তানিয়া ফেরদৌস

পৃথিবীর কোনো কিছুই সোজা নয়। সবকিছুতেই আছে প্যাঁচ। প্যাঁচ আছে বলেই তার পাঁচালি আছে। পাঁচালি আছে বলেই না ঘ্রাণটা ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। থাক অত কথা আর না বলি। বলি কী, এই কোরবানির পশুর মাংস রান্না করতে, কাবাব বানাতে যে জিনিসটি আগে দরকার সেটি কী, জানেন? মসলা।
আদা–রসুন–পেঁয়াজ বাটা, কুচি করা পেঁয়াজ, হলুদ–মরিচ–জিরা–ধনে, আস্ত এলাচি, দারুচিনি, তেজপাতা—এই আটপৌরে মাংসের মসলাগুলোর স্বাদ, গন্ধ, আর ব্যবহারের উপযোগিতা আমরা সবাই কম–বেশি জানি। কিন্তু মাংসের বিশেষ পদ তৈরি করতে কিছু বিশিষ্ট মসলাপাতির ব্যবহার রয়েছে, যেগুলোর ফ্লেভার সম্পর্কে সবারই আগ্রহ রয়েছে। বিশেষত স্কুলে পড়া বাংলা ব্যাকরণের প্রায় সমোচ্চারিত শব্দগুলোর মতো কিছু মসলা স্বাদ, গন্ধের দিক থেকে খুবই কাছাকাছি; অথচ একেবারেই আলাদা। সাধে কী আর বলেছিলাম, প্যাঁচ সবখানে আছে। যেমন ধরুন, পেঁয়াজ কুচি করে দিলে এক স্বাদ আবার একটা পেঁয়াজ চার ভাগ করে দিলে পাবেন আরেক স্বাদ। রসুনও গোটা কোয়ার এক স্বাদ, তো একটু থেঁতলে দিলে সেটা বদলে যাবে। সব মসলারই তাই।
জিরা, শাহিজিরা, কালো জিরা আর মিষ্টিজিরা (মৌরি)
আমাদের দেশের রান্নায় জিরার সুগন্ধ না এলে যেন মাংসের পদ পরিপূর্ণতাই পায় না। বীজ জাতীয় মসলা জিরা (cumin) কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রাচীন মিসর, লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও আরব দেশগুলোতেও খুব গুরুত্বপূর্ণ মাংস রান্নার জন্য। এর এক ধরনের সোঁদা-মেটে ফ্লেভার আছে, যা মাংসের সঙ্গে খুব সুন্দরভাবে খাপ খেয়ে যায়। আমাদের কোর্মা, রেজালা, ঝাল করে রাঁধা মাংস, কাবাব—সবকিছুতেই জিরার উষ্ণ স্বাদ অপরিহার্য। আবার বিরিয়ানি মসলাতেও জিরা থাকবেই। আস্ত জিরার ফোড়নে মাংসের ঝাল ফ্রাই, কড়াই, দোপিঁয়াজা অন্য মাত্রা পায়। আবার অন্য সব মসলার সঙ্গে জিরা বাটায় কষিয়েই মাংসের ভুনা, কষা, ঝোলের পদ জমে ভালো। এদিকে, টালা বা ভাজা জিরা শেষে ছড়িয়ে মাংসের পদে আনা যায় অনন্য স্বাদ–গন্ধ। বিশেষত খাসি বা ভেড়ার মাংসে এভাবে জিরার ব্যবহার জরুরি।
অন্যদিকে শাহিজিরা বা caraway seeds দুনিয়ার সবচেয়ে দামি ও দুষ্প্রাপ্য মসলাগুলোর একটি। এটি জিরার চেয়ে কালচে, সরু, মসৃণ একটু বাঁকানো আকৃতির। শাহিজিরা সাধারণত মাংসের পদে আস্ত ফোড়নে বা বিরিয়ানির চাল ভাপাতে বেশি ব্যবহার হয়। আমাদের দেশি রোস্ট, রেজালা, কালিয়া আর কড়াই মাংসেও আস্ত শাহিজিরা ব্যবহার হয়। বেশি দিলে তিতকুটে লাগবে বলে গুঁড়ো শাহিজিরা আবার খুব অল্প পরিমাণে দেওয়া হয় অনেক ইউরোপীয় মাংস রান্নায়। এর উদাহরণ বিফ গোলাশ। এদিকে কিছু কাবাব মসলায় খুব অল্প পরিমাণে শাহিজিরা গুঁড়া দেওয়া হয়। কারণ, বেশি দিলে এর মুলেথি বা লিকরিশ। এর মতো কড়া ফ্লেভার আর কোনো মসলার গন্ধই পাওয়া যাবে না।
কালো জিরা আর কালিজিরা কিন্তু একেবারেই আলাদা। কালো রঙের জিরায় অনেক সময় সাধারণ জিরা মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় ইউরোপের কোনো কোনো দেশে ও তুর্কিস্তানে। সেখানে আমাদের চিরচেনা জিরাকে রোমান কিউমিন বলে। এই কালো রঙের জিরার স্বাদ–গন্ধ জিরার মতোই; তবে কিছুটা মৃদু।
জিরার মতো দেখতে বলে মিষ্টি জিরা নাম দেওয়া হলেও মৌরি (Fennel seeds) একেবারেই আলাদা জগতের মসলা। মৌরির বীজে এক ধরনের মিষ্টি গন্ধ আছে। স্বাদও মিঠে ধাঁচের। আস্ত মৌরির মুখশুদ্ধি হিসেবে যেমন ব্যবহার আছে, তেমনি মালপোয়া বা অন্যান্য মিষ্টান্নে এর তুলনাহীন স্বাদ–গন্ধ মন কেড়ে নেয়। চাইনিজ ফাইভ স্পাইসে যেমন মৌরি গুঁড়া আছে, তেমনি এর আস্ত ব্যবহার হয় পাঁচফোড়নে। তাই মাংসের চাইনিজ পদ বা আচারী মাংসে এই মসলা দিতে হয়। খাসির গেলাসি হোক আর গরুর মেজবানি রান্না—মৌরি বাটা লাগবেই।
এলাচি আর বড় এলাচ
ছোট, সবুজ, ফলসুলভ গন্ধের এলাচি তার সুবাসের জন্য বিখ্যাত পৃথিবীর সবখানে। সব ধরনের মিষ্টান্ন ছাড়াও মাংসের যেকোনো পদেই ছোট এলাচি দিতে হয়। গরম মসলা, কাবাব মসলা বা বিরিয়ানি মসলার ভিত্তি যে ক’টি মসলা, তার একটি এই এলাচি। কোর্মার প্রধান ফ্লেভারটিই এই এলাচির, গেলাসিরও।
এদিকে বড় এলাচ বা কালো এলাচ আসলেই বড়সড় আর কালো রঙের। এর আছে এক গুরুগম্ভীর কর্পূরের মতো গন্ধ। এই মসলা সব সময় আস্ত অবস্থায় বিরিয়ানি, দই দিয়ে তৈরি মাংসের ডিশ, রোগান জোশ ইত্যাদি পদে খুবই অন্যরকম এক স্মোকি ফ্লেভার দেয়।
কালো ও সাদা গোলমরিচ আর কাবাবচিনি
গোলমরিচ বহু যুগ ধরেই পৃথিবীর এ প্রান্তে রান্নায় ঝালের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। মাংস রান্নায় এটি ব্যবহার হয়ে আসছে। কালো আর সাদা গোলমরিচ কিন্তু একই গাছের বীজ। ফল পাকতে শুরু করলেই তুলে নিয়ে অক্সিডাইজ বা ভাঁপিয়ে শুকিয়ে নিলে কুঁচকে থাকা ত্বকের কড়া স্বাদের ঝাল ও ঝাঁজালো কালো গোলমরিচ পাওয়া যায়। এই গোলমরিচ বাটায় দক্ষিণী কায়দায় বিফ কারি খুব জনপ্রিয় ভারতে। গরম মসলা, কাবাব মসলায় কালো গোলমরিচ অপরিহার্য।
আবার মসৃণ সাদা গোলমরিচ একই গাছের সুপক্ক ফল। এটি পানিতে ভিজিয়ে আবরণ তুলে ফেলে সাবধানে রোদে শুকিয়ে বানানো হয়। আস্ত সাদা গোলমরিচ মাংসের পদ এবং কাচ্চি বা পাক্কি বিরিয়ানিতে ব্যবহার হয়। এর স্বাদ–গন্ধ খুবই রাজকীয় ও মৃদু ধরনের। মুসাল্লাম, আফগানি পোলাও, উজবেক প্লভ, আরব কাবসা, মান্দি, পার্সি মালাই কোফতা, আমাদের মালাই বা রেশমি কাবাবে এর গুঁড়ো বেশ ব্যবহার হয়। এতে করে ঘি, তেল, চর্বির মধ্যে এক ধরনের চনমনে স্বাদ–গন্ধ আসে ঝালের মাত্রা না বাড়িয়েই এবং রঙে মখমলী ঘিয়ে ভাব রেখেই। আমাদের দেশে কালো আর সাদা গোলমরিচের ব্যবহার বেশি হলেও ছয় ধরনের গোলমরিচের অস্তিত্ব আছে পৃথিবীতে।
কাবাবচিনি কিন্তু একেবারেই আলাদা স্বাদ–গন্ধের মসলা। এর ব্যবহারও বিচিত্র। তারপরও এর আকার–আকৃতির সঙ্গে কালো গোলমরিচের মিল রয়েছে। তবে এর ছোট্ট শুঁড়টির দিকে খেয়াল করলে আর গন্ধ বুঝলে গুলিয়ে যাবে না এ দুটো। এই মসলাটিকে ইংরেজিতে অলস্পাইস বলে। কারণ, এর বিশিষ্ট সুবাসটি লবঙ্গ, গোলমরিচ, দারুচিনি আর জায়ফলের সম্মিলিত ঘ্রাণের মতো। আরব, তুর্কি আর মরক্কোসহ আফ্রিকার বহু দেশের প্রিয় মাংসের মসলা এই কাবাবচিনি। মাংসের তাজিন, বিভিন্ন কাবাব তৈরি করতে এই মসলার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। দমপোখত বা হান্ডি গোশত–এর আটার বাঁধন খুললে প্রথমেই এই মসলার সুবাস নাকে আলোড়ন জাগায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য টেলে গুঁড়ো করে দিলে বেশি ভালো ফল পাওয়া যায়।
রাঁধুনি আর জোয়ান
রাঁধুনি নামের এক ছোট খসখসে দানাবিশিষ্ট মসলা মাংস রান্নায় জাদুকরী ভূমিকা রাখে। একে আঞ্চলিকভাবে এ দেশে কোথাও কোথাও ছোট ধনেও বলে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গরুর মেজবানি মাংসের অতুলনীয় স্বাদ–গন্ধের ব্যাপারে এ মসলার কৃতিত্ব আছে বলে সেখানকার অভিজ্ঞ রন্ধনশিল্পীদের থেকে জানা যায়। এ ক্ষেত্রে রান্নার শেষ দিকে আলাদা করে জিরা, রাঁধুনি, গরম মসলার মিশ্রণের চূর্ণ দেওয়া হয় নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী। ইংরেজিতে ওয়াইল্ড সেলেরি সিডস বা হিন্দিতে আজমোদা বলে পরিচিত এটি। পাঁচফোড়নেও এর ব্যবহার আছে। মেটে, পাতা গন্ধী—এই আস্ত রাঁধুনির ফোড়ন দিলেও মাংসের ফ্লেভারকে খুলে মেলে ধরে।
জোয়ান বা আজওয়াইন (Carom seeds) আমাদের উপমহাদেশে আস্ত ফোড়ন হিসেবে নিরামিষ খাবারে বেশি ব্যবহার হয়। মধ্যপ্রাচ্যে ও পারসি রান্নায় এর গুঁড়ো মাংসের এক বিশেষ মসলা হিসেবে খুব সমাদৃত। খেয়াল না করলে একে রাঁধুনির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা বেশ সোজা। এটি কিন্তু আস্ত শুকনো ফল, গাছের বীজ নয়। থাইম হার্বের সঙ্গে এর বেশ মিল আছে। আর মসলাটি খুব কম করে ব্যবহার করতে হয়। পেশোয়ারি মাংসের পদে এর লক্ষণীয় ব্যবহার দেখা যায়। আজারবাইজান, ইরান, ইরাক, মধ্যপ্রাচ্যে আস্ত বা বেশ বড় টুকরো করে ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদির মাংস রোস্ট করতে জোয়ানের গুঁড়া খুব ব্যবহার হয়। হজমী গুণের বদৌলতে জোয়ান খুব উপকারী মাংস প্রেমীদের জন্য।

পৃথিবীর কোনো কিছুই সোজা নয়। সবকিছুতেই আছে প্যাঁচ। প্যাঁচ আছে বলেই তার পাঁচালি আছে। পাঁচালি আছে বলেই না ঘ্রাণটা ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। থাক অত কথা আর না বলি। বলি কী, এই কোরবানির পশুর মাংস রান্না করতে, কাবাব বানাতে যে জিনিসটি আগে দরকার সেটি কী, জানেন? মসলা।
আদা–রসুন–পেঁয়াজ বাটা, কুচি করা পেঁয়াজ, হলুদ–মরিচ–জিরা–ধনে, আস্ত এলাচি, দারুচিনি, তেজপাতা—এই আটপৌরে মাংসের মসলাগুলোর স্বাদ, গন্ধ, আর ব্যবহারের উপযোগিতা আমরা সবাই কম–বেশি জানি। কিন্তু মাংসের বিশেষ পদ তৈরি করতে কিছু বিশিষ্ট মসলাপাতির ব্যবহার রয়েছে, যেগুলোর ফ্লেভার সম্পর্কে সবারই আগ্রহ রয়েছে। বিশেষত স্কুলে পড়া বাংলা ব্যাকরণের প্রায় সমোচ্চারিত শব্দগুলোর মতো কিছু মসলা স্বাদ, গন্ধের দিক থেকে খুবই কাছাকাছি; অথচ একেবারেই আলাদা। সাধে কী আর বলেছিলাম, প্যাঁচ সবখানে আছে। যেমন ধরুন, পেঁয়াজ কুচি করে দিলে এক স্বাদ আবার একটা পেঁয়াজ চার ভাগ করে দিলে পাবেন আরেক স্বাদ। রসুনও গোটা কোয়ার এক স্বাদ, তো একটু থেঁতলে দিলে সেটা বদলে যাবে। সব মসলারই তাই।
জিরা, শাহিজিরা, কালো জিরা আর মিষ্টিজিরা (মৌরি)
আমাদের দেশের রান্নায় জিরার সুগন্ধ না এলে যেন মাংসের পদ পরিপূর্ণতাই পায় না। বীজ জাতীয় মসলা জিরা (cumin) কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রাচীন মিসর, লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও আরব দেশগুলোতেও খুব গুরুত্বপূর্ণ মাংস রান্নার জন্য। এর এক ধরনের সোঁদা-মেটে ফ্লেভার আছে, যা মাংসের সঙ্গে খুব সুন্দরভাবে খাপ খেয়ে যায়। আমাদের কোর্মা, রেজালা, ঝাল করে রাঁধা মাংস, কাবাব—সবকিছুতেই জিরার উষ্ণ স্বাদ অপরিহার্য। আবার বিরিয়ানি মসলাতেও জিরা থাকবেই। আস্ত জিরার ফোড়নে মাংসের ঝাল ফ্রাই, কড়াই, দোপিঁয়াজা অন্য মাত্রা পায়। আবার অন্য সব মসলার সঙ্গে জিরা বাটায় কষিয়েই মাংসের ভুনা, কষা, ঝোলের পদ জমে ভালো। এদিকে, টালা বা ভাজা জিরা শেষে ছড়িয়ে মাংসের পদে আনা যায় অনন্য স্বাদ–গন্ধ। বিশেষত খাসি বা ভেড়ার মাংসে এভাবে জিরার ব্যবহার জরুরি।
অন্যদিকে শাহিজিরা বা caraway seeds দুনিয়ার সবচেয়ে দামি ও দুষ্প্রাপ্য মসলাগুলোর একটি। এটি জিরার চেয়ে কালচে, সরু, মসৃণ একটু বাঁকানো আকৃতির। শাহিজিরা সাধারণত মাংসের পদে আস্ত ফোড়নে বা বিরিয়ানির চাল ভাপাতে বেশি ব্যবহার হয়। আমাদের দেশি রোস্ট, রেজালা, কালিয়া আর কড়াই মাংসেও আস্ত শাহিজিরা ব্যবহার হয়। বেশি দিলে তিতকুটে লাগবে বলে গুঁড়ো শাহিজিরা আবার খুব অল্প পরিমাণে দেওয়া হয় অনেক ইউরোপীয় মাংস রান্নায়। এর উদাহরণ বিফ গোলাশ। এদিকে কিছু কাবাব মসলায় খুব অল্প পরিমাণে শাহিজিরা গুঁড়া দেওয়া হয়। কারণ, বেশি দিলে এর মুলেথি বা লিকরিশ। এর মতো কড়া ফ্লেভার আর কোনো মসলার গন্ধই পাওয়া যাবে না।
কালো জিরা আর কালিজিরা কিন্তু একেবারেই আলাদা। কালো রঙের জিরায় অনেক সময় সাধারণ জিরা মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় ইউরোপের কোনো কোনো দেশে ও তুর্কিস্তানে। সেখানে আমাদের চিরচেনা জিরাকে রোমান কিউমিন বলে। এই কালো রঙের জিরার স্বাদ–গন্ধ জিরার মতোই; তবে কিছুটা মৃদু।
জিরার মতো দেখতে বলে মিষ্টি জিরা নাম দেওয়া হলেও মৌরি (Fennel seeds) একেবারেই আলাদা জগতের মসলা। মৌরির বীজে এক ধরনের মিষ্টি গন্ধ আছে। স্বাদও মিঠে ধাঁচের। আস্ত মৌরির মুখশুদ্ধি হিসেবে যেমন ব্যবহার আছে, তেমনি মালপোয়া বা অন্যান্য মিষ্টান্নে এর তুলনাহীন স্বাদ–গন্ধ মন কেড়ে নেয়। চাইনিজ ফাইভ স্পাইসে যেমন মৌরি গুঁড়া আছে, তেমনি এর আস্ত ব্যবহার হয় পাঁচফোড়নে। তাই মাংসের চাইনিজ পদ বা আচারী মাংসে এই মসলা দিতে হয়। খাসির গেলাসি হোক আর গরুর মেজবানি রান্না—মৌরি বাটা লাগবেই।
এলাচি আর বড় এলাচ
ছোট, সবুজ, ফলসুলভ গন্ধের এলাচি তার সুবাসের জন্য বিখ্যাত পৃথিবীর সবখানে। সব ধরনের মিষ্টান্ন ছাড়াও মাংসের যেকোনো পদেই ছোট এলাচি দিতে হয়। গরম মসলা, কাবাব মসলা বা বিরিয়ানি মসলার ভিত্তি যে ক’টি মসলা, তার একটি এই এলাচি। কোর্মার প্রধান ফ্লেভারটিই এই এলাচির, গেলাসিরও।
এদিকে বড় এলাচ বা কালো এলাচ আসলেই বড়সড় আর কালো রঙের। এর আছে এক গুরুগম্ভীর কর্পূরের মতো গন্ধ। এই মসলা সব সময় আস্ত অবস্থায় বিরিয়ানি, দই দিয়ে তৈরি মাংসের ডিশ, রোগান জোশ ইত্যাদি পদে খুবই অন্যরকম এক স্মোকি ফ্লেভার দেয়।
কালো ও সাদা গোলমরিচ আর কাবাবচিনি
গোলমরিচ বহু যুগ ধরেই পৃথিবীর এ প্রান্তে রান্নায় ঝালের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। মাংস রান্নায় এটি ব্যবহার হয়ে আসছে। কালো আর সাদা গোলমরিচ কিন্তু একই গাছের বীজ। ফল পাকতে শুরু করলেই তুলে নিয়ে অক্সিডাইজ বা ভাঁপিয়ে শুকিয়ে নিলে কুঁচকে থাকা ত্বকের কড়া স্বাদের ঝাল ও ঝাঁজালো কালো গোলমরিচ পাওয়া যায়। এই গোলমরিচ বাটায় দক্ষিণী কায়দায় বিফ কারি খুব জনপ্রিয় ভারতে। গরম মসলা, কাবাব মসলায় কালো গোলমরিচ অপরিহার্য।
আবার মসৃণ সাদা গোলমরিচ একই গাছের সুপক্ক ফল। এটি পানিতে ভিজিয়ে আবরণ তুলে ফেলে সাবধানে রোদে শুকিয়ে বানানো হয়। আস্ত সাদা গোলমরিচ মাংসের পদ এবং কাচ্চি বা পাক্কি বিরিয়ানিতে ব্যবহার হয়। এর স্বাদ–গন্ধ খুবই রাজকীয় ও মৃদু ধরনের। মুসাল্লাম, আফগানি পোলাও, উজবেক প্লভ, আরব কাবসা, মান্দি, পার্সি মালাই কোফতা, আমাদের মালাই বা রেশমি কাবাবে এর গুঁড়ো বেশ ব্যবহার হয়। এতে করে ঘি, তেল, চর্বির মধ্যে এক ধরনের চনমনে স্বাদ–গন্ধ আসে ঝালের মাত্রা না বাড়িয়েই এবং রঙে মখমলী ঘিয়ে ভাব রেখেই। আমাদের দেশে কালো আর সাদা গোলমরিচের ব্যবহার বেশি হলেও ছয় ধরনের গোলমরিচের অস্তিত্ব আছে পৃথিবীতে।
কাবাবচিনি কিন্তু একেবারেই আলাদা স্বাদ–গন্ধের মসলা। এর ব্যবহারও বিচিত্র। তারপরও এর আকার–আকৃতির সঙ্গে কালো গোলমরিচের মিল রয়েছে। তবে এর ছোট্ট শুঁড়টির দিকে খেয়াল করলে আর গন্ধ বুঝলে গুলিয়ে যাবে না এ দুটো। এই মসলাটিকে ইংরেজিতে অলস্পাইস বলে। কারণ, এর বিশিষ্ট সুবাসটি লবঙ্গ, গোলমরিচ, দারুচিনি আর জায়ফলের সম্মিলিত ঘ্রাণের মতো। আরব, তুর্কি আর মরক্কোসহ আফ্রিকার বহু দেশের প্রিয় মাংসের মসলা এই কাবাবচিনি। মাংসের তাজিন, বিভিন্ন কাবাব তৈরি করতে এই মসলার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। দমপোখত বা হান্ডি গোশত–এর আটার বাঁধন খুললে প্রথমেই এই মসলার সুবাস নাকে আলোড়ন জাগায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য টেলে গুঁড়ো করে দিলে বেশি ভালো ফল পাওয়া যায়।
রাঁধুনি আর জোয়ান
রাঁধুনি নামের এক ছোট খসখসে দানাবিশিষ্ট মসলা মাংস রান্নায় জাদুকরী ভূমিকা রাখে। একে আঞ্চলিকভাবে এ দেশে কোথাও কোথাও ছোট ধনেও বলে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গরুর মেজবানি মাংসের অতুলনীয় স্বাদ–গন্ধের ব্যাপারে এ মসলার কৃতিত্ব আছে বলে সেখানকার অভিজ্ঞ রন্ধনশিল্পীদের থেকে জানা যায়। এ ক্ষেত্রে রান্নার শেষ দিকে আলাদা করে জিরা, রাঁধুনি, গরম মসলার মিশ্রণের চূর্ণ দেওয়া হয় নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী। ইংরেজিতে ওয়াইল্ড সেলেরি সিডস বা হিন্দিতে আজমোদা বলে পরিচিত এটি। পাঁচফোড়নেও এর ব্যবহার আছে। মেটে, পাতা গন্ধী—এই আস্ত রাঁধুনির ফোড়ন দিলেও মাংসের ফ্লেভারকে খুলে মেলে ধরে।
জোয়ান বা আজওয়াইন (Carom seeds) আমাদের উপমহাদেশে আস্ত ফোড়ন হিসেবে নিরামিষ খাবারে বেশি ব্যবহার হয়। মধ্যপ্রাচ্যে ও পারসি রান্নায় এর গুঁড়ো মাংসের এক বিশেষ মসলা হিসেবে খুব সমাদৃত। খেয়াল না করলে একে রাঁধুনির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা বেশ সোজা। এটি কিন্তু আস্ত শুকনো ফল, গাছের বীজ নয়। থাইম হার্বের সঙ্গে এর বেশ মিল আছে। আর মসলাটি খুব কম করে ব্যবহার করতে হয়। পেশোয়ারি মাংসের পদে এর লক্ষণীয় ব্যবহার দেখা যায়। আজারবাইজান, ইরান, ইরাক, মধ্যপ্রাচ্যে আস্ত বা বেশ বড় টুকরো করে ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদির মাংস রোস্ট করতে জোয়ানের গুঁড়া খুব ব্যবহার হয়। হজমী গুণের বদৌলতে জোয়ান খুব উপকারী মাংস প্রেমীদের জন্য।
তানিয়া ফেরদৌস

পৃথিবীর কোনো কিছুই সোজা নয়। সবকিছুতেই আছে প্যাঁচ। প্যাঁচ আছে বলেই তার পাঁচালি আছে। পাঁচালি আছে বলেই না ঘ্রাণটা ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। থাক অত কথা আর না বলি। বলি কী, এই কোরবানির পশুর মাংস রান্না করতে, কাবাব বানাতে যে জিনিসটি আগে দরকার সেটি কী, জানেন? মসলা।
আদা–রসুন–পেঁয়াজ বাটা, কুচি করা পেঁয়াজ, হলুদ–মরিচ–জিরা–ধনে, আস্ত এলাচি, দারুচিনি, তেজপাতা—এই আটপৌরে মাংসের মসলাগুলোর স্বাদ, গন্ধ, আর ব্যবহারের উপযোগিতা আমরা সবাই কম–বেশি জানি। কিন্তু মাংসের বিশেষ পদ তৈরি করতে কিছু বিশিষ্ট মসলাপাতির ব্যবহার রয়েছে, যেগুলোর ফ্লেভার সম্পর্কে সবারই আগ্রহ রয়েছে। বিশেষত স্কুলে পড়া বাংলা ব্যাকরণের প্রায় সমোচ্চারিত শব্দগুলোর মতো কিছু মসলা স্বাদ, গন্ধের দিক থেকে খুবই কাছাকাছি; অথচ একেবারেই আলাদা। সাধে কী আর বলেছিলাম, প্যাঁচ সবখানে আছে। যেমন ধরুন, পেঁয়াজ কুচি করে দিলে এক স্বাদ আবার একটা পেঁয়াজ চার ভাগ করে দিলে পাবেন আরেক স্বাদ। রসুনও গোটা কোয়ার এক স্বাদ, তো একটু থেঁতলে দিলে সেটা বদলে যাবে। সব মসলারই তাই।
জিরা, শাহিজিরা, কালো জিরা আর মিষ্টিজিরা (মৌরি)
আমাদের দেশের রান্নায় জিরার সুগন্ধ না এলে যেন মাংসের পদ পরিপূর্ণতাই পায় না। বীজ জাতীয় মসলা জিরা (cumin) কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রাচীন মিসর, লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও আরব দেশগুলোতেও খুব গুরুত্বপূর্ণ মাংস রান্নার জন্য। এর এক ধরনের সোঁদা-মেটে ফ্লেভার আছে, যা মাংসের সঙ্গে খুব সুন্দরভাবে খাপ খেয়ে যায়। আমাদের কোর্মা, রেজালা, ঝাল করে রাঁধা মাংস, কাবাব—সবকিছুতেই জিরার উষ্ণ স্বাদ অপরিহার্য। আবার বিরিয়ানি মসলাতেও জিরা থাকবেই। আস্ত জিরার ফোড়নে মাংসের ঝাল ফ্রাই, কড়াই, দোপিঁয়াজা অন্য মাত্রা পায়। আবার অন্য সব মসলার সঙ্গে জিরা বাটায় কষিয়েই মাংসের ভুনা, কষা, ঝোলের পদ জমে ভালো। এদিকে, টালা বা ভাজা জিরা শেষে ছড়িয়ে মাংসের পদে আনা যায় অনন্য স্বাদ–গন্ধ। বিশেষত খাসি বা ভেড়ার মাংসে এভাবে জিরার ব্যবহার জরুরি।
অন্যদিকে শাহিজিরা বা caraway seeds দুনিয়ার সবচেয়ে দামি ও দুষ্প্রাপ্য মসলাগুলোর একটি। এটি জিরার চেয়ে কালচে, সরু, মসৃণ একটু বাঁকানো আকৃতির। শাহিজিরা সাধারণত মাংসের পদে আস্ত ফোড়নে বা বিরিয়ানির চাল ভাপাতে বেশি ব্যবহার হয়। আমাদের দেশি রোস্ট, রেজালা, কালিয়া আর কড়াই মাংসেও আস্ত শাহিজিরা ব্যবহার হয়। বেশি দিলে তিতকুটে লাগবে বলে গুঁড়ো শাহিজিরা আবার খুব অল্প পরিমাণে দেওয়া হয় অনেক ইউরোপীয় মাংস রান্নায়। এর উদাহরণ বিফ গোলাশ। এদিকে কিছু কাবাব মসলায় খুব অল্প পরিমাণে শাহিজিরা গুঁড়া দেওয়া হয়। কারণ, বেশি দিলে এর মুলেথি বা লিকরিশ। এর মতো কড়া ফ্লেভার আর কোনো মসলার গন্ধই পাওয়া যাবে না।
কালো জিরা আর কালিজিরা কিন্তু একেবারেই আলাদা। কালো রঙের জিরায় অনেক সময় সাধারণ জিরা মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় ইউরোপের কোনো কোনো দেশে ও তুর্কিস্তানে। সেখানে আমাদের চিরচেনা জিরাকে রোমান কিউমিন বলে। এই কালো রঙের জিরার স্বাদ–গন্ধ জিরার মতোই; তবে কিছুটা মৃদু।
জিরার মতো দেখতে বলে মিষ্টি জিরা নাম দেওয়া হলেও মৌরি (Fennel seeds) একেবারেই আলাদা জগতের মসলা। মৌরির বীজে এক ধরনের মিষ্টি গন্ধ আছে। স্বাদও মিঠে ধাঁচের। আস্ত মৌরির মুখশুদ্ধি হিসেবে যেমন ব্যবহার আছে, তেমনি মালপোয়া বা অন্যান্য মিষ্টান্নে এর তুলনাহীন স্বাদ–গন্ধ মন কেড়ে নেয়। চাইনিজ ফাইভ স্পাইসে যেমন মৌরি গুঁড়া আছে, তেমনি এর আস্ত ব্যবহার হয় পাঁচফোড়নে। তাই মাংসের চাইনিজ পদ বা আচারী মাংসে এই মসলা দিতে হয়। খাসির গেলাসি হোক আর গরুর মেজবানি রান্না—মৌরি বাটা লাগবেই।
এলাচি আর বড় এলাচ
ছোট, সবুজ, ফলসুলভ গন্ধের এলাচি তার সুবাসের জন্য বিখ্যাত পৃথিবীর সবখানে। সব ধরনের মিষ্টান্ন ছাড়াও মাংসের যেকোনো পদেই ছোট এলাচি দিতে হয়। গরম মসলা, কাবাব মসলা বা বিরিয়ানি মসলার ভিত্তি যে ক’টি মসলা, তার একটি এই এলাচি। কোর্মার প্রধান ফ্লেভারটিই এই এলাচির, গেলাসিরও।
এদিকে বড় এলাচ বা কালো এলাচ আসলেই বড়সড় আর কালো রঙের। এর আছে এক গুরুগম্ভীর কর্পূরের মতো গন্ধ। এই মসলা সব সময় আস্ত অবস্থায় বিরিয়ানি, দই দিয়ে তৈরি মাংসের ডিশ, রোগান জোশ ইত্যাদি পদে খুবই অন্যরকম এক স্মোকি ফ্লেভার দেয়।
কালো ও সাদা গোলমরিচ আর কাবাবচিনি
গোলমরিচ বহু যুগ ধরেই পৃথিবীর এ প্রান্তে রান্নায় ঝালের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। মাংস রান্নায় এটি ব্যবহার হয়ে আসছে। কালো আর সাদা গোলমরিচ কিন্তু একই গাছের বীজ। ফল পাকতে শুরু করলেই তুলে নিয়ে অক্সিডাইজ বা ভাঁপিয়ে শুকিয়ে নিলে কুঁচকে থাকা ত্বকের কড়া স্বাদের ঝাল ও ঝাঁজালো কালো গোলমরিচ পাওয়া যায়। এই গোলমরিচ বাটায় দক্ষিণী কায়দায় বিফ কারি খুব জনপ্রিয় ভারতে। গরম মসলা, কাবাব মসলায় কালো গোলমরিচ অপরিহার্য।
আবার মসৃণ সাদা গোলমরিচ একই গাছের সুপক্ক ফল। এটি পানিতে ভিজিয়ে আবরণ তুলে ফেলে সাবধানে রোদে শুকিয়ে বানানো হয়। আস্ত সাদা গোলমরিচ মাংসের পদ এবং কাচ্চি বা পাক্কি বিরিয়ানিতে ব্যবহার হয়। এর স্বাদ–গন্ধ খুবই রাজকীয় ও মৃদু ধরনের। মুসাল্লাম, আফগানি পোলাও, উজবেক প্লভ, আরব কাবসা, মান্দি, পার্সি মালাই কোফতা, আমাদের মালাই বা রেশমি কাবাবে এর গুঁড়ো বেশ ব্যবহার হয়। এতে করে ঘি, তেল, চর্বির মধ্যে এক ধরনের চনমনে স্বাদ–গন্ধ আসে ঝালের মাত্রা না বাড়িয়েই এবং রঙে মখমলী ঘিয়ে ভাব রেখেই। আমাদের দেশে কালো আর সাদা গোলমরিচের ব্যবহার বেশি হলেও ছয় ধরনের গোলমরিচের অস্তিত্ব আছে পৃথিবীতে।
কাবাবচিনি কিন্তু একেবারেই আলাদা স্বাদ–গন্ধের মসলা। এর ব্যবহারও বিচিত্র। তারপরও এর আকার–আকৃতির সঙ্গে কালো গোলমরিচের মিল রয়েছে। তবে এর ছোট্ট শুঁড়টির দিকে খেয়াল করলে আর গন্ধ বুঝলে গুলিয়ে যাবে না এ দুটো। এই মসলাটিকে ইংরেজিতে অলস্পাইস বলে। কারণ, এর বিশিষ্ট সুবাসটি লবঙ্গ, গোলমরিচ, দারুচিনি আর জায়ফলের সম্মিলিত ঘ্রাণের মতো। আরব, তুর্কি আর মরক্কোসহ আফ্রিকার বহু দেশের প্রিয় মাংসের মসলা এই কাবাবচিনি। মাংসের তাজিন, বিভিন্ন কাবাব তৈরি করতে এই মসলার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। দমপোখত বা হান্ডি গোশত–এর আটার বাঁধন খুললে প্রথমেই এই মসলার সুবাস নাকে আলোড়ন জাগায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য টেলে গুঁড়ো করে দিলে বেশি ভালো ফল পাওয়া যায়।
রাঁধুনি আর জোয়ান
রাঁধুনি নামের এক ছোট খসখসে দানাবিশিষ্ট মসলা মাংস রান্নায় জাদুকরী ভূমিকা রাখে। একে আঞ্চলিকভাবে এ দেশে কোথাও কোথাও ছোট ধনেও বলে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গরুর মেজবানি মাংসের অতুলনীয় স্বাদ–গন্ধের ব্যাপারে এ মসলার কৃতিত্ব আছে বলে সেখানকার অভিজ্ঞ রন্ধনশিল্পীদের থেকে জানা যায়। এ ক্ষেত্রে রান্নার শেষ দিকে আলাদা করে জিরা, রাঁধুনি, গরম মসলার মিশ্রণের চূর্ণ দেওয়া হয় নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী। ইংরেজিতে ওয়াইল্ড সেলেরি সিডস বা হিন্দিতে আজমোদা বলে পরিচিত এটি। পাঁচফোড়নেও এর ব্যবহার আছে। মেটে, পাতা গন্ধী—এই আস্ত রাঁধুনির ফোড়ন দিলেও মাংসের ফ্লেভারকে খুলে মেলে ধরে।
জোয়ান বা আজওয়াইন (Carom seeds) আমাদের উপমহাদেশে আস্ত ফোড়ন হিসেবে নিরামিষ খাবারে বেশি ব্যবহার হয়। মধ্যপ্রাচ্যে ও পারসি রান্নায় এর গুঁড়ো মাংসের এক বিশেষ মসলা হিসেবে খুব সমাদৃত। খেয়াল না করলে একে রাঁধুনির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা বেশ সোজা। এটি কিন্তু আস্ত শুকনো ফল, গাছের বীজ নয়। থাইম হার্বের সঙ্গে এর বেশ মিল আছে। আর মসলাটি খুব কম করে ব্যবহার করতে হয়। পেশোয়ারি মাংসের পদে এর লক্ষণীয় ব্যবহার দেখা যায়। আজারবাইজান, ইরান, ইরাক, মধ্যপ্রাচ্যে আস্ত বা বেশ বড় টুকরো করে ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদির মাংস রোস্ট করতে জোয়ানের গুঁড়া খুব ব্যবহার হয়। হজমী গুণের বদৌলতে জোয়ান খুব উপকারী মাংস প্রেমীদের জন্য।

পৃথিবীর কোনো কিছুই সোজা নয়। সবকিছুতেই আছে প্যাঁচ। প্যাঁচ আছে বলেই তার পাঁচালি আছে। পাঁচালি আছে বলেই না ঘ্রাণটা ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। থাক অত কথা আর না বলি। বলি কী, এই কোরবানির পশুর মাংস রান্না করতে, কাবাব বানাতে যে জিনিসটি আগে দরকার সেটি কী, জানেন? মসলা।
আদা–রসুন–পেঁয়াজ বাটা, কুচি করা পেঁয়াজ, হলুদ–মরিচ–জিরা–ধনে, আস্ত এলাচি, দারুচিনি, তেজপাতা—এই আটপৌরে মাংসের মসলাগুলোর স্বাদ, গন্ধ, আর ব্যবহারের উপযোগিতা আমরা সবাই কম–বেশি জানি। কিন্তু মাংসের বিশেষ পদ তৈরি করতে কিছু বিশিষ্ট মসলাপাতির ব্যবহার রয়েছে, যেগুলোর ফ্লেভার সম্পর্কে সবারই আগ্রহ রয়েছে। বিশেষত স্কুলে পড়া বাংলা ব্যাকরণের প্রায় সমোচ্চারিত শব্দগুলোর মতো কিছু মসলা স্বাদ, গন্ধের দিক থেকে খুবই কাছাকাছি; অথচ একেবারেই আলাদা। সাধে কী আর বলেছিলাম, প্যাঁচ সবখানে আছে। যেমন ধরুন, পেঁয়াজ কুচি করে দিলে এক স্বাদ আবার একটা পেঁয়াজ চার ভাগ করে দিলে পাবেন আরেক স্বাদ। রসুনও গোটা কোয়ার এক স্বাদ, তো একটু থেঁতলে দিলে সেটা বদলে যাবে। সব মসলারই তাই।
জিরা, শাহিজিরা, কালো জিরা আর মিষ্টিজিরা (মৌরি)
আমাদের দেশের রান্নায় জিরার সুগন্ধ না এলে যেন মাংসের পদ পরিপূর্ণতাই পায় না। বীজ জাতীয় মসলা জিরা (cumin) কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রাচীন মিসর, লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও আরব দেশগুলোতেও খুব গুরুত্বপূর্ণ মাংস রান্নার জন্য। এর এক ধরনের সোঁদা-মেটে ফ্লেভার আছে, যা মাংসের সঙ্গে খুব সুন্দরভাবে খাপ খেয়ে যায়। আমাদের কোর্মা, রেজালা, ঝাল করে রাঁধা মাংস, কাবাব—সবকিছুতেই জিরার উষ্ণ স্বাদ অপরিহার্য। আবার বিরিয়ানি মসলাতেও জিরা থাকবেই। আস্ত জিরার ফোড়নে মাংসের ঝাল ফ্রাই, কড়াই, দোপিঁয়াজা অন্য মাত্রা পায়। আবার অন্য সব মসলার সঙ্গে জিরা বাটায় কষিয়েই মাংসের ভুনা, কষা, ঝোলের পদ জমে ভালো। এদিকে, টালা বা ভাজা জিরা শেষে ছড়িয়ে মাংসের পদে আনা যায় অনন্য স্বাদ–গন্ধ। বিশেষত খাসি বা ভেড়ার মাংসে এভাবে জিরার ব্যবহার জরুরি।
অন্যদিকে শাহিজিরা বা caraway seeds দুনিয়ার সবচেয়ে দামি ও দুষ্প্রাপ্য মসলাগুলোর একটি। এটি জিরার চেয়ে কালচে, সরু, মসৃণ একটু বাঁকানো আকৃতির। শাহিজিরা সাধারণত মাংসের পদে আস্ত ফোড়নে বা বিরিয়ানির চাল ভাপাতে বেশি ব্যবহার হয়। আমাদের দেশি রোস্ট, রেজালা, কালিয়া আর কড়াই মাংসেও আস্ত শাহিজিরা ব্যবহার হয়। বেশি দিলে তিতকুটে লাগবে বলে গুঁড়ো শাহিজিরা আবার খুব অল্প পরিমাণে দেওয়া হয় অনেক ইউরোপীয় মাংস রান্নায়। এর উদাহরণ বিফ গোলাশ। এদিকে কিছু কাবাব মসলায় খুব অল্প পরিমাণে শাহিজিরা গুঁড়া দেওয়া হয়। কারণ, বেশি দিলে এর মুলেথি বা লিকরিশ। এর মতো কড়া ফ্লেভার আর কোনো মসলার গন্ধই পাওয়া যাবে না।
কালো জিরা আর কালিজিরা কিন্তু একেবারেই আলাদা। কালো রঙের জিরায় অনেক সময় সাধারণ জিরা মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় ইউরোপের কোনো কোনো দেশে ও তুর্কিস্তানে। সেখানে আমাদের চিরচেনা জিরাকে রোমান কিউমিন বলে। এই কালো রঙের জিরার স্বাদ–গন্ধ জিরার মতোই; তবে কিছুটা মৃদু।
জিরার মতো দেখতে বলে মিষ্টি জিরা নাম দেওয়া হলেও মৌরি (Fennel seeds) একেবারেই আলাদা জগতের মসলা। মৌরির বীজে এক ধরনের মিষ্টি গন্ধ আছে। স্বাদও মিঠে ধাঁচের। আস্ত মৌরির মুখশুদ্ধি হিসেবে যেমন ব্যবহার আছে, তেমনি মালপোয়া বা অন্যান্য মিষ্টান্নে এর তুলনাহীন স্বাদ–গন্ধ মন কেড়ে নেয়। চাইনিজ ফাইভ স্পাইসে যেমন মৌরি গুঁড়া আছে, তেমনি এর আস্ত ব্যবহার হয় পাঁচফোড়নে। তাই মাংসের চাইনিজ পদ বা আচারী মাংসে এই মসলা দিতে হয়। খাসির গেলাসি হোক আর গরুর মেজবানি রান্না—মৌরি বাটা লাগবেই।
এলাচি আর বড় এলাচ
ছোট, সবুজ, ফলসুলভ গন্ধের এলাচি তার সুবাসের জন্য বিখ্যাত পৃথিবীর সবখানে। সব ধরনের মিষ্টান্ন ছাড়াও মাংসের যেকোনো পদেই ছোট এলাচি দিতে হয়। গরম মসলা, কাবাব মসলা বা বিরিয়ানি মসলার ভিত্তি যে ক’টি মসলা, তার একটি এই এলাচি। কোর্মার প্রধান ফ্লেভারটিই এই এলাচির, গেলাসিরও।
এদিকে বড় এলাচ বা কালো এলাচ আসলেই বড়সড় আর কালো রঙের। এর আছে এক গুরুগম্ভীর কর্পূরের মতো গন্ধ। এই মসলা সব সময় আস্ত অবস্থায় বিরিয়ানি, দই দিয়ে তৈরি মাংসের ডিশ, রোগান জোশ ইত্যাদি পদে খুবই অন্যরকম এক স্মোকি ফ্লেভার দেয়।
কালো ও সাদা গোলমরিচ আর কাবাবচিনি
গোলমরিচ বহু যুগ ধরেই পৃথিবীর এ প্রান্তে রান্নায় ঝালের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। মাংস রান্নায় এটি ব্যবহার হয়ে আসছে। কালো আর সাদা গোলমরিচ কিন্তু একই গাছের বীজ। ফল পাকতে শুরু করলেই তুলে নিয়ে অক্সিডাইজ বা ভাঁপিয়ে শুকিয়ে নিলে কুঁচকে থাকা ত্বকের কড়া স্বাদের ঝাল ও ঝাঁজালো কালো গোলমরিচ পাওয়া যায়। এই গোলমরিচ বাটায় দক্ষিণী কায়দায় বিফ কারি খুব জনপ্রিয় ভারতে। গরম মসলা, কাবাব মসলায় কালো গোলমরিচ অপরিহার্য।
আবার মসৃণ সাদা গোলমরিচ একই গাছের সুপক্ক ফল। এটি পানিতে ভিজিয়ে আবরণ তুলে ফেলে সাবধানে রোদে শুকিয়ে বানানো হয়। আস্ত সাদা গোলমরিচ মাংসের পদ এবং কাচ্চি বা পাক্কি বিরিয়ানিতে ব্যবহার হয়। এর স্বাদ–গন্ধ খুবই রাজকীয় ও মৃদু ধরনের। মুসাল্লাম, আফগানি পোলাও, উজবেক প্লভ, আরব কাবসা, মান্দি, পার্সি মালাই কোফতা, আমাদের মালাই বা রেশমি কাবাবে এর গুঁড়ো বেশ ব্যবহার হয়। এতে করে ঘি, তেল, চর্বির মধ্যে এক ধরনের চনমনে স্বাদ–গন্ধ আসে ঝালের মাত্রা না বাড়িয়েই এবং রঙে মখমলী ঘিয়ে ভাব রেখেই। আমাদের দেশে কালো আর সাদা গোলমরিচের ব্যবহার বেশি হলেও ছয় ধরনের গোলমরিচের অস্তিত্ব আছে পৃথিবীতে।
কাবাবচিনি কিন্তু একেবারেই আলাদা স্বাদ–গন্ধের মসলা। এর ব্যবহারও বিচিত্র। তারপরও এর আকার–আকৃতির সঙ্গে কালো গোলমরিচের মিল রয়েছে। তবে এর ছোট্ট শুঁড়টির দিকে খেয়াল করলে আর গন্ধ বুঝলে গুলিয়ে যাবে না এ দুটো। এই মসলাটিকে ইংরেজিতে অলস্পাইস বলে। কারণ, এর বিশিষ্ট সুবাসটি লবঙ্গ, গোলমরিচ, দারুচিনি আর জায়ফলের সম্মিলিত ঘ্রাণের মতো। আরব, তুর্কি আর মরক্কোসহ আফ্রিকার বহু দেশের প্রিয় মাংসের মসলা এই কাবাবচিনি। মাংসের তাজিন, বিভিন্ন কাবাব তৈরি করতে এই মসলার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। দমপোখত বা হান্ডি গোশত–এর আটার বাঁধন খুললে প্রথমেই এই মসলার সুবাস নাকে আলোড়ন জাগায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য টেলে গুঁড়ো করে দিলে বেশি ভালো ফল পাওয়া যায়।
রাঁধুনি আর জোয়ান
রাঁধুনি নামের এক ছোট খসখসে দানাবিশিষ্ট মসলা মাংস রান্নায় জাদুকরী ভূমিকা রাখে। একে আঞ্চলিকভাবে এ দেশে কোথাও কোথাও ছোট ধনেও বলে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গরুর মেজবানি মাংসের অতুলনীয় স্বাদ–গন্ধের ব্যাপারে এ মসলার কৃতিত্ব আছে বলে সেখানকার অভিজ্ঞ রন্ধনশিল্পীদের থেকে জানা যায়। এ ক্ষেত্রে রান্নার শেষ দিকে আলাদা করে জিরা, রাঁধুনি, গরম মসলার মিশ্রণের চূর্ণ দেওয়া হয় নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী। ইংরেজিতে ওয়াইল্ড সেলেরি সিডস বা হিন্দিতে আজমোদা বলে পরিচিত এটি। পাঁচফোড়নেও এর ব্যবহার আছে। মেটে, পাতা গন্ধী—এই আস্ত রাঁধুনির ফোড়ন দিলেও মাংসের ফ্লেভারকে খুলে মেলে ধরে।
জোয়ান বা আজওয়াইন (Carom seeds) আমাদের উপমহাদেশে আস্ত ফোড়ন হিসেবে নিরামিষ খাবারে বেশি ব্যবহার হয়। মধ্যপ্রাচ্যে ও পারসি রান্নায় এর গুঁড়ো মাংসের এক বিশেষ মসলা হিসেবে খুব সমাদৃত। খেয়াল না করলে একে রাঁধুনির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা বেশ সোজা। এটি কিন্তু আস্ত শুকনো ফল, গাছের বীজ নয়। থাইম হার্বের সঙ্গে এর বেশ মিল আছে। আর মসলাটি খুব কম করে ব্যবহার করতে হয়। পেশোয়ারি মাংসের পদে এর লক্ষণীয় ব্যবহার দেখা যায়। আজারবাইজান, ইরান, ইরাক, মধ্যপ্রাচ্যে আস্ত বা বেশ বড় টুকরো করে ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদির মাংস রোস্ট করতে জোয়ানের গুঁড়া খুব ব্যবহার হয়। হজমী গুণের বদৌলতে জোয়ান খুব উপকারী মাংস প্রেমীদের জন্য।

যে বয়সে মানুষ কৈশোরে পা রাখে ঠিক সেই বয়সেই, অর্থাৎ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী হয়েছিলেন জাইমা রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমার কৈশোর কেটেছে লন্ডনে।
৯ ঘণ্টা আগে
বড়দিন বা ক্রিসমাস মানেই ডাইনিং টেবিলে সাজানো বড়সড় এক টার্কি রোস্ট। কিন্তু উত্তর আমেরিকার আদি নিবাসী এই পাখি কীভাবে ইউরোপীয়দের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠল, তা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। তার আগে উৎসবের ভোজ বলতে ছিল রাজহাঁস, ময়ূর
১১ ঘণ্টা আগে
কাজুবাদামকে বলা হয় ‘পুষ্টির ছোট প্যাকেট’। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। এ কারণে যে আপনি মুঠো মুঠো করে সব সময় এটি খেতেই থাকবেন, তা হবে না। নিয়মিত কাজুবাদাম পরিমিত খেতে হবে। এতে আপনি পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সুস্থতা। মূলত ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই বৃক্ষজাত বীজ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার
১৫ ঘণ্টা আগে
কড়াইসহ যেকোনো ধাতব হাঁড়িপাতিল কেন বাঁকা হয়ে যায়, জানেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে ধাতব পাত্রে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসের মধ্যে। চুলা থেকে নামানো গরম কড়াইয়ে হঠাৎ ঠান্ডা পানি ঢাললে যে শব্দ হয়, অনেকের কাছে তা সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সতর্কবার্তা।
১৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যে বয়সে মানুষ কৈশোরে পা রাখে ঠিক সেই বয়সেই, অর্থাৎ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী হয়েছিলেন জাইমা রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমার কৈশোর কেটেছে লন্ডনে। সেখানেই স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে এখন ব্যারিস্টার তিনি।
তবে, জাইমা রহমানের শৈশবের পুরোটা সময় বাংলাদেশেই কেটেছে। প্রাথমিকে পড়াশোনা করেছেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকায় (আইএসডি)। এই স্কুলেরই ফুটবল দলের সদস্য ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, গোলকিপার হিসেবে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও সামাল দিয়েছেন। এমনকি জয় করেছেন মেডেলও।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে আসাকে সামনে রেখে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে শৈশবের সেই অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণা করেন জাইমা। তিনি জানান, ফুটবল খেলে তিনি যে মেডেলটি পেয়েছিলেন, সেটি দাদিকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন দাদির অফিসেই।
সেই সময়টিতে জাইমা রহমানের দাদি বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। নাতনির মুখে মেডেল জয়ের গল্পটি তিনি বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন এবং এই গল্পটি তিনি অন্যদের সঙ্গেও খুব গর্ব করে বলতেন।
এ বিষয়ে জাইমা লিখেছেন—‘আমার বয়স তখন এগারো। আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম একটা টুর্নামেন্ট জিতেছিল, আর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমি যেন নিজেই দাদুকে আমার বিজয়ের গল্পটা বলতে পারি; তাঁকে আমার বিজয়ের মেডেলটা দেখাতে পারি। আমি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গোলকিপার হিসেবে কী-কী করেছি, সেটা বলছিলাম; আর স্পষ্ট টের পাচ্ছিলাম, দাদু প্রচণ্ড মনোযোগ নিয়ে আমাকে শুনছেন। তিনি এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে, পরে সেই গল্পটা তিনি অন্যদের কাছেও বলতেন।’
১৭ বছর পর বাবা-মায়ের সঙ্গে আবারও দেশে ফিরে আসা জাইমা রহমান এখন ৩০ বছরের পরিপূর্ণ এক ব্যক্তিত্ব। লন্ডনে গিয়ে তাঁর জীবন নতুনভাবে গড়ে ওঠে। শেকড় হারানোর বেদনার সঙ্গে যুক্ত হয় নতুন সমাজ, নতুন ভাষা, নতুন লড়াই। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। লন্ডনের ম্যারিমাউন্ট গার্লস স্কুল থেকে তিনি ও-লেভেল পাস করেন। পরে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি থেকে। পরে তিনি লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী আইন প্রতিষ্ঠান ‘ইনার টেম্পল’ থেকে ‘বার-এট-ল’ কোর্স সম্পন্ন করে ব্যারিস্টার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।

যে বয়সে মানুষ কৈশোরে পা রাখে ঠিক সেই বয়সেই, অর্থাৎ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী হয়েছিলেন জাইমা রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমার কৈশোর কেটেছে লন্ডনে। সেখানেই স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে এখন ব্যারিস্টার তিনি।
তবে, জাইমা রহমানের শৈশবের পুরোটা সময় বাংলাদেশেই কেটেছে। প্রাথমিকে পড়াশোনা করেছেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকায় (আইএসডি)। এই স্কুলেরই ফুটবল দলের সদস্য ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, গোলকিপার হিসেবে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও সামাল দিয়েছেন। এমনকি জয় করেছেন মেডেলও।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে আসাকে সামনে রেখে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে শৈশবের সেই অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণা করেন জাইমা। তিনি জানান, ফুটবল খেলে তিনি যে মেডেলটি পেয়েছিলেন, সেটি দাদিকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন দাদির অফিসেই।
সেই সময়টিতে জাইমা রহমানের দাদি বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। নাতনির মুখে মেডেল জয়ের গল্পটি তিনি বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন এবং এই গল্পটি তিনি অন্যদের সঙ্গেও খুব গর্ব করে বলতেন।
এ বিষয়ে জাইমা লিখেছেন—‘আমার বয়স তখন এগারো। আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম একটা টুর্নামেন্ট জিতেছিল, আর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমি যেন নিজেই দাদুকে আমার বিজয়ের গল্পটা বলতে পারি; তাঁকে আমার বিজয়ের মেডেলটা দেখাতে পারি। আমি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গোলকিপার হিসেবে কী-কী করেছি, সেটা বলছিলাম; আর স্পষ্ট টের পাচ্ছিলাম, দাদু প্রচণ্ড মনোযোগ নিয়ে আমাকে শুনছেন। তিনি এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে, পরে সেই গল্পটা তিনি অন্যদের কাছেও বলতেন।’
১৭ বছর পর বাবা-মায়ের সঙ্গে আবারও দেশে ফিরে আসা জাইমা রহমান এখন ৩০ বছরের পরিপূর্ণ এক ব্যক্তিত্ব। লন্ডনে গিয়ে তাঁর জীবন নতুনভাবে গড়ে ওঠে। শেকড় হারানোর বেদনার সঙ্গে যুক্ত হয় নতুন সমাজ, নতুন ভাষা, নতুন লড়াই। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। লন্ডনের ম্যারিমাউন্ট গার্লস স্কুল থেকে তিনি ও-লেভেল পাস করেন। পরে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি থেকে। পরে তিনি লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী আইন প্রতিষ্ঠান ‘ইনার টেম্পল’ থেকে ‘বার-এট-ল’ কোর্স সম্পন্ন করে ব্যারিস্টার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।

নাম প্রায় একইরকম হলেও কিছু মসলা স্বাদ, গন্ধ, ফ্লেভারের দিক থেকে খুবই কাছাকাছি অথচ একেবারেই আলাদা। মাংসের বিশেষ পদ তৈরি করতে এ মসলা পাতির ব্যবহার রয়েছে।
১৯ জুলাই ২০২১
বড়দিন বা ক্রিসমাস মানেই ডাইনিং টেবিলে সাজানো বড়সড় এক টার্কি রোস্ট। কিন্তু উত্তর আমেরিকার আদি নিবাসী এই পাখি কীভাবে ইউরোপীয়দের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠল, তা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। তার আগে উৎসবের ভোজ বলতে ছিল রাজহাঁস, ময়ূর
১১ ঘণ্টা আগে
কাজুবাদামকে বলা হয় ‘পুষ্টির ছোট প্যাকেট’। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। এ কারণে যে আপনি মুঠো মুঠো করে সব সময় এটি খেতেই থাকবেন, তা হবে না। নিয়মিত কাজুবাদাম পরিমিত খেতে হবে। এতে আপনি পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সুস্থতা। মূলত ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই বৃক্ষজাত বীজ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার
১৫ ঘণ্টা আগে
কড়াইসহ যেকোনো ধাতব হাঁড়িপাতিল কেন বাঁকা হয়ে যায়, জানেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে ধাতব পাত্রে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসের মধ্যে। চুলা থেকে নামানো গরম কড়াইয়ে হঠাৎ ঠান্ডা পানি ঢাললে যে শব্দ হয়, অনেকের কাছে তা সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সতর্কবার্তা।
১৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিন বা ক্রিসমাস মানেই ডাইনিং টেবিলে সাজানো বড়সড় এক টার্কি রোস্ট। কিন্তু উত্তর আমেরিকার আদি নিবাসী এই পাখি কীভাবে ইউরোপীয়দের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠল, তা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। তার আগে উৎসবের ভোজ বলতে ছিল ময়ূর বা রাজহাঁসের মাংস।
ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তবে টার্কিকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেওয়ার মূল কৃতিত্ব ভিক্টোরিয়ান যুগের। রানি ভিক্টোরিয়া যখন তাঁর রাজকীয় ক্রিসমাস ভোজে টার্কি খাওয়া শুরু করেন, তখন থেকেই এটি আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ১৮৪৩ সালে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’-এ দেখা যায়, একসময়ের কৃপণ ইবেনেজার স্ক্রুজ বড়দিনে ক্র্যাচিট পরিবারকে একটি বিশাল টার্কি উপহার পাঠাচ্ছেন। এই গল্প সাধারণ মানুষের মনে গেঁথে দেয় যে—বড়দিনের আদর্শ খাবার মানেই টার্কি।
কেন টার্কিই সেরা পছন্দ
টার্কি জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে কিছু ব্যবহারিক কারণও রয়েছে। আকার ও উপযোগিতা—গরু দুধ দেয় আর মুরগি দেয় ডিম; কিন্তু টার্কির অন্য কোনো ব্যবহার নেই। এ ছাড়া একটি বড় টার্কি দিয়ে অনায়াসেই পুরো পরিবারের ভোজ সম্পন্ন করা যায়। অনেকগুলো ছোট পাখি রান্না করার চেয়ে একটি বড় পাখি রান্না করা অনেক বেশি সাশ্রয়ী।
হিমায়িত বা ফ্রোজেন টার্কি—রেফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ আবিষ্কারের আগে টাটকা টার্কি কেনা ছিল বেশ ঝক্কির কাজ। কিন্তু ফ্রোজেন টার্কি বাজারে আসার পর মানুষ আগে থেকেই পরিকল্পনা করে এটি কিনতে শুরু করে, যা এর জনপ্রিয়তা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

পরদিনের চমৎকার নাশতা—বড়দিনের পরদিন অর্থাৎ ‘বক্সিং ডে’তে টার্কির বেঁচে যাওয়া মাংস (Leftovers) দিয়ে স্যান্ডউইচ, স্টু, কারি বা পাই তৈরি করা যায়। বিশেষ করে, টার্কি কারি এখন অনেক দেশেই বেশ জনপ্রিয়।
যুক্তরাজ্যে টার্কির একটি দীর্ঘ ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজও ক্রিসমাসে টার্কি খাওয়ার রীতি বজায় আছে।
যাঁরা বড় টার্কি রান্না করতে চান না বা ঝামেলা ছাড়াই উৎসবের খাবার উপভোগ করতে চান, তাঁদের জন্যও আজ নানা ধরনের প্রস্তুত টার্কি খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে—যা ক্রিসমাস উদ্যাপনকে আরও সহজ করে তুলেছে। বড়দিনের এই দীর্ঘ ঐতিহ্যের কারণে আজও বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ টার্কি ছাড়া উৎসবের কথা কল্পনাও করতে পারেন না। আপনিও কি এবার বড়দিনের আয়োজনে টার্কি রাখছেন?

বড়দিন বা ক্রিসমাস মানেই ডাইনিং টেবিলে সাজানো বড়সড় এক টার্কি রোস্ট। কিন্তু উত্তর আমেরিকার আদি নিবাসী এই পাখি কীভাবে ইউরোপীয়দের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠল, তা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। তার আগে উৎসবের ভোজ বলতে ছিল ময়ূর বা রাজহাঁসের মাংস।
ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তবে টার্কিকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেওয়ার মূল কৃতিত্ব ভিক্টোরিয়ান যুগের। রানি ভিক্টোরিয়া যখন তাঁর রাজকীয় ক্রিসমাস ভোজে টার্কি খাওয়া শুরু করেন, তখন থেকেই এটি আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ১৮৪৩ সালে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’-এ দেখা যায়, একসময়ের কৃপণ ইবেনেজার স্ক্রুজ বড়দিনে ক্র্যাচিট পরিবারকে একটি বিশাল টার্কি উপহার পাঠাচ্ছেন। এই গল্প সাধারণ মানুষের মনে গেঁথে দেয় যে—বড়দিনের আদর্শ খাবার মানেই টার্কি।
কেন টার্কিই সেরা পছন্দ
টার্কি জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে কিছু ব্যবহারিক কারণও রয়েছে। আকার ও উপযোগিতা—গরু দুধ দেয় আর মুরগি দেয় ডিম; কিন্তু টার্কির অন্য কোনো ব্যবহার নেই। এ ছাড়া একটি বড় টার্কি দিয়ে অনায়াসেই পুরো পরিবারের ভোজ সম্পন্ন করা যায়। অনেকগুলো ছোট পাখি রান্না করার চেয়ে একটি বড় পাখি রান্না করা অনেক বেশি সাশ্রয়ী।
হিমায়িত বা ফ্রোজেন টার্কি—রেফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ আবিষ্কারের আগে টাটকা টার্কি কেনা ছিল বেশ ঝক্কির কাজ। কিন্তু ফ্রোজেন টার্কি বাজারে আসার পর মানুষ আগে থেকেই পরিকল্পনা করে এটি কিনতে শুরু করে, যা এর জনপ্রিয়তা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

পরদিনের চমৎকার নাশতা—বড়দিনের পরদিন অর্থাৎ ‘বক্সিং ডে’তে টার্কির বেঁচে যাওয়া মাংস (Leftovers) দিয়ে স্যান্ডউইচ, স্টু, কারি বা পাই তৈরি করা যায়। বিশেষ করে, টার্কি কারি এখন অনেক দেশেই বেশ জনপ্রিয়।
যুক্তরাজ্যে টার্কির একটি দীর্ঘ ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজও ক্রিসমাসে টার্কি খাওয়ার রীতি বজায় আছে।
যাঁরা বড় টার্কি রান্না করতে চান না বা ঝামেলা ছাড়াই উৎসবের খাবার উপভোগ করতে চান, তাঁদের জন্যও আজ নানা ধরনের প্রস্তুত টার্কি খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে—যা ক্রিসমাস উদ্যাপনকে আরও সহজ করে তুলেছে। বড়দিনের এই দীর্ঘ ঐতিহ্যের কারণে আজও বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ টার্কি ছাড়া উৎসবের কথা কল্পনাও করতে পারেন না। আপনিও কি এবার বড়দিনের আয়োজনে টার্কি রাখছেন?

নাম প্রায় একইরকম হলেও কিছু মসলা স্বাদ, গন্ধ, ফ্লেভারের দিক থেকে খুবই কাছাকাছি অথচ একেবারেই আলাদা। মাংসের বিশেষ পদ তৈরি করতে এ মসলা পাতির ব্যবহার রয়েছে।
১৯ জুলাই ২০২১
যে বয়সে মানুষ কৈশোরে পা রাখে ঠিক সেই বয়সেই, অর্থাৎ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী হয়েছিলেন জাইমা রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমার কৈশোর কেটেছে লন্ডনে।
৯ ঘণ্টা আগে
কাজুবাদামকে বলা হয় ‘পুষ্টির ছোট প্যাকেট’। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। এ কারণে যে আপনি মুঠো মুঠো করে সব সময় এটি খেতেই থাকবেন, তা হবে না। নিয়মিত কাজুবাদাম পরিমিত খেতে হবে। এতে আপনি পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সুস্থতা। মূলত ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই বৃক্ষজাত বীজ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার
১৫ ঘণ্টা আগে
কড়াইসহ যেকোনো ধাতব হাঁড়িপাতিল কেন বাঁকা হয়ে যায়, জানেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে ধাতব পাত্রে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসের মধ্যে। চুলা থেকে নামানো গরম কড়াইয়ে হঠাৎ ঠান্ডা পানি ঢাললে যে শব্দ হয়, অনেকের কাছে তা সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সতর্কবার্তা।
১৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

কাজুবাদামকে বলা হয় ‘পুষ্টির ছোট প্যাকেট’। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। এ কারণে যে আপনি মুঠো মুঠো করে সব সময় এটি খেতেই থাকবেন, তা হবে না। নিয়মিত কাজুবাদাম পরিমিত খেতে হবে। এতে আপনি পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সুস্থতা। মূলত ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই বৃক্ষজাত বীজ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার স্বাস্থ্যগুণের জন্য সমাদৃত। হৃদ্রোগ প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণ—কাজুবাদামের আছে বহুমুখী উপকারিতা। এটি নিয়মিত খাওয়ার পেছনে অনেকগুলো স্বাস্থ্যগত কারণ আছে। আবার খাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু সতর্কতাও। তাই নিজের খাবারের তালিকায় কাজুবাদাম রাখার আগে ভালো ও খারাপ দিক জেনে রাখুন।
হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষা
কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর অসম্পৃক্ত চর্বি। এটি রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এ ছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
কাজুবাদাম উচ্চ ক্যালরিযুক্ত হলেও এটি ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। এর কারণ হলো, কাজুবাদামের সবটুকু ক্যালরি শরীর শোষণ করতে পারে না। এর ভেতরের আঁশ বা ফাইবার চর্বিকে আটকে ফেলে, যা হজমের সময় শরীরে পুরোপুরি শোষিত হয় না। ফলে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং আজেবাজে খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী
টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য কাজুবাদাম খুবই উপকারী। এতে থাকা আঁশ রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া রোধ করে। এ ছাড়া এর ম্যাগনেশিয়াম ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ক্যালরির ১০ শতাংশ কাজুবাদাম থেকে গ্রহণ করলে ইনসুলিনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।
শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা
কাজুবাদাম কপার ও জিঙ্কের চমৎকার উৎস। এই দুটি খনিজ উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী রাখতে অপরিহার্য। এ ছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (পলিফেনল ও ক্যারোটিনয়েড) শরীরের ভেতরের ব্যথা কমাতে এবং কোষের ক্ষতি রোধ করতে কাজ করে।
হাড় ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য
কাজুবাদামে আছে ভরপুর ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, ভিটামিন কে। এগুলো হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। এর কপার উপাদান মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশ ও শক্তি উৎপাদনে সরাসরি সাহায্য করে।
কাঁচা কাজু নিরাপদ কি না
আমরা বাজারে যে কাজুবাদাম কাঁচা হিসেবে কিনি, তা আসলে পুরোপুরি কাঁচা নয়। গাছের তাজা কাজুবাদামের খোসায় ইউরুশিয়াল নামক বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা ত্বকে অ্যালার্জি বা ফোসকা তৈরি করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত করার সময় তাপ দিয়ে এই বিষাক্ত অংশ দূর করা হয়। তাই গাছ থেকে সরাসরি পেড়ে কাজু খাওয়া নিরাপদ নয়।
খাদ্যাভ্যাসে যুক্ত করার সহজ উপায়
কাজুবাদাম খুব সহজে প্রতিদিনের খাবারে যোগ করা যায়। বিকেলের নাশতায় এক মুঠো ভাজা কাজু খেতে পারেন। সালাদ, স্যুপ বা স্ট্যুতে কাজুবাদাম ছড়িয়ে দিলে স্বাদ ও পুষ্টি—দুই-ই বেড়ে যায়। কাজুবাদাম ভিজিয়ে ব্লেন্ড করে দুধ মুক্ত ক্রিম বা পনির তৈরি করা সম্ভব। টোস্ট বা ওটমিলের সঙ্গে কাজু বাটার ব্যবহার করা যায়।
মনে রাখবেন
পরিমাণ: কাজুবাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর হলেও এতে ক্যালরি বেশি। তাই দিনে ২৮ গ্রাম বা প্রায় ১৮টি বাদাম খাওয়াই যথেষ্ট।
লবণ ও তেল: অতিরিক্ত লবণ বা তেলে ভাজা কাজুর চেয়ে শুকনো ভাজা বা আনসলটেড কাজু বেছে নেওয়া ভালো।
অ্যালার্জি: যাদের কাঠবাদাম বা পেস্তাবাদামে অ্যালার্জি আছে, তাদের কাজু খাওয়ার আগে সতর্ক হওয়া উচিত। শ্বাসকষ্ট বা চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: হেলথ লাইন, ইভিএন এক্সপ্রেস, ওয়েব মেড

কাজুবাদামকে বলা হয় ‘পুষ্টির ছোট প্যাকেট’। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। এ কারণে যে আপনি মুঠো মুঠো করে সব সময় এটি খেতেই থাকবেন, তা হবে না। নিয়মিত কাজুবাদাম পরিমিত খেতে হবে। এতে আপনি পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সুস্থতা। মূলত ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই বৃক্ষজাত বীজ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার স্বাস্থ্যগুণের জন্য সমাদৃত। হৃদ্রোগ প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণ—কাজুবাদামের আছে বহুমুখী উপকারিতা। এটি নিয়মিত খাওয়ার পেছনে অনেকগুলো স্বাস্থ্যগত কারণ আছে। আবার খাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু সতর্কতাও। তাই নিজের খাবারের তালিকায় কাজুবাদাম রাখার আগে ভালো ও খারাপ দিক জেনে রাখুন।
হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষা
কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর অসম্পৃক্ত চর্বি। এটি রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এ ছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
কাজুবাদাম উচ্চ ক্যালরিযুক্ত হলেও এটি ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। এর কারণ হলো, কাজুবাদামের সবটুকু ক্যালরি শরীর শোষণ করতে পারে না। এর ভেতরের আঁশ বা ফাইবার চর্বিকে আটকে ফেলে, যা হজমের সময় শরীরে পুরোপুরি শোষিত হয় না। ফলে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং আজেবাজে খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী
টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য কাজুবাদাম খুবই উপকারী। এতে থাকা আঁশ রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া রোধ করে। এ ছাড়া এর ম্যাগনেশিয়াম ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ক্যালরির ১০ শতাংশ কাজুবাদাম থেকে গ্রহণ করলে ইনসুলিনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।
শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা
কাজুবাদাম কপার ও জিঙ্কের চমৎকার উৎস। এই দুটি খনিজ উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী রাখতে অপরিহার্য। এ ছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (পলিফেনল ও ক্যারোটিনয়েড) শরীরের ভেতরের ব্যথা কমাতে এবং কোষের ক্ষতি রোধ করতে কাজ করে।
হাড় ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য
কাজুবাদামে আছে ভরপুর ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, ভিটামিন কে। এগুলো হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। এর কপার উপাদান মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশ ও শক্তি উৎপাদনে সরাসরি সাহায্য করে।
কাঁচা কাজু নিরাপদ কি না
আমরা বাজারে যে কাজুবাদাম কাঁচা হিসেবে কিনি, তা আসলে পুরোপুরি কাঁচা নয়। গাছের তাজা কাজুবাদামের খোসায় ইউরুশিয়াল নামক বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা ত্বকে অ্যালার্জি বা ফোসকা তৈরি করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত করার সময় তাপ দিয়ে এই বিষাক্ত অংশ দূর করা হয়। তাই গাছ থেকে সরাসরি পেড়ে কাজু খাওয়া নিরাপদ নয়।
খাদ্যাভ্যাসে যুক্ত করার সহজ উপায়
কাজুবাদাম খুব সহজে প্রতিদিনের খাবারে যোগ করা যায়। বিকেলের নাশতায় এক মুঠো ভাজা কাজু খেতে পারেন। সালাদ, স্যুপ বা স্ট্যুতে কাজুবাদাম ছড়িয়ে দিলে স্বাদ ও পুষ্টি—দুই-ই বেড়ে যায়। কাজুবাদাম ভিজিয়ে ব্লেন্ড করে দুধ মুক্ত ক্রিম বা পনির তৈরি করা সম্ভব। টোস্ট বা ওটমিলের সঙ্গে কাজু বাটার ব্যবহার করা যায়।
মনে রাখবেন
পরিমাণ: কাজুবাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর হলেও এতে ক্যালরি বেশি। তাই দিনে ২৮ গ্রাম বা প্রায় ১৮টি বাদাম খাওয়াই যথেষ্ট।
লবণ ও তেল: অতিরিক্ত লবণ বা তেলে ভাজা কাজুর চেয়ে শুকনো ভাজা বা আনসলটেড কাজু বেছে নেওয়া ভালো।
অ্যালার্জি: যাদের কাঠবাদাম বা পেস্তাবাদামে অ্যালার্জি আছে, তাদের কাজু খাওয়ার আগে সতর্ক হওয়া উচিত। শ্বাসকষ্ট বা চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: হেলথ লাইন, ইভিএন এক্সপ্রেস, ওয়েব মেড

নাম প্রায় একইরকম হলেও কিছু মসলা স্বাদ, গন্ধ, ফ্লেভারের দিক থেকে খুবই কাছাকাছি অথচ একেবারেই আলাদা। মাংসের বিশেষ পদ তৈরি করতে এ মসলা পাতির ব্যবহার রয়েছে।
১৯ জুলাই ২০২১
যে বয়সে মানুষ কৈশোরে পা রাখে ঠিক সেই বয়সেই, অর্থাৎ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী হয়েছিলেন জাইমা রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমার কৈশোর কেটেছে লন্ডনে।
৯ ঘণ্টা আগে
বড়দিন বা ক্রিসমাস মানেই ডাইনিং টেবিলে সাজানো বড়সড় এক টার্কি রোস্ট। কিন্তু উত্তর আমেরিকার আদি নিবাসী এই পাখি কীভাবে ইউরোপীয়দের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠল, তা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। তার আগে উৎসবের ভোজ বলতে ছিল রাজহাঁস, ময়ূর
১১ ঘণ্টা আগে
কড়াইসহ যেকোনো ধাতব হাঁড়িপাতিল কেন বাঁকা হয়ে যায়, জানেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে ধাতব পাত্রে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসের মধ্যে। চুলা থেকে নামানো গরম কড়াইয়ে হঠাৎ ঠান্ডা পানি ঢাললে যে শব্দ হয়, অনেকের কাছে তা সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সতর্কবার্তা।
১৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

কড়াইসহ যেকোনো ধাতব হাঁড়িপাতিল কেন বাঁকা হয়ে যায়, জানেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে ধাতব পাত্রে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসের মধ্যে।
চুলা থেকে নামানো গরম কড়াইয়ে হঠাৎ ঠান্ডা পানি ঢাললে যে শব্দ হয়, অনেকের কাছে তা সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সতর্কবার্তা। আপনার কড়াইটি তখন থার্মাল শকের শিকার হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে রান্নার পাত্রের আয়ু কমিয়ে দেয়। অনেক গৃহিণী ও রান্নাপ্রেমী মনে করেন, গরম কাড়াই সরাসরি সিঙ্কে নিয়ে ঠান্ডা পানি ঢাললে পোড়া খাবারের অংশ সহজে উঠে যায়। কিন্তু অল-ক্ল্যাড ও ক্যালফালনের মতো নামকরা কুকওয়্যার ব্রান্ড সতর্ক করে বলছে, এটি কড়াই নষ্ট হওয়ার বড় কারণগুলোর একটি।
থার্মাল শক কীভাবে ক্ষতি করে
ধাতু গরম হলে প্রসারিত হয় এবং ঠান্ডা হলে সংকুচিত হয়। এটি পদার্থবিজ্ঞানের সাধারণ নিয়ম। যখন প্রায় ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার একটি কড়াই হঠাৎ ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে আসে, তখন ধাতব অণুগুলো দ্রুত সংকুচিত হয়। এই হঠাৎ পরিবর্তনই সৃষ্টি করে থার্মাল শক, যা কড়াইয়ের গঠনকে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
কড়াই বাঁকা হয়ে যাওয়া
থার্মাল শকের সবচেয়ে সাধারণ ফল হলো কড়াই বাঁকা হয়ে যাওয়া। হঠাৎ ঠান্ডায় কড়াইয়ের নিচের অংশ সংকুচিত হয়ে ভাঁজ হয়ে যায়। ফলে কড়াই চুলার ওপর ঠিকভাবে বসে না এবং তাপ সমানভাবে ছড়ায় না। এর ফল হিসেবে রান্নার সময় এক পাশে খাবার পুড়ে যায়, অন্য পাশে ঠিকমতো রান্না হয় না।
নন-স্টিক কড়াই বাড়তি ঝুঁকি
নন-স্টিক কড়াইয়ের ক্ষেত্রে থার্মাল শক আরও বেশি ক্ষতিকর। কারণ, প্যানের ধাতু ও নন-স্টিক কোটিংয়ের প্রসারণ ও সংকোচনের হার এক নয়। হঠাৎ ঠান্ডা হলে কোটিং ফেটে যেতে বা উঠে যেতে পারে। এতে প্যানের নন-স্টিক ক্ষমতা নষ্ট হয় এবং কোটিংয়ের ক্ষুদ্র কণা খাবারের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, ক্ষতিগ্রস্ত নন-স্টিক কোটিং থেকে পিএফএএস জাতীয় ক্ষতিকর রাসায়নিক নির্গত হতে পারে। যেগুলো দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
ফাটল ধরার ঝুঁকি
কাস্ট আয়রন, স্টোনওয়্যার বা সিরামিক প্যানের ক্ষেত্রে থার্মাল শক কখনো কখনো তাৎক্ষণিক ফাটল ধরাতে পারে। এসব উপাদান স্টেইনলেস স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় বেশি ভঙ্গুর হওয়ায় হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না।

কড়াই রক্ষা করার নিয়ম
বিশেষজ্ঞদের মতে, কড়াই ভালো রাখার সহজ নিয়ম হলো ধৈর্য। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে—
রান্না শেষ হলে কড়াইটি চুলার ওপর বা পাশে রেখে স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা হতে দিন।
পুরোপুরি ঠান্ডা হলে তারপর ধুয়ে ফেলুন।
তাড়াহুড়া থাকলে ঠান্ডা পানির বদলে গরম বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন, যাতে তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকে।
আরও কিছু সাধারণ ভুল
বিশেষজ্ঞরা আরও কয়েকটি ভুলের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো—
ঠান্ডা পানিতে লবণ দিলে লবণের কণা তলায় জমে স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রে ক্ষুদ্র গর্ত তৈরি করতে পারে। তাই পানি ফুটে ওঠার পর লবণ যোগ করা ভালো।
নন-স্টিক প্যান একটির ওপর আরেকটি রাখলে ওপরের প্যানের তলা নিচের প্যানের কোটিংয়ে আঁচড় ফেলতে পারে।
নন-স্টিক প্যানে ধাতব স্ক্রাবার বা শক্ত ঘষামাজা একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।
কাস্ট আয়রন প্যান পরিষ্কারে সাবান কম ব্যবহার করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে দ্রুত শুকিয়ে হালকা তেল মেখে রাখা ভালো, এতে মরিচা ধরবে না।
রান্নার পাত্রের যত্ন নেওয়া মানে শুধু খরচ বাঁচানো নয়; এটি খাবারের মান, স্বাদ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখে। একটি ভালো পাত্র দীর্ঘদিন ভালো থাকলে সমানভাবে রান্না হয়। খাবার পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে এবং ক্ষতিকর পদার্থ খাবারের সঙ্গে মিশে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। গরম প্যানে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসটি ত্যাগ করলে কড়াইয়ের গঠন ও কোটিং অক্ষত এবং সেটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের উপযোগী থাকবে।
সূত্র: হাফ পোস্ট

কড়াইসহ যেকোনো ধাতব হাঁড়িপাতিল কেন বাঁকা হয়ে যায়, জানেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে ধাতব পাত্রে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসের মধ্যে।
চুলা থেকে নামানো গরম কড়াইয়ে হঠাৎ ঠান্ডা পানি ঢাললে যে শব্দ হয়, অনেকের কাছে তা সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সতর্কবার্তা। আপনার কড়াইটি তখন থার্মাল শকের শিকার হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে রান্নার পাত্রের আয়ু কমিয়ে দেয়। অনেক গৃহিণী ও রান্নাপ্রেমী মনে করেন, গরম কাড়াই সরাসরি সিঙ্কে নিয়ে ঠান্ডা পানি ঢাললে পোড়া খাবারের অংশ সহজে উঠে যায়। কিন্তু অল-ক্ল্যাড ও ক্যালফালনের মতো নামকরা কুকওয়্যার ব্রান্ড সতর্ক করে বলছে, এটি কড়াই নষ্ট হওয়ার বড় কারণগুলোর একটি।
থার্মাল শক কীভাবে ক্ষতি করে
ধাতু গরম হলে প্রসারিত হয় এবং ঠান্ডা হলে সংকুচিত হয়। এটি পদার্থবিজ্ঞানের সাধারণ নিয়ম। যখন প্রায় ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার একটি কড়াই হঠাৎ ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে আসে, তখন ধাতব অণুগুলো দ্রুত সংকুচিত হয়। এই হঠাৎ পরিবর্তনই সৃষ্টি করে থার্মাল শক, যা কড়াইয়ের গঠনকে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
কড়াই বাঁকা হয়ে যাওয়া
থার্মাল শকের সবচেয়ে সাধারণ ফল হলো কড়াই বাঁকা হয়ে যাওয়া। হঠাৎ ঠান্ডায় কড়াইয়ের নিচের অংশ সংকুচিত হয়ে ভাঁজ হয়ে যায়। ফলে কড়াই চুলার ওপর ঠিকভাবে বসে না এবং তাপ সমানভাবে ছড়ায় না। এর ফল হিসেবে রান্নার সময় এক পাশে খাবার পুড়ে যায়, অন্য পাশে ঠিকমতো রান্না হয় না।
নন-স্টিক কড়াই বাড়তি ঝুঁকি
নন-স্টিক কড়াইয়ের ক্ষেত্রে থার্মাল শক আরও বেশি ক্ষতিকর। কারণ, প্যানের ধাতু ও নন-স্টিক কোটিংয়ের প্রসারণ ও সংকোচনের হার এক নয়। হঠাৎ ঠান্ডা হলে কোটিং ফেটে যেতে বা উঠে যেতে পারে। এতে প্যানের নন-স্টিক ক্ষমতা নষ্ট হয় এবং কোটিংয়ের ক্ষুদ্র কণা খাবারের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, ক্ষতিগ্রস্ত নন-স্টিক কোটিং থেকে পিএফএএস জাতীয় ক্ষতিকর রাসায়নিক নির্গত হতে পারে। যেগুলো দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
ফাটল ধরার ঝুঁকি
কাস্ট আয়রন, স্টোনওয়্যার বা সিরামিক প্যানের ক্ষেত্রে থার্মাল শক কখনো কখনো তাৎক্ষণিক ফাটল ধরাতে পারে। এসব উপাদান স্টেইনলেস স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় বেশি ভঙ্গুর হওয়ায় হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না।

কড়াই রক্ষা করার নিয়ম
বিশেষজ্ঞদের মতে, কড়াই ভালো রাখার সহজ নিয়ম হলো ধৈর্য। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে—
রান্না শেষ হলে কড়াইটি চুলার ওপর বা পাশে রেখে স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা হতে দিন।
পুরোপুরি ঠান্ডা হলে তারপর ধুয়ে ফেলুন।
তাড়াহুড়া থাকলে ঠান্ডা পানির বদলে গরম বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন, যাতে তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকে।
আরও কিছু সাধারণ ভুল
বিশেষজ্ঞরা আরও কয়েকটি ভুলের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো—
ঠান্ডা পানিতে লবণ দিলে লবণের কণা তলায় জমে স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রে ক্ষুদ্র গর্ত তৈরি করতে পারে। তাই পানি ফুটে ওঠার পর লবণ যোগ করা ভালো।
নন-স্টিক প্যান একটির ওপর আরেকটি রাখলে ওপরের প্যানের তলা নিচের প্যানের কোটিংয়ে আঁচড় ফেলতে পারে।
নন-স্টিক প্যানে ধাতব স্ক্রাবার বা শক্ত ঘষামাজা একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।
কাস্ট আয়রন প্যান পরিষ্কারে সাবান কম ব্যবহার করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে দ্রুত শুকিয়ে হালকা তেল মেখে রাখা ভালো, এতে মরিচা ধরবে না।
রান্নার পাত্রের যত্ন নেওয়া মানে শুধু খরচ বাঁচানো নয়; এটি খাবারের মান, স্বাদ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখে। একটি ভালো পাত্র দীর্ঘদিন ভালো থাকলে সমানভাবে রান্না হয়। খাবার পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে এবং ক্ষতিকর পদার্থ খাবারের সঙ্গে মিশে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। গরম প্যানে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসটি ত্যাগ করলে কড়াইয়ের গঠন ও কোটিং অক্ষত এবং সেটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের উপযোগী থাকবে।
সূত্র: হাফ পোস্ট

নাম প্রায় একইরকম হলেও কিছু মসলা স্বাদ, গন্ধ, ফ্লেভারের দিক থেকে খুবই কাছাকাছি অথচ একেবারেই আলাদা। মাংসের বিশেষ পদ তৈরি করতে এ মসলা পাতির ব্যবহার রয়েছে।
১৯ জুলাই ২০২১
যে বয়সে মানুষ কৈশোরে পা রাখে ঠিক সেই বয়সেই, অর্থাৎ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী হয়েছিলেন জাইমা রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমার কৈশোর কেটেছে লন্ডনে।
৯ ঘণ্টা আগে
বড়দিন বা ক্রিসমাস মানেই ডাইনিং টেবিলে সাজানো বড়সড় এক টার্কি রোস্ট। কিন্তু উত্তর আমেরিকার আদি নিবাসী এই পাখি কীভাবে ইউরোপীয়দের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠল, তা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। তার আগে উৎসবের ভোজ বলতে ছিল রাজহাঁস, ময়ূর
১১ ঘণ্টা আগে
কাজুবাদামকে বলা হয় ‘পুষ্টির ছোট প্যাকেট’। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। এ কারণে যে আপনি মুঠো মুঠো করে সব সময় এটি খেতেই থাকবেন, তা হবে না। নিয়মিত কাজুবাদাম পরিমিত খেতে হবে। এতে আপনি পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সুস্থতা। মূলত ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই বৃক্ষজাত বীজ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার
১৫ ঘণ্টা আগে