Ajker Patrika

এনটিআরসিএর ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি আবেদনপ্রক্রিয়া ও প্রস্তুতি

এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
মো. যোবায়েরুল ইসলাম
মো. যোবায়েরুল ইসলাম

বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ লাখ ৮২২ জন শিক্ষক নিয়োগ দিতে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এ নিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ দিক, আবেদনের পদ্ধতি, যোগ্যতা, পছন্দের কৌশলসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ১৭তম এনটিআরসিএ পরীক্ষার জাতীয় মেধাতালিকায় ষষ্ঠ স্থান অধিকারী মো. যোবায়েরুল ইসলাম। তাঁর সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

আবেদন গ্রহণের সময়

গতকাল ২২ জুন দুপুর ১২টা থেকে আবেদন শুরু হয়েছে। আগামী ১০ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। এনটিআরসিএর ওয়েবসাইট অথবা টেলিটকের ওয়েবসাইট মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। আবেদন জমার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নির্ধারিত ১ হাজার টাকা ফি জমা দিতে হবে। যাঁরা শেষ দিন আবেদন করবেন, তাঁরা ১৩ জুলাই পর্যন্ত ফি জমা দিতে পারবেন।

আবেদনের যোগ্যতা

প্রার্থীকে অবশ্যই এনটিআরসিএ কর্তৃক নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত হতে হবে এবং তার সনদে উল্লিখিত বিষয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। নিবন্ধনের মেয়াদ ৩ বছর। অর্থাৎ ৪ জুন মেয়াদোত্তীর্ণ সনদ গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রার্থীর বয়স হবে সর্বোচ্চ ৩৫ বছর। এ ছাড়া, আবশ্যিকভাবে প্রার্থীকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ অথবা কারিগরি ও মাদ্রাসাশিক্ষা বিভাগ কর্তৃক সর্বশেষ প্রকাশিত জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। যেকোনো ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের জন্য আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট ধর্মের অনুসারী হতে হবে।

পছন্দক্রম ও পছন্দ প্রক্রিয়া

প্রত্যেক আবেদনকারী সর্বোচ্চ ৪০টি প্রতিষ্ঠান পছন্দ করতে পারবেন। তবে যাঁরা আরও বিস্তৃতভাবে সুযোগ রাখতে চান, তাঁরা ‘other’ অপশন নির্বাচন করে General, Madrasha বা Technical যেকোনো বা সব Option নির্বাচন করতে পারবেন। পছন্দ ও মেধাক্রমের ভিত্তিতে আবেদনকারীদের স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে। যাঁরা স্কুল ও কলেজ উভয় পর্যায়ে আবেদন করার যোগ্যতা রাখেন, তাঁদের প্রথমে কলেজ পর্যায়ে বিবেচনা করা হবে। কলেজে সুযোগ না হলে তারপর স্কুল পর্যায়ে বিবেচনা করা হবে।

ইনডেক্সধারী শিক্ষক ও মহিলা কোটা

বর্তমানে এমপিওভুক্ত (ইনডেক্সধারী) শিক্ষকেরা সমপদের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তবে স্কুল পর্যায়ে যদি কোনো নিবন্ধন সনদধারী (এমপিওভুক্ত বা ইনডেক্সধারী) প্রার্থীর কলেজ পর্যায়ের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ থাকে এবং তিনি যদি কলেজ পর্যায়ে এমপিওভুক্ত না হন, তবে তাঁর শিক্ষক নিবন্ধন সনদে উল্লিখিত কলেজ পর্যায়ের পদে ও প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবেন। এ নিয়োগে মহিলা কোটা বাতিল করা হয়েছে।

আবেদনপত্র পূরণের নির্দেশনা

আবেদনপত্র পূরণ করার সময় প্রার্থীর ছবি, সঠিক তথ্য ও পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। ভুল বা মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে সুপারিশ বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আবেদন একবার জমা হলে তা সংশোধনের কোনো সুযোগ থাকবে না। তাই সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে আবেদন করতে হবে। এ ছাড়া আবেদনকারীকে নিজ উদ্যোগে দাখিল করা আবেদনের একটি প্রিন্ট কপি সংরক্ষণ করতে হবে।

নিয়োগ-বাছাইপ্রক্রিয়া

প্রাপ্ত আবেদনগুলো সরকারি বিধিবিধান অনুসরণ করে যাচাই-বাছাই করা হবে। প্রার্থীদের সমন্বিত জাতীয় মেধাতালিকা থেকে মেধার ভিত্তিতে বাছাই করে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে সুপারিশপত্র পাঠাতে হবে। নির্বাচিত প্রার্থীকে এসএসএমের মাধ্যমে তা অবহিত করা হবে। নিয়োগ সুপারিশে বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে যদি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুপারিশ করা প্রার্থীকে নিয়োগপত্র প্রদানে ব্যর্থ হয়, তবে হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ অনুযায়ী ওই সব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি বাতিলকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আবেদনে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে

জাতীয় মেধাতালিকায় নিজের অবস্থান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থা, কর্মপরিবেশ, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, আর্থিক সচ্ছলতা, শিক্ষক-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত। একজন আবেদনকারীকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য জানতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের তথ্য বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) ওয়েবসাইট থেকে জানা যাবে।

বিশেষ করে শিক্ষার্থী সংখ্যার বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। খোদ এনটিআরসিএ প্রার্থীদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট শূন্য পদের বিপরীতে কাম্য শিক্ষার্থী নেই, সেসব প্রতিষ্ঠানের এমপিও ভবিষ্যতে বাতিল হতে পারে। প্রার্থীদের নিজ এলাকার আশপাশের প্রতিষ্ঠানে আবেদনের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কারণ আপাতত বদলির সুযোগ নেই, তবে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে; কিন্তু তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা

দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন জাতীয় পে স্কেল অনুসারে সরকারি কর্মচারীদের মতোই হয়। সর্বশেষ ২০১৫ সালে জাতীয় পে স্কেল গঠন করা হয়। এমপিওভুক্ত স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকেরা বিএড করা থাকলে এন্ট্রি লেভেলে ১০ম গ্রেডে বেতন পান। বিএড না থাকলে ১১তম গ্রেডে বেতন পান। অন্যদিকে কলেজ পর্যায়ে প্রভাষকেরা বেতন পান ৯ম গ্রেডে। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দেওয়া হয় ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা। অবসর সুবিধা ও শিক্ষককল্যাণ ট্রাস্টের জন্য কেটে রাখা হয় মূল বেতনের ১০ শতাংশ।

২০১৮ সাল থেকে শিক্ষকেরা ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাচ্ছেন। এমপিওভুক্ত সহকারী শিক্ষকেরা শুরুতে বিএড না থাকলে ১২ হাজার ৭৫০ টাকা বেতন এবং ১ হাজার টাকা প্রণোদনা পান। বিএড থাকলে ১৫ হাজার ৯০০ টাকা বেতন এবং ১ হাজার টাকা প্রণোদনা পান। আর প্রভাষকেরা পান ২১ হাজার ৩০০ এবং ১১০০ টাকা প্রণোদনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক সিইসি নূরুল হুদার গলায় ‘জুতার মালা’ দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

ইরানের পতন হলে, এরপরই রাশিয়া—অভিমত রুশ বিশ্লেষকদের

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর মোদির সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্টের ফোনালাপ

অনেক দেশ ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত, দাবি পুতিনের শীর্ষ সহযোগীর

মার্কিন হামলার পর ইসরায়েলে ‘খোররামশহর-৪’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত