাকে। এই অ্যাসিড অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটাতে পারে। ফলে ফয়েলের গঠন ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং সেখান থেকে অল্প পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম খাবারের মধ্যে চলে আসতে পারে।
ড. ডেটওয়াইলারের ভাষায়, ‘এর পরিমাণ সাধারণত খুবই সামান্য। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিতভাবে বেশি পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম শরীরে প্রবেশ করলে তা স্নায়বিক রোগসহ কিছু দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যসমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।’
সর্বোচ্চ কত তাপমাত্রা পর্যন্ত নিরাপদ
ইন্টারন্যাশনাল ফুড ইনফরমেশন কাউন্সিলের যোগাযোগ পরিচালক তামিকা সিমস জানান, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ২০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় নিরাপদভাবে ব্যবহার করা যায়। এই সীমার মধ্যে ওভেন বা সাধারণ রান্নার বেশির ভাগ কাজই পড়ে। রান্নাবিষয়ক মার্কিন বিশেষজ্ঞ জেসিকা গেভিন বলেন, ‘দৈনন্দিন রান্নায় অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল সাধারণত নিরাপদ। তবে টক বা অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার দীর্ঘ সময় ফয়েলের সংস্পর্শে রাখা উচিত নয়। এতে খাবারে ধাতব স্বাদ আসতে পারে এবং ফয়েলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
শরীরে অ্যালুমিনিয়াম কতটা প্রবেশ করে
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানায়, একজন গড় আমেরিকান প্রতিদিন খাবারের মাধ্যমে প্রায় ৭ থেকে ৯ মিলিগ্রাম অ্যালুমিনিয়াম গ্রহণ করেন। এর বেশির ভাগ অংশ শরীর স্বাভাবিকভাবেই প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। জেসিকা গ্যাভিনের মতে, শরীরে প্রবেশ করা মোট অ্যালুমিনিয়ামের মাত্র ৪ শতাংশের মতো আসে রান্নার সরঞ্জাম, কাটলারি, বেকিং ট্রে বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল থেকে। বাকি অংশ আসে খাবার, প্রসাধনী, ওষুধ, পানি এবং বাতাসে থাকা কণিকার মাধ্যমে।
কারা বেশি সতর্ক থাকবেন
ডা. ডেটওয়াইলার জানান, মাঝেমধ্যে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করলে ঝুঁকি খুবই সামান্য। তবে যাঁরা নিয়মিত ও দীর্ঘদিন ধরে বেশি পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম গ্রহণ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
বিশেষ করে—
নিরাপদ ব্যবহারের পরামর্শ
বিশেষজ্ঞরা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহারের কয়েকটি সহজ পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো হলো:
বিকল্প কী
যাঁরা একেবারে ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে চান, তাঁদের জন্য ভালো বিকল্প হলো কাচের বেকিং ট্রে বা পাত্র। এগুলো রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয়, খাবারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে না এবং কোনো ক্ষতিকর উপাদান খাবারে মেশার আশঙ্কা নেই।
সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল রান্নার ক্ষেত্রে সাধারণত নিরাপদ। তবে টক খাবার, অতিরিক্ত তাপ ও দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি। সচেতন ব্যবহারই পারে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে।
সূত্র: হাফপোস্ট

১৯২১ সালের এই দিনে, মানে ২ মে জন্ম সত্যজিৎ রায়ের। চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক কত পরিচয় তাঁর। তবে সত্যজিতের নাম মাথায় এলে রহস্য কাহিনিপ্রেমীদের প্রথমেই যে কথাটি মনে পড়ে যায় তা হলো তিনি না থাকলে ফেলুদার জন্মই হতো না। তাই সত্যজিতের জন্মদিনে আবারও লিখতে বসে গেল
০২ মে ২০২৩
বিশ্বের অনেক দেশেই খাবারের বিষয়ে একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে। সেটা হলো, খাবার ভালোভাবে রান্না করতে হবে, পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। কিন্তু জাপানে এই ধারণার ব্যতিক্রম দেখা যায়, বিশেষ করে ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে। সেখানে কাঁচা ডিম খাওয়া শুধু সাধারণ নয়, দৈনন্দিন খাদ্যসংস্কৃতির অংশ। বিশ্বের অনেক দেশেই খাবারের...
১১ ঘণ্টা আগে
আমিষ হোক কিংবা নিরামিষ, খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে এর জুড়ি নেই। রসুনের আছে কড়া ঘ্রাণ, যা রান্নায় যোগ করে নতুন মাত্রা। শুধু তা-ই নয়, কাঁচা রসুনও পেটের অসুখ ভালো করে দেওয়া পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমরা কি রসুনের সঠিক ব্যবহার জানি? অনেক সময় রসুন ব্যবহারের সাধারণ কিছু ভুলেই...
১৩ ঘণ্টা আগে
একজন নারী বেশি বুদ্ধিমান নাকি একজন পুরুষের মাথায় বুদ্ধির ভারটা বেশি, তুমুল সেই বিতর্কের ফাঁক গলে নারীরা বাড়ির আঙিনা থেকে পাড়ি জমাচ্ছে মহাকাশে। এমনকি একজন পুরুষ জটিলতম মেশিনের ডিজাইন করতে করতে রান্নাঘরে তৈরি করছে নতুন নতুন খাবারের রেসিপি। তা-ও থামছে না বুদ্ধির ঘটে কার পাল্লা ভারী, তা নিয়ে ঝগড়া...
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

বিশ্বের অনেক দেশেই খাবারের বিষয়ে একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে। সেটা হলো, খাবার ভালোভাবে রান্না করতে হবে, পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। কিন্তু জাপানে এই ধারণার ব্যতিক্রম দেখা যায়, বিশেষ করে ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে। সেখানে কাঁচা ডিম খাওয়া শুধু সাধারণ নয়, দৈনন্দিন খাদ্যসংস্কৃতির অংশ।
জাপানে ভ্রমণে গেলে বিদেশিরা প্রায়ই কাঁচা ডিমসহ পরিবেশিত বিভিন্ন খাবারের মুখোমুখি হন। দেশটির সকালের জনপ্রিয় খাবার তামাগো কাকে গোহান (গরম ভাতে কাঁচা ডিম), উডন সুকিমি নুডলস কিংবা গ্রিল করা গরুর মাংসের সঙ্গে ঘন ডিপিং সস—সবখানেই কাঁচা ডিম ব্যবহার করা হয়। অথচ বিশ্বের অন্য অনেক দেশে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া নিয়ে ভয়ের কারণে কাঁচা ডিম এড়িয়ে চলা হয়।
এই আত্মবিশ্বাসের পেছনে রয়েছে জাপানের সুসংগঠিত খাদ্যনিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানে খামার থেকে শুরু করে সুপার মার্কেট পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে ডিমের গুণমান নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

খামার থেকে নিরাপত্তা শুরু
জাপান পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (জেপিএ) তথ্য অনুযায়ী, ডিমের নিরাপত্তা শুরু হয় মুরগি পালনের পরিবেশ থেকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডিম পাড়া মুরগি খোলা পরিবেশে নয়, নিয়ন্ত্রিত ও আবদ্ধ ব্যবস্থায় পালন করা হয়। ফলে বন্য পাখি, পোকামাকড় বা ইঁদুরের মাধ্যমে রোগজীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকি কমে যায়। বড় খামারগুলোতে মুরগিকে ছোট বয়সেই সালমোনেলা প্রতিরোধের টিকা দেওয়া হয়। এতে করে মুরগির শরীর থেকে ডিমে ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর আশঙ্কা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। পাশাপাশি খাদ্য স্বাস্থ্য আইনের আওতায় খাদ্য ও পানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।
জিপি সেন্টারে আধুনিক প্রযুক্তি
খামার থেকে সংগ্রহের পর ডিম সরাসরি বাজারে যায় না। প্রথমে সেগুলো পাঠানো হয় বিশেষায়িত গ্রেডিং অ্যান্ড প্যাকিং সেন্টার তথা জিপি সেন্টারে। এখানেই ডিমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন হয়। সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো ধোয়ার প্রক্রিয়া। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ডিম সাধারণত না ধুয়ে বাজারে আনা হয়, যাতে ডিমের প্রাকৃতিক সুরক্ষাকবচ অক্ষুণ্ন থাকে। কিন্তু জাপানে উষ্ণ পানি ও জীবাণুনাশক দিয়ে ডিম ধোয়া বাধ্যতামূলক। এতে ডিমের খোলস থেকে সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া সম্পূর্ণভাবে দূর হয়, যদিও প্রাকৃতিক আবরণ নষ্ট হয়ে যায়। এরপর অত্যাধুনিক যন্ত্র দিয়ে ডিম পরীক্ষা করা হয়। স্পেকট্রাল বিশ্লেষণের মাধ্যমে রক্তের দাগ বা অন্যান্য বস্তুযুক্ত ডিম বাদ দেওয়া হয়। এমনকি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র দিয়ে ডিমে হালকা টোকা দিয়ে শব্দ বিশ্লেষণের মাধ্যমে খোলসের সূক্ষ্ম ফাটলও শনাক্ত করা হয়। যেগুলো চোখে দেখা যায় না, কিন্তু ব্যাকটেরিয়া ঢোকার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
কাঁচা খাওয়ার জন্য আলাদা মেয়াদ
জাপানি ডিমের প্যাকেটে থাকা ‘বেস্ট বিফোর’ তারিখটি আসলে সাধারণ মেয়াদ নয়। এটি হলো কাঁচা খাওয়ার জন্য নিরাপদ সময়সীমা। সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি হার বিবেচনা করে এই সময় নির্ধারণ করা হয়। সে সময়কাল গ্রীষ্মকালে সাধারণত ১৪ দিন এবং শীতকালে ২১ দিন। এই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও ডিম নষ্ট হয় না, তবে তখন তা অবশ্যই ভালোভাবে রান্না করে খেতে হয়।
সংরক্ষণ ব্যবস্থা
ধোয়ার ফলে ডিমের প্রাকৃতিক সুরক্ষা স্তর নষ্ট হওয়ায় জাপানে ডিম সব সময় ঠান্ডা পরিবেশে সংরক্ষণ করা হয়। পরিবহন থেকে শুরু করে দোকানের শেলফ সব জায়গায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা হয়, যাতে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ থাকে। এ কারণেই জাপানে সুপার মার্কেট বা কনভিনিয়েন্স স্টোরে ডিম কখনোই ঘরের তাপমাত্রায় রাখা হয় না। এই মডেল এখন হংকং ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশেও অনুসরণ করা হচ্ছে। এর ফলে সেখানেও কাঁচা ডিম খাওয়ার চাহিদা বাড়ছে।
জাপানে কাঁচা ডিম খাওয়া কোনো ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় নয়। এটি সুপরিকল্পিত ও বিজ্ঞানভিত্তিক খাদ্যনিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানে কাঁচা ডিম খাওয়ার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে দীর্ঘদিনের গবেষণা, কঠোর নীতিমালা এবং প্রযুক্তিনির্ভর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে। খামারে মুরগি পালনের পরিবেশ থেকে শুরু করে ডিম সংগ্রহ, পরিষ্কার করা, পরীক্ষা, সংরক্ষণ এবং ভোক্তার হাতে পৌঁছানো—প্রতিটি ধাপেই রয়েছে নির্দিষ্ট নিয়ম ও নজরদারি। কোনো একটি ধাপেও অবহেলা বা শিথিলতার সুযোগ নেই।
সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

বিশ্বের অনেক দেশেই খাবারের বিষয়ে একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে। সেটা হলো, খাবার ভালোভাবে রান্না করতে হবে, পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। কিন্তু জাপানে এই ধারণার ব্যতিক্রম দেখা যায়, বিশেষ করে ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে। সেখানে কাঁচা ডিম খাওয়া শুধু সাধারণ নয়, দৈনন্দিন খাদ্যসংস্কৃতির অংশ।
জাপানে ভ্রমণে গেলে বিদেশিরা প্রায়ই কাঁচা ডিমসহ পরিবেশিত বিভিন্ন খাবারের মুখোমুখি হন। দেশটির সকালের জনপ্রিয় খাবার তামাগো কাকে গোহান (গরম ভাতে কাঁচা ডিম), উডন সুকিমি নুডলস কিংবা গ্রিল করা গরুর মাংসের সঙ্গে ঘন ডিপিং সস—সবখানেই কাঁচা ডিম ব্যবহার করা হয়। অথচ বিশ্বের অন্য অনেক দেশে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া নিয়ে ভয়ের কারণে কাঁচা ডিম এড়িয়ে চলা হয়।
এই আত্মবিশ্বাসের পেছনে রয়েছে জাপানের সুসংগঠিত খাদ্যনিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানে খামার থেকে শুরু করে সুপার মার্কেট পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে ডিমের গুণমান নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

খামার থেকে নিরাপত্তা শুরু
জাপান পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (জেপিএ) তথ্য অনুযায়ী, ডিমের নিরাপত্তা শুরু হয় মুরগি পালনের পরিবেশ থেকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডিম পাড়া মুরগি খোলা পরিবেশে নয়, নিয়ন্ত্রিত ও আবদ্ধ ব্যবস্থায় পালন করা হয়। ফলে বন্য পাখি, পোকামাকড় বা ইঁদুরের মাধ্যমে রোগজীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকি কমে যায়। বড় খামারগুলোতে মুরগিকে ছোট বয়সেই সালমোনেলা প্রতিরোধের টিকা দেওয়া হয়। এতে করে মুরগির শরীর থেকে ডিমে ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর আশঙ্কা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। পাশাপাশি খাদ্য স্বাস্থ্য আইনের আওতায় খাদ্য ও পানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।
জিপি সেন্টারে আধুনিক প্রযুক্তি
খামার থেকে সংগ্রহের পর ডিম সরাসরি বাজারে যায় না। প্রথমে সেগুলো পাঠানো হয় বিশেষায়িত গ্রেডিং অ্যান্ড প্যাকিং সেন্টার তথা জিপি সেন্টারে। এখানেই ডিমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন হয়। সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো ধোয়ার প্রক্রিয়া। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ডিম সাধারণত না ধুয়ে বাজারে আনা হয়, যাতে ডিমের প্রাকৃতিক সুরক্ষাকবচ অক্ষুণ্ন থাকে। কিন্তু জাপানে উষ্ণ পানি ও জীবাণুনাশক দিয়ে ডিম ধোয়া বাধ্যতামূলক। এতে ডিমের খোলস থেকে সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া সম্পূর্ণভাবে দূর হয়, যদিও প্রাকৃতিক আবরণ নষ্ট হয়ে যায়। এরপর অত্যাধুনিক যন্ত্র দিয়ে ডিম পরীক্ষা করা হয়। স্পেকট্রাল বিশ্লেষণের মাধ্যমে রক্তের দাগ বা অন্যান্য বস্তুযুক্ত ডিম বাদ দেওয়া হয়। এমনকি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র দিয়ে ডিমে হালকা টোকা দিয়ে শব্দ বিশ্লেষণের মাধ্যমে খোলসের সূক্ষ্ম ফাটলও শনাক্ত করা হয়। যেগুলো চোখে দেখা যায় না, কিন্তু ব্যাকটেরিয়া ঢোকার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
কাঁচা খাওয়ার জন্য আলাদা মেয়াদ
জাপানি ডিমের প্যাকেটে থাকা ‘বেস্ট বিফোর’ তারিখটি আসলে সাধারণ মেয়াদ নয়। এটি হলো কাঁচা খাওয়ার জন্য নিরাপদ সময়সীমা। সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি হার বিবেচনা করে এই সময় নির্ধারণ করা হয়। সে সময়কাল গ্রীষ্মকালে সাধারণত ১৪ দিন এবং শীতকালে ২১ দিন। এই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও ডিম নষ্ট হয় না, তবে তখন তা অবশ্যই ভালোভাবে রান্না করে খেতে হয়।
সংরক্ষণ ব্যবস্থা
ধোয়ার ফলে ডিমের প্রাকৃতিক সুরক্ষা স্তর নষ্ট হওয়ায় জাপানে ডিম সব সময় ঠান্ডা পরিবেশে সংরক্ষণ করা হয়। পরিবহন থেকে শুরু করে দোকানের শেলফ সব জায়গায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা হয়, যাতে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ থাকে। এ কারণেই জাপানে সুপার মার্কেট বা কনভিনিয়েন্স স্টোরে ডিম কখনোই ঘরের তাপমাত্রায় রাখা হয় না। এই মডেল এখন হংকং ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশেও অনুসরণ করা হচ্ছে। এর ফলে সেখানেও কাঁচা ডিম খাওয়ার চাহিদা বাড়ছে।
জাপানে কাঁচা ডিম খাওয়া কোনো ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় নয়। এটি সুপরিকল্পিত ও বিজ্ঞানভিত্তিক খাদ্যনিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানে কাঁচা ডিম খাওয়ার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে দীর্ঘদিনের গবেষণা, কঠোর নীতিমালা এবং প্রযুক্তিনির্ভর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে। খামারে মুরগি পালনের পরিবেশ থেকে শুরু করে ডিম সংগ্রহ, পরিষ্কার করা, পরীক্ষা, সংরক্ষণ এবং ভোক্তার হাতে পৌঁছানো—প্রতিটি ধাপেই রয়েছে নির্দিষ্ট নিয়ম ও নজরদারি। কোনো একটি ধাপেও অবহেলা বা শিথিলতার সুযোগ নেই।
সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

১৯২১ সালের এই দিনে, মানে ২ মে জন্ম সত্যজিৎ রায়ের। চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক কত পরিচয় তাঁর। তবে সত্যজিতের নাম মাথায় এলে রহস্য কাহিনিপ্রেমীদের প্রথমেই যে কথাটি মনে পড়ে যায় তা হলো তিনি না থাকলে ফেলুদার জন্মই হতো না। তাই সত্যজিতের জন্মদিনে আবারও লিখতে বসে গেল
০২ মে ২০২৩
রান্নাঘরে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল এখন পরিচিত উপকরণ। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ছড়িয়েছে, রান্নার সময় অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করলে শরীরে অ্যালুমিনিয়াম জমে গিয়ে গুরুতর অসুখের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি পুরোপুরি ভয় পাওয়ার মতো নয়। আবার একেবারে ঝুঁকিমুক্তও বলা যায় না...
৯ ঘণ্টা আগে
আমিষ হোক কিংবা নিরামিষ, খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে এর জুড়ি নেই। রসুনের আছে কড়া ঘ্রাণ, যা রান্নায় যোগ করে নতুন মাত্রা। শুধু তা-ই নয়, কাঁচা রসুনও পেটের অসুখ ভালো করে দেওয়া পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমরা কি রসুনের সঠিক ব্যবহার জানি? অনেক সময় রসুন ব্যবহারের সাধারণ কিছু ভুলেই...
১৩ ঘণ্টা আগে
একজন নারী বেশি বুদ্ধিমান নাকি একজন পুরুষের মাথায় বুদ্ধির ভারটা বেশি, তুমুল সেই বিতর্কের ফাঁক গলে নারীরা বাড়ির আঙিনা থেকে পাড়ি জমাচ্ছে মহাকাশে। এমনকি একজন পুরুষ জটিলতম মেশিনের ডিজাইন করতে করতে রান্নাঘরে তৈরি করছে নতুন নতুন খাবারের রেসিপি। তা-ও থামছে না বুদ্ধির ঘটে কার পাল্লা ভারী, তা নিয়ে ঝগড়া...
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

রান্নাঘরের অতি পরিচিত একটি মসলা হলো রসুন। আমিষ হোক কিংবা নিরামিষ, খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে এর জুড়ি নেই। রসুনের আছে কড়া ঘ্রাণ, যা রান্নায় যোগ করে নতুন মাত্রা। শুধু তা-ই নয়, কাঁচা রসুনও পেটের অসুখ ভালো করে দেওয়া পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমরা কি রসুনের সঠিক ব্যবহার জানি? অনেক সময় রসুন ব্যবহারের সাধারণ কিছু ভুলেই খাবারের স্বাদ তিতকুটে হয়ে যায়, নষ্ট হয় এর পুষ্টিগুণও।
ফ্রিজে রসুন রাখার ভুল
অনেকেই রসুন ভালো রাখতে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখেন। এটি রসুনের জন্য সব থেকে ক্ষতিকর। ফ্রিজের ঠান্ডা ও আর্দ্র পরিবেশে রসুন দ্রুত অঙ্কুরিত হয়। আবার ফ্রিজের শুকনা বাতাস রসুনের কোয়া থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়। ফলে রসুন স্পঞ্জের মতো নরম হয়ে যায় এবং এর আসল স্বাদ হারিয়ে ফেলে। এর পরিবর্তে রসুন ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখুন। ঝুড়ি বা জালের ব্যাগে এমন জায়গায় রাখুন, যেখানে বাতাস চলাচল করতে পারে। সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখা ভালো।
রসুন নিয়ে আতঙ্ক

ভিনেগারে রসুনের আচার করলে অথবা সসে মেশালে অনেক সময় তা নীলচে বা সবুজ রং ধারণ করে। অনেকে মনে করেন, এটি বিষাক্ত এবং তা ফেলে দেন। আসলে এটি একটি স্বাভাবিক রাসায়নিক বিক্রিয়া। রসুনের সালফার যৌগ যখন অ্যাসিড বা খনিজ পদার্থের সংস্পর্শে আসে, তখন এমন রং হয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় এবং স্বাদেও কোনো পরিবর্তন আনে না। উত্তর চীনে ‘লাবা রসুন’ নামক একটি ঐতিহ্যবাহী খাবারে রসুনের এই চমৎকার সবুজ রংই বিশেষত্ব হিসেবে ধরা হয়। পুরোনো রসুনের কোয়ার ভেতরে সবুজ রঙের একটি অঙ্কুর দেখা যায়। এটি বিষাক্ত নয়, তবে রসুনের বাকি অংশের তুলনায় এটি বেশ তিতকুটে ও কড়া স্বাদের হয়। রসুনের অঙ্কুরটি ফেলে দিন। সূক্ষ্ম স্বাদের কোনো খাবার বা কাঁচা সস তৈরির সময় এই অঙ্কুরটি ফেলে দেওয়া ভালো। না হলে খাবারের স্বাদ নষ্ট হতে পারে।
কোন রান্নায় কেমন রসুন

রসুনের স্বাদ কতটা কড়া হবে, তা নির্ভর করে আপনি এটি কীভাবে কাটছেন তার ওপর। রসুন যত বেশি মিহি করে কুচি করবেন বা থেঁতো করবেন, তত বেশি সালফার যৌগ নির্গত হবে। এতে স্বাদ তত বেশি উগ্র ও কড়া হবে। সব রান্নায় রসুনকুচি না দিয়ে প্রয়োজন বুঝে কাটুন। ঘন সসের জন্য থেঁতো করা রসুন, স্যুপ বা স্ট্যুর সুগন্ধের জন্য কুচানো রসুন এবং হালকা সবজি রান্নার জন্য পাতলা স্লাইস করা রসুন ব্যবহার করুন। গ্রিল করা খাবারে মিহি কুচি রসুন এড়িয়ে চলুন। মাংস বা সবজি গ্রিল করার আগে ম্যারিনেশনে মিহি কুচি করা রসুন ব্যবহার করবেন না। আগুনের সরাসরি তাপে ক্ষুদ্র রসুনের টুকরাগুলো মাংস সেদ্ধ হওয়ার আগেই পুড়ে কালো হয়ে যায় এবং খাবার তিতকুটে করে ফেলে। রসুনের কুচির বদলে থেঁতো করা রসুনের রস ব্যবহার করুন অথবা ম্যারিনেশনের জন্য গার্লিক পাউডার বেছে নিন।
কড়াইয়ে শুরুতেই রসুন নয়
তেল গরম হতেই পেঁয়াজ বা সবজির আগে রসুন দিয়ে দেওয়া আমাদের অনেকেরই অভ্যাস। রসুনে চিনির পরিমাণ বেশি এবং আর্দ্রতা কম থাকায় এটি খুব দ্রুত পুড়ে যায়। পেঁয়াজ বা মাংস সেদ্ধ হওয়ার আগেই রসুন পুড়ে কালো হয়ে যেতে পারে। আগে সবজি বা পেঁয়াজ ভাজুন। রান্না প্রায় শেষের দিকে এলে রসুনকুচি যোগ করুন। রসুনের সুগন্ধ বের হতে মাত্র ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট সময় লাগে। এ ছাড়া চড়া আঁচে কখনই রসুন ভাজবেন না। অনেকেই সময় বাঁচাতে উচ্চ তাপে রসুন ভাজেন। এতে তা বাইরে থেকে পুড়ে লাল হয়ে যায়, কিন্তু ভেতর থেকে এর সুগন্ধ বের হতে পারে না। এটি খাবারের স্বাদ তিতকুটে করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানও তৈরি করতে পারে। সব সময় মাঝারি বা কম আঁচে রসুন ভাজুন। এতে রসুনের প্রাকৃতিক চিনি ধীরে ধীরে ক্যারামেলাইজড হয়ে চমৎকার সোনালি রং ধারণ করবে এবং একটি মিষ্টি সুগন্ধ তৈরি করবে।
সূত্র: টেস্টিং টেবিল

রান্নাঘরের অতি পরিচিত একটি মসলা হলো রসুন। আমিষ হোক কিংবা নিরামিষ, খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে এর জুড়ি নেই। রসুনের আছে কড়া ঘ্রাণ, যা রান্নায় যোগ করে নতুন মাত্রা। শুধু তা-ই নয়, কাঁচা রসুনও পেটের অসুখ ভালো করে দেওয়া পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমরা কি রসুনের সঠিক ব্যবহার জানি? অনেক সময় রসুন ব্যবহারের সাধারণ কিছু ভুলেই খাবারের স্বাদ তিতকুটে হয়ে যায়, নষ্ট হয় এর পুষ্টিগুণও।
ফ্রিজে রসুন রাখার ভুল
অনেকেই রসুন ভালো রাখতে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখেন। এটি রসুনের জন্য সব থেকে ক্ষতিকর। ফ্রিজের ঠান্ডা ও আর্দ্র পরিবেশে রসুন দ্রুত অঙ্কুরিত হয়। আবার ফ্রিজের শুকনা বাতাস রসুনের কোয়া থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়। ফলে রসুন স্পঞ্জের মতো নরম হয়ে যায় এবং এর আসল স্বাদ হারিয়ে ফেলে। এর পরিবর্তে রসুন ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখুন। ঝুড়ি বা জালের ব্যাগে এমন জায়গায় রাখুন, যেখানে বাতাস চলাচল করতে পারে। সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখা ভালো।
রসুন নিয়ে আতঙ্ক

ভিনেগারে রসুনের আচার করলে অথবা সসে মেশালে অনেক সময় তা নীলচে বা সবুজ রং ধারণ করে। অনেকে মনে করেন, এটি বিষাক্ত এবং তা ফেলে দেন। আসলে এটি একটি স্বাভাবিক রাসায়নিক বিক্রিয়া। রসুনের সালফার যৌগ যখন অ্যাসিড বা খনিজ পদার্থের সংস্পর্শে আসে, তখন এমন রং হয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় এবং স্বাদেও কোনো পরিবর্তন আনে না। উত্তর চীনে ‘লাবা রসুন’ নামক একটি ঐতিহ্যবাহী খাবারে রসুনের এই চমৎকার সবুজ রংই বিশেষত্ব হিসেবে ধরা হয়। পুরোনো রসুনের কোয়ার ভেতরে সবুজ রঙের একটি অঙ্কুর দেখা যায়। এটি বিষাক্ত নয়, তবে রসুনের বাকি অংশের তুলনায় এটি বেশ তিতকুটে ও কড়া স্বাদের হয়। রসুনের অঙ্কুরটি ফেলে দিন। সূক্ষ্ম স্বাদের কোনো খাবার বা কাঁচা সস তৈরির সময় এই অঙ্কুরটি ফেলে দেওয়া ভালো। না হলে খাবারের স্বাদ নষ্ট হতে পারে।
কোন রান্নায় কেমন রসুন

রসুনের স্বাদ কতটা কড়া হবে, তা নির্ভর করে আপনি এটি কীভাবে কাটছেন তার ওপর। রসুন যত বেশি মিহি করে কুচি করবেন বা থেঁতো করবেন, তত বেশি সালফার যৌগ নির্গত হবে। এতে স্বাদ তত বেশি উগ্র ও কড়া হবে। সব রান্নায় রসুনকুচি না দিয়ে প্রয়োজন বুঝে কাটুন। ঘন সসের জন্য থেঁতো করা রসুন, স্যুপ বা স্ট্যুর সুগন্ধের জন্য কুচানো রসুন এবং হালকা সবজি রান্নার জন্য পাতলা স্লাইস করা রসুন ব্যবহার করুন। গ্রিল করা খাবারে মিহি কুচি রসুন এড়িয়ে চলুন। মাংস বা সবজি গ্রিল করার আগে ম্যারিনেশনে মিহি কুচি করা রসুন ব্যবহার করবেন না। আগুনের সরাসরি তাপে ক্ষুদ্র রসুনের টুকরাগুলো মাংস সেদ্ধ হওয়ার আগেই পুড়ে কালো হয়ে যায় এবং খাবার তিতকুটে করে ফেলে। রসুনের কুচির বদলে থেঁতো করা রসুনের রস ব্যবহার করুন অথবা ম্যারিনেশনের জন্য গার্লিক পাউডার বেছে নিন।
কড়াইয়ে শুরুতেই রসুন নয়
তেল গরম হতেই পেঁয়াজ বা সবজির আগে রসুন দিয়ে দেওয়া আমাদের অনেকেরই অভ্যাস। রসুনে চিনির পরিমাণ বেশি এবং আর্দ্রতা কম থাকায় এটি খুব দ্রুত পুড়ে যায়। পেঁয়াজ বা মাংস সেদ্ধ হওয়ার আগেই রসুন পুড়ে কালো হয়ে যেতে পারে। আগে সবজি বা পেঁয়াজ ভাজুন। রান্না প্রায় শেষের দিকে এলে রসুনকুচি যোগ করুন। রসুনের সুগন্ধ বের হতে মাত্র ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট সময় লাগে। এ ছাড়া চড়া আঁচে কখনই রসুন ভাজবেন না। অনেকেই সময় বাঁচাতে উচ্চ তাপে রসুন ভাজেন। এতে তা বাইরে থেকে পুড়ে লাল হয়ে যায়, কিন্তু ভেতর থেকে এর সুগন্ধ বের হতে পারে না। এটি খাবারের স্বাদ তিতকুটে করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানও তৈরি করতে পারে। সব সময় মাঝারি বা কম আঁচে রসুন ভাজুন। এতে রসুনের প্রাকৃতিক চিনি ধীরে ধীরে ক্যারামেলাইজড হয়ে চমৎকার সোনালি রং ধারণ করবে এবং একটি মিষ্টি সুগন্ধ তৈরি করবে।
সূত্র: টেস্টিং টেবিল

১৯২১ সালের এই দিনে, মানে ২ মে জন্ম সত্যজিৎ রায়ের। চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক কত পরিচয় তাঁর। তবে সত্যজিতের নাম মাথায় এলে রহস্য কাহিনিপ্রেমীদের প্রথমেই যে কথাটি মনে পড়ে যায় তা হলো তিনি না থাকলে ফেলুদার জন্মই হতো না। তাই সত্যজিতের জন্মদিনে আবারও লিখতে বসে গেল
০২ মে ২০২৩
রান্নাঘরে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল এখন পরিচিত উপকরণ। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ছড়িয়েছে, রান্নার সময় অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করলে শরীরে অ্যালুমিনিয়াম জমে গিয়ে গুরুতর অসুখের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি পুরোপুরি ভয় পাওয়ার মতো নয়। আবার একেবারে ঝুঁকিমুক্তও বলা যায় না...
৯ ঘণ্টা আগে
বিশ্বের অনেক দেশেই খাবারের বিষয়ে একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে। সেটা হলো, খাবার ভালোভাবে রান্না করতে হবে, পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। কিন্তু জাপানে এই ধারণার ব্যতিক্রম দেখা যায়, বিশেষ করে ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে। সেখানে কাঁচা ডিম খাওয়া শুধু সাধারণ নয়, দৈনন্দিন খাদ্যসংস্কৃতির অংশ। বিশ্বের অনেক দেশেই খাবারের...
১১ ঘণ্টা আগে
একজন নারী বেশি বুদ্ধিমান নাকি একজন পুরুষের মাথায় বুদ্ধির ভারটা বেশি, তুমুল সেই বিতর্কের ফাঁক গলে নারীরা বাড়ির আঙিনা থেকে পাড়ি জমাচ্ছে মহাকাশে। এমনকি একজন পুরুষ জটিলতম মেশিনের ডিজাইন করতে করতে রান্নাঘরে তৈরি করছে নতুন নতুন খাবারের রেসিপি। তা-ও থামছে না বুদ্ধির ঘটে কার পাল্লা ভারী, তা নিয়ে ঝগড়া...
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

একুশ শতকে এসেও লৈঙ্গিক সমতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা ও বিতর্ক সচল রয়েছে। কার মাথায় বুদ্ধি বেশি, কার উপস্থিত বুদ্ধি বেশি ভালো—এসব আলোচনা থেকে এখনো থামানো যায় না কাউকেই। একজন নারী বেশি বুদ্ধিমান নাকি একজন পুরুষের মাথায় বুদ্ধির ভারটা বেশি, তুমুল সেই বিতর্কের ফাঁক গলে নারীরা বাড়ির আঙিনা থেকে পাড়ি জমাচ্ছে মহাকাশে। এমনকি একজন পুরুষ জটিলতম মেশিনের ডিজাইন করতে করতে রান্নাঘরে তৈরি করছে নতুন নতুন খাবারের রেসিপি। তা-ও থামছে না বুদ্ধির ঘটে কার পাল্লা ভারী, তা নিয়ে ঝগড়া। এদিকে বিজ্ঞানীদের মাইক্রোস্কোপের নিচে উঠে এসেছে সেই চিরন্তন প্রশ্ন—নারী ও পুরুষের মস্তিষ্ক কি আসলেই আলাদা? এই প্রশ্ন যেমন কৌতূহলোদ্দীপক, তেমনি বিতর্কিত। সাম্প্রতিক গবেষণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ফলে এই বিতর্ক এক নতুন মাত্রা পেয়েছে।
‘পাঁচ আউন্স’-এর সেই পুরোনো তত্ত্ব
মস্তিষ্কের গঠন নিয়ে বিতর্কের শুরুটা বেশ পুরোনো। শুরুর দিকের গবেষণায় মানুষের মাথার খুলির আয়তন মেপে দেখা গিয়েছিল, পুরুষের মস্তিষ্ক ওজনের দিক থেকে নারীদের তুলনায় কিছুটা ভারী। এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তখন কিছু সমালোচক ‘মিসিং ফাইভ আউন্স’ বা হারানো পাঁচ আউন্স তত্ত্বটি সামনে আনেন। তাঁদের ধারণা ছিল, পুরুষের কথিত শ্রেষ্ঠত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে এই বাড়তি ওজনে। তবে আধুনিক বিজ্ঞান এই ধারণাকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছে। নিউ সায়েন্টিস্টদের মতে, এর একটি অত্যন্ত সহজ ব্যাখ্যা রয়েছে। সাধারণত বড় শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল রাখতে বেশি পরিমাণ মস্তিষ্কের কোষ বা টিস্যুর প্রয়োজন হয়। প্রাণিজগতেও এই একই নিয়ম দেখা যায়। অর্থাৎ, বড় শরীর মানেই বড় মস্তিষ্ক। এর সঙ্গে মেধার কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই।
স্ট্যানফোর্ড গবেষণার মূল লক্ষ্য
বর্তমানে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের সূক্ষ্ম পার্থক্যগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তবে তাঁদের এই কাজের উদ্দেশ্য কেবল পার্থক্য খোঁজা নয়। স্ট্যানফোর্ড মেডিসিনের মনোরোগ ও আচরণগত বিজ্ঞানের অধ্যাপক বিনোদ মেনন বলেন, ‘এই গবেষণার মূল অনুপ্রেরণা হলো মানুষের মস্তিষ্কের বিকাশ, বার্ধক্য এবং স্নায়বিক রোগ বা মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদে যে ভিন্নতা দেখা যায়, তা বোঝা।’
গবেষকদের মতে, স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্ক মস্তিষ্কের লৈঙ্গিক ভিত্তিক পার্থক্যগুলো চিহ্নিত করতে পারলে বিভিন্ন রোগের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে গভীর ধারণা পাওয়া সম্ভব। যেমন অটিজম ও পারকিনসনের মতো রোগগুলো পুরুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এদিকে মাল্টিপল স্কলেরোসিস ও বিষণ্নতা জাতীয় রোগে নারীরা বেশি আক্রান্ত হয়। বিনোদ মেনন সতর্ক করে বলেন, মস্তিষ্কের গঠনের এই লৈঙ্গিক ভিত্তিক পার্থক্যগুলো যদি আমরা এড়িয়ে যাই, তবে স্নায়বিক রোগের পেছনের মূল কারণগুলো হয়তো আমাদের অজানাই থেকে যাবে।
‘সেক্স ডিফারেন্স’ অ্যাজেন্ডা
তবে এই ধরনের গবেষণাকে ভিন্ন চোখে দেখছেন অনেক বিজ্ঞানী। ব্রিটিশ নিউরোসায়েন্টিস্ট জিনা রিপন ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এ লিখেছেন, বর্তমানে সমাজে জৈবিকভাবে নির্ধারিত লৈঙ্গিক ভিত্তিক পার্থক্য খোঁজার একধরনের প্রবল আগ্রহ বা ‘অ্যাজেন্ডা’ তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, মানুষ চায় নারী-পুরুষের আচরণ, মেজাজ বা অর্জনের পার্থক্যগুলো সরাসরি মস্তিষ্কের ওপর চাপিয়ে দিতে। এস্টন ইউনিভার্সিটি ব্রেন সেন্টারের এই ইমেরিটাস অধ্যাপক মনে করেন, ‘আমরা যদি এই যুক্তিতে বিশ্বাস করতে শুরু করি, নারী-পুরুষের পার্থক্যগুলো জন্মগত বা অপরিবর্তনীয়, তবে সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার সব প্রচেষ্টা সহজে বাধাগ্রস্ত হবে।’ তাঁর মতে, সমান হওয়ার অর্থ এই নয় যে সবকিছুতে অভিন্ন হতে হবে। কিন্তু পার্থক্যগুলোকে স্থায়ী তকমা দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।
আধুনিক প্রযুক্তি ও আগামীর পথ
বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত গবেষণাগুলো পুরোনো আমলের লৈঙ্গিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক বিতর্ক কাটিয়ে নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে। বিষয়টি এখনো অত্যন্ত বিতর্কিত এবং স্পর্শকাতর। বিজ্ঞানীদের একটি বড় অংশের অভিমত হলো, গবেষণার ফলাফল যা-ই আসুক, তা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। চিকিৎসার প্রয়োজনে কোনো পার্থক্যকে যেমন এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়, তেমনি সেই পার্থক্য পুঁজি করে সামাজিক বৈষম্যকে বৈধতা দেওয়াও উচিত হবে না।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ন্যাচার, নিউ সায়েন্টিস্ট, স্ট্যানফোর্ড মেডিকেল ম্যাগাজিন

একুশ শতকে এসেও লৈঙ্গিক সমতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা ও বিতর্ক সচল রয়েছে। কার মাথায় বুদ্ধি বেশি, কার উপস্থিত বুদ্ধি বেশি ভালো—এসব আলোচনা থেকে এখনো থামানো যায় না কাউকেই। একজন নারী বেশি বুদ্ধিমান নাকি একজন পুরুষের মাথায় বুদ্ধির ভারটা বেশি, তুমুল সেই বিতর্কের ফাঁক গলে নারীরা বাড়ির আঙিনা থেকে পাড়ি জমাচ্ছে মহাকাশে। এমনকি একজন পুরুষ জটিলতম মেশিনের ডিজাইন করতে করতে রান্নাঘরে তৈরি করছে নতুন নতুন খাবারের রেসিপি। তা-ও থামছে না বুদ্ধির ঘটে কার পাল্লা ভারী, তা নিয়ে ঝগড়া। এদিকে বিজ্ঞানীদের মাইক্রোস্কোপের নিচে উঠে এসেছে সেই চিরন্তন প্রশ্ন—নারী ও পুরুষের মস্তিষ্ক কি আসলেই আলাদা? এই প্রশ্ন যেমন কৌতূহলোদ্দীপক, তেমনি বিতর্কিত। সাম্প্রতিক গবেষণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ফলে এই বিতর্ক এক নতুন মাত্রা পেয়েছে।
‘পাঁচ আউন্স’-এর সেই পুরোনো তত্ত্ব
মস্তিষ্কের গঠন নিয়ে বিতর্কের শুরুটা বেশ পুরোনো। শুরুর দিকের গবেষণায় মানুষের মাথার খুলির আয়তন মেপে দেখা গিয়েছিল, পুরুষের মস্তিষ্ক ওজনের দিক থেকে নারীদের তুলনায় কিছুটা ভারী। এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তখন কিছু সমালোচক ‘মিসিং ফাইভ আউন্স’ বা হারানো পাঁচ আউন্স তত্ত্বটি সামনে আনেন। তাঁদের ধারণা ছিল, পুরুষের কথিত শ্রেষ্ঠত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে এই বাড়তি ওজনে। তবে আধুনিক বিজ্ঞান এই ধারণাকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছে। নিউ সায়েন্টিস্টদের মতে, এর একটি অত্যন্ত সহজ ব্যাখ্যা রয়েছে। সাধারণত বড় শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল রাখতে বেশি পরিমাণ মস্তিষ্কের কোষ বা টিস্যুর প্রয়োজন হয়। প্রাণিজগতেও এই একই নিয়ম দেখা যায়। অর্থাৎ, বড় শরীর মানেই বড় মস্তিষ্ক। এর সঙ্গে মেধার কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই।
স্ট্যানফোর্ড গবেষণার মূল লক্ষ্য
বর্তমানে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের সূক্ষ্ম পার্থক্যগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তবে তাঁদের এই কাজের উদ্দেশ্য কেবল পার্থক্য খোঁজা নয়। স্ট্যানফোর্ড মেডিসিনের মনোরোগ ও আচরণগত বিজ্ঞানের অধ্যাপক বিনোদ মেনন বলেন, ‘এই গবেষণার মূল অনুপ্রেরণা হলো মানুষের মস্তিষ্কের বিকাশ, বার্ধক্য এবং স্নায়বিক রোগ বা মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদে যে ভিন্নতা দেখা যায়, তা বোঝা।’
গবেষকদের মতে, স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্ক মস্তিষ্কের লৈঙ্গিক ভিত্তিক পার্থক্যগুলো চিহ্নিত করতে পারলে বিভিন্ন রোগের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে গভীর ধারণা পাওয়া সম্ভব। যেমন অটিজম ও পারকিনসনের মতো রোগগুলো পুরুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এদিকে মাল্টিপল স্কলেরোসিস ও বিষণ্নতা জাতীয় রোগে নারীরা বেশি আক্রান্ত হয়। বিনোদ মেনন সতর্ক করে বলেন, মস্তিষ্কের গঠনের এই লৈঙ্গিক ভিত্তিক পার্থক্যগুলো যদি আমরা এড়িয়ে যাই, তবে স্নায়বিক রোগের পেছনের মূল কারণগুলো হয়তো আমাদের অজানাই থেকে যাবে।
‘সেক্স ডিফারেন্স’ অ্যাজেন্ডা
তবে এই ধরনের গবেষণাকে ভিন্ন চোখে দেখছেন অনেক বিজ্ঞানী। ব্রিটিশ নিউরোসায়েন্টিস্ট জিনা রিপন ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এ লিখেছেন, বর্তমানে সমাজে জৈবিকভাবে নির্ধারিত লৈঙ্গিক ভিত্তিক পার্থক্য খোঁজার একধরনের প্রবল আগ্রহ বা ‘অ্যাজেন্ডা’ তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, মানুষ চায় নারী-পুরুষের আচরণ, মেজাজ বা অর্জনের পার্থক্যগুলো সরাসরি মস্তিষ্কের ওপর চাপিয়ে দিতে। এস্টন ইউনিভার্সিটি ব্রেন সেন্টারের এই ইমেরিটাস অধ্যাপক মনে করেন, ‘আমরা যদি এই যুক্তিতে বিশ্বাস করতে শুরু করি, নারী-পুরুষের পার্থক্যগুলো জন্মগত বা অপরিবর্তনীয়, তবে সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার সব প্রচেষ্টা সহজে বাধাগ্রস্ত হবে।’ তাঁর মতে, সমান হওয়ার অর্থ এই নয় যে সবকিছুতে অভিন্ন হতে হবে। কিন্তু পার্থক্যগুলোকে স্থায়ী তকমা দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।
আধুনিক প্রযুক্তি ও আগামীর পথ
বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত গবেষণাগুলো পুরোনো আমলের লৈঙ্গিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক বিতর্ক কাটিয়ে নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে। বিষয়টি এখনো অত্যন্ত বিতর্কিত এবং স্পর্শকাতর। বিজ্ঞানীদের একটি বড় অংশের অভিমত হলো, গবেষণার ফলাফল যা-ই আসুক, তা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। চিকিৎসার প্রয়োজনে কোনো পার্থক্যকে যেমন এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়, তেমনি সেই পার্থক্য পুঁজি করে সামাজিক বৈষম্যকে বৈধতা দেওয়াও উচিত হবে না।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ন্যাচার, নিউ সায়েন্টিস্ট, স্ট্যানফোর্ড মেডিকেল ম্যাগাজিন

১৯২১ সালের এই দিনে, মানে ২ মে জন্ম সত্যজিৎ রায়ের। চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক কত পরিচয় তাঁর। তবে সত্যজিতের নাম মাথায় এলে রহস্য কাহিনিপ্রেমীদের প্রথমেই যে কথাটি মনে পড়ে যায় তা হলো তিনি না থাকলে ফেলুদার জন্মই হতো না। তাই সত্যজিতের জন্মদিনে আবারও লিখতে বসে গেল
০২ মে ২০২৩
রান্নাঘরে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল এখন পরিচিত উপকরণ। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ছড়িয়েছে, রান্নার সময় অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করলে শরীরে অ্যালুমিনিয়াম জমে গিয়ে গুরুতর অসুখের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি পুরোপুরি ভয় পাওয়ার মতো নয়। আবার একেবারে ঝুঁকিমুক্তও বলা যায় না...
৯ ঘণ্টা আগে
বিশ্বের অনেক দেশেই খাবারের বিষয়ে একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে। সেটা হলো, খাবার ভালোভাবে রান্না করতে হবে, পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। কিন্তু জাপানে এই ধারণার ব্যতিক্রম দেখা যায়, বিশেষ করে ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে। সেখানে কাঁচা ডিম খাওয়া শুধু সাধারণ নয়, দৈনন্দিন খাদ্যসংস্কৃতির অংশ। বিশ্বের অনেক দেশেই খাবারের...
১১ ঘণ্টা আগে
আমিষ হোক কিংবা নিরামিষ, খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে এর জুড়ি নেই। রসুনের আছে কড়া ঘ্রাণ, যা রান্নায় যোগ করে নতুন মাত্রা। শুধু তা-ই নয়, কাঁচা রসুনও পেটের অসুখ ভালো করে দেওয়া পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমরা কি রসুনের সঠিক ব্যবহার জানি? অনেক সময় রসুন ব্যবহারের সাধারণ কিছু ভুলেই...
১৩ ঘণ্টা আগে