Ajker Patrika

চট্টগ্রামের সাধুর মিষ্টি

মহিউদ্দীন জুয়েল, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের সাধুর মিষ্টি

চুলো থেকে নামিয়ে ভান্ডারে রাখতেই হুড়োহুড়ি লেগে গেল। জটলা ঠেলে হাত বাড়িয়ে কার আগে কে খাবেন তা নিয়ে চলছে কিছুটা বাগ্‌বিতণ্ডা। মিষ্টিটা গরম। তাই খেতে হবে তাড়াতাড়ি। ঠান্ডা হলে উধাও হবে আসল স্বাদ।

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাধু মিষ্টি ভান্ডারের রোজকারের চিত্রটা এমনই। জিভে স্বাদ লেগে থাকা মজাদার এ মিষ্টির রয়েছে পুরোনো ইতিহাস। রয়েছে দারুণ খ্যাতি!

গ্রাম থেকে দুধ সংগ্রহ
সাধুর মিষ্টি তৈরির বিশেষত্ব হচ্ছে, এটি তৈরি হয় দুধের ছানা দিয়ে। খুব ভোরে কিংবা আগের দিন রাতে চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গোয়ালাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় খাঁটি দুধ। পটিয়া, আনোয়ারা, বোয়ালখালী, বাঁশখালী, সাতকানিয়াসহ চট্টগ্রাম শহরের বাইরের একাধিক উপজেলার গৃহপালিত গরুর দুধই এখানে বেশি ব্যবহার করা হয়। সেই দুধ দুপুর ১২টার মধ্যে প্রস্তুত করেন কারিগরেরা। এই কারিগরদের অনেকের রয়েছে মিষ্টি বানানোর ৩০ থেকে ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা।

ছানার মিষ্টি
প্রতিদিন ৩০০ লিটার দুধ আসে সাধু মিষ্টি ভান্ডারের রান্নাঘরে। যেখান থেকে ৫২ কেজি ছানা তৈরি হয়। ছানা তৈরি করার আগে দুধ চুলায় ফোটানো হয়।

ফোটানোর পর তাতে সিরকা বা ভিনেগার দেওয়া হয়। তবে পুরোনো রীতি অনুযায়ী তাঁরা ব্যবহার করেন ছানার পানি। ঠান্ডা হয়ে গেলে এই দুধের পানি আর ছানা আলাদা হয়ে যায়। একটু পর সেগুলো পরিষ্কার সুতি কাপড়ে বেঁধে পানি ঝরাতে দেওয়া হয়। পুরো পানি ঝরে গেলে তৈরি হয়ে যায় ছানা।
সাধু মিষ্টি ভান্ডারের কারিগর টুন্টু দাশ বলেন, ‘হাতের তালুতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছানা থেকে গোলাকৃতির অবয়ব তৈরি করে তা চুলার শিরায় ছেড়ে দিই। ব্যস! তৈরি হয় মিষ্টি, রসগোল্লা, স্পঞ্জ, কালোজাম, সন্দেশ আরও কত-কী!’  

১০০ বছরের উত্তরাধিকার
কামিনী কুমার দে, যিনি চট্টগ্রামে কালু সাধু নামে পরিচিত ছিলেন। জানা যায়, ১০০ বছর আগে তিনি প্রথম এই মিষ্টি তৈরি শুরু করেন। পরে তাঁর উত্তরাধিকারী গোপাল চন্দ্র দে ম্যানেজার সুখেন্দুর কাছে দোকান পরিচালনার ভার দিয়ে অন্যত্র চলে যান। তাঁর হাত ধরেই এরপর প্রতিষ্ঠা পায় সাধুর মিষ্টি।
একসময় এটি ছিল চট্টগ্রামের কোতোয়ালির মোড়ে। ২০১৮ সালের পর বড় পরিসরে লালদীঘির পশ্চিমপাড়ে নিউ সাধু মিষ্টি ভান্ডার নামে এটি নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির মালিকদের একজন নিপুল কুমার দে।

দাম
রসগোল্লা-২৫০, কালোজাম-২৫০, চমচম-২৮০, বাদশাভোগ-২৮০, দুধ মালাই-২৮০, সন্দেশ-৪৫০, কাচাগোল্লা-‍২৫০, লাড্ডু-২৫০
দই-২২০, রসমালাই-৩৫০, লালমোহন-২৫০।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত