Ajker Patrika

‘আমাকে জড়িয়ে ধরো’

জাহীদ রেজা নূর
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২১, ১৩: ৩৯
‘আমাকে জড়িয়ে ধরো’

আজ একটা ভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখাটা শুরু হোক।
মার্কিন দেশে এখনো মানুষ বই পড়ে। কিনেই পড়ে। কাগজে দুই মলাটের মধ্যে বন্দী পাতাগুলোকে যেমন আপন করে নেয়, তেমনি ই–বুকও এখন ভালো লাগছে অনেকের। পয়সা দিয়ে সেগুলোও কিনে নেয় আগ্রহীজন।

সিডনি ম্যাককেইনের লেখা ‘স্ট্রংগার: কারেজ, হোপ অ্যান্ড হিউমার ইন মাই লাইফ উইথ জন ম্যাককেইন’ বইটি এখন যুক্তরাষ্ট্রে হু হু করে বিক্রি হচ্ছে। বেস্টসেলার হয়েছে বইটি, সমালোচকদের মুখে প্রশংসার স্রোত।

জন ম্যাককেইন ছিলেন রিপাবলিকান সিনেটর। সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমর জন্য তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দলের সদস্যরা। ২০১৮ সালে তাঁর মৃত্যু হলে মার্কিন দেশের সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে জিমি কার্টার, বিল ক্লিনটন ও বারাক ওবামা যোগ দিয়েছিলেন তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়। সিডনি ম্যাককেইন সেই সিনেটরের স্ত্রী।

জন ম্যাককেইন সম্পর্কে একটু বলে না নিলে কেন তাঁকে নিয়ে কথা বলছি, তা বুঝতে পারা যাবে না। তিনি রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর হয়েও তখনকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বোকামি, অবিনয়ী মনোভঙ্গি এবং দেশের মানুষের প্রতি উদাসীনতা ও নির্মমতার কড়া সমালোচনা করতেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য তা সুখকর ছিল না। তাই যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সব সময় চেষ্টা করেছেন, জন ম্যাককেইনকে অপমান করতে; কিন্তু ম্যাককেইন তা গায়ে মাখেননি।

সিডনির সঙ্গে জনের ছিল ৩৮ বছরের বিবাহিত জীবন। নানা ধরনের সংকটকাল কাটিয়েছেন তাঁরা একসঙ্গে। চার সন্তানকে মানুষ করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামনে আদর্শ পরিবারের উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।

কেউ যদি মনে করে থাকেন ৬৬ বছর বয়স্ক সিডনির বইটি জন ম্যাককেইনের রাজনীতিক জীবন নিয়ে, তাহলে ভুল করবেন। একজন পুরোপুরি রাজনীতিতে ডুবে থাকা মানুষের সঙ্গে যে রোমান্টিক জীবন কাটিয়েছেন সিডনি, বইটি সে বিষয়েই লেখা। সিডনি এখানে লিখেছেন জনের সঙ্গে তাঁর পরিচয়ের ঘটনা, বিয়ে করার সিদ্ধান্ত এবং কীভাবে তাঁরা অবসর সময়গুলো কাটিয়েছেন, তা নিয়ে। সমালোচকেরা বলেছেন, বইটি পড়লে নিকোলাস স্পার্কসের লেখা বিখ্যাত বই নোটবুক–এর ধরনটির কথা মনে পড়বে। দুটো বইয়ের স্বাদ একই রকম।

সিডনি ম্যাককেইন এখন ব্যবসা সামলাচ্ছেন, গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বইটি থেকে যা আয় হবে, তা দেশের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষদের কল্যাণের জন্য ব্যয় করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

আমাজনে বইটির দাম ১৯ ডলার ৫৮ সেন্ট। আর ট্যাব–সংস্করণ ১৪ ডলার ৯৯ সেন্ট।

অ্যালি পন্ড পার্ক কুইন্সের দ্বিতীয় বৃহত্তম পার্কঅ্যালি পন্ড পার্ক

স্প্রিংফিল্ড বুলেভার্দ থেকে হাঁটতে হাঁটতে কয়েক মাইল গেলেই অ্যালি পন্ড পার্ক। গত বছর যখন নিউইয়র্কে এসেছিলাম, তখনই ২৭ নম্বর বাসে করে কুইন্স লাইব্রেরির একটি শাখায় যাওয়ার সময় পার্কটি নজরে পড়েছিল। তারপর হাঁটতে হাঁটতে একদিন সেই পার্কে গিয়ে হাজির হয়েছিলাম। তখন শীতকাল। নিউইয়র্কে শীতকালে দু–একদিন প্রচণ্ড তুষারপাত হলেও রোদমাখা দিনের দেখা মেলে বেশি। রাস্তায় খুব বেশি দিন বরফ জমে থাকে না।

আর এ সময় ঝকঝকে রোদ্দুর, কিছুটা গরম। বেশি হাঁটলে একটু ঘামও হয়। হ‌ুমায়ূন আহমেদ লিখেছিলেন নিউইয়র্কের রোদ্দুরের কথা। নীল আকাশটা সত্যিই মোহনীয়। ঢাকা শহরে এতটা নীল আকাশ দেখা যায় না।

অ্যালি পন্ড পার্কটি কুইন্সের দ্বিতীয় বৃহত্তম পার্ক। এই পথেই ১৭৯০ সালে লং আইল্যান্ডে গিয়েছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন। এ কথা অনেকখানেই লেখা আছে।

রোববার ছুটির দিন। বিকেলে আমরা অ্যালি পন্ড পার্কে গেলাম। রোদ তখনো আকাশে। পার্কে পৌঁছে দেখি, বিভিন্ন জাতি–বর্ণের মানুষ এখানে এসেছেন পিকনিকে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে তাঁরা বসেছেন, বাড়ি থেকে আনা টেবিল পেতেছেন। খাচ্ছেন। শিশুরা দৌড়ে বেড়াচ্ছে।

পার্কটি খুব বড়। গোল মাঠের চারধারে রাস্তা, হাঁটার জন্য আদর্শ। মাঠটি দুই চক্কর দিলে শরীরটা চনমনে হয়ে ওঠে। ক্লান্ত মানুষ বসে পড়ে বেঞ্চিতে। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার হাঁটে। একজন ভিয়েতনামি বংশোদ্ভূত ষাটোর্ধ্ব মানুষকে দেখলাম অন্তত দশবার প্রদক্ষিণ করলেন মাঠটা। দৌড়ে। ঘামে ভিজে গেছেন তিনি।

এ মাঠে অনেকেই হাঁটতে এসেছেন তাঁদের প্রিয় কুকুরটাকে সঙ্গে নিয়ে। মাঠের কোনো কোনো জায়গায় রয়েছে ব্যায়াম করার যন্ত্র। যে কেউ ইচ্ছে করলেই ফ্রি–হ্যান্ড ব্যায়াম করে নিতে পারেন সেখানে। শিশুদের জন্য রয়েছে খেলার জায়গা। ওখানে তাদের ছেড়ে দিয়ে বাবা–মা একটু অবসর উপভোগ করতে পারেন।

মাঠের পাশ দিয়েই একটা রাস্তা চলে গেছে ওপরের দিকে। পাহাড়ের মতো জায়গাটা। এই পথটা দেখলে মনে হয় চট্টগ্রাম–রাঙামাটি সড়ক। দুপাশে গাছের সারির মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে ভালো লাগে। এরই মধ্যে প্রাচীনকালের গাছ আছে অনেক। তারই কয়েকটিতে ঝুলছে বোর্ড, যেখানে লেখা আছে, ‘আমাকে জড়িয়ে ধরতে পারো।’ আমরা তিনজনই গাছটাকে জড়িয়ে ধরলাম। ছবিও তুললাম। আমার মনে হলো, গাছটি যেন বলছে, ‘আমাকে জড়িয়ে ধরো’। মনে পড়ে গেল ১৯৯২ সালের কথা। সে সময় আমরা ছিলাম রাশিয়ার ক্রাসনাদার শহরে। সে বছর জানুয়ারি মাসে প্রকৃতিবিদ দ্বিজেন শর্মা এসেছিলেন আমাদের শহরে বেড়াতে। তিনি প্রগতি প্রকাশনের চাকরি করতেন। তখন তৃতীয় বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক একটু একটু করে খারাপ হচ্ছিল। অনুবাদ বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। দ্বিজেন শর্মা যখন আমাদের শহরে এসেছিলেন, তখন শীতকাল প্রায় শেষ। তারপরও বরফ জমে ছিল মাটির ওপর। একটি বিশাল গাছ জড়িয়ে ধরে তিনি বলেছিলেন, ‘প্রকৃতির কাছ থেকে আমরা দূরে সরে যাচ্ছি! প্রকৃতির কাছে থাকা প্রয়োজন!’ তাঁর বলা কথাগুলো মনে পড়ে গেল।

সীমিতভাবে রেস্তোরাঁ খোলা

কোভিডের শুরুতে রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া–দাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল নিউইয়র্কে। শুধু টেকওয়ে–প্রথা চালু ছিল। সে সময় রেস্তোরাঁর বাইরে ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রেখে ক্রেতারা দাঁড়াত সারিতে। অর্ডার দেওয়ার পর খাবার প্রস্তুত হলে সেটা নিয়ে যেত বাড়িতে। বাইরে খাওয়া–দাওয়ার কথা ভাবতেই পারত না কেউ।

এখন কোভিডের টুঁটি টিপে ধরতে পেরেছে বলেই মনে করে নিউইয়র্ক। একটু একটু করে খুলে যাচ্ছে দোকানপাট; রেস্তোরাঁ। পার্ক থেকে ফেরার পথে একটি ম্যাক্সিকান, আরেকটি ইতালিয়ান খাবারের দোকানে দেখলাম টেবিল–চেয়ারে বসে খাচ্ছেন অনেকে। এদের মধ্যে একটি বাঙালি পরিবারেরও দেখা পেলাম। ব্র্যাডক অ্যাভিনিউতে কি–ফুডের পাশে বিশাল এক বুফে রেস্তোরাঁয় অনেক ভিড়। অর্থাৎ রেস্তোরাঁয় খাওয়ার যুগ আবার ফিরে আসছে।

কাজ হারিয়ে অনেক মানুষই বেকার হয়ে গেছে। এ কারণে ইদানীং সাবওয়েতে সহিংসতা বেড়েছে। বিশেষ করে রাতে চলাচল করা কিছুটা অনিরাপদ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে পুলিশ এই দুর্বৃত্তদের ধরার ব্যাপারে তৎপর।

মার্কিন দেশে এখনো মানুষ বই পড়ে, কিনেই পড়েসাহিত্যের নিউইয়র্ক

নিউইয়র্কের সঙ্গে অন্যভাবেও পরিচিত হওয়া যায়। পৃথিবীর আর কোনো শহরের সঙ্গেই নিউইয়র্কের কোনো মিল নেই। জন্মের শুরু থেকেই এ শহর কোলাহলমুখর। আজও রয়েছে তার স্পন্দন একই রকম। এর কারণ আর কিছুই নয়, প্রতি মুহূর্তে এখানে যুক্ত হচ্ছে নতুন রক্ত, নতুন মানুষ। সারা পৃথিবী থেকে নানা পথে, নানাভাবে এখানে আসছে মানুষ। নিউইয়র্কের টিকে থাকা সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত করছে নিজের সংস্কৃতিকে, ঐতিহ্যকে। তাই খুব দৃঢ়ভাবেই বলা যায়, নিউইয়র্কের কোনো নির্দিষ্ট ভাষা নেই। নানা দেশ থেকে আসা মানুষ তাদের ভাষা ও ঐতিহ্য দিয়ে গড়ে নিচ্ছে নিউইয়র্ককে।

আছে ইতালির নিউইয়র্ক, স্পেনের নিউইয়র্ক, চীনের নিউইয়র্ক, রাশিয়ার নিউইয়র্ক। আছে আফ্রিকার নিউইয়র্ক। যদিও বলা হয় এশিয়ার নিউইয়র্ক, কিন্তু এখানে আছে বাংলাদেশের নিউইয়র্ক, ভারতের নিউইয়র্ক, পাকিস্তানের নিউইয়র্ক। আরব দেশগুলোরও রয়েছে নিউইয়র্ক। এখানে একে অন্যের সঙ্গে মানুষ মেশে, আবার নিজেদের ঐতিহ্যও ধরে রাখে কেউ কেউ।

বাঙালিদের কথা বলেছিলাম একবার। জ্যাকসন হাইটস বা পারসন্স বুলেভার্দের উল্লেখ করেছিলাম সে লেখায়। মূল মার্কিন ধারার সঙ্গে অনেক সময়ই দেখাশোনা হয় না বাঙালিদের। আমেরিকাকে ধারণ করে আছে যে জাদুঘরগুলো, ধর্মীয় স্থাপনাগুলো, তা নিয়ে অনেকেরই কোনো ভাবনা নেই। এমনকি কী ঘটছে এই দেশটায়, সরকার পরিবর্তনে আদতেই কোনো কল্যাণ হচ্ছে কিনা, সে ভাবনাও করে না অনেকে। দৃষ্টি শুধু থাকে, নিজে কতটা লাভবান হচ্ছি, তার ওপর।

মূলধারার সাংস্কৃতিক মিলন না হলে যে শূন্যতা থেকে যায়, নিউইয়র্কের বাঙালিদের একটা বড় অংশের মধ্যে সেটা আছে। শুধু বাঙালি নয়, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যেই সেটা লক্ষ্য করা যায়। এখানে একটা ভয়াবহ ব্যাপারও ঘটে। নিজ দেশ থেকে যে শিক্ষা, মূল্যবোধ, বিশ্বাস নিয়ে এ দেশে অভিবাসী হয়েছে মানুষ, তা তারা আঁকড়ে ধরে থাকে। কোনো পরিবর্তনের মুখোমুখি হতে চায় না। নতুন চিন্তা–ভাবনার সঙ্গে পরিচয় না হওয়ায় আচরিত জীবন একসময় রূপান্তরিত হয় মজা খালে। কোনোদিকেই থাকে না তার স্রোত। পুরোনো বিশ্বাস আঁকড়ে থাকায় জীবনবোধে আসে না কোনো আনন্দ। ফল যা হয়, তা নিয়েও লিখব একদিন।

তারপরও নিউইয়র্ক সব সময়ই নবীন হয়ে ধরা দেয় চোখে। নিউইয়র্কের সাহিত্যজীবন নিয়েও কিছু কথা বলা না হলে অপূর্ণ থেকে যাবে অনেক কিছু। নিউইয়র্কের জন্মের পর থেকেই ঋদ্ধ এর সাহিত্যজীবন। হুইটম্যান, উইলিয়াম কার্লোস উইলিয়াম, ডিলান টমাস, ফ্র্যাঙ্ক ওহারার লেখায় উঠে এসেছে নিউইয়র্ক।

সে কথা দিয়েই শুরু হবে পরের লেখাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এই ডিসেম্বরে যা কিছু করতে পারেন

ফারিয়া রহমান খান 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৯
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

ডিসেম্বর মানেই অন্য রকম অনুভূতি। একদিকে বছর শেষের সব হিসাবনিকাশ, নতুন বছরের আগমনী বার্তা; অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দ আর পিঠা-পার্বণের আমেজ। সব মিলিয়ে এই মাসটি যেন সত্যিই বিশেষ। ডিসেম্বরে, বছরের শেষ সময়গুলো কীভাবে একটু অর্থবহ করা যায়, তা জেনে নিন।

উদ্দেশ্য স্থির করুন

নতুন বছরে আপনি কী কী করতে চান, তা এখনই ভেবে ফেলুন। একটু স্থির হয়ে বসে খাতা-কলমে লিখে আপনার নতুন বছরের উদ্দেশ্য স্থির করে নিন। লিখে রাখলে তা বিভিন্নভাবে উদ্দেশ্য পূরণে সহায়তা করবে।

ঘর সাজান

পুরোনো বছরকে সুন্দর করে বিদায় দিতেই হোক বা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে—ঘর সাজান সুন্দর করে। কিছু ওয়ার্ম লাইট ও জানালা বা টেবিলে কিছু গাছ রেখে ঘরে দিন একটু উষ্ণতার ছোঁয়া। সঙ্গে পুরোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস অন্য কাউকে দিয়ে দিন। দেখবেন বাসায় একটা শান্ত ও পরিচ্ছন্ন ভাব আসবে।

পিঠা-পার্বণের আমেজ ও আড্ডা

পিঠা সংস্কৃতির অংশ। তাই ঐতিহ্য ধরে রাখাতে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সময় করে একদিন বিভিন্ন রকম পিঠা বানাতে পারেন। বড় আয়োজন নয়, বরং চা-বিস্কুট আর পিঠা নিয়ে একটি ঘরোয়া আড্ডা জমান। পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করুন। দেখবেন, মন থেকে অনেকখানি ভার নেমে গেছে।

বই পড়ুন

ডিসেম্বরের আবহাওয়া বই পড়ার জন্য উপযুক্ত। ছুটির দিনে দুপুরগুলো কাজে লাগান। গায়ে হালকা কাঁথা জড়িয়ে একটা অলস দুপুর বই পড়ে দেখুন। অথবা একটা ভালো উপন্যাস নিয়ে শীতের মিষ্টি রোদে বসে পড়ুন। সঙ্গে রাখুন এক কাপ চা। দেখবেন, খুব ভালো লাগবে।

নিজেকে সময় দিন

বছরের এই শেষ সময় এসেও নিজের জন্য সময় বের করুন। নিজের যত্ন নিন, নিজেকে নিজেই কিছু উপহার দিন। দেখবেন নিজেকে মূল্যবান ও যোগ্য মনে হবে। তা ছাড়া কাউকে কিছু উপহার দিতে চাইলেও দিতে পারেন। সেটাও কিন্তু নিজেকে সময় দেওয়ার কাজ করবে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সহায়তা করুন

শীতকালে অনেক জায়গায় পিঠা মেলা বা হস্তশিল্প মেলা বসে। এই মেলাগুলোতে ঘুরে বেড়ান। উৎসবের কেনাকাটায় বড় শপিং মল এড়িয়ে স্থানীয় কারিগরদের কাছ থেকে কিছু কিনুন এবং শীতের খাবার চেখে দেখুন। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উপকৃত হবেন। মনে রাখবেন, উদ্যোক্তাদের সহায়তা না করলে তারা বড় হতে পারবে না। তাদের বড় করতে সহায়তা করাও একটা উদ্যোগ বটে।

সহায়তার হাত বাড়ান

শীতকালে অসহায় মানুষদের কষ্ট কমাতে গরম কাপড় ও কম্বল দান করুন। ছোট ছোট কাজ করে অন্যের মুখে হাসি ফোটান; যেমন কাউকে চা বা কফি খাওয়ান, বাসে বয়স্ক কারও জন্য আসন ছেড়ে দিন, কাউকে রাস্তা পার করিয়ে দিন। ছোট একটি মানবিক কাজ আপনার জীবনকে অর্থবহ করে তুলবে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

বছরের প্রতিফলন

পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বসে অথবা একা বসে এই বছর কী কী ভালো ও খারাপ হয়েছে, তা নিয়ে ভাবুন। কী কী ভুল করেছেন, সেগুলো ভেবে দেখুন। সামনের বছরগুলোতে এসব ভুল যেন না হয়, সে জন্য সতর্ক হোন। এই বছর যা কিছু ইতিবাচক হয়েছে, সেগুলো একটি ডায়েরিতে লিখে সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানান। কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হয়ে থাকলে তা মিটিয়ে নিন। অযথা মনে রাগ পুষে রেখে নিজেকে কষ্ট দেবেন না।

পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করুন

পুরোনো বন্ধুরা আসলে মানুষের ব্রিদিং স্পেস বা নিশ্বাস ফেলার জায়গা। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সবার সঙ্গে সম্ভব না হলেও যাঁদের বা যাঁর সঙ্গে সম্ভব, তাঁদের বা তাঁর সঙ্গে দেখা করে কিছু সময় কাটিয়ে আসুন। মন খুলে হাসুন। স্মৃতিচারণা করুন। অন্তত এক বেলা একসঙ্গে বসে খেয়ে ফেলুন মনের মতো কোনো খাবার। দেখবেন নতুন বছর অন্য রকমভাবে শুরু হবে।

সূত্র: ক্যামিলিস্টাইল ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের রোদে ত্বক পুড়েছে? গোসলের সময় এই প্যাকগুলো ব্যবহারে মিলবে উপকার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস
দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

বলতে দ্বিধা নেই, গরমের দিনে রোদ গায়ে লাগিয়ে ভিটামিন ডি নেওয়ার কথা ভুলে গেলেও শীতে যেন তা বেশি বেশি মনে পড়ে। হিম সকালে রোদ গায়ে মাখতে কারো মন্দ লাগে না। ফলে এই মৌসুমে গায়ে রোদ লাগানোও হয় বেশি। আর এতে অতিরিক্ত পাতলা ত্বকের মানুষেরা একটু ঝামেলায় পড়েন। দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে পাতলা ত্বকের মানুষদের ত্বক দ্রুত পুড়ে যায়। ফলে গায়ের রং তামাটে হয়ে যায়। তাই এ সময় নিয়মিত যাঁরা রোদ পোহাচ্ছেন, তাঁদের ত্বক যদি এ রকম রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যায়, তাঁরা গোসলের সময় কিছু ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তাতে সুবিধা পাবেন।

লেবুর রস, মধু ও গোলাপজলের ফেসপ্যাক

লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে মধু ত্বক আর্দ্র রাখে, যা শীতকালের রুক্ষ আবহাওয়ায় জরুরি। ১ চা-চামচ করে লেবুর রস, শসার রস, মধুর সঙ্গে আধা চা-চামচ গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি মুখে লাগিয়ে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তবে এই প্যাক ব্যবহার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি রোদে না বের হওয়াই ভালো। বের হলেও ছাতা ব্যবহার করুন।

দই, বেসন ও হলুদের ফেসপ্যাক

এই প্যাক একই সঙ্গে ট্যান দূর করতে, মৃত কোষ ঝরাতে এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে খুব ভালো কাজ করে। ২ চা-চামচ টক দই, ১ চা-চামচ বেসন, এক চিমটি হলুদবাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাক মুখে ও গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। প্রয়োজনে এই প্যাক শরীরের অন্য অংশের রোদে পোড়া দাগের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।

লেবুর রস ও চিনির মিশ্রণ

ঘরে বসে ট্যান অপসারণের জন্য ফেসপ্যাকে যোগ করতে পারেন লেবুর রস। প্রাকৃতিক ব্লিচিং ক্ষমতার কারণে এটি ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করতে খুব ভালো কাজ করে। এ ছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ত্বকের দূষণ দূরে সহায়ক। সানট্যান দূর করতে লেবুর রস মধু বা চিনির সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত জায়গাগুলোয় স্ক্র‍্যাব করুন। ১৫ মিনিট আলতো করে ঘষে ধুয়ে নিন। তবে লেবু মিশ্রিত প্যাক বা স্ক্র‍্যাব ত্বকে ব্যবহার করলে ধোয়ার পর অবশ্যই ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। নয়তো ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে উঠতে পারে।

আলুর রস ও মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক

আলুর রসে মৃদু ব্লিচিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা সানট্যান হালকা করতে পারে। অন্যদিকে মুলতানি মাটি ত্বক পরিষ্কার করে। ২ চা-চামচ আলুর রস, ১ চা-চামচ মুলতানি মাটি, অল্প পরিমাণে গোলাপজল বা পানি মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাক মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট বা পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে পানি ও স্ক্র‍্যাবার দিয়ে ম্যাসাজ করে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।

নারকেলের দুধেও মিলবে উপকার

ট্যান দূর করার পাশাপাশি নারকেল দুধ ত্বকের অন্যান্য উপকারও করে। মুখ ও হাতে ট্যান পড়ে থাকলে নারকেলের দুধকেই সমাধান হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। রোদে পোড়া ত্বকে তাজা নারকেল দুধ লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। এরপর ধুয়ে নিন। ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বলতা ছড়াবে।

শসা ও লেবুর রসের মিশ্রণ

শসা ত্বক আর্দ্র রাখে এবং পোড়া ত্বকে আরাম দেয়। অন্যদিকে লেবুর রস ত্বকের রং হালকা করতে সহায়ক। শসা দিয়ে মুখ, ঘাড় ও হাতের ট্যান দূর করার ভালো উপায় হলো, খোসা ছাড়িয়ে থেঁতো করে রস বের করে নিয়ে তাতে সমপরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে তুলার বল দিয়ে সেই রস আক্রান্ত জায়গায় লাগানো। এরপর সেই রস ত্বকে পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

সূত্র: ফেমিনা ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৫
আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

মেষ

আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন। সাবধান; পুরোনো প্রেমিকার হঠাৎ ফোন আসতে পারে। ফোনটা ধরবেন নাকি বলবেন ‘নেটওয়ার্কের বাইরে আছি’, সেটা আপনার কর্মফল! প্রেমের ক্ষেত্রে বিরক্তি বা অনাগ্রহ না দেখানোই ভালো।

বৃষ

আজ আপনার ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে নজর দিতে হবে। না, অর্থ আসবে না; বরং অর্থ যাওয়ার পথ তৈরি হবে! বিশেষত অনলাইন শপিংয়ের দিকে মন ঝুঁকতে পারে। এমন কিছু অর্ডার করে ফেলবেন, যেটা হাতে আসার পর মনে হবে—‘এটার আসল প্রয়োজন কী ছিল?’ স্ত্রীর কাছ থেকে উপহার চেয়ে বসলে এমন কিছু পাবেন, যা দেখে হাসবেন নাকি কাঁদবেন, তা ঠিক করতে পারবেন না। ফাস্ট ফুডের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিন। একটু কম তেল-ঝাল খান, নইলে গ্যাসের চোটে মহাকাশে যাত্রা শুরু করতে পারেন।

মিথুন

মিথুন রাশির দ্বৈত সত্তা আজ দ্বিগুণ সক্রিয়। এক মন বলবে, ‘কাজটা করে ফেলি,’ আর অন্য মন বলবে, ‘আরে বাবা! নেটফ্লিক্সের সিরিজটা আগে শেষ করা যাক!’ এই দোটানার জন্য দিনের শেষে আপনার কাজও হবে না, আবার সিরিজটাও শেষও হবে না। কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী আজ আপনার সাফল্যের গল্পে এত বেশি রং মেশাবেন যে আসল গল্পের চেয়ে সেটা শুনেই বসের বেশি হাসি পাবে। সন্ধ্যায় পরিচিত কাউকে এমন একটি উপদেশ দেবেন, যা আপনি নিজে জীবনে কখনো মেনে চলেননি।

কর্কট

কর্কট রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত ঘরকুনো হন। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে ঘরের বাইরে ঠেলে দেবে। অপ্রত্যাশিতভাবে বন্ধু বা আত্মীয়ের দল বাড়িতে এসে আপনার শান্তি ভঙ্গ করতে পারে। তাদের আপ্যায়ন করতে গিয়ে পকেটের দফারফা হবে। তবে চিন্তা নেই, এই বিড়ম্বনার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের কোনো শুভ ইঙ্গিত। প্রেমিক/প্রেমিকা আজ আপনাকে ‘ডায়েট কন্ট্রোল’ করতে বলবে। আপনি গোপনে লুকিয়ে ফ্রিজের দিকে এগোনোর সময় ধরা পড়তে পারেন।

সিংহ

সিংহ রাশি, আজ আপনার ব্যক্তিত্বের তেজ এতটা বেশি থাকবে যে ঘরে ঢুকে লাইট না জ্বাললেও চলবে। সবাই আজ আপনার কথা শুনতে চাইবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো—আপনার বলার মতো বিশেষ কোনো কথা আজ থাকবে না। বসের চোখে পড়তে চাচ্ছেন? যান, একটু উল্টাপাল্টা কিছু করুন। আপনার ভুল করার স্টাইল দেখেও তারা মুগ্ধ হতে পারে। অপ্রয়োজনীয় জিনিসে প্রচুর টাকা খরচ হতে পারে, যেমন চতুর্থ কফির কাপ অথবা একটি লাল রঙের ক্যাপ যা আপনার মোটেই প্রয়োজন নেই।

কন্যা

আজ আপনার ভেতরের ‘পারফেকশনিস্ট’ সত্তাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। সহকর্মীর ফাইলে সামান্য একটি বানান ভুল পেলেও এমন রিঅ্যাক্ট করবেন যেন তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধটি করে ফেলেছেন। এই বাড়তি খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য কিছু মানুষ আপনাকে এড়িয়ে যেতে পারে। নিজেকে নিয়ে একটু হাসিঠাট্টা করুন। সবকিছু সিরিয়াসলি নেবেন না। যদি দেখেন জুতা উল্টো পরে ফেলেছেন, তা নিয়ে একটা সেলফি তুলে পোস্ট করে দিন! দেখবেন দিনটি হালকা হয়ে গেছে।

তুলা

গ্রহদের মতে, আজ আপনার ‘ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট’ সফল হবে। তবে এই ব্যালেন্স কর্মক্ষেত্র বা ব্যক্তিগত জীবনে নয়, হবে আপনার ফ্রিজের খাবার আর আপনার ডায়েটের মধ্যে! আপনি দুই দিকেই সামঞ্জস্য রক্ষা করবেন; অর্থাৎ ডায়েটও ভাঙবেন, আবার রাতে আফসোসও করবেন। আজ আপনার সঙ্গী এমন একটি অদ্ভুত প্রশ্ন করতে পারে, যার উত্তর দিতে গিয়ে আপনার মাথা পুরোপুরি ঘুরে যাবে; যেমন ‘বিয়ে না হলে আমাদের জীবনটা কেমন হতো?’ শান্ত থাকুন এবং হাসতে শিখুন।

বৃশ্চিক

বৃশ্চিক, আপনার রহস্যময় স্বভাব আজ কারও কাছে ধরা পড়বে না। কারণ, নিজেই আজ আপনার রহস্য ভুলে যাবেন! পুরোনো একটি ভুলে যাওয়া ঋণ বা পাওনা টাকা আজ হুট করে মনে পড়তে পারে। তবে যখন সেটি দাবি করতে যাবেন, তখন অন্য পক্ষ এমন এক গল্প শোনাবে যে আপনি উল্টো তাকেই সহানুভূতি দেখিয়ে টাকা দিয়ে আসতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে আজ এমন একজনের সঙ্গে দেখা হবে, যিনি আপনার চেয়েও বেশি গম্ভীর। দুজন মিলে এমন একটি হাসির মুহূর্ত তৈরি করবেন, যা কেউ কল্পনাও করেনি।

ধনু

ধনু রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন। কিন্তু আজকের অ্যাডভেঞ্চারটি হবে আলমারি গোছানো! ভাবতেও পারেননি, আপনার আলমারির ভেতরে এত অদ্ভুত জিনিস লুকিয়ে ছিল। পুরোনো প্রেমের চিঠি থেকে শুরু করে ছেঁড়া মোজা পর্যন্ত সবই পেয়ে যাবেন। যদি আজ কোথাও যাওয়ার প্ল্যান থাকে, তবে সাবধানে যান। মানিব্যাগটি ভুল করে রান্নাঘরে রেখে আসতে পারেন। এই ভুলে যাওয়াটাই আজ আপনার সবচেয়ে বড় কৌতুক হতে চলেছে।

মকর

মকর, আপনি সাধারণত খুব শৃঙ্খলাপরায়ণ। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে একটু ডিসকোয়ালিফাই করবে। দিনের শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের আগে মোবাইল ফোন খুঁজে পাবেন না। পরে দেখবেন, ফোনটি প্যান্টের পকেটেই ছিল। আপনার কঠোর পরিশ্রমের ফল আজ মিষ্টি হবে, তবে মিষ্টির সঙ্গে সামান্য তেতো অভিজ্ঞতাও আসতে পারে। বিনিয়োগের আগে দুবার চিন্তা করুন। এমন কাউকে বিশ্বাস করবেন না, যিনি আপনাকে ‘এক মাসে দ্বিগুণ লাভ’ করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।

কুম্ভ

কুম্ভ, আজ আপনার বুদ্ধি আকাশ ছুঁয়ে যাবে। এমন একটি সমস্যার সমাধান করবেন, যা কেউ ভাবতেও পারেনি। কিন্তু আফসোস! সেই সমস্যাটি হয়তো একেবারেই গুরুত্বহীন ছিল, যেমন ‘কে আগে রিমোট নেবে’ বা ‘চায়ের কাপের দাগটা কীভাবে তোলা যায়।’ বন্ধুদের মধ্যে কেউ আজ এমন একটি বড় দাবি করবে, যা শুনে আপনি প্রথমে অবাক হবেন, পরে হো হো করে হেসে উঠবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করলে তাতে অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচুর লাইক ও কমেন্ট পাবেন।

মীন

মীন রাশির জাতক-জাতিকারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। আজ সেই স্বপ্নময় জগৎটি আপনার কর্মক্ষেত্রে এসে পড়তে পারে। কাজের মধ্যে হঠাৎ কল্পনায় ডুবে যাবেন এবং বসকে ভুল করে অন্য কারও নাম ধরে ডেকে ফেলতে পারেন। প্রেমের ক্ষেত্রে আবেগপ্রবণতা আজ অতিরিক্ত বাড়বে। নিজের হাতে লেখা একটি কবিতা বা চিঠি প্রিয়জনকে দিলে তারা হয়তো হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়বে। কারণ, আবেগ দেখানোর জন্য আপনার শব্দচয়ন হয়তো আজ খুব একটা সিরিয়াস হবে না। তবে মনে রাখবেন, হাসিই সম্পর্কের সেরা মসলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতকালে কলা খাবেন কি না

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ২৭
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। ছবি: ফ্রিপিক
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। ছবি: ফ্রিপিক

শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। সেগুলোতে শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তাই বলাই যায়, শীতকালে কলা খাওয়া নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, খাবার খাওয়া এবং তা থেকে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ব্যক্তিগত সংবেদনশীলতা থেকে। যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেসব খাবার না খাওয়া ভালো। তাতে শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিনে কলাসহ ৪০০ গ্রাম ফল ও সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা এবং তার সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য জেনে নিন।

শীতে কলার পুষ্টিগুণ বদলে যায়

এ ধারণা ঠিক নয়। কলার পুষ্টিগুণ অর্থাৎ পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, আঁশ ইত্যাদি ঋতুভেদে একই থাকে। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন কলাকে একটি পুষ্টিকর স্ন্যাক্স বা হালকা নাশতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

শীতে কলার পুষ্টিগুণ বদলে যায়, এ ধারণা ঠিক নয়। ছবি: ফ্রিপিক
শীতে কলার পুষ্টিগুণ বদলে যায়, এ ধারণা ঠিক নয়। ছবি: ফ্রিপিক

হজমে সমস্যা ও সর্দি-কাশি

আমাদের দেশেই শুধু নয়, পৃথিবীতে এমন বহু মানুষ আছেন যাঁরা বিশ্বাস করেন, কলা ঠান্ডা প্রকৃতির বলে শীতকালে খেলে সর্দি-কাশি বা হজমে সমস্যা করতে পারে। এটি আজ পর্যন্ত বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। স্বাভাবিকভাবে যেকোনো ব্যক্তি শীতকালে কলা খেতে পারেন। বরং কলা দ্রুত শক্তি দেয় বলে শীতকালে এটি শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে। তবে কলায় কারও অ্যালার্জি থাকলে খাওয়া ঠিক হবে না।

আয়ুর্বেদিক ধারণা

আয়ুর্বেদের মতো কিছু প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি কলাকে ‘শীতল’ প্রকৃতির বলে বিবেচনা করে। সে জন্য রাতে বা শীতে বেশি পরিমাণে না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে এ পরামর্শ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

বিশেষ পরিস্থিতিতে সতর্কতা

অ্যালার্জি ও কফ: যাঁদের কলায় অ্যালার্জি আছে এবং যাঁদের শীতকালে কফ জমে থাকা বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কলায় কোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া নেই। তবে যাঁদের আগে থেকে অ্যালার্জি বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের অত্যধিক মিউকাস উৎপাদনে এটি কিছু ভূমিকা রাখতে পারে। সে জন্য যাঁদের আগে থেকে এসব সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

ডায়াবেটিস: কলায় প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এটি পরিমিত খাওয়া উচিত।

কলা কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার ও ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে পরিচিত। ছবি: ফ্রিপিক
কলা কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার ও ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে পরিচিত। ছবি: ফ্রিপিক

শীতকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার: কলায় থাকে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের মতো প্রাকৃতিক চিনি। এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে, যা শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

ইমিউনিটি বুস্টার: ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘বি৬’ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কলা। এতে শীতকালীন সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

সেরোটোনিন উৎপাদন: কলায় ট্রিপটোফ্যান নামে একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন (মুড-রেগুলেটর) উৎপাদনে সাহায্য করে, শীতকালীন বিষণ্নতা মোকাবিলায় সহায়ক।

শীতকালে কলা খাওয়ার টিপস

রাতের বদলে সকাল বা দুপুরে খাওয়া ভালো। এ ছাড়া কলা বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। যেমন ওটমিল ও দারুচিনির সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেলে উষ্ণতা বাড়বে। কলার স্মুদির সঙ্গে আদা ও কাঁচা হলুদ যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। সম্পূর্ণ পাকা কলায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। এ ধরনের কলা দিনে ১ থেকে ২টি খান।

শীতকালে কলা খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর, যদি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা ও পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তাই নিয়মিত কলা খেতে কোনো বৈজ্ঞানিক নিষেধ নেই। তবে অ্যাজমা, দীর্ঘস্থায়ী কফ, কিডনি রোগী ইত্যাদি সংবেদনশীল গ্রুপের মানুষেরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কলা খাবেন। এ ছাড়া কলাকে শীতের খাদ্যতালিকার একটি উপাদান হিসেবে দেখুন, একমাত্র উৎস হিসেবে নয়। অন্যান্য শীতকালীন ফলের সঙ্গে এর ভারসাম্য বজায় রাখুন।

তথ্যসূত্র

  • ইউএসডিএ জাতীয় পুষ্টি ডেটাবেইস: কলার পুষ্টি উপাদানের প্রামাণিক তথ্য
  • জার্নাল অব মেডিকেল ফুড (২০১৬)
  • আয়ুর্বেদিক ফারমাকোপিয়া অব ইন্ডিয়া (ভোল.১)
  • অন্যান্য
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত