Ajker Patrika

চাকরির পেছনের গল্প: কম সিজিপিএ নিয়েও সহকারী জজ

আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১: ২৩
চাকরির পেছনের গল্প: কম সিজিপিএ নিয়েও সহকারী জজ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে পড়াশোনা করেছেন নাজিউল হাসান পিয়াল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে একাডেমিক পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে পারেননি। তাই প্রথম শ্রেণিতে অনার্স পাস করতে পারেননি পিয়াল। তবে সিজিপিএ কম হলেও ১৬তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলে ঠিকই সহকারী জজ হিসেবে মেধাতালিকায় চতুর্থ স্থান অর্জন করেন। পিয়ালের বিজেএস জয়ের অভিজ্ঞতা শুনেছেন শাহ বিলিয়া জুলফিকার। 

ছেলে বড় হয়ে একজন বিচারক হবে বলে স্বপ্ন ছিল মা-বাবার। ছোটবেলা থেকে পিয়াল নিজেও দেখে এসেছেন, সমাজে বিচারকের অবস্থান খুব সম্মানের। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও বিচারক পদটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। সব মিলিয়ে মা-বাবার স্বপ্নকেই নিজের স্বপ্ন হিসেবে লালন করতে শুরু করেন তিনি। যার জন্য পরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফল থাকা সত্ত্বেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে ভর্তি হন। 

যেভাবে বিজেএস প্রস্তুতি শুরু
একাডেমিক ফল ভালো না হওয়ার কারণে শুরুতে বিজেএস প্রস্তুতি শুরু করা নিয়ে দ্বিধায় ভুগছিলেন পিয়াল। কিন্তু এলএলবি (সম্মান) ডিগ্রি শেষ করার পর আর সেই দ্বিধা নিয়ে থেমে থাকেননি। ছোটবেলা থেকে দেখা বিচারক হওয়ার সেই লালিত স্বপ্ন পূরণের দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে একনিষ্ঠভাবে মনোনিবেশ করেন বিজেএস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য।

যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন
বিজেএস পরীক্ষায় পরপর তিনবার ব্যর্থ হন পিয়াল। তবে হতাশ হননি। বরং সফলতা পেতে পরিবর্তন নিয়ে আসেন নিজের প্রস্তুতি কৌশলে। 

  • এমসিকিউ পরীক্ষা: এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য আইন অংশের বেয়ার অ্যাক্টগুলোর কমবেশি সব ধারাই বুঝে বুঝে পড়েন। তা ছাড়া পরীক্ষার মাসখানেক আগে বাজারে প্রচলিত কিছু মডেল টেস্ট বইয়ের সমাধান শুরু করেন পিয়াল। জেনারেল বিষয়ের জন্য পড়েছিলেন বিসিএস ডাইজেস্ট।
  • লিখিত পরীক্ষা: লিখিত পরীক্ষায় আইন বিষয়ে ৬০০ ও সাধারণ বিষয়ে ৪০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমেই নিজে যে বিষয়গুলোতে সর্বোচ্চ নম্বর তুলতে পারবেন, প্রস্তুতির জন্য সেসব বিষয় বাছাই করেছিলেন। সাধারণ বিষয়ের মধ্যে বাংলা ও ইংরেজির গ্রামার অংশ, গণিত-বিজ্ঞান অংশে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া সম্ভব। তাই ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির সংশ্লিষ্ট বোর্ড বই এবং পূর্ববর্তী বিজেএস ও বিসিএস পরীক্ষার লিখিত প্রশ্ন সমাধান করেছিলেন খুব ভালো করে। আর ৬০০ নম্বরের আইন অংশের জন্য মূলত বেয়ার অ্যাক্টই পড়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত ইংরেজি লিখিত পরীক্ষার বইও পড়েছিলেন।
  • ভাইভা প্রস্তুতি: ভাইভা হলো স্নায়ুচাপ সামলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজেকে উপস্থাপন করার পরীক্ষা। এ ক্ষেত্রে আগের পড়াগুলোর ওপরই বারবার চোখ বুলিয়েছেন তিনি এবং নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে গেছেন। তা ছাড়া পত্রিকা ও বিভিন্ন বইপত্রে নিয়মিত ভাইভা অংশ পড়তেন। মূলত নিয়মিত অনুশীলনের মধ্য দিয়ে ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে স্বপ্নের বিজেএস জয় করেন পিয়াল। 

নতুনদের জন্য পরামর্শ
নতুনদের জন্য পরামর্শ দিতে গিয়ে নাজিউল হাসান পিয়াল বলেন, সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জনের জন্য পড়াশোনার প্রস্তুতির পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত পড়াশোনা যেমন আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করবে, ঠিক তেমনি সৃষ্টিকর্তার ইবাদত মানসিক শক্তি জোগাবে। প্রথমবার যাঁরা বিজেএস পরীক্ষায় অংশ নেবেন, তাঁদের জেনে রাখা উচিত, আইন অংশে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ প্রশ্ন রিপিট হয়। তাই সবার আগে আইন অংশের জন্য বিগত সালের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নগুলো সমাধান করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধারা ও বিষয়গুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি বুঝতে পারবেন, কোন বিষয়গুলো বেশি বেশি পড়তে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক সিইসি নূরুল হুদার গলায় ‘জুতার মালা’ দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

ইরানের পতন হলে, এরপরই রাশিয়া—অভিমত রুশ বিশ্লেষকদের

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর মোদির সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্টের ফোনালাপ

অনেক দেশ ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত, দাবি পুতিনের শীর্ষ সহযোগীর

মার্কিন হামলার পর ইসরায়েলে ‘খোররামশহর-৪’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত